#Game
#মিমি_মুসকান ( লেখনিতে )
#পর্ব_২৪
মেহেরিন একা একাই বাস্কেটবল খেলছিল। আসলে সেদিন ইহান, রোদ্দুর, নীল আর কাব্য বাইরে গিয়েছিল। অভ্র আনহা কে নিয়ে গেছে হসপিটালে। নিশি ঘুমাচ্ছিল আর নিহা কাজে ব্যস্ত ছিল তাই মেহেরিন একা একা বোর হচ্ছিল। বাস্কেটবল টা একবার এদিক একবার ওদিক করছিল। হঠাৎ করেই আহিয়ান বল টা ধরল। মেহেরিন তাকিয়ে দেখল আহিয়ান হেসে তার দিকে তাকিয়ে আছে। সে বলল..
– বাস্কেটবল খেলবেন আমার সাথে!
– তুমি পারবে!
– দেখা যাক!
অতঃপর দুজনেই খেলতে শুরু করল। দুজনেই খুব ভালো খেলল। মেহেরিন খুব ভালো ভাবেই আহিয়ান কে টক্কর দিলো। দুজনেই খেলে খুব হাঁপিয়ে গেল। বসে পানি খেতে লাগল হুট করেই গাড়ির শব্দ আসায় মেহেরিন লাফ দিয়ে উঠল। সে বলতে লাগল..
– দা এসেছে, মিষ্টি ভাবী কে নিয়ে!
বলেই দৌড়ে যেতে লাগল। হঠাৎ করেই পা মোচকে গেলো তার। সে পা ধরেই ধপাস করে বসে ভ্যা ভ্যা করতে লাগলো। আহিয়ান দূর থেকেই এসব দেখে হাসতে লাগলো। মেহেরিন তার নকল কান্না থামিয়ে আহিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলল..
– আমি ব্যাথা পেলাম আর জিজু আপনি হাসছেন!
আহিয়ান হাসি থামিয়ে বলল..
– দা ঠিক’ই বলেছিল, তুমি আসলেই একটা বিড়াল বাচ্চা! হুটহাট করে যখন তখন লাফ দেও আর পড়ে গিয়ে বাচ্চাদের মতো ভ্যা ভ্যা করো।
– আমি কিন্তু সত্যি বাচ্চা!
– হ্যাঁ হ্যাঁ জানি তো!
মেহেরিন মুখ ভেংচি দিয়ে জোরে জোরে বলতে লাগল…
– দা, ভাইয়া, দি, আপু কোথায় তোমরা! তোমাদের আদরের আদুরী খুব ব্যাথা পেয়েছে। পিচ্চি মেয়েটা বসে আছে উঠতেও পারছে না। এ্যা এ্যা।
আহিয়ান মেহেরিন’র পাশে বসে বললো….
– সব তো ঠিক আছে কিন্তু তুমি শব্দের অর্থ কেন বলছো। দা অর্থ যে ভাইয়া, দি অর্থ আপু আমরা সবাই জানি!
– আচ্ছা আমাকে বলুন তো আপনাকে আমার জিজু কে বানিয়েছে!
– তুমি! এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে, ব্লেকমেইল করে বিয়ে করিয়ে দিলে নিজের দি’র সাথে।
– ওহ হ্যাঁ মনে এসেছে। কিন্তু জিজু আমি শব্দের অর্থ বলছি না। দা অর্থ বড় ভাইয়া , দি অর্থ বড় আপি , ভাইয়া অর্থ ছোট ভাইয়া মানে নীল ভাইয়া আর দি মানে..
– নিশি মানে ছোট তোমার ছোট আপু রাইট!
– ইয়াপ ইয়াপ!
– কিন্তু আমাকে বলে এরকম শব্দের অর্থ কবে থেকে হলো!
– যেদিন থেকে আমার জন্ম। আসলে ওরকম বড় ভাইয়া বড় আপু ডাকতে ডাকতে আমি ক্লান্ত!
– দিনে ৪০ বার ডাকলে এরকম তো হবেই!
– আমার দা আমার দি আমি ডাকি। আপনার কষ্ট কোথায়?
– আমার কষ্ট নেই তবে তোমার পায়ের ব্যাথা কি কমে গেছে!
– খুব ব্যাথা করছে, এ্যা এ্যা! দি কোথায় তুমি! আমি ব্যাথা পেয়েছি আর তোমার বর আমাকে নিয়ে মজা করছে!
– আরে আরে মজা করলাম কোথায়, আর তোমার এই ন্যাকা কান্না বন্ধ করো। কাঁদছো না তো কিছুই বরং পুরো বাড়ি মাথায় নিচ্ছো!
– আপনার আমাকে দেখে মনে হয় এতো শক্তি আমার আছে!
– আচ্ছা তোমাকে ধরে নিয়ে যাবো, ওরা মনে হয় না কেউ তোমার ডাক শুনছে!
– ধরবেন মানে কোলে তুলুন। আমার পায়ে ব্যাথা, হাঁটব কিভাবে?
– ওকে!
বলেই মেহেরিন কে কোলে তুলল! মেহেরিন বলতে লাগল..
– হিসেব করলে কিন্তু আমি আপনার শত্রু হই তাই না জিজু!
– কিন্তু শত্রু বিপদে পড়লে সাহায্য করতে হয় তাই আমি করছি!
– এটা কি আপনাকে সুইট আন্টি বলেছিল!
– কেন?
– না আমার মা’ও আমাকে এই কথা বলতেন। শত্রু বিপদে পড়ে সাহায্য তাইলে তাকে সাহায্য করা উচিত!
– সব মায়েরাই এই কথা বলে বুঝলে!
মেহেরিন আবার ও সবাইকে ডাকতে লাগল। চেঁচিয়ে ডাকার কারনে আহিয়ান’র কান ফেটে যাচ্ছিল। এদিকে মেহেরিন’র কথা শুনে অভ্র, নিহা আর নিশি দৌড়ে এলো। মেহেরিন কে আহিয়ানের কোলে দেখে সবার অস্থিরতা বেড়ে গেলো। জলদি ডাক্তার ডাকা হলো।
আহিয়ান শুধু ওর তিন ভাইবোনের ছোটাছুটি দেখছিল। তারা সবাই যেনো পাগল হয়ে গেছিল!
.
রাতে নিহা এক গ্লাস দুধ আর চকলেট নিয়ে যায় মেহেরিন’র রুমের দিকে। তাকে দেখে আহিয়ান ও সাথে যায় মেহেরিন কেমন আছে তা জানতে। সেখানে গিয়ে আহিয়ান মাথা ঘুরিয়ে মেহেরিন কে দেখার চেষ্টা করে। সে বিছানায় পা আর মেঝেতে মাথা রেগে ফোনে গেমস খেলছে। সবাই সেখানেই ছিল! আহিয়ান বলল…
– তোমার না পায়ে ব্যাথা!
– তাই তো পা বিছানায়!
– তোমাকে বোঝা সত্যি দায়! পায়ের ব্যাথা এখন কেমন!
– কিউট কিউট আছে!
এরমাঝে মেহেরিন’র বিড়াল বাচ্চা এসে হাজির। সে মেহেরিন মাথার কাছে বসে মিয়াও মিয়াও করতে লাগলো! আহিয়ান বিড়াল টাকে নিয়ে বলল..
– ওর ক্ষুধা পেয়েছে আমি ওকে খেতে দেই!
বলেই তাকে নিয়ে গেল।
নিহা মেহেরিন কে উঠিয়ে বসাল। নিশি বলে উঠে..
– জিজু’র রাগ কমেছে কমেছে বলে মনে হচ্ছে!
– উনার বিড়াল পছন্দ বলে এমন… মেহেরিন গরম দুধটা খেয়ে নাও!
– ছিঃ ইয়াক আমি এসব খাবো না!
কাব্য বলে উঠে..
– পায়ের ব্যাথা কমে যাবে!
– সেটা কাল অবদি এভাবেই ঠিক হবে!
নিহা বলে উঠে..
– এটা খেলে চকলেট দেবো! ভেবে নাও তুমি দাঁড়াতে পারবে না আর আমি কাউকে তোমাকে চকলেট ও দিতে দেবো না!
-….
– তাকিয়ে লাভ নেই খেয়ে নাও। তারপর ঘুমিয়ে পড়ো!
অবশেষে মেহেরিন হার মেনে খেয়ে নেই। গ্লাস টা নিহা নিতেই নিহা’র হাত থেকে চকলেট টা কেড়ে নিয়ে বলে…
– কে জানে এর লোভ দেখিয়ে আর কি কি করতে বলবে তুমি আমায়।
মেহেরিন’র কথায় সবাই হেসে একাকার!
.
