#পূর্ণিমায়_বিলীন_চন্দ্র
#সাদিয়া_আক্তার
#পর্ব_৩৮
মিহিকে টানতে টানতে লাইব্রেরিতে নিয়ে যাচ্ছে পুনম। মিহি যতই নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করুক পুনম হাত ছাড়ছে না শেষে লাইব্রেরিতে ঢুকে হাত ছেড়ে হন্য হয়ে বুক শেল্ফে কিছু খুজে চলেছে।
মিহি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে কি করছে এই মেয়ে ভাবছে মিহি পাগল হলো নাতো।
— কি করছিস পুনম এভাবে বইয়ের ভাজে কি খুজে চলেছিস??
বিরক্তি কন্ঠস্বর মিহির তবে পুনমের সেদিকে কান নেই সে একটার পর একটা বই খুজে চলেছে কাঙ্খিত জিনিস না পেয়ে ধপ করে ফ্লোরে বসে পড়ে। মিহি চমকে ওঠে এমন ভঙ্গুর পুনমকে সে কখনও দেখেনি মায়ের লাঞ্ছনা সহ্য করেও যে মেয়ের মুখে মিষ্টি হাসির রেখা থাকত তার এমন অবস্থা। মিহি পুনমের দিকে গভীর ভাবেই চাইতেই আরো চমকে ওঠে শ্যাম বর্ণ বলে চোখের নিচে কালি পড়েছে তা সহজেই বুঝা যাচ্ছে না গভীর ভাবে না দেখলে কি হয়েছে মেয়েটার???
মিহি দৌড়ে যায় পুনমের সামনে বসে। — কি হয়েছে পুনু?? এমন করছিস ক্যান বোন বলনা,,,
মিহির আদুরে কথায় বাধ ভাঙ্গে পুনমের। হু হু করে কান্না করে দেয়। কান্নাভেজা স্বরে বলতে লাগে — আজ আজ চারটা দিন শের “এ আলী সাহেবের চিঠি নেই কোনো কথা বার্তা কিছুই নেই লোকটা কি করছে কেমন আছে কিচ্ছু জানি না,,,
পুনমের মুখে কারো কথা শুনে চমকে উঠল মিহি। কোনো ছেলে তাও আবার পুনম এ জেনো অবিশ্বাস্য কথা শুনল মিহি পুনম নিজের মুখে স্বীকার না করলে নিজেও জানতে পারত না আর অন্য কারো থেকে শুনলে বিশ্বাস ও করত না।
নিজেকে সংবরণ করে মিহি।
— কে এই আলী তাকে কিভাবে চিনিস তুই??
পুনম কাদতে কাদতে প্রথম দিনের গান শুনা চিঠি দেয়া নেয়া সবটাই বলে। সব শুনে হতবাক মিহি এই মেয়ে এতোদূর এগিয়ে গেছে অচেনা অজানা একটা উড়ো চিঠি দাতা প্রেমে পযর্ন্ত পড়েছে। মিহি গম্ভীর স্বরে বলল — এরকম কাউকে না জানিয়ে যে নিজেকে জলন্ত আগুনে ডুবালি এখন কি করবি লোকটা যদি ঠক জোচ্চোর হয়,,,??
— নাহ এমন বলিস না প্লিজ আমার মন বলছে লোকটা ভালো ভীষণ ভালো তার প্রত্যেকটা কথার ভাজে আমি আমার জন্য গভীর মায়া স্নেহ আর একরাশ ভালোবাসা অনুভব করেছি।
— আচ্ছা মেনে নিলাম তোর কথা তাহলে লোকটা এখন কই কোনো খোঁজ নেই কেনো?? আর হঠাৎই উধাও হলো কেনো??
