#১৫_বছর_বয়সী_মা (০৪)
#সোফিয়া_সাফা
আজকে তিশার গায়ে হলুদ, তিশার পরণে হলুদ রঙের শাড়ি সেই সাথে তাজা ফুল দিয়ে তৈরিকৃত গহনা তো আছেই। তিশা বাদে বাকি মেয়েদের পরণের শাড়ির রঙ লাল, আসমা বানু রান্নাঘরে বসে নিজের বোনের সাথে হাতে হাতে কাজকর্ম এগিয়ে দিচ্ছেন, অলি নিজেদের রুমের খাটের এককোণে বসে আছে তার সামনে শাড়িসহ বাকি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, অলি ঘাপটি মে’রে বসে আছে। মেয়েটি যেনো সবার অগোচরে ধীরে ধীরে জড় বস্তুতে পরিনত হচ্ছে। খাওয়া দাওয়াও ঠিকঠাক মতো করতে পারছেনা, আসমা বানুও অলির দিকে ততোটা খেয়াল দিতে পারছেননা। যার ফলস্বরূপ অলির মনের মাঝে অদ্ভুত অদ্ভুত খেয়াল আসছে, এই যেমন এখন অলি বারবার সিলিং ফ্যানের দিকে তাকাচ্ছে।
“আমার কি সত্যিই বেচে থাকা উচিৎ?”
অলি মাথা ঝাকিয়ে পুনরায় হাটুতে মুখ গুজলো, অন্যদিকে আলভী সন্ধ্যার পর থেকেই অলির সাথে কথা বলার সুযোগ খুজছে কিন্তু বাড়িভর্তি লোকেদের মাঝে সেই সুযোগটা হয়ে উঠছেনা। আলভী বুঝতে পেরেছে তাকে অলির সাথে কথা বলার পরই একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এভাবে চুপচাপ বসে থেকে সময় নষ্ট করার কোনো মানেই হয়না, অলি বাচ্চা মেয়ে এসবের মাঝে সে কতোটা মানসিক অশান্তিতে আছে ভাবতেই আলভীর অনুশোচনা আরও বেড়ে যায়। আলভী উঁকিঝুঁকি মে’রে দেখলো অলি রুমে একাই হাটুতে মুখ গুজে বসে আছে সে রুমে ঢুকতেই যাবে তার আগেই দেখতে পায় অপর পাশ থেকে ইশা আর ঊর্মিলা এদিকেই আসছে। আলভী তড়িৎ গতিতে উল্টো দিকে ঘুরে চলে যায়।
ইশা আর ঊর্মিলা রুমে এসে অলিকে বসে থাকতে দেখে সেদিকে এগিয়ে যায়, অলির কোমড়ের নিচ অব্ধি ছড়িয়ে থাকা চুলগুলো আজ বাধনহারা এলোমেলো। অন্যসময় অলি চুলগুলোকে খুবই যত্ন করে বেধে রাখে, ইশা কখনোই এলোমেলো থাকতে দেখেনি। তবে হঠাৎ কি হলো মেয়েটার, ইশা অলির মাথায় হাত রাখতেই অলি মুখ তুলে চাইলো। অলির মুখটা দেখে ইশা থমকে গেলো, অলির মুখটা আজকে অন্যদিনের তুলনায় বড্ড বেশিই মায়াবি লাগছে। ইশাকে দেখামাত্রই অলি নিজের গায়ের ওড়না ঠিক করতে লাগলো।
“কি হয়েছে বনু তুই কেনো এভাবে বসে আছিস? বলনা আমাকে তোর কি হয়েছে?”
ঊর্মিলা অলির সামনে বসে বলে উঠলো,
“অলি তুমি সকালের ব্যাপারটার জন্যই মন খারাপ করে আছো তাইনা? প্লিজ তুমি মন খারাপ কোরোনা দেখলে তো মা আমার সাথেই কেমন ব্যবহার করেছিলো। আসলে আমার মা ভাইয়াকে খুব ভালোবাসে, তাই সবসময় নিজের ছেলের পক্ষই নেয়, তার সামনে তো ভাইয়ার সাথে মজাও করা যায়না। তাহলেই তেড়ে এসে কান মুলে দেয় আর নয়তো ধমকে ধামকে একাকার করে দেয়। আমার তো মাঝে মাঝে মনেই হয় যে আমাকে তারা কুড়িয়ে এনেছিলো। যদিও বাবা আমাকে বেশি ভালোবাসে, বাবা কালকে আসবে। তখন আমি মায়ের নামে বাবার কাছে নালিশ করবো।”
তাদের দুজনের কথায় অলি কোনোপ্রকার রেসপন্স করলোনা শুধু এক দৃষ্টিতে সামনের দিকে তাকিয়ে রইলো। ইশা বলে উঠলো,
“অলি কথা বলছিস না কেনো?”
