গল্প #ভুলি_কি_করে_তোকে
(এ প্রথম লেখা লেখি করছি জানি না কেমন লাগবে ভুলক্রুটি হলে ক্ষমার চোখে দেখবেন)
(কাজিন রিলেটেড + রোমাঞ্চকর+থ্রিলার)
লেখক : #নুরজাহান_আক্তার_স্নিগ্ধা……
📌কপি সম্পুর্ন নিষিদ্ধ
#পর্ব_১
অনেক চেচামেচি শব্দের কারণে সকাল সকাল নিশিতার ঘুম ভেঙে যায়।নিশিতা ঘুমু ঘুমু চোখে আস্তে আস্তে চোখটা খুলে দেখে তার ভাই তার দিকে রাগি ভাবে তাকিয়ে কি যেনো বলছে আবার চোখটা বন্ধ করে কয়েকসেকেন্ড পর আবার চোখটা খুলে হঠাৎ ঘুম থেকে ওঠলে ওর আবার মাথা কাজ করে না কিছু বুঝতে না পেরে ওঠে বসে এক মিনিট মাথায় হাত চেপে মাথা নিচু করে বসলো আবার সামনে তাকিয়ে দেখতে পেল ভাইয়া রাগি চোখে তাকিয়ে আছে আপু ও কোমরে হাত দিয়ে রাগি চোখে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে আর আপুর সাথে বড় আাম্মু দাড়িয়ে আছে।বসতে দেখে ভাইয়া বলতে শুরু করলো
-আমরা পুরো রুম খুঁজে জামাকাপড় পাই না।আর এসে দেখি তুই পরে আছিস তুই কি ঠিক হবি না(ভ্রু কুচকে)
আপু ও ভাইয়ার সাথে বলে ওঠলো
-আমার ওয়ান পিছ এর সাথে মিলিয়ে নতুন প্লাজু টা পরশু আনলাম আর তুই পরে আছিস।এমন কে করিস
এবার বড় আম্মু ও বলে ওঠলো
-তুই কেন এমন টা করিস বল তো মা তোকে শপিং যেতে বল্লে তো তোর আর ভালো লাগে না।কিন্তু ওদের নতুন কিছু দেখলে সাথে সাথে নাই করে দিস।
এবার সবার কথা শুনে নিশিতা বলে ওঠলো
-তোমরা এমন কেন করো সকাল সকাল একটা টি-শার্ট আর প্লাজু ই তো পারছি।তার জন্য এমন করতে হয়
আমার এই কথা যেন আগুনে তেল ডালার কাজ করলো, ভাইয়া আরো রেগে বলে ওঠলো
-এটা শুধু আজকে হলে মানা যেত। তোর প্রতিদিন এর কাজ হয়ে উঠেছে একটা নতুন টি-শাট এনে নিজে পরতে পারি না তার আগেই নাই করে ফেলিস।
ভাইয়া কথা বলতে বলতে সকাল সকাল চেচামেচি শব্দে বড় আব্বু এসে হাজির সে গম্ভির মুখ করে বলে উঠলো
-যা হওয়া হয়েছে এখন যে যার কজে যাও
বড় আব্বুর কথা শুনে নাদিফ বিরক্তি নিয়ে নিশিতার দিকে তাকিয়ে চলে গেল তারপর সবাই যে যার মতো চলে গেলেন বড় আব্বু ও আর কিছু না বলে চলে গেলেন…
