#বৈরী_বসন্ত ৭
লেখা – আয্যাহ সূচনা
আরিভের মধ্যে এক ভিন্ন রকমের পরিবর্তন দেখল নাফিয়া। গতদিন সারাটা সময় তাকে নিয়েই ছিল। তারা একসাথে হলে যেই বিতর্ক প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল সেটির এক ভাগও হয়নি। নাফিয়া নিজে থেকেই চেয়েছে তর্ক করতে। আরিভের শান্ত শীতল আচরণ সেটি সম্ভব হতে দেয় নি।
নাফিয়া ড্রেসিং টেবিলের উপর রাখা চুড়িগুলো হাতে নিল। সাদা কালো চুড়ি। গতকাল তার শাড়ির সাথে মিলে গিয়েছিল। খালি হাতজোড়া ভরা ভরা লাগছিল। একহাতে চুড়ি নিয়ে বিভোর চিন্তায় মগ্ন সে। এতটা নমনীয়তা কী ভদ্রতার খাতিরে?
নাফিয়া ফোন হাতে নিল। ফেসবুক লগ ইন করল অনেকদিন পর। আরিভের কয়েকটা মেসেজ। শেষ মেসেজটি তার গাছ নিয়ে। নাফিয়া জানতে চেয়ে লিখল,
-“আমাকে চুড়ি কিনে দিলেন কেন?”
তৎক্ষণাৎ কোনো জবাব আসেনি। এলো একটু সময় নিয়ে। সেখানে লিখা,
-“জবাব দিতে ইচ্ছুক নই।”
ত্যাড়ামো দেখে মুখ কুঁচকে আসে নাফিয়ার। সে লিখল,
-“আমার সাথে ভালো ব্যবহার করছেন কেন?”
-“খারাপ ব্যবহার করা উচিত?”
-“আপনি তো এমন নন।”
-“আমি এমনই।”
মাত্রাতিরিক্ত ভাব নিচ্ছে যেন। কথাবার্তার ধরনে বেজায় পরিবর্তন। আগে চেঁচাতো, এখন রুক্ষ জবাব দিচ্ছে। নাফিয়া বলল,
-“আমার প্রতি কী সহানুভূতি দেখানো হচ্ছে? যদি হয়ে থাকে এক্ষুনি বন্ধ করুন।”
-“তোমার কেন মনে হল সেটা?”
-“মনে হচ্ছে, আপনি আমার অকেজো হাতের কারণে আমাকে দূর্বল ভাবছেন। তাই সহানুভূতি দেখাচ্ছেন।”
-“এক লাইন বেশি বোঝা মেয়েদের স্বভাব।”
-“এভাবে কথা বলছেন কেন? আপনাকে কী চিমটি দিয়েছি আমি?”
-“চিমটি দাওনি, জেরা করছো।”
নাফিয়ার বিরক্তির মাত্রা বাড়ছে। আরিভকে সবসময় তর্কতেই মানায়। বিরক্ত মুখে দেখে অভ্যস্ত। এখন মনে হচ্ছে সে অভিমান করে বসেছে।
-“আপনি আগের মতো ঝগড়ুটে হয়ে যান। আপনাকে এই রূপে হুতুম পেঁচার মতো লাগে।”
অফিসে বসে মুখ ভার করে জবাব দিচ্ছিল আরিভ। হুতুম পেঁচা শুনে হাসল। ভ্রুদ্বয় উঁচু করল কথাটি শুনে। ফিরতি মেসেজে লিখল,
-“কে ঝগড়া করে? আমি নাকি তুমি?”
-“আপনি করেন।”
-“মোটেও না। তোমার স্বভাব আমার ভালো কাজে বাগড়া দেওয়া। যেদিন থেকে এবাড়িতে এসেছি একটার পর একটা অঘটন ঘটিয়ে যাচ্ছ তুমি। সবকিছুর হিসেব আছে কিন্তু।”
-“আপনার হিসেব আপনি রাখুন। আপনার মুখ দেখলেই তর্ক করতে ইচ্ছে হয়।”
-“আচ্ছা তাহলে সেটাই সই।”
-“মেনে নিলেন?”
