ভাঙা পাঁজরে বসন্ত পর্ব-০৫

0
13

#ভাঙা_পাঁজরে_বসন্ত
#সানা_শেখ
#পর্ব_5

“তুরা পাপা কে ডাকো।”

“তোমার পাপা কাজ করতে গেছে, তুমি ঘুমাও।”

“পাপা নিচে ওয়েট করছে।”

“কোন নিচে?”

“বাড়ির সামনে রাস্তায়।”

তুরা ভিরানের চোখ হাত দিয়ে বন্ধ করে বলে,

“ঘুমাও আমার ঘুম পাচ্ছে।”

“পাপা আসবে না?”

“পরে আসবে।”

ভিরান দুই হাতে তুরার জামা শক্ত করে ধরে রেখে নিশ্চুপ হয়ে শুয়ে রইল। তুরার বুকে মুখ গুঁজে রেখে আবার বলে,

“তুরা তোমাকে ছেড়ে আমি যাব না।”

“ঠিক আছে এখন ঘুমাও।”

ভিরানের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে শুরু করে তুরা। এর আগে কোনো দিন কোনো বাচ্চা কে এভাবে ঘুম পাড়ায় নি। ছোট বাচ্চা বা ভিরানের সমবয়সী বাচ্চা কেও খুব একটা কোলে নেয়নি। ঢাকায় তুরা দের আপন কেউ নেই, তাই ছোট বাচ্চাও নেই। ছোটর মধ্যে তুরাই, বাবা-মা, ভাইয়ের আদরের একমাত্র কন্যা-বোন।

ভিরান কে জড়িয়ে ধরে রেখে তুরার অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছে। ভালো লাগছে ভিরান কে জড়িয়ে ধরে রেখে। কেমন আদুরে বিড়াল ছানার মতো লেপ্টে রয়েছে। তুরা মুখ এগিয়ে ভিরানের মাথায় চুমু খায় বেশ কয়েক টা। ভিরান নড়াচড়া করে না, ঘুমিয়ে পড়েছে প্রায়।

ভিরান কে জড়িয়ে ধরে রেখে ভাবনার জগতে বিভোর হয়ে যায় তুরা।

এশার আযান হতেই মুক্তা শিকদার তুরার রুমে আসেন। বেডের দিকে এগিয়ে বলেন,

“তুরা ভিরান ঘুমিয়ে গেছে?”

তুরা উত্তর দেয় না। মুক্তা শিকদার তুরার গায়ে মৃদু ধাক্কা দিয়ে বলেন,

“তুরা।”

তুরা চমকে উঠে বলে,

“হ্যাঁ, হ্যাঁ বলো।”

“ভিরান ঘুমিয়েছে কখন?”

“এইতো একটু আগেই।”

“ওঠ।”

তুরা শোয়া থেকে ওঠার সময় দেখে ভিরান শক্ত করে তুরার জামা ধরে রেখেছে দুই হাতে। ভিরানের হাত থেকে জামা ছাড়িয়ে নিয়ে বেড থেকে নেমে দাড়ায়।

মুক্তা শিকদার ভিরান কে কোলে তুলে নেন সযত্নে সাবধানে।
মায়ের পেছন পেছন রুম থেকে বেরিয়ে আসে তুরা। নওশাদ চৌধুরী দাঁড়িয়ে আছেন নাতির অপেক্ষায়।

মুক্তা শিকদার এগিয়ে আসতেই নাতি কে নিজের কোলে তুলে নেন। তিন জনের দিকে তাকিয়ে বলেন,

“আমাদের জন্য আপনাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হলো।”

“না না স্যার কি বলেছেন এসব? ভিরান ছোট মানুষ আমরা কিছু মনে করিনি। ওকে দেখে রাখবেন।”

“ইনশা আল্লাহ, ভালো থাকবেন আপনারা।”

“সবাই কে নিয়ে আবার আসবেন স্যার।”

নওশাদ চৌধুরী ডোরের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে মনে মনে বলেন,

“আগামী কালকেও আসতে হয় কিনা কে জানে!”