——এ কাহিনি দেখে অবশ্যই আমার পরিচয় জানতে ইচ্ছে করছে আমি নিশিতা শেখ। পুরো নাম মেহেরিনা জাহান নিশিতা।শেখ ভিলা বিশাল জায়গা নিয়ে তৈরী রাফহান শেখ এর খুব শখের বাড়ি তার পরিকল্পনায় এ বাড়ি তৈরি।রায়হান শেখ বাড়ির বড় কর্তা তারা তিন ভাই শেখ বাড়ির কর্তা তারা যা বলবে তাই মেনে নিতে হবে।কিন্তু রায়হান শেখ এর কথা বাড়ির আর দুই কর্তা ও মানতে বাধ্য মূলত বাধ্য না বড় ভাইকে সম্মান করে বলেই মানে। শেখ বাড়ির নিজেস্ব বিজনেস রয়েছে যা অনলাইনের এবং নিজেদের পরিশ্রম এর মাধ্যমে দেশ বিদেশে বিভিন্ন শাখা রয়েছে দেশে সব শহরে শেখ ইন্ডাস্ট্রি শাখা রয়েছে বংশ গতভাবে রাজনীতির সাথে জড়িত রায়হান শেখ এখানে এমপি এর পদে নিযুক্ত রয়েছেন।
বাড়ির বড় কর্তা আমাদের প্রিয় বড় আব্বু রায়হান শেখ সে একটু গম্ভির মানুষ সাথে রসিক ও কিন্তু তার রসিক স্বভাব কিছু কিছু মানুষের জন্য আবদ্ধ। রায়হান শেখের অর্ধাঙ্গিনী রাহেলা বেগম আমাদের বড় আম্মু তাদের বড় ছেলে নাহিয়ান শেখ(2৮)
মেজো ছেলে রাদিফ শেখ(২৩)
তাদের একমাএ বোন আরোহি (১৬)
বাড়ির মেজো কর্তা নাহিদ শেখ সে একজন সরকারি কর্মকর্তা তার অর্ধাঙ্গিনী নাদিয়া শেখ (স্কুল শিক্ষক)
বড় ছেলে নাদিফ শেখ(২৪)
মেজো মেহেনুর জাহান নিধি (২০)
মেহেরিনা জাহান নিশিতা(১৭ )
শেখ বাড়ির ছোট কর্তা ইরফান শেখ সে খুবই মিশুক মনের মানুষ তার স্ত্রী সামিয়া বেগম তাদের
বড় মেয়ে ইরা শেখ(১৪)
আর ছেলে রাফি(১১)
(বড় ফুপ্পি)আয়শা বেগম তার স্বামী ইকবাল শেখ উনি ফুফা+চাচা দুটোই হয় রায়হান শেখের চাচাতো ভাই বলে কথা উনাদের
একমাএ ছেলে মাহদি শেখ(২৬)
এখন রইলো মিনুফু(ছোট্ট ফুপ্পি) তার ব্যাপারে না হয় পরেই জানি…..
সবাই যাওয়ার পর নিশিতা হাফ ছেড়ে বাচলাম না হয় আপু আর ভাইয়া খবর করে দিত.. ভাবতে ভাবতে ঘড়ি দিক এ তাকালাম ও মাই আল্লাহ তারাতারি তৈরি হতে হবে কলেজ আছে বিছানা থেকে ওঠে বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে ড্রেস চেন্জ করে কলেজের সাদা ড্রেস টা পরে চুল উচু করে একটা জুটি করলাম করে ব্যাগ নিয়ে নিচে চলে যেতে পেল এক ধমক
-এ্যাই তোর এত তারাহুরো কিসের এইভাবে লাফাতে লাফাতে নামলে মুখ থুবড়ে পড়বি ধিরে সুস্থে নামতে পারিস না।(রাহেলা বেগম)
