#মৌমোহিনী
পর্ব-৬
“পরোটাটা অসাধারণ হয়েছে। প্রিয়াঙ্কার হাতের পরোটার তুলনা হয় না।” ঝাল মুরগির মাংসের সাথে ফুলকো পরোটা খেতে খেতে বললেন আরিফ।
তার পাশে বসে তৌকির সাহেব সেদ্ধ সবজি দিয়ে শুকনো রুটি চিবুতে চিবুতে বিরস মুখে আরিফের দিকে তাকালেন। তার মনে হচ্ছে এই ছেলে তার সবচেয়ে বড় শত্রু। তাকে বিপদে রেখে আরাম করে দেখিয়ে দেখিয়ে খাচ্ছে। খাওয়ার পরে নাকি কথাবার্তা যা বলার বলবে।
খাওয়াদাওয়া শেষে দু’জন আলাপে বসলে প্রিয়াঙ্কা আরিফকে দুধ চা আর তৌকির সাহেবকে গ্রিন টি দিয়ে গেলেন। তৌকির সাহেব আরিফের দিকে চেয়ে বললেন, “এক্সচেঞ্জ করা যাবে?”
আরিফ নিজের কাপটা দ্রুত টেনে নিয়ে বললেন, “নো ওয়ে! এতদিন তুমি মিষ্টি খেয়েছো, এবার আমার পালা।”
“মানে?”
“মানেটা সিম্পল। একটা বিশেষ ফেসবুক আইডি দিয়ে তোমার মোহিনীর কাছে রিকোয়েস্ট গেছে। সে একসেপ্টও করেছে। এখন শুধু এগিয়ে যাবার পালা।”
“তুইও…” অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন তৌকির সাহেব।
আরিফ বাঁকা হেসে বলল, “কেন? আমিও নয় কেন?”
“না মানে… তুই তো…”
“তোর মতো নিচে অবশ্যই নামতে পারব না, তবে কথা আদায় করতে পারব, যেটা তুই পারিসনি। আমি এত শরীরসর্বস্ব নই যে বুদ্ধিবৃত্তি লোপ পাবে।”
“তুই কি খোঁচা দেয়া ছাড়া কথা বলবি না বলে ঠিক করেছিস?”
“তোকে যে শুধু খোঁচা দিয়ে কথা বলছি সেজন্য তোর শুকরিয়া করা উচিত। তুই যা করেছিস তারপর তোকে সত্যিকারের ছুরি দিয়ে খোঁচাখুঁচি করলেও অন্যায় হবে না।”
“তোর প্ল্যানটা কী?”
“প্ল্যান সিম্পল। জানিস তো, সব মেয়েই প্রেমের কাঙাল হয়। এমনকি গণিকারাও। আর ভালোবাসা দিয়ে কী না করা যায়!”
“এসব প্রেম ভালোবাসা তো তোর সাবজেক্ট নয়। পারবি?”
“গোয়েন্দাদের সব পারতে হয়।”
“কিভাবে কী করবি?”
“সেটা কাজ হয়ে যাবার পর জানতে পারবি।”
“হবেই, তুই শিওর?”
“ইনশাআল্লাহ!”
আরিফ খালি কাপ রেখে উঠে যেতে যেতে আবার ফিরে এসে চোখ মটকে বললেন, “তোর মোহিনীর সাথে আমি প্রেম করতে যাচ্ছি ভেবে কি তোর হিংসা হচ্ছে?”
তৌকির সাহেব থতমত খেয়ে বললেন, “না না, হিংসা হবে কেন?”
আরিফ নির্দয়ের মতো খানিকক্ষণ হেসে বললেন, “তোর হয়তো মনে হয় ওই মেয়ে শুধু তোর সাথেই শুয়েছে। বাট মাই ডিয়ার ফ্রেন্ড, রিমেম্বার, শী ইজ আ প্রস্টিটিউট।”
তৌকির সাহেব আর কিছু বললেন না। আরিফ যেতে যেতে আবারও ফিরে এসে বললেন, “ও যোগাযোগ করলে একদম স্বাভাবিক থাকবি। কথা বলবি। কিন্তু অসুস্থতার বাহানা দিয়ে দেখা করবি না।”
“আচ্ছা।”
আরিফ শিষ দিতে দিতে বেরিয়ে গেলেন ঘর থেকে। প্রিয়াঙ্কা একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “হঠাৎ তোমাকে খুব খুশি খুশি লাগছে যে?”
