মৌমোহিনী পর্ব-১৩

0
9

#মৌমোহিনী
পর্ব-১৩

সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নেমেছে। বৃষ্টির ছাট এসে লাগছে আরিফের চোখেমুখে। তিনি জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন নির্বিকারভাবে। মাথায় রাজ্যের এলোমেলো চিন্তারা ঘুরপাক খাচ্ছে। সব কাজকর্ম ফেলে মনিকার বিষয়টা নিয়ে পড়ে থেকে ভুল করলেন কিনা বুঝতে পারছেন না৷ জলে থেকে কুমিরের সাথে বিবাদ করা আর নিজের বিপদ সেধে ডেকে আনা একই কথা। ফারহান রুশদি নিশ্চয়ই এতক্ষণে জেনে গেছেন তার আস্তানায় হামলা করার কথাটা। কী করবে এই লোক? আরিফেরই বা কী করা উচিত? চুপচাপ আঘাতের অপেক্ষা? নাকি আগে নিজে আঘাত করা? কিন্তু কী বা করতে পারেন তিনি? তিনি যদি আগে থেকে জানতেন ওটা ফারহান রুশদির ডেরা তাহলে আগে থেকে বুঝেশুনে পা ফেলতেন৷ তিনি তো গুহায় ঢোকার পর জানতে পেরেছেন ওটা বাঘের গুহা।

এখন তার একটাই ভরসা, তিনি নিজে সরকারি কর্মকর্তা। আর যাদের বিরুদ্ধে লড়ছেন তারা অপজিশন৷ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত এটুকুই ভরসা। সবচেয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ হতে পারে সরকারি দলকে প্রমাণসহ সবকিছু দেখিয়ে দেয়া। রুশদির বিরুদ্ধে কিছু হাতে পেলে তারা খুশি হয়েই তাকে প্রোটেকশন দেবে। আর নির্বাচনের ঠিক আছে অপজিশনের এত জনপ্রিয় নেতার কোনো স্ক্যান্ডাল সামনে এলে তো কথাই থাকবে না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে কার কাছে যাবেন তিনি? কিছু করার আগেই যদি ওদের আঘাত চলে আসে?

সিগারেটের তৃষ্ণা পেয়েছে তার৷ বহুদিন ধরে সিগারেট ছাড়ার চেষ্টা করলেও সফল হতে পারছেন না। সিগারেটের প্যাকেট আলমারির ড্রয়েরে রাখার অভ্যাস করেছেন৷ হাতের কাছে না রাখলে একটু কম খাওয়া হয় এই যা!

একটা সিগারেট বের করে ধরিয়ে লম্বা টান দিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে মগজের ধূসর কোষগুলোতে শান দেবার চেষ্টা করলেন তিনি৷ একটা বাজ পড়ল কোথাও৷

আচ্ছা, মনিকার লা শ কোথায় লুকাতে পারে লোকটা? তিনি যদি রুশদির জায়গায় থাকত তাহলে তিনি নিজে কী করতেন? নদীতে ভাসিয়ে দিতেন? নদীতে ভাসিয়ে দেবার রিস্ক আছে। এত বড় লা শ টা নদীতে ফেলে দিতে গেলে কেউ দেখে ফেলতে পারে। লা শ ভেসে উঠলে সেটা নিয়ে তদন্ত হবেই হবে। তখন ধরা পড়তে পারে। না, এটা কাঁচা কাজ হবে। রুশদি নিশ্চিত এরচেয়ে ভালো প্ল্যান বানিয়েছে। ওই ঝড়বৃষ্টির রাতে কোথাও কবর দিয়ে দেয়নি তো? সেটা খুবই কঠিন কাজ৷ বৃষ্টির মধ্যে পুড়িয়ে দেয়াটাও সম্ভব নয়৷ মোটকথা, যাই করুক না কেন লা শ টা ভ্যানিশ তো করে দেয়নি৷ কোথাও না কোথাও আছেই৷ খুঁজতে হবে৷ মুন্সিগঞ্জ থেকে ঢাকার পথে আশেপাশে যত এরিয়া আছে সব জায়গায় নজর রাখতে হবে কোনো মেয়ের লা শ পাওয়া যায় কি না। তিনি ফোন করে কয়েকটা সোর্স লাগিয়ে দিলেন খোঁজ নিতে।

