#সুপ্ত_প্রেমের_অনুরাগে🕊️
#পর্ব:দশ
#তামান্না_ইসলাম_কথা
(প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। আজকের পর্ব একটু বেশি রোমান্টিক এবং ইরোটিক। যারা বেশি রোমান্টিক পর্ব না পড়েন বা ইরোটিক না পড়েন তারা দয়া করে ইগনোর করবেন।)
আজ গোসল শেষ করে একটু বেশিই সময় নিয়ে বের হলাম। আদভিনের তখনকার ব্যবহার কষ্ট এবং খারাপ লাগা তৈরি করেছে। পুড়ে যাওয়া স্থানে পানি পড়তেই জ্বালা হতে শুরু করে। তীব্র যন্ত্রণায় চিৎকার করতে ইচ্ছে করে। কিন্তু সাংসারিক জীবনে ছোট ছোট ব্যাথা সহ্য করতে না পারলে নারী তো অল্পতেই ভেঙে যাবে। গোসল শেষ করে শরীরভেজা কেশ ছড়িয়ে পড়েছে আমার ঘাড়ের ওপর। পেছন দিক থেকে ধীরে ধীরে গড়িয়ে আসা পানির ফোঁটাগুলো ঠিক যেন কবিতার ছন্দের মতো। আজ পরেছি পাতলা সাদা নাইটি যেটা শাশুড়ি মা দিয়েছে। উনি হয়তো বুঝতে পেরেছিল দুপুরে করা আদভিনের ব্যবহার। সন্তানের সম্পর্কে একজন মায়ের থেকে আর কে ভালো বুঝে? পোশাক দেখে যতটা হতাশ হওয়ার কথা তার থেকেও বেশি হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। শাশুড়ি মা হয়তো আমার মনের অবস্থা বুঝতে পেরেছিল যার জন্য শুধু বলেছিল, স্বামীকে নিজের করে রাখতে মাঝে মাঝে এমন কিছু করতে হয় যেটা আমাদের পছন্দ না। তবুও করতে হয়। এরপর সেটা নিয়ে এসে রুমে ঘন্টা খানেক বসে ছিলাম। সেটা পড়েই বের হয়ে এসেছি। আলোকছায়ায় ভেতরের প্রতিটি ভাঁজ যেন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
আদভিন বিছানায় আধঁশোয়া হয়ে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। বাইরে তখনো ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে।
আদভিনের চোখে চোখ পড়তেই সে মুচকি হাসল।
“তুমি আজ একটু বেশি সুন্দর দেখাচ্ছে।”
আদভিন নিচু গলায় কথা গুলো বললো। আদভানির কথা শুনে কেমন লজ্জা করতে শুরু করলো। সে-ই সাথে এমন পাতলা পোষাকে নিজেকে সামলে নিতেও কষ্ট হচ্ছে।
আদভিনের কথার উত্তরে আমি কিছু বললাম না। ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলাম তার দিকে। আদভিনের চোখ যেন আটকে রইল আমার শরীরের বাঁকে, চোখের তৃষ্ণায়।
“তুমি কি আজ কথা কম বলবে?”
আদভিনের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করলাম। আদভিন এবার আধঁশোয়া থেকে উঠে বসে আমার হাতে হাত রাখল। তারপর টেনে নিয়ে এলো তাকে বুকের কাছে।
“আজ শুধু স্পর্শই বলবে সব কথা।”
আদভিন কথাটা বলল গম্ভীর গলায়। কিন্তু তার কন্ঠে ছিল এক নেশা। যা বুঝতে সময় লাগলো না।
আদভানিরে কথা শুনে ঠোঁটে লেগে থাকল এক অচেনা হাসি। আমি মাথা নিচু করে আদভিনের বুকের সঙ্গে গা ঘেঁষে দিলাম। ইতিমধ্যে আদভিনের হাত চুলের মধ্যে ঢুকে গেছে, আঙুলগুলো আমার ঘাড়ে থেমে গেছে।
“তুমি কেমন করে পারো প্রতিদিন আমাকে এভাবে নতুন করে ছুঁতে?”
