আমার হায়াতি পর্ব-১০

0
7

#আমার_হায়াতি
পর্ব : ১০
লেখিকা : #Nahar_Adrita

( ১৬০০+ এলার্ট , প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য উন্মুক্ত )

কালো গাড়িটি এসে থামলো,চৌধুরী বাড়ির সামনে। আদিব গলা খাকারি দিয়ে বললো,

– নামবি না।
– উহু।
– কেনো কোলে ওঠতে ইচ্ছে করছে নাকি।
– বা*ললললললললললললল।
– থাপ্পড় দেবো বেয়াদব,কথায় কথায় বা”ল বলা শিখেছে। একমাসে বেয়াদব হয়ে গিয়েছিস।

রাগে মুখ কালো করে চৌধুরী বাড়ির কলিং বেল চাপলো হায়াত। ঠোঁট কামড়ে কপালে ভাঁজ ফেলে দাঁড়িয়ে আছে দরজার সামনে, বুক ধুকধুক করছে, কিন্তু চোখে স্পষ্ট জেদ। পেছনে আদিব গাড়ি পার্কিং করছে, এক চোখে হায়াতের দিকে তাকিয়ে—অভিমান আর অস্থিরতা তার চোখে একসাথে খেলা করছে। গাড়ির দরজা বন্ধ করে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে সে, দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন মিসেস অরোরা। দরজা খুলতেই হায়াতকে দেখে মুহূর্তেই মুখে আনন্দের ঝলক ছড়িয়ে পড়লো
– হায়াত মা!— খুশিতে কণ্ঠ ভরে উঠলো।
মুহূর্ত না ভেবে হায়াতকে জড়িয়ে ধরলেন তিনি। — “তুই ঠিক আছিস তো? কেমন আছিস মা?

হায়াত কিছু বলতে যাবে, ঠিক তখনই পেছন থেকে আদিবের কড়া গলা ভেসে এলো।

– এই বান্দি! ভেতরে ঢুকবি না নাকি? দাঁড়িয়ে নাটক করিস কেন ?

হায়াত থমকে গেলো। চোখ বড় বড় করে পেছনে ঘুরে তাকালো আদিবের দিকে। তার চোখেমুখে স্পষ্ট রাগ, আবার কোথাও যেন অভিমানও।

মিসেস অরোরা হালকা হেসে বললেন,

– আহা আদিব, ছেলেমানুষি করিস না। হায়াত আমার মা। ভেতরে চল হায়াত, ওকে পাত্তা দিস না।

হায়াত ভেতরে পা রাখে ধীরে ধীরে, চোখের কোণে একটা চুপচাপ অশ্রুবিন্দু ঝুলে থাকে…

ড্রয়িংরুমে রিমোট হাতে টিভির সামনে বসে খবর দেখছিলেন রাকিব চৌধুরী। হালকা চশমার ফাঁক দিয়ে চোখ আটকে ছিলো স্ক্রিনে, কিন্তু দরজার শব্দ আর কথাবার্তার আওয়াজে মাথা ঘুরিয়ে তাকাতেই চোখের পাতা জড়ালো মুহূর্তে।

– হায়াত,,, অবিশ্বাস আর খুশি মিলিয়ে কণ্ঠ যেন কেঁপে উঠলো।

তিনি উঠে দাঁড়ালেন, এক মুহূর্ত দেরি না করে হায়াতকে কাছে টেনে নিলেন বুকের মধ্যে, বললেন,,,

– আমার ছোট্ট মেয়েটা এসেছে! তুই কেমন আছিস মা? কতো শুকিয়ে গেছিস !

হায়াত চোখ বন্ধ করে নিঃশ্বাস নিলো রাকিব চৌধুরীর বুকে মুখ গুঁজে। এতদিনের ভেতরে জমে থাকা কান্নাটা যেন একটু একটু করে গলে যাচ্ছে।

আদিব একপাশে দাঁড়িয়ে কপালে হাত বুলায়, মুখটা গম্ভীর। মিসেস অরোরা একপাশে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য দেখেন আর মুচকি হাসেন— যেন এই পরিবার আবার জোড়া লাগছে ধীরে ধীরে।

আদিব কিছুক্ষণ চুপচাপ সব দেখছিলো। তারপর হালকা গলা খাঁকারি দিয়ে গম্ভীর গলায় বললো,

– ভেতরে চল , দাঁড়িয়ে থেকে আর কী নাটক করবি ?

হায়াত মুখ নিচু করে রাকিব চৌধুরীর বুক থেকে একটু দূরে সরে দাঁড়ালো। তখনই রাকিব চৌধুরীর কণ্ঠ আচমকা কঠিন হয়ে উঠলো।
– আদিব ! তুমি ওকে তুই-তুকারি কেনো করছিস? এটা কি তোমার কথা বলার ভঙ্গি? মেয়েটাকে কি রাস্তায় থেকে তুলে এনেছো ?
তোমার বউ, এই বাড়ির সম্মানের প্রতীক, তাকে সম্মান করতে শিখো!

