তারপর একদিন পর্ব-০৮

0
1

#তারপর_একদিন
লেখনীতেঃ রিধিমা জান্নাত রূপা
পর্বঃ ০৮
.
“আপনাকে দেখতে ভালো লাগে, তাই দেখি! এখন ঘুমাতে দিন আমাকে।”

“এ্যাই মেয়ে! কিসব বলছ, হ্যাঁ? উঠো বলছি, ছাড়ো আমাকে।”

সিতারার ঘুম ভেঙে যায় এবার। পিটপিট চোখে তাকিয়ে নির্ঝরের বুকে হাতের ভর রেখে মাথা তুলে চায়। ঘুম জড়ানো কণ্ঠস্বরে সুধায়, “কী হয়েছে?”

“তখন থেকে এসব কি বলছ!”

“ভুল কি বলেছি? আপনাকে দেখব না তো অন্যকাউকে দেখব? আশ্চর্য!”

“এত আশ্চর্য হতে হবে না! ছাড়ো আমাকে।”

সিতারা ছাড়ল না ওকে। বরং ঠোঁটে মুচকি হাসি নিয়ে নির্ঝরের বুকে মাথা রাখল। দু’হাতে আলতো করে জড়িয়ে ধরে বলল, “সব বর’রা কি সুন্দর তাদের বউকে সকাল সকাল জড়িয়ে রাখে, আদর করে, আর আপনি.. আপনি আমায় ছাড়তে বলছেন! উঁহু! ছাড়ব না।”

কপাল কুঁচকে ফেলল নির্ঝর। বলল, “সবার বর জড়িয়ে রাখে, আদর করে, সেটা তুমি কি-করে জানলে, হ্যাঁ?”

“বাহ্ রে! নাটক সিনেমায় দেখি নি বুঝি? তাছাড়া ভাবীরাও তো আমাকে বলত! এখানে আসার আগেও তো সবাই আমাকে বলেছে, আপনার আদরে আমি…”

খুকখুক করে দু’বার কেশে উঠল নির্ঝর, থামিয়ে দিলো ওকে। মেয়েটাকে ঠেলে সরানোর চেষ্টায় গম্ভীর কণ্ঠে বলল, “সরো এখান থেকে। তোমার ফালতু কথা শোনার আগ্রহ মোটেও আমার নেই।”

সিতারা উঠে বসল এবার বিছানায়। অর্ধ খুলে যাওয়া শাড়ির আঁচল’টা বুকে জড়িয়ে নিলো। নির্ঝর উঠে বসতেই ও বলল, “বউকে একটু আদর করতে বলাতেই আপনার কাছে ফালতু কথা হয়ে গেল? আপনি…”

“চুপ! আর একটাও কথা না।”

বলেই একটু থামে নির্ঝর। বিছানা থেকে নামতে নামতে বলে উঠে, “তুমি যে দিনকে দিন অসভ্য হয়ে যাচ্ছ! সেটা কি তুমি জানো সিতারা?”

“স্বামী’রা অসভ্য না হলে বউদের একটু আধটু অসভ্য হতেই হয়। আমার তো মনে হয় না, আপনি কখনো অসভ্য হতে পারবেন। তাই আমিইই…”

“একদম চুপ! হাঁটুর বয়সী মেয়ে হয়ে তুমি আমার মুখে মুখে জবাব দাও? আশ্চর্য!”

“হাঁটুর বয়সী মানে?”

বলেই খাট থেকে নেমে নির্ঝরের কাছে চলে এলো সিতারা। ছেলেটার পাশাপাশি দাঁড়িয়ে নিজেকে ওর কাঁধ বরাবর হাতের ইশারা করে বলে উঠল, “এই দেখুন—আমি আপনার হাঁটু নই, কাঁধ বরাবর! একদম আমাকে হাঁটুর বয়সী বলবেন না, কাঁধের বয়সী বলবেন।”

কটমট চোখে তাকায় নির্ঝর। কিঞ্চিৎ রাগ নিয়ে কিছু বলতে নিতেই চুপ করে যায়। চুপ করে যায় সিতারার উন্মুক্ত পেট ও এলোমেলো ভাবে শাড়ির আঁচল ফেলে রাখা বুকে নজর পড়তেই। নির্ঝরের বেহায়া দৃষ্টি সরে নিতে চাইলেও ফের সেখানে গিয়েই আটকাল।

