গালিব মির্জা পর্ব-০৫

0
11

#গালিব_মির্জা
#পর্ব_৫
#তাসমিয়া_তাসনিন_প্রিয়া

বিয়ে বাড়িতে এখন খাওয়াদাওয়ার পর্ব চলছে। কেউ কেউ এরমধ্যেই খাওয়াদাওয়া সেড়ে বসে আছে, আবার কেউ কেউ খাচ্ছে। রাফিও আছে তাদের দলে। লামিয়া আর শুভ খাওয়া শেষে নিজেদের মধ্যে কথা বলছে, মেঘলা রাফির পাশের চেয়ারে বসে আছে। মাঝে মধ্যে রাফিকে খাওয়া নিয়ে খোঁচা দিচ্ছে। রাফি যদিও মেঘলার কথায় বিশেষ পাত্তা দিচ্ছে না। তার সমস্ত ধ্যান ধারণা জুড়ে এখন কেবল রোস্ট, পোলাও, ফিরনী, বিরিয়ানিসহ অন্যান্য খাবারদাবার।

“ ভাবি?”
সুমাইয়ার ডাক শুনে আঁচল দিয়ে দ্রুত চোখ মুছে ফেললেন আয়মান।
“ হ্যাঁ বলো, সুমাইয়া।”
সুমাইয়া আয়মানের মনের অবস্থা বুঝতে পারছেন। একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে, একটু পরই সে এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে। তা-ও একেবারে দেশের বাইরে! কবে দেখা হবে আবার জানেন না। দেশে থাকলে যখন-তখন চোখের দেখা তো হতো।
“ গালিব বলছিলো নওশিনের একাউন্টে কিছু টাকাপয়সা দিয়েছে। যাতে নতুন জায়গায় গিয়ে টাকাপয়সা লাগলে খরচ করতে পারে, কারো কাছে টাকা চাইতে গিয়ে যেন বিড়ম্বনার শিকার না হতে হয় আরকি। “
আয়মান ম্লান হাসলেন। গালিব তার সোনার টুকরো ছেলে, সবদিকে খেয়াল রাখে। ছেলেটা যদি একেবারে দেশে থেকে যেতো তবে ভালোই হতো। এসব ভেবে ফের দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন আয়মান।
“ ভালো করেছে। ওদিকের কী খবর? নওশিন, নতুন জামাইয়ের খাওয়াদাওয়া হলো?”
“ হ্যাঁ ভাবি। সবাই খেয়ে নিয়েছে, শুধু আমরা কয়েকজন বাকি। “
“ ঠিক আছে। তোমরাও গিয়ে খেয়ে নাও। “
সুমাইয়া অনুরোধের সুরে বললেন,
“ আপনিও খেতে চলুন, ভাবি। “
“ আমার ইচ্ছে করছে না, সুমাইয়া। “
“ ঠিক আছে। “
সুমাইয়া আরকিছু বললেন না কিংবা বিশেষ জোরও করলেন না। কারণ এই মুহুর্তে নওশিনের মায়ের মন বড্ড খারাপ হয়ে আছে। মেয়ের চলে যাওয়াকে ঘিরেই এই মন খারাপ।

গালিবকে বারবার দরজার দিকে নজর বুলাতে দেখে তৌকির মির্জা, ওর দিকে এগোলেন। স্বভাবের দিক থেকে তৌকির মির্জা হাসিখুশি বেশ।
“ গালিব? কিছু হয়েছে? বা কারো আসার কথা আছে? এভাবে দরজার দিকে কী দেখছিস এত!”