“চা-টা যা বানিয়েছ না! খেয়েই মন ফুরফুরে হয়ে গেছে।”
*****
মনিকা অনেকক্ষণ ধরে কল করছে, কিন্তু জনাব ধরার নামগন্ধ নিচ্ছেন না। বোধহয় বউ-বাচ্চা নিয়ে ব্যস্ত। এত কিসের ব্যস্ততা? পুরো সপ্তাহে একটুও কি তাকে সময় দেয়া যায় না?
এই লোকের জন্য তাকে এতগুলো সিম ব্যবহার করতে হয়। একটা শুধু এর জন্য, একটা তৌকির সাহেবের জন্য, একটা সব জায়গায় ব্যবহারের জন্য। তৌকিরের কেসটাতে সে ফাঁসত না। কিন্তু এই লোক এমনভাবে তাকে ধরল যে না করে পারল না মনিকা। সে তার কোনো কথাই ফেলতে পারে না৷ এত দুর্বল একটা মানুষের প্রতি সে কেন হবে?
মনিকার মনে হয় সে এর সাথে দেখা হবার আগেই ভালো ছিল। যদিও রাজনীতি কিংবা বলা ভালো রাজনৈতিক ব্যক্তিদের থেকে সে কখনো দূরে ছিল না৷
কলেজে পড়ার সময় এলাকার রাজনীতি করা এক নেতাগোছের লোকের প্রেমে পড়েছিল সে। নিজেই প্রপোজ করেছিল তাকে। জানত না লোকটার কোথাও বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। লোকটাও তার সাথে অভিনয় করে গেল কী সুন্দর! পটিয়ে একদিন নিয়ে গেল হোটেলে। সে তখন প্রেমে মশগুল। ভালো-খারাপ, শুদ্ধ-অশুদ্ধের অনেক উর্ধ্বে উঠে গিয়েছিল। মাস কয়েক চলল এমন। একসময় জানতে পারল তার প্রেমিকের বিয়ে হতে চলেছে, তাও ধুমধাম করে। ভীষণ একটা ধাক্কা খেল সে। পাগলের মতো ছুটে গেল তার কাছে৷ নিজের অধিকার চাইল৷ লোকটা তাকে হেসেই উড়িয়ে দিল। বলে দিল, তোমাকে কেন বিয়ে করব?এত সহজে আমার সাথে শুয়ে পড়লে, কী গ্যারেন্টি অন্য কারো সাথেও শুয়ে পড়ো না? মনিকা ঝামেলা করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাতে এলাকায় তার নামটাই খারাপ হতো। এই নেতাকে কেউ কিছু বলত না৷ বলার সাহসই পেত না।
সে তখন প্রতিশোধের নেশায় পাগল হয়ে গেছে। লোকটার ব্যাপারে অনেক কিছু জেনেছিল সে সাথে থেকে থেকে। কয়েকদিনের মাঝেই অপজিশন পার্টির নেতাকে ঘায়েল করে ফেলল সে প্রেমের নাটক করে। ঠিক প্রেমও না, শরীরী আকর্ষণ। সৃষ্টিকার্তা তাকে শরীরী আবেদনে ভরপুর করে পাঠিয়েছেন। নতুন যৌবনের সেই সময়টাতে আলাদাই একটা ব্যাপার ছিল তার। অনেক গোপন কথা নেতার কানে তুলল সে। অনেক মিথ্যে কথা লাগিয়ে দিল। ফলাফল, প্রচন্ড কোন্দলে একটা চোখ হারালো প্রথমজন। মনিকার প্রতিশোধ পূর্ন হলো।
এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছিল সে। ঢাকায় চলে এসেছিল মফস্বল থেকে। শরীরের পবিত্রতা সে হারিয়েছে অনেক আগেই। তাই যখন দেখল অনেকেই এই পথটা জীবিকা হিসেবে বেছে নিচ্ছে তখন সে আর দ্বিধা করল না। নিজের পথ খুঁজে পেয়ে পা বাড়াল এই ঘোর অন্ধকারের রাজ্যে।