চোখ বন্ধ করে, জোরে দু’বার শ্বাস ফেলে নিজেকে ধাতস্থ করার চেষ্টা। সিতাকে ও বলেছিল—শাড়ি না পরার কথা। অথচ মেয়েটা দিব্যি ওর কথা উপেক্ষা করে শাড়ি পড়ে থাকে। কিঞ্চিৎ রাগ নিয়ে ফের কিছু বলতে গেলেই নির্ঝরের স্বরণে এলো—মেয়েটার তো শাড়ি ছাড়া পড়ার মতো কিছু নেই বাসায়। সেদিন বাইরে নিয়ে যাবে বললেও সিতারার অসুস্থ তার কারণে বেরুতে পারে নি। এরপর এমন পরিস্থিতিতে পরে নি বলে ভুলেই বসেছিল কথাটা।—কথাগুলো ভেবেই সুপ্ত নিশ্বাস ছাড়ল নির্ঝর। বলে উঠল, “বিকেলে রেডি হয়ে থাকবে, আফিস থেকে ফিরে বাইরে নিয়ে যাব তোমায়। যা যা ইচ্ছে হয় কিনবে, তবুও এই শাড়ি টাড়ি পরবে না আমার সামনে।”

“কেন, শাড়িতে কি বড্ড বাজে দেখায় আমাকে?”

“বাজে দেখায়, বড্ড বাজে দেখায়! এতটাই বাজে দেখায় যে, নিজের ভেতরের পুরুষত্বকে সামলানো মুশকিল হয়ে পরে।”

কথাটা মনে মনেই বলল নির্ঝর। সিতারা ওর পানে তাকিয়ে রইল। জবাব না পেয়ে ফের সুধাল, “খারাপ লাগে আমাকে?”

“হ্যাঁ! লাগে।”

ছোট করে জবাব দিয়ে ওয়াশরুমের দিকে লাগে। সিতারার ঠিক পছন্দ হয় না ওর জবাব। কপাল কুঁচকে বলে উঠে, “কিন্তু আমি তো জানি, শাড়িতে মেয়েদের সুন্দর লাগে। তবে আপনি কি মিথ্যা বলছেন আমাকে?”

“বলেছি না, শাড়ি টাড়ি আর পরবে না। এরপরও এত কথা বাড়াচ্ছ কেন? বিকেলে রেডি হয়ে থাকবে।”

বলেই চলে ওয়াশরুমে ঢুকে নির্ঝর, শব্দ করেই দরজা আটকে দেয়। এদিকে ভানা নিয়ে দাঁড়িয়ে রয় সিতারা—আসলেই কি ওকে খারাপ দেখায় শাড়িতে!”

.
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে বেশ পরখ করে দেখছিল সিতারা। তাকে কেমন দেখাচ্ছে, ভালো লাগছে তো?—এটাই ওর ভাবনা! আজ প্রথম নির্ঝরের সাথে বেরুবে বলে কথা, ভালো না লাগলে হবে?
আজ মেরুন রঙের শাড়ি পড়েছে সিতারা। সাজ বলতে অন্য দিনের তুলনায় শুধুই চোখে গাড়ো মোটা করে কাজল দেওয়া। কানে ছোট্ট ঝুমকো, নাকে বিয়ের নাক ফুল, এবং দু’হাতে লাল কাঁচের চুড়ি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও চুলগুলো নিয়েই ভাবনা ছিল। আজ নির্ঝরের সাথে বেরুবে বলে শ্যাম্পুও করেছিল চুলে। কিন্তু, বাঁধবে কিভাবে, তা নিয়েই যত ভাবনা ওর। এরপর কোমর পর্যন্ত চুলগুলো বরাবরের মতোই বেণী করতে চাইল। পরমুহূর্তেই কিছু ভেবে কাঠি দিয়ে খোঁপা করে নিলো। নাহ্! খারাপ লাগছে না। মোটামুটি ভালোই দেখাচ্ছে ওকে। নির্ঝরের পাশে ভালোই দেখাবে ওকে।