এবার বুক শেল্ফে মাথাটা হ্যালান দিয়ে পুনম বলল — জানিনা আমি কিচ্ছু জানিনা আমার শুধু এটুকুই মনে হচ্ছে তার চিঠি আমার অভ্যাস বলতে পারিস বদ অভ্যাস আমি তার চিঠিতে আসক্ত।
পুনমের এমন কথায় অবাক মিহি। তবে তারা কেউ খেয়াল করল না অপর পাশে কেউ দাড়িয়ে আছে অন্ধকারের দিকে যার ঠোঁটে ঝুলছে বাকা হাসি। তৃপ্তির হাসি যে হাসিতে যেকোন মেয়েই কাবু তবে লোকটা যে হাসে কম তার হাসি দূর্লব।
ক্রন্দনরত পুনমকে অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে পুনম উঠায় নিজের সাথে বের হয় লাইব্রেরি থেকে।
— ওয়াশরুমে যা চোখে মুখে পানি দে নিজেকে ঠিক কর এমন অবস্থায় বাসায় যেতে পারবি না।
পুনম মাথা নেড়ে চলে যায় ওয়াশরুমে। চোখে মুখে পানি দিতে থাকে মিহি পুনমের ভাবনায় এতোটাই মশগুল যে খেয়াল করল না তার পাশ দিয়ে কেউ ওয়াশরুমে ঢুকে ধীর শব্দে ওয়াশরুমের মেইন গেট লাগিয়ে লাইট অফ করে দিয়েছে।
চোখে মুখে পানি দিচ্ছিল পুনম হঠাৎই লাইট বন্ধ হতে চমকে ওঠে। চারিদিকে তাকিয়ে হাতরে লাইট খুজতে যেতেই হ্যাচকা টানে কারো বাহু বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ভয় পায় পুনম চেচিয়ে উঠতে যেতেই মুখ চেপে ধরে লোকটা পুনম হাতে কামড় দিলেও ছাড়ে না ধস্তাধস্তি শুরু হয়। লোকটা যেনো মজা পেলো পুনমের কান্ডে বাধন আরও শক্ত করল।।
শেষে না পেরে কেদেঁই দিল এবার লোকটার মায়া হলো সে ধীর হাস্কি স্বরে ডাকল — জোহরা,,
চট করে থেমে যায় পুনম। জোহরা এই নামে তো একজনই ডাকে তার শের ” এ আলী সাহেব। লোকটা এই কয়দিন কই ছিলো সে কি জানে না তার চিঠি পুনমকে কতটা স্বস্তি দেয়। কতটা প্রফুল্ল করে উহু জানে না জানলে কি তার সাথে এমন করতে পারত চারটি দিন ধরে চিঠি না পেয়ে পুনমের কেমন অবস্থা হয়েছে সেটা এই লোক জানে কথা বলবে না এই লোকের সাথে। অভিমান হয়েছে বেশ অভিমান,,,
চন্দ্র প্রেয়সীর অভিমান বুঝে তাকে ছেড়ে দেয়। তার থেকে ঠিক একহাত দূরে দাড়িয়ে যায় নিয়ন আলোয় দেখে প্রেয়সীর অভিমান রাঙা চোখ।
মনে মনে হাসে চন্দ্র। ফের এক কদম এগিয়ে পুনমের কানে বলল — ইয়্যু ক্যান ফিম মিই জোহরা,, বলেছিলে না আমাকে ফিল করতে চান দেখেন তার অনুপস্থিতিতে আপনি অস্থির এটাই তো টান হৃদয়ের।
আর দেখা সেটা দেখবেন মনের দেখা। বলেই পকেট থেকে একটা রুমাল বের করে পুনমের চোখ বাধে বেশ শক্ত বাধনে। এমনিতে অন্ধকার আবার চোখ বাধায় পুনম আরো অন্ধকার দেখে।
চন্দ্র রুপি শের “এ আলী সাহেবের কথায় পুনম অবাক একি বলে লোকটা। যাই হোক ফিল করা গেলো লোকটাকে কিন্তু দেখা তাও আবার মনের সেটা আবার কেমন? পুনমের ভাবনার মাঝেই চন্দ্র পুনমের বাম হাত ধরে হাত উচু করে নিজের মুখস্রীতে রাখে।
পুনম চোখ বন্ধ করে ধীর হাতে হাত বুলায় চন্দ্রের পুরো মুখস্রী জুড়ে। বন্ধ নেত্র জোড়া দ্বারা মন ও মস্তিষ্কের অনুভব করতে থাকে শের “এ আলী সাহেবের উপস্থিতি চন্দ্রের কথা অনুযায়ী তাকে দেখতে থাকে মনের চোখ দ্বারা।
পুনম হাত বুলাতে বুলাতে চন্দ্রের ঠোঁটের কোণে থামতেই ঢোক গিলল চন্দ্র। ইশশ এই বেপরোয়া অনুভূতি থেকে এখনই পরিত্রান পেতে হবে। নাহলে একবার যদি চন্দ্র বেপরোয়া হয় তাহলে তার সকল ধৈর্যের বাধ ভাঙবে। পুনম ও ঠোটের কোণে হাত রেখে বেশ লজ্জা পেলো তবুও ঐ যে বেহায়া মন আরেকটু চায় হাতটা মনে হয় ইঞ্চি খানিকটা ও নড়ল না এরমধ্যেই চন্দ্র পুনমের হাত ধরে তাকে থামায়। পুনম এবার আরো লজ্জা পায়।
আর থামে না সেখানে দৌড়ে বের হয়ে যায় ওয়াশরুম থেকে। মিহি এতোক্ষণে ওয়াশরুমের দরজা বারি দিলেও দুইজনের একজনও দুনিয়ার খেয়াল ছিলো না। মিহি অবাক ভ্যাবলার মতো দাড়িয়ে থেকে ফের পুনমের পিছু নেয় ততক্ষণে পুনম পগার পার।।
বাসায় কোনো রকম পৌঁছে নিজের ঘরে যেয়েই দরজা আটকে দরজায় হ্যালান দিয়ে বসে পুনম হাতের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে এই হাতটা দিয়েই তো আজ পুনম তার প্রান সখাকে ছুয়েছে তার পুরুষালি মুখস্রী অনুভব করেছে।
হাতের উপর চুমু খায় পুনম এর মধ্যে মুক্তি এসে দরজা ধাক্কানো শুরু করে।
পুনম নিজেকে সামলে চটযলদি গেট খুলে।
— কিরে এতোক্ষণ কি করছিলি কতক্ষণ ধরে গেট ধাক্কিয়ে চলেছি,,
— ঐঐ তো ওয়াশরুমে ছিলাম আপু,,;
আমতা আমতা করে বলে পুনম। মুক্তি সন্দিহান নজরে চাইতেই পুনম কথা ঘুরিয়ে জিজ্ঞাসা করে তাকে কেনো ডাকছে
— ও দেখেছিস ভুলেই গেছি চল শপিং এ যাব,,,
— এখন শপিং কিন্তু কেনো??