ধমক খেয়ে টেবিলের এসে দেখতে পেল আরোহি, নিধি,নাদিফ,রাদিফ সবাই টেবিলে চেয়ার টেনে বসে নিতে রাহেলা বেগম আর সামিয়া বেগম তারাতাড়ি খেয়ে নিতে বলল।সেও ভদ্র মেয়ে মত খেয়ে আরোহি কে নিয়ে কলেজের জন্য রওনা দিল। বের হয়ে দেখতে পেল তাদের জন্য ড্রাইভার আঙ্কেল দারিয়ে আছে কিন্তু আজ তারা গাড়িতে যাবে না তারা সাইকেল নিয়ে যাবে। সময় পেলেই সাইকেল চালিয়ে যেতে পছন্দ করে। সাইকেল চালিয়ে আসে আর পরিবেশ উপভোগ করেন। কলেজে এসে তারপর যে যার যার ক্লাসে চলে যায় আজ এমনিতেই দেরি হয়ে গেছে আর সব ফ্রেন্ডরা আসবেও না বৃহস্পতিবার বলে কথা বন্ধের বাহানা খুজে ভাবতে ভাবতে ক্লাসে ঢুকে দেখতে পেলাম তার ব্রেস্টি মিলি তার জন্য যায়গা রেখে দিয়েছে আর এটা তার জানা কথাই ক্লাসে তিনটে সারিতে বেঞ্চ রাখা শেষের সারিতে প্রথম দুটি বেঞ্চ তার আর তার চাংকুপাংকি ফ্রেন্ডদের জন্য আবদ্ধ করা তারা এখানে বসে সবাই জানে। তাদের ফ্রেন্ডশীপ অনেক স্টোং তাইতো পাচঁ বছর যাবত একসাথে এগুলো ভেবে সিট এ যেয়ে ব্যাগ রাখতে রাখতে মিলিকে উদ্দেশ্য করে বললো
-কিরে মিলু বেবি. কি অবস্থা তোর। কার ভাবনায় গুম তুই?
নিশিতা এসেছে তারপর কোন প্রতিক্রিয়া নেই। এমনতো হওয়ার কথা না এই মেয়েতো পারলে সারাদিনই ওকে জরিয়ে ধরে রাখে।মিলির কোন বোন নেই একটা মাএ ভাই তাও বিদেশে থাকে।তাই কলেজে আর ফেসবুকে ফ্রেন্ডদের গ্রুপে আড্ডা দিয়ে দিন যায় তার। নিশিতা এসেছে ও বুজতে পেরে নিশিতার দিক এ তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিল..তার পর বলল
-এই তো ভালো তোর কি আবস্থা( মলিন মুখে )
নিশিতার আর বুঝতে বাকি রইলো না যে কিছু একটা হয়েছে।ও দেখা মাএ ও লাফালাফি শুরু হয়ে যায় সব সময় মুখে হাসি থাকে..কিন্তু আজ তা নেই.
নিশিতা নরম স্বরে বললো
-মিলু তোর কি কিছু হয়েছে। তোর কি মন খারাপ। কেউ কিছু বলেছে বল আমাকে
মিলি নিশিতার দিকে চেয়ে চোখ টলমল করছে ওর…
-তুই তো কাল আসলি না আমি কোচিং করে বাসায় যাব তখন রাস্তায় কিছু ছেলে বাইকে বসে বাজেভাবে ইভটিজিং করে আজ সকালে আমার হাত ধরার চেষ্টা করে খারাপ কথা মিনিং ও করে।আমি অনেক কষ্ট করে ওখান থেকে বের হয়ে আসি।
একথা শুনে ওর রাগ উঠে যায় এতো বড় সাহস হয় কিভাবে ভাইদের জানাতে হবে। তার প্রাণপ্রিয় বান্ধবীকে ইভটিজিং ভেবে মুখে বলল
-ওই বেয়াদব এর সাহস কি করে ওদের ঘরে মা বোন নেই।তুই বাড়ি তে জানিয়েছিস ব্যাপার টা। তুই একদম চিন্তা করবি না আমি ব্যাপার টা দেখছি..
-আজ ইভান ভাইয়া থাকলে এমন কিছু সম্মুখীন হতে হতো না। বাসায় বললে আম্মু আব্বু টেনশনে শেষ হয়ে যেতো।
ওদের কথা বলার মধ্যে স্যার চলে আসে..