ভেবেই—মুচকি হাসল সিতারা। আয়নার সামনে দাঁড়িয়েই অপেক্ষার প্রহর গুনতে লাগল নির্ঝরের। এই তো, মানুষটার আসার সময় হয়েই গেছে। এখন হুট করেই চলে আসবে, রুমে ঢুকে বোধহয় ফ্রেশ হবে আগে, এরপর গায়ে শার্ট চাপিয়ে বেরুবে ওকে নিয়ে। আচ্ছা, কি রঙের শার্ট পড়বে মানুষটা? বরাবরের মতোই কালো নয়ত সাদা রঙের শার্ট, না-কি ওর শাড়ির সাথে ম্যাচিং করা মেরুন রঙের শার্ট?—ওর কল্পনায় দেখতে থাকল নির্ঝরকে। ভাবনার মাঝেই গুণ গুণ করে গেয়ে উঠল,

“আমার হৃদয় একটা আয়না, এই আয়নায় তোমার মুখটি ছাড়া কিছুই দেখা যায় না! ওওও.…”

দরজার শব্দে থেমে যায় সিতারা। তাকিয়ে দেখে নির্ঝর এসেছে। ক্লান্ত শরীরে অফিস ব্যাগ কাঁধ থেকে নামাতেই সিতারা ওর কাছে এগিয়ে আসতে আসতে, “আপনি এসেছেন!”

মেয়েটার ঠোঁটে লেগে আছে বিস্তার হাসি। নির্ঝর ওর পানে তাকাতেই সিতারা হাত বাড়িয়ে ব্যাগ নিতে বলল, “দিন আমাকে।”

নির্ঝর ওকে ব্যাগটা দিয়ে ভালোভাবে পরখ করল। কয়েক সেকেন্ডের মতো সময় নিয়ে এরপর বলল, “রেডি হয়েছ তুমি!”

“হু! আপনি ফ্রেশ হন, আমি কিছু নাস্তা আসছি।”

“উঁহু! লাগবে না। শুধু এক গ্লাস ঠান্ডা পানি আনো। আমি একেবারে ফ্রেশ হয়ে, রেডি হবো।”

সিতারা কথা বাড়ায় না। সায় জানিয়ে বেড়িয়ে যায় ঘর ছেড়ে, আর নির্ঝর যায় ওয়াশরুমে।

.
প্রায় আধাঘন্টা সময় পর সিতারাকে নিয়ে বেরুলো নির্ঝর। ফ্ল্যাট থেকে বেড়িয়ে লিফটের সামনে এসে দাঁড়াল। বন্ধই দেখতে পেল লিফট। গত কাল থেকেই লিফটের এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। হুটহাট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সকালে অফিসে যাবার সময় বিল্ডিংয়ের দ্বায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ড’কে নিজ দ্বায়িত্বে নির্ঝর জানিয়েছে বিষয়টা। বলেছে—ঠিক করবে!

কিঞ্চিৎ বিরক্তিতে সুপ্ত নিশ্বাস ছাড়ল নির্ঝর। সিতারার পানে তাকিয়ে, “আসো, সিঁড়ি দিয়ে নামতে হবে।”

বলেই সামনে হাঁটতে লাগল। এদিকে সিতারাও প্রত্যুত্তর না করে নির্ঝরের পিছু নিলো।
.
ওদের কেনাকাটা করতে প্রায় রাতই নামল। বেশি কিছু নয়, সিতারার জন্য কয়েকটা কামিজ’ই কেনা হয়েছে শুধু। সিতারা শহরের পরিবেশে, দোকানপাটে নতুন! এদিকে নির্ঝরও মেয়েলি বিষয়ে অনভিজ্ঞ। তাই অল্প জিনিসেও সময়টা ওদের বেশিই লাগল। ক্লান্ত হয়েই ওরা বাসায় ফিরল।

