#টার্নিং_পয়েন্ট
#অন্তিম_পর্ব
#মৌসুমী_হাজরা
মনামী রাস্তার মাঝে পাগলের মতো এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করছে। অনিমেষদার মা অনন্যা আন্টির সাথে যেভাবেই হোক দেখা করতে হবে। অনিমেষদার বাড়িতে সে কোনোদিন যায়নি ঠিকই, তবে বাড়ির ঠিকানা সে জানে। হঠাৎ একটা গাড়ি সামনে এসে থামলো, কিছু বুঝতে পারার আগেই গাড়ির গেট খুলে মনামীর হাত টা কেউ জো’র করে ধরে টেনে নিল। গাড়িতে ঢুকেই কিছুটা অবাক হয়ে আবার স্বস্তির শ্বাস নিয়ে বললো, ও বৌদি তুমি?
…তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? রাস্তার মাঝে এইভাবে এদিক ওদিক করে কে হাঁটে? কোনো গাড়ি এসে ধা’ক্কা দিলে তো ব্যস।
…আমার প্রাণভ্রমর যে অনিমেষদার ডায়েরিতে আছে। আমাকে যে ওই ডায়েরি খুঁজতেই হবে।
…কে অনিমেষ? কোন ডায়েরি?
…সব বলছি, তার আগে তুমি বলো, তুমি আমাকে ফলো করছিলে কেন?
…বেশ করেছি। তোকে আমি আর একা ছাড়বো না। এবার তুই বল, কোথায় যাচ্ছিস এখন?
…অনন্যা আন্টির বাড়ি। বাবার অফিসের ম্যাডাম। চেনো তো তুমি? তোমার বিয়েতে এসেছিলেন উনি।
…হ্যাঁ চিনি। কিন্তু তুই কেন তাঁর কাছে এখন যাচ্ছিস?
…অনন্যা আন্টির ছেলে অনিমেষ দা। আমি যেতে যেতে তোমাকে সব বলবো। আমি ড্রাইভার কাকুকে একটা ঠিকানা বলছি, সেখানে নিয়ে যেতে বলো।
এরপর রাস্তায় মনামী সব কথা তার বৌদিকে বললো। বৌদি সবটাই চুপচাপ শুনে গেল। কিছুটা অবাকও হলো, আবার ক’ষ্টও পেল, অনিমেষের ব্যাপারে শুনে। বৌদির কাছেও সবকিছু রহস্য লাগছিল। এতদিন ধরে মনামী অনিমেষের জীবন কাহিনি পড়ছিল। খাতাগুলো এর আগে কেউ কেন পড়েনি? নাকি এই সব কিছু মনামীর জীবনের মোড় ঘোরানোর জন্যই হওয়ার ছিল। বৌদি এবার স্বস্তির শ্বাস নিয়ে মনে মনে ভাবলো, যাক বাবা, মনামী এই সব নিয়ে ব্যস্ত থাকায়, মানবের ভূত মাথা থেকে নেমেছে।
মনামীর দেওয়া ঠিকানায় এসে গাড়ি থামলো। কিন্তু কিছুতেই ভিতরে যাওয়ার সাহস হচ্ছে না ওর। বৌদি হাতটা ধরে বললো, এতটা যখন এসেছিস, গল্পের শে’ষটা তো জানতেই হবে।
মনামী কিছুটা সংকোচ আর ভ’য় নিয়ে প্রবেশ করলো অনিমেষদার বাড়িতে। অনন্যা আন্টি তখন রেডি হয়ে বাইরে বেরিয়ে আসছিলেন। ওদের দেখে খুশি হয়ে বললেন, আরে কী ব্যাপার এতদিন পর আন্টির কথা মনে পড়লো? এসো এসো বাড়ির ভিতরে এসো।
মনামীর পাশে তার বৌদি আর ওদের সামনে অনন্যা আন্টি আর তাঁর হাজব্যান্ড। মনামী জলটা ঢকঢক করে খেয়ে নিল। অনন্যা আন্টি বললেন, কিছু হয়েছে মনামী? তুমি আমার বাড়ির ঠিকানা জানতে?