ছোটো চাচার প্রশ্নে মুচকি হাসল গালিব। গালিবের মুখে হাসি দেখা হলো এক বিরল ঘটনা । তাই তৌকির মির্জার বুঝতে অসুবিধা হলো না, বিশেষ কিছু হবে হয়তো।
“ হ্যাঁ চাচ্চু, একজন বন্ধু আসবে। মাত্র কল করেছিল, বলল পাঁচ মিনিটের মধ্যে আসছে। বিজি ছিলো সেজন্য আগেভাগে আসতে পারেনি। শুধুমাত্র দেখা করতেই আসবে। “
“ বাহ! তা নাম কী তোর বন্ধুর? “
“ তেজরিন খান আরিশ। “
ভ্রু উঁচিয়ে বললেন তৌকির,
“ ওহ! খান ইন্ডাস্ট্রির তেজরিন খান আরিশ! একজন সফল বিজনেসম্যান সে, দেশের শীর্ষ বিজনেসম্যানদের একজন। “
গালিব কিছু বলবে তার আগেই দরজার দিকে দৃষ্টি গেলো ওর। দরজা পেরিয়ে এদিকেই এগিয়ে আসছে আরিশ। পরনে গাঢ় কালো শার্টের ওপর ফিটিং কোট, চুলগুলো জেল দিয়ে ব্যাকব্রাশ করা, যেন প্রতিটি লক জ্বলজ্বল করে। লম্বা, দৃঢ় পদক্ষেপে হাঁটতে থাকা মানুষটার চোখে সেই চিরচেনা তেজ, ঠোঁটে হালকা বাঁকা রেখা। তার উপস্থিতিটাই আভিজাত্য আর কর্তৃত্বের মিশ্রণ। কোনো ভিড়ের মধ্যে গেলেও আলাদা করে চোখে পড়বে এমন এক ব্যক্তিত্ব । গালিব, তৌকির মির্জা এগিয়ে গেলেন আরিশের দিকে।

গালিবকে দেখে মুচকি হাসল আরিশ। হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করতেই এগিয়ে এলো গালিব।
“হেই আরিশ! হোয়াটস আপ? কত বছর পর দেখা হলো আমাদের!”

“আই’ম ফাইন। তোমার খবর কী?”
“আই’ম অলসো ফাইন। শুনলাম সামনে তোমার বিয়ে? ভাগ্যবতীটি কে?”

কথাটা শুনে ঠোঁট কামড়ে হালকা হাসল আরিশ। ভেতরে ভেতরে মনে মনে বলল– ভাগ্যবতী নয়, বরং দূর্ভাগ্যবশতই সে আমার জীবনে জড়িয়ে পড়ছে।
“কাজিন সিস্টার।” সংক্ষেপে উত্তর দিলো সে।

আরিশের কথায় গালিবের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো।
“ কাজিন ! শুভকামনা রইল, বন্ধু।”

এরপর গালিব আরিশকে পাশের একজনকে দেখিয়ে পরিচয় করিয়ে দিলো,
“আচ্ছা শোনো, উনি আমার ছোটো চাচ্চু– মিস্টার তৌকির মির্জা।”

গালিব পরিচয় করিয়ে দেওয়াতেই তৌকির মির্জা খুশি মুখে হাত বাড়ালেন। আরিশও ভদ্রভাবে তার সাথে হ্যান্ডশেক করলো। চোখেমুখে তৌকির মির্জার কৌতূহল, এই যুবকটিই এতবড় বিজনেসম্যান!
কিছু সৌজন্যমূলক কথোপকথনের পর গালিব আরিশকে নিয়ে এগোল নতুন বর–বউয়ের টেবিলের দিকে। চারপাশে আলোর ঝলকানি, ফুলের গন্ধ, আর উৎসবের কোলাহল মিলেমিশে যেন রাজকীয় পরিবেশ তৈরি করেছে।