সিগারেটের শেষ অংশটুকু ফেলার জন্য অ্যাশট্রে টেনে নিলেন বেডিসাইড টেবিল থেকে। নিচু হয়ে আবার সোজা হয়ে দাঁড়ানোর মাঝেই তিনি খেয়াল করলেন রাস্তায় ল্যাম্পপোস্টের একেবারে গা ঘেঁষে একটা ছায়ামূর্তি দাঁড়িয়ে আছে। তার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় জানান দিল, লোকটা তার দিকেই নজর রাখছে। এই লোক কার হয়ে কাজ করছে বুঝতে অসুবিধা হলো না আরিফের। বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতেও নজর রাখতে হচ্ছে ভাবী মন্ত্রী সাহেবের শত্রুর দিকে! আহা! পরক্ষণেই তার মাথায় ক্লিক করে গেল নতুন একটা আইডিয়া৷ তাহলে কাঁটা দিয়েই কাঁটা তোলা যাক!

*******

শ্বশুরবাড়ি থেকে বেশ অপমান হয়েই ফিরেছেন তৌকির সাহেব৷ প্রিয়াঙ্কার সাথে বিয়ের আগে তারা যেমন তাকে অপদার্থ মনে করতেন, এখনো তাই মনে করেন৷ কেন যেন তৌকির সাহেব তাদের কাছে কখনো ভালো হতে পারেননি। নিজের অবস্থা ফেরার পর শ্বশুর, শাশুড়ী, শালার জন্য কম কিছু করার চেষ্টা করেননি, কিন্তু তারা তাকে মন থেকে কোনোদিন মেনে নেননি৷ অবহেলা যে করেছেন তাও না৷ তবে এখন ঠিকই সুযোগ পাওয়া মাত্র অপমান করে বের করে দিলেন। সুযোগটা অবশ্য তিনি নিজেই দিয়েছেন।

ওর বাবা বলছিলেন, “আমি জানতাম তুমি আমার মেয়েটাকে কষ্ট দেবে। এখন সে কোথায় আছে, কী খাচ্ছে কিছু জানো না৷ আমাদের কাছে এসেছ খোঁজ নিতে! আরে বউকে যত্ন করে রাখতে না পারলে ফেরত দিয়ে যেতে। আমরা আমাদের মেয়েকে মাথায় করে রাখতাম। ও আমার বড় অভিমানী মেয়ে। তোমার সাথে বিয়ের জন্য কথা শুনিয়েছিলাম বলে আমার সাথে আজও স্বাভাবিক হতে পারে নাই। তুমি নিশ্চয়ই এমন কিছু করেছে যাতে সে খুব আঘাত পেয়েছে৷ এখানে আসে নাই সে৷ কিন্তু তোমাকে তো আমি ছাড়ব না। আমার মেয়েকে না এনে দিতে পারলে তোমার নামে আমি কেস করব। নারী নির্যাতনের কেস করব।”

আরও অনেক কিছু আবোল তাবোল বলে যাচ্ছিলেন লোকটা৷ তৌকির মাথা নিচু করে বসেছিলেন। তার বলতে ইচ্ছে করছিল, শুধু আপনার মেয়ে হারায়নি, আমার মেয়েও হারিয়েছে। কিন্তু বলতে পারেননি৷ বের হয়ে এসেছেন৷ এখন বাড়ি ফিরে বারান্দায় বসে বৃষ্টিতে আধভেজা হয়ে বসে রইলেন তিনি। পুরো বাড়ি খা খা করছে৷ কোথায় আছো তুমি প্রিয়াঙ্কা? আমার তিন্নি সোনাটা কী করছে? ভাবতে ভাবতে চোখে পানি চলে এলো তার। ফু্ঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলেন তিনি।