মনামী এবার অনেকটা সাহস নিয়ে বললো, আপনার কাছে একটা কথা জানতে এসেছি। আপনি স্নেহাকে চেনেন? অনিমেষদার গার্লফ্রেন্ড ছিল।
অনন্যা আন্টি অবাক হয়ে চেয়ে রইলেন মনামীর দিকে।
মনামী আবারও সাহস নিয়ে বললো, প্লিজ যদি স্নেহার ব্যাপারে কিছু জানেন, তাহলে আমাকে বলুন। ওর সাথে আমার দেখা করাটা খুব জরুরি।
অনন্যা আন্টি বললেন, যতদূর জানি, স্নেহা এখন এখানেই থাকে, ওর বাবা মায়ের কাছে। ডিভোর্স হয়ে গেছে। কিন্তু তুমি এত জেনে কী করবে?
মনামী হঠাৎ রে গে গিয়ে বললো, এতটা কৌতূহল যদি নিজের ছেলের প্রতি দেখাতেন, তাহলে হয়তো ভালো হতো।
অনন্যা আন্টি আর কথা বাড়ালেন না, স্নেহার ঠিকানাটা মনামীকে দিয়ে দিলেন।
মনামীর মনে হলো, এই বাড়িতে কেউ যেন তার দিকে তাকিয়ে আছে। কথা বলতে বলতে একবার পুরো বাড়ি তাকালো, কিন্তু সেভাবে কাউকে দেখতে পেল না।
মনামী ঠিকানাটা পেয়ে ওর বৌদিকে সাথে নিয়ে চলে যাওয়ার মুহুর্তে, আবার পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো, অনন্যা আন্টি কেমন যেন অসহায়ের মতো তাকিয়ে আছেন। মনামীর ওইভাবে বলা উচিত হয় নি। অনন্যা আন্টির ভুল ছিল কিছু, কিন্তু তিনিও তো তাঁর ছেলেকে হারিয়েছেন। এইভাবে মনে আ’ঘাত দিয়ে কথা বলা ঠিক হয়নি মনামীর। তাই আবার অনন্যা আন্টির কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরে বললো, আমাকে ক্ষমা করে দেবেন আন্টি। একদিন সময় করে আমার সাথে বসবেন, অনিমেষদার জীবনকাহিনী শোনাবো। আপনিও কাঁ’দবেন, আমিও কাঁ’দবো। আজ চলি আন্টি।
মনামী আর তার বৌদি গেটের বাইরে বেরিয়ে এলো। মনামীর মনে কেমন যেন একটা অনুভূতি হলো। কেউ যেন ওই বাড়িতে আছে, যে লুকিয়ে মনামীকে দেখছিল। এটা কিছুতেই মনের ভু ল হতে পারে না। কেউ তো ছিল। বৌদিকে এই কথাটা বলতেই, বৌদি বললো, কই আমার তো তা মনে হলো না, এবার চল তো স্নেহার সাথে দেখা করি।
স্নেহার ঠিকানায় এসে পৌঁছালো দুজনে। স্নেহার বাড়িতে ঢুকতেই দেখলো, একটি মেয়ে বসে আছে, ওদের দেখে অবাক হয়ে বললো, কে আপনারা? কাকে চায়?
মনামী বললো, স্নেহাদি কি এখানেই থাকে?