তখন প্রায় সন্ধ্যা সাতটা। লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে লিফটের বোতাম টিপল নির্ঝর। ওর পাশেই চুপচাপ দাঁড়িয়ে সিতারা। মেয়েটার হাতে জামাকাপড়ের ব্যাগ। চেহারায় ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট, তবু চোখে লুকানো একরাশ আনন্দ। আজ প্রথমবারের মতো নির্ঝরের সাথে বেড়িয়েছে বলেই ওর খুশি খুশি লাগছে। কিন্তু এখন, লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে আবার মিশ্র অনুভূতি হচ্ছে। প্রথমদিন একটু ভীতি নিয়ে থাকলেও আজকে খুব একটা ভয় লাগছে না ওর।
সিতারার ভাবনার মাঝেই লিফটের দরজা খুলল। মুহুর্তেই নির্ঝর ওর হাত ধরে বলল, “আসো।”

ঠোঁটে তখন মুচকি হাসি সিতারার। সেই হাসি নিয়েই ভেতরে ঢুকে নির্ঝরের হাতটা জড়িয়ে নিলো। নির্ঝর কোনই প্রতিক্রিয়া করল না, ছয় নাম্বার বাটনে চাপ দিয়ে ওর পানে একবার তাকাল।
খুব বেশি সময় অতিক্রম হলো না। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে লিফট যখন চার তালায় পৌঁছাল, তখনই হুট করে বন্ধ হয়ে অন্ধকার নেমে এলো লিফট জুড়ে। ‘আহ্!’ করে চেঁচিয়েই উঠল সিতারা। হঠাৎই অন্ধকার নেমে আসাটা যেন মেনে নিতে পারল না মেয়েটা। নির্ঝরও হতভম্ব। কিছু বুঝে না উঠে পকেট থেকে মোবাইল বের করতে নিলো। এদিকে ভয়ের তাড়নায় সিতারা ওকে জড়িয়ে ধরল। যতটা সম্ভব শব্দ করে ধরা যায়। কিঞ্চিৎ চেঁচিয়ে কাঁদো কাঁদো স্বরে বলতে লাগল, “আমার খুব ভয় লাগছে। আমাকে নিয়ে চলুন এখন থেকে, থাকব না আমি এখানে।”

“সিতারা, কিছু নয় নি। প্লিজ! শান্ত হও।”

শান্ত হয় না সিতারা। বরং কান্নার মাত্রা বাড়ে ওর। বলে, “এই অন্ধকারে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। এখান থেকে নিয়ে চলুন আমাকে, এখুনি নিয়ে চলুন।”

নির্ঝরের হঠাৎই মনে পরে—সিতারা ওকে বলেছিল, অন্ধকারে ভয় পায়। সেদিন কথাটা মিথ্যা বলেই ধারণা করেছিল। কিন্তু, সত্যি সত্যিই মেয়েটা অন্ধকারে ভয় পায়, তার পরিষ্কার ধারণা পেতেই তাড়াহুড়ো করে পকেট থেকে মোবাইল বের করল। ফ্লাশ লাইট জ্বালাতে জ্বালাতে এক হাতে সিতারাকে জড়িয়ে নিলো। বলল, “সিতারা, ভয় পাচ্ছ কেন? দ্যাখো, এই তো আলো।”

সিতারা চোখ-মুখ কুঁচকে নির্ঝরের বুকে পড়ে রইল। মাথা নাড়িয়ে ‘না, না’ করে উঠল। নির্ঝর ওকে ভরসা দিয়ে ফের বলল, “প্লিজ! শান্তও হও। কিছু হবে না।”

কথার মাঝেই মোবাইল চেক করতে ভুলল না। নেটওয়ার্ক নেই। কোন রকমে এক দাগ, দুই দাগ আসছে। তবুও সিকিউরিটির নাম্বারটা বের করে ডায়াল করল। খুব একটা কথা না বাড়াতে পারলেও, তারা যে লিফটে আটকে গেছে তা জানাল শুধু। সিতারাকে বলল, “এই তো, ওরা চলে আসবে এক্ষুনি। তুমি প্যানিক হইও না, আমি তো আছি।”