নওশাদ চৌধুরীর পেছন পেছন তুহিন শিকদারও ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যান।

তুরা নিজের রুমে ফিরে আসে। ভিরানের জন্য মনের মধ্যে যেন কেমন করছে এখন। এই টুকু সময়ের মধ্যেই ভীষণ মায়া জন্মে গেছে। চলে যাওয়ায় মন খারাপ হচ্ছে। হেঁটে এসে বেলকনিতে দাঁড়ায়। রাস্তার দিকে তাকাতেই চোখ পড়ে গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা পুরুষের দিকে। পুরুষ টা গেটের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কৃত্রিম আলোতে চেহারা স্পষ্টই বুঝা যাচ্ছে। ওটা আর কেউ নয় ভিরানের বাবা নির্ভান চৌধুরী। ছেলে আর বাবার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে।

গেটের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে হঠাৎ ঘাড় ঘুরিয়ে ভবনের উপরের দিকে তাকায়। কেনো যেন মনে হচ্ছে ওদিক থেকে ওর দিকে কেউ তাকিয়ে আছে।
তিন তলার একটা বেলকনিতে নজর আটকায়।
একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু তাঁকিয়ে আছে অন্য দিকে। নির্ভান চোখ সরিয়ে গেটের দিকে তাকায় আবার।

চোখ কোণা করে আবার তাকায় তুরা। নির্ভান কে তাকাতে দেখেই অন্য দিকে তাকিয়েছিল তড়িঘড়ি করে।

নওশাদ চৌধুরী আর তুহিন শিকদার রাস্তায় চলে আসেন। তুহিন শিকদার নির্ভান কে দেখে অবাক হয়ে বলেন,

“স্যারও এসেছেন দেখছি? ভেতরে না গিয়ে এখানে দাঁড়িয়ে আছেন কেন?”

নির্ভান জোর পূর্বক একটু হেসে বলে,

“না, ঠিক আছি। হুট করে এসে আপনাদের ঝামেলায় ফেলে দিয়েছি।”

“ঝামেলা কেনো হবে স্যার? আপনারা এসেছেন খুশিই হয়েছি আমরা। সময় করে আবার আসবেন। তৃতীয় ফ্লোরের ওই ফ্ল্যাটে থাকি আমরা।”

নির্ভান ঘাড় ঘুরিয়ে তুহিন শিকদারের হাত অনুসরণ করে তাকায়। মেয়েটা যেই বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে ওই ফ্ল্যাট টাই দেখাচ্ছেন তুহিন শিকদার। নির্ভান বুঝতে পারে ওটাই তুরা।

চোখ সরিয়ে নিয়ে বাবার কাছ থেকে ছেলে কে কোলে নেয়ার জন্য হাত বাড়িয়ে বলে,

“ওকে আমার কাছে দাও, তুমি ড্রাইভ করো।”

ছেলে কে কোলে তুলে নিয়ে আরো একবার তাকায় বেলকনির দিকে। গাড়ির দরজা খুলে পেছনে উঠে বসে। নওশাদ চৌধুরী তুহিন শিকদারের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ড্রাইভিং সিটে উঠে বসেন।

গাড়ি ছুটে চলে যায়, তাঁকিয়ে থাকে তুরা। ভিরানের জন্য মন খারাপ হচ্ছে ভীষণ। সেদিন তো এত মায়া লাগেনি। আজকে মায়া ধরিয়ে দিয়ে চলে গেল ভিরান।
_________

গাড়ি থেকে নেমে ছেলে কে নিয়ে সোজা রুমের দিকে এগিয়ে যায় নির্ভান। ওর মা মেরি চৌধুরী পেছন থেকে ডাকলেও সাড়া শব্দ করে না।

রুমে এসে ছেলে কে বেডে শুইয়ে দেয়।
বেডে বসে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকে ছেলের মুখের দিকে।
সব সময় এমন পাগলামি করলে কি হবে? সামলাবে কিভাবে?

