#ওঁগো_বঁধু
পর্ব ১৭
#জান্নাতুল_মাওয়া_লিজা
” দশ কোটি দিতে পারবে আমাকে? তাহলে ডিভোর্সের ব্যবস্থা করে দেবো!”
শায়লার এ প্রশ্নটি চিন্তারো অতীত লাগলো জলি মাহমুদের নিকট। তার মুখ, গলা কিছুটা শুকিয়ে গেলো। যতই অর্থ বিত্তের গলাবাজি করুক, এত টাকা তার সমগ্র সম্পত্তি একজোট করলেও হবে না। স্বামি বিদেশ বিঁভূইয়ে চাকরি করে, সেই সুযোগে সে ভাইয়ের উপর বসে বসে থেকে, খেয়ে আরাম আয়েশ করে বেড়াচ্ছে বছরের পর বছর। শুধু সে ই না, ছোটো বোন মলিও এখানে বসেই দিন পার করলো তাও আরাম আয়েশে।
এসব ভেবে তাই পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পালটা প্রশ্ন করলো সে আমতা আমতা করে।
“দশ কোটি কেনো ভাবি? ক..ক..কি হিসেবে? লোন নাকি ডিমান্ড?”
শায়লা পূর্বের সেই চাতূর্যপূর্ণ হাসি অক্ষূন্ন্য রেখে বললো,
” শোনো জলি, তোমাকে আমি বুঝিয়ে বলছি, আমার রাফসানের আর জব নেই। জানোই তো, আর্মির চাকরিতে বহাল থাকতে হলে ফিজিক্যালি কত বেশি ফিট থাকতে হয়, তার মধ্যে ওর মাত্র একটা কিডনি, তাও রিপ্লেসড হওয়া কিডনি। তাই ঘন ঘন অসুস্থ হওয়ার চান্স বেশি। রাফসান চায় নিজের প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাতে। সে একটা ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি গড়তে চায়। এজন্য তার ইমেন্স প্ল্যান রয়েছে। এত বড় কোম্পানি গড়তে তার বহু টাকার প্রয়োজন আছে। রায়হান যদি পঁচিশ কোটি দেয় সাথে তুমি আরো দশ কোটি দিলে…”
শায়লাকে এটুকু বলতে দিয়েই জলি তাকে থামিয়ে দিলো।
“ন..ন..নাহ! না, না, ভাবি, ক..ক..কিভাবে কি? আমি দশ কোটি কোথায় পাবো?”
জলির এবারের কথাটা শায়লার মনমতো হলো। সে এই উত্তরটারই আশা করছিলো।
তাই শায়লা তার সামান্য মুখ ভেংচিয়ে ফট করে বলে দিলো,
“বললেই হলো দশকোটি কোথায় পাবো? কত না বড়লোকি দেখাও তুমি? কত বড়লোকী আলাপ পারো সারাদিন, আর এখন বলছো, দশকোটি কোথায় পাবে?
ভাবি শায়লার এ প্রশ্নে জলি মাহমুদ লজ্জায় নতমুখী হলো। এ প্রশ্নের উত্তর আর আসলো না তার নিকট হতে।
তাই শায়লাই পালটা বললো,
“আই থিংক, বুঝেছো জলি। সো, আর কোনোদিন আমার ছেলেকে তোমার মেয়ের জামাই বানানোর চিন্তাও করবে না! ফারদার না! আমার ছেলের একটা আঙ্গুলের সমান মূল্যও রাখে না, তোমার মেয়ে! বুঝলে? ঐ ভিখারির মেয়ের সাথে যেমন বিয়ে হয়েছে, তেমন ছাড়াছাড়িও আমার তুড়ির ব্যাপার। তবে তোমার মেয়ে না, কক্ষনো না!”
ভাবির কথা শুনে জলি আশাহত হয়ে মুখ থুবড়ে বসে রইলো।
নিজের মেয়ে এতই অযোগ্য! শায়লা কি তাহলে তার মেয়ের উপর নিচ সবটাই জেনে গেছে? জলি শায়লার খোটা দেওয়া কথার আগুনে দাওদাও করে জ্বলতে লাগলো।
.
