Game Part-13

0
682

#Game
#মিমি_মুসকান ( লেখনিতে )
#পর্ব_১৩

আনহা এখনো বিশ্বাস করতে পারছে না তার সামনে অভ্র দাঁড়ানো। সে হা করে দাঁড়িয়ে আছে। অভ্র ও তাকিয়ে আছে আনহা’র দিকে। তার বিশ্বাস’ই হচ্ছে না তার সামনে আনহা দাঁড়ানো। বাকি আর কেউ অবাক হয় নি কারন তারা সবাই জানতো। শুধু অভ্র’ই জানতো না, আর এদিকে আনহা। নিহা অভ্র’কে খোঁচা দিয়ে বলে..

– কি হলো দা এতো অবাক কেন?

অভ্র’র এতোক্ষণে হুশ ফিরল। এদিকে মেহেরিন গিয়ে আনহা কে ধরে ভিতরে আনলো। আনহা’র হুশ ফিরল। নীল এসে অভ্র’কে ধরে সামনে নিয়ে গেল আর মেহেরিন আনহা কে। দুজনকে দুজনের সামনে আনা হলো। দুজনেই দুজনকে দেখে অবাক। নীল অভ্র’র কানে কানে বলে উঠে..

– কি দা আর কতোকাল এভাবে তাকিয়ে থাকবে!

নীলের কথায় অভ্র এবার মাথা নিচু করে ফেলে। রোদ্দুর এসে বলে..

– ছবিতে তো বউ কে দেখতে চাইলে না আর এখন তো দেখছি….

কাব্য বলে উঠে..
– এখন তো দেখছি চোখ’ই সরছে না।

ইহান বলে উঠে..
– তাহলে বলতে হবে বউ’কে পছন্দ হয়েছে!

মেহেরিন বলে উঠে..
– পিন্চ দেওয়া বন্ধ কর। ভাই নাও হাত ধরে ওই খানে বসার আসন দেওয়া আছে। সেখানে নিয়ে যাও!

অভ্র মেহেরিন’র দিকে একবার তাকায়। অতঃপর আনহা’র সামনে গিয়ে হাত এগিয়ে দেয়। আনহা ওর হাতের দিকে তাকিয়ে অভ্র’র মুখের দিকে তাকায়। অভ্র চোখের ইশারায় হাত ধরতে বলে। আনহা কাঁপা কাঁপা হাতে অভ্র’র হাতটা ধরে।‌ অতঃপর একগাল হেসে তাকিয়ে থাকে। এতোক্ষণে বিশ্বাস হলো ওর সামনে আসলেই অভ্র দাঁড়ানো। মেহেরিন মুচকি হেসে ডেভিল কে বলে..

– ডেভিল কে জানি বিয়ে করতেই চাইছিলো না আর এখন একটু বেশি’ই খুশি!

মেহেরিন’র কথায় আনহা লজ্জায় মুখ নামিয়ে ফেলে।‌এদিকে‌ অভ্র’র লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। নিহা আর নিশি কিছুক্ষণ পিন্চ মেরে মারে। অতঃপর অভ্র আনহা ধরে নিয়ে বসায় আর নিজেও বসে। কিন্তু হাত’ই ছাড়ে না অভ্র’র! অভ্র বলে উঠে..
– হাত ছাড়ো সবাই দেখছে!

– আমার না বিশ্বাস’ই হচ্ছে না এটা আপনি!

– আসলে আমার’ও না।

– ধুর মজা করছেন আমার সাথে।

– আরে না সত্যি বলছি!

– আচ্ছা একটা কথা বলি,

– হাত’টা ছাড়ো আগে!

– না ছাড়বো না।

– ছাড়ো সবাই দেখছে।

– দেখুক গে ছাড়বো না।

নিশি বলে উঠে..
– সমস্যা নেই মিষ্টি ভাবো ধরে রাখো! এভাবে সারাজীবন আমার দা কে ধরে রাখলেই হবে!

নিশি’র কথায় সবাই জোরে জোরে হেসে উঠে। আনহা লজ্জা পেয়ে হাত’টা ছেড়ে দিতে নিলে অভ্র ধরে রাখে। আনহা অভ্র’র দিকে তাকিয়ে থাকে। অভ্র জবাবে কিঞ্চিত হেসে বলে..
– কি জানি বলবে বলছিলে?

– হুম!

– কি?

– আচ্ছা এখন বিয়ে করবেন আমায়?

