#ঔজ্জ্বল্যের_আলোক_প্রহর
#পর্বঃ৫
#লিখাঃতাসফিয়া_তাসনিম
রাতের খাবার খেতে সবাই বসেছে একসাথে। জ্যোতি খাবার নেড়েচেড়ে দেখছে খাওয়া বাদ দিয়ে। ভাব দেখেই বুঝা যাচ্ছে অনেকক্ষণ ধরে কিছু একটা বলতে চাচ্ছে।
“আব্বু…, তুমি…. শাহরিয়ারের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলে?”
হামজা সাহেবের খাওয়া থেমে গেলো। রত্নাও থেমে গেলেন। হামজা সাহেব মেয়ের দিকে তাকিয়ে বললেন,
“তুমি জেনেছো কীভাবে?”
জ্যোতি অস্বস্তি নিয়ে বললো,
“শাহরিয়ার ফোনে বলেছিলো।”
হামজা সাহেব কোনো কথা বললেন না, খাবারে মনযোগ দিলেন। জ্যোতিই পুনরায় জিজ্ঞেস করলো,
“তোমাদের মধ্যে কি কথা কাটাকাটি হয়েছিলো? উনি তোমাকে স্যরি বলেছেন। বলেছেন যা হয়েছে অনাকাঙ্খিত ভাবে হয়েছে।”
হামজা সাহেব শীতল চোখে জ্যোতির দিকে তাকালেন, কাঠকাঠ গলায় বললেন,
“জ্যোতি, মা, শুনো, ভালো হয় শাহরিয়ারের সাথে তোমার কন্টাক্ট না রাখলেই। অনেক কিছুই আগের মতো নেই। তাই তোমারও উচিত তাদের থেকে দূরত্ব মেইনটেইন করা।”
জ্যোতি চুপ করে গেলো। রত্নার পছন্দ হলো না স্বামীর কথা। কিন্তু জ্যোতির সামনে কোনোরকম তর্কেও জড়ালেন না তিনি।
বাকিটা সময় নীরবেই কাটলো, কেউ টু শব্দ না করে খাবার সেরে উঠলো।
জ্যোতি নিজের ঘরে গিয়ে চুপচাপ পাশ ফিরে শুয়ে পড়লো। মন খারাপ হচ্ছে তার হুট করেই। তার জীবনটা আসলেই আগের মতো নেই।
জীবনসঙ্গী নিয়ে সবার মনেই কত জল্পনা কল্পনা থাকে। জ্যোতিও তো তার ব্যতিক্রম ছিলো না। হাসিখুশি একটা সংসার চেয়েছিলো সে।
“আসলে যেই মেয়েগুলো জীবনে শুধু একটা সংসার চায়, বেছে বেছে সেই মেয়েগুলোরই কেনো যেন একটা সংসার হয় না।”(কার্টেসী-ইসরাত ইতি)
রত্না মেয়েকে এক নজর দেখে স্বামীর কক্ষে গেলেন। স্ত্রীকে দেখে হামজা সাহেব জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালেন।
রত্না একটু দম নিয়ে বললেন,
“আপনি জ্যোতিকে যে কথাটা বলেছেন সেটা কি ঠিক?”
হামজা সাহেব বুঝতে না পেরে বললেন,
“কোন কথা?”
“শাহরিয়ারের সাথে যোগাযোগ না রাখার কথা?”
“ভুল কি বলেছি?”
রত্না দ্রুত স্বামীর পাশে বসলো।
“আপনি নাহয় জ্যোতির জীবন থেকে শাহরিয়ারকে সরিয়ে দিবেন, কিন্তু জ্যোতির সন্তানের জীবন থেকে কীভাবে সরাবেন? একজন বাবাকে তার সন্তানের জীবন থেকে আলাদা করা যায়? আপনি পারতেন জ্যোতিকে ছাড়া আলাদা থাকতে? ❝কারো উপর এমন কোনো জুলুম করবেন না যেটা আপনি নিজে সইতে পারবেন না!❞(~তাসফিয়া তাসনিম)”
হামজা সাহেব চোয়াল শক্ত করে বললেন,
“শাহরিয়ার আর আমাকে মিলানোর চেষ্টা করবে না রত্না!”
