তোর মন পাড়ায় পর্ব-০৫

0
8

#তোর_মন_পাড়ায়
পর্ব৫
#ইস্পিতা_রহমান
রাত নয়টা,ঝি ঝি পোকার ডাক,সাথে বাগান থেকে ভেসে আসছে সুগন্ধি হাসনাহেনা ফুলের সুবাস। ডিউটি থেকে ফিরে এসে ফ্রেশ হয়ে অর্কভ বাড়ির সবাইকে খুঁজতে থাকে।কাউকে না পেয়ে শেষে রায়াতের রুমে যায়।রায়াত বিছনায় উপর হয়ে শুয়ে মনের সুখে ফোন চালাচ্ছিলো।অর্কভ রুমের দরজায় দাঁড়িয়ে বলে–
–বাড়ির সবাই কোথায় গেছে?
–শিউলি ফুপি নাকি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তাই সবাই দেখতে গেছে।
না ঘুরেই একইভাবে শুয়েই রায়াত জবাব দিলো।
–কখন ফিরবে?
–জানিনা।
–উঠেকে,খাবার খাবো আমি।
–আমি কি খাবারের উপরে শুয়ে আছি যে উঠতে হবে।
এবারো ফোন টিপতে টিপতেই কোন হেলদোল ছাড়ায় জবাব দিলো রায়াত।
অর্কভ কিছুটা রেগেই বলল–দেখে সারাদিন অফিস করে এসেছি।প্রচন্ড খিদা পেয়েছে আমার।খেতে দে।
রায়াত আবারো একই ভাবে শুয়ে বলল–আশ্চর্য,খাবার কি আমি ধরে রাখছি?খেলেই তো পারেন।
দাঁত কিড়মিড়ি করে রেগে অর্কভ রুমের ভেতরে এসে খপ করে রায়াতের ফোনটা কেড়ে নিয়ে বলে–
–এতো কিসের ফোন দেখা হ্যা,আমি কিছু বলছি তোর কানে যায় না?
রায়াত উঠে বসে বলে–সব কথার উত্তর আমি দিয়েছি।কথা কানে না গেলে উত্তর দিলাম কি করে হু?আর আপনি এভাবে ফোন কেড়ে নিলেন কেনো আমার?দিন ফোন দিন।গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছি আমি ফোনে।
কথা বলেই ফোনটা অর্কভের হাত থেকে নেয়ার জন্য হাত বাড়ায় রায়াত।অর্কভ হাত সরিয়ে নিয়ে বলে– দেখি কি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছিলি।
বলেই অর্কভ ফোনের লক খোলায় ছিলো তাই ফোন স্কল করে করে দেখতে থাকে।
–ওই খবরদার আমার ফোন ঘাটবেন না।জানেন কারোর পার্সোনাল জিনিসে হাত দিতে নেই
অর্কভ রায়াতের মুখের দিকে না তাকিয়ে বলে– আমি তোর বুকে হাত দিয় নি যে পার্সোনাল জিনিসে হাত দিয়েছি বলছিস।
রায়াত কিছু বলতে যাবে তার আগেই অর্কভবলে উঠে,তবে এই তোর গুরুত্বপূর্ণ কাজ চলছিলো ফোনে কথাটা বলেই ফোনটা রায়াতের মুখের সামনে ধরে।রায়াত দেখলো অর্কভ তার হোয়াট আপে ঢুকেছে।রায়াত ছো মেরে ফোনটা নিয়ে বলে– আমি আমার ফ্রেন্ডস গ্রুপের সাথে চ্যাট করছিলাম।এইটার থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ আমার আর কোনটা নেই।
এমন সময় রায়াতের ফোনে কল আসে।রমেনা বেগমকল দিয়েছে।কল রিসিভ করতেই রমেনা বেগম জিজ্ঞেস করে অর্কভ বাসায় ফিরেছে কিনা।রায়াত হ্যা বলে।তখন তিনি বলে অর্কভকে খাবার গরম করে খেতেদিতে।রায়াত মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো।ওপাশ থেকেফোন কেটে দিতেই অর্কভ বলে–
–মামি কি বলেছে নিশ্চয় আমাকে আবার দ্বিতীয়বার বলে মনে করিয়ে দেয়া লাগবে না।
–এই শোনেন,আম্মু বলেছে বলেই আপনাকে আমার খাবার গরম করে খেতে দিতেহবে?কক্ষনো না।নিজে গিয়ে গরম করে খেয়ে নিন।
–তুই যাবি না?