সেই মেয়েটি কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাদের দিকে তাকিয়ে বললো, হ্যাঁ আমিই স্নেহা।
মনামী ধীরে ধীরে স্নেহার কাছে এগিয়ে এলো, তারপর ভালো করে দেখলো। মনে মনে ভাবলো, আজ অনিমেষদাকে নিজের জীবনে রাখলে, তোমার অবস্থা এমন হতো না।
কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর মনামী সবটা বললো স্নেহাকে।
স্নেহা সবটা শোনার পর বললো, অনিমেষের ডায়েরিটা আমার কাছে নেই। ও আমাকে ডায়েরির কথা কোনোদিন বলে নি।
মনামী কিছুটা ব্যঙ্গাত্মক হাসি হেসে বললো, কি আশ্চর্য! তাই না? অথচ ডায়েরিটা অনিমেষদা আপনাকেই দিতে চেয়েছিল। ডায়েরির প্রতিটা পাতাতে আপনাকে নিয়ে লেখা ছিল কবিতা। কী বলবো আপনাকে খুঁজে পাচ্ছি না, আপনার ভাগ্য এতটা ভালো ছিল যে আপনি অনিমেষদার মতো একজন প্রেমিক পেয়েছিলেন, আবার আপনার ভাগ্য এতটাই খা’রাপ যে, আপনি তাকে হারিয়েছেন।
স্নেহা একদম চুপ হয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর বললো, তার শা’স্তি আমি পাচ্ছি। বিয়ের পর বুঝতে পারলাম, আমি একটা ভু’ল মানুষকে বিয়ে করেছি। ওর আর আমার মতের মিল হচ্ছিল না। তাই মিউচুয়াল ভাবেই ডি’ভোর্স হয়ে গেল।
মনামী এবার বললো, কারোর সাথে মতের মিল না হলেই যে, সেই মানুষটা ভু ল তা কিন্তু নয় স্নেহা দি। আমি আপনাদের ব্যাপারে কিছুই জানি না, তাই আমার কিছু বলা ঠিক নয়। তবে ডিভোর্সের মতো সিন্ধান্ত নিয়েছিলেন যখন, তখন নিশ্চয় সমস্যা কিছু ছিল। একটা কথা জিজ্ঞাসা করবো স্নেহা দি? একবারের জন্যও নিজেকে অ’পরাধী বলে মনে হয় না? মনে হয় না, আপনার ছেলেখেলার জন্য একটা জীবন নষ্ট হয়ে গেল? চলেই তো গিয়েছিলেন, তাহলে আবার ফিরে এসেছিলেন কেন অনিমেষদার জীবনে? বারবার গেছেন আবার এসেছেন। একটা মানুষকে তিলে তিলে মে*রেছেন শুধুমাত্র খেলার ছলে। কী ভেবেছিলেন? সবাই আপনার মতো টাইম পাস করে? যখন ইচ্ছে হলো ফিরে এলাম, আবার যখন ইচ্ছে হলো চলে গেলাম। সবাই এক নয় স্নেহা দি। কিছু মানুষ ভীষণ অনুভূতিপ্রবণ হয়। এতদিন একসাথে থেকেও আপনি সেটা বুঝতে পারেন নি?
ক্ষ মা করবেন আমাকে। আমি এত কিছু বলার জন্য এখানে আসিনি। আমি ভেবেছিলাম ডায়েরিটা আপনার কাছে আছে। কেন জানি না, আমি আমার রা গকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলাম না। আমি আমার ব্যবহারের জন্য ক্ষ’মাপ্রার্থী। চলি তাহলে আমরা।
দু-পা এগিয়ে যাওয়ার পর স্নেহা পিছন থেকে ডেকে বললো, ডায়েরিটা পেলে একবার দেবে আমায়। আমি পড়ে তোমায় ফেরত দিয়ে দেবো। স্নেহার কথাগুলো কান্নার জন্য গলায় আটকে আসছিল।
মনামী পিছন ফেরে তাকালো, স্নেহার কাছে এসে জড়িয়ে ধরে বললো, একদিন সময় করে আমার সাথে বসবেন। অনেক গল্প শোনাবো। ভালো থাকুন আপনি। জীবনটাকে অন্য ভাবে তৈরি করুন।
বাইরে বেরিয়ে এলো মনামী আর বৌদি।
…এবার কী করবি?
…কী আর করবো? অনিমেষদার বাড়ি যাবো আবার।
…কিন্তু আন্টি আর আঙ্কেল তো বাইরে বেরিয়ে যাবেন এখন।
…তাতে কী হয়েছে বৌদি? বাড়িতে কেউ না কেউ আছে, আমি জানি।
…তুই এতটা শিওর হচ্ছিস কী করে?