আদিব একপা এগিয়ে হায়াতের দিকে হাত বাড়াতে গিয়েও থেমে গেলো। রাকিব চৌধুরীর কথায় তার মধ্যে একরকম বিদ্রোহ জেগে উঠলো। গলা একটু চড়া করে, চোখে আগুন নিয়ে বললো—

– পারবো না! এমন মেয়েকে আমি সম্মান দিতে পারবো না।

ঘরটা মুহূর্তেই নিস্তব্ধ হয়ে গেলো।

মিসেস অরোরা বিস্ময়ে মুখে হাত তুলে তাকিয়ে রইলেন। হায়াত থমকে গেলো, তার চোখের কোণে কাঁপতে থাকা অশ্রুর ফোঁটা যেন জমে রইলো। রাকিব চৌধুরীর মুখ লাল হয়ে উঠলো রাগে।

– তুমি কি বললে আদিব,

তার গলা ভারী হয়ে উঠলো, তীক্ষ্ণ রাগে ভরা।এই মেয়েটা তোমার বউ, তোমার জীবনসঙ্গিনী! কিসের এত অহংকার তোমার মধ্যে, বলো?

আদিব ফুস করে নিঃশ্বাস ছাড়লো। চোখ সরিয়ে নিয়ে গম্ভীরভাবে বললো,

– বাবা, আমি এখনই এসব ব্যাখ্যা দিতে পারবো না। শুধু বলছি, আমি এমন একটা মেয়েকে মেনে নিতে পারছি না… যাকে নিয়ে আমার বিশ্বাসটাই আর নেই।

হায়াত কেঁপে উঠলো। ঠোঁট কাঁপছে তার, কিন্তু মুখ খুলছে না।

রাকিব চৌধুরী ধমকের স্বরে বললেন,
– তোমার এই কথার জবাব এখন নয়, পরে নেবো। এখন ওর সাথে এইরকম ব্যবহার চলবে না, তুমি যদি সত্যিই পুরুষ হও।

হায়াত কিছু বলতে যাবে, ততক্ষণে আদিব তাকে টানতে টানতে সিঁড়ি দিয়ে ওপরে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। পেছন থেকে মিসেস অরোরা আর রাকিব চৌধুরী হতবাক হয়ে চেয়ে রইলেন, কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলেন।

হায়াত বললো,
– ছাড়ুন আমাকে, আমার কি পা নেই, আমি নিজে যেতে পারি! আপনি কেন এমন করছেন?

কিন্তু আদিব কিছুই শুনছে না।

ওপরে নিজেদের রুমে ঢুকেই দরজাটা জোরে বন্ধ করে দিলো আদিব। তারপর কোনো কিছু না ভেবেই হায়াতকে সোজা বিছানায় ধাক্কা দিলো।

হায়াত পড়ে গেলো বিছানায়, চুপ করে তাকিয়ে রইলো আদিবের চোখে। ভয় ছিলো না, ছিলো কেবল একটা অদ্ভুত বিষাদ আর ক্লান্তি।

আদিবের কণ্ঠ কাঁপছিলো, রাগে না কষ্টে বোঝা যাচ্ছিলো না বললো,

– তুমি জানোও না, আমি কেমন কষ্টে আছি। তুমি জানোও না, আমি কীভাবে বাঁচছি, কীভাবে ভুলে থাকার ভান করছি।

হায়াত ধীরে উঠে বসল। তার চোখে জল, কিন্তু গলায় কষ্ট চেপে ধরে বললো,

– আপনি খারাপ, আপনি খুব খারাপ, একটারের জন্যও আমার খোজ নেন নি,আমি কেমন আছি কি করছি কোনো খোজ নেন নি।
– সরি পাখি।
– আপনার সরি আপনি ভেজে খান গা।
– আসো তোমাকে খাবো।

সযত্নে লাজুকপাখিকে বুকে জড়িয়ে ধরলো আদিব। হায়াত আদিবের বুকে ঠায় পেয়ে অঝোরে কাঁদতে লাগলো।মিনিট দশেক পর হায়াতকে কোলে নিয়ে বসলো। ভালো করে পরখ করে দেখল আদিব,হায়াতের পড়নে কালো রঙের থ্রি পিস, চুল গুলো বেনুনি করা,দেখতে অমায়িক লাগছে। আদিব শুকনো ঢোক গিলে বললো,
– ফ্রেশ হয়ে চলো খাবে।
– হু।

দুজনেই ফ্রেশ হয়ে রুমে আসলো,তখনি দরজায় নক করলো। দরজা খুলে দিতেই কাজের লোক খাবার দিয়ে গেলো, হায়াত এক গাল হাসলো । আদিব সযত্নে তার লাজুকপাখিকে খাইয়ে দিয়ে নিজেও খেয়ে নিলো।

