😠 Ragging To Loving 😍
Part:: 5
Writer:: Ridhira Noor
আহিল এক পা দু পা এগিয়ে আসছে আমরিন পিছিয়ে যাচ্ছে। বারান্দার রেলিং এর সাথে পিছলে পড়ে যেতে নিলেই আহিল এক টান দিয়ে আমরিন কাছে নিয়ে আসে। ফর্সা সাদা গাল দুটো একদম টমেটোর মতো লাল হয়ে গেল। লজ্জায় চোখ নিচু করে ফেলল। আহিল এক ধ্যানে লাল গাল দুটোর দিকে তাকিয়ে আছে। এক দুষ্টু হাসি দিয়ে বলল।
আহিলঃঃ- কি হলো মাই লাভ। লজ্জা পাচ্ছ কেন? (থুতনি টেনে মাথা উঁচু করল। চোখে চোখ পড়তেই দুজনের বুক যেন ধুকপুক করে উঠলো। আমরিন সাথে সাথে ধাক্কা দিয়ে আহিলকে সরিয়ে দৌড় দিল। আমরিনকে এভাবে দৌড়ে যেতে দেখে হালকা হেসে দিল।) স্নো হোয়াইটের মতো সাদা গাল দুটো যখন লজ্জায় লাল হয়ে যায় দেখতে আরো বেশি আকর্ষণীয় লাগে।
আমরিন দৌড়ে এসে হাঁপাতে লাগলো। চেয়ারে বসে সিমার হাত থেকে পানি ছিনিয়ে নিয়ে ঢকঢক করে খেতে লাগলো।
সিমাঃঃ- ওই বজ্জাত মাইয়া টেবিলে পানি থাকতে আমার হাত থেকে পানি নিলি কেন। ঝালে জিহ্বা পুড়ে যাচ্ছে। (আমরিন থেকে পানির বোতল কেড়ে নিল।)
আলিফাঃঃ- কি হয়েছে তোর এভাবে হাঁপাচ্ছিস কেন? আর গাল দুটো লাল হয়ে আছে। কেউ মারল নাকি তোকে?
মেহেরঃঃ- কোন খাচ্চর মারল তোকে আয় ওর হাত ভেঙে গলায় ঝুলিয়ে দিই। আরে বল না।
পুষ্পঃঃ- ওকে বলতে তো দে।
আমরিনঃঃ- ওওও…..(কি বলব ওদের। বললে এখন মান ইজ্জত সব পানির সাথে গুলিয়ে শরবত বানিয়ে দিবে) আরে তোরা ডায়নি আমাকে ফেলে একা একা খাচ্ছিস তাই দৌড়ে এলাম। (এক জোর পূর্বক হাসি দিল)
_______________________________
ওয়াসিমঃঃ- তুই আবার উঠে এভাবে দৌড়ে কই গিয়েছিলি?
আহিলঃঃ- ওয়াশরুমে গিয়েছিলাম। (ওদের বললে এখন আমাকে নানান কথা শুনাবে।)
আফরানঃঃ- আচ্ছা বাদ দে এসব। রিহান তুই বল ওদের কি ইনফরমেশন পেয়েছিস।
রিহানঃঃ- এক দিনে আর কত ইনফরমেশন পাব। যা পেয়েছি তাই বলি। ওরা ৬ ফ্রেন্ড তা তো দেখতে পাচ্ছিস। ওদের প্রথমে বলি আমরিনের কথা মানে ওই যে মিস সিংগার। বাবা-মার ছোট মেয়ে। সারাক্ষণ সেলফি তুলবে আর ভিডিও করবে। নিজের ফ্রেন্ড ছাড়া কারো সাথে তেমন মিশে না।
আহিলঃঃ- (ওহ তো ওর নাম আমরিন।)
রিহানঃঃ- মিস পিংকির নাম সিমা। ইতরামিতে নাম্বার ওয়ান। চেনা অচেনা যেই হোক একটু ইতরামি না করলে হয় না।
ওয়াসিমঃঃ- (মিস পিংকি,,, আইসক্রিম খাব আমি উইথ রিংকি। বাই দ্যা ওয়ে এই রিংকিটা কে? ধুরর।)
রিহানঃঃ- আলিফা আর মেহের দুইজন কাজিন। ছোটবেলা থেকে একসাথে ছিল। আর ওদের সাথে ফ্রেন্ডশিপ হয় স্কুল লাইফের শেষে। আর বাকিরা আগের থেকেই ফ্রেন্ডস ছিল। ওরাও কম দুষ্টু না। তারপর পুষ্প বাবা-মার একমাত্র মেয়ে। কোন কিছু চাওয়ার আগেই পেয়ে যায়। তেমন রাগও ভীষণ।
আফরানঃঃ- আর মিস চাশমিশ?
