“প্রেমনেশা”
নন্দিনী নীলা
১.
‘ সামনের ওই যে মেয়েটা দেখা যাচ্ছে তাকে জড়িয়ে ধরতে হবে যা, বেস্ট অফ লাক ধ্রুব ।’ বন্ধু কে ইশারায় দেখিয়ে বলল রাহুল।
‘ আর কোন ডেয়ার পেলি না? ওই বস্তির মেয়েটাকে আমায় এখন জড়িয়ে ধরতে হবে?’ নাক ছিটকে বলল ধ্রুব।
‘ তারাতাড়ি কাজটা সম্পূর্ণ কর। মেয়েটা চলে গেলে কিন্তু তুই হেরে যাবি ধ্রুব।’ পাশ থেকে শিশির বলল।
ধ্রুব গাড়ি থেকে নেমে হেলে দুলে ওভারব্রিজের ওপর পেছনে ঘুরে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটার দিকে অগ্রসর হতে লাগল।
ল্যাম্পপোস্টের আলোতে জলের স্বচ্ছ পানির দিকে তাকিয়ে ছিল মেয়েটি। তখনি আচমকা কেউ হেঁচকা টানে ঘুরিয়ে তাকে দু’হাতে আষ্টেপৃষ্ঠে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো। পুরুষালী স্পর্শে তার সারা দেহে বিদ্যুৎ খেলে গেল। রাগে তার সারা শরীর কাঁপছে। লোকটাকে কিল ঘুষি দিয়ে নিজের থেকে সরানোর ইচ্ছে থাকলেও মেয়েটি তা পারছে না কারণ হাত দুটো সে নড়াতেই পারছে না। ছেলেটার দুহাতের মাঝে বন্দি হয়ে গেছে সম্পূর্ণ। ছেলেটার মুখ দিয়ে এলকোহলের দুর্গন্ধ ভেসে আসছে।
‘কেমন বদমাইশ! একটা মেয়েকে একা পেয়ে কীভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। বখাটের ছেলে একটা। কেন যে এখানে আসতে গিয়েছিলাম আল্লাহ জানে।’ বিড়বিড় করল চারু।
পাক্কা দুই মিনিট পর ছেলেটা ওকে ছাড়লো। চারু হাপাচ্ছে রাগে ওর শরীর কম্পিত হচ্ছে। চারু এক সেকেন্ড সময় নষ্ট না করে নিজের সর্ব শক্তি দিয়ে ছেলেটার গাল বরাবর থাপ্পড় মেরে দিল।
তখন পেছন থেকে আরো কয়েকটা ছেলেমেয়ের হাসির শব্দ পাওয়া গেল। চারু পেছনে দৃষ্টি উঁচিয়ে চেয়ে দেখল তিনটা ছেলে ও দুইটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ছেলেগুলোর হাতে ড্রিংকস এর বোতল। মেয়েগুলো শর্ট ড্রেস পরে আছে। শরীরের অধিকাংশ অংশ বেরিয়ে আছে। চারু সবার দিকে এক নজর দেখে আবার সামনের ওই অসভ্য লম্পট ছেলেটার দিকে তাকাল। ছেলেটা সঙ্গে সঙ্গে ওর হাতের থাপ্পর খেয়ে রক্ত লাল চোখে ওর দিকে তাকিয়েছে। চারু তাকাতে সে ওর হাত মুচড়ে ধরলো। ব্যথায় চারু আহ্ করে উঠল।
‘হাউ ডেয়ার ইউ। তোমার সাহস কি করে হলো আমার গায়ে হাত তোলার?’ ছেলেটা হুংকার করে উঠল। তার চিৎকারে চারুর হৃদয় কেঁপে উঠল ভয়ে আতংকে। নিজের ভয় কে সরিয়ে দেখাল না।
‘ আমার হাত ছাড়ুন।’ নিজেকে যথেষ্ট সাহসী করার চেষ্টা করে বলল চারু।
ছেলেটা হাতটা আরো জোরে মুচড়ে ধরে বলল, ‘আমাকে থাপ্পর মারলে তুমি কোন সাহসে? মেরে পুঁতে দিবো একদম!’