-“হ্যাঁ নিলাম।”
-“এত সহজে কী করে মানলেন?”
আরিভের ঠোঁটের হাসি চওড়া হয়। বলে,
-“তোমার মাথায় কী ছিট আছে?”
-“আপনার মাথায় ছিট।”
আরিভের তরফ থেকে ছোট্ট জবাব আসে, -“আচ্ছা।”
প্রতিপক্ষ নত হয়ে যাচ্ছে? এবার তো যুদ্ধ জমবে না। নাফিয়া কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না বিষয়টা। বারবার মনে হচ্ছে কিছু একটা পরিবর্তন ঘটেছে এখানে। অষ্টাদশী মন আঁচ করতে পেরেছে।
কোনো জবাব না পেয়ে আরিভ লিখল, -“কিছু বলবে?”
-“হ্যাঁ।”
-“বলো।”
-“আমি চুড়ির দাম দিব।”
-“দিও।”
নাফিয়া নিজেকে দমাতে পারল না। বলে বসল,
-“উফ আপনি তর্ক করছেন না কেন? সব কিছু সহজে মেনে নিচ্ছেন কেন? এভাবে ভালো লাগছে না আমার।”
মেসেজটি দিয়েও জ্বিভ কাটল নাফিয়া। আনসেন্ড করতে না করতেই আরিভ দেখে ফেলেছে। কী যেন লিখছে।
-“সামনাসামনি ঝগড়া করতে ভালো লাগে। শত্রুর চোখে চোখ রেখে তর্ক করতে হয়। রাত আটটায় বারান্দায় থেকো, ঝগড়া করব।”
_______
আরিভ নিজেই উপলব্ধি করতে পারছে তার মধ্যকার গোলমাল। তবে এই গোলমাল বড্ড অস্বচ্ছ, এলোমেলো। হিসাব-নিকেশ কোনোভাবেই মিলছে না। হুটহাট ইচ্ছে হচ্ছে বদ মেয়েটাকে ঠাটিয়ে চড় দিতে, আবার ইচ্ছেরা পালায়। বলে থাকুক, সেতো নাজুক কলি। ছুঁয়ে দিলেই যদি ঝরে যায়?
অভ্যন্তরে চলমান গণ্ডগোলকে পাত্তা দেওয়ার মত সময় এখনও হয়ে উঠেনি। বাড়ি ফেরার পথে কিছু খাবার কিনে নিল আরিভ। খাবার তার প্রথম ভালবাসা। চকলেট পেস্ট্রি, চিপস, কোল্ড ড্রিংকস আর পিৎজা। রাত জেগে এগুলো সাবাড় করবে। ব্যাগে খুব সাবধানতার সাহায্যে ঢুকালো। মা দেখলে তার কপালে শনি রবি সোম মঙ্গল সব আছে।
সন্ধ্যা সাতটায় বাড়ি ফিরল আরিভ। এসেই গোসল সেরে মায়ের কাছে বসে। বরাবরের মতই সে রেগে আছেন। তার পছন্দের সিরিয়ালে শ্বাশুড়ি তার বউকে জ্বালাচ্ছে। এটাই তার রাগের কারণ। আরিভ এক পা সোফায় তুলে হেলান দিয়ে বসল। বলল,
-“তুমি কেমন শ্বাশুড়ি হবে? এই কুটনি মহিলার মতো? নাকি ভালো?”
বাঁকা চোখে তাকালেন শিরীন বেগম। বললেন,
-“আমার বউ আমার মেয়ের মতো হয়ে থাকলে আমি ভালো শ্বাশুড়ি হব। ঝামেলা করলে আমিও ঝামেলা করব।”
-“ওহহো! ভালো হিসেব।”
-“হঠাৎ জিজ্ঞেস করছিস কেন? কার পাল্লায় পড়েছিস?”