নিজের চার্জ শুরু থেকেই বেশি রেখেছিল মনিকা। তাই বাছা বাছা ভালো ভালো ক্লায়েন্ট আসত। একসময় এলেন এই নেতা। আর তাকে দেখে এতদিন পর মনিকা বুঝতে পারল তার ভেতর থেকে প্রেম ভালোবাসার বোধ হারিয়ে যায়নি। এখন তীব্র মাত্রায় রয়ে গেছে। কিন্তু এই লোকটা যে তাকে কোনোদিন সামাজিক মর্যাদা দেবে না! এই প্রেম শুধু একতরফা হয়েই রয়ে যাবে।
হঠাৎ টুং করে একটা মেসেজ এলো। মনিকা প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়ল মোবাইলের ওপর। কিন্তু আশাহত হতে হলো। কাঙ্খিত মানুষের থেকে মেসেজ আসেনি। এসেছে গতকাল রিকোয়েস্ট পাঠানো লোকটার কাছ থেকে।
মনিকা যেসব ছবি পোস্ট করে তাতে তার কাছে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আসে পাইকারি হারে। কিন্তু সে অ্যাড করে খুব বেছে বেছে। যেমন কালকের লোকটাকে প্রায় সাথে সাথেই অ্যাড করে নিয়েছে। তার নাম মুশফিকুর রহমান। সুদর্শন লোকটার বডি ফিটনেসও চমৎকার। বয়স হয়তো পঞ্চাশের এদিক ওদিক। কিন্তু দেখতে দারুণ হ্যান্ডসাম৷ নামীদামী একটা কোম্পানিতে চাকরি করে। ম্যারেটাল স্ট্যাটাস- ডিভোর্সড। খুব বেশি পোস্ট করে না। ধূমপানও করে না, তবে প্রোফাইল ঘেটেঘুটে মনে হলো একসময় খুব সিগারেট খেত, এখন বাদ দিয়েছে। সিগার হাতে একটা এস্থেটিক ছবিও আছে বছর আটেক আগের। মাঝে মাঝে কয়েক লাইনের কবিতা লেখে। বেশ একটা আবেদন আছে কবিতাগুলোতে। প্রেমে পড়ে যেতে ইচ্ছে হয়। এরকম লোকের কাছে যেতে মনিকার নিজেরও ভালো লাগে। কাঙ্খিত মেসেজ না এলেও এই মেসেজটা দেখে তার ভালোই লাগল।
তৌকিরের ঝামেলায় জড়ানোর পর তার একটু রিফ্রেশমেন্ট দরকার। এসব স্পাইগিরির চিন্তায় না সে থাইল্যান্ড গিয়ে এনজয় করতে পেরেছে, না এখানে এসে শান্তিতে থাকতে পেরেছে। কেবল কথা আদায় আর তথ্য খোঁজায় সময় চলে গেছে।
এখন মনে হচ্ছে এই লোকটাকে পটিয়ে কোনো বিলাসবহুল হোটেলে আয়েশে কিছু সময় কাটিয়ে আসতে পারলে মন্দ লাগবে না। দেখা যাক এই লোক নিজেই প্রস্তাব দেয় কি না৷ অবশ্য না দিয়ে যাবে কোথায়!
মেসেজটা ওপেন করল সে।
“হাই! কথা বলা যাবে?”
“বলুন কী বলবেন।”
“তেমন কিছু না। মনে হলো আপনার সাথে গল্প করলে মন ভালো হয়ে যাবে।”
মনিকা হাসল। তার কাছে কেউ যে ঠিক মন ভালে করতে আসে না সেটা তার জানা আছে।
সে উত্তর দিল, “রিয়েলি? কেন মনে হলো?”
মুশফিকুর রহমান নামক লোকটা লিখল, “কলে কথা বললে ভালো করে বুঝিয়ে বলতে পারতাম।”
“কল করতে পারেন।”
কয়েক সেকেন্ড মধ্যে মেসেঞ্জারে কল এলো।
মনিকার “হ্যালো” শুনে লোকটা হেসে বললেন, “ঠিক ধরেছিলাম। আপনার গলাটাও আপনার মতোই মিষ্টি। আরেকটা কমপ্লিমেন্ট দেয়া যায়, তবে পরে দেব।”
“ধন্যবাদ।”
“জানেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে কবিতা লিখতাম৷ বোধহয় কবি হতে চেয়েছিলাম। পাতার পর পাতা ভরিয়ে ফেলতাম কবিতা দিয়ে। সেই সময়টাতে রাত জেগে অজস্র সিগারেট পুড়িয়ে হলের ছাদে বসে তারা দেখতে দেখতে ইচ্ছে হতো কাউকে প্রচন্ড ভালোবাসতে। তার কোলে মাথা রেখে লম্বা ঘুম দিতে। তখন রাতের পর রাত ঘুম হতো না৷ লাল চোখে ক্লাসে যেতাম৷ রেজাল্ট খারাপ হচ্ছিল। একটা ঘোরের মধ্যে চলে গিয়েছিলাম। শুধু একটা মেয়েকে কল্পনা করতাম। মনে হতো সেই মেয়েই একমাত্র পারবে আমাকে এই ঘোর থেকে উদ্ধার করতে। আচ্ছা, আমি কি খুব বোর করছি আপনাকে?”
মনিকা মুগ্ধ হয়েই শুনছিল। বলল, “না না, ভালো লাগছে শুনতে। বলুন আপনি। তারপর কী হলো?”
“আসলে আমি ডিপ্রেশনে ছিলাম সেই সময়টাতে। প্রবল ঘোরের মধ্যে থাকতাম৷ প্রচুর কবিতা লিখতাম৷ সব সেই মেয়েটাকে নিয়ে। যাই হোক, ডিপ্রেশন থেকে একসময় বেরিয়ে এসেছি। একটা মেয়ের সাথে চুটিয়ে প্রেম করেছি৷ তাকেই বিয়ে করেছি। একসময় ডিভোর্সও হয়ে গেছে। কিন্তু প্রেম বা বিয়ের পরেও আমার সব কবিতা সেই কল্পনার মেয়েটাকে নিয়েই লিখতাম। মেয়েটা কেমন শুনবেন?”
“কেমন?”
“একটু গভীর বর্ণনা দেব, কিছু মনে করবেন না যেন৷ ওর চোখদুটো প্রচন্ড মায়াবী, যেন ঈশ্বরের অশ্রু দিয়ে গড়া। টুকটুকে ঠোঁট যেন জমাট বাঁধা প্রেমিকের বুকের রক্ত, আর দেহবল্লরী কোনো অপ্সরীর মতো। ওর বুকের দিকে চাইলে হৃৎস্পন্দন থেমে যেতে চায়৷ মাখনের মতো চামড়ায় পিছলে পড়ে আবেদন৷ প্রচন্ড আবেদন।”
“অসম্ভব!”
