#Mental_Lover
পর্ব:২৮
#লেখিকা_ফারহানা_নিঝুম
________________________________
সকাল সকাল, সবাই ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে যায় । লঞ্চে উঠার পর,, সবাই নিজেদের মধ্যে কথা বলছে, ইশিতা এক জায়গায় বসে আছে । আরিয়ান গিয়ে ইশিতার পাশে বসে। বাতাসের কারণে,সব চুল গুলো, এদিকে ওদিকে উড়ছে,,।
আরিয়ান:কী ব্যাপার,,,একা একা বসে আছ।
ইশিতা: এমনিতেই।
আরিয়ান: আচ্ছা,,,,,।
______________________________
অনেকক্ষণ পর সবাই কুয়াকাটা পৌঁছে যায়। সবাই কুয়াকাটা গ্র্যান্ড হোটেলে উঠে।,যে যার রুমে রেস্ট নিতে চলে যায়। সবাই মিলে ঠিক করে বিকেলে সবাই সমুদ্র দেখতে যাবে,এর আগে একটু রেস্ট প্রয়োজন। আরিয়ান আর ইশিতা রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে গেল, আরিয়ান বিছানায় গা এলিয়ে দেয়, আর ইশিতা,বেলকেনিতে যায়,। বিকেলে সবাই মিলে, সমুদ্রের পারে যায়,, অপূর্ব সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি, সাগর কন্যা, কুয়াকাটা। সবাই অপেক্ষা করছে, সন্ধ্যা বেলা, সূর্যাস্ত দেখার জন্য, কুয়াকাটা দক্ষিণ এশিয়ার এমন একটি সমুদ্র সৈকত,যেখানে সূর্য উদয়, এবং,সূর্য অস্ত, যাওয়ার, দৃশ্য নিঃস’ন্দে’হে, দারুন ব্যাপার,।
সবাই চারপাশ ঘুরে,দেখছে,,নিশা আর নিরব,বেরি বাঁধ, পেরিয়ে,বাম দিকে, মিউজিয়াম, দেখতে চলে যায়,আর আরিয়ান ইশিতা,পাশের,ফার্মস এন্ড ফার্মস যায়, চারদিকে অনেক নারকেল গাছ, ফল ফুলের বাগান, ইশিতা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে,দেখছে, কয়েক জন ভালোবাসার জুটি,একে অপরের হাত ধরে,, নিজেদের মধ্যে সময় কা’টা’চ্ছে। এগুলো দেখে, ইশিতার মনে স্বাদ জাগে,যদি আরিয়ান আর ও, এভাবে হাতে হাত, রেখে হাঁটতে পারত,যদি সে বলতে পারত, আরিয়ান আপনাকে আমি ভালোবাসি, কিন্তু এসব শুধু, কল্পনায় সম্ভব, বাস্তবে নয়,। আরিয়ান যা করেছে তার পর, ওকে ইশিতা মেনে নিতে,পারছে না। ইশিতা হঠাৎ অনুভব করল, কেউ ওর হাত ধরেছে, পিছনে তাকিয়ে দেখে, আরিয়ান।
ইশিতা: আপনি,,,,।
আরিয়ান: তুমি কী ভেবছিলে?
ইশিতা:কী আর ভাবব,।
আরিয়ান: আচ্ছা, কী সুন্দর জায়গা,তাই না।
ইশিতা: হুম,, (সামনের দিকে তাকিয়ে)।
আরিয়ান:চল প্রেম করি।
ইশিতা:কী?