.
নন্দন পার্ক। ঢাকার অদূরে এক নয়নাভিরাম দৃষ্টিনন্দন স্থান এটা।
এদিকে রাস্তায় রাজধানীর জ্যাম তেমনটা ভিড়ে না। তাই রাফসানের সাদা রংয়ের মার্সিডিজ গাড়ি দ্রুতই পৌঁছে গেলো এখানে।
পার্কের ভেতর দিয়েই বয়ে গেছে একটা লেইক, রয়েছে অসংখ্য গাছপালা ও ফুলের বাগান। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ফাঁকে ফাঁকে রয়েছে কৃত্তিমভাবে স্থাপিত কিছু নন্দনতাত্ত্বিক শিল্পকর্ম।
নির্ভানা জীবনেও এসব কিছু দেখেনি। তাই দুচোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সে দেখতে লাগলো। চোখে অবাক চাহুনি।
শুধু নির্ভানা বললে ভুল হবে, রাফসানও এখানে আসেনি কোনোদিন। সে চট্টগ্রাম গিয়ে কাপ্তাই লেক, কক্সবাজার গিয়ে বঙ্গোপসাগর বা সিলেট গিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর দেখে আসলেও; দেখেনি কাছাকাছির কোনোকিছুই।
ছোটোবেলায় রাজধানীর শিশুপার্ক বা শিশুমেলায় গেলেও, বড় হলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বলতে সে শুধু পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার আর খুলনা, বাগেরহাটকেই জানতো। আর সেনাবাহিনীর চাকরির খাতিরে বিভিন্ন পর্বত ও দুর্গম স্থানে তাদের ক্যাম্প বসাতে হতো। আর সেখানে অনুশীলন চলতো। সেই খাতিরে দেশের দুর্গম স্থানগুলোর সবগুলো তার ভ্রমন করা শেষ।
রাফসান দাদাকে একহাতে হাতে ধরে আর নির্ভানা দাদীকে একহাতে ধরে থেকে হাঁটিয়ে নিয়ে চললো।
আশি ও নব্বইয়ার্ধো দুই বৃদ্ধকে তারা একা হাঁটতে দিবেই কোন ভরসায়?
নিজের পরিবারের সাথে ঘুরতে এলে যে শান্তি বন্ধুদের সাথে উল্লাস উদ্দিপনা বহু থাকলেও সে নিরবিচ্ছিন্ন শান্তিটা বিরাজ করে না।
দাদা দাদীকে এত খুশি রাফসান বিগত বহুবছর দেখেনি।
তবে কিছুদূর হেঁটেই দাদী বলে উঠলেন,
” আমাদেরকে তোমরা এত দুর্বল ভাবছো কেনো শুনি? ভেবেছো আমরা নিজে থেকে হাঁটতে পারি না নাকি? হাত ছাড়ো! হাত ছাড়ো বলছি!”
দাদীর একথা শুনে রাফসান শাসনের ভঙ্গিতে বলে উঠলো,
” তবে, যদি পড়ে যাও দাদী? তখন তো আমারই আবার তোমাকে কোলে করে নিয়ে যেতে হবে! তোমার বুড়ো বর কি পারবে তোমাকে ক্যারি করতে?”
রাফসানের একথা শুনে দাদী হাসলেন খুব। তার নতুন করে বাঁধানো চকচকে দাঁতগুলো রোদে ঝলকানি খেলো। বাসায় ম্যাক্সি পড়ে থাকলেও দাদী আজ নতুন একটা অরিজিনাল পিউর কটন থ্রিপিস পড়ে এসেছেন, আর পায়ে পড়েছে স্নিকার; তা রাফসান এতক্ষণে খেয়াল করলো। চোখে চশমার পরিবর্তে লেন্স পড়ে তারউপর রোদচশমা পড়ে এসেছে। দারুন লাগছে তো দাদীকে! স্মার্ট!