ক্লাস শেষ করে একসাথে কোচিং-শেষ করে চিন্তা করছিলো ছেলে গুলো আবার আসলে কি করবো মিলি কে একা ছাড়া যাবে না আর ও একা ওদের সাথে করতে পারবো না কিছু একটু হেঁটে রাদিফকে দেখতে পেল আড্ডা দিচ্ছে দেখে নিশিতা সোজা ভাই কাছে চলে গেল রাদিফের পিছনে থেকেই ডাকলো
-রাদিফ ভাইয়া…..
রাদিফ নিশিতার কন্ঠশুনে পিছনে তাকলো….
-কি ব্যাপার তুই এখানে যে বাসায় যাসনি।এমনে তো রাস্তায় চিনস ই না আজ কি হলো (ভ্রু কুঁচকে)।আরে মিলি যে কেমন আছো?
নিশিতার সাথে মিলিকে দেখতে পেয়ে। মিলি ততক্ষণে ওর পিছনে দাঁড়িয়ে..
-জ্বি আলহামদুলিল্লাহ ভালো।আপনি ভালো আছেন ভাইয়া
-হ্যা এই তো খুব ভালো আছি।তো বাসায় যাও না কেন।
-জ্বি ভাইয়া যাব।
নিশিতা যে তার বোন রাস্তায় ও কথা শুনাতে হয় আর মিলি কে দেখলে হুশ থাকে না কি মনে করে নিশিতা কি কিছু বুঝি না (মুখ ভেংচি কেটে) বলতে লাগলো
-ভাইয়া তুমি কি এখন বাসায় যাবে। চলো না মিলু কে ওর বাসায় ড্রপ করে আমরা যাই।(আমি তো জানি সে এক পায়ে রাজি)
রাদিফ কিছু একটা ভেবে বলল..
-চল তাহলে
রাদিফ সবার থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলো ওদের সাথে ওদের রিকশা উঠেয়ে দিয়ে রাদিফ বাইক নিয়ে আসছে সাথে সাথে.. ছেলেগুলো তখন ও সেখানে ই ছিলো মিলি নিশিতাকে ইশারায় দেখিয়ে দেয় ছেলেগুলো হয়তো বুঝতে পারে ওদের সাথে রাদিফ আছে তাই কাছে আসে নি কিন্তু কি জানি ইশারায় বুঝাচ্ছিল তা রাদিফ দেখে রেগে গিয়েছিল।কিন্তু আমরা সাথে বলে কিছু বলেনি..
বাসায় ফিরে ..বাসায় ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা ৬টা। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে একটা ওভার সাইজের টি-শার্ট আর পাজামা পরে।নাস্তা করে তার আর এনার্জি নেই শরীরে হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে পরলো ৭:৩০ এ ওঠে পরতে বসলো আর যাইহোক পড়াশোনা নিয়ে সে হেয়ালি করে না শেষ করে ১০:৩০এ তারপর রাতের খাবার সবাই একসাথে খেয়ে নিলো বাড়ির বড়রা আছে বলে কেউ কোনো শব্দ করেনি। খাওয়া দাওয়া শেষ করে নাদিফ, রাফিদ, নিধি,নিশিতা,আরোহি,ইরা ,রাফি সবগুলা আড্ডা দিতে বসলো ভাইবোনদের আড্ডায় আর বড়রা ড্রিস্টাব করে না মাঝে মাঝে সাথে তারাও যোগ করে যা ই করি কিন্তু ১২:৩০ এর মধ্যে শুয়ে পরতে হবে.. ছুটিরদিন এই নিয়ম বরাদ্দ না।নিশতারাও ভদ্র বাচ্চাদের মতো তাই করে.. আজকে শরীর খারাপ অনুভব করছিলো দেখে তেমন আড্ডা দেওয়া হয়নি। রুমে এসে ঘুম….
(চলবে)