রত্না কেমন তাচ্ছিল্য করে বললো,
“বিয়ের কিছু বছরের মধ্যেও আমার যখন কোনো সন্তান হচ্ছিলো না তখন আপনার করা ব্যবহার আমি ভুলিনি। যাকগে, ইতিহাস না ঘাটি। আপনি যা বলেছেন সেটা আমার চোখে অনুচিত। বাচ্চাটা জ্যোতির একার না। শাহরিয়ারেরও। তাই শাহরিয়ার খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করাটা দোষের কিছু না!”
বলেই রত্না সেখান থেকে উঠে চলে গেলেন। হামজা সাহেব বিস্মিত হয়ে রত্নার যাওয়ার পথে তাকিয়ে রইলো।
____________________°________________
এক সপ্তাহ পরঃ
~~~~~~~~~~~~
শাহরিয়ার মহসিনের সাথে দুষ্টুমি করছিলো। একগাদা খেলনা এনে দিয়েছে ভাগ্নেকে।
মামা-ভাগনের খুনসুটির মধ্যেই মাহিরা এসে বসলো তাদের সাথে।
শাহরিয়ার মাহিরাকে দেখে বললো,
“রাজীব কল দিয়েছিলো?”
“সে তো প্রতিদিনই তিন চারবার দেয়। বউ বাচ্চা ছাড়া তার নাকি কিছুই ভালো লাগে না।”
শাহরিয়ারের মুড হুট করেই অফ হয়ে গেলো। এই এক সপ্তাহে জ্যোতির সাথে তার মোটে দুইবার কথা হয়েছে। লাস্ট কথাও হয়েছে দুইদিন আগে। জ্যোতি মানা করে দিয়েছে এত ঘনঘন ফোন দিতে। জ্যোতির ভাষ্যমতে এতো ফর্মালিটি মেইনটেইন না করলেও চলবে।
“ভাবীর সাথে কথা হয়েছে তোমার?”
মাহিরা যেন আগুনে ঘি ঢাললো।
“না।”
শাহরিয়ার ভোঁতা কন্ঠে উত্তর দিলো।
মাহিরা অবাক হয়ে ভাইয়ের দিকে তাকালো,
“লাস্ট কবে কথা হয়েছে তোমার ওর সাথে?”
“দুই দিন হয়েছে।”
“তুমিএর মধ্যে আর যোগাযোগ করোনি? আশ্চর্য!”
শাহরিয়ার তেতে উঠে বললো,
“তোর ভাবী নিজেই কথা বলতে চায় না, রেগুলার কল দিতে মানা করে দিয়েছে। তাহলে আমি কি কচু খেতে কল দিবো? আজব!”
ভাইয়ের মেজাজ আঁচ করতে পেরে মাহিরা দ্রুত টপিক চেঞ্জ করলো,
“আচ্ছা শুনো, আমি কাল পরশু বাসায় চলে যাবো। রাজীব আসবে নিতে।”
শাহরিয়ার একটু আগের মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করে বললো,
“এতো তাড়াতাড়ি চলে যাবি? আরও কিছুদিন থাকতি? এবার তো এসেছিসই অনেক দিন পর।”
“না, আর থাকা সম্ভব না। আম্মুও বার বার ফোন দিয়ে যেতে বলছে। আমাকে আর মহসিনকে অনেক মিস করছে বেচারি।”
শাহরিয়ার কথাটা শুনে একটু থমকালো। মাহিরার শাশুড়ী মাহিরাকে ভীষণ আদর করেন, একেবারে মাথায় তুলে রাখেন এটা জানে শাহরিয়ার। এবং হুট করেই আজ প্রথমবার এই বিষয়টা জ্যোতির সাথে রিলেট করার চেষ্টা করলো শাহরিয়ার। ফারিয়া জ্যোতিকে এক প্রকার অপছন্দই করেন, শুরু থেকেই এক প্রকার তাচ্ছিল্য করে এসেছেন। এইযে জ্যোতি এতোদিন ওর বাবার বাসায়, ফারিয়া একবারও জ্যোতির কথা জিজ্ঞেস করেননি শাহরিয়ারের কাছে। শুধু বাচ্চার কথাই যা একটু মাঝে মধ্যে জিজ্ঞেস করেন।
শাহরিয়ারের ভিতরে এক প্রকার অশান্তি শুরু হলো।
__________________°_______________
মাসখানেক পরঃ
~~~~~~~~~~~~~
শাহরিয়ার এসেছে মেহেরপুরের মৌলভী সাহেবের কাছে।
শাহরিয়ারকে দেখে মৌলভী সাহেব ভীষণ খুশি হলেন।
“আরে শাহরিয়ার যে! আসো আসো, অনেক দিন পরে দেখলাম তোমাকে।”
শাহরিয়ার সৌজন্যমূলক হাসি দিয়ে বসলো ভদ্রলোকের পাশে। কিছুক্ষণ কুশল বিনিময়ের পরে মৌলভী সাহেব প্রশ্ন করলেন,
“তা এতো দিন পরে কী মনে করে? কোনো দরকার ছিলো?”