আরিভ যেন আকাশ থেকে পড়ল। কী কথার কি অর্থ বের করল মা? বলল,
-“আমি তো এমনিতেই জিজ্ঞেস করলাম।”
-“তুই কোনো খারাপ মতলব ছাড়া কথা বলিস না। আমার যেন ঘরের খবর বাহিরের মানুষের মুখে কিছু শুনতে না হয় বলে দিলাম।”
-“ঘরের খবর ঘর থেকেই শুনবে। খুশি?”
শিরীন বেগম আবারও বাঁকা চোখে তাকান। চড় থাপ্পড় খাওয়ার আগে আরিভ নিরাপদে স্থান ত্যাগ করল। পেস্ট্রি নিয়ে ব্যালকনির দিকে এগোয়। চামচ মুখে পুড়ে ফোন কানে নিল,
-“কই? আটটা বাজে। বারান্দায় এসো ঝগড়া করি।”
বইয়ে মুখ গুঁজে থাকা নাফিয়া চরম বিরক্ত। বলল,
-“মুড নেই। আমি পড়ছি।”
-“হার মানলে তাহলে?”
-“একদমই না। আমাকে ডিস্টার্ব করবেন না। পড়ছি আমি।”
-“এত পড়ে কি হবে? দিন শেষে জামাইর ঘরে গিয়ে বাচ্চা সামলানো লাগবে।”
-“কত নীচু মন মানসিকতা আপনার, ছিঃ!”
-“কেন? নিজের বাচ্চা সামলানো কী খারাপ কাজ? লজ্জার কাজ? আমাদের মায়েরা আমাদের লালন পালন করেছেন। এটা কী কাজ নয়?”
নাফিয়া চুপসে গেল। আরিভের কন্ঠ কেমন যেন রাগী শোনাচ্ছে। আরিভ আবার বলল,
-“সৃষ্টিকর্তা ঘর এবং বাহির দুটো জায়গা তৈরি করেছেন দুটো আলাদা মানুষের জন্য। পুরুষকে দায়িত্ব দিয়েছেন কঠোর কাজ করার, তাদের মন আর দেহ সেভাবেই তৈরি করেছেন। নারীদের বানিয়েছেন কোমল। ঘরের ভেতরে সামলানোর জন্য। দুটো কাজে কোনো ভেদাভেদ আছে? উভয়ের সম্মিলিত পরিশ্রমে একটা সংসার হয়।”
আরিভ একটু থেমে আবার বলল, -“যদি কোনো নারী কাজ করতে চায় সেটায় বাঁধা নেই, সম্পূর্ণ স্বাধীনতা আছে। কিন্তু ঘরের কাজকে ছোট করে দেখা অপরাধ।”
নাফিয়া কোনো জবাব দিল না। আরিভ জোর গলায় প্রশ্ন করল, – “কী বলেছি বুঝেছ?”
নাফিয়া কি বলবে বুঝে উঠতে পারল না। লোকটা ভীষণ সিরিয়াস হয়ে গেছে। তার অর্থ সেটা ছিল না। আরিভের কণ্ঠের তেজে তার সমস্ত তেজ মিয়ে গেল। মিনমিনে কন্ঠে বলল,
-“সরি।”
আরিভ চমকে উঠল সরি শুনে। এই মুখে সরি শুনবে কখনও ভাবেনি। আচ্ছা মেয়েটি ভয় পেল না তো? আরিভ দ্রুত বলল,
-“বারান্দায় এসো, কথা আছে।”
নাফিয়া বই বন্ধ করে তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলে। প্রত্যেকটা মানুষ জোর করে তাকে কথা মানিয়ে নেয়। সে কিছুই করতে পারেনা। শুধু ভেবে যায়। দাদীর অবস্থান দেখে বারান্দার দিকে পা বাড়াল।
গিয়েই দেখল আরিভ ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে। কী যেন খাচ্ছে। নাফিয়াকে দেখে হাসল কিছুটা। এরপর রেলিংয়ের উপরে রাখা আরও একটা পেস্ট্রি নিয়ে ঝুঁকে এগিয়ে দিল। বলল,
-“টেস্ট কেমন চেক করো।”
-“খাব না।”
-“না ছাড়া আর কিছু শিখেছ জীবনে?”
