#পাইথন
#2nd_Part
সাকার রাজ্যের সৈনিকরা আক্রমণাত্মক ভাবে কাউকে ঘিরে রেখেছে চারদিক থেকে। আশেপাশে আরো অনেক সৈনিকদের লা*শ পড়ে আছে।
একজন সৈনিক চিৎকার করে বললো ” তুমি ভ্যাপ হও আর যাই হও। এখনো সময় আছে আত্মসমর্পণ করো। না হলে এখানে আরো হাজার সৈনিক আসবে। আমাদের হাইকাল আসবে। তুমি কতক্ষণ নিজেকে টিকিয়ে রাখবে…..?
এক বৈদ্যুতিক ঝটকায় সেই সৈনিক উড়ে গিয়ে পাতাবিহীন শুঁকনো গাছ ভেঙে দুমড়ে মুচড়ে পড়লো। আগমন হলো ভ্যাম্প জিজা’র।। তার চোখ থেকে চিকচিক শব্দ করে বিদ্যুৎ বের হচ্ছিলো। লালচে চুল গুলো বাতাসে উড়ছিলো। হাতে ধরে ছিলো এক সৈনিকের কাঁটা মাথা।
ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকা সকল সৈন্যরা ভয়ে এক পা করে পিছিয়ে গেলো। জিজা খুব শান্ত গলায় বললো ” আমাকে শুধু এখান থেকে বের হওয়ার রাস্তা বলে দাও। আমি কারো কোন ক্ষতি না করে চলে যাবো….!
একজন সৈনিক ভয়ে ভয়ে বললো ” সাকার রাজ্যে প্রবেশ করার পথ আছে কিন্তু বের হওয়ার পথ নেই। তুমি এখান থেকে কোনদিনও যেতে পারবে না….!
জিজা বললো ” তার মানে বলতে চাচ্ছো সাকার রাজ্য হচ্ছে সেই মানুষটার মতো, যার মুখ আছে কিন্তু পু*টকি নেই….ঠিক আছে আমি বের হওয়ার রাস্তা তৈরি করে নিবো। আমার পথ থেকে সরে দাঁড়াও…..!
একজন সৈনিক বললো ” কেন জেদ করছো। তুমি এখান থেকে কোথাও যেতে পারবে না। আত্মসমর্পণ করো আমাদের কাছে….!
জিজা একটু হতাশ হয়ে বললো ” বুঝেছি! সোজা আঙুলে ঘি উঠবে না। তাহলে কাঁটা চামচ দিয়েই তোমাদের ঘি বের করবো……
এই বলে জিজা আক্রমণাত্মক ভাবে বিদ্যুৎ বেগে একে একে সবাইকে শুঁকনো গাছের ডালের মতো ভেঙে আঁচড়ে ফেলতে লাগলো। সৈনিকরা আক্রমণ করবে কিন্তু কিছু বুঝে উঠার আগেই জিজা তাদের সামনে চলে আসছে আর তার হা করারও সময় পাচ্ছে না….
এক এক করে সবাইকে মেরে সবশেষে তাকে ধরলো যে জিজা’কে আত্মসমর্পণ করতে বলেছে। তাকে ধরে জিজা দাঁত কটমট করে বললো ” পৃথিবীতে আমাদের ঘরের তেইল্লাচোরা তোর চেয়ে বেশি স্বাস্থ্যবান। আর তুই আমাকে বলিস আত্মসমর্পণ করতে। আজকে মুড ভালো আছে বলে কিছু বললাম না। না হলে যে কি করতাম……
সৈনিক কাঁদতে কাঁদতে ভয় ভয় কন্ঠে বললো ” মুড ভালো আছে তাতেই এতো সৈনিক মেরে ফেলছো। প্রার্থনা করি তোমার মুড যেনো কোনদিন খারাপ না হয়…..!
জিজা আশেপাশে তাকিয়ে সৈনিকদের লা*শ দেখে বললো ” আসলেই একটু বেশিই হয়ে গেছে। এখন বলো এখান থেকে কিভাবে বের হবো। আমাকে আমার শরীরে ফিরে যেতে হবে। আমি এখনো মৃত্যুবরণ করি নি। শুধু শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে হয়ে গিয়েছি….!
