আমার স্নিগ্ধপরী পর্ব-০১

0
3

#আমার_স্নিগ্ধপরী
#পর্ব_১
#লেখা: #নীল_মালতীলতা

বিয়ের আজ এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলো অথচ নিজের স্বামীকে সামনাসামনি এখনো দেখেনি স্নিগ্ধা। বিয়ের দিন বাবার বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে শ্বশুরবাড়ি আসার মাঝপথেই গাড়ি থেকে হুট করে নেমে গেল স্বামী নামক মানুষটা। শ্বশুরবাড়িতে এসে শশুর শাশুড়ির হাত ধরে একাই উঠেছিল, যেখানে প্রত্যেকটা মেয়ে তার স্বামীর সঙ্গে শ্বশুরবাড়িতে পা রাখে। সেখানে স্নিগ্ধার ব্যাপারটা সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল। প্রত্যেকটা মেয়েরই বিয়ে স্বামী শ্বশুর বাড়ি নিয়ে হাজার খানিক স্বপ্ন থাকে, মনে হাজার খানেক ভয় থাক নতুন পরিবেশ সব কিছু নতুন,, আর এইখানে সবচেয়ে আপন হয় স্বামী । অথচ এই স্বামী ছাড়াই সে শ্বশুরবাড়িতে পা রেখেছে।

ফজলুল তালুকদারেরও ছেলের কর্মকাণ্ডে মাথা হেট হয়ে আছে। যদিও বিয়েতে তিনি ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ছাড়া তেমন কাউকেই ইনভাইট করেননি। শুধুমাত্র যাদেরকে না জানালেই নয় শুধু তাদেরকে জানিয়েই দাওয়াত দিয়েছেন। আর কিছু পাড়া-প্রতিবেশিতো আছেই,, তারা কিছু না পারলেও খোঁচা মেরে কথা ঠিকই বলতে পারে।
ফজলুল তালুকদার স্ত্রী ফারজানা তালুকদার তাদের একমাত্র ছেলে ফাইয়াজ তালুকদার।

ফারজানা তালুকদার স্নিগ্ধাকে নিজে পছন্দ করে ছেলের বউ করে এনেছেন,, বিয়েতে ছেলেকে তিনি রাজি করিয়েই নিয়েছিলেন কিন্তু হঠাৎ কি থেকে কি হয়ে গেল তিনি যেন আন্দাজ করতে পারলেন না।

স্নিগ্ধা তালুকদার সিদ্দিক তালুকদার ও শারমিন তালুকদারের বড় মেয়ে, তাদের তিন ছেলে মেয়ে বড় মেয়ে স্নিগ্ধা, ছোট মেয়ে সাথী, আর সবার ছোট ছেলে সায়ান। তাদের বসবাস বরিশাল জেলার উত্তরে মেহেন্দিগঞ্জ গ্রামে । এই গ্রামে তালুকদার বাড়ি বেশ নামকরা বাড়ি। সহায়-সম্পত্তির তাদের অভাব নেই। বিঘায় বিঘায় ধানি জমি রয়েছে, গরু ছাগলের ফার্ম, হাঁস মুরগির ফার্ম, মাছের ঘের, এছাড়াও বাজারে রয়েছে বড় বড় তিনটা দোকান। আল্লাহ তাদের সম্পদ কোন দিক থেকেই কম দেননি। গ্রামে তালুকদার বংশ বেশ সম্ভ্রান্ত বংশ।

স্নিগ্ধা পড়াশুনায় বেশ ভালো। ওদের গ্রামেই ছোটখাটো একটা কলেজ রয়েছে,, সেখান থেকেই ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় গোল্ডেন পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। ওর ইচ্ছা ছিল বড় কোন বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করার। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া ওর একটা স্বপ্ন বলা চলে। ঢাকা সহ কয়েকটা বিভাগে পরীক্ষা দেয়,, কারণ ঢাকায় হয়তো চান্স নাও পেতে পারে,, একটা দুটোয় দিলে সফল নাও হতে পারে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ও বাদ পড়েনি।