— হ্যা দরকার,, পুনম কিছু বলতে নিলে তাকে বলতে না দিয়ে ওয়াশরুমে পাঠিয়ে দেয়। ফ্রেশ হয়ে আসতেই দেখে মুক্তি এখনো তার ঘরে
— আপু খিদে লেখেছে খেয়ে দেয়ে যাই,,
— আচ্ছা দুপুরে খাওয়া দাওয়া করেই বের হবো,,,
পুনম মিষ্টি হাসি দিয়ে মুক্তির সাথে নিচে চলে যায় খেতে। তার মনটা আজ খুব ভালো তাইতো ঠোঁটের কোণ থেকে হাসি সরছেই না।।
খাবার টেবিলে চার রমনী বসে খাচ্ছে এর মধ্যেই চাদনী বেগম বলল — হ্যারে পুনম তোর যা যা লাগবে কিনে নিবি। আর বিয়েতে কি লেহেঙ্গা পরবি নাকি শাড়ি,,,
— বিয়ে কার বিয়ে চাচী মুক্তি আপুর বিয়ে না আরো দেরী,,,
— হ্যারে মুক্তির বিয়ে তো ঢের দেরী তার আগেই তোর চাচা পুত্র বধূ ঘরে তুলতে চায়। তাই তো শর্ট নোটিশ কিছুই করতে পারছি না মা তুই রাগ করিস না জানি হয়তো তোর বিয়ে নিয়ে অনেক এক্সপেকটেশন। তবে ইনশাআল্লাহ তোর আর চন্দ্রের রিসিপশনে সব পূরণ করব।
খাওয়া থেমে গেছে পুনমের এ কি বলল তার চাচী সে আর চন্দ্র ভাই কোনো মতেই না। আর তাকে না জানিয়ে সবাই বিয়ের তোড়জোড় ও শুরু করে দিয়েছে। পুনম মায়ের দিকে তাকায় তাকে দেখে মনে হচ্ছে তিনি সব জানেন। সবাই জানে অথচ তার মতামত কেউ একটাবার জানতেও চাইল না। ঢোক গিলে খাওয়া রেখেই নিজের ঘরে চলে যায় দৌড়ে।
#চলবে
#পূর্ণিমায়_বিলীন_চন্দ্র
#সাদিয়া_আক্তার
#পর্ব_৩৯
ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে ধপ করে বিছানায় বসে পড়ল পুনম একি বলছে চাচী। পুনম কোনো দিনও চন্দ্রকে মেনে নিতে পারবে না সে মনে প্রানে তার শের “এ আলী সাহেবকে চায়। তাকে নিয়ে তার ভাবতে ভালো লাগে তার জায়গাই চন্দ্র ভাইকে কোনো দিনও বসাতে পারবে না। হাসফাস লাগে পুনমের দম বন্ধকর অনুভূতি লাগছে। এ অনূভুতির কথা কাকে বলবে পুনম কে তাকে বুঝবে ভেবেই আরো অস্থির পুনম।।
মিহির কথাই সত্যি হলো পুনম আগুনে ঝাপ দিয়েছে প্রণয় নামক অনল বর্তমানে তার হৃদয়ে দাউদাউ করে জ্বলছে। কিছু একটা ভেবে ফোন হাতে নেয় পুনম,,,,,
কল লাগায় বাবাকে। দোকানের কাজে ব্যস্ত থাকায় পারভেজ সাহেব ফোন ধরতে পারে না। ফোনটা বিছানায় ছুড়ে মেরে দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে কেদেঁ উঠে পুনম।
ড্রয়িং রুমে রোজিনা বেগম ও চাদনী বেগম পুনমের অভাবে যাওয়া দেখে ভাবছে পুনম লজ্জা পেয়েছে তবে মুক্তির মনে অন্য চিন্তা ইদানিং পুনমের হাবভাব তার ঠিক লাগছে না নিজে নিজে মুচকি হাসা। হঠাৎই উদাসীন হওয়া কেমন যেনো রহস্য রহস্য ঠেকল মুক্তির কাছে।
— মুক্তি খাওয়া শেষ কর। এরপর পুনমকে নিয়ে যাবি তোর বাবার সোরুম এ সেখান থেকে নিজের পছন্দ মতো কেনা কাটা করে যাবি বেনারসি পল্লীতে শাড়ি বা লেহেঙ্গা যেটাই নিবি নিস।