সৈনিক কিছু বলতে যাবে তার আগেই পেছন থেকে কারো দারাজ কন্ঠ ” তোমার উচিত আমার সাথে কথা বলা ভ্যাম্প….!
জিজা সৈনিককে ছেড়ে দিয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখলো একজন খচ্চরের পিঠে বসে আছে। তার পেছনে আরো অনেক সৈনিক দাঁড়িয়ে আছে। জিজা বিড়বিড় করে বললো ” এই কার্টুন টা আবার কে….?
জিজা’র ভাবনা শেষ না হতেই সে বললো ” আমি হাইকাল! সাকার রাজ্যের অধিপতি। এই প্রথম আমার রাজ্যে কোন ভ্যম্পের আগমন। এইটুকু বিশৃঙ্খলা না হলে এটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে কিভাবে। চলো মহলে গিয়ে কথা বলা যাক….!
পেছন থেকে একজন সৈনিক বললো ” হাইকাল! কি করছেন আপনি। সে আমাদের কত সৈনিককে মেরেছে। তাকে বন্দী না করে মহলে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন….?
হাইকাল আস্তে আস্তে বললো ” শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াই না করে তাকে নিজের দলে ভিড়িয়ে নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। আর আমি হলাম সেই বুদ্ধিমান….
এই বলে হাইকাল বিরক্তি নিয়ে পেছনে সৈনিকদের দিকে তাকালো। সৈনিকরা একসাথে বলে উঠলো ” হাইকালে’র জয় হোক, হাইকাল অমর হোক…..!
জিজা বললো ” আপনি ইহকাল নাকি পরকাল সেটা আমি জিজ্ঞেস করি নি। আমাকে শুধু এখান থেকে বের হওয়ার রাস্তা বলে দিন। আমি চলে যাবো। আমি ঝামেলা পছন্দ করি না কিন্তু কেউ ঝামেলা করতে আসলে তাকে ছাড়ি না…..!
হাইকাল বললো ” যাবে তো। আমি তোমাকে রাস্তা বলে দিবো। কিন্তু আমার রাজ্যে ভ্যাম্প রোজ রোজ আসে না। তুমি এসেই যখন গিয়েছো তাহলে আমার আমন্ত্রণ গ্রহণ করো। তোমার পছন্দের অনেক খাবার আছে এখানে…!
জিজা একটু ভেবে বললো ” না! মা বলেছে অপরিচিত কারো দেয়া কিছু না খেতে। আমি নিজেই রাস্তা খুঁজে নিবো….!
এই বলে জিজা হাঁটা দিলো উল্টো দিকে। হাইকাল তাড়াহুড়ো করে বললো ” আমি কি তোমাকে কোন সাহায্য করতে পারি না….?
জিজা যেতে যেতে বললো ” হ্যাঁ অবশ্যই! আমার পেছনে কোন সৈনিক পাঠাবেন না দয়া করে। এইটুকু সাহায্য চাই আপনার। আর কিছু চাই না…..!
হাইকাল তখন বললো ” পাইথন’কেও চাই না…..?
জিজা থমকে দাঁড়িয়ে গেলো। আস্তে আস্তে ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকিয়ে বললো ” পাইথন…?
হাইকাল বললো ” হ্যাঁ পাইথন! সে এখন সাকারে আছে এবং আমার মহলে আছে…!
জিজা এগিয়ে এসে হাইকালে’র সামনে দাঁড়িয়ে বললো ” আমি হেঁটে যেতে পারবো না। আমার জন্যও একটা গাধা লাগবে। যার পিঠে চড়ে যাবো আমি…!
হাইকাল বললো ” এটা গাধা না, খচ্চর! আর সাকার রাজ্যে হাইকাল ছাড়া কারো অনুমতি নেই খচ্চরের পিঠে চড়ার….!
জিজা হাইকালে’র পা ধরে এক টান দিয়ে তাকে ফেলে দিয়ে লাফ দিয়ে খচ্চরের পিঠে চড়ে বললো ” আজকের জন্য সাকারে’র আইন পরিবর্তন করা হলো…..!
এই বলে জিজা খচ্চরের পিঠে থাপ্পড় দিতেই চলতে শুরু করলো।
সৈনিকরা অবাক হয়ে হাইকালে’র দিকে তাকিয়ে থাকলে হাইকাল বত্রিশ টা দাঁত মেলিয়ে বললো ” বাচ্চা পোলাপান তো! তাই ছাড় দিলাম একটু…..