ফজলুল তালুকদার আর সিদ্দিক তালুকদার চাচাতো ভাই। ফজলুল তালুকদার পড়াশুনা সুত্রে ঢাকা গিয়ে সেখানেই সেটেল হয়েছেন। সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য করে বেশ নাম ডাক কামিয়েছেন। তাই আর গ্রামে ফিরে আসা হয়নি। আর তাছাড়া গ্রামে বাবা মাও বেঁচে নেই যে তাদের টানে আসবে। তারা চাচাতো ভাই হলেও তাদের মধ্যে বেশ মিল মহব্বত ছিল ছোটবেলায়,, তারা একে অপরের বন্ধুও ছিল। পড়াশোনা আর সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য ফজলুল তালুকদার গ্রাম ছাড়লেও সিদ্দিক তালুকদার এমনটা করেননি। তিনি গ্রামে থেকেই নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে নিয়েছেন। তাদের একে অপরের দূরত্ব বেড়ে গেলেও তাদের যোগাযোগ টা রয়ে গেছে। এছাড়া ফজলুল তালুকদারের গ্রামের যে খানিক জমি জমা রয়েছে তার দায়িত্ব তিনি ভাই বন্ধু সিদ্দিক তালুকদার কেই দিয়েছেন।

স্নিগ্ধা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া স্বপ্নের কথা সিদ্দীক তালুকদার ফজলুল তালুকদার কে জানিয়েছিলেন। ফজলুল তালুকদার সিদ্দিক তালুকদারকে অনেক অনুরোধ করেছেন যেন তার বাড়িতে থেকেই মেয়েটা পরীক্ষা দেয় আর স্বপরিবারে জেন বেড়াতে আসে। এর আগেও তিনি বেশ কয়েকবার অনুরোধ করেছিলেন। ব্যস্ততায় কারোই কারো কাছে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। তাই মেয়ের পরীক্ষার সপ্তাহখানেক আগে পুরো পরিবার নিয়ে ভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে গেলেন। ছেলেমেয়েদেরও একটু শহর ঘুরিয়ে দেখানো দরকার। ফজলুল তালুকদার বিয়ে করার পর একবার গিয়েছিলেন গ্রাম ঘুরে দেখাতে নিজের স্ত্রীকে। এরপরে আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি। সেবার ফারজানা তালুকদার আর শারমিন তালুকদারের মধ্যে দেখা হয়েছিল এরপর আর দেখা হয়ে ওঠেনি। এই অনেকদিন পর আবার দেখা হল। তারা একে অপরকে অতটা না চিনলে জানলেও তাদের দেখলে মনে হবে না সেটা। অনেকদিন পর আপন কারো দেখা পেয়ে দুজনেই যেন হারিয়ে গেল বন্ধুত্বের ভিড়ে।

ফারজানা তালুকদারের কন্যা সন্তানের বড় শখ ছিল। ভাগ্যের পরিহাসে তিনি সেখানে ব্যর্থ হয়েছেন। স্নিগ্ধাকে কয়েকদিন কাছে পেয়ে তার মনে হচ্ছিল এরকম একটা মেয়ে তারও দরকার। এরকম বুদ্ধিমতি ভদ্র চঞ্চল একটা মেয়ে ঘরে থাকলে ঘরটা সব সময় আলোতে পরিপূর্ণ থাকবে।

স্নিগ্ধারা যখন ঢাকায় বেড়াতে আসে ফাইয়াজ তালুকদারকে তখন অফিসের কোন একটা কাজে ঢাকার বাইরে যেতে হয়। মাস্টার্সে অধ্যায়নরত ফাইয়াজকে তার বাবা প্রয়োজনে বিভিন্ন কাজে তাকে এখানে সেখানে পাঠায়। ফজলুল তালুকদার বড় বড় দুটো কোম্পানির মালিক। ফাইয়াজের মাস্টার্স শেষ হয়ে গেলেই তাকে তিনি তার কোম্পানির এমডি হিসেবে নিযুক্ত করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছেন। তাই এখন থেকেই টুকটাক কাজ ছেলেকে দিয়ে করান তিনি। একমাত্র আদরের ছেলে কাজের বেলায় গাইগোই করলেও আবার বাবার মুখের উপর না বলতে পারেনা বলে কাজে হাত লাগায়।