ঊর্মিলা চিন্তিত কন্ঠে বলে উঠলো,
“ওর মনে হয় শরীর ভালো নেই, ইশা তুই বরং ওর মাকে ডেকে আন যা”
ইশা মাথা নাড়িয়ে যাওয়ার জন্য ঘুরতেই অলি বলে ওঠে,
“তোমরা বাইরে অপেক্ষা করো আমি ১০ মিনিটে রেডি হয়ে বের হচ্ছি”
ইশা জিজ্ঞেস করলো,
“তুই শাড়ি পরতে পারবি?”
“হুম আমি শাড়ি পরতে পারি।”
ইশা কথা বাড়ালোনা এমনিতেই দেরি হয়ে গেছে,
“আচ্ছা আমরা বাইরেই অপেক্ষা করছি, তুই তারাতাড়ি রেডি হয়ে নে”
ইশা আর ঊর্মিলা বাইরে বের হতেই অলি দরজা লাগিয়ে দিলো তারপর শাড়িটা নিয়ে পরতে লাগলো। সে নিজের গায়ের ওড়না টা সরিয়ে ঘাড়ে আর গলায় থাকা কাম’ড়ের দাগগুলোতে বেশি করে ফাউন্ডেশন মেখে নিলো। তার দৃষ্টি নির্লিপ্ত যেনো সবকিছু স্বাভাবিকই আছে। অলি মনে মনেই বললো,
“আমি চাইনা আমার নেওয়া একটা ভুল সিদ্ধান্তের জন্য আমার বাবা মাকে লোকেরা আজেবাজে কথা বলার সুযোগ পেয়ে যাক। আমাকে বেচে থাকতে হবে নিজের বাবা মায়ের জন্য বেচে থাকতে হবে।”
অলি চোখে কাজল পড়ে নিলো, সে যদিও সচরাচর লিপস্টিক ইউজ করেনা তবে ঠোঁটের দাগগুলো লুকানোর জন্য অলি ঠোঁটে গাঢ় লাল রঙের লিপস্টিক দিলো। চুলগুলোকে পিঠের উপরেই ছড়িয়ে রাখলো। আজকে সে চুল বাধবেনা,
এদিকে আলভীর দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পা ব্যাথা করছে,
“নাহ এভাবে আর দাঁড়িয়ে থাকা যাচ্ছেনা। কিছু একটা কর এভি, কিছু একটা কর, হুম পেয়েছি”
ভাবতেই আলভী একটা বড় শ্বাস নিলো। স্বভাবতই একহাত প্যান্টের পকেটে দিয়ে ইশা আর ঊর্মিলার দিকে এগিয়ে গেলো,
“তোরা এখানে দাঁড়িয়ে আছিস? আর ওইদিকে ফাংশনের ওখানে সবাই তোদেরকে খোজাখুজি করছে”
ইশা আর ঊর্মিলা একবার আলভীর দিকে তাকিয়ে তারপর একে অপরের দিকে তাকালো, আলভী কিছু একটা ভেবে বলে ওঠে,
“ওখানে সবাইকে চকলেট দেওয়া হচ্ছে, তাই তোদেরকে খুজছে। আরেকটু দেরি করে গেলে আমার মনে হয়না যে তোদের ভাগ্যে চকলেট জুটবে।”
আলভীর কথা শুনে ইশা আর ঊর্মিলা একমূহুর্ত না ভেবে ছুট লাগালো। আলভী একটা ঢোক গিলে বড়বড় শ্বাস নিলো। নার্ভাসনেসের ঠেলায় কিছুক্ষণ ঘাড় আর কান চুলকাতে লাগলো, এদিক সেদিক তাকিয়ে দরজায় নক করতেই যাবে তার আগেই দরজা খুলে যায়। অলি রুমের বাইরে পা রাখা মাত্রই শক্তপোক্ত কিছু একটার সাথে ধাক্কা খেলো। ভ্রু কুচকে মাথা উঁচু করতেই আলভীকে দেখে অলি সাথে সাথেই ২ পা পিছিয়ে যায়। অলি কিছু বুঝে ওঠার আগেই আলভী রুমে ঢুকে অলিকে ঘুরিয়ে দরজার সাথেই চেপে ধরে। অলি চিৎকার দেওয়ার উদ্দেশ্যে মুখ খুলতেই আলভী উপায়ন্তর না পেয়ে অলির মুখ চেপে ধরে, অলি ডাগর ডাগর নয়নে আলভীর দিকে তাকিয়ে আছে। আলভী একহাতে দরজাটা লক করে অলির দিকে তাকালো, অলির চোখে পানি দেখে আলভীর কেমন যেনো পাগল পাগল লাগছে। অলি আলভীকে এতো কাছ থেকে দেখে তার গতরাতের কথা মনে পড়ছে, আলভী কিছু বলতে যাবে তার আগেই অলি নিজের হাত দ্বারা আলভীর বুকে কিল ঘুষি মা’রতে লাগলো, আলভী একটা হতাশার শ্বাস ফেলে অন্য হাত দ্বারা অলির দুহাত চেপে ধরলো,
