#প্রণয়ের_মহাকাব্য
#সামিয়া_আক্তার
(২৮)
শিকদার নিবাসে সামীর রুমের বেডে নিজের পেটে হাত রেখে আয়নার দিকে তাকিয়ে বসে আছে হিয়া, গায়ে তাঁর এখনো কলেজ ড্রেস, সে ভাবতেই পারছে না তার ভিতরে ছোট্ট একটি প্রাণ আছে। এটা কি সত্যি? নাকি সবাই তাঁর সাথে মজা করছে?এই যে সবার এতো আনন্দ এইযে তাকে মাথায় তুলে রেখেছে শাহানা আর জাহানার বেগম তো তাকে পারে না মাটি তে পা ফেলতে পর্যন্ত নিষেধ করতে ,পাছে না হিয়া ব্যাথা পেয়ে যান? আবার ভাবে সবাই না হয় মজা করছে কিন্তু তাসাউফ মীর? তাঁর বাবা বাবাও কি মজা কবরে নাকি? তাঁর ঐ গম্ভীর বাবাও যে তাকে জড়িয়ে ধরে চোখে টলটলে পানি নিয়ে কত কথা বুঝিয়ে গেলো, এইযে জসীম শিকদারের এতো পাগলামো , সে তো বাড়ীই ফিরে নি সোহান কে কল করে একদম চলে গেছেন মিষ্টির দোকানে,সব কি মিথ্যে নাকি?তাঁর যেনো বিশ্বাসই হয় না, হিয়া নরম হাতে নিজের পেটে হাত রাখে মাথা টা নিচু করে পেটের কাছে আনে যেনো কান টা পেটের কাছকাছি গিয়ে ঠেকে হিয়া নিচু কন্ঠে শুধায়,,
– সোনা তুই কি সত্যিই এসেছিস? সবাই কি সত্যি বলছে? কই আমি তো টের পেলাম না!
অনভূতিতে হিয়ার সারা শরীরে কাটা দিয়ে উঠে, এ কেমন সুখ অনুভব হচ্ছে তার? তখনই রূমে ঢুকে শাহানা শিকদার সাথে তাঁর সোহানা, এসেই ঝাঁপিয়ে পড়ে হিয়ার উপর আনন্দে আত্মহারা সে হিয়াকে ঝাপটে ধরে চিৎকার করে বলে,,
– হিয়ারে,,, কি খবর শোনালি বইন আমার তো বিশ্বাসই হয় না,, আমার আমার কি যে আনন্দ লাগছে,, আব্বু যখন কল করে জানালো খবর টা তুই জানিস আমদের কি অবস্থা হয়েছে, সোহান তো এখনো তোকে পায় নি গেছে সে আর আব্বু ,দাদা আর চাচ্চু হওয়ার খুশিতে মিষ্টি বিলাতে ,, আসুক এলে দেখবি কি কি করে
– এই এই ছাড় ওরে,, ওর সাথে ওমন করবি না খবরদার!
শাহানা শিকদার সোহানাকে ধমক লাগান,, তখনই নিচে থেকে তামিমদের আওয়াজ ভেসে আসে, শাহানা শিকদার হিয়ার হাতে সাথে আনা শাড়ী টা দিয়ে তাড়া দিয়ে বলেন,,
– আর কতক্ষণ এভাবে থাকবি? সারাদিনের বাসি জামা হয়ে গেছে দ্রুত গোসল টা করে এটা পড়ে আয় তো মা। আমি নিচে যাই আয়েশা মনে হয় এসে গেছে, আর সোহানা খবরদার ওর কাছ ছাড়া হবি না , বলেই তিনি নিচে যান, হিয়া ও দ্রুত ফ্রেশ হয়ে আসে, বের হতেই আয়েশা মীর মেয়েকে ঝাপটে ধরে ,,চোখে তার আনন্দ অশ্রু মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে তিনি কতো কথা বলে যাচ্ছেন,, কতো আদেশ নিষেধ করলেন,, সোহান বাসায় ফেরার পর থেকে যেনো আরও হৈহোল্লাের পরে গেল। তামিম ও যেনো আজ ছোটো হয়ে গেছে মামা হওয়ার খুশি তে সেও সোহানের সাথে মিলে নেচেছে। সবার এতো এতো ভালোবাসার মাঝেও হিয়া সামী কে খুঁজলো আচ্ছা বাবা হবে শুনে তাঁর অনুভূতি কেমন? সেই যে তাফাউফ মীরের সাথে ঝগড়া করে তাকে হাসপাতাল থেকে বাড়ীতে দিয়ে বের হলো আর ফিরলো না, হসপিটালের তখন কার কথা মনে হতেই হিয়া আবারও লজ্জায় পড়ে গেলো,, যখন তাসাউফ মীর হিয়াকে নিজের বাড়িতে নিতে চাইলো সামী বিন্দুমাত্র সংকোচ না করেই ঠোঁট শক্ত করে কি নির্লজ্জের মতো উত্তর দেয়,
– দুঃখিত! বউ অপনার বাড়িতে রেখেছিলাম মানে এই না এখন বাচ্চার মাকেও থাকতে দিবো, আমার বউ এখন আমার সাথে আমার বাড়িতেই যাবে।
– তুমি চুপ করো, তোমার বউ হওয়ার আগে ও আমার মেয়ে ও এখন আমার সাথেই যাবে?
– হবে আপনার মেয়ে কিন্তু ও আমার বউ এখন আবার আমার বাচ্চার মা ও, তো ওর উপর এখন আমার অধিকার বেশি আমি ওকে এখন শিকদার নিবাসে নিয়ে যাবো আমিও দেখী কে আটকায় !
————
কেঁদে কেটে চোখ মুখ ফুলিয়ে বসে আছে হিয়া পাশে তাঁর সোহানা বসে বই পড়ছে আর সোহান তার মন ভালো করার জন্যে কত কথা বলছে , বাচ্চা নিয়ে তাঁর একটা ভাতিজা হলে কি কি করবে,, ভাতিজি হলে কি কি করবে,, তবুও হিয়ার মুখ ভার একটু আগেই আয়েশা মীর তামিম ওড়া চলে গেছে, তাসাউফ মীর তো সামীর উপর বেশ চোটে আছেন তাই এ বাড়ি
আসেন নি তবে ফোন করেছিলেন গম্ভীর হয়ে বেশকিছুক্ষণ কথা বলেছেন,, পরিক্ষা আর নিজের শরীরের প্রতি খেয়াল রাখতে বলেছেন,, সাথে আরও কতো আদেশ নিষেধ,, যাবার সময় আয়েশা মীর খুব কেঁদেছেন একমাত্র মেয়ে কে এই সময় রেখে যেতে যে তার মন চাচ্ছিল না,, হিয়া ও কেঁদেছে মাকে ছেড়ে সে থাকবে কীভাবে? এখন থেকে তো তাকে এখানেই মাকে ছেড়ে থাকতে হবে। হিয়ার আবারও কান্না পেলো সোহান বিরক্ত হয়ে বলল,,
– আরেক বার ভ্যে ভ্যে করে কাদবি তো দিবো এক চর শালি,, কেঁদে কেঁদে আমার ভাইপো ভাইজি কে ছিচকাদুনে বানাবি নাকি? তুই এত ন্যাকা হলি কবে?
– তুই কি বুঝবি? নিজের বাড়ি ছেড়ে থাকার কষ্ট কি?
রেগে বলল হিয়া,সোহানা বই বন্ধ করে সোহানের পিঠে মেরে বলল,,
– মুখ দিয়ে ভালো কথা আসে না তাই না? আর হিয়া এমন করে কাদার কি আছে? তোর বাড়ি কি বেশি দুরে নাকি, যখন মন চায় যাবি,, আর,,
আর কিছু বলার আগেই হাতে অনেক গুলো শপিং ব্যাগ হাতে ঘরে প্রবেশ করলো সামী, সামী কে দেখে সোহান লাফ দিয়ে তাঁর কাছে গেলো জড়িয়ে ধরে বলে,
– কংগ্রেচ ব্রো,, আমার কিন্তু জব্বর একখ্যান ট্রিট চাই
সামী হেসে সোহানের মাথায় টোকা দিয়ে বলল,
– ট্রিট তো হবেই, এখন ছাড় ক্লান্ত আমি!
সোহান মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানিয়ে ছেড়ে দিল ওদের একা ছেড়ে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে যেতে সোহানা কে ডেকে বলল,,
– সোহা চল তাহলে, ভাইয়া তো এসে গেছেই
সোহনাও উঠে দাড়ালো যাবার সময় অবশ্য সামী কে শুভেচ্ছা জানিয়ে হিয়ার খেয়াল রাখার কথা বলে গেছে,, ওরা যেতেই সামী হাতে থাকা ব্যাগ গুলো সোফায় রেখে দরজা বন্ধ করে চুপচাপ ফ্রেশ হতে চলে গেলো,, হিয়া সামীর এমন চুপ থাকাটা মেনে পারলো না, তবে কি সামী খুশি হলো না? ভেবেই হিয়ার চোখে আবারো পানি জমে গেলো,,
সামী যখন বের হলো হিয়া তখন বিছানার এক পাশে শুয়ে পড়েছে,, সামী ধীরে এগিয়ে গিয়ে হিয়ার পাশে শুয়ে পড়ে, নিঃশব্দে ওর পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে।
হিয়া এক মুহূর্তের জন্যও নিজেকে আর ধরে রাখতে পারে না। ফিরে গিয়ে সামীর বুকের মধ্যে মুখ গুঁজে ফুপিয়ে কেঁদে ওঠে,,
– আপনি খুশি হননি তাই না?