আহিয়ান বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে, নিহা এক কাপ চা ওর সামনে রাখল। আহিয়ান কিছু না বলেই চা টা নিলো। নিহা ওর পাশে দাঁড়াল।
– ধন্যবাদ!
– কেনো?
– তখন মেহেরিন’র সাহায্য করার জন্য!
– …..
দুজনের মাঝেই নিস্তব্ধতা! আহিয়ান হঠাৎ বলে উঠে…
– তোমার লাইফের সবচেয়ে বেশি ইম্পর্ট্যান্টে কে?
– আমার বোন!
– আমি শুনেছি তোমরা নাকি কখনো কাঁদো না!
– না!
– কেন? আমার আর নিতি’র বিয়ের কথা শুনেও কি তুমি কাঁদো নি!
নিহা মুচকি হেসে বলল..
– না!
আহিয়ান ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইল। নিহা বলে উঠে…
– আমি শেষ বার কেঁদেছি যখন আমার মা মারা গেছেন। আর আগেও কখনো কাঁদেনি মা কাঁদতে দিতো না। মা মারা যাবার আগে বলেছিলেন খান বাড়ির কেউ যেনো কখনো না কাঁদে বিশেষ করে আদুরী। কারন চোখের পানি আমাদের দুর্বলতা, হ্যাঁ এটা আমাদের কষ্ট নিধন করে তবে আমরা কান্না কে নিজের রাগে পরিনত করি। সেদিন বাসায় আসার পরও অনেক রেগে ছিলাম আমি! কাঁদতেই যাচ্ছিলাম তখন আদুরী আমাকে অজ্ঞান করে দেয়।
– আসলেই তোমার অদ্ভুত! পুরো খান বাড়ি একটা গোলক ধাঁধা!
নিহা আহিয়ানের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে। আহিয়ান চলে যায় সেখান থেকে!
.
মাঝ রাতে হঠাৎ করে গোলাগোলি’র শব্দ হয়। আহিয়ান আর নিহা ঘুম থেকে উঠে পড়ে। নিহা উঠেই দরজা খোলার চেষ্টা করে কিন্তু দরজা বাইরে থেকে লক করা। এদিকে গোলাগুলি’র শব্দ বেড়ে যাচ্ছে। নিহা অনেক চেষ্টা করছে দরজা ভাঙার কিন্তু পারছে না। শুধু নিহা না বাকি সবাই ও তাদের দরজা খোলার চেষ্টা করছে কিন্তু কেউ পারছে না। আহিয়ান নিহা কে শান্ত করার চেষ্টা করছে। নিহা আহিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে..
– আমার বোনের কিছু হলে আমি কাউকে ছাড়বো না আহিয়ান!
বলেই বেলকনির দিকে গেল। বাইরের সব গার্ড ঘরের মধ্যে ঢোকার চেষ্টা করছে তবে কেউ পারছে না। নিহা আর না ভেবে বেলকনির গ্রিল ধরে নিচে নামতে শুরু করে! কারন তার ধারণা বাড়ির দরজা লক করা। আর সেই লক সে খুলতে পারবে। এদিকে ঠিক এক ভাবেই আহিয়ান, নিশি, নীল, কাব্য, ইহান সবাই বের হলো। অভ্র বের হতে পারে নি কারন হলো আনহা!
এদিকে নিহা নিচে এসে দেখে ডেভিল নেই। সে তাড়াহুড়ো করে সদর দরজা খুলে। তখন হঠাৎ করে গোলাগুলির শব্দ থেমে যায়। নিহা কেমন যেনো থেমে গেল। আহিয়ান নিহা’র হাত ধরে ভিতরে ঢুকল। সবার ঘরের দরজাও খুলে গেল। আহিয়ান বসার ঘরে ঢুকার সময় শুধু এখানে ওখানে লাশ দেখতে পাচ্ছে। সবাই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সবাই হাঁটতে হাঁটতে বসার ঘরে আসে। কোনো লাইট জ্বলছে না, কাব্য এসে সুইচ অন করল। সবাই দেখে ভয় পেয়ে গেলো। মেহেরিন সোফায় বসে আছে। দু’হাত দিয়ে রক্ত ঝরছে। তার পাশেই ডেভিল দাঁড়ানো।অভ্র কোনোমতে আনহা কে ঘরে রেখে বাইরে এসে এমন অবস্থা দেখে দৌড়ে মেহেরিন’র কাছে আসল। নিহা ওরা সবাইও মেহেরিন’র কাছে। শুধু মাত্র আহিয়ান দেখছে। কি হলো সে কিছুই বুঝতে পারলো না।
কিছুক্ষণ আগের ঘটনা…
কিছু লোক বাড়িতে ঢুকে সদর দরজা বন্ধ করে দিল। অতঃপর বাড়ির সবার ঘরের দরজা বন্ধ করে মেহেরিন’র ঘরের দিকে গেল। মেহেরিন কে বিছানায় পেয়ে কিছু লোক হিংস্র ভাবে সেখানে ছুরি দিয়ে আঘাত করতে লাগলো। অনেকক্ষন ধরেই ছুরি চালাতে লাগলো তারা। তখন পাশ থেকে কেউ বলে উঠল..
