#বিনিময় (৬)
#নুসরাত_জাহান_মিষ্টি
সাবিনা এবং মেঘা ঘুরতে বের হয়। বাড়ির বাহিরে বের হলে আলতাবের মুখোমুখি হয় সাবিনা। এটা দেখে মেঘা সাবিনার কানের কাছে বিরবির করে বলে,“তাকে নিজের দুঃখ নয় সুখটা দেখান। এটাই তার জন্য যথার্থ শাস্তি।”
মেঘার কথার ভাবার্থ বুঝতে পেরে সাবিনা হাসিমুখে মেঘাকে বলে,“গাড়ি করে যেতে ইচ্ছে করছে না। চলো দুজন রিকশা করে যাই। রিকশায় ঘোরার মজাই আলাদা।”
“হ্যাঁ চলুন।”
মেঘা হাসি মুখে জবাব দেয়। আলতাব অবাক হয়ে যায়। তাদের জীবনের এই অবস্থা সেই মূহুর্তে সাবিনা ঘুরতে যাচ্ছে। তাও এত খুশিমনে। মেঘা রিকশা ডাকতে চলে গেলে আলতাব সাবিনাকে বলে,“তোমার মনে এত খুশি আসছে কিভাবে?”
“খুশি না থাকার কী হলো?
কেউ একজন আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে বলে আমি আমার জীবনের সব খুশি বিসর্জন দিবো? স্যরি কচি মেয়ে পেয়ে বুড়ি বউকে ভুলে যাওয়া স্বামীর কথা ভেবে এতবড় ত্যাগ স্বীকার করতে পারবো না। এতটা খারাপ সময় আসে নাই আমার।”
এটা বলে সাবিনা আলতাবকে এড়িয়ে চলে যায়। আলতাব মনে ভীষণ কষ্ট পায়। নিজের সামান্য এক ভুলের জন্য সব হারালো। আলতাব মলিন মুখে সাবিনার উদ্দেশ্য বলে,“হ্যাঁ ভালো থাকো।”
সাবিনা কথাটা শুনেও শুনলো না। ইতিমধ্যে মেঘা রিকশা নিয়ে আসে। সাবিনা উঠতে নেয় তখন মেঘা হাত বাড়িয়ে দেয়। সাবিনা হাসি মুখে তার হাত ধরে রিকশায় উঠে। দু’জনে রিকশায় করে পুরো শহরটা ঘোরার সিদ্ধান্ত নেয়। সাবিনার বিষয়টা খারাপ লাগে না। বেশ ভালোই লাগে।
পুরোটা দিন মেঘা তাকে খুশি করার জন্য অনেককিছু করেছে। সবকিছু সাবিনার ভালো লেগেছে। সেই সঙ্গে তার মনে প্রশ্নও জেগেছে,“দু’দিনের পরিচয়ের এই মেয়েটি কেন তার এত ভালো চাচ্ছে?”
“ঐ মনের টানে কাছের মানুষ হলাম যে।”
সাবিনার অবাক হয়ে যায়। তার মনে মনে বলা কথাটি মেঘা শুনতে পেলো। সত্যি বলতে শুনতে তো পায়নি তবে বুঝতে পেরেছে। অবশেষে মেঘা এবং সাবিনা আইসক্রিম খেতে খেতে বাসায় ফেরে।
সাবিনা এবং মেঘা হাসিমুখেই তাদের ফ্লোরে আসে। সেখানে এসে সাবিনা হতবাক হয়ে যায়। ঘরের দরজা খোলা। সাবিনা দরজা খুলে দ্রুত পায়ে ভেতরে প্রবেশ করে। ভেতরে গিয়ে রানা এবং রিমাকে দেখে স্বস্তি পায়। রানা সাবিনাকে দেখেই বলে,“বাহ্। ঘোরাফেরা ভালোই তো হচ্ছে।”
“মানে?”