— ভাবী চন্দ্রকে জিজ্ঞাসা করেন ও কি পছন্দ করবে পুনমের জন্য,,,
রোজিনা বেগমের কথায় চাদনী বেগম সায় জানিয়ে বলল — হ্যারে মা চন্দ্রকেও জিজ্ঞাসা করে নিস,,,। মুক্তি
মায়ের ডাকে ধ্যান ভাঙ্গে মুক্তির এতোক্ষণ সে এলোমেলো ভাবনায় বিভোর ছিল।
— হু
— কি বলেছি শুনেছিস চন্দ্রকে ফোন দে,,
মুক্তি চন্দ্রকে ফোন দিলে চাদনী বেগম কথা বলে। রোজিনা বেগম পূর্বের কাছে যায়। আজ সারাদিন খুব জালিয়েছে রোজিনা বেগমকে।
পূর্বকে নিয়ে আসতে তাকে কোলে নেয় মুক্তি রোজিনা বেগম তার দুধ বানাতে যায়। মুক্তি পূর্বের সাথে খেলতে খেলতেই বলে — ভাই কি বলল??
— আমাদের যা মনে চায় কিনতে বলল। তার শুধু বিয়ে নিয়েই ইন্টারেষ্ট আর কিছু না,,,,
মায়ের কথায় মুক্তি মুচকি হাসল। সে জানত চন্দ্র এসব কোনো কিছুইতে মত দিবে না।
— তাহলে কি করব আম্মু??
— তুই বরং পুনমকে নিয়ে চলে যায়। পিছন থেকে রোজিনা বেগম বলল। তার সাথে চাদনী বেগম ও সায় জানাতে মুক্তি পূর্বকে নিয়ে পুনমকে ঘরের দিকে যায়।
আপন মনে কান্না করছিল পুনম মুক্তির গলা শুনে নাক টেনে মুখ মুছে কোনো রকম নিজেকে সামলায়।
দরজা খুলে ভাইকে দেখে হাসি ফুটে ওঠে ঠোঁটের কোণে।
— আমার ভাই কি আমাকে আজ মনেই করেনি??
পুনমকের প্রশ্নে পূর্ব ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রইল। পুনম মুচকি হেসে কোলে নিলো। মুক্তির দিকে তাকিয়ে দেখে সে তার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে। পুনম ভয় পায় আমতা আমতা স্বরে জিজ্ঞাসা করে — কিছু বলবা আপু??
— হু চারটার দিকে রেডী থাকিস শপিং এ যাব,,
ঢোক গিলে পুনম এদিকে সেদিকে তাকিয়ে চোখ নিচু করেই বলল — তুমি চাচী ও আম্মুকে নিয়ে যাও আমার তো এসব ভালো লাগে না সেটা জানোই আর তোমার পছন্দ কখনও খারাপ না।
— তারপরে ও তোর একটা বিশেষ দিন। বিয়েটা মানুষের জীবনের একটা স্পেশাল দিন সেটা তোর মনের মতোই হওয়া উচিৎ।
মুক্তির কথা শুনে পুনম উদাসীন আওড়ায়
— বিয়েটা তাহলে মনের মানুষের সাথেই হওয়া উচিৎ।
— কি বললি,,
মোটামুটি উচ্চস্বরে বলল মুক্তি। মাথা নিচু করে ঠোট কামড়ে কেদেঁ দিল পুনম মুক্তি তৎখনাত তাকে নিয়ে ঘরে ঢোকে। হাত ঝাকাতে ঝাকাতে বলল — এই পূর্ণ কি বললি তুই মনের মানুষ মানে,,
— আআমমি কাউকে পছন্দ করি আপু ইভেন ভালোওবাসি,,,
পুনমের কথা শুনে তার হাত ছেড়ে দিল মুক্তি। একি বলল পুনম তার ভাইটা এগুলো জানতে পারলে মরে যাবে এতো বছরের লালিত ভালোবাসা এভাবে শেষ হতে পারে না। মুক্তি ভাইকে চিনে সে জানতে পারলে ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে। তবুও গম্ভীর স্বরে বলল — কে সে কোথায় থাকে??