**দৃশ্য পরিবর্তন…..
পাইথন সাকার সৈনিকদের পোশাক পড়ে টেনে টেনে এডজাস্ট করছে আর বলছে ” এতো টাইট পোশাক কেউ পড়ে নাকি। অবশ্য এখানকার সৈনিকদের যেই শরীর তাদের জন্য ঠিক আছে এই পোশাক…
বলতে বলতে বাইরে এসে দেখলো গুটি কয়েক সৈনিক মহলে। সবাই কোথায় গেলো। তার মাঝে কয়েকজন মহলের ধূলিময় আঙিনায় লড়াই প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। অর্থাৎ নিজেরা নিজেরা প্রশিক্ষণ লড়াই করছে। একজন তাদেরকে শিখিয়ে দিচ্ছে লড়াই করার কৌশল।
পাইথন এক জায়গায় বসে সেটা উপভোগ করতে লাগলো। পাইথন খেয়াল করলো যে তাদেরকে শিখাচ্ছে সে ভুল করছে কিছু একটা।
তখন পাইথন ডাক দিয়ে বললো ” এই যে গরীবের সেনাপতি! তুমি তো তাদেরকে শুধু সামনে থেকে আসা আক্রমণ রুখে দেয়ার কৌশল শিখাচ্ছো। পেছন থেকে এসে তাদেরকে ভরে দিলে তখন কি করবে তারা….!
গরীবের সেনাপতি একটু রেগে বললো ” তুমি নিজের চরকায় তৈল দাও। আর যদি সাহস থাকে তাহলে আমার সাথে লড়ে দেখাও….!
পাইথন হাসতে হাসতে বললো ” আমি মারলে মরে যাবে তুমি…!
সেনাপতি বললো ” আচ্ছা তাই নাকি। তাহলে তোমাকে কে মারলো। নিশ্চয়ই সে তোমাকে কুকুরের মতো মেরেছে….!
পাইথনে’র চেহারা রাগে কাঁপতে লাগলো। বসা থেকে উঠে এক সৈনিকের হাত থেকে বর্শা টান দিয়ে নিয়ে ধূলিময় আঙিনায় এসে দাঁড়িয়ে বললো ” তোমার ঐ নিকৃষ্ট মুখ আমি ভেঙে ফেলবো। তালিফে’র দাদীর কিড়া…..
((ওপর থেকে তালিফে’র দাদী বললো ” আমার কিড়া দিয়া যদি ওর লগে হাইরা যাস তাইলে জামিন নিয়া নিচে আইয়া তোর মুখ ভাঙমু আমি))
**শুরু হলো পাইথন আর সেনাপতির মাঝে বর্শা যুদ্ধ। বাকি সৈনিক রা কৌতুহল নিয়ে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে উপভোগ করছে। প্রথমে দুজন সমান তালে লড়াই করলেও ধীরে ধীরে সেনাপতি ঘায়েল হতে লাগলো। পাইথনে’র আঘাতে সেনাপতির হাতের বর্শা পড়ে গেলো নিচে।
পাইথন পা দিয়ে উঠিয়ে সেটা সেনাপতির দিকে ছুঁড়ে দিয়ে বললো ” আবার চেষ্টা করো…
সেনাপতি বর্শা উঠিয়ে এবার হাঁটু গেড়ে বসে মাথা নিচু করে বললো ” তুমি জয়ী হয়েছো। এখন চাইলে আমার মুখ ভেঙে দিতে পারো….!
পাইথন বললো ” এতো সহজেই হার মেনে নিলে…?
সেনাপতি বললো ” তোমার লড়াই করার কৌশল একদম ভিন্ন। যতক্ষণে আমি সেটা বুঝতে পারবো ততক্ষণে তুমি আমাকে ভরে দিবে। মাঝে মাঝে থেমে যেতে হয়….!
পাইথন তার হাতের বর্শা ফেলে দিয়ে এগিয়ে এসে সেনাপতির দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো ” তুমি একজন যোগ্য সেনাপতি। তুমি জানো কখন সামনে এগুতে হবে, কখন থামতে হবে…!