——–
বিকেল সাড়ে চারটা। আদিবের বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে হায়াত। আদিব গেম খেলছে আর গুন গুন করে গাইছে।

——তুমসে মোহাব্বাত হে——

হায়াত মিন মিন করে বললো,
– শুনছেন।
– হু জান আমার কান ভালোই আছে, তুমি বলো।
– আমার জামা কাপড় কেনো পুড়িয়েছেন।
– সরি জান রাগ করে…..
– আপনার রাগ দিয়ে আপনি পাস্তা বানিয়ে খান।
– আচ্ছা আসো ( Tashu’s creation) থেকে তোমাকে ড্রেস কিনে দেই।
– আচ্ছা।

হায়াত কথা বলতে বলতেই ঘুমিয়ে গেছে। আদিব তাকিয়ে হাসলো,মনে মনে বললো,ইসসস কত্তো দিন পর আমার লক্ষিটাকে বুকে নিলাম। হঠাৎ করেই আদিবের চোখ গেলো হায়াতের ঠোঁটের দিকে৷গোলাপি, কোমল ঠোঁট দুটো একটুখানি কাঁপছে ঘুমের ঘোরে—শীতল বাতাসে না কি কোনো স্বপ্নে?

আদিবের মন কেমন যেন অস্থির হয়ে উঠলো।
সে এত কাছ থেকে হায়াতকে কখনো দেখেনি—এমন সরল, এমন নির্ভার।
এক মুহূর্তের জন্য সে ঠোঁটের দিকে ঝুঁকে গেলো, ঠোঁটে ঠোঁট পুড়ে নিল। আস্তে আস্তে ঠোঁট মেলাতে লাগলো। হঠাত করেই হায়াতের ফোন বেজে ওঠলো। স্ক্রিনে ভেসে আসলো খুশিপু নাম। আদিবের মনে আছে এটা হায়াতের অনলাইন ফ্রেন্ড যে কিনা তাদের বিয়েতে এসেছিলো। আদিব কিছু না ভেবেই কল রিসিভ করলো আদিব কিছু বলবে তার আগেই খুশিপু বলতে শুরু করলো,
– আসসালামু আলাইকুম হায়াত পাখি, কি করছো বনু, শুনলাম তোমাদের সব ঠিক হয়ে গিয়েছে। তুমি এখন আদিব ভাইয়ার সাথে, আচ্ছা সব হয়েছে তো,কিস হাগ সামথিং সামথিং, নাকি রাতে করবে। আমি বলি রাতে সুন্দর একটা শাড়ি পড়ে ভাইয়ার সামনে ঘুরঘুর করবে ভাইয়ার রাগ একাই কমে যাবে। আরে বনু পুরুষ মানুষ দেখবে একটু পরই বুকে মুখ ডুবিয়ে দিবে, হুহ।

আদিব ঠোঁট কামড়ে হেসে বললো,

– ওয়ালাইকুম আসসালাম আপু হায়াত ঘুমে,আমি আদিব বলছি।
– এ্যাাহহহহ। না মানে ভাইয়া আমি ওসব বলিনি।
– আপু সমস্যা নেই, আপনার পাখিকে আমি মাফ করে দিয়েছি।
খুশিপুর সাথে টুকটাক কথা শেষ করে আদিব হায়াতকে চুমু খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।

সন্ধ্যা ছয়টা। আকাশজুড়ে নরম নীল-কমলা আলো মেখে আস্তে আস্তে নামছে সন্ধ্যা। হায়াতের ঘুম ভাঙতেই দেখে আদিব পাশে নেই, তবে বারান্দা থেকে বাইক স্টার্ট হওয়ার শব্দ কানে আসে।

আদিব দরজায় এসে দাঁড়ায়, চোখে হাসি নিয়ে বললো,

– চলো, তোমাকে একটা জায়গা দেখাই।
– কোথায়।

– ডুবাইল,বিকেলের আলো মিস করলা, চল এখন সন্ধ্যার জলে আলো দেখি।

হায়াত বাইকের পেছনে বসতে যাচ্ছিল ঠিক তখনই আদিব ঘুরে দাঁড়িয়ে কড়া গলায় বললো,
– বোরকা পরে আসো, যাও।

হায়াত থমকে দাঁড়ালো। মুখটা এক ঝটকায় গম্ভীর হয়ে গেলো। চোখের কোণে হালকা অভিমান ফুটে উঠলো।
– ঘুরতে যাবো তাহলে কেনো বোরকা পরবো।

আদিব একটু গলা নরম করলো, কিন্তু কথার ধার হারালো না,
– তোমার নিরাপত্তা আমার দায়িত্ব, হায়াত। বাইক নিয়ে শহরের বাইরে যাচ্ছি।
– তো ?
– তোমার দিকে সব ছেলেরা তাকিয়ে থাকবে আমার সহ্য হবে না।
– এ্যহহহ ঢং। আচ্ছা মাথায় ওড়না পেঁচিয়ে আসি।
– চুপ দৌড় দাও, পাঁচ মিনিটে নিচে আসবে।