–না
–শিউর যাবি না?
–বললাম তো না।কথাটা বলেইরায়াত আবার উপর হয়ে শুতে যাবে অমনি অর্কভ উপর হয়ে শুতে যাওয়া রায়াতের বুকেত নিচে ও পেটের নিচ বরাবর হাত ঢুকিয়ে দিয়ে ঘুড়িয়ে নিয়ে পাঁজাকোলা করে কোলে তুলে নেয়।
কারেন্ট শখ খাওয়ার মতো শখ খেয়ে রায়াত বলে– এই করছেন কি?নামান।
অর্কভ কোন কথা না বলে সোজা রান্নাঘরে নিয়ে গিয়ে ওকে নামিয়ে দিয়ে বলে– যতক্ষণ খাবার গরম করবি না ততক্ষণ তুই এই রান্নাঘরে বন্দি থাকবি।
কথাটা বলেই নিজে বেড়িয়ে এসে বাইরে থেকে দরজা আটকিয়ে দেয়।রায়াত এগিয়ে এসে দরজা থাক্কাতে ধাক্কাতে বলে–খুলেন বলছি।আমি কিছুতেই খাবার গরম করবো না।আপনি ওভাবেই না খেয়ে থাকতেহবে।
–দরকার পড়লে তাই করবো।তাও তোকে রান্নাঘর থেকে বেরোতে দিবো না।
–ভালো হচ্ছে না কিন্তু।
–ভালো মন্দ আমি বুঝে নেবো তুইথাক বন্দি।
অর্কভ গটগট পায়ে চলে গেলো দরজার সামনে থেকে।রায়াত ঠিক বুঝতে পারলো অর্কভ দরজা না খুলেই চলে গেলো।রায়াত দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে বলে– অর্কভ ভা…..। ভাই বলতে গিয়ে মুখে আটকে গেলো ওর।তবে নিজেকে ধাতস্থ করে নিয়ে বলল,দেখেন ফুপির ছেলে দরজা খোলেন বলছি।আমি খাবার গরম করছি।অর্কভ এসে দরজা খুলে বলে– কি বললি আমায়?
–কই কি বললাম?
–কি বলে ডাকলি আনায়?
–অর্কভ ভা…না মানে ফুপির ছেলে।
–ওওও। আমি ডাইনিং বসছি।দ্রুত খাবার গরম করে আন।
দাঁতে দাঁত পিষে রায়াত বলে, হু যান বসেন।
অর্কভ গিয়ে ডাইনিং বসে।রায়াত খাবার গরম করতে থাকে।অর্কভ একটু পরপর বলে হলো রে?
–উফফ,শান্তিতে কি কাজ করতেও দেবেন না আপনি?
–খিদেতে আমার পেটে ছুঁচো দৌড়াচ্ছে।
–গামছা বেঁধে রাখেন পেটে।
–আপাতত আসে পাশে গামছা নাই।তোর উড়না দিয়ে যা।
–যাকে তাকে আমি কেনো আমার উড়না কেনো দিবো?আমার উরনার কি কোন মূল্য নাই নাকি?