হঠাৎই মাঝরাতে খারাপ লাগতে শুরু করল তৌকির সাহেবের। বুক ভারী ভারী লাগছে। চাপ ব্যথা ছড়িয়ে পড়তে লাগল বুকের ভেতরটায়৷ ঠান্ডা আবহাওয়াতেও ঘামে ভিজে গেল শরীর৷ তৌকির সাহেব বুঝতে পারলেন না, তিনি কি মা রা যাচ্ছেন?

*******

হিশাম মাহমুদ চৌধুরী ইজিচেয়ারে বসে দোল খাচ্ছেন বহুক্ষণ ধরে। তার ইনসমনিয়া আছে। রাতে ঘুম হয় না। আর দিনে তিনি ঘুমানোর সময় পান না। দিন দিন শরীরটা কেমন বুড়িয়ে আসছে সেজন্য। বয়স তার কম হয়নি, আবার এতটা বুড়ো দেখানোর মতো বেশিও হয়নি।

ঘাড়ের ওপর নির্বাচন৷ দুনিয়ার ঝামেলা চলছে চারদিকে। কর্মীদের সামলাতে সামলাতে একেক সময় মনে হয় পাগল টাগল হয়ে যাবেন তিনি। আবার কিভাবে যেন চালিয়ে নেন সবকিছু। কিন্তু সেসব এখন তাকে ভাবাচ্ছে না৷ তার সব চিন্তার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে তার একমাত্র মেয়ে নাঈশা। মেয়েটাকে তিনি জীবনের থেকে বেশি ভালোবাসেন। জীবনে থাকা প্রতিটা জিনিসের থেকে বেশি ভালোবাসেন। নিজের হাতে গড়ে তোলা সন্তানতুল্য দলটার থেকেও বেশি ভালোবাসেন। আজ মেয়েটা ভালো নেই। মেয়ে মুখ ফুটে কিছুই বলেনি, কিন্তু তিনি নিশ্চিত মেয়েটা ভালো নেই। ছোটোবেলা থেকে ওর স্বভাবের সাথে পরিচিত তিনি। মন খারাপ হলেই মেয়ের গলার সুর পাল্টে যায়৷ আজ ফোনে কথা বলার সময় তার মনে হলো নাঈশা শুধু আপসেট নয়, ও কোনোকিছু নিয়ে প্রচন্ড কষ্ট পেয়েছে। আর সেই কষ্টই তাকেও শান্তি দিচ্ছে না এক মুহূর্তের জন্যও।

ছোটবেলা থেকেই নাঈশার কোনো কথা তিনি ফেলতে পারেন না৷ তবে মেয়ের বিয়ের সিদ্ধান্তে ঘোর অমত ছিল তার। যে ছেলেকে মেয়ে পছন্দ করে আনল সে দেখতে শুনতে রাজপুত্রের মতো হলেও লোক চড়িয়ে খাওয়া হিশাম সাহেব ঠিকই বুঝেছিলেন এই ছেলে শিয়ালের মতোই চতুর৷ তার মেয়েকে পটিয়েছে টাকা আর ক্ষমতার লোভে। কিন্তু মেয়ে তখন ভালোবাসায় অন্ধ। বুঝিয়ে বললেও বোঝার ক্ষমতা ওর ছিল না৷

বিয়ের পর ফারহান যা চেয়েছে সব পেয়েছে। এটা সত্যি যে ওর চতুর পলিটিক্সের কারনে দলের পজিশন আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে, কিন্তু তবুও হিশাম সাহেবের সবচেয়ে বেশি চিন্তা এখনো তার মেয়েকে নিয়েই। যদি তিনি কোনোদিন জানতে পারেন ওই ছেলে তার মেয়েকে কষ্ট দিয়েছে তাহলে ওকে দু’টুকরো করে ফেলতে তার সেকেন্ডও লাগবে না।