…আরে গিয়ে তো দেখি বাড়িতে।
…আচ্ছা তুই আন্টি আর স্নেহাকেও হঠাৎ ওইভাবে জড়িয়ে ধরলি কেন?
…ক্ষ’মা করে দিয়ে এলাম। অনিমেষদা থাকলে তাই করতো।
…কত বড়ো হয়ে গেছিস তুই। এতটা ব’দলে যাবি আমি ভাবতে পারিনি।
আবার ফিরে এলো দুজনে অনিমেষের বাড়িতে। দারোয়ান গেট খুলে দিলেন। বাড়ির একজন পরিচারিকা এসে বললেন, আপনাদের কী কিছু দরকার?
মনামী বললো, বাড়িতে কেউ নেই, আন্টি আর আঙ্কেল বাইরে বেরিয়ে গেছেন। এইভাবে আমাদের এখানে আসা উচিত হয় নি। কিন্তু আমি নিরুপায়। আমি একটা জিনিস খুঁজছি। সেটা বোধহয় অনিমেষদার রুমে আছে। একবার আমাদের ওখানে যাওয়ার অনুমতি দিন প্লিজ।
সেই পরিচারিকা এবার বললেন, আচ্ছা চলুন, আমি রুমটা দেখিয়ে দিচ্ছি।
অনেকটা অবাক হয়ে মনামী আর বৌদি একে অপরের দিকে তাকালো। তারপর ধীরে ধীরে সিঁড়ি দিয়ে ওপরের ঘরের দিকে গেল। হাত-পা গুলো কেমন যেন ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে মনামীর। বুকের মধ্যে ধুকপুক আওয়াজ যেন নিজে শুনতে পাচ্ছে। অবশেষে রুমের সামনে এসে পরিচারিকা বললেন, এটাই অনি দাদাবাবুর রুম। আপনারা ভিতরে যান৷ যা খোঁজার খুঁজে নিন।
কথাটি বলেই তিনি নীচে নেমে গেলেন। পুরো ব্যাপারটা অবাক হওয়ার মতোই, তবে এখন অবাক হয়ে ভাবতে বসলে হবে না। তাড়াতাড়ি খুঁজতে হবে ডায়েরিটা। যার জীবন কাহিনী একটা খাতার মধ্যে খুঁজে পেয়েছিল, আজ তার রুমে মনামী। ঘরের দেওয়াল থেকে প্রতিটা জিনিস যেন ছুঁতে ইচ্ছে হচ্ছে ওর। এখানেই হয়তো অনিমেষদার স্পর্শ এখনও লেগে আছে।
দুজনেই ঘরটা তন্নতন্ন করে খুঁজতে লাগলো। কিন্তু কিছু বই ছাড়া আর কিছুই পেল না। এইভাবে কে টে গেল ২৫ মিনিট। আশার আলো যখন নি’ভে আসছিল, তখন সেই মুহুর্তে রুমের দরজার কাছে এসে একজন বললেন, তোমরা কি এই ডায়েরিটা খুঁজছো?