সাবিনা বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করে। রানা কিছুটা রাগ নিয়ে বলে,“এদিকে তোমার স্বামীর জন্য আমাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। ক্লাস, ক্যাম্পাস, হোস্টেল কোথাও শান্তি পাচ্ছি না। সবাই আমাদের নিয়ে হাসাহাসিতে মেতে উঠেছে। সেখানে তুমি ঐ কু লাঙ্গরকে এখানে দারোয়ানের সঙ্গে থাকতে দিয়েছো। আবার অন্য এক অপরিচিত মেয়ের সঙ্গে ঘুরতেও যাচ্ছো। তোমার দিন তো ভালোই কাটছে।”
“ভাইয়া থাম।
তুই বুঝতে পারছিস না মায়ের উপর দিয়ে কী যাচ্ছে? সেখানে সে যদি একটু মনটা হালকা করতে ঘুরতে যায়, আমাদের তো সেটা সাপোর্ট করা উচিত।”
রিমার কথা শুনে রানা আরও রেগে যায়। তার মনে পড়ে যায় তার সঙ্গে কী হয়েছে? বন্ধুরা তার বাবার কান্ড নিয়ে তার সঙ্গে মজা নিচ্ছে। সে না পেরে যখন বলে তার বাবা, মা আলাদা হয়ে গেছে। বাবার সঙ্গে তাদের আর সম্পর্ক নাই। এই কথা রানা বলেছিলো, এই আশায় যে এটা বললে অন্তত সবাই তাদের কথা শোনাবে না। কিন্তু তেমন কিছু হয়নি। বরং উল্টো হয়েছে। এটা শুনে আরও রানাকে বেশি করে কথা শুনিয়েছে। আরও বেশি মজা নিয়েছে। রিমার ক্ষেত্রে এতটা হয়নি। সবাই তার বাবাকে চিনতো না তাই। কিন্তু রানার প্রোফাইলে তাদের ফ্যামিলি ফটো থাকায় ঘটনা সবাই জেনে যায়। তবে রিমাও কম সহ্য করেনি। অতঃপর তারা দুই ভাই-বোন এসব সহ্য করতে না পেরে বাসায় আসে। এখানে এসেও শান্তি নাই। প্রতিবেশীরাও আকারে ইঙ্গিতে কথা শুনিয়েছে।
এসব সাবিনা বুঝতে পেরে সন্তানদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে রানা এসব শুনতে চায় না। সে মাকে দূরে সরিয়ে ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে নেয়। রিমা এটা দেখে বলে,“মা ভাইয়াকে একটু সময় দাও। সব ঠিক হয়ে যাবে।”
সাবিনা মাথা নাড়ায়। মেঘা এখানে কী বলবে বুঝতে না পেরে বলে,“আমি আমার ঘরে যাচ্ছি।”
“যাও।”
সাবিনা কথাটি বলতে মেঘা চলে যায়। মেঘা চলে যেতে রিমা বলে,“মা আমাদের এই ফ্লোর তো তুমি ভাড়া দাও না। এটা তো আমাদের ঘর। ঘরের মধ্যে একটি রুম তাকে ছেড়ে দিলে৷ কিন্তু কেন?”
“মেয়েটা বাসা খুঁজে পাচ্ছিলো না।
আমার তার জন্য বেশ মায়া হচ্ছিলো। তাই দিলাম। আমাদের এখানে তো দুইটা রুম এমনি ফাঁকা থাকে। একটাতে থাকুক সে।”
সাবিনার এই কথায় রিমা সন্দিহান গলায় বলে,“এভাবে তাকে বাসায় জায়গা দেওয়া ঠিক হলো? যদি মেয়েটার মতলব খারাপ হয়?”
