#কুন্দ_ফুলের_মালা
#পর্ব-৬
হৃদয় সন্ধ্যের পর ব্যাগভর্তি করে প্রচুর বাজার নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে গেল। সঙ্গে শাকিল আর রাজুও আছে। ঝিলমিলের ফুপু আজ আবার এসেছেন। জামাই আপ্যায়ন এর ব্যাপার আছে। বাসায় হরেক রকম পিঠে, খাবার দাবারের আয়োজন করতে হবে, আসমা একা হাতে কতদিক সামলাবে। জাহাঙ্গীর সাহেব হৃদয়কে এতো বাজার নিয়ে আসতে দেখে অপ্রস্তুত হলেন। তিনি বলেও ফেললেন,
“এতোগুলো টাকা খরচ করার কী দরকার ছিলো…
হৃদয় জবাব দেবার আগে শাকিল বলে উঠলো,
“আঙ্কেল যে কী বলেন! শ্বশুর বাড়িতে কেউ খালি হাতে আসে? ”
জাহাঙ্গীর সাহেব মৃদু হাসলেন। ছেলেগুলো পাড়ার পরিচিত মুখ। এদের এভাবে ঘরে বসিয়ে কখনো আপ্যায়ন করবেন কল্পনাও করেন নি। মানুষ যা দু:স্বপ্নেও ভাবতে পারে না সেগুলো বাস্তবে কিভাবে যেন ঘটে যায়।
ফুপুর কথায় ঝিলমিল একটা শাড়ি পড়লো। কপালে টিপ পরলে ও’কে নাকি অনেক ভালো লাগে। একটা টিপও পরলো। ম্যাচিং করে দুল, আর লিপস্টিক। অনেক দিন পর আয়নার সামনে বসে যত্ন করে সাজলো। কিছু ব্রনের দাগ স্পষ্ট বোঝা যায়, অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে চোখে ক্লান্তির ছাপ । মুগ্ধ হবার মতো সাজ হয় নি, তবুও এতোদিন পর সাজতে পেরে ভালো লাগছে।
ঝিলমিলের পরনের শাড়িটার রঙ গোলাপি। তিনটা শাড়ি হৃদয়দের বাসা থেকে দিয়েছিল। তার মধ্যে থেকে এটাই পছন্দ হলো। ফুপু এসে তাড়া দিলেন,
“ঘরে বসে থাকবি? যা জামাইকে গিয়ে চা, টা দে। ”
ঝিলমিল এলো বেরিয়ে। চা বাদে বাদবাকি সব নাশতা দেয়া হয়ে গেছে আগেই। ঝিলমিল চা নিয়ে এলো। হৃদয় এক পলক দেখে চোখ নামিয়ে দ্বিতীয়বার আবার তাকালো। চোখ নামিয়েই মনে হয় খেয়াল হয়েছিল এখন তো ঝিলমিল ওর বউ। তাকিয়ে তো দেখা যায় ই।
শাকিল, রাজুর সঙ্গে ঝিলমিল আজ ভালো করে কথা বলল। ওরা ঝিলমিলের জন্য গিফট, চকলেট নিয়ে এসেছে। সেগুলোও আন্তরিক ভাবে গ্রহন করলো।
রাতের খাবারের সময় আসমা সবকিছু এগিয়ে দিলেও ঝিলমিল সবার পাতে খাবার তুলে দিচ্ছিলো। শাকিল তখন আবদারের সুরে বলল,
“ভাবী একটা ছবি তুলি? সেলফি নেব।”
ঝিলমিল মাথা নেড়ে সায় দিলো। ছবি নেয়ার আগে শাকিল আবারও বলল,
“ভাবী আপনি ভাইয়ের কাঁধে হাত রাখেন। ছবিটা ভালো আসবে। ”
হৃদয় বারণ করার আগেই ঝিলমিল শাকিলের কথামতো হৃদয়ের কাঁধে হাত রাখলো। ছবি তোলা হলো ভালোভাবেই। হৃদয় খুব ভালো করে খেয়াল করে ঝিলমিল কে। যতটা স্বাভাবিক দেখাচ্ছে ততটাই কী স্বাভাবিক আছে ও! নাকি ঝড় সামলে স্বাভাবিক হবার অভিনয় করছে। যদি অভিনয় করেই থাকে তবে সেটা এতো নিখুঁত।
***
“আব্বু তোমার শ্বশুর কল করছিল। গাড়িটা শোরুম থেকে আনতে বলল। কাল আনতে পাঠাব?”