বাইক চলতে থাকলো আপন গতিতে।
আদিবের এক হাতে স্টিয়ারিং, আরেক হাতে হালকা করে ধরে রাখা হায়াতের হাত—যেন শহরের কোলাহল পেছনে ফেলে এক অদৃশ্য জগতের দিকে ছুটে চলেছে তারা।পথে বাতাসে ওড়ছিলো হায়াতের ওড়না, আর চোখে মুখে লেগে ছিল একরাশ স্বপ্নের ছায়া।
বিকেলের নরম আলো এখন গাঢ় নীল হয়ে এসেছে, আর দূরে দূরে গাছে গাছে আলো ঝলক দিচ্ছে জোনাকির।

ডুবাইল……..

বাইকটা থামলো হঠাৎ এক শান্ত নদীর পাড়ে।
পাহাড়ের পায়ের কাছে যেন নেমে এসেছে এক নরম নীল মায়া। চারপাশে পাখির ডানার শব্দ, বাতাসে হালকা কুয়াশা।

হায়াত ধীরে নেমে পড়লো বাইক থেকে। ওড়না ঠিক করতে করতে তাকালো নদীর দিকে—চোখে বিস্ময়।
— এতো সুন্দর…!”

সে কল্পনাও করেনি এমন একটা জায়গা এত কাছে লুকিয়ে আছে।

আদিব পাশে এসে দাঁড়িয়ে বললো,
— তোমার মতোই সুন্দর। শান্ত, অথচ ভিতরে কত ঢেউ…

হায়াত একটু হাসলো।
— আপনি তো কবি হয়ে গেছেন আজকাল!

আদিব হেসে হায়াতের হাত ধরলো,
— তুমি পাশে থাকলে, আমি সব হয়ে যেতে পারি—কবি, পাগল, বা শুধুই প্রেমিক।

নদীর ধারে ঠাণ্ডা বাতাস বইছে। আকাশের গাঢ় নীল আলোর নিচে, জোনাকির ঝিকিমিকি আলো আর ঢেউয়ের শব্দ—সব মিলিয়ে এক স্বপ্নের মতো পরিবেশ।

হায়াত পাথরে বসে চুপচাপ চারপাশের সৌন্দর্য উপভোগ করছিলো। হঠাৎ আদিব একটা ব্যাগ বের করলো বাইকের সিট থেকে।
– তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।

হায়াত অবাক হয়ে তাকালো।
– কি আছে ওখানে ?
আদিব হালকা হাসলো।
– তুমিতো জানো না, ডেট মানে খালি কথা না, পেটেরও যত্ন নিতে হয়।

ব্যাগ খুলতেই বের হলো—একটা ছোট্ট ম্যাট, দুইটা পানির বোতল, চিপস, চানাচুর, এক বাক্স চকলেট কেক আর দুটো স্টিলের কৌটায় রাখা স্পেশাল চিকেন স্যান্ডউইচ।

হায়াত বিস্ময়ে তাকিয়ে বললো,
– আম্মু দিয়ে দিয়েছে।
– হু।

রাত নয়টা, চারদিকে নেমে এসেছে নিস্তব্ধতা।
বাইক ছুটে চলেছে ফাঁকা রাস্তা ধরে—নরম চাঁদের আলো গায়ে মেখে, বাতাসে হায়াতের চুল ওড়ছে, ওড়নাটা আলতোভাবে পেছনে দুলছে।আদিবের মন কেমন যেন অস্থির হয়ে উঠলো।হায়াতের স্পর্শ, তার গায়ের গন্ধ, পেছন থেকে জড়িয়ে ধরা হাত—সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত রোমাঞ্চ ছড়িয়ে পড়লো তার শরীরজুড়ে।

হঠাৎ এক নির্জন বাঁকে এসে আদিব বাইকটা ধীরে থামিয়ে দিলো।
হায়াত একটু অবাক হয়ে বললো,
— এই জায়গায় থামলেন কেন ?

আদিব কিছু না বলে হেলমেটটা খুলে পিছনে ফিরলো।
তার চোখে এক অদ্ভুত নরমতা, আবেগ।
ধীরে হেলমেটটা খুলে হায়াতের চোখের দিকে তাকিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট পুড়ে নিল। হায়াতও রেসপন্স করতে লাগলো। মিনিট দশেক পর আদিব হাস্কি স্বরে বললো,
– জান…..সামনে বস।
– ক্ কেন।
– মুড আসছে প্লিজ৷
– রাস্তায়।
হায়াতকে কিছু না বলতে দিয়েই বাইকটা চালিয়ে এক সাইডে নিয়ে আসলো। হায়াতকে বাইকের সামনে বসিয়ে দিলো। আস্তে আস্তে জামার ভেতর দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দিলো আদিব। বক্ষঃস্থলে আস্তে আস্তে হাত চালাতে থাকলো। হায়াতের শরীর জুড়ে ঝাঁকুনি দিয়ে ওঠলো। আদিব হাস্কি স্বরে বললো,
– জান খুলি একটু৷
– উহু, এই রাস্তায়…..
– হুসসসসসসসসসস,কোনো কথা না।