সেনাপতি পাইথনে’র হাতে হাত রেখে উঠে দাঁড়িয়ে বললো ” ধন্যবাদ! চলো হাঁটতে হাঁটতে কথা বলা যাক….
পাইথন বললো ” তুমি এখানে কতদিন যাবৎ আছো…?
সেনাপতি বললো ” প্রায় কয়েক বছর শূন্যে ঘুরতে ঘুরতে অবশেষে এখানে এসে পড়েছি। পাঁচ বছর ভূগর্ভস্থ কারাগারে বন্দী থেকে নিজের সাজা কাঁটার পর হাইকাল অনুগ্রহ করে আমাকে তার সৈনিক দলে জায়গা দিয়েছে…..তোমার ব্যাপারে বলো। তুমি তো মহান যোদ্ধা। তুমি কিভাবে মা-রা গেলে আর এখানেই বা কিভাবে এলে…..?
পাইথনে’র চোখে ভেসে উঠলো সেই দিনের দৃশ্য, যেদিন লর্ড ধোঁকাবাজি করে পাইথন আর জান্নাতকে মেরে ফেলেছিলো। জান্নাতের কথা মনে হতেই পাইথন জিজ্ঞেস করলো ” এখান থেকে মানুষ্য আত্মাদের রাজ্য কত দূর বলতে পারো….?
সেনাপতি বললো ” সেটা তোমাকে একজন-ই বলতে পারবে। সিলভিয়া…..!
পাইথন থতমত খেয়ে বললো ” সিলভিয়া! মানে মারিদ’দের পূর্ববর্তী রাণী সিলভিয়া…?
সেনাপতি বললো ” তুমি তাকে চেনো! তুমিও কি মারিদ জ্বীন…?
পাইথন বললো ” আমার টা একটু অগুছালো! আমি ইফরিত জ্বীন! বড় হয়েছি ঘুল জ্বীনের আয়ত্তে, আর বন্ধুত্ব করেছি মারিদ জ্বীনদের সাথে….!
সেনাপতি বললো ” আচ্ছা এই ব্যাপার! তোমার জীবনের গল্প একদিন সময় করে বলো আমাকে। আমি কৌতূহলী শুনতে….!
পাইথন সহমত পোষণ করে জিজ্ঞেস করলো ” সিলভিয়ার ব্যাপারে বলো তাহলে…!
সেনাপতি বললো ” সিলভিয়া অনেক আগে এখানে এসেছে নিজের পাপের জন্য। বছরের পর বছর কারাগারে বন্দী ছিলো। তারপর হাইকাল তার যাদুবিদ্যা এবং জ্ঞান গরিমা দেখে তাকে মুক্ত করে নিজের রাজসভায়য় জায়গা দেয়। সে হাইকালে’র অনেক কঠিন কঠিন সমস্যা সমাধান করে দেয় যাদুবিদ্যা দ্বারা। তোমার যা চাই সেটা শুধু সিলভিয়া-ই দিতে পারবে….!
পাইথন বিড়বিড় করে বললো ” মেরে তো লাগ গায়ি! সে আমাকে কখনও সাহায্য করবে না…..!
তখন-ই দেখা সেনাপতি দূরে কিছু একটা দেখে চোখ ছোট করে অবাক হয়ে বললো ” আমি যা দেখছি তা কি সত্যি নাকি স্বপ্ন….?
পাইথন সেনাপতির দৃষ্টি অনুসরণ করে তাকিয়ে দেখলো হাইকাল হেঁটে আসছে সৈন্যদের নিয়ে। আর খচ্চরের পিঠে বসে আছে বাচ্চা একটা মেয়ে। দূর থেকে তার চেহারা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে না।
পাইথন বললো ” আমার জানামতে সাকারে হাইকাল ছাড়া কেউ খচ্চরের পিঠে চড়ে যাতায়াত করে না তাই না….!
সেনাপতি বললো ” হ্যাঁ আমিও সেটাই জানতাম কিন্তু আজকে কি হলো এটা। কে ঐ বাচ্চা মেয়ে…?
আরেকটু দূরত্ব কমলে জিজা’র চেহারা পাইথনে’র চোখে স্পষ্ট হতে লাগলো। পাইথন হা করে এক পা দু পা করে এগিয়ে যেতে যেতে বললো ” ফিরসে লাগ গায়ি! এই বান্দর এখানে কিভাবে এলো….!