নওশিনের সামনে গিয়ে থামলো তারা।
আরিশ গাম্ভীর্য রেখেই বরকে সংক্ষিপ্ত অভিনন্দন জানালো, তারপর নওশিনের হাতে সুন্দরভাবে মোড়ানো উপহারের বাক্সটি তুলে দিলো। নওশিন হালকা হাসিতে ধন্যবাদ জানালেও আরিশের চোখে তেমন কোনো আবেগের ছাপ দেখা গেলো না। উৎসবমুখর ভিড়ের ভেতরেও আরিশের ব্যক্তিত্ব যেন আলাদা আভা ছড়াচ্ছিল। কিন্তু কারো সাথে বেশি সময় না কাটিয়ে, আনুষ্ঠানিকতা সেরে আরিশ গালিবের সাথে কথা বলে, বেরিয়ে গেলো।

ঠিক কিছুক্ষণ আগেই নওশিন মির্জা বাড়ির চৌকাঠ পেড়িয়ে নতুন জীবনের পথে এগিয়েছে। স্বামী, শ্বশুরের সাথে শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছে। মির্জা বাড়ির পরিবেশ এখন থমথমে হয়ে গেছে। সবাই চুপচাপ নিজেদের মতো কাজ করছে। কেউ নিজের ঘরে গিয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, আবার কেউ রান্না করা খাবারগুলো ঠিকমতো ফ্রিজে রাখার পাশাপাশি সকল রান্নাঘর গুছিয়ে রাখছে।

সারাদিনের ক্লান্তিতে শরীর খারাপ লাগছে তামসীর৷ প্রচুর লাফালাফি করেছে আজ। এমনিতেই কোমরে, পেটে মৃদু ব্যথা ছিলো– এখন সেটা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘরে ঢুকেই শাড়ি খুলে কোনোমতে শরীরে অন্য পোশাক জড়িয়ে বিছানায় সোজা হয়ে শুয়ে পড়েছিলো তামসী। কিন্তু এখন গোসল না করলেই নয়! কারণ গোসল করলে শরীর ও মন দুই ভালো লাগবে। যে-ই ভাবা সেই কাজ! বিছানা ত্যাগ করে সোজা ওয়াশরুমের দিকে এগোল তামসী।

এদিকে সারাদিন বিয়ের ঝামেলা পোহাতে গিয়ে তামসীর জন্য চকলেট ও অন্যান্য জিনিসপত্র আনতে দেরি হলো গালিবের। হাতে চকলেট, আইসক্রিম ও বেলুন নিয়ে তামসীর ঘরের দিকে এগোচ্ছে সে। গালিব রুমের দরজা খুলতে যাবে, তখনই খেয়াল করলো। দরজাটা ভেতর থেকে আটকানো নয়, আধখোলা অবস্থাতেই আছে। দু’বার টোকা দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়লো সে। কিন্তু চারপাশে তাকিয়ে দেখলো, তামসী নেই। ভ্রু কুঁচকে সন্দিগ্ধভাবে ঘরটা পরখ করতে না করতেই হঠাৎ ওয়াশরুমের দরজা খুলে যাওয়ার শব্দ হলো।

ওইদিকে চোখ পড়তেই গালিব থমকে দাঁড়াল।
তামসী ভেজা চুল থেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি ঝরছে, কপাল থেকে গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে। ভেজা ওড়না এলোমেলোভাবে শরীরে পেঁচানো, কাঁধ থেকে বারবার গড়িয়ে পড়তে চাইছে। বুকের কাছে আঁকড়ে ধরে রাখলেও পাতলা কাপড়ে ভেতরের আকার অস্পষ্টভাবে ফুটে উঠছে। চোখ বড়ো বড়ো করে তাকিয়ে আছে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা গালিবের দিকে।

তামসীর ঠোঁট কেঁপে উঠছে, দম নিতে কষ্ট হচ্ছে যেন। ভয়ে নয়, বরং আচমকা গালিবের সামনে পড়ে যাওয়ার লজ্জায় বরফের মতো নিস্তব্ধ হয়ে গেলো সে। গালিবও প্রথম মুহূর্তে যেন স্তব্ধ হয়ে গেলো। তার গলা শুকিয়ে এলো, বুকের ভেতর হৃৎস্পন্দন অস্বাভাবিক দ্রুত বেগে ধকধক করতে লাগলো।