মুক্তির প্রশ্নে পুনমের মনের কোনে আশার কিরণ জাগে। গরগরিয়ে শুরু থেকে সবটা বলে দেয়।
— লোকটা যদি তোকে ভালো না বাসে তখন সে তো একবারও নিজের মতো করে চিঠিতে লিখে পাঠায় নাই।
মুক্তির কথা শুনে পুনমের ছোট্ট হৃদয় খানা ধক করে উঠল। এই কথা কেনো বলল আপু সে কি বুঝতে পারছে না তার শের “এ আলী সাহেব তাকে কতটা চায়। পুনম তো জানে।
— আপু ভালোবাসায় ব্যক্ততা থাকবে কেনো অবক্ত ভালোবেসে ভালোবাসা অনুভব করা যায়,,,
পুনমের কথায় মুক্তি হতবাক মেয়েটা কেমন মোটা মোটা কথা বলতে শিখেছে খারাপ লাগল তার পরোক্ষণেই ভাবল কোথাকার কোন উড়ো চিঠি তার ভাইয়ের এতো বছরের ভালোবাসা নিমিষেই শেষ করে কেড়ে নিবে তা মুক্তি হতে দিবে উহু না। কখনও না দরকার পরলে পুনমকে জোর করবে
— বেশ বড় বড় কথা শিখেছিস বাহ বেশ ভালো। তবে একটা কথা মনে রাখ কোথাকার কোন উড়ো চিঠি আমার ভাইয়ের ভালোবাসার পথে বাধা হতে পারে না।
রেগে গেলো পুনম চিল্লিয়ে বলল — কিসের ভালোবাসা মানিনা তোমার ভাইয়ের ভালোবাসা। আমি একজনকেই ভালোবেসেছি সে আমার শের “এ আলী সাহেব।
এবার মুক্তি ও রেগে গেলো। গম্ভীর স্বরে বলল
— একদম জানে মেরে দিব পুনম অন্যকারো বউ হবি,,,
অন্যকাউকে ভালোবাসবি হ্যা ঐ চিকন টুটি চেপে ধরলে গলা দিয়ে গরগরিয়ে ভালোবাসা বের হয়ে যাবে। আজ রাতটুকুই সময় দিলাম এরমধ্যেই ভালোবাসা বমি করে ফেলবি তারপর চুপচাপ বউ সাজবি।।। আমার ভাইয়ের বউ মনে রাখিস আমার ভাই ছাড়া অন্য কারো ভাবনা মাথায় আনবি না।
মুক্তির এমন রাগ দেখে পুনম ভয় পেলো। হাস্যজ্জল মুক্তির এমন ব্যবহার মেনে নিতে পারল না পুনম ডুকরে কেদেঁ উঠল পুনমকে কাদতে দেখে মুক্তির ঘোর ভাঙ্গে। বোধ হয় সে রাগে কি বলে ফেলেছে তবুও মায়া দেখায় না চুপচাপ পূর্বকে কোলে নিয়ে বেড়িয়ে যায় পুনমের ঘর থেকে। মায়ের কাছে পূর্বকে দিয়ে হনহন পায়ে নিজের ঘরে গিয়ে ঠাসস করে দরজা আটকে ফোন দেয় চন্দ্রকে।
চন্দ্র ফোন রিসিভ করতেই মুক্তি শান্ত স্বরে জিজ্ঞাসা করল বাসায় কখন আসবে চন্দ্র বলল রাত হবে। মুক্তি আর কিছু না বলে কেটে দিলো।
____________________
রাত নয়টা পারভেজ সাহেব,, কামরুল সাহেব চাদনী বেগম ও মুক্তি একসঙ্গে বাসায় ঢোকে। বিকালের দিকে চাদনী বেগম পুনমকে শপিং এ যাওয়ার জন্য ডাকলেও সাড়া দেয়না পুনম তখন মুক্তি কথা কাটানোর জন্য বলে পুনম তাকে বলেছে তাদের পছন্দ মতো কিনতে। রোজিনা বেগমকে নিতে চাইলে সে যেতে পারে না অসুস্থ থাকায়।
— পুনম কই??
রোজিনা বেগম থেকে পানি নিতে নিতে বলল পারভেজ সাহেব। রোজিনা চিন্তিত স্বরে বলল
— মেয়েটা সেই যে দুপুরে ঘরে যেয়ে দোর দিল এখন পযর্ন্ত দরজা খুলছে না এতো ধাক্কালাম তাও সাড়া নেই।
— কি বল তুমি আমাকে ফোন দিলে না কেনো??
বলেই পুনমের ঘরের দিকে যায়। তার পিছু পিছু সবাই যায় মুক্তি বাদে।
কাদতে কাদতে ঘুমিয়ে পরেছিল পুনম। গভীর ঘুমে হঠাৎই জোরে জোরে দরজা ধাক্কানোর শব্দে ঘুম হালকা হয়। টেনে চোখ মেলে তাকায় বাবার গলা শুনে ঢুলতে ঢুলতে দরজা খুলে।
পুনমকে দরজা খুলতে দেখে সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে।
— কি হয়েছে আম্মা চেহারার এমন অবস্থা কেনো??