আরিয়ান:দেখ, অনেক দিন পর সবাই মিলে ঘুরতে এসেছি,নিশা আর নিরব কত সুন্দর জুটি বেঁ’ধে,প্রেম করছে, তাহলে আমি কী দো’ষ করেছি,, তুমিও তো আমার সাথে প্রেম করতেই পার।
ইশিতা: আপনি, অনেক দো”ষ করেছেন,।
আরিয়ান:কী এমন করেছি, আমি যার পর থেকে তুমি এমন করছ।
ইশিতা: আপনি সব কিছু যেনো,কী করে না জানার ভান করেন,,, আপনি যা যা করেছেন সব কিছুর শা”স্তি পেতে হবে ।
বলেই, ইশিতা, নারকেল বাগানের দিকে,পা বাড়ায়,,।
___________________________________
কিছুক্ষণ এর মধ্যে,, সন্ধ্যা ঘ’নি’য়ে এসেছে,,,সূর্য ধীরে ধীরে অস্ত যাচ্ছে,কী দৃশ্য,বলে বুঝান যাবে না,,সব কিছু সূর্যের লাল কিরণে,লালচে দেখা যাচ্ছে,।
।
।
।
রাতে সবাই মিলে, হোটেলের বাইরে,ক্যাম্প ফা’য়া’রিং, করে, সুন্দর মূহূর্তে গুলো উপভোগ করছে। এখানে সবাই আসার পর থেকে বলছে,রাত ১০ টার পর থেকে আর কেউ বাইরে থাকে না,,১০ বাজার সাথে সাথে,সব আলো নিভে যায়,, মূহূর্তেই ভু’তু’ড়ে, অ’ন্ধ’কা’র হয়ে যায় সাগর কন্যা, এলাকা।।
কিছুক্ষণ পর,সব কিছু আস্তে আস্তে, ঘু’ট’ঘু’টে অন্ধকারে পরিনত হতে লাগল। নিশা,ঘুমাতে চলে যায়,নিরব, নিশা কে রুমে দিয়ে আসতে গেল। আরিয়ান বাগানে দাঁড়িয়ে আছে। একজন এসে বলল ইশিতা কে।
ম্যানেজার:ম্যাম, আপনি স্যার কে নিয়ে প্লীজ রুমে চলে যান,, রাত হয়ে গেছে, কিছুক্ষণ এর মধ্যে, সব আলো নিভে যাবে।
ইশিতা: ঠিক আছে।
ম্যানেজার চলে গেল, ইশিতা আরিয়ান কে খুঁজতে লাগল। অনেক খুঁজ করে এসে দেখে, আরিয়ান বাগানে দাঁড়িয়ে আছে,, কিন্তু ইশিতা হ’ত’ভ’ম্ব হয়ে যায় তখন,যখন দেখে, গাছের পিছন থেকে কেউ একজন আরিয়ানের দিকে রি’ভ’ল’বা”র তাক করে আছে।লোক টা সুট করতেই,যাবে, ইশিতা দৌড়ে গিয়ে, আরিয়ান কে ধা’ক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল,ফলে গু’লি গিয়ে ইশিতার বাম হাতে লাগে । ইশিতা মাটিতে ছি’ট’কে পড়ে যায় । আরিয়ান তাকিয়ে দেখে ইশিতা পড়ে আছে,আর একটা লোক পালিয়ে যাচ্ছে,,,।
আরিয়ান: ইশিতা,,,, (চি’ৎ’কা’র করে)
নিরব: ইশিতা,,,,,। তুই ইশিতা কে দেখ,, আমি দেখছি কে ওইটা।
আরিয়ান ইশিতাকে, হোটেলের নিয়ে যায়।ম্যানেজার তাড়াতাড়ি,ডাক্তার কে কল করে,,ডাক্তার,,এসে ইশিতার,হাত থেকে গু’লি বের করে,,।তার পর ব্যান্ডেজ করে দেয়।
আরিয়ান: আমার মনে হয়, হসপিটালে নিয়ে যাওয়া উচিত।
ম্যানেজার: কিন্তু স্যার,এত রাতে, আপনি কিছু করতে পারবেন না,,,রাত,দশ টার পর সব কিছু অফ থাকে,,,আর পুলিশ রা মাইকিং করে বলে দেয়।আপাতত আজকে ওনাকে, এখানেই রাখতে হবে,যা করার আপনাকে কাল সকালে করতে হবে ।
আরিয়ান অনেক রে’গে বলল।
আরিয়ান: কেমন, সিকিউরিটি সিস্টেম আপনাদের, বাইরের কেউ হোটেলে ডুকে,,এসব করে চলে যাচ্ছে।
ম্যানেজার: সরি স্যার,,,, কী করে কী হল, বুঝতে পারছি না।
আরিয়ান:বুঝার চেষ্টা করুন,,,কাল সকালেই আমরা চলে যাব,,,।
ম্যানেজার:প্লীজ স্যার,,, আমাদের সবার পক্ষ থেকে সরি।
আরিয়ান: Get out.
ম্যানেজার আর ডাক্তার চলে যায়।
আরিয়ান ইশিতার পাশে বসে,, ইশিতা কে ঘুমের ই’ন’জে’ক’শ’ন পুশ করা হয়েছে।
,,,,,,,,,,,,,
ভুল হলে ক্ষমা করবেন।
,,,,,,,,,
চলবে………..।
#Mental_Lover
পর্ব:২৯
#লেখিকা_ফারহানা_নিঝুম
_________________________
নিরব : পা’লি’য়ে গেছে,, ধ’র’তে পারিনি ।
আরিয়ান রে’গে বলে।
আরিয়ান:যেই হোক, তাকে আমি ছা’ড়’ব না, কিন্তু কে হতে পারে।
নিরব: সাবিনা তো আর বেঁ’চে নেই,আর নেত্রা কে তো আর কেউ খুঁজেই পাইনি, তাহলে কে।হতে পারে নেত্রা, ফিরে এসেছে,।
আরিয়ান:যদি,এটা নেত্রা হয়ে থাকে, তাহলে ওর এবার কী হবে ভাবতেই পারছে না, আগের বার আমি ইশিতা কে হা’রা’তে হা’রা’তে ফিরে পেয়েছি, কিন্তু এই বার আমি কোনো রি’স্ক নিতে চাই না ।নিরব, তাড়াতাড়ি টিকেট কে’টে নে, আমরা আর এখানে থাকব না,যত তা’ড়া’তা’ড়ি স’ম্ভ’ব, ফিরে যাব ।
নিরব: ঠিক আছে। তুই ওর খেয়াল রাখ, আমি সব ব্যবস্থা করছি।
আরিয়ান দরজা বন্ধ করে, ইশিতার পাশে এসে বসল। আরিয়ান এর চোখ দিয়ে টুপ’টাপ জল গড়িয়ে পড়ছে,ও যে ইশিতা কে খুব ভালোবাসে, পারবে না, ছে’ড়ে থাকতে,এই দুই মাস কত ক’ষ্ট করেছে,তা বলে বুঝাতে পারবে না ।
আরিয়ান: ইশিতা,,,।(ইশিতার মাথায় হাত বুলিয়ে।)
ইশিতা ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে আছে,। আরিয়ান আর কিছু না বলে, সারা রাত, ইশিতার পাশে বসে কা’টি’য়ে দেয় ।
______________________________
সকালে, জানালার পর্দা সরিয়ে দিল আরিয়ান সূর্যের আলো এসে পড়ল ইশিতার মুখে, ঘুম ভেঙ্গে গেল ইশিতার, তাকিয়ে দেখে আরিয়ান।উঠতে চে’ষ্টা করে, কিন্তু হাতে ব্যা’ন্ডে’জ করা,তার উপর ব্যা’থা,তাই উঠতে পারছে না। আরিয়ান ইশিতা কে উঠে বসতে সাহায্য করে,।
আরিয়ান: কেমন আছ তুমি,, ক’ষ্ট হচ্ছে,বল প্লী’জ।
ইশিতা ভালো করে দেখে আরিয়ানের চোখে মুখে স্প’ষ্ট চি’ন্তা’র ছা’প।
ইশিতা: আমি ঠিক আছি,,,।
আরিয়ান আ’চ’ম’কা ইশিতা কে জ’ড়ি’য়ে ধরে।
ইশিতা কিছু বুঝে ওঠার আগেই আরিয়ান এমন কা’ন্ড করে বসলো ।
ইশিতা: আরিয়ান,,,,।
আরিয়ান: আমি কতটা ভয় পেয়েছিলাম তুমি বিশ্বাস করবে না, আমি তোমাকে আর হা’রা’তে পারব না (কাঁদতে কাঁদতে) তুমি কেন এমন করলে, কেনো ধা”ক্কা দিলে,যদি ধা”ক্কা না দিতে তাহলে তো তোমার গু”লি লাগত না ।
ইশিতা: আপনি ঠিক আছেন তো,।
আরিয়ান যতটা সম্ভব ইশিতা কে, নিজের সাথে জ”ড়ি”য়ে ধরার চে’ষ্টা করছে ।
ইশিতা: আমি তো ভেবেছিলাম, আমি একমাত্র এখন যে আরিয়ান কে শেষ করতে চাই, কিন্তু,,,,, এখানে তো অন্য আরেক জন আছে যে আরিয়ান কে, কষ্ট দিতে চায়, আমি স্পষ্ট দেখেছি,ওই লোক টা আরিয়ান কে সুট করতে চেয়েছিল।,কে সে (মনে মনে)। আরিয়ান ব্যা’থা লাগছে।
আরিয়ান: কোথায়,?
ইশিতা: আপনি এমন করে জ’ড়ি’য়ে ধরেছেন তাতে এমনিতেই ম’রে যাব।
আরিয়ান: চু’প,,,,,।চল তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে যাও, আমারা চলে যাব।
ইশিতা: কিন্তু,, আমি তৈরি হব কী করে,,,,।
আরিয়ান: আমি কিসের জন্য আছি?
ইশিতা: মানে?
।
।
।
।
সাদার মধ্যে,নীল পাড় শাড়ি শাড়ি ইশিতার জন্য নিয়ে আসে,,।
ইশিতা:এটা কার জন্য।
আরিয়ান: আমার জন্য।
ইশিতা:কী?