– বলেছিলাম তোমায় আমার বোনের যাকে পছন্দ তাকেই বিয়ে করবো। ওর যদি তোমাকে পছন্দ হয় তাহলে তোমাকে বিয়ে’ই করবো!

– ইশ আমি যদি আগেই ছেলেটার ছবি দেখে ফেলতাম তাহলে হয়তো এতো কিছু হতো না।

জবাবে অভ্র মুচকি হাসে। কিছুক্ষণ গান বাজনা চলতে থাকে। শুভ্র খান আনহা’র মা বাবা’র সাথে কথাবার্তা বলেন। অতঃপর বিয়ের কাজ শেষ হয়। আনহা বিদায় নিয়ে খান বাড়ির জন্য রওনা হয়।

অতঃপর খান বাড়িতে…
আনহা কে ভিতরে আনা হবে। বাড়ির সবাই উপস্থিত সেখানে। আনহা বাড়ির ভেতর পা রাখতে যাবে তখন নিহা বলে উঠে..

– আরে আরে কি করছো কি থামো থামো!

আনহা কপাল কুঁচকে পিছনে চলে যায়। তার সাথে সাথে সবাই অবাক। কিন্তু কাব্য বলে উঠে..

– নতুন বউ’কে কি হেঁটে নিয়ে যাবে নাকি দা!

অভ্র মৃদু হেসে কোলে তুলে নেয় আনহা কে। হুট করেই এমন কোলে তুলে নেওয়ায় ভয় পেয়ে যায় আনহা। মেহেরিন লাফিয়ে হাত তালি দিতে থাকে। অভ্র আনহা কে কোলে তুলে ভিতরে নিয়ে যায়!
.
ঘরের ভিতরে এসে দু’জনেই অবাক। বেশ চমৎকার ভাবে মোমবাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে পুরো ঘর। নীল বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। আনহা অভ্র’র কোলে থাকা অবস্থায় পা দুলাতে থাকে। অভ্র ভ্রু কুঁচকে বলে..
– নামো আমার কোল থেকে!

– যাহ বাবা কোলে তুললেন আপনি! আমাকে বলছেন কেন?

– হ্যাঁ আমিই তুলেছি এখন নামো!

– কেন নামবো। আমার বরের কোলে আমি উঠেছি কার কি?

অভ্র আনহা’র দিকে তাকিয়ে কিঞ্চিত হেসে তাকে খাটে ধপাস করে ফেলে দেয়। আনহা কপাল কুঁচকে তাকিয়ে থাকে। অভ্র বলে উঠে…

– আমি আগে ফ্রেশ হয়ে আসছি।

– কিহহ?

– হুম!
বলেই অভ্র আলমারি দিকে গিয়ে জামা কাপড় বের করে। সামনে ফিরে তাকিয়ে দেখে আনহা তার সামনে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অভ্র বলে উঠে..

– কি হলো?

– আপনার সামনে আমি দাঁড়ানো আর আপনি যাচ্ছেন ফ্রেশ হতে!

– তো কি করবো! ফ্রেশ হবো না।

– না ফ্রেশ তো হবেন আমি বলতে চাচ্ছি ফ্রেশ হয়ে এসেন কি করবেন!

– কি করবো মানে! তুমি জানো না কাল আমাদের একটা ইম্পর্ট্যান্টে একটা মিটিং আছে, সেটার কিছু কাজ সেটা করবো, তারপর ঘুমাবো! কাল তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে হবে, সকাল সকাল অফিসে যেতে হবে। আর হ্যাঁ আমার সাথে তুমি ও তো যাবে। তাহলে এখনো কি করছো। যাও ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে নাও। নাহলে সকাল সকাল উঠতে পারবে না। শেষে অনেক ঝামেলা হবে আর আমার পিএ তুমি। তোমার কাজ বেশি। আচ্ছা পিএ’র কাজটা কি করবে নাকি ছেড়ে দিবে!

আনহা অভ্র’র দিকে কিছুক্ষণ মুখ ঘুরিয়ে বলে..
– এইটা আশা করছিলাম আপনার থেকে। এতোটা নিরামিষ একটা বরের প্রেমে যে কিভাবে আমি পড়লাম সেটাই ভাবছি!

– বলেছিলাম না তোমার ডাক্তার’র কাছে যাও। তোমার চোখে সমস্যা আছে, যখন তখন যেখানে সেখানে পড়ে যাও!