আদিব হায়াতের দিকে দুষ্টু হেসে বললো,
– বিসমিল্লাহ।
– আহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহ।

আদিব হায়াতের দিকে আরেকটু এগিয়ে বাইক ধীরে ধীরে চালাতে থাকলো । ঘন্টা খানেক পর সাভারের রাস্তায় এসে হায়াতের জামা ঠিকঠাক করে পেছনে বসিয়ে দিলো আদিব। মিনমিন করে বললো,
– জান টিসু দাও।
– কেনো।
– তুমিই তো ভেতরে দিতে দিলা না।
– সরুন তো রাগ ওঠছে।
– ইস বউ রাগ করছে আমার।

———–
বাইক এসে থামলো হায়াতদের বাড়ির সামনে।
রাত তখন প্রায় সাড়ে এগারোটা, চারদিক নিঃস্তব্ধ, কেবল দূরে কোথাও কুকুরের হালকা ঘেউ ঘেউ।

হায়াত ধীরে ধীরে বাইক থেকে নামলো। মুখে একটা লাজুক, কিন্তু শান্ত হাসি।চুলগুলো এলোমেলো হয়ে গেছে বাতাসে, আর ঠোঁটে এখনো রয়ে গেছে সেই চুমুর রেশ।

হাতটা আলতো করে রাখলো নিজের মাজায়, যেন কিছুটা ব্যথা পেয়েছে , আবার কিছুটা সেই মুহূর্তের অস্থিরতা সামলাচ্ছে।

আদিব একদৃষ্টে তাকিয়ে রইলো, হেলমেট হাতে নিয়ে, হায়াত আদিবের জন্য অপেক্ষা না করেই সিড়ি দিয়ে ওপরে চলে গেলো, আদিবও বাইক পার্ক করে হায়াতের পেছন পেছন ওপরে গেলো। আদিব হায়াতের ওড়না আঙ্গুলে পেঁচাতে পেঁচাতে বললো,
– ওই শোনো না।
– হু বলেন।
– আরেকবার প্লিজ।
এই বলেই হায়াতকে শুইয়ে দিয়ে খাটের সাথে হাত দুটো ওড়না দিয়ে বেধে ফেললো,হায়াত হতবাক হয়ে গেলো,আদিব চোখের ইসারায় কিছু বলতে না করলো।

ঠোঁটে ঠোঁট পুড়ে নিয়ে আদিব ফিসফিস করে বললো,

– তোমার ঠোঁটে বিশুদ্ধ ফুলের সুভাষ প্রতিবার পেতে টেনে নেয় আমার নিশ্বাস।

আস্তে আস্তে আদিব হায়াতের জামাটা খুলে ফেললো। বক্ষঃস্থলে মুখ ডুবিয়ে দিলো। উন্মুক্ত পেটে পাগলের মতো জিহ্বা দিয়ে লেহন করতে লাগলো। হায়াত আদিবের দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকালো। আদিব পরনের শার্ট খুলে ফেললো। আস্তে আস্তে মুখে পুড়ে দিলো ।
ঠিক তখনই…
সব নরম মুহূর্ত, নিস্তব্ধতার মাঝে “টক টক টক…”
দরজায় একটানা নক করার শব্দ।

হায়াত সঙ্গে সঙ্গে উঠে বসার জন্য মরিয়া হয়ে পড়লো,
আদিবও ভ্রু কুঁচকে তাকালো দরজার দিকে।
– এই সময়ে কে,ধুর বাল,রোমান্স করবো একটু তাও শান্তি নেই।

তার আগেই দরজার ওপাশ থেকে শোনা গেলো পরিচিত কণ্ঠ—মিসেস অরোরা।
— আদিব, দরজা খুলো তো… আমি একটু সিরিয়াস কথা বলবো।
গলায় বিরক্তি নেই, কিন্তু কেমন যেন ভাবনার ছাপ।
– দারাও মা।

আদিব তাড়াতাড়ি হায়াতের হাতের বাঁধন খুলে ফেললো, হায়াতও জামা পড়ে নিলো। আদিব শার্টের বোতাম লাগাতে লাগাতে দরজা খুলে দিলো।মিসেস অরোরার মুখে চিন্তার ছাপ, বললো,
– বাবা আমাকে এক্ষুনি আমেরিকা যেতে হবে,তোমার খালামনি হসপিটালে এডমিড। নেহা কল দিয়ে কান্নাকাটি করছে,তোমার আঙ্কেল তো ইন্ডিয়া গিয়েছে, এখন কি করবো তোমার বাবাও তো কাল সিলেট যাবে।
– আচ্ছা মা তুমি যাও, বেশি সমস্যা হলে নেহাকে সাথে নিয়ে এসো।
– আচ্ছা হায়াতকে দেখে রেখো,আম্মু আসি রে।
– আচ্ছা আম্মু। সাবধানে যাবেন।