–হয়ছে তোর বকবকানি? এবার দয়া করে খেতে দে।
রায়াত টেবিলের উপর একে একে গরম করা খাবার গুলো এনে ধরাম ধরাম করে রাকছে।তা দেখে অর্কভ বলে–এই রাগ কার উপর দেখাচ্ছিস?আমি কি তোর স্বামী নাকি যে বর দেরি করেএসেছে বলে বউ বরের উপর রাগ দেখাচ্ছে ।
আলগোছে কথাটা বলে ফেলে অর্কভ।তারপর টনক নড়ে যে সে কি বলে ফেলেছে।কথাটা বলে দুজনেই অপ্রস্তুত হয়ে যায়।রায়াত এবার শান্তভাবেই অর্কভের প্লেটে খাবার বেড়ে দেয়।চুপচাপ খাবার খেতে খেতে অর্কভ রায়াতকে জিজ্ঞেস করে ও খেয়েছেকিনা।রায়াত না বলে।তখন অর্কভ ওকেও খেতে বসতে বলে।রায়াত বলে সবাই এলে ও খাবে।অর্কভ বলে,একটু আগে ও মাকে ফোন করেছিলো।ওদের আসতে দেরি হবে তাই জেনো রায়াত খেতে বসে।রায়াত আবার না বললে,অর্কভ ওর হাত ধরে এক ঝাটকা টানে চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে প্লেট উপর করে সোজা করে নিয়ে,নিজেই তাতে খাবার বেড়ে দিয়ে বলে,
–খা।বললাম না বাড়ির সবার আসতে দেরি হবে।ততক্ষণ না খেয়ে থাকলে ফ্রেন্ডস গ্রুপে আড্ডাতে এনার্জি পাবি না।
–আমি খাবো না।
–কেনো খাবিনা?
–সে কৈফিয়ত আমি আপনাকে দেবো কেনো?আমার ফ্রেন্ডসরা অপেক্ষা করছে।আমি গেলাম।
খাবার ঢাকা দিয়ে রায়াত উঠে চলে যেতে নিলেই অর্কভ ওর হাত ধরে বাঁধা দিয়ে বলে– আমি একা একা বসে খাবো নাকি হ্যা?
–তো আমি কি আপনার খাবার খেয়ে এগিয়ে দেবো নাকি?
–প্রয়োজন পরলে তাই করবি।
–কিহ!আমি এঁটো খাবার খাবো?তাও আপনার?জীবনেও আমি এঁটো খাবার খাই নি।
—তাই না?তবে আজ খা।
কথাটা বলেই নিজের প্লেট থেকে এক লোকমা খাবার তুলে জোর করে রায়াতের মুখে পুরে দেয়।রায়াত জেনো হতভম্ব হয়ে রোবটের মত দাঁড়িয়ে রইল জেনো বোঝার চেষ্টা করছে কি হলো তার সাথে।তারপর ধাতস্থ হতেই ওয়াকথু করে মুখের মধ্যে থেকে খাবার ফেলে
দিয়ে রাগে চিৎকার করে বলে,
–এইটা আপনি কি করলেন?
–এঁটো খাবার নাকি খাস না তাই খাইয়ে দিলাম।দেখ কেমন লাগে।
রায়াতও কম কিসে।ডাইনিং থেকে পানির জগটা তুলে অর্কভের মাথায় ঢেলে দেয়।অর্কভ একদম শেয়াল ভেজা হয়ে যায়।ওরও মেজজ এবার তুঙ্গে উঠে যায়।আর চোখ টাটিয়ে রায়াতের দিকে তাকায়।রায়াত ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বুকে হাত গুঁজে অন্যদিক মুখ ঘুরিয়ে থাকে।অর্কভ ডালের বাটিটা তুলে নিয়ে রায়াতের মাথায় ঢেলে দেয়।রায়াত হা হয়ে অর্কভের দিকে তাকায়।অর্কভ বলে–
–হা করে আছিস কেনো?আরো খাবি?
বলেই অর্কভ তারকারির বাটিটাও তুলে রায়াতের মাথায় ঢালে।রায়াতের রাগে-ক্ষোভে অর্কভকে হাত বাড়িয়ে মারতে যাবে অমনি ফ্লোরে পরে থাকা তারকারির উপর পা পড়তেই পিছলে পরে যায়।এক হাত দিয়ে অর্কভের টিশার্টের কলার ধরে ফেলেছিলো বলে অর্কভও টাল সামলাতে না পেরে রায়াতের উপর পরে যায়।রায়াত নিচে পড়ে যাওয়ার ফলে মাথার পেছনে আঘাত লাগে।যার কারনে ও সেন্সলেস হয়ে যায়।অর্কভ ওর কারনেই ওর উপর পরার কারনে দাঁত কিটমিট করে দু চারটা কথা শোনানোর জন্য উঠতেই দেখে রায়াত জ্ঞান হারিয়েছে।অর্কভ ওর গালে চাপর দিতে দিতে বলে,
–আরে এই ইফতা,উঠ।কি হলো তোর?ইফতা চোখ খোল,
রায়াত চোখ না খুললে অর্কভ মাথায় আঙুল ঢেকিয়ে ফ্লোরে ঠেসে বসে পরে বলে– বাপরে বাপ,এইটুকু লাগাতে কেউ জ্ঞান হারায়?পা প পা পানি,হ্যা পানির ছিটা দিতে হবে।
অর্কভ দ্রুত উঠে গিয়ে পানি এনে আগে রায়াতের মুখ তরকারি ধুয়ে দিয়ে পানির ছিটা দিতে থাকে আর গালে চাপর দিয়ে দিয়ে বলতে থাকে,
–ইফতা উঠ,এই ইফতা,উঠ
রায়াত চোখ খুললেই অর্কভ জেনো স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে।রায়াত উঠে বসেই বলে– দেখলেন তো,আপনাকে দিয়ে তরকারি ধুইয়ে নিলাম।কেমন বোকা বানালাম হ্যা?