“এতদিন আমারও তাই মনে হতো। কিন্তু আপনার ছবিটা যখন প্রথম দেখলাম, মনে হলো আমার কল্পনার সেই আকাঙ্ক্ষিত নারীর ছবিটিই দেখছি। আপনার শাড়ি পরা ছবিগুলো দেখে পুরোনো দিনের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। আমার কল্পনার জীবন্ত রূপ আপনি, যাকে আমি না দেখে ভালবেসে গেছি বছরের পর বছর।”
মনিকা হতবাক হয়ে বসে রইল। কেউ এত প্রশংসা করতে পারে, তাকে এই নজরে দেখতে পারে তা তার কল্পনাতেও ছিল না। তার মন আর্দ্র হয়ে এলো। চোখের কোণে জল জমল। সে বলল, “আপনি বাড়িয়ে বলছেন।”
“আমার খুব ইচ্ছে করছে আমার কবিতাগুলো আপনাকে পড়ে শোনাতে। সেগুলো পড়লে হয়তো আপনারও আর সন্দেহ থাকবে না যে সেই কল্পনার নারীটি হুবহু আপনার মতো।”
“আমার খুব লজ্জা লাগছে।” কথাটা মন থেকেই বলল মনিকা। তার ভীষণ ইচ্ছে করছে লোকটাকে কাছে পেতে৷ ভালবাসায় পিষে দিতে। কিন্তু লোকটার পরের কথায় খানিকটা দমে গেল সে।
“আপনার সাথে দেখা করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু মনে হচ্ছে দেখা না করাটাই ভালো। কল্পনার মানুষটাকে বাস্তবে দেখে ফেললে যদি তার আবেদন কমে যায়?”
মনিকা একটু বিরক্ত হলো। ঢং যত্তসব! কেন আবেদন কমবে? সে বলে ফেলল, “আর যদি বাস্তবে দেখলে মনে হয় কল্পনার মানুষটি ছবির চেয়েও সুন্দর?”
“দেখা করার পরামর্শ দিচ্ছেন?”
“নাহ, দেখা করা না করা আপনার ব্যাপার। যেহেতু ঘটনাটা আপনার। আমি জাস্ট বললাম।”
“ভেবে দেখব। আপনার অনেকটা সময় নষ্ট করলাম।”
“আপনার সাথে কথা বলে চমৎকার লাগল! মনে হয়নি সময় নষ্ট হয়েছে। এত সুন্দর করে ক’জন কথা বলতে পারে?”
“একটা অন্যায় আবদার করতে ইচ্ছে হচ্ছে।”
“করুন?”
“আপনার বাড়ির কোনো জানালা দিয়ে কি শেষ বিকেলের রোদ ঢোকে?”
“হ্যাঁ।”
“সেই রোদে দাঁড়িয়ে আপনার একটা ছবি তুলে পাঠাবেন? এখন যেভাবে আছেন ঠিক সেভাবে তুললেই হবে। আমার একটা কবিতা আছে। সেই কবিতায় মেয়েটাকে যেভাবে কল্পনা করেছি তার সাথে মিলিয়ে দেখতে চাই।”
মনিকা হাসল। বলল, “পাঠাচ্ছি।”
জানালার পাশে গিয়ে দাঁড়াল মনিকা। মুখে রোদ লাগছে। নিজের একটা সেলফি তুলল। যেভাবে ঘরোয়া পোশাকে আছে সেভাবেই তুলল। ওর পরনে টিশার্ট আর প্লাজু। ছবিটা তোলার সময় ইচ্ছে করেই টিশার্টের গলাটা বেশ খানিকটা নামিয়ে দিল সে।
খানিকক্ষণ বাদে মেসেজ এলো, আপনাকে আমি মোহিনী বলে ডাকতে পারি? এটা আমার কল্পনার প্রেমিকার নাম।”
মনিকা হেসে বলল, “পারেন।”
******
মনিকার ছবিটা দেখে বেশ কিছুক্ষণ হাসলেন আরিফ। পাখি ফাঁদে ঢুকে গেছে। আটকেছে কি না বুঝতে ছবিটা চেয়েছিলেন তিনি৷ মেয়ে তার শরীর দেখিয়েই ছবি তুলেছে৷ তাতে বোঝা যাচ্ছে এই পাখি যেচে পড়ে তার পাতে আসতে চাচ্ছে। আসুক! খেলা জমবে।
ভালো করে আবার ছবিটা দেখলেন আরিফ। মেয়েটা সত্যিই আবেদনময়ী। কিন্তু… কিন্তু তার কাছে বিস্বাদ লাগছে। বাজারি একটা মেয়ের প্রতি কেমন করে আকর্ষণ আসে তা তৌকিরই জানে। তার পক্ষে জানা সম্ভব না।
(চলবে)
সুমাইয়া আমান নিতু