সমস্যা হলো নাঈশাটা বিয়ের পর থেকে কেমন চাপা স্বভাবের হয়ে গেছে। কিছুই খুলে বলে না। কিংবা হয়তো বলতে ভয় পায়, ভাবে তিনি জানলে সর্বনাশ করে ফেলবেন।

মোবাইলটা সাইলেন্ট করা ছিল তার৷ খুব ইমারজেন্সি ছাড়া রাত বারোটার পর থেকে ভোর ছয়টা পর্যন্ত তার ফোনে যে কারোই কল করা নিষেধ। স্ক্রিনে আলো জ্বলে উঠতে দেখে তিনি মোবাইলটা হাতে নিলেন। একটা অচেনা নাম্বার থেকে কল এসেছে। রাত বারোটার পর কল ধরা তার ডাক্তারের বারণ। কিন্তু যদি ইমারজেন্সি হয়, এই ভেবে কলটা ধরলেন তিনি।

“হ্যালো!”

“আসসালামু আলাইকুম স্যার! আমি আরিফ আহমেদ।”

হিশাম সাহেবের ব্রহ্মতালু জ্বলে উঠল নামটা শুনে। “কী চান আপনি? এত রাতে ফোন করেছেন কেন?”

“স্যার আপনার গুণধর মেয়ের জামাইয়ের কিছু বিশেষ কাজের রেকর্ডস আমার কাছে আছে। আপনি যদি পরের দিকে নজর না দিয়ে ঘরের দিকে নজর দেন তাহলে সবারই ভালো হয়। যদি আপনার দ্বারা আমার কোনো ক্ষতি হয় তাহলে আমার কাছে যা আছে সব চলে যাবে দেশবাসীর কাছে। আপনার পরিবারের সম্মান বলে…”

“কী বলতে চাইছ তুমি? কী আছে তোমার কাছে?” রাগে হিশাম সাহেবের গলা কাঁপছে। নিজের অজান্তেই তিনি আপনি থেকে তুমিতে নেমে এসেছেন।

আরিফ ভিডিওটা পাঠিয়ে দিয়ে বললেন, “আছে আরো অনেক কিছুই। তবে আপাতত এটুকুই যথেষ্ট মনে করছি৷ আপনি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেন, তাহলে চুপ থাকব, কথা দিচ্ছি।”

হিশাম সাহেব কল কেটে দিলেন৷ ভিডিওটা দেখলেন। তার ইচ্ছে হলো জানোয়ারটাকে এক্ষুনি শেষ করে ফেলতে। মেয়ের জন্য বুকের ভেতরটা পুড়ে যেতে থাকল তার। আর না, কাল সকালেই মেয়েকে নিয়ে আসবেন তিনি৷ চরিত্রহীন লোকের সাথে তার মেয়ে থাকবে না।

হিশাম সাহেবের উত্তেজিত কথাবার্তা শুনে তার স্ত্রী নূরজাহান বেগমের ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। তিনি উঠে এসে স্বামীর পেছনে দাঁড়িয়ে ভিডিওটা দেখেছেন। তারপর পাশে এসে বসেছেন।

হিশাম সাহেব বিড়বিড় করে বলে চলেছে, চরিত্রহীনের সাথে আমার মেয়ে থাকবে না! কিছুতেই না!