কিন্তু ঘটনাটির আকস্মিকতা টের পেয়ে, যেন বাস্তবতায় ফিরলো গালিব। দ্রুত দরজা আঁটকে দিলো সে, কাউকে যেন কিছু দেখাতে না পারে। সেই মুহূর্তেই তামসীর হুঁশ ফিরলো। মুখ লালচে হয়ে উঠেছে, চোখ নামিয়ে নিয়ে আবার দৌড়ে ওয়াশরুমের ভেতরে ঢুকে পড়লো সে।

পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা গালিব শ্বাস আটকে ফেলা এক অদ্ভুত অনুভূতিতে ডুবে গেলো। চোখের সামনে ভেজা, অগোছালো, তবুও ভয়ংকর সুন্দর তামসীর ছবিটা যেন মনের ভেতরে চিরকালের জন্য গেঁথে বসলো।

গালিব দরজা আঁটকে দিয়ে ঘনঘন নিঃশ্বাস ছাড়ল কয়েকবার। ওদিকে ওয়াশরুমে ঢুকে দেয়ালের সাথে কয়েকবার মাথা ঢুকলো তামসী। ঘরের দরজাটা যে খুলে রেখে এসেছিলো সেটাও মনে ছিলো না। আর গোসল করতে যাওয়ার সময় পোশাকআশাক নিয়ে ওয়াশরুমে ঢোকার কথাও মনে ছিলো না। এতো মনভোলা হলে চলে?
“ তামসী!”
গালিবের পুরুষালি গম্ভীর কণ্ঠে তামসীর মন, শরীর কেঁপে উঠল। কী হলো একটু আগে! ছিহ! ছিহ… তামসী কীভাবে কথা বলবে গালিবের সাথে?
“ ওভাবে বলদের মতো দরজা খোলা রেখেছিস কেন? রেখেছিস তো রেখেছিস তার ওপর এভাবে বের হয়েছিলি কোন আঙ্কলে? “
তামসীর কান্না পাচ্ছে এবার। কী লজ্জাজনক কথাবার্তা এবং আলোচনা! গালিবের চোখ লাল হয়ে গেছে, রেগে আছে সে। তার মধ্যে তামসীর নীরবতা আরও রাগিয়ে দিচ্ছে তাকে।
“ কথা বল, বলদি৷ “
তামসী চুপ করেই রইলো। গালিবের হঠাৎ কী যেনো হলো, সে ওয়াশরুমের দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে তামসীর হাত ধরে বাইরে বের করে আনলো। মেয়েটা লজ্জা, ভয়ে মাথা নিচু করে রেখেই বলল,
“ দয়া করে পরে বকাবকি করবেন। এখন আপনি আসুন!”
তামসীর হাত ছেড়ে দিলো গালিব। সত্যি এতক্ষণে তার রুম থেকে চলে যাওয়ার কথা ছিলো। গালিব নিজের কাজে নিজেই বিরক্ত হলো। তামসীর হাত ছেড়ে দ্রুত পা চালিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। গালিব চলে যেতেই তামসী গিয়ে দ্রুত দরজা আঁটকে ফেলল। তারপর বিছানায় বসে লম্বা লম্বা কয়েকবার নিঃশ্বাস ছাড়ল। নিজেকে যথাসম্ভব ধাতস্থ করার পর, ভেজা ওড়না সরিয়ে পোশাক পরে নিলো সে। তারপর চুল মুছে, বিছানায় শুয়ে পড়লো। বিছানার একপাশে চকলেট, আইসক্রিম আর বেলুনগুলো পড়ে আছে। গালিব যে এগুলোই দিতে এসেছিলো সেটা ভালো করেই বুঝতে পেরেছে তামসী। কেন যে এমন বলদামি করলো সেই ভেবেই নিজের চুলগুলো টেনে দিলো একবার। তারপর আইসক্রিমের বক্স খুললো, আহ কী সুঘ্রাণ! তামসী হুট করেই সবকিছু যেন ভুলে গেলো। আইসক্রিমের বক্স থেকে আইসক্রিম খেতে লাগলো সে।

