(রুমান্টিক এলার্ট,অতিরিক্ত রুমান্টিক গল্প পছন্দ না তারা দূরে থাকুন)
#তুই_আমার_আসক্তি
#শেষ_পর্ব
#লেখিকা_তাসনিম_তালুকদার_বুশরা
কপি করা বিশেষ ভাবে নিষিদ্ধ ❌
কয়েক মাসের অপেক্ষার পর অবশেষে সেই মুহূর্ত কাছে এল। স্নেহা বসে ছিলো খাটের এক পাশে, আর মাত্র দুই দিন বাকি ডেলিভারির দিনটি কেবল সময়ের অপেক্ষা। এই উপলক্ষ্যে নেহার একেবারেই উচ্ছ্বসিত। বাচ্চার জন্য যা যা লাগবে, সব কিছুই সে নিয়ে এসেছে ড্রেস, ডায়াপার, বেবি শ্যাম্পু, খেলনা সবকিছু নিখুঁতভাবে সাজানো।
সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছে স্নেহার আল্ট্রাসাউন্ডের ফলাফল শুনে। মেয়ের কথা জানা মানে নেহারের মনে এক ধরনের অম্লান আনন্দের ঢেউ ছড়িয়েছে। নেহার ল্যাপটপে কাজের মধ্যে মগ্ন, স্নেহা হালকা শ্বাস নিতে নিতে নিজের শরীরের নরম অনুভূতি অনুভব করছিলো।
হঠাৎ করেই স্নেহা চিৎকার করে উঠলো, আহ! ব্যথা করছে।
নেহার তৎক্ষণাত ল্যাপটপটি খুলেই টেবিলে রেখে স্নেহার দিকে ছুটে এল। তার চোখে উদ্বেগের ছায়া, হাতে সতর্কতা আর মুখে কোমল সুর, কি হয়েছে? বেশি ব্যথা করছে?
স্নেহা মাথা ঝাঁকিয়ে হ্যাঁ বোঝালো।
নেহার আর এক মুহূর্ত দেরি করলো না। আতঙ্ক, ভালোবাসা আর দায়িত্ববোধ মিলে তার পুরো দেহে যেন বিদ্যুৎ খেলে গেল। স্নেহা ব্যথায় কুঁকড়ে যাচ্ছে দেখে নেহার তাড়াতাড়ি তাকে কোলে তুলে নিলো। হালকা ঘেমে যাওয়া কপাল, ঠোঁট কাঁপছে স্নেহার নিঃশ্বাস দ্রুত হচ্ছে।
সিঁড়ি বেয়ে নামতে নামতে নেহারের মুখে একটাই কথা জান আমরা হাসপাতালে যাচ্ছি আর একটু সহ্য কর প্লিজ।
নিচে বসে ছিলেন মৌসুমী খান। ছেলের তাড়াহুড়ো করা পায়ের শব্দে চমকে তাকিয়ে দেখলেন, নেহার কোলে স্নেহাকে নিয়ে নামছে।
স্নেহা মায়ের হয়েছে…?উদ্বিগ্ন কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলেন তিনি।
নেহার তাড়াহুড়ো করে উত্তর দিলো, হাঁপাতে হাঁপাতে মা, স্নেহার পেইন উঠেছে! এখনই হাসপাতালে যেতে হবে!
এক মুহূর্তও দেরি না করে মৌসুমী খান উঠে দাঁড়ালেন। চোখেমুখে চিন্তার ছাপ, কিন্তু তবুও তিনি শান্ত থাকার চেষ্টা করলেন। নেহার সোজা দৌড়ে গিয়ে গাড়ির দরজা খুলে স্নেহাকে আস্তে করে বসিয়ে দিলো।
ততক্ষণে মৌসুমী খান পেছনের সিটে উঠে স্নেহার পাশে বসে গেলেন। নেহার গাড়ির ড্রাইভিং সিটে গিয়ে বসেই স্টার্ট দিলো, গাড়ি গর্জন করে উঠলো।
রাতের নরম বাতাসে সাইরেনের মতো গাড়ির শব্দ কেটে গেলো নিস্তব্ধতা।
স্নেহা কাঁদতে কাঁদতে বললো,নেহার অনেক ব্যথা করছে তার চোখে জল, কণ্ঠ কাঁপছে, হাত দুটো শক্ত করে ধরেছে মৌসুমী খানের শাড়ির আঁচল।
নেহার চোখ রাখলো রাস্তার দিকে, কিন্তু গলার স্বর নরম, স্নেহার কানে ভেসে এল তার আশ্বাস,
আর একটু সহ্য করো স্নেহা, আমরা পৌঁছে যাচ্ছি কেবল কয়েক মিনিট।
মৌসুমী খান স্নেহার কাঁধে হাত রেখে ফিসফিস করে বললেন,মা, চিন্তা করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে। আমরা আছি তো তোর পাশে, একটু ধৈর্য্য ধর।
গাড়ির ভিতরে নরম আলো, হালকা কান্নার শব্দ, আর গতি বাড়তে থাকা ইঞ্জিন প্রতিটি মুহূর্তে যেন তারা সবাই একটাই প্রার্থনা করছিলো সবকিছু যেন ঠিকঠাক হয়।
~~
রাত আটটা…!