এটা শুনে সাবিনা তাকে চিন্তা করতে বারণ করে। সে দেখে নিবে বিষয়টা। এই সন্দেহ সাবিনারও ছিলো। তবে আজকে একসঙ্গে ঘোরার পর পুরোপুরিভাবে সব সন্দেহ দূর হয়ে গেছে। মেয়েটাকে তার ভীষণ মিষ্টি মনে হচ্ছে। খুবই ভালো মেয়ে। সাবিনা এখন মেয়েটাকে নিয়ে চিন্তিত নয়। সে এখন রানা এবং রিমা এখানে আসায় চিন্তায় পড়ে যায়। আলতাবের সঙ্গে তাদের দেখা হলে এবং সে যদি কিছু বলে দেয় সেই ভয়টা হচ্ছে সাবিনার।
___
কয়েকদিন কেটে যায়। রিমা এবং রানা নিজেদের ঘরবন্দী করে রেখেছে। বাহিরে বের হলেই প্রতিবেশীদের নানা কথা কানে আসে। মাঝে মাঝে তো তাদের হাসির শব্দ শুনলেও তাদের ভয় হয়। তাদের নিয়ে না হাসলেও তাদের মনে হয় তারা বোধহয় তাদের দেখেই হাসছে। সেজন্য ঘর থেকে বের হওয়া বাদ দিয়েছে। সাবিনা তার সন্তানদের যতটা পারছে সামলাচ্ছে। সেই সঙ্গে মেঘা সকালে নিজের কাজে বেরিয়ে যায়, বিকালে ফিরে এসে সাবিনা এবং রিমার সঙ্গে বেশ গল্প করে। তাদের সময় দেয়। সেই সঙ্গে এই পরিস্থিতিতে নিজেদের সামলানোর অনুপ্রেরণা দেয়। তবে মেঘার রানার সঙ্গে তেমন কথা হয় না। এভাবেই কয়েকটা দিন কেটে গেছে।
আলতাব হঠাৎ এসে সাবিনার দরজায় দাঁড়ায়। সাবিনা এটা দেখে রেগে যায়। সে রাগান্বিত গলায় বলে,“তোমাকে না বলেছি নিচতলায় থাকবে সবসময়। কখনো আমাদের এখানে আসবে না৷ তাহলে আসছো কেন?”
“আমার কিছু টাকা লাগবে।”
এটা শুনে সাবিনা আরও রেগে যায়। আলতাবের গলা পেয়ে রিমা এবং রানাও বের হয়। রানা তো আলতাবকে দেখে রেগে যায়। সে তেড়ে এসে বলে,“তোর লজ্জা করে না। নিজের নোংরা মুখটা নিয়ে আমাদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছিস। একটুও লজ্জা করে না?”
নিজের সন্তানের মুখে এমন কথা শুনে আলতাব অসহয় চোখে তাকায়। পরক্ষণে নিজেকে সামলে বলে,“সাবিনা আমাকে কিছু টাকা দিয়ে দাও। আমি চলে যাচ্ছি।”
“মামার বাড়ির আবদার?
আমার মা তোকে টাকা দিবে কেন?”
রানা কথাটি বললে সাবিনাও তাল মেলায়। সে আলতাবকে টাকা দিবে না। আলতাব অনুরোধ করে বলে,”প্লীজ টাকাটা দাও।
সেদিন বাসে যে আমি কিছু করিনি সেটা প্রমাণ করতে একজনকে টাকা দিতে হবে। তাই চাচ্ছি। আমাকে একবার সুযোগ দাও।”
রানা তো তার কোন কথাই শুনতে চাচ্ছিলো না। সে মা রতেই যাচ্ছিলো। রিমা এবং সাবিনা থামায়। সাবিনাও টাকা দিতে রাজি হয় না। রিমা নরম গলায় বলে,“প্লীজ বাবা তুমি আমাদের সামনে থেকে যাও। তোমার জন্য আমাদের জীবনটা তো পুরো শেষ হয়ে গেছে। এবার দয়া করে যাও। আমরা ভালো থাকছি সেটা থাকতে দাও।”
“এর সঙ্গে এত ভালোভাবে কথা বলছিস কেন?