স্নিগ্ধার পরীক্ষা শেষ হলেই তারা আবার তাদের গ্রামে ফিরে যায়,, এবং অপেক্ষা করে রেজাল্টের। ঢাকার পরীক্ষাটা স্নিগ্ধার বেশ ভালো হয়েছে,, অন্যগুলোও ভালো হয়েছে,, তবে যেন ঢাকাতে সে চান্স পায় তার জন্য সে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে অনেক দোয়া করেছে এবং মান্নত করে রেখেছে।

ফারজানা তালুকদার স্নিগ্ধাকে নিজের কাছে রাখার জন্য স্বামীর সঙ্গে পরামর্শ করলেন। ফজলুল তালুকদার এ ব্যাপারে ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলার পরে সিদ্দিক তালুকদার জানান যেহেতু তার ঘরে প্রাপ্তবয়স্ক একজন ছেলে রয়েছে আর তার মেয়েও প্রাপ্তবয়স্ক, লোকে শুনলেও হয়তো মন্দ কথা বলবে। এমন কথা শুনে ফারজানা তালুকদার সিদ্ধান্ত নিলেন তার ছেলের সঙ্গে একেবারে বিয়ে দিয়ে এই মেয়েকে তিনি ঘরে তুলে আনবেন। তাহলে তার মেয়ের অভাব পূরণ হবে আর ছেলেরও একটা গতি হবে। এই যুগে এমন ভালো মেয়ে খুঁজে পাওয়া বড়ই কষ্টের, এমন মেয়ে যেহেতু নিজেদের ঘরেই আছে তাহলে আর বাইরে যাওয়ার কি প্রয়োজন। মেয়েটাকে তার বড্ড মনে ধরেছে। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ছেলে রাজি না হলেও তাকে যে করেই হোক রাজি করিয়েই তিনি এই মেয়েকে ঘরে তুলবেন। ফজলুল তালুকদার ভাইয়ের কাছে অনুরোধ করে মেয়েটাকে চাইলেন নিজের ছেলের জন্য। সিদ্দিক তালুকদার অনেক ভেবেচিন্তে রাজি হলেন যেহেতু ভাই তার পরিচিত তার ছেলেও নিশ্চয়ই বাবার মতই হবে। স্নিগ্ধা প্রথমে রাজি ছিল না বিয়ের জন্য। তার পড়াশোনার বড় শখ। তাকে সবাই অনেক বোঝানোর পর সে অবশেষে রাজি হয়। ওই বাড়িতে গেলে যে তার পড়াশোনার কোনো ক্ষতি হবে না সে ব্যাপারে সে নিশ্চিত।। তারপরেও বিয়ে একটা অন্যরকম অনুভূতি নিজেকে অন্যের নামে করে দেওয়া। বিয়ে মানে কিছুটা দায়িত্ব , যাতে সে এত তাড়াতাড়ি জড়াতে চাইনি। কিন্তু বাবা-মায়ের খুশির জন্য রাজি হয়ে যায়।

অন্যদিকে ফাইয়াজ বিয়ের জন্য রাজি নয়। তার পড়াশোনা সবেই শেষ পর্যায়ে। পড়াশোনা শেষ করে একটু নিজেকে সময় দিবে চিল করবে নিজের জীবনটা উপভোগ করবে,, এখনই একটা দায়িত্ব কাধে নিতে চায় না সে। ফারজানা তালুকদার সব রকম পর্যায়ে ছেলেকে বোঝালেন। যখন দেখলেন কোন কাজ হচ্ছে না তখন তিনি ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করলেন বললেন,,,,
তোমার কাছে তো আমার কোন কিছুর দাম নেই,, সারাদিন তো থাকো দুই বাবা ছেলে নিজেদের মতো, আমি বাঁচলাম কি মরলাম তাতে তো তোমাদের কিচ্ছু যায় আসে না,, কখনো হয়তো তোমরা বাইরে থেকে খুব আনন্দ করে এসে দেখবে আমি মরে পড়ে রয়েছি,, তোমাদের জানানোরও কেউ থাকবে না,,

মা এসব কি কথা??