রাফসানের একথা শুনে দাদা অপমান গায়ে মাখলো না। সে রাফসানকে বলে উঠলো,
” সারাটা জীবন তো আমার হাত ধরেই চললো, আর এখন পারবো না? তুমি যাও, তোমার জনের হাত ধরো আর আমি আমার জনের, যাও ছাড়ো আমার হাত নির্ভানা!”
বলেই সে নির্ভানার থেকে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে মিতারা মাহমুদের হাত ধরে নিলো।
রাফসান স্পষ্ট বুঝতে পারলো, সে যেনো নির্ভানার হাত ধরে ঈশারায় দাদা দাদী তাই ই বুঝিয়ে দিচ্ছে। অগ্যতা কি আর করার? দাদার কথায় সারেন্ডার করে রাফসান নির্ভানার হাত ধরলো খপ করে। নির্ভানা চমকালো। কিছু দিন আগেও এই হাত ধরাটা না জানি কতটা অনাকাঙ্ক্ষিত ছিলো তার কাছে! নির্ভানার আঙ্গুলিগুলো রাফসানের স্পর্শের যাদুতে বিমোহিত হলো। এতক্ষণ তাকাতে লজ্জা পেলেও নির্ভানা এখন একবার তাকালো রাফসানের দিকে। রাফসানের মুখভঙ্গি দেখে বুঝা যাচ্ছে, সে তাকে সামনে এগুতে বলছে।
রাফসান তাকে নিয়ে সামনে এগিয়ে চললো। আর আঙ্গুল নির্দেশ করে নির্ভানাকে আর দাদা দাদীকে এটা ওটা দেখাতে লাগলো।
নির্ভানা মুগ্ধ বিস্ময়ে রাফসানের দিকে তাকিয়ে নিজেকে নিজেই জিজ্ঞেস করতে লাগলো,
” এই অসম্ভব সুপুরুষ লোকটা আমার? একান্তই আমার?”
আবার নিজে নিজে উত্তরও বলে দিলো,
” হ্যাঁ, সে আমারই, একান্তই আমার!”
হাঁটতে হাঁটতে রাফসান ক্লান্ত হয়ে গেলেও দাদা দাদীর যেনো কোনো ক্লান্তি নেই। আর নির্ভানা তো আছে নিজের মনের রাজ্যে মেতে! সে হাঁটতে অভ্যস্ত। গ্রামের মেয়ে! পাঁচ, সাত কিলোমিটার হাঁটা তার কাছে কিছুই না। মাথায় ফলের ঝুঁড়ি নিয়ে পাঁচ কিলোমিটার হেঁটে গঞ্জে যেতো সে প্রতি হাটে।
এবারে তারা আরো হেঁটে লেকের ধারে এসে মাদুর বিছিয়ে বসে গেলো তারা।
দাদা এখানে ভিজবে বলে প্রস্তুতি নিয়েই এসেছে।
দাদা বলা শুরু করলো, মনো:স্তাপ নিয়ে,
-” রাফু ভাইয়া! তোমার দাদীকে নিয়ে বহু জায়গায় ঘুরেছি আমি, সেই প্রথম যৌবনে। প্রতিটা জেলায় জেলায় কত ঘুরেছি আমরা! তবে বিদেশ যাওয়ার মতো এত টাকা কড়ি হলো তো বৃদ্ধ বয়সে। কিন্তু তখন আর শরীর টানলো না। বনানীর বাসায় থিতু হলাম আমরা। ছেলে মেয়ে সবাই নিজেদের মতো ব্যস্ত। আর ছেলের বউ? সে তো মহাব্যস্ত! আমাদেরকে মূল্যায়ন