মাথায় হাত বুলিয়ে বলল পারভেজ সাহেব। পুনমের কান্না ঠেলে আসতে চায় তবে চাচা চাচীকে দেখে নিজেকে সামলায় এখন বাবাকে বলায় সঠিক সময় না ভেবে চুপ থাকে।
— দুপুরে ও কিছু খাসনি এখন খেতে আয়। চাদনী বেগম মাথায় হাত বুলিয়ে বলল।। চাচীর আদরে পুনমের মন খারাপ ক্রমশ বেড়ে যায় সে সবাইকে কি জবাব দেবে। ভেবেই মনে ঝড় উঠে তবে তা অদৃশ্য কিন্তু পিছনে দাড়িয়ে থাকা মুক্তি কিছুটা আচ করতে পারে। তবুও একবিন্দুও মায়া দেখায় না। কোথাকার কোন আলী তার ভাইয়ের জায়গা নিবে কখনও না।
#চলবে
#পূর্ণিমায়_বিলীন_চন্দ্র
#সাদিয়া_আক্তার
#পর্ব_৪০
চন্দ্রের ঘরের বারান্দা দিয়ে চিকন একজনের যাওয়ার মতো একটা সিড়ি আছে যেটা ছাদে চিলেকোঠার পিছনের গেইটে যায়।
চন্দ্র চিলেকোঠার ঘরে বসে কাউচে শুয়ে দুই হাত মাথার পিছনে দিয়ে। এলোমেলো ভাবনায় বিভোর। পুনম তো এতোক্ষণে বিয়ের খবর জেনে গিয়েছে সে না করেছে নাকি হ্যা কিছুই বুঝতে পারছে না চন্দ্র। মাষ্টার্সের লাষ্ট পরীক্ষা দিয়েছে গত চারদিন আগে রেজাল্ট দিলেই ইনশাআল্লাহ জাবিতেই প্রফেসর হিসেবে জয়্যেন করবে। তাই চন্দ্র চেয়েছে বিয়েটা কিছু দিনের মধ্যেই হোক আর তার জন্যে এটা জানারও জরুরি ছিলো পুনম কি সত্যি শের “এ আলী সাহেবকে ভালোবাসে কি না??
চন্দ্রের জন্য এটা জানা খুব জরুরী যে পুনম তাকে কতটুকু ভালোবাসে কারণ যখন পুনমের সামনে সত্যিটা আসবে তখন তাকে চন্দ্রের কন্ট্রোল করতে সুবিধা হবে। কারণ ভালোবাসায় অভিমান থাকে ঘৃণা না।
আর চন্দ্র খুব তার অভিমানিতার অভিমান ভাঙ্গাতে পারবে।
________________
আস্তে ধীরে পূর্বর পাশ থেকে উঠল পুনম। মাঝে পূর্ব অপর পাশে মুক্তি। আজ মুক্তি পুনমের সাথেই শুয়েছে তার ভয় হয়েছে পুনমের জন্য। পুনম একজন প্রেমিকা আর প্রেমিকারা সবকিছু করতে পারে। একজন প্রেমিকা কোনো কিছুর পরোয়া করে না না বাবা মায়ের মান সম্মান না সংসার। যদি পুনম পালিয়ে যায় তাই তাকে পাহারা দিতেই আজ তার সাথে শুয়েছে মুক্তি।
পুনম ধীর পায়ে উঠে বীনা শব্দে দরজা খুলে বের হয় পুনম বের হতেই মুক্তি চোখ খুলে পুনমের পিছু নেয়। পুনমকে চন্দ্রের ঘরের দিকে যেতে দেখে অবাক হয় তবে পুনমকে ঘরে না ঢুকতে দেখে মাঝপথে থেমে যায় মুক্তি।
চন্দ্রের ঘরের দরজা লক দেখে হতাশ হয় পুনম পরোক্ষণেই মনে হয় চন্দ্র বাসা ছাড়া কোথাও থাকে না। আর বাসায় থাকলে নিজের ঘরে না থাকলেও চিলেকোঠায় অবশ্যই থাকবে। তাই পুনম ছাদের দিকে রওনা দেয়। মুক্তি পুনমকে ফিরে আসতে দেখে ঘরে ঢুকে যায় পুনমকে ঘরে ঢুকতে না দেখে ফের বের হয়। দেখে পুনম ছাদের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। সেও পুনমের পিছু নেয়
ছাদে চিলেকোঠার ঘরের সামনে দাড়িয়ে আছে পুনম ভেতর থেকে দরজা লক না থাকলেও চাপানো দরজা। পুনম টোকা দেয়
— চন্দ্র ভাই ঘুমিয়ে গেছেন??