আরিয়ান: আমি কী মেয়ে যে আমার জন্য নিয়ে আসব, নিশ্চয়ই তোমার জন্য।
ইশিতা: ওহ্, কিন্তু আমি এটা কী করে পড়ব ।
আরিয়ান: আমি পড়িয়ে দেব।
ইশিতা:কী? না না, আমি পড়ব না। ছিঃ
আরিয়ান :ও হ্যলো, আমি তোমার স্বামী,,অন্য কেউ না।
ইশিতা:তো কী হয়েছে,, আমি যদি আপনাকে আমাকে স্প’র্শ করার অধিকার না দেই তাহলে।
আরিয়ান:তাই নাকি?(ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে)।
আরিয়ান ধীরে ধীরে ইশিতার কাছে এগিয়ে এলো।
ইশিতা: দেখুন আরিয়ান,,প্লীজ, আপনি এমন করবেন না,।
আরিয়ান : বিশ্বাস করতে পার।
ইশিতা: কখনো না।
আরিয়ান: কেনো?
ইশিতা: আপনি কি করেছেন ভুলে গেছেন।
ইশিতা:উপ্স,ওইটা তো।
ইশিতা: নিজের মুখ বন্ধ রাখুন।
_______________________________
সন্ধ্যার মধ্যে আরিয়ান,নিরব,নিশা এবং ইশিতা নিজেদের বাড়ি পৌঁছে যায়, আরিয়ান ইশিতাকে রেস্ট নিতে নেওয়ার জন্য,রুমে নিয়ে যায়।
ইকবাল হোসেন:নিরব এর কাছে কী শুনছি এসব,,কে এমন করছে।
আরিয়ান: জানি না মামা, কিন্তু যেই এসব করছে তাকে আমি ছা’ড়’ব না।
ইকবাল হোসেন: শান্ত হ, আরিয়ান এখন তুই এসব না ভেবে, ইশিতার খেয়াল রাখ, আমরা দেখছি,কী করা যায়।
আরিয়ান: কিন্তু মামা।
ইকবাল হোসেন: আমি বলেছি তো।
আরিয়ান আর কিছু না বলে, ইশিতার কাছে চলে যায়। ইশিতা, বিছানায় শুয়ে আছে, আরিয়ান ভেতরে আসে।
ইশিতা: আপনি,,,।
আরিয়ান: এখন কেমন আছ।
ইশিতা: ভালো,, দাঁড়িয়ে আছেন কেন?
আরিয়ান দেখে ইশিতা আবার আগের মত, ব্যবহার করছে,।
আরিয়ান ইশিতার পাশে বসে, কিন্তু চাদর সরিয়ে, দিয়ে আরিয়ান কে তার পাশে শুতে বলল। আরিয়ান কো’ট খুলে,সাইটে রেখে ইশিতার পাশে শুয়ে পড়লো, ইশিতাও আরিয়ানের বুকে মাথা রেখে, চোখ ব’ন্ধ করে দেয়।
______________________________
সন্ধ্যা বেলায়, ইশিতা, বারান্দায়,যায়, কিন্তু সেখানে গিয়ে যা শুনতে পায়,তাতে ইশিতা স্তম্ভিত হয়ে যায়।
***কী বলে ছিলে তুমি,আর এখন কী হচ্ছে,,বলে ছিলে যে, তুমি আরিয়ান কে শেষ করে দেবে, কিন্তু এখন,,, এখন তো দেখছি তুমি কোনো কাজের না।**
নেত্রা: আমি চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু মাঝখানে ওই ইশিতা চলে এসেছে,তাতে আমার কী দো*ষ।
**তুমি আগের বার তো ইশিতা কে মা*র*তে পারলে না,আর এই বার, আরিয়ান কে ,যত দিন না কাজ করতে পারছ, ফোন করবে না।**
ইশিতা, সামনে তাকিয়ে যাকে দেখে,তার পর, নিজের চোখ কে বিশ্বাস করতে পারে না।
ইশিতা: উনি,,,,,,।
___________________________________
আরিয়ান ঘুমিয়ে ছিল,, তখন ইশিতা একটা ছু’রি নিয়ে আরিয়ানের কাছে যায়। একবার ও না থেমে, আরিয়ানের,পে’টে একের পর এক ছু*রি মে’রে দেয়। আরিয়ান চি’ৎ’কা’র করে উঠল।
আরিয়ান:ই,,, ইশিতা।
ইশিতা: তোমার পৃ’থি’বী’তে থাকার অধিকার নেই ।
নিরব নিশা, বাড়িতে নেই এখন তোমাকে বাঁ’চা’নো’র কেউ নেই ।এর চেয়ে ভালো তুমি,ম’রে’ই যাও। টাটা।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,
ভুল হলে ক্ষমা করবেন।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,
চলবে………………।