“হানি’বি আমাকে আঘাত করতে চাইলে তোমাকে নিজের হাত ব্যবহার করতে হবেনা বুঝলে, তোমার চোখের একফোটা জল আমাকে ১০০ বার মে’রে ফেলার ক্ষমতা রাখে”
অলি ছটফট করতে লাগলো, তবে আলভীর মতো সুঠাম দেহের অধিকারী পুরুষের সাথে তার না পেরে ওঠাটাই স্বাভাবিক। লোকটার সামনে তার নিজেকে নিতান্তই দুগ্ধপোষ্য শিশু বলে মনে হচ্ছে। আলভী অসহায় কন্ঠে বললো,
“আমাকে কথা বলার সুযোগ দেও প্লিজ”
অলি তাও ছটফট করেই যাচ্ছে, আলভী এবার প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে গেলো,
“হানি’বি কেনো এরকম করছো? আমাকে দেখে ভয় পেয়োনা প্লিজ। আমি তোমার সাথে ইচ্ছা করে কিছুই করিনি, বোঝার চেষ্টা করো আমি যা কিছু করেছি সবটাই ভুল করে করেছি, সবকিছুই অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে হয়ে গেছে। আমাকে ক্ষমা করে দেও প্লিজ, আমি জানি আমি ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য নই তবুও বলছি, শোনো আমি তোমাকে বিয়ে করতেও প্রস্তুত আছি। তুমি শুধু একবার হ্যাঁ বলে দেও আমি সবাইকে ম্যানেজ করবো”
আলভীর কথা শুনে অলির চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো, অলিকে কাদতে দেখে আলভী দ্রুত গতিতে অলিকে ছেড়ে দিয়ে একটু দূরে সরে দাড়ায়। অলি ছাড়া পাওয়া মাত্রই নিজের চোখজোড়া মুছে নেয়, তারপর আলভীকে চমকে দিয়ে অলি হেসে ওঠে। অলি হাসছে কিন্তু আলভী বুঝতে পেরেছে যে অলি অতিরিক্ত ক্রোধের বশবর্তী হয়েই এভাবে হাসছে,
“আপনি বললেন যে সবটাই নাকি আপনি ভুল করে করেছেন কিন্তু আমি তো বলছি সবকিছু আপনার আগে থেকেই প্ল্যান করা ছিলো। আপনি একটা খারাপ লোক, আপনিই আপনার বন্ধুকে দিয়ে আমাকে নিজের রুমে নিয়ে গেছেন। আর ওয়েট আপনার ভাষ্যমতে যদি এটা ভুলই হয়ে থাকে তাহলে আপনি আমাকে বিয়ে করার কথা কেনো বলছেন? আমি কোন যুক্তিতে আপনার মতো একজন রে/পিস্টকে বিয়ে করতে যাবো?”
অলির শেষ কথাটা কানে পৌছানো মাত্রই আলভী রক্তচোখে অলির দিকে তাকায়। অলির দিকে এগিয়ে যেতে যেতে বলে,
“হোয়াট ডিড ইউ সে?”
“কেনো শুনতে পাননি? আপনি একজন রে/পিস্ট, আপনি আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে আমাকে জোরপূর্বক ধ/র্ষ/ণ করেছেন”
কথাটা শুনে আলভী নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে অলির গাল চেপে ধরে, রাগে আলভী হিতাহিতজ্ঞানশূন্য। তার শক্ত চিবুক দৃশ্যমান। আলভী শীতল কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
“ইউ লিটল হানি’বি, বয়স কতো তোমার?”