আকাশ বারান্দায় বসেছিল। মায়ের গলা পেয়ে নড়েচড়ে বসলো।
“হ্যাঁ। যা ইচ্ছে তোমাদের। ”
“আমাদের ইচ্ছে মানে? তোমার ইচ্ছে হলে আনবে। তোমার শ্বশুরের দেয়া গিফট। আমি তো এজন্য বললাম যে পাড়ার লোক দেখুক, চৈতীর আব্বুর মন টা কতো বড়। ”
আকাশ বেখেয়ালে জবাব দিলো,
“হু।”
রাহেলা ছেলের মতিগতি খেয়াল করেছে। এতো টা ভেঙে কেন পড়ছে সেটাও তিনি বুঝতে পারছেন, কিন্তু চতুরতার সাথে না বোঝার ভানও তাকে করতে হচ্ছে। ইশিকাও তার ভাবনা জানিয়েছে মা’কে। রাহেলার মেজাজ খারাপ হলো। নতুন বউ আছে পাশে, তবুও তার ছেলে ওই মেয়েটার বিয়েতে মুষড়ে পড়েছে। এতোটা মেন্টালি আপসেট হবার তো কিছু নেই। হৃদয় কোনো দিক থেকেই আকাশের কমপিটিটর হতে পারে না। টাকা মেথরেরও থাকে, তাই বলে তার ক্লাশ টা পাল্টে যায় না। রাহেলা গম্ভীর গলায় বললেন,
“চৈতীর দিকে কী তুমি একটু মনোযোগ কম দিচ্ছো?”
“না তো আম্মু। চৈতী কিছু বলেছে?”
“হ্যাঁ। সকালে, দুপুরে ওর খাবার সময় তুমি পাশে ছিলে না। ব্যাপারটায় ও খুব কষ্ট পেয়েছে। আমার সঙ্গে বলার সময় কাঁদছিলো।”
“কাঁদছিলো! আমি তো একটু ব্যস্ত ছিলাম….
“আব্বু তুমি এখন চৈতীকে নিয়ে ব্যস্ত হও। অন্য ব্যস্ততা পরে সামলাবে। বউভাতের অনুষ্ঠান হয় নি, তার মধ্যেই তুমি ব্যস্ত হয়ে গেলে! ”
আকাশ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
“আমি বুঝিয়ে বলব চৈতীকে। ”
“আচ্ছা। ওর যেন কোনো কিছুতে খারাপ না লাগে।”
মা কথা বলে যাবার পর আকাশ নিজের রুমে গেল। ইশিকাকে বলে গেল খাবার টা ঘরে পাঠাতে। চৈতী সবসময়ই ভারী মেকাপে সেজে আছে। বউ দেখতে লোকজন আসছে বারবার। এখন অবশ্য সাজ নেই। একমনে ফোন দেখতে ব্যস্ত। আকাশ পেছন থেকে ওর কোমড় জড়িয়ে ধরে বলল,
“তুমি নাকি আম্মুর কাছে আমার কমপ্লেইন করেছ?”