হাসপাতালের করিডোরটা তখন প্রায় নিঃশব্দ। শুধু কোথাও কোথাও ফ্যানের হালকা গর্জন আর দূরে এক-আধটা কথাবার্তার শব্দ ভেসে আসছে। সাদা আলোয় মোড়া দেয়ালগুলোতে যেন অদ্ভুত এক ঠান্ডা স্নায়ু ছড়িয়ে আছে।
চেয়ারে বসে আছেন মৌসুমী খান, চোখে ক্লান্তি আর চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। পাশে দাঁড়িয়ে নেহার একটানা হেঁটে বেড়াচ্ছে করিডোরজুড়ে। তার মুখে উদ্বেগ, কপালে ঘাম, চোখে অনিশ্চয়তার ছায়া। প্রতিটি মিনিট তার কাছে একেকটা ঘন্টার মতো লাগছে।
স্নেহাকে কিছুক্ষণ আগে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে। দরজার ওপাশ থেকে মাঝে মাঝে শব্দ আসে যেন পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় মানুষটিকে হারিয়ে ফেলার ভয় আর অপেক্ষার অস্থিরতা একসাথে ছটফট করছে নেহারের ভেতরে।
মৌসুমী খান নরম গলায় বললেন,
এইভাবে চিন্তা করিস না বাবা স্নেহা মায়ের কিছু হবে না আল্লাহ বড় দয়ালু।
মৌসুমী খান নিজেও ভেতরে ভিতরে কাঁপছেন, কিন্তু ছেলের মুখ দেখে নিজেকে শক্ত রাখছেন। নেহার কোনো উত্তর দেয় না, শুধু একবার দেয়ালের ঘড়ির দিকে তাকায়, আবার মুখ ফিরে দরজার সামনে দাঁড়ায়। তার হাত দুটো বারবার মুঠো হয়ে যাচ্ছে, ঘাম ভেজা কপাল থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ছে।
সময় যেন থেমে গেছে।
অবশেষে প্রায় চল্লিশ মিনিট পর অপারেশন থিয়েটারের দরজা খুলে গেল। একজন নার্স বেরিয়ে এলো, কোলে একটি ছোট্ট সাদা কাপড়ে জড়ানো নবজাতক।
নেহার এক মুহূর্ত দেরি করল না, দৌড়ে গিয়ে বাচ্চাটিকে কোলে নিলো। তার হাত কাঁপছে, চোখে পানি জমে উঠছে। নার্স হাসি মুখে বললো,
কংগ্রাচুলেশন আপনার মেয়ে হয়েছে।
এক মুহূর্তের জন্য পুরো পৃথিবীটা যেন থমকে গেল, তারপর ধীরে ধীরে নেহারের চোখে আলো ঝলমল করে উঠলো।
আমার মেয়ে নেহার ফিসফিস করে বললো, তারপর একবার উপরের দিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করলো কৃতজ্ঞতা আর ভালোবাসার এক অদ্ভুত মিশেল তার মুখে ফুটে উঠলো।
মৌসুমী খান উঠে দাঁড়িয়ে দৌড়ে এলেন, কাঁপা গলায় বললেন,আমার কাছে দে, দেখি আমার নাতনি কেমন!
নেহার হেসে বাচ্চাটিকে তার মায়ের কোলে তুলে দিলো। মৌসুমী খান নবজাতকের মুখের দিকে তাকিয়ে হালকা কেঁপে উঠলেন চোখে জল, ঠোঁটে দোয়া।
নেহার তাড়াতাড়ি নার্সকে জিজ্ঞেস করলো,
আমার ওয়াইফ কেমন আছে?