‘অসভ্যতামি করে এখন আবার গায়ে হাত তোলা নিয়ে হুমকি দিচ্ছেন? মাতাল হয়ে মেয়েদের সাথে যে অসভ্যতামি করছেন তার সামনে এই থাপ্পরটা কিছুই না। আমার তো মন চাচ্ছে আপনাকে এই মুহূর্তে খুন করে ফেলতে। আপনার সাহস কী করে হলো আমার সাথে অসভ্যতামি করার। আপনিতো একটা ক্যারেক্টার লেস ছেলে। মেয়েদের সম্মান করতে শেখেননি। কোন সাহসে আপনি আমাকে টাচ করলেন।’ চেঁচিয়ে উঠল চারু।
‘এই শোনো, তুমি আমাকে এই সব লেকচার দিতে আসবা না ওকে। আমি কি করবো কি করা উচিত সেসব নিয়ে তোমার কাছ থেকে আমি জ্ঞান শুনতে চাই না । আর তুমি আমার গায়ে হাত তুলে ঠিক কাজ করোনি। সামান্য একটু জড়িয়ে ধরছি তাই এতো রিয়েক্ট করার কি আছে? বস্তির ফকিন্নি তার কি ভাব? তুমি কেমন মেয়ে আমার বুঝতে বাকি নেই ওকে?’
‘আপনার কাছে এটা সামান্য মনে হচ্ছে! মনে হবেই তা আপনাদের কাছে তো এসব কিছুই না। আপনাদের মত নোংরা লম্পট ছেলেরা তো মেয়েদের সাথে এসব করে আনন্দ ফুর্তি করে। লাখ লাখ টাকা উড়িয়ে পার্টি করে ড্রিঙ্কস করে আর আমাদের মত সাধারণ মেয়েদের সাথে অসভ্যতামি করে। এতে তো আপনাদের কিছুই আসে যায় না।’ চটে গেল চারু। এমন লম্পট ছেলে দুটো দেখেনি। বড়োলোকের বিগড়ে যাওয়া ছেলে যত্তসব।
‘এই শোনো, এতো ভালো মেয়েদের মতো কথা বলে লাভ নাই। তুমি এমনিতেও ওতো ভালো মেয়ে হবেনা। কোন ভালো মেয়ে অন্তত এই রাত এগারোটায় মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে না। আর ভালো মেয়ে হলেও ধ্রুব’ওর যায় আসে না। আমার একবার নজর যার উপর পরে তাকে আমি নিজের করেই ছাড়ি। আর আমি এখন জাস্ট আমার ডেয়ার কমপ্লিট করতে এসেছি। এজন্যই তোমাকে আমার জড়িয়ে ধরতে হয়েছে। না হলে তুমি দেখতেও অত আহামরি সুন্দরী না যে ধ্রুব তোমাকে পছন্দ করবে।’ ধ্রুবর ঠোঁটে তাচ্ছিল্য অবজ্ঞা ঝড়ে পড়তে লাগল।
‘এই রাস্তা আপনার বাবার না পাবলিক জায়গায় আপনি যেমন আছেন আমিও থাকতে পারি। এতো রাতে বখাটে বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঘুরেও নিজেকে খারাপ ভাবতে পারছেন না আবার আমি ভালো নাকি খারাপ সেই নিয়ে কথা বলছেন অদ্ভুত লোক তো আপনি!’ খোঁচা মেরে বলল চারু।
চারুর কথায় জ্বলে উঠল ধ্রুব। ফরসা মুখটা কেমন লাল করে ফেলল,’আমাকে আমার বন্ধু দের তুমি খারাপ বলছো এতো স্পর্ধা তোমার?’