একে থাকতে দেওয়াই ভুল হয়েছে। একে এই পাড়া থেকে বের করে দেওয়া উচিত। আমি দারোয়ানকে ডাকছি।”
রানার মুখে এই কথা শুনে আলতাব এবার রেগে গিয়ে বলে,“চুপ বেয়াদব। তুই আমার বাড়ি থেকে আমাকে বের করবি। নেহাৎ একটা ভুল করেছি তাই দারোয়ানের সঙ্গে থাকতে রাজি হয়েছি। এটার মাধ্যমে ভুল শুধরাতে চেয়েছি। ক্ষমা চাচ্ছি। তার মানে এটা নয় যে তোরা আমার আপন হয়ে আমার সঙ্গে কু কুরের মতো আচরণ করবি। ভুলে যাস না এটা আমার বাড়ি।”
”এটা তোমার বাড়ি নয়। তুমি ভুলে যাচ্ছো। এটা এক সময় হয়তো তোমার বাড়ি ছিলো। কিন্তু এখন নেই।”
সাবিনার কথাটি শুনে আলতাবও ঠান্ডা মাথায় বলে,“তাই না? তা বলবো আমার এই বাড়িটা তুমি কিভাবে তোমার রূপ যৌবন দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছো? সুযোগ পেয়ে আমার সন্তানদের আমার বিপক্ষে পাঠিয়ে দিয়েছো। তো বলবো তাদের তোমার কীর্তি। কিভাবে মানুষকে নিজের মোহে বন্দী করে তার সব লিখে নিয়েছো? বলবো?”
এটা শুনে সাবিনা ভয় না পেয়ে খুব কৌশলে বলে,“হ্যাঁ বলো। স্বামী চরিত্রহীন, অন্যের মোহে পড়ে আমার সন্তানদের ঠকাতে পারে ভেবে আমি সবকিছু সময় থাকতে বুঝে নিয়েছি। এটা যদি আমার ভুল হয় তবে ভুল। আমি যা করেছি আমার সন্তানদের জন্য।”
”একদম নাটক করবে না।”
এটা বলতে রানা এসে আলতাবকে ধাক্কা দেয়। সেই মূহুর্তে মেঘাও কাজ থেকে বাড়ি ফিরে। সে এসব দেখে অবাক হয়ে যায়। রানা রাগান্বিত গলায় বলে,“একদম আমার মায়ের সঙ্গে তর্ক করবে না। এখনই আমাদের বাড়ি থেকে বের হও। আমার মা তোমার থেকে সব সম্পত্তি আগেই নিজের করে নিয়েছে, বেশ করেছে। নয়তো মেয়ের বয়সী এক মেয়েকে আজ সব দিয়ে দিতে। আমাদের পথে বসাতে।”
এটা শুনে আলতাব সাবিনাকে গালি দিয়ে বলে,”সত্যিটা বল। তোর ছেলেকে বল তুইও ধোঁয়া তুলসিপাতা না।”
একটু থেমে আলতাব রানাকে ধাক্কা দিয়ে সাবিনাকে চেপে ধরে বলে,”তুই বুঝি ভালো খা…..। তুই জানতি না আমার চরিত্র খারাপ। আমি বউ থাকতে অন্য মেয়েকে সময় দেই। সেসব জেনেও আমাকে বিয়ে করেছিস কেন? তুই ভালো খা… মা….। ভালো হলে তো করতি না। বল তোর ছেলেকে তোর প্রথম ছেলেটা কিভাবে মা রা না গেলে সেটার বয়স এখন সাব্বিশ বছর হতো। কিভাবে হতো? যেখানে আমাদের বিয়ের বয়স পঁচিশ? বল খা….।”
এসব শুনে রানা এবং রিমা হতভম্ব হয়ে যায়। সাবিনা রাগান্বিত গলায় বলে,“অবুঝ বয়সে তোর সঙ্গে ভালোবাসার জালে ফেঁসে গিয়েছিলাম বলেই তো নিজের সম্মানের জন্য তোকে বিয়ে করতে হয়েছে। নয়তো তোর মতো চরিত্রহীনের সঙ্গে ঘর কে করতো?”