“হ্যাঁ। সকাল, দুপুর আমি তোমার এটেনশন পাই নি। আমার খারাপ লেগেছে। ”
“আচ্ছা সরি। আমি একটু ব্যস্ত ছিলাম। ”
“আমার চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ তোমার জীবনে কিছু থাকতে পারে? ”
আকাশ হাসলো। চৈতীর বয়স কম, একটু জেদি আছে স্বভাবে। আকাশকে খুব মানিয়ে গুছিয়ে নিতে হবে বোঝা যাচ্ছে। আকাশ ঘনিষ্ঠ হবার চেষ্টা করলো। চৈতীও তাতে সাড়া দিলো। আকাশের মনে হলো ও একটু বেশীই বিচলিত হয়ে পড়েছিল। ওর এখন চৈতীকেই গুরুত্ব দেবার দরকার।
***
হৃদয়কে থাকতে হলো রাতে। বাকীরা খেয়েদেয়ে বিদায় নিলো। ঝিলমিলের ফুপু জোর করলেন। তিনি ঝিলমিল কেও বললেন,
“জামাই না থাকলে ব্যাপার টা খারাপ দেখায়। ”
ঝিলমিল কিছু বলে নি উত্তরে। ওর বাবা, মা হৃদয়ের থাকা নিয়ে খুশি, অখুশি কোনোটাই নয়। হৃদয় থেকে যাবার পরও দ্বিধায় ভুগেছে। একবার ভেবেছিল ঝিলমিল কে বলবে, তোমার অসুবিধে হলে আমি ফিরে যাব। কেউ তোমাকে কোনো প্রশ্নের মুখে ফেলবে না, আমি সামলে নেব। পরমুহূর্তেই সিদ্ধান্ত বদলালো৷ ঝিলমিলের মনে কী চলছে সেটা ভালো করে ওর জানা নেই। তবে ও বিয়েটাকে সিরিয়াসলি নিয়েছে। ঝিলমিলের সঙ্গে সংসারও করতে চাইছে। আপাতত ওর ভাবনায় নেতিবাচক কিছু নেই। তাই কাছাকাছি থেকে দুজনের মধ্যে ব্যবধান টা কমানোর চেষ্টা করাই যায়।
ঝিলমিল একটা শপিং ব্যাগ এনে হৃদয়ের হাতে দিয়ে বলল,
“আপনার ঘরে পরার জামাকাপড় আছে। আপনার মা পাঠালো। ”
হৃদয় ব্যাগ টা হাতে নেয়ার সময় বলল,
“আমার বাবা, মা এখন তোমার শ্বশুর, শাশুড়ী। তাদের বাবা, মা ডাকতে শুরু করো। তুমি শুরু করলে আমিও করতে পারব। ”
ঝিলমিল হৃদয়ের দিকে একবার তাকালো। তারপর বলল,
“আচ্ছা।”
হৃদয় এর মনে হলো কথাটা একটু কঠিন গলায় বলে ফেলেছে। তাই নরম গলায় বলল,
“সরি। তবে এটা শর্ত ছিলো না। মা বলছিলো তুমি কথা বলার সময় কিছু ডাকো নি তাকে। ”
“একটু সময় লাগবে। মানিয়ে নেব। আপনার বাড়িতে যখন থাকতে যাব তখন সমস্যা হবে না এতো। ”
ঝিলমিল কথাটা বলে বেরিয়ে গেল। হৃদয়ের ভালোলাগার একটা অনুভূতি হলো। সাতাশ দিন পর ঝিলমিল ওর বাড়িতে, ওর ঘরে থাকবে। আকাশের সঙ্গে ঝিলমিলের বিয়ে ভেঙে যাবার খবর শুনেও হৃদয় বিশেষ কিছু আশা করে নি। হ্যাঁ ঝিলমিল কে ওর সবসময় ই ভালো লাগতো, কিন্তু তাই বলে ছ্যাচড়ামি, বেহায়াপনা করে ঝিলমিল কে পাবার ইচ্ছে ছিলো না। না পেয়ে আক্ষেপ, আফসোস নিশ্চয়ই থাকতো, তবে সেটা একান্ত গোপন ও ব্যক্তিগত। সেদিন সন্ধ্যায় ঝিলমিল আকস্মিক ও’কে প্রস্তাব দিলো, তারপর সারারাত ও ভাবলো! আশ্চর্য ও না কেন বলল! এখনো পর্যন্ত এক মুহুর্তের জন্যও ঝিলমিল কে ভালোলাগার জায়গা থেকে সরাতে পারে নি, ওর কাছে এটাই তো ছিলো সুবর্ন সুযোগ!