করলেও ঘুরাতে নিয়ে যাওয়ার মতো সময় কারো হাতেই নেই। তাই আমাদের দিন কাটতে লাগলো বাসার ব্যালকনিতে পাখি ও গাছগাছালিদের সাথে কথা বলে আর কখনো বা ছাদের গাছপালা দেখে, টিভিতে খবর দেখে, ধর্মিয় বই বা সংবাদপত্র পড়ে আর নামাজ পড়ে। বাইরে কোথাও যে ঘুরতে যাওয়া সম্ভব, সময়ের সাথে সাথে সেটাও ভুলে গিয়েছিলাম।
রাফসান মাথা নিচু করে বললো,
” আমাকে ভুল বুঝোনা দাদা দাদী। আমি সেনাবাহিনীর কঠিন জব করতাম বলেই…”
নির্ভানা রাফসানকে থামিয়ে এক্ষণে বলে উঠলো,
-” ব্যস্ততা বলতে আসলে কিছু নেই দাদী, আসল কথা হলো গুরুত্ব না দেওয়া। ঠিক বলেছি না? প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর ইউনুস এত ব্যস্ততার মাঝেও তার স্ত্রীর দেখাশুনা করেন, ঔষধ, খাওয়া দাওয়া সহ সবকিছুর ব্যাপারে খেয়াল রাখেন, কিভাবে তাহলে? ”
রাফসান অবাক হলো। মেয়েটা ভালো ভালো কথাও শিখে গেছে তাহলে? টু দ্যা পয়েন্ট কথা বলাও শিখে গেছে! অবাক বিষয়! আর কথা বলার সময় মুখশ্রীতে কথাগুলো এত ভালোভাবে খাপ খায়! অনেক বাঘা বাঘা বক্তারাও এভাবে বলতে পারে না! এত স্বল্পশিক্ষিত মেয়ে হয়েও! রাফসান নিজেকে থামালো। কোনোক্রমেই এই মেয়ের প্রতি মনোযোগ আটকে রাখা চলবে নাহ! এই মেয়ে শুধু তার উপরে উঠার তথাপি বাবার কাছ থেকে অর্থ আদায়ের হাতিয়ার। এই কথাটা রাফসান বারবার নিজের মস্তিষ্ককে মনে করিয়ে দিতে থাকলো।
নির্ভানার কথায় রাফসান বেকায়দায় পড়তে পারে ভেবে দাদা বলে উঠলেন,
” নির্ভানা, আমাদের কি দেরি হয়ে যাচ্ছে না? আমরা কি লেকে ভিজবো না নাকি?”
দাদার একথা শুনে রাফসান বলে উঠলো,
” সিরিয়াসলি দাদা? তুমি এই লেকে ভিজবে? এখানে তোমার ভিজতে হবে না। গুলশান, বনানীতে অনেক বড় বড় সুইমিং পুল আছে সেগুলোতে ভিজবো আমরা, আজ যাস্ট দেখো এটা! ”
দাদা রাফসানের কথায় বাঁধ সাধলো,
” তুমি বললেই হলো, ভিজবো বলেই এত আয়োজন করেছি, এক্সট্রা ড্রেস এনেছি, টাওয়েল, সাবান সব এনেছি, কেনো তাহলে? ”
” দাদা, ছেলেমানুষী করো না, এই নোংরা লেকের পানিতে রোগজীবানু আছে, ভিজলে তোমার শরীরে বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এটাক করবে, আর তোমরা অসুস্থ্য হয়ে যাবে!”