– আপনি!

– হোয়াট!

– আপনি আপনি আপনি একটা… ধুর!

– কি?

– কিছু না কিছু না! সামনে একটা সুন্দরী বউ দাঁড়িয়ে আছে কোথায় বউ’র এর সাথে মিষ্টি কিছু কথা বলবেন না তা না। মুখ দিয়ে যা বলেন তাই তেতো লাগে।

– তো কি করতে বলছো আমায়?

দাঁতে দাঁত চেপে বলে..
– কিছু না যান ফ্রেশ হয়ে আসুন!

বলেই আনহা চলে যেতে নেয়। হুট করেই অভ্র আনহা’র বাহু ধরে ঘুরিয়ে দেওয়ালে ঠেকিয়ে দেয়। আনহা অনেকটা ভয় পেয়ে যায়। সামনে তাকিয়ে দেখে অভ্র তার দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ করেই অভ্র তার কাছে আসতে থাকে। আনহা অভ্র’র কাছে আসা দেখে ভয়ে চোখ বন্ধ করে নেয়। অভ্র’র খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি গুলো আনহা’র গালে লাগে। অভ্র আনহা’র গালে হালকা করে একটু চুমু খায়। আনহা চোখ বন্ধ করে তার প্রতিটি স্পর্শ অনুভব করতে থাকে। কিছুক্ষণ বাদে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে অভ্র তার সামনে নেই। আনহা এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে অভ্র ওয়াশরুমের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে দাঁত বের করে হেসছে। আনহা তাকে দেখে মুখ ভেংচি দিয়ে বিছানায় গিয়ে বসে।

ভোরবেলা..
আনহা ঘুম থেকে উঠে থেকে অভ্র নেই। সে উঠে ফ্রেশ হয়ে ঘরের বাইরে বের হয়। পুরো বাড়ি শান্ত, সবাই মনে হয় ঘুমে বিভোর এখন। কিন্তু অভ্র এখন কোথায়? এতো ভোরে কোথায় গেলো সে? আনহা হাঁটতে হাঁটতে ডয়িংরুমে এসে পৌঁছাল। কেউ আছে রান্না ঘরে মনে হচ্ছে। রান্না করার শব্দ আসছে। সার্ভেন্ট কি রান্না করছে তাহলে। আনহা ভাবল তাকেই জিজ্ঞেস করা যাক অভ্র’র কথা। তাই সে হেঁটে রান্না ঘরের দিকে গেল। কিন্তু সেখানে গিয়ে সে চমকে উঠল। কারন অভ্র রান্না করছে। আনহা কে অভ্র মুচকি হেসে বলে..

– গুড মর্নিং!

– মর্নিং! কিন্তু আপনি এখানে, এখন, এভাবে কি করছেন?

– দেখতেই পাচ্ছো রান্না করছি!

– কিন্তু আপনি কেনো? আমাকে বললেই পারতেন। আমি করে দিতাম!

– ঘুমি তো গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলে। তাই! আর বড় কথা হলো তুমি এই বাড়ির নতুন বউ তোমাকে আমি রান্না করতে বলবো! আমি ঘাড়ে কটা মাথা শুনি!

– কিন্তু আপনি..

– আমি রান্না করতে পারি, আর রান্না টা বরাবরই আমি করি‌। একটু পরেই আদুরী এসে খেতে চাইবে। কালকে রাতে নিশ্চিত না খেয়ে ঘুমিয়েছে। খাবার না খেয়ে শুধু নেচেছে আর দৌড়াদৌড়ি করেছে। ক্ষুধার কারনে দেখবে এই ভোর বেলা উঠে পড়বে সে।

– এতো ভালো করে জানেন আপনি!

– আমার বোন ও আমি জানবো না তো কে জানবে! তোমার কিছু লাগবে!

– হুম এক কাপ চা,পাওয়া যাবে!

– দু’মিনিট বসো আমি দিচ্ছি।

– হেল্প করি একটু আপনার!

– না আমি পারবো।

– জানি তো তাও একটু করি!

– আচ্ছা তাহলে এই খাবার গুলো একটু টেবিলে রাখো।

– হুম!

সত্যি সত্যি খানিকবাদে দা দা বলে ডাকতে ডাকতে মেহেরিন উদয় হলো। অভ্র মুচকি হেসে বলল..

– আমি এখানে!