– হেই গাইস! আদুরী এখানে!
সবাই তাকিয়ে দেখল মেহেরিন দূরে কফি মগ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার ছুটে তাকে মারতে গেলো। তখন ডেভিল এসে একের পর এক গুলি করতে লাগলো। মেহেরিন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুধু কফি খেতে লাগল আর এসব দেখতে লাগল। এক পর্যায়ে লোকজন আরো বেশি আসতে লাগল। একজন পেছন থেকে ডেভিল কে মাথায় মারলো। অতঃপর ডেভিল খানিকক্ষণ’র জন্য পড়ে গেলো। তারা সবাই মেহেরিন’র দিকে ছুটে গেল। মেহেরিন কফি মগ টা রেখে একটা বাঁকা হাসি দিয়ে খোলা হাতে তাদের সামনে দাঁড়াল। সবাই ভয় পেয়ে গেল। আর যাই হোক মেহেরিন যে কতোটা হিংস্র এটা সবাই জানে। কিছু লোক ভয়ে পিছু হটে গেল। কিন্তু বাকি রা মেহেরিন কে আঘাত করতে গেল। অতঃপর কেউ পেরে উঠলো না। বাকিরা দৌড়ে বাসর ঘরের দিকে আসলো। মেহেরিন ছুরি নিয়ে তাদের পিছন পিছন দৌড়াতে লাগল। তারা সবাই দরজা সামনে এসে খুলতে যাবে আর আগেই মেহেরিন সেখানে দাঁড়িয়ে গেল। বাঁকা হেসে বলল..
– আমার বাড়িতে এসেছো, মেহনাবাজি তো করতে দাও!
অতঃপর মেহেরিন সবাইকে মেরে শুধু একজন কে বেঁচে রাখল। সে প্রান ভিক্ষা চাইলো মেহেরিন শুধু তাকে তাদের বসের নাম জিজ্ঞেস করল। কিন্তু সে বললো না। তাও মেহেরিন তাকে ছেড়ে দিলো! সে সুযোগ পেয়েই মেহেরিন কে মারতে গেলে ডেভিল এসে তাকে গুলি করল!
সব শুনে নিহা রেগে গেল। কারা এরা, কে পাঠিয়েছে সব খোঁজ করতে বলল ডেভিল কে। মেহেরিন কিছু না বলে অভ্র’র কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ল। কিন্তু সে রাতে আর কারোই ঘুম হলো না!
কয়েকদিন পর ডেভিল এসে জানালো তাদের পাঠিয়েছে মিঃ রায়। আর তাদের শুধুই মেহেরিন কে মারার জন্য পাঠানো হয়েছে। নিহা’র বুঝতে পারল সে তার ছেলের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে এমন টা করেছে। তবে জানা গেছে মিঃ রায় এখন পলাতক। তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। নিহা ডেভিল কে খোঁজ চালু রাখার কথা বললো!
.
প্রায় অনেকদিন পর আহিয়ান এসেছে তার মায়ের সাথে দেখা করতে। বাড়িতে ঢুকেই সে অবাক হয়ে গেল। কারন নিহা এখানে বসে তার মায়ের হাতে খাবার খাচ্ছে। তার মা ও খুব আদরের সাথে তাকে খাওয়াচ্ছে। তিনি আহিয়ান কে দেখে হেসে বললেন ফ্রেশ হয়ে আসতে। কিন্তু আহিয়ান তো নিহা’র দিকে তাকিয়ে আছে। নিহা মুচকি হেসে আহিয়ান’কে চোখ টিপ দিলো। আহিয়ান নিহা’র থেকে সাথে সাথে চোখ সরিয়ে ফেলল। অতঃপর ফ্রেশ হয়ে আসলে মা ওদের দুজনকে খাইয়ে দেয়। নিহা খাবার খেয়ে উপরে চলে যায় কিন্তু আহিয়ান ওর মা’র সাথেই থাকে। সে বলে উঠে…
– এসব কি মা!