শাহরিয়ার লজ্জা পেলো। আসলেই সে দরকারে এসেছে।
শাহরিয়ারকে লজ্জায় পড়তে দেখে মৌলভী সাহেব দ্রুত বললেন,
“আরে আরে আমি সেভাবে বলিনি। আমার মনে হলো তুমি কোনো সমস্যায় পড়েছো। আর আমি তোমাকে আগেও বলেছি কোনো সমস্যায় পড়লে নিঃসংকোচে আমার কাছে আসবে।”
শাহরিয়ার সংকোচ নিয়ে বললো,
“আসলে সমস্যা নিয়েই এসেছি। আপনি তো জানেন সম্ভবত আমার আর আমার স্ত্রীর ব্যাপারে।”
মৌলভী সাহেব শুনলেন মনোযোগ দিয়ে শাহরিয়ার কথা। কিছু বললেন না দেখে শাহরিয়ারই বললো,
“আচ্ছা বাচ্চা হওয়ার কতদিনের মধ্যে তালাক দেওয়া যাবে?”
মৌলভী সাহেব কিছুক্ষণ থম মেরে বসে রইলেন। তারপর বললেন,
“তুমি কি নিশ্চিত, তুমি তোমার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাইছো?”
শাহরিয়ার উসখুস করে বললো,
“ও নিজেই চাইছে।”
“তুমি চাইছো?”
শাহরিয়ার এবারও ভিন্ন উত্তর দিলো,
“আমার পরিবারও এটাই চাইছে!”
মৌলভী সাহেব অবাক হয়ে শাহরিয়ারের দিকে তাকালেন।
“তোমার কী হয়েছে শাহরিয়ার? আমি তোমাকে একই প্রশ্ন দুই দুইবার করলাম, অথচ একবারও তুমি সেটার জবাব না দিয়ে কে কী চাইছে সেসব বলছো!”
শাহরিয়ার থমকে গেলো।
“শাহরিয়ার, ছোট বেলায় তুমি আমার কাছ থেকে কোরআন শিক্ষা নিয়েছিলে। তুমি আমার সবচেয়ে ভালো ছাত্রগুলোর মধ্যে একজন ছিলে। তাই তোমাকে আমি স্নেহও করতাম একটু বেশি। তাই তোমার এই অবস্থা আমাকে ভীষণ কষ্ট দিচ্ছে!”
শাহরিয়ারের মাথা নত হয়ে এলো। উচ্চারণ করতে পারলো না কিছুই।
“দেখো শাহরিয়ার, তালাক এমন এক বিধান যেটা বৈধ তো অবশ্যই, কিন্তু আল্লাহর কাছে অপছন্দনীয়। আমাদের ধর্মে কিছু কিছু জিনিস হালাল, কিন্তু সেসব থেকে বিরত থাকতেই বলা হয়েছে। তালাকও সেসবের একটি। আমি যা বুঝলাম, তুমি নিজেই নিশ্চিত নও তুমি কী চাও। সেখানে তালাকের মতো একটা সিদ্ধান্ত এরকম হঠকারিতা করে নেওয়ার কোনো মানেই আমি দেখিনা। তুমি বুঝতে পারছো তো আমি কী বলতে চাইছি?”