রিহানঃঃ- বলতে দিবি তো নাকি? ওর নাম নূর। দুই বোন ওই বড়। ইতরামিতে সবার নানি। এক নাম্বারের ঝগড়াটে। কিন্তু তা শুধু ফ্যামিলি আর ফ্রেন্ডের জন্য। আর এসবে ওদের সবার মধ্যে একটা জিনিসই কমন।
সবাই একসাথে “কি?”
রিহানঃঃ- একেকটা বদের হাড্ডি। যখন একসাথে হয় সামনের জনের ব্যান্ড বাজিয়ে দেই। কলেজেও নাকি রেকর্ড করা ইতরামি আর ঝগড়ার জন্য।
আফরানঃঃ- এই ইনফরমেশনই অনেক। আর ওরা যদি বডের হাড্ডি হয় আমরাও বদের হাড্ডি মাংস হৃৎপিণ্ড কিডনি সব। (ওরা হেসে উঠল। তাদের হাসিতে নূররা তাদের দিকে তাকিয়ে ভেঙচি কাটলো।) এখন ওদের দেখাব আমরা কি?
_______________________________
নূরঃঃ- তো বল ওদের কোন ইনফরমেশন পেয়েছিস?
পুষ্পঃঃ- যা একটু আধটু পেয়েছি। ওরা ৯ জন ফ্রেন্ডস।
সিমাঃঃ- কিন্তু ওরা তো ৪ জন।
পুষ্পঃঃ- ফকিন্নি কথা শেষ করতে দে। তা কি যেন বলছিলাম। ভুইলা গেছি।
সবাই রাগী দৃষ্টিতে সিমার দিকে তাকিয়ে আছে। সিমা দাঁত ৩২ টা দেখিয়ে হাসি দিয়ে এক বোতল পানি মুখে দিল।
পুষ্পঃ- হ্যাঁ মনে পড়ছে। (সবাই আবার পুষ্পর দিকে ধ্যান দিল) ওরা ৩ জন মেয়ে বাট তেমন একটা ক্লোজ না। ফ্যামিলি ফ্রেন্ড হিসেবে তারাও ফ্রেন্ড। ৬ জন ছেলে ওরা বেস্ট ফ্রেন্ড স্কুল লাইফ থেকেই বেস্ট ফ্রেন্ড। ২ জন বাইরে কোথাও গিয়েছে। আর রিহান ও আফরান চাচাতো ভাই। দুইটাই এংরি ইয়াং ম্যান। তেমনি বজ্জাত। ওয়াসিম মি. কবি। ছন্দ বলতে পছন্দ করে। খুবই মিশুক টাইপের। আর আহিল (ওর নাম নিতেই আমরিনের কাশি উঠে গেল। পানি দিল খেতে) মি. ফ্লার্টি। মেয়েদের সাথে ফ্লার্ট করে বেড়ায়। এইটুকু ইনফরমেশনই পেলাম। (সামনাসামনি টেবিলে বসায় তাদের চিনিয়ে দিল।)
নূরঃঃ- শোন ওরা যদি কোন রকম জ্বালাতে আসে তোরা উল্টো ওদের জ্বালাবি। পারলে ঝগড়া লাগাই দিবি।
আমরিনঃঃ- কি ঝগড়া লাগাবো আহিলের বাচ্চা কাহিল উল্টো আমারই সাথে ফ্লার্ট করছে। (ভিড়ভিড় করে)
আলিফাঃঃ- কি মন্ত্র পড়ছিস? আমাদেরও বল আমরাও পড়ি আর ওদের উপর জাদু টোনা করি।
আমরিনঃঃ- ওই ছোট বেলার সেরা মন্ত্র।
নূরঃঃ- ছু মন্তর ছু,,, কালা কুত্তার গু।
সবাই একসাথে হেসে উঠল। আফরানরা ওদের দিকে বিরক্তি ভাব নিয়ে তাকিয়ে আবার চোখ ফিরিয়ে নিল।
নূরঃঃ- ওদের বুঝাতে হবে আমরা কি চিজ। কলেজের সব রেকর্ড ভাঙব।
আমরিনঃঃ- চল সেলফি তুলি!