বেড থেকে উঠে টাওয়েল হাতে ওয়াশরুমে প্রবেশ করে।
শাওয়ার ছেড়ে চুপ চাপ স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।
শাওয়ারের পানির সাথে কয়েক ফোঁটা চোখের পানিও গড়িয়ে পড়ে নিচে। ছেলের সাথে জোরে কথা বলেছে এখনো ভুলতে পারছে না। বাড়িতে ফেরার সময় পুরো রাস্তা ছেলে কে একটু পর পর চুমু খেয়েছে, শক্ত করে বুকে আগলে রেখে এসেছে।

শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে আসে। ট্রাউজার টিশার্ট গায়ে জড়িয়ে ডোর লক করে দেয়।
নাইট ল্যাম্প অন করে বড় লাইট অফ করে শুয়ে পড়ে ছেলে কে বুকে আগলে নিয়ে। অফিসের কাজ বাকি আছে কিন্তু এখন কাজ করার মন মানসিকতা নেই। কিচ্ছু ভালো লাগছে না।

চোখ বন্ধ করে ভাবনায় মগ্ন ছিল নির্ভান, ফোনের রিংটোন শুনে ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে আসে। ফোন হাতে নিয়ে দেখে ওর মায়ের ফোন থেকে কল এসেছে।
রিসিভ করে কানে ধরে বলে,

“হ্যাঁ বলো আম্মু।”

“খাবার খাবে না? ডোর লক করে রেখেছো কেন?”

“এখন খাব না আমি, তোমরা খেয়ে শুয়ে পড়, রাখছি।”

মা’কে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে কল কে টে দেয় নির্ভান। ফোন সাইলেন্ট করে রেখে সিলিং এর দিকে তাকিয়ে রইল। সব কিছু তো ভালো ভাবেই চলছিল, ছেলে টা এমন পাগলামি শুরু করলো কেন তুরা কে দেখে?
সকালে ঘুম থেকে উঠে তুরা কে না দেখলে কেমন করবে কে জানে? তখনকার মতন করলে নির্ভান সামলাতে পারবে বলে তো মনে হয় না।
_______________

বেডে শুয়ে ছটফট করছে তুরা। অন্য দিন রাত নয়টার মধ্যে ঘুমিয়ে যায়। জোর যবর দোস্তি দশটা পর্যন্তও জেগে থাকতে পারে না রাতে। সাড়ে আটটা থেকে নয়টার মধ্যে ঘুমিয়ে যায়। কিন্তু আজকে এগারোটা বেজে যাওয়ার পরেও ঘুম আসছে না। চোখ বন্ধ করলেই ভিরানের নিষ্পাপ মাসুম চেহারা চোখের সামনে ভেসে উঠছে। ভিরান কথা গুলো কানে বাজছে। কোল বালিশ জড়িয়ে ধরলে মনে হচ্ছে ভিরান কে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। একদিনের মধ্যে এত মায়া? দুই বার দেখা হয়েছে মাত্র। বাইরের কারো জন্য তুরার মন কখনো এমন ছটফট করে না, আজকে শুধু ভিরানের জন্য এমন ছটফট করছে।

এপাশ ওপাশ করতে করতে শোয়া থেকে উঠে বসে বড় লাইট অন করে।
একটা ফোনও নেই যে এখন ফোন দেখে সময় পাড় করবে। ভাইয়ের নিষেধ বাণীতে আঠারো বছর পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পরেও ফোন কিনে দেয়নি বাবা। ভাইয়া দেশে ফেরার সময় ওর জন্য ফোন নিয়ে আসবে।