“ আপনারা বুঝি ভালো? আর সত্যি বলতে সাহস থাকা লাগে না আপনাআপনি চলে আসে নিজের মধ্যে।’
রেগে আগুন হয়ে উঠল ধ্রুব এগিয়ে এলো চারুর দিকে। হাত ছেড়ে এবার গলা টিপে মেরে ফেলতে মন চাইল ধ্রুবর। চারু ভয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে।
পেছন থেকে ধ্রুবর সব বন্ধুবান্ধব এসে ওকে জাপ্টে ধরলো।
শিশির বলল, ‘কি হয়েছে চিৎকার-চেঁচামেচি করছিস কেন? চল কাজ তো হয়ে গেছে। এবারে ক্লাবে চল কথা অনুযায়ী আমি সব বিল পরিশোধ করব।’
ধ্রুব রাগে চিৎকার করে বলল, ‘ এই মেয়ে আমাকে থাপ্পর দিয়েছে। আমাদের বাজে বলেছে। ওর সাহস দেখ তোরা। সামান্য জড়িয়ে ধরেছি বলে ও আমার গায়ে হাত তুলেছে। এই মেয়েকে তো আমি আজকে ধ্রুবর গায়ে হাত তোলার শাস্তি দিয়েই ছাড়বো।’
রাহুল বলল, ‘দোস্ত প্লিজ এখন ঝামেলা করিস না চল এখান থেকে!’
‘না সামান্য জড়িয়ে ধরাই ও আমাকে এত বাজে ভাবে অপমান করলো। একে তো আমি আজ ছেড়ে দেবো না। মাঝ রাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারে আবার কিছু করলে দোষ। এই মেয়ে কেমন আমি জানি না। এই মেয়ে আমাদের থেকেও খারাপ কোনো দেহ ব্যবসায়ী হবে। না হলে ও এখানে কি করছে বল!’
‘আমাকে নিয়ে আর একটা বাজে কথা বলবেন না।আমি খারাপ তাই রাস্তায় আছি। আর আপনাদের সাথেও তো মেয়ে আছে তারা কি? তারা ও কি দেহ ব্যবসায়ী নাকি। আপনাকে আমি পুলিশে দেবো। মাতাল হয়ে মেয়েদের সাথে নোংরামি করার জন্য।’
‘ তুই আমাকে পুলিশে দিবি । কোন থানায় দিবি? কোন থানায় আটকে রাখবে আমাকে? আমার বাবার নাম জানিস? তুই আমাকে পুলিশের ভয় দেখাস হাউ ফানি।’ বিদ্রুপের হাসি হাসতে লাগল ধ্রুব।
‘আপনার বাবা যেই হোক না কেন আপনি অপরাধ করছেন আপনাদের আমি শাস্তি দিয়েই ছাড়বো।’
চারুর কথা শুনে সবাই ক্ষেপে গেল।
এতো গুলো ছেলে মেয়ের সাথে চারু পারবে না।চারুকে পালাতে হবে। চারু ওদের কথার মাঝে লুকিয়ে পালিয়ে গেল।
শীত লাগছে পাতলা ওরনাটা গায়ে জরিয়ে নিলাম। কিছুই হচ্ছে না। পাতলা ওড়না কি আর শীত নিবারণ করতে পারে। দমকা বাতাসে বইছে ওই ভাবেই ওড়না পেঁচিয়ে হাটতে লাগল।
কাজ থেকে বেরিয়ে হেঁটে হেঁটে ওভারব্রিজের এখানে দাঁড়িয়ে পড়েছিল। মনটা খুব খারাপ লাগছিল। আজকে কাজ থেকে ছাড়া পেয়েছে নয় টায়। এমনিতে প্রতিদিন সাত টায় ছুটি হয়। আর বাসায় যেতে আটটা বাজে। আজকে নয় টায় ছুটি হয়। ছুটির পর এখানে এসে দাঁড়িয়েছিল। বাসায় যেতে মন চাইছে না। একা বাসা হাহাকার লাগে ওর। তাই নিজের কষ্ট লুকানোর আর একাকীত্ব দূর করার জন্য অন্ধকারে দাঁড়িয়ে ছিল। অন্ধকারে ওই নদীর পানির দিকে তাকিয়ে ছিল। আর তখন কি সব ঘটে গেল।