সেনাপতি বললো ” বান্দর! কই আমি তো দেখছি মানুষের বাচ্চার মতই…!
পাইথন আর কিছু না বলে এক ছুট দিলো সেদিকে। সকল সৈনিকরা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে হাইকাল’কে হেঁটে আসতে দেখে। হাইকাল সবাইকে বলছে ” ছোট বাচ্চা তো তাই না করতে পারি নি। আমাকে কিন্তু পা ধরে টান দিয়ে ফেলে দেয় নি খচ্চরের পিঠ থেকে। আমি নিজেই নেমে এসে তাকে উঠিয়ে দিয়েছি…..!
জিজা দূর থেকে পাইথন’কে দৌঁড়ে আসতে দেখে খুশিতে এক লাফে খচ্চরের পিঠ থেকে নেমে হাইকাল’কে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দৌঁড়ে গিয়ে পাইথনে’র কোলে উঠে গেলো এক লাফে…….
হাইকাল উঠে জামাকাপড় ঝারতে ঝারতে রাগান্বিত কন্ঠে বললো ” এই পাথর টা এখনে কে রেখেছে। এটার সাথে উস্টা খেয়ে পড়ে গেলাম আমি…..!
একজন সৈনিক বললো ” উস্টা খেয়ে কখন পড়েলেন। ঐ বাচ্চা মেয়ে আপনাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছে….!
হাইকাল তার দিকে কটমট দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো ” এতো বেশি কথা কস কেন। আমি জিনিসটা কভার করার চেষ্টা করছি….!
সৈনিক বুঝতে পেরে জোরে বলে উঠলো ” হাইকালে’র জয় হোক, হাইকাল অমর হোক……
এদিকে জিজা পাইথনে’র গলা জড়িয়ে ধরে বললো ” কখনও ভাবতে পারি নি আবার তোমাকে দেখতে পাবো। জানো আমি কতো কান্না করেছিলাম তোমার জন্য। টানা চার ঘন্টা না খেয়ে ছিলাম। মা’য়ের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আমি এতো ভেঙে পড়েছিলাম যে আমার ভাঙার শব্দে ফায়ার সার্ভিস এম্বুলেন্স সব চলে এসেছিলো…..
পাইথন জিজা’র মুখ চেপে ধরে বললো ” আল্লাহর ওয়াস্তে থাম মা! আর চাপা মারিস না। সেসব কথা বাদ দে। তুই এখানে কেন। তার মানে তুই মা-রা গেছোস….!
জিজা ফুরুৎ করে পাইথনে’র কোল থেকে নেমে বললো ” আমাকে মারা-র সাহস কার আছে। আমি মরি নি। শুধু নিজের শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছি একটা দূর্ঘটনায়। পরে বলবো তোমাকে সব… তুমি এখানে কিভাবে এলে….?
পাইথন হাঁটু গেড়ে বসে জিজা’র কানে ফিসফিস করে বললো ” ডালিয়া’কে মেরে ফেলার অপরাধে আমাকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে চিন্তা নেই আমাকে কারাগারে ফেলে নি। মহলেই সৈনিকদের মাঝে রেখেছে। তুই এটা কি করেছিস। হাইকাল’কে হাঁটিয়ে এনেছিস নিজে খচ্চরের পিঠে চড়ে….!
জিজা ফিসফিস করে বললো ” তার অনেক সৈনিক আমার হাতে মা-রা পড়েছে বুঝছো। ঐ দৃশ্য দেখেই তার প্যান্ট নষ্ট হয়ে গেছে। আমাকে কিছু বলার সাহস নেই তার….!
পাইথন হাসতে হাসতে বললো ” আসতে না আসতেই হাইকাল’কে ভয় দেখিয়ে ফেলেছিস…!
জিজা বললো ” তা নয়তো কি। কাপড় খুলে যাক তবুও নিচু হওয়া যাবে না…. জান্নাত আন্টি এখানে নেই তাই না….?
পাইথন মন খারাপ করে বললো ” হ্যাঁ! তুই কিভাবে বুঝলি…?
জিজা বললো ” তোমার হাতের দিকে তাকিয়ে। রেখা গুলো ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে হাতের ব্যবহার খুব বেশি হচ্ছে….!