– কোনসব?
– এই তুমি ওকে কেনো এতো আদর করছো। নিজের হাতে খাইয়ে দিচ্ছো ওকে।
– আমার বউ মা ও! ওকে খাওয়াবো না তো কাকে খাওয়াবো।
– মা! ওর জন্য আহনাফ আজ আমাদের মাঝে নেই। তুমি জানো না সেটা!
– আহনাফ নেই এটা ঠিক তবে সেটা নিহা’র কারনে নয়। সেটা ওর নিজের কারনেই!
– মা!
– আহি! যা হয়েছে তাতে নিহা’র কোনো দোষ নেই। তুমি ও জানো আর আমিও জানি আহনাফ ঠিক কতোটা জেদি ছিল। যেটা ওর চাই তো চাই! তুমি তো জানো না আর আগেও অনেকবার সুইসাইড করার চেষ্টা করেছে ও। তবে তখন আমরা বাঁচাতে পেরেছিলাম ওকে। তবে…
– কি হয়েছে কি মা তোমাদের। নিহা কি তোমাদের বস করেছে নাকি। সবসময় ওর সার্পোট কেন টানো!
– কারন এবার আমার ছেলে ভুল করছে আর সে ঠিক!
– মা!
– আহি কারো ভালোবাসা নিয়ে খেলা করা ঠিক না বাবা। সেটা যে তুমি কবে বোঝবে জানি না। একটা কথা মনে রেখো এমন না হয় যখন তুমি সব বুঝতে পারলে কিন্তু তোমার করার কিছু রইল না।
আহিয়ান কিছু না বলে ঘরে চলে গেল। সেখানে গিয়ে দেখল নিহা তার ছবি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আহিয়ান রেগে নিহা’র দুই বাহু চেপে ধরে জিজ্ঞেস করল..
– কি করেছো আমার মা কে!
– আমি কি করবো মা কে।
– তাহলে তোমার এতো গুনগান কেন করছে। সত্যি করে বলো।
– কি বলুন তো আমি তো ভূতনি। তাই অলৌকিক শক্তি আছে আমার কাছে। এভাবেই এসব করি।
– মজা করছো আমার সাথে!
– আরে কি যে বলেন। আপনার সাথে মজা করবো এতো সাহস আছে আমার কাছে।
আহিয়ান রেগে নিহা কে ছেড়ে দিলো। নিহা আবার ও আহিয়ানের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। আহিয়ান মুখ সরিয়ে ফেলল। নিহা আহিয়ানের মুখ নিজের দিকে ফিরাল। অতঃপর আহিয়ানের হাত ধরে নিজের কোমড়ে রাখল। নিহা আহিয়ানের গলা জরিয়ে ধরে আহিয়ানের কাছে চলে আসল।বলে উঠে..
– ভালোবাসি আপনাকে!
আহিয়ান মুখ সরিয়ে নিলো। নিহা মুচকি হেসে বলল..
– একসময় এই কথাটা শোনার জন্য কি না কি করতেন!
আহিয়ান কিছু না বলে নিহা কে ছেড়ে বাইরে চলে গেলো।
.
মেহেরিন বসে সবার সাথে আড্ডা দিচ্ছিল। আনহা’র এখন ৫ মাস চলছে। সবাই এখন আগের থেকেও আনহা’র আরো বেশি বেশি খেয়াল রাখছে। তখন হুট করেই ইহান আসলো। তাকে দেখে বেশ অস্থির লাগছিলো। কিন্তু সে সবাইকে কাজের চাপ আছে বলে এমন লাগছে এরকম কয়েকটা অযুহাত দিলো।
রাতে…
ইহান ছাদে একা একা দাঁড়িয়ে আছে, তখন মেহেরিন আসলো সেখানে।
– কি হয়েছে তোর!
– কি হবে কিছু না!
– সবার চোখ ফাঁকি দিতে পারিস তবে আমার না। বল কি হয়েছে!
– জান তুই বিশ্বাস করিস তো আমায়!
– না করি না তো!
– আমি সিরিয়াসলি কথা বলছিলো।
– তোর সিরিয়াস কথা তাহলে এটা!
– না তবে এটার সাথে যুক্ত!
– হয়েছে কি?
#চলবে….