তুই শুধু মেয়েটাকে বিয়ে করে আমার জন্য এনে দে, তারপর আর কোন কিছুতেই তোর প্রয়োজন নেই। তোর কোন দায়িত্ব নিতে হবে না, আমি আমার মেয়েকে নিয়েই থাকবো।।

মানে কি আমি বিয়ে করবো আর আমার সেখানে কোন প্রয়োজন পড়বে না,, তাহলে বিয়ে করে লাভটা কি,,

এই তুই না বিয়েই করতে চাস না, তাইলে আবার বউ প্রয়োজন পড়বে কেন ???

যেহেতু বউ প্রয়োজন নেই তাহলে আর বিয়েও করবো না,,

ঠিক আছে তাহলে আমাকেও তোমরা আর পাবে না তোমরা দুই বাবা ছেলে নিজেদের মতো লাইফ ইনজয় কর।

এমন কথা শুনে ফজলুল তালুকদার ছেলেকে উদ্দেশ্য করে বললেন,, আমাকে বউ হারা করলে তুমিও বাবা হারা হবে,, আমার বউ যেদিকে আমিও সেদিকে। (এই পরিবারের সদস্য সংখ্যা কম হলেও তারা একে অপরের বন্ধু,, খুব সুন্দর তাদের মা-বাবা এবং ছেলের বন্ডিংটা।)

বাবার মুখে এমন কথা শুনে ফাইয়াজ হা হয়ে গেল।

ফারজানা তালুকদার ফের বললেন,, আমি কিন্তু কোন মজা করছি না,,

মা তুমি কেন বুঝতে পারছ না? আমার তো এখনো পড়াশোনায় শেষ হয়নি,

আমি শুধু মেয়েটাকে আমার কাছে রাখতে চাই।
যাতে আমার মৃত্যুর খবরটা অন্তত তোমরা পাও।

উহ মাাা,, তুমি যা বলবে আমি তাই করবো তবুও এই কথাটার উচ্চারণ করোনা।

মনে থাকে যেন,,

হ্যা হ্যা মনে থাকবে,, বলেই লাগে ফুসতে ফুসতে জায়গা ত্যাগ করে ফাইয়াজ,

এরই মধ্যে খুবই আনন্দের একটা ঘটনা ঘটে যায়। স্নিগ্ধার হাতে যেন আকাশের চাঁদ নেমে এসেছে,, সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকে গিয়েছে,, বরিশালেও সে উত্তীর্ণ হয়েছে তবে যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার স্বপ্ন তাই সেটাকে সে কাজে লাগাতে চায়। স্নিগ্ধার এমন উত্তীর্ণতায় সবাই খুশি। ফারজানা তালুকদার তো পারে না এখনই স্নিগ্ধ থাকে এখানে তুলে নিয়ে আসেন।

দুই পরিবার মিলে ভালো একটা দিনক্ষণ ঠিক করে বিয়ের জন্য। তবে এখানে ফাইয়াজের এক কথা বিয়ে করতে বলেছ বিয়ে করছি তবে কোন অনুষ্ঠানে যেন না হয়, এই মুহূর্তে তার এসবের কোন ইচ্ছাই নেই,, তবু মায়ের জন্য রাজি হওয়া। তবে মেয়েটা কে, দেখতে কেমন, কোথায় থাকে এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র আগ্রহ দেখায়নি ফাইয়াজ,,