এই বলেই ওনি লাগেজ নিয়ে গেট অব্দি চলে গেলেন,আদিব বললো,
– আম্মু তোমাকে এয়ারপোর্টে দিয়ে আসি….
– না বাবা,এতো রাতে যেতে হবে না,ড্রাইভার দিয়ে আসবে।
– ওকে।
গেট লাগিয়ে রুমে গিয়ে দরজা আটকিয়ে দিলো আবারো।হায়াত দৌড়ে বেলকনিতে চলে গেলো। আদিব পেছন থেকে হায়াতকে কোলে তুলে নিলো। ডিভানে বসিয়ে দিলো। আবারও জামাটা খুলে ছুড়ে মারলো। পাগলের মতো চুমু খেতে লাগলো আদিব। হায়াতও আদিবের শার্ট খুলে ফেললো। আস্তে আস্তে বুকে চুমু খেতে লাগলো। আদিব হায়াতের চুল গুলো ধরে রসনা দিয়ে লেহন করতে লাগলো। হায়াতের শরীর শিউরে ওঠে। পরম আবেশে চুমু খেলো আদিবের বুকে। হাস্কি স্বরে বললো,,,,
– জান গিয়েছে ?
– উহু।
– একমাসে পুরো শেষ, ধুর এতো ছোট,
– অপমান করছেন,
– আরে না একটু আগেও তো রাস্তায় করলাম।
এরপর আদিব বিসমিল্লাহ বলে সবটুকু পুড়ে দিলো, আর হায়াত,ব্যাথায় আহহহহহ বলে ওঠলো। এভাবেই রাত তিনটা পার হলো তাদের সুখের মগ্নতা শেষ হলো,শরীরে অসহ্য ব্যাথায় হায়াত চিৎকার করে কান্না করছে,আর আদিব হায়াতের হাত ধরে বসে আছে। হায়াত কান্না করছে আর বলে,
– আপনি বড়,আপনারটা কিভাবে সহ্য করবো আমি।
– জান এতো এমন করলে আবার কিভাবে করবো।
– সর বা’ল।আমার ব্যাথা।
– থাক সেরে যাবে নি।

——-
সকাল বেলা। ঘরে ছড়ানো রোদ্দুরে হালকা সোনালি আভা, পর্দা দুলছে বাতাসে। বিছানায় মুখ ঘুরিয়ে চুপ করে শুয়ে আছে হায়াত। বাইরে পাখিরা ডেকে চলেছে, কিন্তু ঘরের ভেতর নিস্তব্ধতা। এই নিস্তব্ধতার ভেতরেই আদিব ধীর পায়ে কাছে এসে দাঁড়ালো।

সে একটু ঝুঁকে হায়াতের কানের কাছে নরম গলায় বললো,
– বউ ওঠো,,,,,,জান

হায়াত কোনো সাড়া দিলো না। চোখ বন্ধ, মুখে একরাশ ক্লান্তি।
আদিব আবার একটু নিচু স্বরে, আরো মমতায় বললো,
– হায়াত, ওঠো না… গোসল করতে হবে তো।

তার কণ্ঠে মিশে ছিল অপরাধবোধ আর যত্নের ছোঁয়া। যেন সে শুধু জাগাতে নয়, ক্ষমা চাইতেও এসেছে।

হায়াত হালকা নড়ল, চোখের পাতা কাঁপলো। কিন্তু কিছু বললো না।
আদিব এবার হালকা করে হায়াতের কপালে এক চুমু খেয়ে ফিসফিস করে বললো,
– তুমি চাইলে আরেকবার শুরু করি,তারপর নাহয় গোসল করবো।
হায়াত পিটপিট করে চোখ খুললো,
– উহু সরুন।
হায়াতের ঘুম জোড়ালো মাদক কন্ঠে আদিব শুকনো ঢোক গিলে বললো,
– প্লিজ চলো।
– আচ্ছা শোনেন,নেহা আপু কে ?
– ওটা আমার খালাতো বোন, আসলে দেখবা,ওহ হ্যা ও এবার ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে।
– ওহ।

সে খুব সাবধানে, ধীরে ধীরে হায়াতকে কোলে তুলে নিলো।
হায়াত হালকা কেঁপে উঠলো, ফিসফিস করে বললো,
– আব্ আমি পারবো নিজে…

কিন্তু আদিব নরম গলায় বললো,
– হুসসসসস,আমার বউকে আমি নিয়ে যাবো তোমার কি।
স্মিত হাসলো হায়াত। বাথরুমের দিকে হেঁটে যেতে যেতে তার কণ্ঠে ছিল যত্ন, চোখে ছিল ভালোবাসার ভার।