ঘুমায়নি চন্দ্র ক্লান্তিতে চোখ মুদে ছিলো তা উধাও হলো পুনমের ডাকে। প্রতিদিন রাত জেগে পুনমের সাথে কথা বলার অভ্যাস দারুন এখানো ঘুম আসছে না। আবারও পুনম নক করলে চন্দ্র উঠে দরজা খুলে
পুনম চন্দ্রের দিকে তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নেয়। এই লোকটা সাথে তার কোনোকালে সখ্যতা ছিলো না সদা ভাই হিসেবে সম্মান করত তাকে কিভাবে,,, আর ভাবতে পারছে না পুনম।
— কিছু বলবি
শান্ত স্বর চন্দ্রের নেত্র জোড়া গভীর জোহরার পানে।
— হহ্যা
থামে পুনম মনে সাহস জোগান দেয়। মাথা নিচু করেই বলে — আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারব না চন্দ্র ভাই
চন্দ্র পুনমের দিকে তাকিয়ে শান্ত মুখস্রী তবে মনে মনে কিছু শোনার আশায়। তবে পুনম তাকে নিরাস করে না আজ
— ভার্সিটির প্রথম দিনেই চিঠি পেয়েছিলাম একটা। ধীরে ধীরে চিঠি আদান প্রদান বাড়তে থাকে,,,
পুনমকে বলতে না দিয়ে চন্দ্রই বলল — সেখান থেকে বন্ধুত্ব বন্ধুত্ব থেকে প্রেম কি তাইতো??
পুনম হতবাক দৃষ্টিতে তাকায় চন্দ্রের দিকে সেই দৃষ্টি পাত্তা দিলো না চন্দ্র গম্ভীর স্বরে বলল — তো এখন কি করতে পারি আমি???
— আপনার সাথে আমার কোনো ভাবেই যায়না। আর আমি এতোদিন আপনাকে ভাইয়ের নজরে দেখেছি,,
— এখন হবু স্বামীর নজরে দেখ বিয়ের পরে স্বামীর নজরে দেখবি। আমিও বউ বউ নজরেই দেখা শুরু করি তাহলে
কটমট করে উঠল পুনম চিল্লিয়ে কিছু বলতে চাইলেও থেমে যায়।
দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে পুনম মনে মনে নিজেকে শান্তনা দেয় — বি কুল পুনম এই ঘাড় ত্যাড়ার সাথে ঘাউড়ামি করে লাভ নেই তাকে নিজের অনুভূতি বুঝা।
ফের চন্দ্রের দিকে তাকিয়ে বলে — হ্যা তাই আমার পক্ষে আপনাকে বিয়ে করা সম্ভব না আর যদি বিয়ে করেন তাহলে বাসর রাতেই আপনার গলায় ছুরি চালিয়ে ডিবোর্স পেপারে সাইন করাব।
পুনমের কথায় চন্দ্র ঠোট চেপে ডান ভ্রু উচু করে। পুনমের হাত ধরে তাকে ঘরে নিয়ে যায় কিচেন থেকে একটা ছোট্ট নাইফ নেয়। পুনমের হাতে দিয়ে বলে — ডেমো দেখা,,,,
মুখ খানা চুপসে গেলো পুনমের সে ছুরি বিছানায় ছুড়ে ফেলে বের হতে হতে বলল — আপনার গলায় ছুরি না ধরতে পারলে কি হবে পালিয়ে তো যেতে পারব।
পিছন থেকে চন্দ্রও বাকা স্বরে বলল — সেটার ডেমো দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
রাগে দুঃখে পুনমের এখন কাদতে মন চাইছে। তাও আবার মাথার চুল ছিড়ে। সকল রাগ গিয়ে পরল চন্দ্রের উপর ধপ করে অর্ধেক সিড়িতে বসে কান্না করে দেয়।
— শা*লার চাচাতো ভাই তুমি তোমার চাচাতো বোনের দুঃখ বুঝ না। তাকে বোন বোন নজরে না দেখে বউ বউ নজরে দেখার কি দরকার। ফাউল মার্কা লোক।
বিড়বিড় করে চন্দ্রকে গালি দিয়ে কেদেঁ চলেছে। মুক্তি অনেক্ষণ আগেই ঘরে চলে গেছে।।
বিয়ের আমেজ শুরু হয়েছে সকাল থেকেই। সকাল সকাল সবাই এসে হাজির হয়েছে পুনমের ফুপুরা রুপশা লিমন। ছোট চাচারা মুক্তির শশুর বাড়িতেও দাওয়াত দেয়া হয়েছে। তারা কাল সন্ধ্যায় হলুদের সময় আসবে।