নূরজাহান বেগম কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন, “চরিত্রহীনের সাথে মেয়ের মা থাকতে পারলে মেয়ে থাকতে পারবে না কেন? যৌবনে টাকা আর ক্ষমতার সাথে সাথে কি আপনার নারীর মাংসের লোভ কম ছিল? আপনার মেয়ের জামাই যদি সেটাই করে আমি তো তাতে অবাক হবার মতো কিছু দেখছি না। আপনি সারাজীবন ভেবেছেন, আমার বাবা ছা-পোষা মানুষ বলে আমি কিছু বলি না। কিন্তু ভেবে দেখুন, এত বড় রাজনীতিবিদের মেয়ে হয়েও নাঈশা কিছু বলে না আপনাকে। সব মেয়েই শেষ পর্যন্ত নিজের সংসারটা বাঁচাতে চায়।”

হিশাম সাহেব কখনো কল্পনাও করেননি তার স্ত্রী কোনোদিন এসব বলবে। তিনি তো ভাবতেন নূরজাহান কিছু জানেই না। বুকের গভীর থেকে প্রচন্ড ক্লান্তির এক নিঃশ্বাস বেরিয়ে এলো তার। মনে হলো তার স্ত্রী তাকে কথা শোনায়নি, সজোরে একটা চড় মেরেছে।

নূরজাহান বেগম বেশ কিছুক্ষণ পর নিজেকে সামলে নিয়ে হিশাম সাহেবের পাশে বসে তার হাতের ওপর হাত রেখে বললেন, “চরিত্র বাদ দিন, বলুন আস্ত শয়তানের সাথে আমাদের মেয়ে থাকবে না৷”

********

ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের পাশে একটা মেয়ের লা শ পাওয়া গেছে। বর্ণনা অনেকটা মনিকার মতোই। কাদা মাখানো লা শ টা পড়ছিল রাস্তার পাশের ডোবামতো একটা জায়গায়। আজ সকালে সেটা উদ্ধার হয়েছে। আরিফ খবর পেয়েছেন দুপুরে। খবর পাওয়ার সাথে সাথেই ছুটেছেন সেদিকে। একবার বডিটা পাওয়া গেলে শয়তানটাকে শাস্তি দিতে আর কোনো বাঁধা নেই৷

লা শ অটোপসির জন্য মেডিকেলের মর্গে রাখা হয়েছে। সেখানে গিয়ে তিনি দেখতে চাইলেন৷ কাপড় সরিয়ে অবয়বটা দেখে বুকটা কেমন করে উঠল তার। শরীর পুরোটা কাদায় মাখামাখি। মুখটা ভালো করে দেখলেন তিনি। দেখেই চমকে উঠে সরে গেলেন৷

না, মেয়েটা মনিকা নয়৷ অন্য কেউ। কিন্তু তার মনেই হয়েছে এটা মনিকা। শাড়িটা ঠিক সেরকমই, যেমনটা মৃ ত্যু র সময় মনিকা পরেছিল। ভিডিওতে এটাই ছিল, মিলিয়ে দেখলেন তিনি। কিন্তু লা শ আলাদা। অদ্ভুত! আবারও ভালো করে দেখলেন তিনি চেহারাটা। না এটা মনিকা নয়৷ তাছাড়া মেয়েটার কপাল আর হাতে বড় বড় ক্ষত। মনিকা তো এভাবে মা রা যায়নি।

মর্গ থেকে বের হয়ে তিনি এলোমেলো হাঁটতে লাগলেন ফুটপাত ধরে। কেমন যেন উল্টোপাল্টা লাগছে সবকিছু৷

এমন সময় কল এলো তার কাছে। পকেট থেকে মোবাইল বের করে দেখলেন তৌকিরের কল।

“একটু আসবি আরিফ? আমার শরীরটা খুব খারাপ। বাসায় কেউ….”

“শরীর খারাপ হলে ডাক্তার ডাক, আমি তো ডাক্তার না ভাই!”

আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোন কেটে দিলেন আরিফ৷ এই তৌকিরের জন্যই আজ এতকিছু হচ্ছে। এখন ওর অসুখের প্যাচাল শুনতে ইচ্ছে করছে না তার।

(চলবে)

সুমাইয়া আমান নিতু