আলতাব এবং সাবিনা একে-অপরকে দোষারোপ করে গালি দিয়ে যাচ্ছে। এসব দেখে রানা এবং রিমা যা বোঝার বুঝে যায়। তারা দুজনকে চুপ করিয়ে আলতাবকে ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের দেয়। সেই সঙ্গে এখানে আর আসলে খবর করে দিবে বলে জানায়। আলতাব আবার ঘরের মধ্যে প্রবেশ করতে গেলে রানা দরজা বন্ধ করে দেয়। এতক্ষণে ঘরের ভেতর মেঘা প্রবেশ করে গিয়েছে। সেও সাবিনা এবং আলতাবের কথা শুনে অবাক হয়। আলতাব শেষে আরও কিছু বলতে চাচ্ছিলো। কিন্তু পারেনি। তার আগে রানা বের করে দিয়েছে। তবুও আলতাব দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে বলছিলো,”তোরা আরও অনেককিছু জানিস না। শোন। তোদের মায়ের কীর্তি শোন। এই সাবিনা আমাকে টাকা দাও। টাকা না দিলে আমি সব বলে দিবো। সবাইকে বলে দিবো। একা আমি দোষী হয়ে থাকবো না।”
রানা এবং রিমা সাবিনার দিকে অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে আছে। সাবিনা অসহয় চোখে তাদের দেখে। রানা শান্ত গলায় বলে,“বিয়ের আগেই তোমরা দুজন সন্তানের বাবা, মা হয়ে গিয়েছিলে?”
“তোর বাবার ভালোবাসার মায়া আমি ফেঁসে গিয়েছিলাম। অনেক বাজেভাবে ফেঁসে গিয়েছিলাম।”
সাবিনার মুখে এই কথা শুনে রানা রিমাকে বলে,“ব্যাগ গুছিয়ে নে। এরচেয়ে আমরা পড়ালেখা করলে কাজে দিবে। কথা তো এখানেও সবার শুনছি। সেখানেও নাহয় শুনলাম। তাছাড়া এখন যা হচ্ছে তাতে প্রতিবেশীরা এবার বাবার সঙ্গে মাকে নিয়েও পড়বে। আমাদের বাবা, মায়ের অপকর্মের জন্য এখন এখানে পড়ে ক্যারিয়ার এবং জীবন দুটোই নষ্ট করার কোন মানে হয় না। তারচেয়ে ক্যারিয়ারের জন্য পড়ালেখাটা শেষ করি।”
যদিও রিমা যেতে চাচ্ছিলো না। তবে সাবিনারও মনে হয় রানার এই সিদ্ধান্তই সঠিক। আলতাব যা শুরু করেছে তাতে এই কথা বিল্ডিং এর সবার মাঝে ছড়াতে সময় লাগবে না। তাই তাদের দূরে থাকাই ভালো। তাছাড়া তাদের পড়ালেখা তো শেষ করতে হবে। মেঘা এখানে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালণ করে। সেদিন বিকালেই রানা এবং রিমা বিদায় নিলে সাবিনা কান্নায় ভেঙে পড়ে। সেই সময়ে মেঘা এসে সাবিনাকে সান্ত্বনা দেয়। সে বুঝতে পেরেছে সেদিন আলতাব কোন ভয় দেখিয়ে ঘরে স্থান পেয়েছিলো। আজ তো সেটা সন্তানদের সামনে প্রকাশ হয়েই গেছে। আজকাল তো এরকম ঘটনা অনেক ঘটছে। বিয়ের আগেই প্রেমিক প্রেমিকা ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। সেখানে সাবিনা পঁচিশ বছর আগে করা কাজের জন্যও এখনো অনুতপ্ত হচ্ছে। এটা তো ভালো গুন। মেঘা সাবিনাকে বলে,“আপনি খুব ভালো মানুষ। তাই তো নিজের ভুলটা বুঝতে পেরেছেন। এসব নিয়ে কষ্ট পাবেন না। যা হয়ে গেছে তা হয়ে গেছে। যা ঘটে গেছে তা তো বদলানো যাবে না।”
“তাই বলে কী সব ভুলে যাওয়া যায়?”
সাবিনার মুখে এই কথা শুনে মেঘা নরম গলায় জিজ্ঞেস করে,“আপনার প্রথম বাচ্চাটা মা রা গেল কিভাবে?”
’
’
চলবে,