-“নাহ!”
-“আবার না। খাও।”
পেস্ট্রি নাফিয়ার ভীষণ পছন্দের। চকলেট পেস্ট্রি হলে তো কথাই নেই। এ তো সোনায় সোহাগা। কিন্তু বুঝতে দিল না আরিভকে। বারান্দায় থাকা সিঙ্গেল চেয়ারে পা ভাঁজ করে বসে খেতে শুরু করল।
বলল, – “আপনাকে গতকালকের খাবারের টাকা দিতে হবে, চুড়ির টাকা দিতে হবে এখন আবার পেস্ট্রির টাকাও যোগ হল।”
-“আর আইসক্রিমের টাকা? সেদিন যে দিলাম?”
নাফিয়া কপালে হাত রাখল। নিজেকে বিশাল ঋণী মনে হচ্ছে। আরিভ বলল,
-“আরও কিছু যোগ করি?”
নাফিয়া হাত তুলে বলল, -“না না না। আমার কাছে টাকা নেই। আমি কী আপনার মত চাকরি করি?”
বাচ্চাদের মত করে কাঁদো স্বরে বলল নাফিয়া। বেশ মজা পাচ্ছে তাকে বিরক্ত করে আরিভ। কিছু না বলে ভেতরে চলে গেল। পিজ্জা কোল্ড ড্রিংকস এনে হাজির হল। নাফিয়া গোলগোল চোখে চেয়ে বলল,
-“আপনার মত খাদক আমি কোথাও দেখিনি জানেন? এভাবে চললে দেশে আবার দুর্ভিক্ষ দেখা দিবে।”
-“তোমাকে কে না করেছে খেতে? তুমিও খাও।”
-“আমার পাকস্থলী জলহস্তীর মতো না।”
আরিভ ডান পাশের ভ্রু উঁচু করে বলল, – “আমাকে জলহস্তী বলছ?”
নাফিয়া স্বীকার করল তৎক্ষণাৎ। বলল, -“জি হ্যাঁ।”
-“বেয়াদব মেয়ে।”
-“সেম টু ইউ।”
আরিভ নিজের জন্য কিছু খাবার রেখে বাকিটা নাফিয়ার দিকে এগিয়ে দিল। বলল,
-“নিয়ে যাও এগুলো। পড়বে আর খাবে। তাহলে এনার্জি আসবে।”
-“লাগবে না।”
আরিভ একটি ক্রিকেট বল হাতে নিল। বলল,
-“আমি যা দিব কোনো কথা না বলে নিয়ে নিবে। না বললে এটা দিয়ে মাথা ফাটিয়ে ফেলব।”
চোখ মুখ খিচে দৌঁড় লাগিয়েছে নাফি নিজের ঘরে। মা অথবা দাদী এসব দেখলে হাজারটা প্রশ্ন জুড়ে দিতেন। গিয়েই দরজা বন্ধ করল। আনমনে বলে উঠল,
-“লোকটার মতলব তো ভালো ঠেকছে না।”
রাত বারোটা বাজল। ঘড়ির কাটা ঠিক বারোটা শূন্য শূন্য মিনিটে এসে থেমেছে। নাফিয়ার চোখে ঘুম নেই। ঠোঁট কামড়ে হেসে উঠল সে। সে জানে এখনই সময় বালিশের নিচে থাকা বকশিশ কুড়িয়ে নেবার। করলও তাই। প্রতি বছর এভাবেই সুন্দর খামে কচকচে নোটের বকশিশ তাকে দেওয়া হয়। রাত জাগতে পারেন না রেশমা বেগম এবং সিদ্দিক সাহেব। হাই প্রেশারের রোগী উভয়েই। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রাত দশটার মধ্যে ঘুমোতে হয়। বিগত দিন মেয়ের ব্লাউজ সেলাই করতে গিয়ে ঘুমোননি রেশমা বেগম। আজ কিছুটা অসুস্থ। কিন্তু মেয়েকে উপহার দিতে ভুলেননি।
বালিশের নীচের খাম থেকে দুটো পাঁচশ টাকার নোট বেরোলো। টাকাগুলো দেখে খুশি হবার আগেই ফোনে টুং করে আওয়াজ এলো। এই সময় তাকে কে মেসেজ করতে পারে? নিশ্চয়ই সাদিফ আর জোহান?