মেয়েরা দুই সেকেন্ড কোথাও শান্তি মতো দাঁড়াতে পারে না তাদের উপর নর পশুর মত ঝাঁপিয়ে পড়ে কেউ না কেউ। আজ একটা ছেলে ওখানে সারারাত দাঁড়িয়ে থাকলেও তার সাথে কিছুই হবে না। কিন্তু একটা মেয়ে থাকলে তার সাথে অনেক কিছুই ঘটে যায়। মেয়েরা কেন স্বাধীন ভাবে বাঁচতে পারে না। কেন চিন্তামুক্ত হয়ে থাকতে পারে না। কেন সব সময় তাদের কিছু খারাপ লোকের ভয়ে আরষ্ট হয়ে থাকতে হয়।
চারু নিজেদের বাসার গেইট খুলে ঢুকে বাইরে থেকে দরজা ধাক্কাধাক্কি করতে লাগল। আশেপাশে সব বড়ো বিল্ডিং এর মধ্যে ওদের টিনের চাল দেওয়া ছোটো ঘরটা খুব বেমানান এখানে। চারুর ঘরে আছে সৎমা বোন। বাবা গত সপ্তাহে মারা গিয়েছে। সেজন্য চারুর মন খারাপ কিছুই ভালো লাগে না। এক বাবাই তো ওর ছিল সেও ওকে একা করে চলে গেল? মা তো সেই ছোটো থাকতেই চলে গিয়েছে। এই পৃথিবীতে এখন চারুর আপন বলতে কেউ রইল না। চারু দরজার সামনে দশ মিনিট ধরে দাঁড়িয়ে আছে। কেউ দরজা খুলছে না। ঠিক আধঘন্টা পর ময়না বেগম দরজা খুললেন।
দরজা খুঁলেই বলতে লাগলেন,’ বাড়িতে আসার কি দরকার ছিল? সকালেই আসতি। তুই যে কি কাজ শুরু করছিস আমি বুঝি না ভাবছিপ তাই না? নষ্টা চরিত্রহীন মেয়েকে আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে তো বাপ মা দুটোই মরছে। এখন এই বারোবাতারি মেয়েকে আমায় সহ্য করতে হবে হায় কপাল। আজকে তোর ঘরে ঢোকা বন্ধ মাঝরাতে বাড়ি আছিস মুখে চুলকানি মেখে। এমন নষ্টা মেয়ে বাড়িতে থাকলে আমার মেয়ের ভালো ঘরে আমি বিয়ে দিতে পারব? আজকে শাস্তি স্বরূপ তুই ঘরে ঢুকতে পারবি না।’
বাজখাঁই গলায় বলে উঠল ময়না বেগম। তারপর একটানে চারুর হাতে থাকা ব্যাগ কেড়ে নিয়ে ঘরের দরজা ঠাস করে আটকে দিল। চারু হতবাক বাকরুদ্ধ হয়ে সেখানেই ঠাঁই দাঁড়িয়ে রইল।
চারু আরো দুই তিনবার ডাকল ময়না বেগম কে মা মা বলে কিন্তু তিনি আর দরজা খুললেন না। ক্লান্ত হয়ে চারু সেখানেই বসে পড়ল। চোখ ফেটে জল বেরিয়ে এলো।
এইটুকু তো বয়স এখনি চারুকে জব করতে হচ্ছে ইন্টার পরীক্ষা দিয়েই জবে ঢুকে গিয়েছে আজ দুই বছর ধরে জব করছে। এক ঘন্টার রাস্তা পায়ে হেঁটে বাড়ি আসে। জবের একটা টাকাও নিজের ইচ্ছায় ভাঙতে পারে না সম্পূর্ণ ময়না বেগম ছিনিয়ে নেয়।