চোখ বন্ধ করে ধীর গলায় আদভিনকে কথাটা বললাম।
আদভিন আমার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল,
“কারণ প্রতিবার তুমি নতুন হয়ে ওঠো আমার কাছে…”
আদভিন কথাটা শেষ করে তার এক পাগল উন্মাদ হয়ে গেল। ধীরে ধীরে আদভিন আমার গালে, গলায়, কাঁধে ঠোঁট ছুঁইয়ে যেতে লাগল।
প্রতিটি চুম্বনে আমি কেঁপে উঠছিলাম, গলার কাছ থেকে যখন সরে এলো বুকের দিকে, তখন আমার নিঃশ্বাস ভারী হয়ে এল।
পাতলা পোষাক খুলে নিচে পড়ে গেল শরীর উন্মুক্ত হল আবেশে, ঘরে ছড়িয়ে পড়ল গন্ধ, গরম নিঃশ্বাস, অজস্র শব্দহীন আবেগ।
আদভিন আমার বুকের মাঝ বরাবর ঠোঁট রাখে। একবার চুমু, তারপর দৃষ্টি… যেন ওর প্রতিটি কোষ পড়ছে।
আমার হাত আদভিনের ঘাড়ে, আঙুলে তর্জনী চেপে ধরা… সে আর নিজেকে আটকে রাখতে পারে না।
“আমি চাই তোমার ভিতরে হারিয়ে যেতে আদি। তোমার ভালোবাসায় নিজেকে সিক্ত হয়ে যেতে চাই।”
“তবে চলো।”
আমার কথা শেষ হতেই আদভিন কথাটা বললো। আচানক আদভিন আমাকে তার কোলে তুলে নিলো। আচানক এমন হওয়ায় ভয়ে আদভিনের গলা জড়িয়ে ধরলাম।
দুজনের শরীর একে অপরের গায়ে জড়িয়ে যায়।
আমার ত্বক ঘামে ভিজে যাচ্ছে, আদভিনের হাত ঘুরে বেড়াচ্ছে কোমর থেকে উরু, বুক, ঘাড় পর্যন্ত।
আদভিন নিজের ঠোঁট দিয়ে আমার চিবুকে চুমু খায়, তারপরে ঠোঁটে ঠোঁট। চুমু গভীর হয়, দীর্ঘ হয়, উষ্ণ হয়…
শরীর জুড়ে শুধু নিঃশ্বাস, উহ্…, কাঁপুনি… আর তাদের ছন্দ।
আদিম মিলন নিঃশব্দ নয় প্রতিটি ছোঁয়া যেন এক নতুন জোয়ার, প্রতিটি উত্থান যেন ভালোবাসার কাব্য।
বিছানার চাদরে চেপে আছে আমি আমার লম্বা চুল ছড়িয়ে পড়েছে বালিশের গায়ে। আদভিন এক হাতে আমার কোমর ধরে রেখেছে, অন্য হাতে আমার বুক ছুঁয়ে দিচ্ছে তীব্র উষ্ণতা।
আমার ঠোঁট বারবার কেঁপে উঠছে, শরীরটা একেকবার একেক ঢেউয়ে কাঁপছে। আমি আদভিনের বুকের নিচ থেকে সরে গিয়ে আদভিনকে আরও কাছে টেনে নিলাম।
“তুমি জানো তুমি কেমন করে আমায় পাগল করো?”