-“ শুভ জন্মদিন বৈরীতা।”
ভুল প্রমাণিত হল নাফিয়া। তার প্রিয় প্রতিবেশী ভাইদ্বয় না। অপ্রিয় প্রতিবেশীর তরফ থেকে এসেছে বার্তা। বার্তা নয় শুভেচ্ছা।
নাফিয়ার চোখজোড়া বড় বড় হয়ে গেল। এভাবে কেউ কখনও তাকে উইশ করেনি। আরিভের কাছ থেকে তো মোটেও আশা করেনি।
-“ধন্যবাদ। কিন্তু আপনি কি করে জানলেন?”
-“আজকাল সোশাল মিডিয়ার যুগে এসব জানা বড় কোনো ব্যাপার নয়।”
-“ওওওও” লম্বা উত্তর দিল নাফিয়া।
-“হিসেব মিলাই চল।”
-“কীসের হিসেব?”
-“তোমাকে এই পর্যন্ত যত আইসক্রিম, চকলেট, পিজ্জা পেস্ট্রি খাইয়েছি আর চুড়ি কিনে দিয়েছি সেসব তোমার জন্মদিনের উপহার হিসেবে কাটাকাটি করে নাও। টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। আমার জন্মদিন এলে তুমি আমায় কিছু দিও।”
নাফিয়া উত্তর দিল না। হিসেব বুঝতে সময় নিচ্ছে। আরিভ পূনরায় মেসেজ দিল,
-“হিসেব মাথায় ঢুকল মাথামোটা মেয়ে?”
-“হুম।”
-“কাল ভার্সিটি আছে?”
-“হ্যাঁ আছে। কেন?”
-“গলির মোড়ে থাকব সকাল দশটায়।”
নাফিয়া চট জলদি মিথ্যে জবাব দিল,
– “না না ক্লাস নেই কালকে।”
-“মিথ্যুক।”
-“সত্যি বলছি।”
-“বিশ্বাস করি না।”
-“না করুন আমার কী?”
আরিভের কাছ থেকে ফিরতি কোনো জবাব আসেনি। নাফিয়া অবাক হল। জবাব দিল না কেন? অথচ সে চাইছিল কিছু একটা জবাব আসুক। অনেকটা সময় অতিবাহিত করে আরিভ কল করল। নাফিয়া কিছু সময় পর রিসিভ করে। অন্যপাশ থেকে আরিভের গুরুগম্ভীর স্বর শোনা যায়,
-“তোমার কি সত্যিই বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে?”
এই প্রশ্নের জবাব কী দিবে? আরিভের কণ্ঠের ভারে থতমত খেয়ে গেছে। কী রকম যেন শোনাচ্ছে আওয়াজটা। নাফিয়া চুপ করে রইল। অথচ উত্তর অতি সহজ, সোজা। কিন্তু জবাব দিচ্ছে না।
আরিভ আবারও রাশভারী কন্ঠে জানতে চায়,
-“কিছু জিজ্ঞেস করেছি আমি! এত সময় কেন লাগছে জবাব দিতে? বোবা তুমি?”
ভড়কে গেল নাফিয়া। দ্রুত জবাব দিল,
-“না বিয়ে ঠিক হয়নি। মা ওদের ভাগিয়ে দিয়েছে।”
ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে ফোস করে নিঃশ্বাস ফেলার আওয়াজ পাওয়া গেল। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে যেন আরিভ। জবাবে বলল,
-“ঘুমাও।”
চলবে…