মনামী আর বৌদি হঠাৎ চমকে গিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে পড়লো। তাদের সামনে আছেন একজন বৃদ্ধা মহিলা। হাঁটার ক্ষমতা নেই তাঁর। হুইলচেয়ারে বসে আছেন তিনি, হাতে একটা ডায়েরি। মনামী ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল, তারপর কাছে গিয়ে হাঁটু মুড়ে বসে বৃদ্ধার কোলে মাথা রেখে বললো, এই কোলেই কি অনিমেষদা মাথা রাখতো? বৃদ্ধা মহিলা কেঁ দে উঠলে। মনামী তাঁকে জড়িয়ে ধরে বললো, অনিমেষেদা একমাত্র তোমার কাছেই তো শান্তি পেয়েছিল ঠাম্মা। বৌদি এবার বুঝতে পারলো, ইনি হচ্ছেন অনিমেষের ঠাকুমা।
ঠাকুমা এবার বলা শুরু করলেন, সেই দিন সন্ধ্যাবেলা আমার মেয়ে আমাকে নিতে এসেছিল, অনি আমার রুমে এসে বললো, এই ডায়েরিটা তোমার কাছে রেখে দাও তো। আমি তাড়াতাড়িতে ডায়েরিটা খুলে দেখিনি তখন। কোনো কিছু বোঝার আগেই সব শে’ষ। আমি অনিমেষের খাতার লেখাও পড়েছি। আমি জানতাম, এই খাতা যে পড়বে, সে ডায়েরির খোঁজে ঠিক আসবে। এই নাও ডায়েরি।
মনামী কাঁপা কাঁপা হাতে ডায়েরিটা নিল। কিছুক্ষণ বুকে জড়িয়ে রাখলো। তারপর ডায়েরির প্রতিটা পাতা ছুঁয়ে ছুঁয়ে শেষ পাতার লেখায় এলো। তাতে লেখা ছিল, পৃথিবীটা সুন্দর, অথচ এই কথাটা বলার মতো কেউ নেই আমার জীবনে। এই যে প্রতি রাতে আমার বুকের ব্য থা বাড়ছে, কেউ জানে না। কেউ মাথায় হাত বুলিয়ে বলছে না, সব ঠিক হয়ে যাবে, একটু ধৈর্য ধর। আমি আর পারছি না। নিজেকে নিজে স্বান্তনা দিতে দিতে হাঁফিয়ে উঠেছি। আমার জীবনের বসন্ত শে’ষ। আমাকে যেতে হবে। আমি পারলাম না। কিন্তু কেউ না কেউ পারবে। তুমি যদি আমার খাতার লেখা পড়ে আমার ডায়েরির খোঁজে এসেছো, তাহলে তো আমি অমর হয়ে গেছি, তোমার মধ্যে। ঘুরে দাঁড়াও, নিজের পায়ে। নিজের ভালোলাগা, ইচ্ছেকে প্রাধান্য দাও। ডাকলেই ছুটে যেও না। যার কাছে তোমার অনুভূতির দাম নেই, তার থেকে দূরে সরে এসো। পৃথিবীটা সুন্দর, অনেক সুন্দর।
মনামী চুপ করে থাকলো, ঘরে রাখা অনিমেষের ছবিটার দিকে চেয়ে রইলো, সেদিন স্বপ্নে এই চোখগুলোয় সে দেখেছিল।
তারপর চি’ৎকার করে কেঁ দে উঠে বললো, আমি পারবো অনিমেষদা, আমি পারবো।
(কয়েকবছর পর)…
…অভিনন্দন উকিল ম্যাডাম। আমি জানতাম আপনি জিতবেন।
…ধন্যবাদ ইনস্পেকটর বোস। তা এখন ফোন করলেন যে।
…একটা তো ট্রিট দিতেই হবে তোমাকে, মনামী।
…হুম সেই সুযোগে দেখাটাও হয়ে যাবে, তাই না? আমি আপনার চালাকি সব জানি।
…কবে থেকে আংটিটা নিয়ে ঘুরছি। এবার তো হ্যাঁ বলো।
…এত তাড়া থাকলে অন্য কোনো পাত্রী খুঁজে নিন।
…এই না না, আমি অপেক্ষা করবো, তবে বেশি অপেক্ষা করিও না। ভালোবেসে ফেলেছি যে খুব।
… ভেবে দেখুন, আমি উকিল আর আপনি পুলিশ। চলতে পারবেন তো আমার সাথে?
… খুব পারবো, হাত ধরে চলবো।
… আচ্ছা বেশ, দেখা হচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি।
ফোনটা রেখে দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে মনামী বললো, পৃথিবীটা অনেক সুন্দর অনিমেষদা, শুধু টিকে থাকার ল’ড়াইয়ে জিততে হবে। তুমি আমার মধ্যে বেঁ চে থাকবে। আমি পেরেছি, আমি ঘুরে দাঁড়িয়েছি, শুধুমাত্র তোমার জন্যে।
সমাপ্ত…