পর্দার ফাঁকে আলো ঢুকছিল, বাতাসে পর্দা দুলছিল—সকালের সেই শান্ত দৃশ্যের ভেতর হায়াত আর আদিব এক অন্যরকম নীরবতায় ভেসে যাচ্ছিলো।

হায়াতের চুল গুলো নিজ হাতে শ্যাম্পু করে দিলো সে। হায়াত আদিবের চুল গুলো এলোমেলো করে বললো,
– এতো যত্ন, আপনি না আমাকে ডিভোর্স দিবেন বলেছিলেন হুম ?
– মাইর খাবা,রাগ করে বলেছিলাম।

সকাল ঠিক সাতটা।ব্রেকফাস্ট শেষ করে হায়াত তাড়াহুড়া করে বইগুলো গুছাচ্ছিলো। ওড়না একটু বাকা হয়ে গিয়েছিল, আদিব তা ঠিক করে দিলো নীরবে।বললো,
– আজ ক্লাস আছে তো ?
হায়াত নিচু গলায় বললো,
– হু… সকাল আটটা থেকে।
আদিব গাড়ির চাবিটা হাতে নিয়ে দরজার দিকে এগিয়ে গেলো।
– চলো, আমি দিয়ে আসি।
– আচ্ছা।
দুজনে টুকটাক কথা বলতে বলতে খাওয়া শেষ করলো।

গাড়িটা ধীরে ধীরে এসে থামলো কলেজের মূল ফটকে।
সকালটা তখনো তরতাজা, বাতাসে ভেসে আসছে বেলিফুলের ঘ্রাণ। চারপাশে হালকা ভিড়—স্টুডেন্টরা যে যার মতো ক্লাসে ঢোকার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ছেলেমেয়েদের হাসির শব্দ, রিকশার ঘণ্টা, গেটের পাশে দাড়িয়ে থাকা গার্ডের চোখে নজরদারি।

আদিব গাড়ির দরজা খুলে একদৃষ্টে তাকিয়ে রইলো হায়াতের দিকে।
হায়াত কিছুটা গম্ভীর, চোখে যেন চাপা দ্বিধা।
ও ধীরে ধীরে ব্যাগটা ঠিক করে গেটের দিকে নামতে গেলো।

আদিব গলা নামিয়ে বললো,
– হায়াত…বেবি একটা হাম্মি দাও।

হায়াত থামলো।
আদিবের গালে ছোট্ট করে চুমু খেয়ে দৌড় দিল। আদিব হেসে চুলে হাত চালাতে চালাতে ড্রাইভ করে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হলো।
চলো, এবার হায়াতের ক্লাসরুমের দৃশ্যটা দেখি—

হায়াত ধীরে ধীরে কলেজ গেট পেরিয়ে ভবনের ভেতরে ঢুকে গেলো।
একটা দীর্ঘ করিডোর, দেয়ালের পোস্টারে ভর্তি—“ফ্রেশার্স ডে”, “ডিবেট ক্লাব”, “এক্সাম রুটিন”…
জুতোর শব্দ আর গলার ফিসফাসে জমে উঠেছে সকাল।

ক্লাসরুমে ঢুকতেই কিছু পরিচিত মুখ চোখে পড়লো। হায়াত একটু হালকা শ্বাস নিলো। সামনের সারিতে জানালার পাশে বসে আছে আরাবি—হায়াত ধীরে গিয়ে পাশে বসতেই আরাবি চোখ তুলে তাকালো।খিল খিল করে হেসে বললো,
– জানু তুই এসেছিস।
– হু পাখু। ওনি দিয়ে গেলো।
– বিশ্বাস কর সোনা,আমি কাল অনেক ভয় পেয়েছিলাম,আদিব স্যার রাগী কিন্তু তার যে এতো রাগ এটা জানা ছিলো না।
– হ্যা কপাল সবই৷

ঘণ্টা বাজলো ঠিক ১২টা ৩০ মিনিটে। ক্লাসরুমে গুঞ্জন শুরু—চেয়ার টানার শব্দ, ব্যাগ গুছানোর তাড়া, আর চঞ্চল কণ্ঠে কথা বলার ছটফটানি।

হায়াত ধীরে ধীরে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ক্লাসরুম থেকে বের হলো। পাশে আরাবি, যথারীতি চঞ্চল।

– চল, একটু কলেজ গেট পর্যন্ত হাঁটি, তারপর দেখি কোথায় যাওয়া যায়। পেটেও কেমন কুড় কুড় করছে।

হায়াত হেসে বললো,
– তুই তো সবসময় খাই খাই করিস।

আরাবি ভুরু কুঁচকে নাটুকে ভঙ্গিতে বললো,
– খাওয়া ছাড়া জীবন নিষ্প্রাণ ! আর তোর জন্য স্পেশাল অফার ছিল আজ—চিকেন প্যাটিস, একদম ফ্রি!