পাইথন থতমত খেয়ে জিজা’র মুখ ধরে বললো ” চুপ কর বান্দর! মাইনসে শুনলে কি ভাববে….!
জিজা পাইথনে’র হাত সরিয়ে বললো ” শুনবে কি! শুনে ফেলেছে….!
দেখা গেলো পাইথনে’র পেছনে হাইকাল কান পেতে দাঁড়িয়ে আছে। পাইথন অপ্রস্তুত হয়ে বললো ” না মানে! ও একটু বেশি-ই পাকা। আপনার ঘরে শরনার্থী হয়ে এসে কয়েকদিন পর আপনাকেই ঘর থেকে তাড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে সে….!
হাইকাল বললো ” হ্যাঁ বুঝতে পেরেছি! হিজরাইল-এর মতো আর কি। তবে আমার ভয় নেই। কারণ জিজা এখানে থাকতে আসে নি। তাই না….!
জিজা বললো ” হ্যাঁ! আমাকে যত দ্রুত সম্ভব নিজের শরীরের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে হবে। আমি শুধু পাইথনে’র জন্য আপনার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছি….!
হাইকাল বললো ” তাহলে দেরি করা ঠিক হবে না। আজ সাকার রাজ্যে উৎসব নেমে আসবে। আমি সবকিছুর আয়োজন করছি গিয়ে….আরো অনেক মেহমান আসবে……!
এই বলে হাইকাল চলে গেলো। জিজা এবার পাইথন’কে হাত ধরে টেনে নিয়ে এক জায়গায় বসে বললো ” কি ভাবছো তুমি। জান্নাত আন্টি’কে খুঁজে বের করবে না….?
পাইথন বললো ” আমি চাইলেও জান্নাতের আত্মার রাজ্যে যেতে পারবো না। কিন্তু জান্নাত চাইলে আমার কাছে আসতে পারবে। এখন জান্নাতের সাথে কিভাবে যোগাযোগ করবো সেটা নিয়ে ভাবছি….!
জিজা বললো ” এই রাজ্যে কেউ তো থাকার কথা, যে এখানে বসেই অন্য রাজ্যের খোঁজ খবর নিতে পারে। এসব পাপিষ্ঠ রাজ্যে এমন এক যাদুবিদ্যা করা আত্মা থাকবেই থাকবে। তার খোঁজ নাও। তার কাছে সাহায্য চাও….!
হঠাৎ পাইথনে’র মুখ টা কালো হয়ে গেলো। অজানা এক চিন্তা মাথায় চেপে বসলো। জিজা তো সত্যি বলেছে। এমন কেউ আছে কিন্তু সে তো সিলভিয়া। তার চেয়ে বড় কথা সে জিজা’র জন্মদাত্রী মা। কি হবে তখন যদি জিজা আর সিলভিয়া মুখোমুখি হয়…..?
**দৃশ্য পরিবর্তন……
কালো পানির নদী। হাজারও মাথার খুলি পড়ে আছে। সাপ বিচ্ছু ঘুরে বেড়াচ্ছে। একটু এগিয়ে গেলেই একটা ঝুপড়ি ঘরের দেখা মেলে নদীর পাড় ঘেষা। টিমটিম করে একটা আলো জ্বলছে ভিতরে।
একটা বড় সাপ মুড়িয়ে মুড়িয়ে ঝুপড়ি ঘরে প্রবেশ করলো দরজার ফাঁকা দিয়ে। কিছুক্ষণ পরে একটা শব্দ হলো সেখানে। সাপের দুই টুকরো শরীর টা উড়ে এসে বাইরে আঁচড়ে পড়লো।
ঝুপড়ি ঘরের দরজা আস্তে আস্তে খুলে গেলো। এক মধ্যবয়স্কা নারী বের হয়ে এলো ভিতর থেকে। তার চেহারা ছিলো ভয়ানক কুৎসিত। মাথার চুল গুলো সাপের মতো জট বাঁধা।
ভয়ানক এক হাসি দিয়ে বললো ” সিলভিয়া’র ঘরে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করার শাস্তি একমাত্র মৃত্যু…………. 💀💀💀
To be continue………..
Written by : #Galib_Abraar
#পাইথন
Galib Abraar – গালিব আবরার