হলুদের অনুষ্ঠান বাড়ির পিছনে লনে করা হবে আর বিয়ে হবে হাউজিং ক্লাবে। সেভাবেই সব সেট করেছে রিশান শিহাব। তারাই তোড়জোড় করে সব আয়োজন করছে চন্দ্র এসবের ধারে কাছেও নাই সে আয়েশ করে ঘুমাচ্ছে চিলেকোঠায়। অপর দিকে নিঝুম রিমি রুপশা সকলে পুনমের ঘরে হামলা দেয়। বেশ রাত করে ঘুমানোর ফলে গভীর ঘুমে পুনম ঝিনুক কানের পাশে পু করে বাশি বাজাতেই পুনম ধরপরিয়ে উঠল।
ঝিনুককে দেখে মুখ গোমড়া করল এই প্রথম সবার আগমনে নাখোশ পুনম তবে কাউকে কিছু বলতে পারছে না। কাকে বলবে যে তাকে সবচেয়ে বেশী বুঝত সেই তাকে বুঝে নাই আর তার ভাই তো আরেক কাঠি উপরে। পালিয়ে যাবে সেটার ডেমো দেখবে ঐ লোক।
নাক মুখ কুচকে ওয়াশরুমে চলে যায় পুনম। রিমি ঝিনুক হা হয়ে তাকিয়ে থাকে
— একি হলো রুপশা আপু পুনম এমন ইগনোর করল ক্যান
— আরে লজ্জা পাইছে,, জানিসই তো ও কেমন নাজুক,,;
সবাই বিশ্বাস করে মুক্তির কথা। চলতে থাকে আরো বিভিন্ন
আলাপ বিকালে হলুদের জন্য মুক্তি কি কি ড্রেস এনেছে কে কিভাবে সাজবে। আবার চলে গেলো মুক্তির ঘরে ড্রেস দেখতে।।।
পুনম ফ্রেশ হয়ে এসে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে। তার কোনো কিছুই ভালো লাগছে না আচ্ছা পুনম তো এখনো আব্বুকে কিছুই বলেনি একবার আব্বুর সাথে কথা বলে দেখবে।
ভেবেই ঘর থেকে বের হয়ে পারভেজ সাহেবের ঘরে যায়। পারভেজ সাহেব ঘরে টাকা নিতে এসেছিল।
ভাগ্য ভালো থাকায় পুনম বাবা মাকে একাই পায়।।
— আসব আব্বু,,
— আসেন আম্মাজান বাবার ঘরের পথ তো এখন ভুলেই গেছেন।
— কে বলল কাল সকালেও তো তোমাকে জৈন ভিজানো পানি দিয়ে গেলাম।
পারভেজ সাহেব জিহ্বায় কামড় দিয়ে বলল — উই ভুলে গেছি।
পুনম আজ আর হাসল না। ধীর পায়ে আব্বু আম্মুর সামনে দাড়ায়। পারভেজ সাহেব ও রোজিনা বেগম একে অপরের দিকে তাকায়। আবার পুনমের দিকে তাকিয়ে পারভেজ সাহেব জিজ্ঞাসা করেন — কিছু বলবেন আম্মাজান??
মাথা নাড়ে পুনম ঢোক গিলে বলে — আমি এই বিয়ে করতে পারব না
পুনমের কথায় পারভেজ সাহেব রোজিনা বেগম হতবাক। — কি বলছিস মাথা খারাপ সব আয়োজন শেষ লোকজন আসা শুরু হয়েছে। কোথায় দাড়াবে তোর আব্বুর মান ভেবে দেখেছিস।
ডুকরে কেদেঁ উঠল পুনম। রোজিনা বেগম কিছু বলতে নিলে তাকে থামায় পারভেজ সাহেব।
পুনমের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে — আমি আরো একবছর আগে তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম তোমার জীবনের এই ইম্পরট্যান্ট ডিসিশনটা আমি নিতে পারি কিনা তুমি সেদিন নির্ধিদায় বলেছিলা আমি তোমার জন্য যাকে পছন্দ করব তুমি তাকেই বিয়ে করবে তাহলে আজ এই কথা ক্যান??
গম্ভীর স্বর পারভেজ সাহেবের তবে আজ কেমন তীক্ষ্ম কথাগুলো। তা মনে হতে কেপে উঠল পুনম এটা কিভাবে ভুলে গেলো পুনম। সেতো সেদিন তার বাবাকে কথা দিয়েছিল তার পছন্দ ছেলেকেই সে বিয়ে করবে। এখন এখন কোথায় যাবে পুনম। তবে পারভেজ সাহেবের কথায় আশার আলো জাগে পুনমের মনে
— আমার কাছে আমার মেয়ের ভালো থাকাটাই আসল। আজ হলুদের দিন থেকে কাল সকাল এগারোটা পযর্ন্ত তোমার সময় আছে এরমধ্যেই বিয়ে ভাঙ্গার কারণ উপস্থিত করবে। আর যদি না পারো তাহলে চন্দ্রকে বিয়ে করার জন্য প্রস্তত থাকবে।
বলেই পারভেজ সাহেব চলে যায়। পুনম হাটু ভেঙ্গে বসে কেদেঁ দেয়। এখন সে কি করবে ভেবে পায়না।।
তার সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
#চলবে