নার্স মৃদু হাসি দিয়ে বললো,ভালো আছে ওনি। একটু পরেই ওনাকে কেবিনে শিফট করা হবে।
এই কথাগুলো শুনে নেহার অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। চোখ বুজে মাথাটা হেলিয়ে নিলো দেয়ালে যেন পুরো শরীরটা ক্লান্তি আর শান্তির মিশ্র এক ভারে ভরে গেছে।
দরজার ওপাশে নতুন এক জীবন শুরু হয়েছে আর করিডোরে দাঁড়িয়ে নেহার বুঝলো, এই রাতটাই তার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর রাত।
~~
হাসপাতালের কেবিনে তখন হাসি-ঠাট্টার হালকা পরিবেশ। ছোট্ট বাচ্চাটা ঘুমিয়ে আছে দোলনার মতো নরম বেডে, আর স্নেহা ক্লান্ত মুখে হালকা হাসি নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
ঠিক তখনই দরজাটা খুলে ভেতরে ঢুকলো ইমরান, সুহা আর আশিক। তিনজনের মুখে উচ্ছ্বাস, চোখে আনন্দের ঝিলিক।
ইমরান ঢুকেই হেসে বললো,আমাদের নেহার বাবা হয়ে গেছে! এই খবর শুনে বাড়ি তে বসে থাকা যায় নাকি?
আশিক হাত নেড়ে বললো, আর বলিস না ভাই, আমার প্রাণের বন্ধুর বাচ্চা হয়েছে দিন রাত হোক, আমি না আসলে সেটা পাপ হতো!
সুহা দৌড়ে গিয়ে স্নেহার পাশে বসলো, কণ্ঠে উত্তেজনা,আমার কলিজার বেবি হয়েছে আমি না এসে পারবো নাকি?
কেবিষ জুড়ে হালকা হাসির তরঙ্গ বয়ে গেল। আশিক হঠাৎ নাটকীয় গলায় বললো,আমাকে কেউ মেরে ফেলো! নেহার বাবা হয়ে গেলো, আর আমি এখনো বিয়েই করতে পারলাম না! হায় রে কপাল আমার!
আশিকের কথায় সবাই হেসে উঠলো। ইমরান মুখে দুষ্টু হাসি নিয়ে বললো,তুই জীবনেও বিয়ে করতে পারবি না, আশিক!
আশিক মুখ কুঁচকে বললো,কেন ভাই? আমি সারাজীবন বউ ছাড়া থাকবো নাকি?
ইমরান ঠাট্টা করে উত্তর দিলো, তোর চরিত্র দেখে কোনো মেয়েই তো তোকে বিয়ে করবে না!
হাসির রোল পড়ে গেল ঘরে। মৌসুমী খানও মুচকি হেসে মাথা নাড়লেন।
এদিকে সুহা বেবি কে কোলে নিয়ে বললো,আহা, কত্তো কিউট আমার বেবিটা!
নেহার সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলো,এই! মোটেও না, ও আমার বেবি।
সুহা মুখে ভেংচি কেটে বললো,এহ্, বান্ধবীর বেবি মানেই নিজের বেবি, বুঝলেন?
ইমরান হেসে যোগ করলো,বান্ধবীর আর কিছু নিজের বলো নাই তাই অনেক।!
স্নেহা মৃদু হাসি চেপে বললো,আপনিও না ভাইয়া, আমার ভোলাভালা বান্ধবীকে কীসব বলেন?
নেহার চোখ টিপে বললো,আসছে ভোলাভালা বলতে,দুইটাই দাজ্জাল! আমার আর আমার বন্ধুর জীবনটা ঝালাফালা করে দিছে।
স্নেহা ভ্রু কুঁচকে তাকালো,কি বললেন আপনি?
নেহার দাঁত কেলিয়ে হেসে বললো,কিছু না মা, কিছুই না।
তার ভয় পাওয়া মুখ দেখে ইমরান, আশিক আর সুহা একসাথে হেসে উঠলো। কেবিন ভরে গেল হাসির আওয়াজে, ছোট্ট শিশুর নরম নিঃশ্বাসের সঙ্গে মিশে তৈরি হলো এক উষ্ণ ভালোবাসায় ভরা মুহূর্ত।
আর স্নেহা চুপচাপ বসে, সেই হাসির ভেতরেই নিজের জীবনের নতুন অধ্যায়টা অনুভব করলো একটা পরিবার, একগুচ্ছ ভালোবাসা, আর এক টুকরো ছোট্ট স্বপ্ন, যা এখন তার বুকে ঘুমিয়ে আছে।
~~
রাত তখন এগারোটা।
কেবিন টা একদম নিস্তব্ধ যেন এক ঘন্টা ব্যাপী হাসি-আড্ডা, কলরব সব মিলিয়ে এখন শুধু নরম আলোয় ভাসছে ক্লান্ত এক সন্ধ্যা। একটু আগেই সবাই চলে গেছে। বেডের কোণে একা শুয়ে আছে স্নেহা, গাল ফুলিয়ে, মুখটা রাগে আর অভিমানে গম্ভীর হয়ে আছে।
নেহার দরজার পাশে দাঁড়িয়ে খানিকক্ষণ চুপচাপ তাকিয়ে রইলো মেয়েটার দিকে। তারপর ধীরে ধীরে এসে পাশে বসে বললো এই মুখখানা এত ফুলিয়ে রেখেছো কেন? একটু আগে যা বলেছিলাম, ওটা তো মজা করে বলেছি রে।
স্নেহা কোনো উত্তর দিল না। কেবল তাকালো একবার, তারপর মুখ ঘুরিয়ে নিলো অন্যদিকে।
নেহার হালকা হেসে বললো,বিশ্বাস করো জান, আমার একমাত্র কন্যার মা আমি। ওর সামনে এমন কিছু বলব ভাবিওনি। তুমি যে এভাবে সিরিয়াসলি নেবে, একদম ভাবিনি। ক্ষমা করে দাও,আর কখনো এমন কিছু বলবো না।
স্নেহা এবার চোখ তুলে তাকালো। চোখে একটু একটু রাগ নিয়ে বললো,হুঁ, একটু আগে একটা বললেন, এখন আবার উল্টোটা বলছেন। কেনো বলেন এমন কথা? তুই বলেন আমাকে তাহলে এখন তুমি কেনো বলছেন ডং করে..!?