অলি রাগী চোখে আলভীর দিকে তাকায়, আলভী দাতেঁ দাঁত চেপে অলিকে একবার উপর থেকে নিচ অব্ধি দেখে নিলো তারপর হাস্কিস্বরে বলে উঠলো,
“টপস আর স্কার্টে ১০ বছরের বাচ্চা লাগতো এখন শাড়িতে বারো বছরের বাচ্চা বলে মনে হচ্ছে, কিন্তু কথা তো একদম প্রাপ্তবয়স্ক নারীর মতো বলছো। বাই দ্য ওয়ে আই লাইক ইট”
অলি না চাইতেও আলভীর হাস্কি ভয়েস শুনে অনেক ঘাবড়ে গেলো। নিজেকে যতই সাহসী দেখাক না কেনো পরিশেষে তো সে একজন ১৫ বছর বয়সী বাচ্চা মেয়েই। আলভী ঘাড় কাত করে অলির দিকে তাকালো। দরজায় একহাত ঠেকিয়ে অলিকে বন্দি করে নিলো, অলি একটা ঢোক গিলে বলে ওঠে,
“আপনি সরে যান নইলে আমি চিৎকার করবো”
আলভী অলির মাথার কাছে নিজের মুখ এগিয়ে নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলতে লাগলো,
“তাই নাকি? করো চিৎকার করো। আই ডোন্ট কেয়ার, তুমি যদি সবাইকে জানাতেই চাও জানাতে পারো। আমার কোনো সমস্যা নেই, আর সবকিছু জানার পরে কি হবে সেটা জানো নিশ্চয়ই, হাহ মান সম্মান রক্ষার্থে হলেও সবাই তোমাকে আমার হাতেই তুলে দেবে। তারপর তুমি কোথায় পালাবে হানি’বি?”
“আমাকে এই অদ্ভুত নামে ডাকা বন্ধ করুন, আপনি যতোবার আমাকে এই নামে ডাকেন আমার প্রচন্ড ঘেন্না হয়”
আলভী ভ্রু কুচকে অলির দিকে তাকায়,
“অলি আর হানি’বি অর্থ তো একই, তাহলে শুনতে খারাপ লাগবে কেনো? ওহহো আই সি এটা ঠিক ওই শারীরিক সম্পর্কের মতো তাইনা? বিয়ের পর করলে পবিত্র আর বিয়ের আগে করলে ধ/র্ষ/ণ। ওকে হানি’বি আমি তোমাকে বিয়ের পরেই এই নামে ডাকবো”
অলির হাত পা কাপছে লোকটার কথাগুলো যেনো বিষের মতো তার রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পরছে, সেই সাথে তার প্রচন্ড রাগ আর ঘৃণাও কাজ করছে। আলভী হঠাৎ করেই অলিকে ছেড়ে দিয়ে সোজা হয়ে দাড়ালো,
“আমাকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যাও সেটাই তোমার জন্য ভালো হবে”
“অসম্ভব আমি ম’রে যাবো তবুও আপনাকে বিয়ে করবোনা। আপনাকে বিয়ে করার আগে আমি দরকার হলে বি’ষ খেয়ে নেবো”
অলির কথাটা শুনে আলভী স্তব্ধ হয়ে গেলো, অলিও সেই সুযোগে দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে গেলো। অলি চলে যেতেই আলভী রেগেমেগে দরজার উপরেই ঘুষি দিলো।
,
বাড়ির বাগানের পুরোটা অংশ ঘিরে গায়ে হলুদের ফাংশনের জন্য ডেকোরেট করা হয়েছে, ইশা আর ঊর্মিলা চকলেট পাওয়ার উদ্দেশ্যে এসে নিরাশ হলো। ঊর্মিলা বলে ওঠে,
“ভাইয়া আমাদের সাথে প্রাংক করেছে রে”
ইশা কাদোকাদো মুখ করে বললো,
“হুম আমার এবার কান্না পাচ্ছে”
“তোর কান্না কেনো পাচ্ছে শুনি”
পেছন থেকে কারো কথার আওয়াজে ইশা আর ঊর্মিলা পেছনে ফিরে তাকায় সামির ভ্রু কুচকে ওদের দিকেই তাকিয়ে আছে। ঊর্মিলা একটা হাসি দিয়ে চলে যেতে নিলে ইশা তার হাত ধরে ফেলে,
“আপু যাচ্ছিস কেনো?”