ফিসফিস করে কথাটা বললো আদভিন। আদভিন আবার আমার গলার কাছে মুখ নামিয়ে নিলো।
“তোমার ত্বকের গন্ধ, এই নিশ্বাস, আমি নিজের ভিতর আর ধরে রাখতে পারি না।”
তারপর ঠোঁট নামিয়ে আনে আমার বুকের বাঁকে
নরম, ধীরে ধীরে তারপর তীব্র।
আমার মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে চাপা কণ্ঠে আদভিনকে থামিয়ে দেওয়ার বৃথা চেষ্টা।
“আহ্! আদভিন থেমো না।”
আদভিনকে সরিয়ে দিতে দিতে কথাটা বললাম। সে-ই সাথে অনুধাবন করলাম আমি আদভিনকে এই প্রথম “তুমি” বলে সম্বোধন করলাম। আমার কথা শুনে আদভিন থামে না। আদভিনের হাত তখন আমার উরু ছুঁয়ে নামছে। এক মুহূর্তের জন্য আমি চমকে উঠলাম, তারপর নিজেকে ছেড়ে দেই আদভিনের কাছে। আদভিনকে আর আজকে যে কোন ভাবেই নিজের থেকে সরিয়ে নিতে পারব না সেটা বুঝতে পেরেছি। এ এক আদিম খেলায় মত্ত হয়েছে। একে থামানোর সাধ্য কারো নেয়।
আদভিন আমাকে একেবারে নিজের নিয়ন্ত্রণে নেয়, ধীরে ধীরে নিচে নামিয়ে নিয়ে যায় এক জাগতিক সুখের গভীরতায়।
আমার চোখ বন্ধ হয়ে আসে। বুক উঠা-নামা করছে, আমার ঠোঁট কামড়ে ধরে রেখেছি আমার নিজেরই ঠোঁট দিয়ে।
কয়েক মুহূর্ত বাদে, আমি নিজের শরীরকে উল্টে দেই আদভিনের উপর। আদভিনের হৃদস্পন্দন আমি শুনতে পাচ্ছি। আমার চোখে আগুন, ঠোঁটে দুর্বার আত্মবিশ্বাস।
“এবার আমার পালা।”
ফিসফিস করে আদভিনকে কথাটা বললাম।
আমার চুল নেমে আসে আদভিনের বুকে। আদভিন আমার দিকে তাকিয়ে থাকে স্তব্ধ হয়ে। আমার মুখে অজানা লোভ, চোখে কামনার আগুন, আর শরীরে জোয়ার।
আদভিনের বুক চুমে, তারপর আদভিনের কপাল এবং ঠোঁট। আমার কাজে যেন আদভিনের গলার স্বর হারিয়ে ফেললো।
“তুমি পাষাণ।”
আমার চোখে চোখ রেখে আদভিন ফিসফিস করে কথাটা বললো।
“আর তুমি আমার অভ্যাস।”
আদভিনের দিকে তাকিয়ে হেসে কথাটা বললাম। আদভিন তখনও অবিশ্বাস্য চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। যেন কিছুই বিশ্বাস করতে পারছে না।
তারপর আমি আদভিনের উপর শরীরের সমস্ত সীমা ভেঙে দেই।
একটা সময় আমরা দুজনেই হারিয়ে যায়, দম বন্ধ হয়ে আসে দুজনেরই।
ঘরের বাতাস ভারী, গরম। জানালার বাইরে বৃষ্টির শব্দ তখন থেমে গেছে, কিন্তু ঘরের ভেতর এখনো বৃষ্টি চলছে দুজনের শরীর জুড়ে।
আমি বিছানায় পড়ে রইলাম এক হেরে যাওয়া সৈনিকের মতো চুল এলোমেলো। গলা পর্যন্ত চাদর টানা। আদভিন আমাকে একটুখানি টেনে নিজের বুকের সঙ্গে জড়িয়ে ধরলো।
“এই মিলন কেবল শরীরের ছিল না তরু।”
কথাটা বলেই আদভিন একটু থামলো।
“আমি চাই, প্রতিবার তুমি আমাকে এমন করেই নতুন করে দাবি করো।”
আদভিনের বুকের ওপর মাথা রেখে ফিসফিস করে বললাম।
আদভিনের চোখে জল আসে। সে আমার কপালে চুমু খায়।
“তুমি কেবল আমার শরীর নও, তুমি আমার পূর্ণতা।”
“আবার যদি একদিন এই পৃথিবী ছেড়ে যেতে হয়, আমি চাই সেই শেষ রাতে তুমিই থাকো আমার পাশে, আদভিন।”
আদভিনকে আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কথাটা বললাম। আমার কথা শুনে আদভিন কিছু বলে না। শুধু তার সাথে জড়িয়ে ধরে আরও শক্ত করে।
রাত তখন গভীর। কিন্তু আমাদের ভালোবাসার ঘ্রাণ ঘরভর্তি। আমরা আবার একে অন্যের গায়ে ভেসে যায়… আবার শরীর জুড়ে বয়ে চলে আকুলতা, ঘাম, আর চুম্বনের দাবানল।
#চলবে