বেড থেকে নেমে স্টাডি টেবিলের ওপর থেকে হুমায়ন আহমেদ এর একটি গল্পের বই নিয়ে পড়ার জন্য বেডে বসে আবার। এখন একাডেমিক পড়াশোনা নেই আপাতত। তিন দিন আগেই এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। একাডেমিক পড়াশোনা তুরার একদম ভালো লাগে না। পড়তেই ইচ্ছে করে না। বাবা-মা আর ভাইয়ের জন্যই নিজের ওপর জুলুম করে পড়াশোনা করে, নয়তো কবেই এই পড়াশোনা ছেড়ে দিত।
___________

ভোর হতেই ঘুম ভেঙে যায় ভিরানের। চোখ মেলে তাকায়, বেডের এপাশে ওপাশে নজর বুলায়। তুরা নেই বেডে, ওর পাশে ওর বাবা ঘুমিয়ে আছে।
বাবার গায়ে ধাক্কা দিয়ে ডেকে বলে,

“পাপা ওঠো, তুরা কোথায়? তুরা তো এখানেই ঘুমিয়েছিল আমার সাথে।”

ঘুম ছুটে যায় নির্ভানের। তড়িৎ গতিতে শোয়া থেকে উঠে বসে। চোখ দুটো জোর করে মেলে রেখেছে।
ভিরান বাবা কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আবার বলে,

“তুরা কোথায় পাপা? তুরা তো আমার সাথেই ঘুমিয়েছিল রাতে।”

নির্ভান ছেলে কে টেনে কোলের ওপর বসিয়ে বলে,

“তুরা আমাদের সাথে আসেনি পাপা।”

“তুরা আসেনি?”

“না।”

ভিরান চারো দিকে নজর বুলায়, এটা তো ওদের রুম। ভিরান তো তুরার বাড়িতে তুরার রুমে ঘুমিয়েছিল তুরার বুকের সাথে লেপ্টে। এখানে আসলো কখন? কিভাবে? কে নিয়ে আসল?

মুখ তুলে বাবার মুখের দিকে দেখার চেষ্টা করে বলে,

“তুমি আমাকে এখানে এনেছো কেন? আমি তো তুরার বাড়িতে ছিলাম। তুমি তুরা কে না এনে শুধু আমাকে কেনো এনেছ? আমি তুরার কাছে যাব, এখনই যাব। ছাড়ো আমাকে।”

নির্ভান ছেলে কে শক্ত ধরে রেখে বলে,

“সকালে তো তোমার পড়াশোনা আছে পাপা। তুমি তুরার কাছে থাকলে কিন্ডারগার্টেনে কিভাবে যাবে? তুরারও পড়াশোনা আছে, এখানে আসলে ওর পড়াশোনা কিভাবে হবে?”

“তুরা এখন পড়ে না, ওর স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে।”

“এই কথা তোমাকে কে বলেছে?”

“তুরা।”

“তুরার পড়াশোনা নেই, তোমার তো আছে। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেছ ভালোই হয়েছে। চলো ফ্রেস হবে, ফ্রেস হয়ে হোমওয়ার্ক করতে হবে।”

“তুরা কে ছাড়া আমি ফ্রেস হবো না, হোমওয়ার্কও করবো না, খাবও না।”

“জেদ করবে না ভিরান।”

নির্ভান ছেলে কে কোলে নিয়ে ওয়াশরুমে প্রবেশ করে।
ছেলে কে ফ্রেস করিয়ে বেডে বসিয়ে রেখে নিজেও ফ্রেস হয়ে আসে।

ভিরানের ব্যাগ ড্রয়িং রুমে রয়েছে।

“তুমি বেডে বসে থাকো আমি আসছি এক্ষনি।”

ভিরান বলে না কিছু। নির্ভান রুম থেকে বেরিয়ে যেতেই ভিরান রুম থেকে বের হয়।

নিচে এসে ব্যাগ নিয়ে পেছন ফিরতেই দেখে ভিরান এগিয়ে আসছে।

“তোমাকে কি বলে আসলাম আমি? নিচে নেমে এসেছো কেন?”