“আপনি কী এতো ভাবছেন বড়দের মতো? ”
হৃদয় চমকে উঠলো। জামাকাপড় হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ঝিলমিলের তাড়ায় ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ালো।
ছোট্ট, ছিমছাম ওয়াশরুম তবে পরিষ্কার ও সাজানো। ঝিলমিলের ঘরও বেশ সাজানো, গোছানো ছিলো। ওর জন্য হলে ভালো, আর যদি স্বভাবত এমন হয়ে থাকে তবে আরও ভালো।
হৃদয় শাওয়ার নিলো। নভেম্বর মাসের শুরু হলেও গরমের দাপট এখনো আছে বেশ। হৃদয়ের ভেজা চুল দেখে ঝিলমিল বলল,
“শাওয়ার নিলেন? ঠান্ডা লাগে যদি? ”
“লাগবে না। আর লাগলে সমস্যা নেই। ”
ঝিলমিল কথা না বাড়িয়ে ড্রয়ারে হন্যে হয়ে কিছু একটা খুঁজতে লাগলো। হৃদয় আড়চোখে দেখে ভাবলো নিজের প্রয়োজনীয় কিছু হবে হয়তো। কিছুক্ষন পর একটা প্যারাসিটামল এর পাতা খুঁজে পেল। ড্রেসিং টেবিলের উপর পানির বোতল রাখা ছিলো আগেই। ওষুধের পাতাসহ, বোতল টা এগিয়ে দিয়ে বলল,
“ওষুধ টা খেয়ে নিন।”
“জ্বর আসার আগেই ওষুধ খাব?”
“হ্যাঁ। রাতে শিওর আসবে জ্বর, তাই আগে থেকেই খেয়ে নেয়া ভালো। ”
হৃদয় হেসে ফেলল। বলল,
“তুমি জ্বর আসার আগেই প্যারাসিটামল খাও? ”
“হ্যাঁ। এতে অনেক সময় ই জ্বর আসে না। ”
হৃদয় হাসতে হাসতেই বলল,
“অনেক মানুষের ভাগ্য ভালো যে তুমি মেডিকেল কলেজে পড়তে যাও নি।”
ঝিলমিল রসিকতা গায়ে মাখলো না। হৃদয় হাসিমুখেই প্যারাসিটামল খেয়ে নিলো। তারপর আবদারের সুরে বলল,
“তুমি চা করতে পারো?”
“দুধ চা ভালো পারি। আনব করে? ”
“আনো। ”
ঝিলমিল চা করতে গেল। হৃদয় ঘড়ি দেখলো। বারোটা ছাড়িয়েছে। বারান্দার দরজাটা খুলে দিলো। ছোট্ট বারান্দাটা ফুল গাছ দিয়ে সাজানো। একটা বেতের মোড়াও আছে সেখানে। নভেম্বরের বাতাস টা ঠান্ডাই আছে বেশ। শীতল বাতাস ছুঁয়ে দিলো হৃদয়কে। আজ ওর মন তুলনামূলক ভাবে ভালোই। ইচ্ছে করছে আজকের রাত টা ঝিলমিলের সাথে গল্প করে কাটিয়ে দিতে।
***
ঝিলমিল চা করতে যাবার সময় দেখলো টুটুলের ঘরের লাইট জ্বলছে। উঁকি দিয়ে দেখলো ও টেবিলে বসে পড়ছে নি:শব্দে। ঝিলমিল ভাইকে জিজ্ঞেস করলো,
“চা খাবি তুই?”