কথাটা সিতারার কান পর্যন্ত গেলই না বোধহয়। মেয়েটা অস্থির হয়ে উঠল। আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকা নির্ঝরের বুকে ঢুকে যাওয়ার চেষ্টা যেন। নির্ঝর এবার দু’হাতেই জড়িয়ে নিলো ওকে, নানান কথায় ভীতি কাটানোর চেষ্টাও করল। কিছুটা সময় অতিক্রম হতেই বাইরে থেকে শব্দ শোনা গেল। নির্ঝরদের উদ্দেশ্য কিছু বলতেই ও সামান্য চেচিয়ে বলে উঠল, “আমরা আটকে গেছি ভেতরে, প্লিজ একটু তাড়াতাড়ি খোলার চেষ্টা করুন।”

এরপর পরেই বাইরে ছোটাছুটির আওয়াজ শোনা গেল। এদিকে সিতারার কান্নার গতি কমে এলেও জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগল। নির্ঝরের টেনশনের মাত্রার বৃদ্ধি পেতে থাকল। ওকে বুক থেকে টেনে তুলে মুখে আলো ধরে ডাকল ওকে বার কয়েক। সারা দিলো না মেয়েটা। এতটুকু সময়েই চোখমুখের অবস্থা নাজেহাল। কান্না থেমে গিয়ে ধীরে ধীরে জোরে শ্বাস নেওয়াও কমে আসতে লাগল। এরপর পিটপিট করা চোখ দু’টোও বন্ধ হলো। জ্ঞান হারাল সিতারা। লুটিয়ে নিচে পড়ে যাবার আগেই শক্তপোক্ত করে জড়িয়ে নিলো নিজের সাথে। চিন্তিত নির্ঝর অস্থির হয়ে উঠল মুহুর্তেই। দু’বার ডেকেও সারা পেল না মেয়েটার। বাইরের উদ্দেশ্য চেঁচিয়ে কিছু বলতে নিতেই হঠাৎ আলো জ্বলে উঠল লিফটের। মুহুর্তেই নির্ঝর মোবাইল পকেটে রেখে সিতারার গালে হাত রেখে ডাকার চেষ্টা করল। উঁহু! এবারও সারা পেল না। তবে লিফটের দরজা খুলল। হন্তদন্ত হয়ে কয়েকজন ঢুকে পড়ল ভেতরে। নির্ঝর বিল্ডিংয়ের সিকিউরিটি গার্ডকে দেখেই উত্তেজিত হয়ে বলল, “দু’দিন থেকে লিফটের সমস্যা হচ্ছে, আপনারা ঠিক করছেন না কেন? এত বড় এক বিল্ডিংয়ের দ্বায়িত্বে থেকে কি-করে দ্বায়িত্বহীন হয়ে থাকেন?”

সহসায় কিছু বলে না সিকিউরিটি গার্ড’টা। ভেতর থেকে সবাইকে বের হতে বলে। তারপর নির্ঝরকে বলল, “আসলে, এমনটা হবে বুঝতে পারি নি। আপনি ওনাকে নিয়ে বাইরে আসুন। এই কাশেম, ম্যাডামের জন্য পানি নিয়ে আয়।”

শেষ কথাটা আরেকটা সিকিউরিটি গার্ডকে উদ্দেশ্য করে বলল। সেই গার্ড’টা হন্তদন্ত হয়ে ছুটে গেল পানি আনতে। নির্ঝর সেগুলো খুব পাত্তা দিয়ে, “আমার স্ত্রী’র যদি কিছু হয়, আপনাদের একটাকেও আমি ছাড়ব না। আজকেই ম্যানেজারের সাথে কথা বলব।”

বলেই সিতারাকে কোলে তুলে নিলো, লিফট থেকে বেড়িয়ে গার্ডকে উদ্দেশ্য করে ফের বলল, “এক্ষুনি ভালো কোন ডক্টরকে কল করে আমার ফ্ল্যাটে নিয়ে আসুন।”

আর দাঁড়াল না নির্ঝর। জ্ঞান না থাকা সিতারাকে কোলে নিয়েই সিঁড়ির সামনে এলো। চার তালা থেকে ছয় তালায় উঠতে লাগল নিজেদের ফ্ল্যাটের উদ্দেশ্যে।

.
.
চলবে….

ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন…