#প্রেমের_সমর
#দ্বিতীয়_পরিচ্ছেদ
#পর্ব_০৬
লেখনীতেঃ অলকানন্দা ঐন্দ্রি
আর প্রায় দিন তেরো পর। ছুটি বেলকনির ধারে বসা।চোখে নিচে অল্পবিস্তর কালি জমেছে এই তিন চারেক মাসে।চশমার উপর থেকেই সেই কালি বুঝা যায় খুব ভালোভাবেই। হাতে মোটামতো একটা ইংরেজি সাহিত্যের বই। চুলগুলো এলোমেলো হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তার শরীরময়।বেলকনির ফুরফুরে হাওয়ার সাথে সে তার মনোযোগ তখন সমস্তটাই ডুবিয়ে রাখল ইংরেজি সাহিত্যে। প্রথমদিকে যখন আবিরের সাথে কথা বলার জন্য ছটফট করে মরত, অস্থির হয়ে প্রত্যেকটা মিনিট, প্রত্যেকটা সেকেন্ড ব্যয় করত ঠিক তখন থেকেই বই পড়ার অভ্যেস ঝেকে ধরেছে তাকে।আবিরের পরিবর্তে কত কিই বা সে অভ্যেস হিসেবে গ্রহণ করল অথচ সে একটাই লোক তার সর্ব সত্ত্বা দখল করে রেখেছে এখনো। এখনো ঐ লোকটার কথাই ভেবে যায় সে নিদ্রাহীন রাত্রি গুলোতে।এই যে এত সে ভালোবাসল? বিনিময়ে কি তাকে একটু মূল্য দেওয়া যেত না? কেন দিল না আবির ভাই তাকে এইটুকু মূল্য? কি অপরাধ তার?
ছুটি যখন বই পড়ার মধ্য দিয়েই আবিরকে নিয়ে এসব চিন্তায় মগ্ন হয়ে গেল ঠিক তখনই ফিহা কোথা থেকে ছুটে এসে যেন আড়ালে দুয়েকটা ছবি ক্যাপচার করল। মনোযোগ দিয়ে ছবিগুলো দেখেই মৃদু হেসে তা পাঠাল আবিরের কাছে। ছুটি বোধহয় তখনও খেয়ালই করে উঠেনি ফিহাকে। ওপাশে আবির তখন দৃষ্টি নিবদ্ধ করে ছবিগুলোতে। বুক বড্ড শূণ্য ঠেকে যেন।আগের থেকে শুকিয়ে গিয়েছে তার বোকাপাখিটা। চেহারা ভেঙ্গে গিয়েছে নিদারুণ ভাবে। হাস্যোজ্জল মুখটায় আগে যেখানে হাসিই থাকত কেবল সে মুখে আজ ক্লান্তি, অবসাদ! আবির দীর্ঘশ্বাস ফেলে। মনে মনে ছুটির এই হালের জন্য নিজেকেই দায়ী করে সে।অতঃপর ধীর হাতে ফিহাকে টাইপ করে,
“ খেয়াল করেছে যে ছবি তুলেছিস?”
ফিহা উৎফুল্ল চিত্তে টাইপ করল,
“ একদমই নাহ। ”
অতঃপর ছুটির পাশে গিয়ে হেসে বলে উঠে,
“ বাহ বাহ!তোমায় তো আজ বেশ সুন্দর দেখাচ্ছে ছুটি আপু।বেশ কাব্যিক লাগছে। ”
ছুটি আচমকায় চমকে তাকায় পাশ ফিরে। ভাবনা ছেড়ে বেরিয়ে ফিহার হাসিমুখটা দেখে ম্লান হেসে বলে,
“ দিন দুই পর তোমার এই হাসি মুখটাকে অনেক মিস করব ফিহা। বিশেষ করে এই কয়েকমাস তোমায় যা জ্বালালাম আমি। ”
“কেন? কেন? আমি তো আছি ছুটি আপু। তুমি এই দিন কয়েকেও আমায় একটুখানিও জ্বালাওনি ভাইয়ার খবর জিজ্ঞেস করে। কেন? ”
ছুটি মুহুর্তেই একটা মিথ্যে বলল যে,
“ একটু গ্রামের বাড়ি যাব।এখন তো এতকাল পর তার সাথে কয়েকবার হলেও কথা হয়ে নিশ্চিন্ত হলাম যে সে ঠিক আছে, সুস্থ আছে।এই কারণে আর জিজ্ঞেস করি না।”
ফিহা যেন বড্ড নিরাশ হলো উত্তর শুনে। বলল,
“ তবুও জিজ্ঞেস করবে। ”
ছুটি হেসেই বলে এবারে,
“ এতকাল তো জিজ্ঞেস করলেও কিছু বলতে না ফিহা। যায হোক, সে তো ভালো আছে এখন বুঝতে পেরেছি। এতকাল ভেবেছি তোমরা কিছু লুকিয়ে যাচ্ছো কিনা, সে সত্যিই ভালো নেই কিনা। কিন্তু এখন বুঝলাম যে, সে আসলেই ভালো আছে। আমায় ছাড়াও তোমার ভাই অনেক ভালো থাকে ফিহা।”
কথাগুলো বলতে বলতেই কল এল ছুটির ফোনে। ছুটি আড়চোখে স্ক্রিনে তাকিয়ে হাসল। এই দিন কয়েকে আবির কয়েকবারই তাকে কল দিয়েছে। খোঁজ নিয়েছে। আশ্চর্য! এতগুলো মাস যে একটিবার খোঁজ নিল সে হুট করে তার প্রতি এতোটা সচেতন হওয়ার কারণ কি? ছুটি বুঝে উঠে না। ফিহাকে বলল,
“ ফিহা? তোমার ভাই হুট করেই আমার এত খোঁজখবর নিচ্ছে আজকাল? বিষয়টা কেমন সন্দেহজনক নয়? ”
ফিহা মুহুর্তেই ভাইয়ের পক্ষে নিয়ে বলে,
“ সন্দেহজনক কেন? ”
“ সে আমায় অবহেলা করতেই অভ্যস্ত বরাবর। এখন হুট করে আমার জন্য সময় ব্যয় করাটা বেমানান বোধ হচ্ছে আমার। ”
ফিহা ছোটশ্বাস টানে। ফোনটা বাঁজতে দেখে বলে,
“ কল তুলবে না? ”
“ তুমি এসেছো, তোমার সাথে একটু কথা বলি বরং। ”
উত্তরটা পেয়ে ফিহা নির্দ্বিধায় বুঝল ছুটি আবিরকে ইগ্নোর করতে চাইছে।এমনাি কলটাও সে ইচ্ছে করেই ফেলে রাখল। ফিহা তবুও বলে,
“ ভাইয়া রাগ করবে তো। তুমি কলটা রিসিভড করো ছুটি আপু। ”
ছুটি হেসে বলে,
“ তোমার ভাইয়া আমার উপর যে রাগ করবে সেটুকু গুরুত্বও তার জীবনে আমার নেই ফিহা।অন্তত এই কয়েক মাস তো তার আমার উপর রাগ না করেই কেটেছে, তাই না?”
“ হতেই তো পারে ভাইয়া খুব সমস্যায় ছিল? তোমায় জানাতেই পারেনি?”
বিনিময়ে প্রশ্ন এল,
“ তোমাদের সাথে যোগাযোগ হলো কি করে তাহলে? ”
ফিহা এবারে আর উত্তর দিতে পারে না। সে কি বলে দিবে সত্যিটা? বলে দিবে তাদের সাথেও কথা হয় নি আবিরের? ফিহা যখন দ্বিধায় ভুগে তখন ছুটি হাসে। আরো ঘন্টাখানেক ফিহার সাথে কথা বলেই কাঁটায় সে৷ অতঃপর ফোন নিয়ে বুঝতে পারে এই দিয়ে ত্রিশবারের উপরে কল এল একটানা। এর মধ্যে ফিহা যখন এসেছে তখন তিনবার, আর বাকিগুলো এখনের। আবির ভাই খোঁজ নিতে কল করলেও চার পাঁচবারের বেশি এতগুলো কল আজ পর্যন্ত একসাথে করেনি। ছুটি ভ্রু কুঁচকে কল তুলে। বলে,
“ আসসালামুয়ালাইকুম আবির ভাই। এতবার কল দিয়েছেন কেন? ”
ওপাশ থেকে তখন এক বিদেশিনীর শব্দ ভেসে আসে,
“আর ইয়্যু ছুটি?”
ছুটি আবার ভ্রু কুঁচকাল। একেই এতগুলো কল। তার উপর ফোর অন্য মেয়ের হাতে? বাহ! চরিত্রের ভালোই উন্নতি হয়েছে বোধহয় তার আবির ভাইয়ের। ছুটির কলিজায় যেন চুরি বসাল কেউ। তবুও নিজেকে শক্ত রেখে উত্তরে বলল,
“ইয়েস, আ’ম ছুটি। ”
ওপাশ থেকে উৎফুল্ল স্বরে মেয়েটি বলে উঠল,
“ছুটি? আই থিংক, ইউ আর আবির’স বিলাভড ওয়াইফ ছুটি,রাইট? ”
ছুটি ঠোঁট এলিয়ে হাসে। যার স্বামীর ফোন অন্য মেয়ের হাতে থাকে সে বুঝি আবার তার স্বামীর বিলাইভড ওয়াইফ? নিশ্চয় এতদিনে ওখানে গিয়ে কাউকে মন দিয়ে বসে আছে তাই তো তার প্রতি নিগূড় অবহেলা! ছুটি বলে,
“ বিলাভড ওয়াইফ? রিডিকিউলাস।বাই দ্যা ওয়ে, মে আই নো ইউর নেইম? ”
“ ইয়েস। ”
ইয়েস বলেই চুপ। ছুটির কৌতুহল গাঢ়৷ জানতে ইচ্ছুক খব মেয়েটার আসলেই নাম কি? তাই বিরবির করে বিরক্ত স্বরে বলে,
“ তো নামটা বললেই তো হয়।ইয়েস বলেই বোবার মতো চুপ হয়ে আছে, বিরক্তিকর। ”
ওপাশের মেয়েটা তখন হেসে বলে,
“ আই নো বেঙ্গলি ল্যাংগুয়েজ মিসেস ছুটি। আ’ম অলসো এ্যা বাংলাদেশি!”
কথাটা বলেই ফের হেসে বাংলাতে বলল,
“নাম না জেনে আগে জানতে চাইবেন না আপনার হাজব্যান্ডের ফোন আমার হাতে কেন? ”
রাগে ছুটির মাথা চিড়চিড় করে। অবশ্যই জানার ইচ্ছে আছে তার। কিন্তু জিজ্ঞেস করবে না সে। বলল,
“ তা জেনে আমার কি কাজ বলুন? তার ফোন আপনি অথবা পৃথিবীর সব মেয়ের হাতে হাতেই থাকুক। আমার সমস্যা নেই।যদি মেয়ো কম হয় আমায় বলতো বলবেন ওকে? ”
ওপাশের মেয়েটা তখন বলল,
“ রেগে যাচ্ছেন? ”
ছুটি তাচ্ছিল্য করে বলল,
“ এই ছোট কারণে? ”
“ তার মানে রাগেননি? ”
“ অবশ্যই না। আপনি কি এই ফোনের মালিককে একটু ডাকতে পারবেন? আমার কিছু কথা ছিল।
উত্তর এল,
“ আবির বোধহয় ওয়াশরুমে শাওয়ার নিচ্ছে। ”
ছুটি কপাল কুঁচকে ঢেল। আবির ওয়াশ রুমে অথচ এই মেয়ে? এই মেয়ে কি তার রুমে? বাহ!ছুটি শুধায়,
“তো আপনি এখন তার রুমে বসে আছেন নিশ্চয় মিস এলিজা? ”
উত্তর,
“ হ্যাঁ। ”
ছুটির রাগ এবারে মাথায় চাপে যেন। তবুও শান্ত গলায় বলে,
“ গুড! ভেরি গুড। তা আপনাকে ওয়াশরুমে নিয়ে গেল না কেন? একসাথে শাওয়ারটা নিয়ে নিতে পারত তো। তাই না? ”
“ হোয়াট? ”
ছুটি মিনমিনে স্বরে জানাল,
” কিছু না, বাদ দিন। আপনার নাম কি? জানা হলো না তো। ”
মেয়েটি বেশ খুশি হয়ে উত্তর করল,
“ আমি এলজিা। ডক্টর এলিজা। আবিরের সাথে আমার বন্ধুত্ব আরো বছর ছয় আগে থেকেই মিসেস ছুটি। আশা করি আ-পনি আমাকে চিনেন তাই না? ”
“ কি করে চিনব? দেখা হয়েছে এর আগে কখনো আপনার সাথে? ”
“ না।তবে আপনার সম্পর্কে আমি খুব শুনেছি আবির, সাদাফ এবং স্বচ্ছর থেকে এবং মনে মনে এতকাল আপনাকে অপছন্দও করে এসেছি বিনাকারণে। যায়হোক, আশা করি সাদাফ, স্বচ্ছ অথবা আবিরের থেকে আপনি ও আমার সম্পর্কে কিছুটা হলেও শুনেছেন? ”
ছুটি শক্তস্বরে বলে,
“ আপনি তাদের কি হন মিস এলিজা?”
আমাকেই বা অপছন্দ করেন কেন? ”
“ ফ্রেন্ডই। আবার বোধহয় শুভাকাঙ্ক্ষীও। একটা সময় আবিরকে খুব পছন্দ হয়েছিল এমনকি এখনও বোধহয় পছন্দ করি মিসেস ছুটি। মূলত এই কারণেই আপনাকে অপছন্দ করা। ”
ছুটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে। শান্তস্বরে বলে,
“ ওহ।আজ থেকে আমায় আর অপছন্দ করবেন না।সে যে আমাকে খুব ভালোবাসে এমনটা নয় মিস এলিজা। কিংবা এমনও নয় যে আমি তার বিলাভড পার্সন! আমাদের মাঝে একটা বিয়ে হয়েছে, বৈবাহিক কিছু সম্পর্ক ছিল এটুকুই। আপনি দেখবেন খুব সহজেই তার মনে জায়গা করে নিতে পারবেন, যেভাবে তার মোবাইল ফোন এখন আপনার হাতের মুঠোতে, তার রুমে এখন আপনি আছেন সেভাবেই তার ওয়াইফও হয়ে যেতে পারবেন। নো টেনশন।”
কথাটুকু বলেই ছুটি কল রাখল। অতঃপর চোখ টলমল করে তার। নাক লাল হয়ে উঠে। মাথার তীব্র ব্যাথা! ছুটি ফোন ছুড়ে রেখে বিছানায় শরীর এলিয়ে দেয়। অসহ্য লাগছে। শীতল বাতাসের অক্সিজেনটুকুও বিষাক্ত লাগছে তার। অতঃপর ঘুমানোর চেষ্টা করে সে।
.
ছুটির ব্যাগ, লাগেজ সবই মোটামুটি গোছানো শেষ। আর কালকের দিন পর পরশু সকালেই তার ফ্লাইট। অথচ এই বিষয়টা ছুটির পরিবার ব্যাতীত অন্য কেউ জানে না। এমরকি ফিহাও না। ছুটি যখন মধ্যেরাত্রিতে ব্যাগগুলো আরেকবার চ্যাক দিচ্ছিল ঠিক তখনই আবির কল দিল। ছুটব সাথে সাথেই কল তুলল না। দুয়েকবার কল আসার র তুলল।আবির সঙ্গে সঙ্গেই বলে,
“ লিজার সাথে কি কথা বলেছিস তুই? ”
বাহ!এলিজাকে শর্ট করে লিজা ডাকে?কত প্রেম! ছুটি কাটকাট স্বরে বলল,
“ কি বলব আবির ভাই? ”
“ কিছু বলিসনি এটা বলবি না দয়া করে। লিজা তোর সম্বন্ধে অনেক কথাই শোনাল। তার মানে ধরে নেওয়া যায় খুব ভালোই গল্প জমেছে তোদের? ”
ছুটি হেসে বলে
“ খুব ভালো গল্প জমলে ও বা কি? কোন গোপণ তথ্য ফাঁস হয়ে যেতে পারে নাকি? ”
আবির দাঁতে দাঁত চেপে শুধায়,
“তোর কথার টোনে বুঝা যাচ্ছে তুই আবারও আবোলতাবোল ভেবে নিয়েছিস। ”
ছুটি তাচ্ছিল্য নিয়ে জানাল,
“ আপনার লিজার সম্পর্কে অতো ভাবার সময়ই নেই আমার। খুবই ব্যস্ত আছি আপাতত। কলটা রাখব?”
“ এতই ব্যস্ত যে ফিহার সাথে দুইঘন্টা আলাপ জুড়তে পারিস, অথচ আমার কল তোলার সময় হয় না?”
পাল্টচ উত্তরে ছুটি বলল,
“ সে হিসেবে ধরতে গেলে আপনিও রুমে মেয়ে এনেছেন। কিছু তো বললাম না আমি তাই? ”
আবিরের রাগ হয়। বলে,
“ মুখ সামলে কথা বল। লিজা আমার কেউ হয় না।কি কি বলেছে ও তোকে? বল…”
“ মুখ সামলে বলার তো কিছু নেই। আপনি শাওয়ার নিয়ে বের হওয়ার সময় সে নিশ্চয় আপনাকে তেমন খালি গায়ে দেখেছে? তাই না? ”
আবির ক্লান্ত স্বরে উত্তর করল,
“ শাওয়ার নিয়ে বোর হওয়ার পর ওকে আমি নিধির সাথে কিচেনে দেখেছি ছুটি। আমার রুমে নয়। এমনকি ও আমার অনুমতি না নিয়েই তোকে কল করেছে ছুটি। লিজা সত্যিই আমার কিছু হয়না । বিশ্বাস কর আমায় প্লিজ। আবারও কিছু হাবিজাবি ভেবে নিয়ে আমার থেকে দূরে সরে যাস না। প্লিজ। ”
ছুটি হাসে। এবারও নির্দ্বিধায় একটা মিথ্যে বলল,
“ গেলাম না।গেলে তো এতদিনে যেতামই বলুন? ”
.
সুহা একটুখানি ছাদে গিয়েছিল। ঘরে থেকে থেকে বিরক্ত লাগছে বলেই যাওয়া তার। অথচ কে জানত এইটুকু সময়ের জন্য ছাদে যাওয়ায় তার জন্য এতোটা ভয়ংকর হয়ে উঠবে? যখনই দুপুর গড়িয়ে বিকেল হবে ঠিক তার আগ মুহুর্তেই সিয়া কি একটা কাজে যেন নিচে এল। সুহাকে বলে গেল বসে থাকতে।সে আসার পর একসাথে যাবে।অথচ সুহা যখন দেখতে পেল স্বচ্ছর গাড়ি এসে রাস্তার অপর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ঠিক তখনই নিচে নামার প্রস্তুতি নিল উৎফুল্ল চিত্তে। ভাবল এটুকু আর এমন কি, সে নিজে নিজে অবশ্যই সিঁড়ি পেরিয়ে নিচে যেতে পারবে। কিন্তু ভাগ্য তার সহায় হলো না। ছাদের দরজা পেরিয়ে প্রথম সিঁড়িটায় পা রাখতেই কে যেন তাকে পেছন থেকে ঠেলে দিল সজোরে। সুহা তাল সামলাতে পারল না। গুণে গুণে বারোটা সিঁড়ি গড়িয়ে পড়েই দেওয়ালের সাথে গিয়ে ঠেকল সুহার শরীরটা। সুহা ছটফট করে ব্যাথায়। হাত দুটো চলে যায় পেটে। অসহ্য যন্ত্রনায় অস্ফুট স্বরে চিৎকার করতেই সেখানে সিঁড়ি বেয়ে ছাদে যেতে থাকা সিয়া এসে উপস্থিত হলো। ভাবির এমন কান্ডে সে কি করবে নিজেই বুঝে পেল না যেন। মস্তিষ্ক শূন্য লাগে। সিয়া চিৎকার করে। সুহাকে বুকের সাথে জড়িয়ে বুঝাতে লাগে যন্ত্রনা হবে না, হবে না যন্ত্রনা তার। অথচ যন্ত্রনা কি কমার প্রশ্ন আসে? সুহা টের পায়, তার কলিজা যেন ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছেে।যন্ত্রনার চোখ গলিয়ে পানি আসে মেয়েটার। দাঁত খিচে যায়।ব্যাথায়, যন্ত্রনায় হাত পা গুলো সিঁড়ির ঐটুকু মেঝেতেই দস্তাদস্তি করে বারংবার…
#চলবে…