আজকের সকালটা অদ্ভুত নিস্তব্ধ। মির্জা বাড়ি যেই না কালকে হাসি-খুশির কলরবে ভরে ছিল, আজ যেন হঠাৎ ফাঁকা হয়ে গেছে। কোথাও কারো হাঁকডাক নেই, রান্নাঘরেও নেই সেই ব্যস্ততার শব্দ। যেন বাড়িটার বুকের ভেতর থেকে একটা টুকরো আলগা হয়ে কোথাও হারিয়ে গেছে। তামসী, মেঘলা, লামিয়া তিনজনই নিজের নিজের ঘরে চুপচাপ। হাসি-মশকরার বদলে সবার চোখে টানটান শূন্যতা। বিশেষ করে লামিয়া, ও নওশিনের খুব কাছের ছিল, তাই মাঝেমাঝে খালি বিছানার দিকে তাকিয়ে নিঃশ্বাস ফেলছে।

নওশিনের মা ভোর থেকে বারবার নওশিনের ঘরে ঢুকছেন, বিছানায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন, কাপড় গুছিয়ে রাখছেন। যেন মেয়ে এখনো এখানেই আছে। চোখ লাল হয়ে উঠেছে কেঁদে কেঁদে, তবু বাইরে আসলে জোর করে হাসি চাপেন, যাতে অন্যদের মন খারাপ না হয়। তবে সকলেই জানে, বোঝে নওশিনের অনুপস্থিতি আয়মানকে কতটা কাঁদাচ্ছে।

দুপুরবেলা। সবাই খেতে বসেছে। তবে তামসী নিজের ঘরেই আছে। গালিব খাবার খেতে বসেও বেশিক্ষণ থাকতে পারছে না। নীরবতার ভার যেন ওর ভেতরটা কেটে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ আগে এয়ারপোর্ট থেকে ফিরে আসার পর থেকেই তার মন খারাপ লাগছে। নওশিনকে এয়ারপোর্টে গিয়ে দেখে এসেছিল গালিব। রাবিন তার পাশের চেয়ার টেনে বসলো মাত্র।
“ লামিয়া? তামু খেতে এলো না?”
জিজ্ঞেস করলো রাবিন। গালিবের যেন টনকনড়ে উঠলো। গতকাল রাতের ঘটনার জন্যই হয়তো তামসী গালিবের সামনাসামনি হওয়ার ভয়ে নিজেকে আড়ালে রেখেছে।
“ আমি জানি না, ভাইয়া। আপু তো বলল পরে খাবে। “
রাবিন মাথা চুলকে নিয়ে সুমাইয়া মির্জাকে বলল,
“ কাকি মা আমি গিয়ে তামুকে নিয়ে আসছি। “
সুমাইয়া মাথা নেড়ে সম্মতি জানালেন। তবে চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো গালিবের। কিন্তু কিছু বলতেও পারলোনা। রাবিন বসা থেকে উঠে, দোতলার দিকে এগোল।

বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে আছে তামসী। নওশিন আপুকে সে-ও ভীষণ মিস করছে। এতদিন কত মজা করেছিলো তার বিয়ে নিয়ে অথচ বিয়ের পরপরই মানুষটা কত দূরে চলে গেলো ভেবেই কান্না পাচ্ছে তামসীর।

“ তামু? ওই তামু? “
রাবিনের গলা শুনে নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলো তামসী। গলা উঁচিয়ে শুধালো,
“ কী হয়েছে? “
“ দরজা খোল মাতারি। দিনদুপুরেও কেউ দরজা আঁটকে রাখে!”

চলবে