“আমি পড়ালেখা করবো না, আমি তুরার কাছে যাব।”

“তুরার মধ্যে কি দেখেছো তুমি? কি আছে ওর মধ্যে? তোমার জন্মের পর থেকে নিজের হাতে কোলে পিঠে বড় করছি তোমাকে। আমিই তোমার বাবা, আমিই তোমার মা। কি করিনি তোমার জন্য? বাবা মায়ের দায়িত্ব একা হাতে পালন করছি চার বছর ধরে। বাবা মায়ের ভালোবাসার অভাব বুঝতে দিয়েছি কখনও? হঠাৎ বাইরের একটা মেয়ে কে দেখে এমন করছো কেন? তুরা কেউ হয় না আমাদের, ওকে ভুলে যাও তুমি।”

বাবার এত এত কথা বুঝতে সক্ষম হয় না ভিরানের ছোট্ট মস্তিষ্ক। তবে শেষের কথা গুলো বুঝতে পেরেছে। অভিমানী স্বরে বলে,

“তুরা কে আমি তোমার কুইন বানাব, তখন তুরা আমার আম্মু আর তোমার ওয়াইফ হয়ে যাবে।”

নির্ভান ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। সেই ঘুরে ফিরে এক কথা, কুইন বানাব, মা বানাব, তোমার ওয়াইফ বানাব।
_____________

কিন্ডারগার্ডেনে যাওয়ার সময় কান্না শুরু করে ভিরান, কিছুতেই পড়তে যাবে না। এখন তুরার কাছে যাবে। খাবার খাওয়ার সময়ও অনেক কাহিনী করেছে আজ, তুরা খাইয়ে দেবে নয়তো খাবে না। অনেক বাক্য ব্যয় করার পর ছেলে কে খাওয়াতে সক্ষম হয়েছিল নির্ভান।

বাবার পা শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঝুলে থেকে কাদতে কাদতে বলে,

“তুরা কে এনে দাও নয়তো আমি পড়তে যাব না। কিন্ডারগার্ডেনে সকলের আম্মু ওদের সাথে যায় শুধু আমার আম্মু যায় না।”

ছেলের কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে যায় নির্ভান। পরবর্তী কথা গুলো গলায় দলা পাকিয়ে গেছে। নওশাদ চৌধুরী আর মেরি চৌধুরীও অবাক হয়ে গেছেন নাতির কথা শুনে।
নির্ভান নিজেকে স্বাভাবিক করে বলে,

“আমি তো মাঝে মধ্যে নিয়ে যাই তোমাকে।”

“তুমি যাও, আম্মু তো কখনও যায় না। আমি আম্মু কে নিয়ে যাব। ব্রেকের সময় আমার ফ্রেন্ড দের আম্মুরা ওদের খাইয়ে দেয় শুধু আমার আম্মু খাইয়ে দেয় না।”

নির্ভান আর কিছু বলতে পারে না। মেরি চৌধুরী ছেলের দিকে তাকিয়ে বলেন,

“আজকে বুঝতে পারছো দুজন মানুষের অভাব এক জন মানুষ কোনো দিন কোনো ভাবেই পূরণ করতে পারে না। তুমি বাবা হয়ে যত যাই করো ওর মায়ের অভাব পূরণ করতে পারোনি নির্ভান।”

“তোমাদের কি মনে হয়, অন্য নারী ওর মায়ের অভাব পূরণ করতে পারবে? অন্য নারী এসে ওকে আপন করে নেবে? ভালোবাসবে ওকে?”

“বাসবে না কেন?”

“এক গাছের ফল আরেক গাছে নিয়ে জোড়া লাগিয়ে দিলেই কি সেই গাছের ফল হয়ে যাবে?”

“ওই গাছের ফল না হলেও, ঠিক ভাবে জোড়া লাগাতে পারলে সময়ের সাথে সাথে জোড়া লেগে যাবে।”

চলবে……….