এক টাকাও নিজ ইচ্ছায় ভাঙলে তিনি বাসায় এক বেলা না খাইয়ে রাখে। বাবার মুখের দিকে চেয়ে চারু সবটাই মেনে নিয়েছিল। ইউনিভার্সিটিতে অব্দি ভর্তি হতে দেয়নি ময়না বেগম অথচ নিজের মেয়েকে ঠিকি দামী স্কুলে পরাচ্ছে। মাস গেলে পনেরো হাজার টাকা পায় চারু সবটাই মায়ের হাতে তুলে দেয়। সৎমা হলেও নিজের মায়ের মতোই দেখে তাকে কিন্তু কখনোই তার থেকে নিজের মায়ের আচরণ পায়নি।
এক সপ্তাহ চলে গেল বাবা নেই ওর বুকের ভেতর কেমন হাহাকার করে ওই জানে কেউ ওর মনটা বুঝার চেষ্টা করে নি। করে না। চারু বাসায় মায়ের অত্যাচার এ জর্জরিত হয়ে বাইরে একটু সময় কাটাতে চেয়েছিল। কিন্তু সেখানেও বেয়াদব ছেলেটা এসে ওকে জ্বালিয়ে গেল। বাসায় এসে আবার মায়ের এই শাস্তি ওকে একদম নিতেজ করে দিল। বারান্দায় বসেই চারু ঘুমিয়ে পড়ল। সূর্যের আলো মুখে পড়তেই ধরফরিয়ে উঠে দাঁড়াল চারু। চারু ঘাড় সোজা করতে পারছে না। ঘাড় বাঁকা করে বসেই ঘুমিয়ে পড়েছিল এখন ঘাড় ব্যথা হয়ে আছে। চারুর বোন সিঁথি দরজা খুলেই খিলখিলিয়ে হাসতে লাগল ওকে ঘাড় বাঁকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে।
চারু রুমে গিয়ে ঘাড় মালিশ করতে লাগল। ময়না বেগম রান্না করছে।
চারু কে দেখেই বললেন,’ তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে খেয়ে অফিসে যা।’
চারু মায়ের কথায় উত্তর দিল না দরজা আটকে বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। ময়না বেগম দরজা ধাক্কাধাক্কি করে উঠতে বললেও চারু উঠল না ঠিক তিন ঘন্টা ঘুমিয়ে চারু উঠল। ময়না বেগম তখন রাগে আগুন হয়ে ছিল। চারু দরজা খুলে বাইরে এসে খাবার খেতে বসল।
ময়না বেগম অগ্নি দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে বললেন,’ তুই আজ অফিসে গেলি না কেন?’
চারু ভাতের লোকমা মুখে দিয়ে চিবুচ্ছে। উত্তর দিচ্ছে না ময়না বেগম রাগে হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়ল। চারুর সামনে থাকা ভাতের প্লেট এক টানে নিয়ে ফ্লোরে ছুঁড়ে মারল। চারু বিস্মিত নয়নে তাকাল ফ্লোরে পরে থাকা ভাতের দিকে।
‘ অফিস করবি না। আর আমি তোরে ভাত খেতে দিব ভাবছিস? যদি চাকরি চলে যায় মনে রাখিস এই বাড়িতে সেইদিন তোর শেষদিন হবে।’
মন মস্তিষ্ক বিক্ষিপ্ত হয়ে ছিল। মায়ের ব্যবহারে কখন উল্টোপাল্টা কথা বলে বসে সেই ভয়ে মুখে কুলুপ এঁটে ছিল চারু।
রাত থেকে না খাওয়া খিদের জ্বালায় পেট জ্বলছে।
‘আজকে অফিস বন্ধ ছিল।’ চারু কান্না গিলে কথাটা বলল। দুই লোকমা ভাতের জন্য আর এই বাসায় থাকার জন্য ওকে কত কিছুই না সহ্য করতে হচ্ছে।
চলবে..?