নেহার মুচকি হেসে, ঠোঁটের কোণে একটু দুষ্টু হাসি টেনে বললো,কারণ আমার বাবুর মা রেগে আছে।
স্নেহা এবার চোখ কুঁচকে তাকালো,তাতে আপনার কী যায় আসে?
নেহার এবার আস্তে করে স্নেহার হাত ধরে বসালো তাকে।স্নেহার মুখে এখনও একটু রাগের ছায়া তবে সেই রাগটা যেন অভিনয়ের, একরাশ আদরের ভেতর লুকানো ছোট্ট মান অভিমান। নেহার বোঝে ওর স্নেহা সত্যিই রেগে নেই শুধু দেখতে চায়,সে কতটা বুঝতে পারে ওকে।
নেহার আলতো করে স্নেহাকে নিজের বুকে টেনে নিলো। দু’জনের নিঃশ্বাস মিশে গেলো একসাথে, ঘরে যেন হালকা চন্দন গন্ধ ছড়িয়ে পড়লো। নেহা আস্তে করে ওর ছোট ছোট চুলগুলো কানে গুঁজে দিলো, তারপর গলায় নরম স্বরে বললো,তুমি আমার সব, গো জান।তুমি আমাকে পৃথিবীর সেরা উপহার দিয়েছো আমাদের মেয়ে কে।তুমি রাগ করলে আমার কিছু যায় না আসবে না, বলো? তাহলে কার রাগে যায় আসবে..?
স্নেহা মুখে রাগ ধরে রাখার ভান করলেও ঠোঁটের কোণে হাসিটা লুকিয়ে রাখতে পারলো না। চোখের কোণে জমে থাকা অভিমানটা ধীরে ধীরে গলে গেলো নরম ভালোবাসায়।
ও মৃদু হেসে পাশের দোলনায় ঘুমন্ত মেয়ের দিকে তাকালো।আমাদের ভালোবাসার চিহ্ন তাই না?
নেহার স্নেহার গালে হাত রেখে মাথা নেড়ে বললো,
হু আমাদের ছোট্ট সংসারের প্রাণ।
স্নেহা এবার মুখ নিচু করে হেসে ফেললো। নেহা ওর দিকে তাকিয়ে আরও কাছে ঝুঁকে এল আমি শুধু তোকে ভালোবাসা না, স্নেহা
#তুই_আমার_আসক্তি।তুই ছাড়া আমি অচল।
স্নেহা লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে নরম স্বরে বললো,
আমিও আপনাকে অনেক ভালোবাসি, নেহার।
নেহার হেসে মাথা নিচু করলো। তারপর দোলনায় ঘুমন্ত বেবির দিকে তাকিয়ে বললো—দেখ, আমাদের ভালোবাসা এখন নিঃশব্দে ঘুমোচ্ছে ছোট্ট হাত মুঠো করে।
কেবিনের বাতাসে তখন শুধু একটাই শব্দ ভালোবাসার নিঃশ্বাস।বাইরে হালকা বাতাস বইছে, আর ভেতরে এক সংসার নিঃশব্দে পূর্ণ হয়ে উঠছে আদরে, চিরন্তন মায়ায়।
~ সমাপ্তি ~
ভালোবাসার কি কখনো শেষ হয়…? নাহ্..! ভালোবাসার একখানি অংশ আপনাদের মাঝে তোলে ধরার চেষ্টা করেছি শুধু।আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে💜🫶।