ছোটবেলা থেকেই শহরে বড় হওয়া ফাইয়াজের গ্রামের প্রতি বেশ বিরক্ত,, একবার বর্ষায় ছুটিতে এক বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিল তাদের গ্রামে,, সেখানে বেশি সময় থাকা হয়নি। একে তো বর্ষা তার ওপর দুই দিন কোনোরকম থেকে ছিল তাতে তার অভিজ্ঞতা হয়েছিল খুব বাজে। ফাইয়াজ শহরের সুদর্শন ছেলে ,, গ্রামের কিছু অবুঝ আনস্মার্ট মেয়েদের ব্যবহারে ফাইয়াজ খুবই বিরক্ত ছিল। যা তার গ্রামের প্রতি আরো বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তার ধারণা গ্রামের মেয়েরা, খ্যাত আনস্মার্ট হয়। ফাইয়াজ দেখলো যখন তাদের গাড়ি কোন এক গ্রামের ভিতরে ঢুকছে, তখন যেন তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। মা তার বিয়ে ঠিক করেছে কোন গ্রামের মেয়ের সাথে? যেখানে তার বন্ধু-বান্ধব থেকে সবাই বেশ স্মার্ট। সেখানে তাকে গ্রামের ক্ষেত আনস্মার্ট একটা মেয়েকে বিয়ে করতে হবে ভেবে তার যেনো দিন দুনিয়ায় উল্টে যাচ্ছে। ফাইয়াজ বিন্দুমাত্র দেরি না করে তাৎক্ষণিক বাবা-মাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,

আমি এই বিয়ে কিছুতেই করতে চাই না বাবা, মাকে বোঝাও প্লিজ।

ফারজানা তালুকদার অবাক হয়ে বললেন,, এটা কেমন কথা ফাইয়াজ?? বিয়ের কথা বার্তা থেকে সবকিছু ঠিকঠাক করা আর তুমি এখন বলছো একথা??

আমিতো বিয়ে করতে চাইনি মা!! তুমি আমাকে জোর করেছো,, তাও সবকিছু মেনে নিলাম,, কিন্তু এখন কি দেখছি তুমি একটা গ্রামের ক্ষেত আনস্মার্ট মেয়ের সঙ্গে আমার বিয়ে দিতে চলেছ??

মেয়েটা যে খ্যাত আনস্মার্ট সেটা তুমি জানো কিভাবে তুমি দেখেছো মেয়েটাকে??

না দেখিনি তবুও গ্রামের মেয়েদের স্বভাব চরিত্র আমার বেশ জানা আছে,,

তাই নাকি?? তা কয়টা গ্রামের মেয়ের সঙ্গে তোমার সাক্ষাৎ আছে শুনি??

মা প্লিজ আমি এই বিয়ে করতে চাই না,, তোমার বেড়াতে গেলে যাও আমাকে এখানেই নামিয়ে দাও আমি ফিরে যাচ্ছি।

ফজলুল তালুকদার এবার বেশ রেগে বলে উঠলেন,, বেশ তো নেমে যাও,, বাবা মায়ের মান সম্মান নিয়ে তো তোমার কোন মাথা ব্যাথা কোন কালেই ছিল না,, এখন তুমি বিয়ে করবে না বলে বায়না ধরছো, অথচ একবারও ভাবছো না আমি বা তোমার মা আমার ভাইয়ের সামনে কিভাবে মুখ দেখাবো। বাবা-মা ছোট হলে তো তার থেকে তোমার কিছু আসে যায় না কারণ তোমার কাছে তোমার লাইফ তোমার স্মার্টনেস সবকিছু বাবা-মায়ের থেকে অনেক উপরে,, যাও নেমে যাও। ড্রাইভার গাড়ি থামাও।

ড্রাইভার তাদের নিজেদের ড্রাইভার,, বেশ কয়েক বছর ধরেই তাদের গাড়ি চালায়,, বলা চলে তাদের পরিবারের একজন সদস্যের মতো,, সে নিজের বিবেক দিয়ে আর গাড়ি থামালো না গন্তব্যের দিকে এগিয়ে চলল,,

চলবে??