শাহরিয়ার মাথা নেড়ে সায় জানায়।
“তুমি নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করো, বিষয়টা কি একেবারেই আবশ্যিক হয়ে দাঁড়িয়েছে তোমার কাছে? নাকি কিছু ভুলের কারণে এমন একটা সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে যেগুলো সংশোধনযোগ্য?”
শাহরিয়ার চুপ মেরে রইলো। মস্তিষ্কের তার শত চিন্তার ঝড় বইছে।
________________°_____________
জ্যোতির খালা মুক্তা এসেছেন জ্যোতিদের বাসায় বেড়াতে। সাথে তার ছেলে নওশাদ এসেছে।
মুক্তা কথায় কথায় শাহরিয়ার জ্যোতির কথা তুললেন। রত্না বিরক্ত হলেও চুপ করে রইলেন। তার বোনকে নিতান্ত সরল মনেই মনের দুঃখে বিষয়টা জানিয়েছিলেন। এখন নিজেরই আফসোস হচ্ছে তার কেনো জানাতে গেলেন। আসলে এসব বিষয় চেপেও থাকে না। এলাকায় তাদের আরও আত্মীয় স্বজনও আছে। কারো না কারো মাধ্যমে ঠিকই ঘটনা চাউর হয়ে যেতো।
“সত্যি সত্যি বাচ্চা হওয়ার পর আলাদা হয়ে যাবে জ্যোতি?”
রত্না দায়সারা ভাবে মাঝামাঝি উত্তর দিলেন,
“দেখি আল্লাহ কী করে।”
মুক্তা গুরুতর বললেন,
“বাচ্চাটা শুধু শুধু রাখছে জ্যোতি। ওই ছেলের সাথে তালাক নিলে বাচ্চাটা কেনো নিচ্ছে বোকার মতো?”
রত্না বিতৃষ্ণা নিয়ে বললো,
“আমার সামনে বলেছেন, বলেছেন। জ্যোতির সামনে বলবেন না।”
“ওই ছেলের সাথে তালাক হলেই ভালো হবে। আমাদের মেয়েটারে কী কষ্টটাই না দিছে ওর পুরা গোষ্ঠী! ওই ঘরে আর পাঠানোর দরকার নেই। জ্যোতিরে এখনও আমি নিজের মেয়েই মানি। এখনও আমার আপত্তি নাই, ইদ্দতের পর জ্যোতি আর নওশাদের বিয়ের ব্যবস্থা করলে—”
রত্না এবার অধৈর্য হয়ে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালেন,
“আপা, আমার মেয়ে এখনো বিবাহিত, এখনও তালাক হয় নাই ওর। জ্যোতি এখনও একজনের নিকাহ’তে আছে। এই কথা তুলাটা কি খুব দরকার? এটা স্পষ্টত গুণাহ। তওবা করুন!”
মুক্তা বেজার হয়ে বললেন,
“রাগ করলি? আমি তো ভালোর জন্য বলছি। আমার কথাটা ভেবে দেখিস!”
_________________°________________
জ্যোতি বাগানের দোলনাটায় বসে দোল খাচ্ছিলো। মৃদু বাতাস বইছে। আকাশটাও মেঘলা। যখন-তখন বৃষ্টি নামতে পারে। এই আবহাওয়াটাই জ্যোতির সবচেয়ে প্রিয়। বৃষ্টি হওয়ার আগমুহূর্তটুকু।
নওশাদ হঠাৎ করেই সেই সময়ে সেখানে চলে এলো।
জ্যোতি অপ্রস্তুত হলো ভীষণ। এই সময় এখানে আশা করেনি সে নওশাদকে। দ্রুত নিজের মাথায় কাপড় দিলো। নওশাদ জ্যোতির কাছাকাছি এসে দাঁড়ালো পায়ে পায়ে। কেমন লাজুক হেসে প্রশ্ন করলো,
“কেমন আছো, জ্যোতি?”