টুটুল কঠিন গলায় জবাব দিলো,
“না। ”
“তোর ভাইয়ার জন্য বানাচ্ছি। তুই চাইলে এক কাপ পানি বাড়িয়ে দেব।”
“আমি চাইছি তোমার কাছে? বেশী বোঝো কেন? আর ওই লোক কে ভাইয়া ডাকতে পারব না।”
ঝিলমিল স্থির চোখে তাকালো। বলল,
“তাহলে আমাকেও আপু ডাকিস না। ”
টুটুল ক্ষ্যাপা গলায় বলল,
“ডাকতেও চাই না। ঘেন্না ধরে গেছে। পাড়ায় কোথাও যাওয়া যায় না তোমার জন্য। এখন তো আরও সুযোগ করে দিয়েছ লোকজন কে কথা শোনানোর।”
টুটুল আজ বিকেলে বেরিয়েছিল কোচিং এর জন্য। তখন দুটো ছেলে জিজ্ঞেস করেছিল,
“তোর আপুর কী দুজনের সঙ্গেই সম্পর্ক ছিলো টুটুল?”
তারপর থেকে ও আপসেট। বিষয় টা মা’কে জানিয়েছে ও। মা বলেছে এই ধরনের কথা এক কানে শুনে অন্য কান দিয়ে যেন বের করে দেয়। টুটুল তা পারছে না। এতোটা হেনস্তা ও’কে কেন হতে হবে।
“টুটুল শোন, তুই আমার সঙ্গে যা ব্যবহার করিস, হৃদয়ের সঙ্গে সেটা করবি না। ”
টুটুল রক্তচক্ষু নিয়ে তাকালো। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“চলে যাচ্ছ না কেন শ্বশুর বাড়িতে? আমাদের আরও জ্বালিয়ে যাবার জন্য কারণ খুঁজতেছ?”
ঝিলমিলের চোখে পানি এসে গেল। গলা আটকে গেল। দুই ভাই বোনের কথার আওয়াজ টের পেয়ে আসমা বেরিয়ে এলেন। শেষ কথাটা শুনতে পেয়ে বললেন,
“কী হচ্ছে এসব!”
ঝিলমিল তখনও তাকিয়ে আছে ভাইয়ের দিকে। ছোট ভাইটা কতো আদরের ওর! একটা চকলেট খাবার সময়ও ভাইকে মনে পড়ে যায়। অথচ এখন এমন ভাবে কথা বলছে যেন ঝিলমিল ওর কেউই না। আসমা ঝিলমিল কে বললেন,
“যা ঘরে। ও’কে পড়তে দে। ওর ভবিষ্যৎ টা অন্তত ভালো হোক। ”
ঝিলমিল বেরিয়ে রান্নাঘরের দিকে গেল। ভাইয়ের গলার আওয়াজ সেখান থেকে স্পষ্ট শোনা যায়। মা’কে বলছে,
“ওর কারণে আমি কতো কথা শুনছি। ওর তো এসবে কিছু আসে যায় না। আমাকে সব সহ্য করতে হয়। আমরা নতুন বাসায় কবে যাব মা? আমি আর এই পাড়ায় থাকতে পারছি না। যে দেখে সেই আমাকে ওর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে। ”
ঝিলমিল চোখের পানি মুছে চায়ের কাপ নিয়ে ঘরে গেল। হৃদয় খাটে হেলান দিয়ে শুয়ে ছিলো। চায়ের কাপ নেয়ার সময় ঝিলমিলের ভেজা চোখ দেখে প্রশ্ন করলো,
“কার সঙ্গে তর্ক করলে? মায়ের সঙ্গে? ”
“না। ”
“তাহলে টুটুল? ”
ঝিলমিল জবাব দিলো না। ক্রমশই ওর চোখ ভরে উঠছে আবারও। হৃদয় ওর হাত ধরে মুখোমুখি বসালো। গাল বেয়ে পানি পড়ছে ঝিলমিলের। হৃদয় যত্ন করে মুছিয়ে দিলো। তারপর বলল,
“অপূর্বদের ওখানে যে ঘটনা তুমি দেখেছ সেটা ঘরের লোক কে বলতে পারতে। তাহলে তোমাকে কেউ ভুল বুঝতো না। আকাশের আসল রুপ টা তারা জানতো। ”
ঝিলমিল মাথানিচু করে আছে। চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। হৃদয় ওর কাঁধে হাত রাখলো। ঝিলমিল হঠাৎই হৃদয় কে জড়িয়ে ধরে ভেঙেচুরে কাঁদতে শুরু করলো।
চলবে….