মেহেরিন সোজা এসে মেঝেতে বসে পড়ল। আর বলতে লাগলো…

– আমার খুব খিদে পেয়েছে খেতে দাও!

অভ্র নিচ থেকে মেহেরিন কে কোলে তুলে সোফায় বসিয়ে দিল।‌ অতঃপর খাবার নিয়ে মেহেরিন কে খাইয়ে দিতে লাগলো। আনহা এক পাশে দাঁড়িয়ে চা খেতে খেতে দুই ভাই বোনের ভালোবাসা দেখতে লাগলো। অনেকক্ষন পর মেহেরিন’র চোখে পড়ল আনহা কে। সে আনহা’র দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলল..

– তুমি আমাদের বাসায় কি করছো মিষ্টি আপু ?তাও এতো সকাল সকাল!

আনহা থতমত খেয়ে গেল। কি বলবে বুঝতে পারলো না। অভ্র মুচকি মুচকি হাসতে লাগল। হুট করেই রোদ্দুর বলে উঠল…
– এখন মিষ্টি আপু না ভাবী হবে! এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেলি! কাল না বিয়ে হলো!

মেহেরিন দাঁত বের করে হেসে..
– সরি সরি ভুলে গেছিলাম তুমি এখন আমার মিষ্টি ভাবী। তো আজকে তো রিসেপশনে’র অনুষ্ঠান আছে নাহ।

অভ্র বলে উঠে…
– হুম সেটা তো সন্ধ্যায়! তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও আমি অফিসে যাবো।

নিহা বলে উঠে..
– আজও! গুড মর্নিং মিষ্টি ভাবী!

– মর্নিং!

– হুম একটা ইম্পর্ট্যান্টে কাজ আছে। দুপুরে চলে আসবো।

মেহেরিন বলে উঠে..
– ভালো যাও! আমি মিষ্টি ভাবী কে নিয়ে সময় কাটিয়ে দেবো।

– না আনহা যাবে আমার সাথে। আমার পিএ ও। সে না গেলে আমার কাজ হবে কি রে?

এমন সময় শুভ্র খান ও চলে আসে। সে এসব শুনে বলে উঠে..
– নতুন বউ কে দিয়ে আজও অফিসের কাজ করাবি!

আনহা শুভ্র খান কে দেখে বলে উঠে..
– গুড মর্নিং বাবা!

– মর্নিং মা। সমস্যা হচ্ছে না তো তোমার!

– না বাবা একদম না।

– এখন এই বাড়ির বউ তুমি! সব কিছু দেখে শুনে তুমি’ই রাখবে। এতোদিনের অগোছালো সংসার সামলাবে।

মেহেরিন বলে উঠে..
– আমি মোটেও অগোছালো নই!

মেহেরিন’র কথায় সবাই ফিক করে হেসে দেয়। অভ্র ও হেসে উঠে। মেহেরিন মুখ ভেংচি দিয়ে বলে…
– বাপি আজকে তুমি ব্যাক করবে মনে আছে তো।

– আছে মামনি!

আনহা বলে উঠে..
– বাবা আজ’ই চলে যাবেন!

নিহা বলে উঠে..
– হুম!

– আর ক’দিন থাকলে হতো না।

– না মিষ্টি ভাবী! আমাদের শত্রুদের অভাব নেই। কে কখন হিংস্র হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়বে জানি না।

আনহা শুভ্র’র দিকে তাকিয়ে বলে..
– সাবধানে যাবেন বাবা!

– অবশ্যই মা!
.
দুপুরের দিকে রওনা হয় শুভ্র খান। ডেভিল নিজে তাকে পৌঁছে দিতে যায়। বিকালের দিকে সবাই মিলে অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে থাকে। হঠাৎ একজন গার্ড এসে বলে..
“শুভ্র’র গাড়ি নাকি ব্লাস্ট হয়েছে!”

কথাটা শোনা মাত্র সবার মুখ মলিন হয়ে গেল। আনহা ভয়ে অভ্র’র হাত চেপে ধরল। অভ্র তার দিকে মুখ করে মৃদু হাসল। আনহা অবাক হয়ে মেহেরিন’র দিকে তাকাল। দেখল মেহেরিন বাঁকা হেসে সবার দিকে তাকিয়ে আছে। ইহান বলে উঠল..