কাঁপা গলায় বলে হিয়া সামী সাথে সাথে হিয়ার মুখ টা বুক থেকে তুলে হিয়ার মুখ দুহাতে ধরে নিজের চোখের দিকে তাকাতে বাধ্য করে,হিয়ার ভেজা চোখের পাতায় চুমু খেয়ে বলে,
– তুই যে আজ আমাকে কি দিলি তা তুই নিজেও কল্পনা করতে পারবি না ফুল ,,, আমি তো এখনো বিশ্বাসই করতে পারছি না আমি বাবা হচ্ছি,,
সামী মাথাটা এগিয়ে হিয়ার পেটের দিকে নিয়ে যায়। পেটে একটা গভীর চু’মু খেয়ে সেখানেই হালকা করে মাথা রাখে। চোখ বন্ধ করে ঘনঘন নিশ্বাস নিয়ে বলে,
– তুই আমার জীবনে যা কিছু সুন্দর তার থেকেও অনেক বেশি কিছু উপহার দিলি আজ। আমি তো শুধু তোকে চেয়েছিলাম,,কিন্তু তুই? তুই আমাকে তোকে দিয়েছিস, আজ বাবা হওয়ার মতো সুখ দিয়েছিস ,, আজ আমাকে পূর্ণ করেছিস,,
সামী শক্ত করে বাঁধন খুশিতে হিয়া চোখ ভিজে ওঠে, ঠোঁট কাঁপে, মা বাবা হওয়ার অনুভূতি টা পৃথিবীর সবথেকে অমলিন, নিঃস্বার্থ আর পরিপূর্ণ অনুভূতি।
—————
দেখতে দেখতে কেটে গেছে দুটো মাস হিয়ার এক্সাম ও শেষ হয়েছে বেশ কিছুদিন,,,,, হিয়ার শরীর দূর্বল থাকায় শুরু থেকেই হিয়া অসুস্থ এর মাঝে এক্সাম গুলো যে কি বাজে ভাবে গেছে সে নিজেই জানে আর জানে সামী ,পরিক্ষার দিনগুলোতো সামী নিজে গাইড করেছে তাকে,, সামী আজ তিন দিন হয় বাড়ী নেই চট্রগ্রাম গেছে কি এক ঝামেলা হয়েছে তাই, যাওয়ার আগে পই পই করে সবাইকে বলে গেছে হিয়াকে দেখতে কারণ হিয়া তো শান্ত হয়ে এক জায়গায় বসে থাকার মেয়ে না, দেখা যাবে এই অসুস্থ শরীর নিয়ে বাঁদরাম করে বেড়াচ্ছে, তাই শাহানা শিকদার থেকে শুরু করে সোহান বাড়ির সবাই বেশ সাবধানে রাখে হিয়াকে,,,
তখন পড়ন্ত বিকেল দাদুমণি গেছেন সামীর ফুপ্পির বাসায়, সোহান গেছে তাদের দলের আজকে নাকি ফুটবল ম্যাচ আছে ওখানে, জসীম শিকদার হসপিটাল বাড়ীতে এখন তারা তিন জন ছাড়া কেউ নেই,,
শাহানার ঘরের বিছানায় হেলান দিয়ে বসে পায়ের উপর পা তুলে শাহানার এনে দাওয়া আপেলের টুকরো গুলো খাচ্ছে হিয়া , পাশেই সোহানা বসা তার হাতে মেডিকেল ভর্তির পরিক্ষারবই চুপচাপ পড়ছে, খাটের ওই পাশে দাঁড়িয়ে রোদে শুকানো কাপড় ভাজ করেছেন,, এতো চুপচাপ আবার হিয়ার পোষায় না সে আপেলের এক পিছ মুখে পুড়ে খেতে খেতে বলে,,
– বুঝলি লাইফটা কেমন রাণী রানী হয়ে গেছে,, এইসব পড়াশোনা না করে বিয়ে কর আমার মতো সুখে থাক,, আমি তো তোর ভাইকে সোজা বলে দিয়েছি আমি আর পড়াশোনায় নেই বিয়ে হয়েছে বাচ্চা কাচ্চা হবে আমি আমার সংসার নিয়েই সুখী আছি, এসবে আর আমি নেই,
– ও আচ্ছা তারপর ভাইয়া কি বলল ?
– হাহ কি আর বলবে? একটু ভাব নিলো হিয়া, পর মুহূর্তই চোখ মুখ কুঁচকে বলে
– বলল যে তোর সংসার করার সখ আমি মেটাবো বেয়াদব! ভাব কত বড় খারাপ লোক! কই বউ অসুস্থ ভালো করে মিষ্টি করে কথা বলবে তা না তিতা আজীবনের তিতাই রয়ে গেল,
হিয়ার কথা শুনে সোহানা আর শাহানা হেসে দিলো, শাহানাকে হাসতে দেখে হিয়া মুখ ফুলিয়ে বলে,,
– হেসো না তো,, এই আমি বলে তোমার ওই বদ রাগি তিতা ছেলেকে সহ্য করছি অন্য মেয়ে হলে ওনার চোখ গরমেই ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে পালাতো, বাই দ্যা রাস্তা মামুনি তোমার ছেলে কে কি হওয়ার পর মুখে মধু দাও নি? মুখ থেকে সব সময় এমন তিতা ঝরে ক্যান?
– না রে মা মধু তো দিয়েছিলাম তবে সে মুখে নেয়নি, চিৎকার করে মুখ দিয়ে বুরবুর করে ফ্যানা তুলে ফেলে দিয়েছে!
শাহানার কথায় আশ্চর্য বনে গেল হিয়া অবাক কণ্ঠে বলে,,
– কি ভয়ংকর লোক দেখেছো? দুনিয়ায় এসেই কি সাংঘাতিক কান্ড করেছে এই লোক,, থু মেরে মধু ফেলে দিয়েছে তাই তো অমন বদ রাগী আর তিতকুকে মেজাজ ওয়ালা লোক হয়েছে!
হিয়ার কথা শুনে সোহানা হাসতে হাসতে ওর প্রায় উপরে পড়ে গেলো,, হাসতে হাসতে সোহানা হিয়ার পেটে বা হাতের শাহাদাত আঙুল ছুঁইয়ে ফিসফিসিয়ে বলে,,
– আমার ভাই যদি তিতায় হয় তাহলে এইটা এলো কোথথেকে ?
সোহানার প্রশ্নে হিয়া চোখ বড় বড় করে তাকায় , হিয়ার মুখ দেখে সোহানা হেসে কুটি কুটি হিয়া অবিশ্বাস্য কণ্ঠে বলে,,
– মামুনি আসো তো দেখি নকল চুল পড়ে সোহান টা এখানে বসে আছে নাকি,, এই সাংঘাতিক মহিলা কিছুতেই আমার সোহা না!
হিয়ার এমন কথায় সোহানা কিছু বলতে যাবে তখই হটাৎ করে নিচ থেকে শোনা গেলো কলিং বেলের শব্দ,,
হটাৎ কলিংয়ের আওয়াজ শুনে ঘুরে গেলো তাদের মনযোগ, হিয়া বিছানা থেকে সোজা হয়ে বসে পড়ল। আবারও একটানা বেল বাজতেই শাহানা বেগম অবাক স্বরে বলে উঠলেন,
– এই সময় আবার কে এলো? এখন তো কারো আসার কথা না!
বলে হনহন করে বেরিয়ে গেলেন দরজার দিকে। যাওয়ার আগে অবশ্য যেতে যেতে সোহানাকে বলে গেলেন,
– সোহানা, হিয়াকে সাবধানে নিয়ে আয়, সিঁড়িতে যেনো সাবধানে চলে।
সোহানা হিয়ার পাশে এসে দাঁড়াল। হিয়ার গায়ে আলতো হাত রেখে বলল,
– চল, দেখি কে এসেছে।
ওরা সবে মাত্র সিঁড়ির দিকে এগোচ্ছে, এমন সময় হঠাৎ নিচ থেকে কে যেন ঝড়ের মতো ছুটে এসে হিয়াকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে উঠল,,
– আপুউউউউউ,,, সারপ্রাইজ!
#চলবে,,,
#প্রণয়ের_মহাকাব্য
#সামিয়া_আক্তার
(২৯)
তানিয়া এসেছে আজ দুই দিন , সেদিন মাঠ থেকে বাসায় ফিরে তানিয়াকে দেখে সোহান যেনো অবাকের চূড়ান্তপর্যায়, তবে আরো বেশি অবাক হয়েছিলো যখন তাঁর মনের রাণীতাঁর মিস ঝগড়ুটে তাকে এড়িয়ে গিয়েছিল, সোহান বারবার কথা বলতে চায় কিন্ত তানিয়া কথা বলে না ছুতো খুঁজে এড়িয়ে যায়, কথা বলে না , চোখ মিলায় না,দেখলে এড়িয়ে যায় ।সোহান নানা কথায় খোচা দেয় বিরক্ত করে যেনো ঝগড়া হলেও করে তবে তাকে অবাক করে দেয় তানিয়া যেনো সোহনকে শুধু অবাক করার জন্যই এসেছে,তাঁর মিস ঝগড়ুটে ঝগড়া না করে শান্ত দৃষ্টি তে তাকায় পর পরই সামনে থেকে চলে যায়। সোহান ভাবে, একটু সময় লাগে তবুও বুঝে তানিয়া রেগে আছে অভিমানে কিশোরী পাহাড় জমিয়েছে, জমবে নাই বা কেনো? সেই যে কোন শীতের এক সকালে না বলে না কয়ে কিশোরীর মনে দোলা দিয়ে সে পালিয়ে এসেছে আর কি খোঁজ নিয়েছে নাকি? তানিয়া শিকার করে না সে সোহানের প্রেমে পড়েছে তবে সোহান বুঝে চোখ দেখে যদি প্রেমিকার মনই না পড়তে পারে তাহলে সে কিসের প্রেমিক? তবে সে কিভাবে বোঝাবে সোহান একবার দুইবার না বহুবার চেষ্টা করছে যোগাযোগ করার,তানিয়া সবে মাত্র এসএসসি পরীক্ষা শেষ করা কিশোরী তার কোনো নিজস্ব ফোন নেই যোগাযোগ করার মতো, অনেক বলে কয়ে হিয়াকে মেনেজ করেছিল হিয়া কাকিমনির সাথে কথা বলে তানিয়া কে চাইলে কথা বলতো না ,তো সে কি করে কথা বলতো? সোহান যখনই বোঝাতে যায় তানিয়া কোনো প্রকার সুযোগ না দিয়ে চলে যায় এই ব্যাপার টা যেনো ছন্নছাড়া সোহান কেও জ্বালায় পোড়ায়। যখন দেখে বাড়ির বাকি সবার সাথে তানিয়া হেসে খেলে কথা বলে কিন্তু তাকে দেখলেই পালাই পালাই করে তখন তার মনটা বিষিয়ে যায়, আজ সারা রাত সোহানের চোখে ঘুম নামেনি শুধু ছটফট করেছে, সে সারা রাত ভেবেছে অনেক ভেবে সোহান কোনো কূল পায় না তানিয়া ভীষণ জেদী মেয়ে নিশ্চই এতো সহজে তাকে সুযোগ দিবে না! তবে কিছু তো একটা করতেই হবে সোহান ঘড়ির দিকে তাকায় ভোর পাঁচটা সোহান উঠে বসে, না ঘুমানোর ফলে মাথাটা থম মেরে আছে, সোহান মাথা টা ডানে বামে নাড়িয়ে উঠে দাঁড়ায় আলমারি খুলে কাপড় নিয়ে ওয়াস রুমে যায় কিছু মুহূর্ত পর একদম ওযু করে বের হয়,, বহু দিন পর সোহান ফজরে নামাজ আদায় করে, মনটা যেনো শান্ত হয়ে যায় ইবাদতে এতো শান্তি সব ক্লান্তি যেনো সুষে নিলো,,
তখন প্রায় দুপুর সারে তিনটে দুপুরের খাবারের পর শাহানা আর হিয়া ভাত ঘুম দিয়েছে,,সোহানা তামীমের সাথে কথায় ব্যাস্ত তাই তানিয়া তাকে স্পেস দিয়ে ছাদে যায়, দিনে দুপুরে ঘুমানোর ব্যাপার টা তানিয়ার পোষায় না, দিনে ঘুমালে রাতে ঘুম আসে না আর রাতে না ঘুমালে তানিয়া মাথা তুলতে পারে না, তাই দিনে ঘুমানো ব্যাপার টা তানিয়া পছন্দ করে না, সারে তিনটা বাজলে ও সূর্যের তেজ যেনো উপচে পড়ছে এতো রোদে বিরক্ত হয়ে তানিয়া নিচে নেমে গেলো,, মনে মনে বেশ বিরক্ত এভাবে চুপচাপ একা একা থাকা যায়? ছাদ থেকে নেমে বিশাল করিডোরে সে হেঁটে বেড়ায় আর চোখে একবার সোহানের রুমের দিকে তাকায়, অভিমানে কিশোরী চোখে জল চিকচিক করে উঠে, এতো কষ্ট করে সবাইকে মানিয়ে ঢাকা এলো কার জন্য? কাকে দেখার জন্য এত দূর ছুটে এলো? যে কিনা তার কিশোরী মনে প্রেমেরদোল দিয়ে বন্য হাওয়া গায়ে মাখিয়ে পালিয়ে এসেছে তাঁর জন্য? তানিয়া হাঁটতে হাঁটতে বেখেয়ালে সোহানের ঘরের দিকে যায়, অভিমানে প্রিয় পুরুষের মুখ টুকুও ঠিক মতো দেখা হয় না ভাবে যদি ঘুমিয়ে থাকে একটু দেখেই পালিয়ে যাবে, দরজা হালকা খুলে মাথা ঝুকানোর সাথে সাথে কেও তার বলিষ্ঠ হাতে চেপে ধরে তাঁর মুখ। তানিয়া বিচলিত চোখে তাকায় সোহানের তুলনায় সে বেশ ছোটো তার এক হাতের থাবায় তানিয়ার পুড়ো মুখ বন্ধ হয়ে যায়, সোহান টেনে তানিয়াকে ঘরে ঢুকিয়ে দ্রুত দড়জা বন্ধ করে দরজার সাথে ঠেস দিয়ে ধরে । চোখ রাখে চোখে , সোহানের চাহনিতে তেজস্বী তানিয়া গলে যায় প্রেমিক পুরুষ বলে কথা! তানিয়া শান্ত হয়ে তাকায় দুজন দুজনকে দেখে ,তানিয়াকে শান্ত হতে দেখে সোহান তানিয়ার মুখ ছেড়ে দিয়ে দরজায় দুই হাত দিয়ে ঝুঁকে তাঁকিয়ে থাকে, তানিয়া মুখ ঘুড়িয়ে নেয়, সোহান এক হাতে ভর দিয়ে আরেক হাতে তানিয়ার মুখ আবারও তার দিকে ঘোড়ায়, থমথমে কণ্ঠে বলে,,
– আমার এখনো দেখা শেষ হয়নি, এভাবেই থাকো!
– আপনি বললেই নাকি? শরুণ সামনে থেকে, অপনার বাড়ী বলে অসভ্যতা করবেন নাকি?
তেজী কন্ঠে বলে তানিয়া , সোহান হাসে, বলে,
– এমন করছো কেন মিস ঝগড়ুটে? একটু শান্ত হয়ে দাঁড়াও একটু মন ভরে দেখি!
– এতো দেখাদেখির কি আছে? কে আমি?
– আমার মনের রাণী !
সোহানের কাটকাট উওর কোনো সংকোচ নেই, লুকানোর চেষ্টা নেই, ছন্ন ছাড়া খামখেয়ালী সোহানকে আজ বড় বুঝদার মনে হয়, কি ভার নিয়ে উত্তর দিলো, তেজস্বী তানিয়ার কিশোরী প্রেমিকা মনে বসন্তের দোল খেলে যায়, চাইলেও চোখে চোখ রাখতে পারে না, আগুন চোখে তাকাতে পারে না, সোহানের আজ এই শান্ত চোখ জোড়া যেনো আজ এক বিশাল সমুদ্র যা তানিয়ার চোখের আগুন নিভিয়ে দেয়, বার বার নিভিয়ে দেয়, তানিয়া চোখ নামিয়ে নেয়, তাঁর শরীরে কাটা উঠিয়ে দেওয়া ডাকে সম্বোধন করে সোহান,
– তানি,, আমার রাণী,,, চোখ তুলো আমি দেখি
তানিয়া কানায় কানায় পূর্ণ চোখ তুলে তাকায়, আশ্চর্য সোহান তা দেখে হাসে বলে,,
– ভালোবাসো?
– ভাসলেই বা কি? আপনি তো বাসেন না!
– অভিমান করেছো?
– করলেই বা কি? আপনি তো ভাঙ্গাবেন না!
– অপেক্ষা করতে পারবে?
– করলেই বা কি? আপনি তোহ,,,
তানিয়া থামে ডাগর চোখে তাকায়, সোহান ফির হাসে কান্না আটকে রাখায় বার বার নাকের পাটা ফুলে ফেঁপে ওঠে । সোহান হাত বারিয়ে নাকের ডগা ছুঁয়ে দেয়, তানিয়া চোখ বন্ধ করে ফেলে, সোহান হাত বারিয়ে তানিয়ার হাত ধরে টেনে নিয়ে বেডে বসায়,, কৈফিয়ত দেয়ার মতো করে বলে,,
– শুনো কিছু কথা বলি খুউউব জরুরি
টেনে বলে সোহান তানিয়া কথা বলে না তাকায় ও না,, তবে শান্ত একদম শান্ত বাচ্চা হয়ে গেছে,
– আমি কখনো কোনো বিষয়ে সিরিয়াস ছিলাম না তানি, ( সম্বোধন শুনে তানিয়া চোখ তুলে তাকায়, সোহান পাত্তা দেয় না নিজের মতো করে বলে) না জীবন নিয়ে, না পড়ালেখা নিয়ে, আর না আমার কোনো স্বপ্ন ছিলো বড় কিছু হওয়ার, বিন্দাস ছিলাম নিজের বন্ধুদের নিয়ে ,জীবন নিয়ে,, আমি হয়তো চঞ্চল তবে মেয়ে জনিত কোনো দোষ আমার ডিকশনারীতে নেই, না হলে খুন খারাবি আর মেয়েজনীতি দোষ ছাড়া সব রকমের ভন্ডামি আমার করা শেষ, তবে একদিন এই আমিও আমিও থমকে গেলাম! একটা মেয়ের প্রেমে পড়লাম! একজোড়া আগুন চোখ দেখলাম ,আর ব্যাস খুব ফাঁসা ফেঁসে গেলাম,,,
তানিয়া তাঁর ডাগর চোখে সোহানের দিকে তাকিয়ে, সোহান জিব দিয়ে ঠোঁট ভেজায় আবার বলে,,
– সেই অগ্নি কন্যাকে ভালো লাগলো, এক দেখায় ভালো লাগা,লাভ এট ফার্স্ট সাইট কাকে বলে ঐ দিন আমি বুঝলাম,, মেয়েটির পিছু নিলাম জ্বালালাম মেয়েটিকে আমার প্রেমেও পড়তে দেখলাম,, তবে হুট করেই এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঝড় বয়ে গেল কোনো বিদায় সাক্ষাত ছাড়াই বিদায় জানাতে হলো সেই অগ্নি কন্যাকে, ভাবলাম হয়তো ভুলে যাবো কিন্তু হায় ভুলার বদলে শুধু মনে পড়ে কিন্তু আমি তো তার দেখা পাই না, সে যে ভীষণ দূরে! প্রেয়সী আমার খুবই ছোটো তার ফোন নেই নম্বর নেই তাহলে খোঁজ নেই কিভাবে? বহু কষ্টে তাঁর বোনকে রাজি করিয়ে কল দেওয়ালাম তবে রাণী আমার ভীষণ জেদী আর অভিমানী বলল না কথা, তবে সে যে আমার হৃদয়ের গভীরে গাঁথা! তাকে কি এতো সহজে ভুলা যায়? আমি তাকে ভুলিনি আর আশ্চর্য বিষয় কি জানো?
তানিয়া প্রশ্নবোধক চোখে তাকায়,
– সে ও আমাকে ভুলে নি সে ও আমাকে ভালোবাসে তাই তো আমার কাছে চলে এসেছে, এইযে আমি তাঁর চোখে আমার জন্য গভীর প্রণয়ের ছাপ দেখতে পাচ্ছি,
– আপনি ভুল দেখছেন
বলেই তানিয়া চোখ ফিরিয়ে নেয়, সোহান হাসে গাঁ দুলিয়ে হেসে বলে,,
– আমি তো আমার রাণীর কথা বললাম তুমি চোখ ফিরিয়ে নাও কেন?
তানিয়া তেজী চোখে তাকায় ঝাঁঝালো কন্ঠে বলে
– কে? কে আপনার রাণী?
– আপনি! আপনি আমার রাণী, দয়া করে এই প্রজাকে ক্ষমা করে দিন রাগিণী!
হাত জোড় করে ক্ষমা চাওয়ার মত করে বলে সোহান, তানিয়া খোচা দিয়ে বলে,,
– যেনো আবারও কষ্ট দিয়ে হারিয়ে যেতে পারেন?
– শুনো মেয়ে আমি সামিহ শিকদারের ভাই সোহান শিকদার আমার ভাই কে দেখনি হিয়া কে কিভাবে ভালোবেসেছে বছরের পর বছর তাও এক পাক্ষিক? তোমার কি মনে হয় আমি তোমায় ঠকাবো?
– ঠকিয়েছেন ই তো প্রেমের ফাঁদে ফেলে মরণ যন্ত্রনায় ফেলে আপনি চলে এসেছেন, আমি এখানে না এলে তো ঠিকই ভুলে যেতেন।
– না পাখি, হিয়া প্রায় দিনই আমাকে তোমার খবর দেয়, তবে ,,,
বলেই সোহান উঠে দাঁড়ায় আলমারি থেকে একটা টিস্যু ব্যাগ বের করে তানিয়ার সামনে বসে, তানিয়া কৌতুহলী হয়ে তাকায়, সোহান ব্যাগ টা উপুর করে ধরতেই একটা বাটন ফোনের বক্স বেরিয়ে আসে, তানিয়া চোখ বড় বড় করে তাকায়, সোহান বক্স খুলে ফোন টা বের করে তানিয়ার হাতে দিয়ে বলে,
– সামর্থ্য থাকলে সবচেয়ে দামী ফোন তোমার হাতে তুলে দিতাম, তবে বেকার প্রেমিক তো তাই এতেই কাজ চালিয়ে নাও, বড় হয়ে কিছু করে অবশ্যই সব থেকে ভালো টা তোমার হাতে তুলে দিবো!
তানিয়া কাপা গলায় বলে,,
– ফোন? কেনো?
– কেনো আবার কথা বলবো!
– আমার এসব লাগবে না! আম্মা দেখলে খবর আছে!
তানিয়া ফোন টা ঠেলে সরিয়ে দেয়, সোহান শান্ত চোখে তাকায়
– ফোন না নিলে যোগাযোগ করবো কি করে? আমাদের তো রোজ দেখা হবে না,
– আমি বাসায় বলবো, আব্বা বলেছিলেন কলেজে উঠলে কিনে দিবেন,
– সে দিবেন, তবে যতদিন না দিচ্ছেন সাথে রাখো লুকিয়ে রাখো,
– আমার ভয় লাগছে! যদি কেও দেখে ফেলে
– কিচ্ছু হবে না, এটা বের করার দরকার নেই শুধু আমি যখন কল দিবো তখন বের করবে,,
অনেক বুঝানোর পর তানিয়া ফোন রাখতে রাজি হয়, সোহান তানিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,,
– রাগ কমেছে?
– হুম
– অভিমান ভেঙেছে?
– হুম
– আমার প্রতিষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, তোমার ও বয়স যথেষ্ঠ কম,, ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে পারবে তো?
– পারবো!
তানিয়া মৃদু স্বরে বলে। সোহান বিজয়ী হেঁসে বলে
– তাহলে আজকে থেকে তো অফিসিয়ালি প্রেমিকা
তানিয়া কড়া চোখে তাকায়, সোহান ঠোঁট কামড়ে হাসে, হেলে দুলে তানিয়ার সামনে বসে তানিয়া পিছিয়ে যায় , সোহান তানিয়া মাথা টা দুই হাতে ধরে বলে,,
– এই ফার্স্ট আর এইটাই লাস্ট বিয়ের আগে তোমাকে একটু ছুঁয়ে দিলাম, কসম বিয়ের আগে আর তোমাকে ছুবো না,
বলেই তানিয়া কিছু বলার আগেই তড়িৎ কপালের মধ্য ভাগে চুমু খায়, তানিয়ার সারা শরীরে যেন বিদ্যুৎ খেলে গেল, পেটের কাছে যেনো হাজারো প্রজাপতি উরে গেলো, লজ্জায় তানিয়া আর সোহানের সামনে বসে থাকতে পারলো না, উঠে দৌড়ে বেড়িয়ে গেলো, রাগিণীর লজ্জা দেখে চলে যাওয়া দেখে সোহান হাসে তানিয়ার পেছন থেকে বলে,,
– তুমি তো হেরে গেল মেয়ে! তোমার রাগ তো আমার ভালোবাসার কাছে গো হারা হেরে গেল, তুমি তো আমার হয়ে গেলে পাখি!
তানিয়া পেছন ফিরে চোখ রঙ্গালো, সোহান উরু চুমু ছুঁড়ে দিতেই মুখ ঝামটা দিয়ে চলে গেল, যাওয়ার আগে অবশ্য বলে গেল,,
– অসভ্য পুরুষ!
————-
আজ পাঁচ দিন হয় সামী বাড়ীতে নেই, রোজ নিয়ম করে চার বেলা ফোন করে কিন্তু এতে হিয়ার মন ভরে না, সামী যে তাঁর এখন অভ্যাসে পরিনত হয়েছে সামীর ওই গম্ভীর মুখে ধমক না খেলে, সামীর ওই প্রশস্থ বুকে ছোট্ট বিড়াল ছানাটির মতো লেপ্টে না থাকলে যে হিয়ার এখন ঘুম হয় না, সারা সন্ধ্যা ঘুমের ফলস্বরূপ এখন হিয়ার ঘুম ধরছে না, এখন তো পাশে তাঁর শিকদার সাহেব টাও নেই যে আদুরে বিড়াল ছানাটির মতো কোলে নিয়ে বসে থাকবে, হিয়া সময় দেখে ঘড়ির কাটা এগারোটার ঘরে সামী পই পই করে বলে দিয়েছে সে যেনো দশটার মধ্যে ঘুমিয়ে যায়,, কিন্তু হিয়া রোজ বসে থাকে কখন তার সিকদার সাহেব কল দিবে আদুরে কথায় তাকে মুড়িয়ে দিবে, রোজ দশটার আগে কল করলেও আজ এখনো সামীর কল করার খবর নেই তাই হিয়া ও বসে আছে পেটে থাকা দুমাসের ব্রুণটার সাথে কথা বলে, উপন্যাস পড়ে, ঘরের এইদিক থেকে ওই দিক একটু হাটে , কিছু সময় যাওয়ার পর রাত প্রায় বারোটার দিকে সামী কল দেয়, প্রথম রিং বাজার সাথে সাথেই কল রিসিভ হয় সামী হাসে জানে তাঁর হিয়া রাণী তারই অপেক্ষায় ছিলো,, কল রিসিভ হয় কিন্তু ওপাশ থেকে কোনো কথা আসে না, সামী বুঝে তাঁর ফুলের অভিমান তাই খুব আদর মিশিয়ে ডাক দেয়,,
– জানননন,,,
তবুও হিয়া কথা বলে না সামী ঠোঁট কামড়ে হাসে এই বাচ্চা কে বিয়ে করে সে টিন এজার দের মতো হয়ে গেছে বাচ্চা বউয়ের মান ভাঙাতে তাকে কত কসরতই না করতে হয়, এই মেয়ের প্রেমে পড়ে এই বয়সেও কতো না পাগলামো করতে হয় , ভেবেই সে মুচকি হাসে, বলে,,
– কথা বলবি না জানননন,,
হিয়া তবুও কথা বলে না, এ পর্যায়ে বউয়ের রাগ ভাঙ্গাতে সামী গেয়ে ওঠে,,
– ও বউ ,
– তুমি আমায় কি ভালোবাসো না?
– ও বউ!
#চলবে,,,