অর্কভ ভ্রুকুঞ্চিত করে বলে– মানে?তুই এতোক্ষণ নাটক করছিলি?
–জি হ্যা।
দাঁতে দাঁত পিষে অর্কভ বলে– তবে রে আজ তোরে খাইছি।তোরে আমি এখন রাস্তার ম্যানহলের নোংরার মধ্যে চুবাবো।
এই কথা বলেই অর্কভ উঠে দাঁড়িয়েছ রায়াতের হাত ধরে টান দিয়ে বলে– উঠ।
রায়াত কিছুতেই যাবে না।তাই উঠেও না।রায়াত উঠুক বা না উঠুক।অর্কভ ওর হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়।রায়াত ওভাবেই ফ্লোরে পরে পরে পা ছুড়তে ছুড়তে বলে ছাড়েন বলছি,আমি যাবো না।অর্কভ ওর হাত ধরে ছেচরাতে ছ্যাচরাতে টেনে নিয়ে যায়।সদর দরজার কাছে যেতেই সবাই বাড়িতে চলে আসে।ওদের দুজনকে ওভানে দেখে আঞ্জুমান আরা অর্কভকে বলে উঠে,
–একি তুই ওকে এবাবে টেনে টেনে নিয়ে যাচ্ছিস কেনো?
রায়াত কাঁদোকাঁদো হয়ে বলে– ফুপি, বাচাও।দেখো,তোমার ছেলে আমাকে কিভাবে টেনে বাইরে ফেলে দিতে যাচ্ছে।
—না আম্মু ওকে ফেলে দিতে না।ওকে আমি ম্যানলের নোংরায় চোবাবো এখন।
আঞ্জুমান আরা এসে অর্কভের হাতে থেকে রায়াতকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলে,ছাড় ওকে।
রায়াত উঠে দাঁড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুপিয়ে বলে– তোমার ছেলে আমাকে ফেলে দিয়েছে,এই দেখো তরকারি ঢেলে দিয়ে কি অবস্থা করেছে আমার দেখো।
–আম্মু ওর কথা বিশ্বাস করো না,এই দেখো আমাকে কিভাবে ভিজিয়ে দিয়েছে।
–মিথ্যা বলছে ফুপি,আমি উনাকে খাবার দিয়ে পানি ঢেলে দিতে গেছি আর হাতে থেকে পরে উনার গায়ে পড়ছে আর অমনি আমায় দেখো কি করেছে।
–ওই মিথ্যুক, চুপ কর।
আঞ্জুমান আরা চোখ রাঙিয়ে অর্কভের দিকে তাকিয়ে বলে– তুই চুপ কর অর্কভ।ভারি অন্যায় করেছিস তুই।একটু না হয় পানি পরলোই তাই বলে তুই..