“আমি কাবাবে হাড্ডি হতে চাইছিনা”
ঊর্মিলার কথা শুনে সামির হাল্কা কেশে বললো,
“তোদের কিসের জন্য কান্না পাচ্ছে শুনি”
ঊর্মিলা বলতে লাগলো,
“আর বলবেন না সামির ভাই, ভাইয়া আমাদের সাথে প্রাংক করেছে, ও বলেছে এখানে নাকি চকলেট দেওয়া হচ্ছে”
ঊর্মিলার কথাশুনে সামির হেসে উঠলো,
“তোদের সাথে প্রাংক করা এতো সহজ আগে জানতাম না রে”
,
এদিকে দিহান বাড়ির ভেতরে ঢুকে কাউকেই দেখতে পেলোনা,
“আমি কি ভুল বাড়িতে ঢুকে পরলাম নাকি? না বাড়ির নাম তো ঠিকই আছে। আমার স্পষ্ট মনে আছে এই বাড়িতেই আলভীর সাথে একবার এসেছিলাম। তাহলে চারদিকে এতো শান্তি কেনো? বিয়ে বাড়িতে এতো শান্তি মানায় নাকি? এর চাইতে তো হসপিটালে চিৎকার চেচামেচি বেশি”
দিহানের ভাবনার মাঝেই আসমা বানু ড্রইংরুমে আসেন, দিহানকে দেখে সে এগিয়ে গেলেন,
“আপনি কাউকে খুঁজছেন?”
দিহান ভদ্রতার খাতিরে সালাম দিয়ে বললো,
“হ্যাঁ আসলে আমি এভির বন্ধু, এটা ওর মামা বাড়ি না?”
আসমা বানু এভি নামটা শুনে চিনতে পারলেন না,
“আমি তো এই বাড়ির অতিথি তাই সবার নাম আমি জানিনা, আপনি বসুন আমি আমার বোনকে ডেকে দিচ্ছি”
আসমা বানু চলে যেতে নিলে দিহান বলে ওঠে,
“এভি মানে আমি আলভীর কথা বলছি আন্টি। ওকে তো চেনেন তাইনা? ওইযে রাগী দেখতে লম্বা করে ছেলেটা যে সারাক্ষণ মুখটাকে পেচার মতো করে রাখে সেই ছেলেটা”
দিহানের কথা শুনে আসমা বানুর ভীষণ হাসি পেলো, সে কিছু বলতে যাবে কিন্তু তার আগেই আলভী সিড়িবেয়ে নিচে নেমে আসে। দিহান তো ছুটে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে,
“ইয়ার পুরো ৮৩ ঘন্টা ২৩ মিনিট পর তোকে দেখলাম, আমি তোকে অনেক মিস করেছি দোস্ত, রিফাত কোথায় ওকে ডাক। শা’লাকে মে’রে তক্তা বানিয়ে ফেলবো। ফোনটাকে কি করে রেখেছে কে জানে”
আলভী মুখে কিছু না বলে দিহানকে সরিয়ে দিলো, দিহান ভ্রু কুচকে তাকালো,
“তোর মুখটা সবসময় এরকম না করে রাখলেও তো পারিস”
আলভী কিছু বলতে চাইলে আসমা বানুর জন্য বলতে পারেনা। এমনি সকাল বেলার ঘটনার জন্য আলভী অনুতপ্ত নিজেকে তাদের সামনে আরও খারাপ বানাতে চাইছেনা। আলভী উল্টো দিকে ঘুরে উপরে চলে যায় দিহান ও আলভীর পিছু পিছু চলে যায়।
,
অলি স্টেজের সামনে গিয়ে দাড়াতেই ইশা, ঊর্মিলা আর সামিরা তার পাশে এসে দাঁড়ায়। সামিরা অলিকে দেখে বলে,
“অলি তোমার ঠোঁটের লিপস্টিক লেপ্টে গেছে”
সামিরার কথা শুনে অলি নিজের ঠোঁটে হাত দেয়, তার মনে পড়ে আলভী তার মুখ চেপে ধরেছিলো। তখনই হয়তো লিপস্টিক টা লেপ্টে গেছে,
চলবে,,,
শব্দসংখ্যা- ১৯০০+