দুজনে হাসতে হাসতে গেটের দিকে এগিয়ে গেলো।

আর তখনই…
একটা গাড়ি ধীরে এসে গেটের পাশে থামলো।
চেনা গাড়িটা দেখে হায়াতের পা থেমে গেলো।

গাড়ির জানালা একটু নামতেই ভেতর থেকে দেখা গেলো আদিব—চোখে সানগ্লাস, মুখে হালকা গাম্ভীর্য, আর সেই চিরচেনা অভিব্যক্তি—যেটা হায়াত বোঝে, ভালোবাসে, আর কিছুটা ভয়ও পায়।

আরাবি চোখ গোল করে ফিসফিস করে বললো,
– উফফ! ভাইইয়েটা একদম হিরোর মতো এনট্রি নিলো!
হায়াত লজ্জায় নিচে তাকিয়ে রইলো।

আদিব গ্লাস নামিয়ে বললো,
– চলো হায়াত। দেরি হয়ে যাচ্ছে,আর শালিকা তুমিও চাইলে নিয়ে যেতে পারি।

আরাবি চোখ টিপ দিয়ে বললো,
– ওয়াও, হায়াত ম্যাডামকে নিতে রাজপথে রাজপুত্র আসলো, না স্যার যাবো না,অন্য একদিন।

হায়াত চুপচাপ একটা হাসি চাপতে চেষ্টা করলো।

হায়াত গাড়ির দিকে এগিয়ে যেতেই, আদিব জানালা দিয়ে একবার তাকিয়ে আরাবির দিকে হালকা মাথা নেড়ে বললো,
– ধন্যবাদ, ওর পাশে থাকার জন্য।

আরাবি দাঁত বের করে বললো,
— Always welcome, স্যার! আর আপনি… খুব কিউট!
হায়াত তৎক্ষণাৎ বলে উঠলো,
— আরাবি!!
আরাবি হেসে পিছু হটতে হটতে বললো,
— আচ্ছা আচ্ছা গেলাম, কিন্তু গল্পটা পরে শুনতে হবে!

___________

গাড়ির দরজা বন্ধ হতেই আদিব গিয়ার চেঞ্জ করলো, ধীরে গাড়িটা চলতে শুরু করলো।

রাস্তাটা প্রথমে শহরের কোলাহল, দোকানপাট, রিকশার ভিড়… কিন্তু ধীরে ধীরে সব পিছিয়ে গেলো।
চেনা শহরের ধুলো মুছে গিয়ে শুরু হলো সবুজের রাজত্ব—তালগাছ, সরু মাটির পথ, মাঠের এক পাশে কৃষকরা ধান কাটছে।

গাড়িটা গ্রামের পাকা রাস্তা পেরিয়ে ঢুকছে এক সরু পথের দিকে। চারপাশে তাল-খেজুর গাছ, একপাশে ধানের ক্ষেতে বাতাসে ঢেউ খেলে যাচ্ছে। পায়ের নিচে মাটির কাঁপুনি হালকা করে উঠছে, কারণ রাস্তাটা এখন আর পাকা না—পুরোপুরি কাঁচা।

হায়াত জানালার বাইরে তাকিয়ে চমকে উঠলো। মুখটা ধীরে ধীরে কঠিন হয়ে গেলো।
সে ফিসফিস করে বললো,
– এই রাস্তাটা তো… এটাই তো উলাইলের রাস্তা…

একটু থেমে, বিস্ময়ভরা চোখে তাকিয়ে বললো,
– মানে… আমরা তো বাবার বাড়ির দিকেই যাচ্ছি!

আদিব কোনো কথা বললো না শুরুতে। শুধু সামনে তাকিয়ে ড্রাইভ করছিলো, চোখে অদ্ভুত এক স্থিরতা।তারপর এক গাল হাসি দিয়ে বললো,

– হুম জান, আমরা উলাইল যাচ্ছি,শশুর আব্বুর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে তো।

এক মুহূর্তের জন্য হায়াত যেন নিশ্বাস নিতে ভুলে গেল।
চোখে পানি চিকচিক করলেও সে সামলে রাখলো।

— আপনি … আপনি ওনাদের সামনে যাবেন সত্যিই।

আদিব এবার সত্যি একটু তাকিয়ে বললো,
— আমি ভুল করেছি।হয়তো কঠিনভাবে তোমায় নিয়েছি, হয়তো ভালোবাসায় অভিমান মিশিয়ে ফেলেছি।তোমার বাবার সামনে আমার মাথা নিচু করতে আপত্তি নেই।কারণ তিনি শুধু একজন বাবা না, একজন মানুষ, যিনি তার মেয়েকে চোখে হারান।
আর আমি তার মেয়েকে ভালোবাসি।

হায়াত আর কিছু বলতে পারলো না। ঠোঁট কাঁপলো, চোখ বেয়ে একটা নীরব অশ্রু গড়িয়ে পড়লো।

#চলবে