দাদা ভার মুখে বললেন,
” এত প্যাচাল পাড়তে পারবো না তো, আমি মানে আমরা ভিজবো, ভিজবো, ভিজবো। মানে ভেজবো। তোর ঐ গুলশান বনানীতে তুই ই ভিজ গিয়ে। ওইখানে ভেজার নাম করে যে মানুষ মুতে দেয়, তা তুই জানিস? আর এই প্রাকৃতিক লেকে প্রাকৃতিক পানি শোধন প্রক্রিয়া আছে, এখানে ভিজলে কিচ্ছু হবে না।”
মু’তার কথা শুনে দাদী ফিক করে হেসে দিলো। রাফসানও হাসলো। তবে হেসেই বললো,
” দাদা, তুমি অযথা তর্ক করো না, প্লিজ। ঢাকা শহর পৃথিবীর দূষিত শহরগুলোর মধ্যে দুই নম্বর র্যাংকে, সো এই লেক ঢাকার মধ্যেই পড়ে। সো, এটিও দূষিত। আর এই দূষিত পানিতে ডুবলে তোমার মাথায় যে কয়টি চুল আছে সেগুলোও উঠে যাবে, আর স্কিনেরও বারোটা বেজে যাবে।
দাদা অবুঝের মতো বলা শুরু করলেন,
” আমি এত শত বুঝি না, তোদের ঐ গুলশান, বনানীতে থেকে আমি আরো বেশি অসুস্থ্য হয়েছিলাম, আর এই আশুলিয়া এসে আমি লাঠি ছাড়াই হাঁটি এখন। ”
নির্ভানা দাদার কথার সাথে তাল মেলালো,
” আমার জানা মতে, এই লেকের পানি শোধন করা হয় সামনের ব্যারেজেই, আর এই লেকে অনেক অতিথি পাখি আসে। দূষণ নেই বলেই পাখি আসে। তাই এই লেকের পানিতে ভিজলে কিছুই হবে না দাদার”
রাফসান দমলো। এই মেয়ে এত তথ্য জানলো কই?
আসলে নির্ভনার গৃহশিক্ষক পড়াশোনার পাশাপাশি তাকে এসব নানা বিষয়ের জ্ঞান ও দিয়ে থাকে।
সুতরাং লেকের অনতিগভীর জলে ভিজে টুইটম্বুর হয়ে গেলো চারটি প্রাণি।
নির্ভানা তার থ্রি পিস পড়েই যেভাবে সাঁতরাচ্ছে, তা দেখেই রাফসান বুঝে গেলো এই মেয়ের কাছে সাঁতারু ডলফিনও ফেইল।
এক ডুবে সে যেভাবে এখান থেকে প্রায় পঞ্চাশ গজ দূরে চলে যাচ্ছে, অভাবনীয়।
রাফসানের একবার মন চাইলো এই মেয়েটাকে একটা টক্কর দিতে। একটা সামান্য মেয়েমানুষ! আর এভাবে সাঁতার কাটে?
রাফসান ডুব লাগালো। ডুব সাঁতার।
নির্ভানা দাদা দাদীর সাথে আলাপ শুরু করলো।
দাদা প্রশ্ন করলেন,
“জানো? মাইকেল ফেলপস নামে এক বিখ্যাত সাঁতারু আছে, তাকে জলদানবও বলা হয়। তুমি তো দেখছি মাইকেল ফেলপসকেও হারিয়ে দেবে!”
দাদার এহেন কথায় নির্ভানা কি উত্তর দেবে ভেবে পাচ্ছেনা। সে যে ভারি থ্রি পিস পড়ে এসেছে তার উপর ভারি উড়না। ভেসে সাঁতরাতেই পারছিলো না। তাই ডুব সাঁতার দিয়েছিলো।
সে লজ্জা পেয়ে বললো,
” দাদা আমাদের গ্রামে একবার গেলেই বুঝতেন। ওখানকার দিঘি আমি এক ডুবে এপাড় ওপাড় করে দেই! এত সাঁতার কাটতাম বলে আব্বার কাছে কত্ত মাইর খাইতাম! ”
দাদা অবাক হলেন।
তবে দাদী চিৎকার শুরু করলেন।
” রাফু! এই রাফু? কোথায় তুমি? শুনছোগো, রাফু তো আর ডুব দিয়ে ভেসে উঠলো না!”
নির্ভানার বুকের হৃদপিণ্ডটা ছলাৎ করে উঠলো।
” হায় আল্লাহ! কোথায় ডুবে গেলো তার প্রাণের স্বামি?”
( চলবে)