“আলহামদুলিল্লাহ। আপনি কেমন আছেন ভাইয়া?”
নওশাদের হাসি হাসি মুখটা যেন বিদীর্ণ হয়ে গেলো নিমিষেই। শুষ্ক কন্ঠে বললো,
“আমিও আলহামদুলিল্লাহ।”
বলে দুজনেই চুপ। জ্যোতি মনে মনে বিরক্ত হচ্ছে ভীষণ। নওশাদ জ্যোতিকে পছন্দ করতো এটা জ্যোতি জানে। খালাও জ্যোতিকে নিজের ছেলের বউ করার জন্য উৎসাহী ছিলেন। নওশাদের জন্য খালা প্রস্তাবও দিতেন, কিন্তু এর আগেই শাহবাজ পরিবার থেকে জ্যোতির জন্য প্রস্তাব এলো। জ্যোতিরও বিয়ে হয়ে গেলো। এটা নিয়ে খালা অনেক দিন রাগ করে ছিলেন। পরে রত্না কীভাবে কীভাবে যেন বোনের মান অভিমান ভাঙিয়েছেন। নওশাদের মনে জ্যোতিকে নিয়ে এখনও কিছু আছে কিনা জ্যোতি জানে না, কিন্তু নওশাদ তার আশেপাশে থাকলে জ্যোতি ভীষণ অস্বস্তি বোধ করে। এই মূহুর্তেও তাই বোধ করছে।
নওশাদ হঠাৎ বলা শুরু করলো,
“শুনেছি তোমার—”
“আম্মু ডাকছে মনে হচ্ছে! আমি যাই!”
জ্যোতি নওশাদকে বাক্য সম্পূর্ণ করতে না দিয়েই দ্রুত বললো। তারপর একপ্রকার সটকে পড়লো সেখান থেকে তড়িঘড়ি করে।
নওশাদ হতাশ হয়ে জ্যোতির যাওয়া দেখতে লাগলো।
______________°_____________
দুইদিন পরঃ
~~~~~~~~
শাহরিয়ার আধা ঘণ্টা লাগিয়ে লম্বা একটা শাওয়ার শেষে তোয়ালে দিয়ে গা মুছতে মুছতে বের হলো। মিররের সামনে দাঁড়িয়ে চুল মুছতে মুছতে হঠাৎ ভাইব্রেশনের আওয়াজ পেয়ে মিরর দিয়েই বেডে তাকালো। কল এসেছে দেখে দ্রুত বেডের কাছে গিয়ে হাতে নিলো ফোনটা। স্ক্রিনে ইলিয়াস নামটা জ্বলজ্বল করছে। এটাকে রাকিব হাবাটার বদলে নিয়োগ দিয়েছে সে।
কল রিসিভ করে কানে ঠেকিয়ে বললো,
“হ্যাঁ, বলো।”
“স্যার আমি আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আপনাকে কল করে যাচ্ছি। কল ধরছেন না একবারও!”
শাহরিয়ারের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়লো,
“কী হয়েছে? কোনো ইমার্জেন্সি?”
“স্যার ম্যাম অনেকক্ষণ আগে উনার মাকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়েছেন।”
“মানে! কোথায় যাচ্ছে জানতে পেরেছো?”
শাহরিয়ার এক প্রকার চেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করলো!
“সিএনজি ড্রাইভারকে সদর হাসপাতালের কথা বলতে শুনেছি। এজন্যই আপনাকে বারবার কল দিচ্ছিলাম!”
“ওহ নো! আচ্ছা তুমি রাখো, আমি বের বের হচ্ছি।”
বলেই ফোনটা বেডে ছুড়ে মারলো একপ্রকার শাহরিয়ার।
দশ মিনিটের মধ্যে কোনোমতে তৈরি হয়ে শাহরিয়ার নিজের গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো উদভ্রান্তের ন্যায়। মস্তিষ্কে হানা দিচ্ছে ভীষণ ভয়ানক ভয়ানক ভাবনা যেগুলো শাহরিয়ার ভাবতেও চাইছে না। মনে এক অশনি সংকেত কু ডাকছে বারংবার তার………..
#চলবে………