– জান সেই লেভেলের প্ল্যানিং করলি। বাট তুই বুঝলি কিভাবে এমন কিছু হবে না।

– এটা হবে সবার জানা’ই ছিলো। সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পাগলও ছাড়ে না আর তাড়া তো আমাদের শত্রু।

নিশি বলে উঠল..
– ডেভিল কে ফোন করে জিজ্ঞেস করি বাপি পৌঁছেছে কি না।

– হুম করো!

অতঃপর ডেভিল জানাল শুভ্র খান ‌ফ্লাইটে উঠে পরেছে।‌ আনহা এবার হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। তবে সবকিছু তার মাথার উপর দিয়ে গেল। তাই প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে সবার দিকে তাকাল। নিহা বলে উঠল..

– মিষ্টি ভাবী টেনশন নিয়ো না। সকালে তোমাকে বললাম না শত্রুদের অভাব নেই আমাদের।

– কিন্তু কি করে কি হলো!

কাব্য বলে উঠে..
– তেমন কিছু না, যেই গাড়ি করে মামা বের হয়েছিল মাঝপথেই সেটা থেকে নেমে গেল। অতঃপর অন্য গাড়ি আর অন্য রাস্তা দিয়ে চলে গেল। যারা নজর রেখেছিল তারা ভুল গাড়ি কেই উদ্দেশ্য করে চলতে লাগল। তারপর তারা তাদের প্ল্যানিং মতো কাজ করে মারার চেষ্টা করলো তবে পারলো না। যাই হোক আদুরীর প্ল্যান টা দারুন ছিল। অন্য রাস্তায় গেলেও সেখান থেকে আরো কয়েকবার গাড়ি চেঞ্জ করানো হয়েছিল!

আনহা মেহেরিন’র দিকে তাকাল! মেহেরিন চকলেট খেতে খেতে বলল..

– মিষ্টি ভাবী চিল! অভ্যাস করে নাও এসবের। এখন এ বাড়ির বউ তুমি। এরকম আরো অনেক কিছু দেখতে হবে!
.
সন্ধ্যায় যথা সময়ে অনুষ্ঠান শুরু হলো। সবাই উপস্থিত সেই অনুষ্ঠানে বিজনেস পার্টনার, মিডিয়া এছাড়া আরো কিছু ব্যক্তিবর্গ। মেহেরিন আনহা কে সবার সাথে পরিচয় করাচ্ছে। অনেক মজা করছে সবাই মিলে। এক জোড়া চোখ দৃষ্টিহীন ভাবে দেখছে মেহেরিন কে। মেহেরিন’র মুখের হাসি সহ্য হচ্ছে না তার। প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছে সে। মেহেরিন’র দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেঁসে বলে..

– নিজের বাপি কে তো বাঁচিয়ে নিলে তুমি কিন্তু তোমাকে কে বাঁচাবে মেহেরিন বর্ষা খান! আমিও দেখবো এই হাসি নিয়ে কতোদিন থাকো তুমি!
.
ইহান, রোদ্দুর,কাব্য আর নিশি এক্সাম কয়েকদিন আগে এক্সাম দিয়েছে। রেজাল্ট বের হলেই ভার্সিটিতে ভর্তি হবে সবাই। এদিকে নিহা কাজের জন্য একজন কে ফলো করছিল। তাকে ফলো করতে করতে তার আস্তানায় পৌঁছে গেল সে। সেখানে সব অবৈধ অস্ত্রের কাজ চলছিল! নিহা সমস্ত কাজের প্রমাণ জোগাড় করছিল এটা তাদের জন্য অনেক লাভবান হবে। কিন্তু হঠাৎ করেই ধরা পড়ে গেল নিহা। সে সেখান থেকে পালিয়ে দৌড়ে চলে আসল। কিন্তু তার পিছন পিছন কিছু লোক দৌড়ে আসতে লাগল। নিহা তার গায়ের জ্যাকেট টা খুলে রাস্তায় ফেলে দিয়ে একটা চলন্ত বাসে উঠে পরল। লোক গুলো তাকে আর পেলো না। গায়ে একটা কালো রঙের টি শার্ট আর জিন্স। নিহা হাঁফাতে হাঁফাতে বাসের একটা সিটে এসে বসল। কিছুক্ষণ বসার পর পাশের সিটের থাকা লোকটা তাকে বলে…

– এই যে মিস ভূতনি!

নিহা চমকে তাকাল। দেখল এতো আহিয়ান। তাকে খেয়াল করিনি সে এতোক্ষণ। সে বলে উঠে…

– আপনি!

#চলবে….