–আম্মু ও মিথ্যা বলছে।
–একদম মিথ্যা বলবি না তুই অর্কভ।নিজের চোখেই তো দেখলাম তুই ওকে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে যাচ্ছিলি।সরি বল ওকে।
–বয়ে গেছে সরি বলতে ওকে।
বলেই অর্কভ র*ক্তচোখে রায়াতের দিকে তাকায়।রায়াত জিহ্বা বের করে ওকে ভেংচি কাটে।রাগে গটগট করে অর্কভ নিজের রুমে চলে যায়।আঞ্জুমান আরা রায়াতকে নিয়ে ওর নিজের রুমে নিয়ে যায়।
–++-+-
অর্কভ শাওয়ার সেরে শুধু টাওয়েল পরেই বেড়িয়েছে।আরেক টাওয়েল দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে নিজের ঘরের দিকে যাচ্ছে রায়াত ওর খালাতো বোনের পিচ্চি ছেলেটার সাথে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলতেছিলো।পিচ্চি ছেলেটাকে রায়াত ধরতে গেলে পিচ্চি দৌড় দেয়।রায়াতও দৌড়ে ওকে ধরতে যায়।পিচ্চিটা অর্কভকে পার করেই দৌড়ে অন্য ঘরে চলে যায়।রায়াত পিছে পিছে গিয়ে একদম অর্কভের সামনে স্লিপ কেটে পরে যাচ্ছিলো আর তখনি ব্যালেন্স হারিয়ে নওফিলকে ধরতে লাগলেই সোজা নওফিলের টাওয়েলহাত লেগে খুলে যায়।নওফিল তো উজবুকের ন্যায় সটাং স্তব্ধা মেরে মুখ প্রসারিত করে রসগোল্লার মত চোখ বড় বড় দাঁড়িয়ে যায়।রায়াত ফ্লোরে পরে গিয়েছিলো তাই মাথা তুলে উপরে তাকাতেই নওফিলকে দেখে, ইয়া জোরে চিল্লানি দেয়।নওফিল থতমত খেয়ে ওর হাতের টাওয়েলটা রায়াতের মুখের উপর মে*রে দিয়ে নিজের রুমের মধ্যে ঢুকে পরে চোখ মুখ খিঁচে বলে,
—শালা ইজ্জতের বারোটা বেজে গেছে আজ।
রায়াতের চিল্লানি শুনে যে যেখানে ছিলো সবাই দৌড়ে আসে।রমেনা বেগম ওর পাশে হাটু মুড়ে বসে বলে,
–কি রে পড়লি কি করে?খুব ব্যাথা পেয়েছিস?
আঞ্জুমান আরা ওর পাশে বসে বলে– আরে ভাবি ও কত জোরে চিৎকার দিলো শুনেই তো বোঝা যাচ্ছে ওর কতটা ব্যথা লেগেছে।
রায়াত ততক্ষণেও ঘোরের মধ্যে রয়েছে।মাথার উপর টাওয়েল।আঞ্জুমান আরা টাওয়েলটা সরিয়ে বলে– ভেজা টাওয়ল তোর মাথার উপর এলো কই থেকে?
আর এই অর্কভটাও না।ওর ঘরের সামনেই মেয়েটা পরে গেছে।এতো জোরে চিৎকার দিলো শুনে আমরা চলে এলাম আর ও একবারও বের হয়ে দেখলো না।
ঘোরের মধ্যে রায়াত ক্ষীণ গলায় বলে উঠে,উনি কি দেখবে,যা দেখার তো আমি দেখে ফেলেছি।
–কিহ!কি দেখেছিস?
–তোমার ছেলে…
এইটুকু বলতেই অর্কভ দরজা খুলে বাইরে বেড়িয়ে এসে রায়াতের মুখ চেপে ধরে বলে,চুপ একদম চুপ।
এতক্ষণে রায়াতের ঘোর কেটে বলে,ইয়াক,হাত সরান আপনার।নোংরা হাত আমার মুখে চেপে ধরছে।
অর্কভ ধমক দিয়ে বলে– যা নিজের রুমে যা।ধিঙ্গিপনা করে আমার রুমের সামনে পড়ে গেছে।
আঞ্জুমান আরা বলে– এই অর্কভ,মেয়েটাকে এভাবে বলছিস কেন?মানুষ কি ইচ্ছে করে পড়ে।
–মা,ও ইচ্ছা করেই পড়েছে।আমি জানি।
রায়াত এবার বলে–উমম,আমার বয়ে গেছে আপনার টা দেখ….
এইটুকু বলতেই অর্কভ আবার এসে রায়াতের মুখ চেপে ধরে।
চলবে….