সবাই ওর দিকে তাকিয়ে হেসে দিল। তারপর যে যার মতো পোজ দিল।
.
.
.
তন্বিঃঃ- কিরে আপু এটা কোন ধরনের নাইনসাফি? (নূর প্রশ্ন সূচক দৃষ্টিতে তাকাল। তন্বি আবারও বলতে লাগলো।) আমি কত সুন্দর করে আমার কলেজের প্রথম দিনের কাহিনি বললাম। আর তুমি আজ দ্বিতীয় দিন হয়ে গেল। আমাকে কিছু বলনি। (গাল ফুলিয়ে বেডের উপর ধপাস করে বসলো।)
নূরঃঃ- আমি তোর বড়।তাই তুই আমাকে সব বলবি। আমি কেন বলব?
তন্বিঃঃ- কলেজে এক কাহিনি ঘটেছিল। ভেবে ছিলাম তোমাকে বলব। কিন্তু না বলব না।
নূরঃঃ- কি হয়েছে বল না? (খুব আগ্রহী হয়ে)
তন্বিঃঃ- এএএ নিজে বলবে না আসছে আমার কাহিনি শুনতে। হুহ্ বলব না।
নূরঃঃ- আচ্ছা বলছি। (কালকের আর আজকের সব কাহিনি বলল)
তন্বিঃঃ- ও এম জি। কলেজ ক্রাশ। থুক্কু ভার্সিটি ক্রাশ।
নূরঃঃ- ক্রাশ না ময়লা ব্রাশ। তোর কাহিনি বল এবার।
তন্বিঃঃ- আসলে কাহিনি হলো….. কোন কাহিনি নাই। (বলে লে দৌড়)
.
.
.
চলবে
😠 Ragging To Loving 😍
Part:: 6
Writer:: Ridhira Noor
নূর হা হয়ে বসে আছে। দুই তিন বার দ্রুত পলক ফেললো। আর চিন্তা করতে লাগলো। এটা কোন ধরনের নাইনসাফি? আমি বলি নাই বলে আমি আমাকে ব্লাকমেইল করে জেনে নিছে। দাঁড়া তুই। নূরও তন্বির পিছনে গেল। ওকে থামানোর চেষ্টা করছে। তন্বি ভালো করে জানে এখন নূরের হাতে ধরা খাওয়া মানে নিজেকে শহীদ করা। তন্বির পিছনে নূর সারা বাড়ি দৌড়াচ্ছে। আম্মুর আবার এসবে অভ্যস্ত আব্বু মাত্র এলো অফিস থেকে। তাদের দুইজনকে এভাবে দৌড়াতে দেখে হেসে ফ্রেশ হতে গেল।
নূরঃঃ- তুই মিথ্যা বলছস আমাকে। দাঁড়া আজ তোর ঘাড় মটকে দিব।
তন্বিঃঃ- এমনিতেই কি তোমাকে ডায়নি ডাকি? দেখ আজ নিজে প্রমাণ করে দিলে তুমি আস্তো একটা ডায়নি।
নূরঃঃ- (জুতা হাতে নিয়ে) এই ফ্লাইং জুতা তোর মুখে মারমু। দাঁড়া তুই।
তন্বিঃঃ- ধরতে পারলেই তো। (খিলখিল করে হাসতে লাগলো।)
নূর ফ্লাইং জুতা ছুড়ে মারল তন্বি ঝুকে বসে গেল। নূর দুই হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরল। আম্মু আব্বুর চা বানানোর জন্য মাত্রই চুলায় পানি বসালো। ধপাসসসসস। জুতা গিয়ে পড়ল পাত্রে। আম্মুর রাগ এখন সাত আসমান উপরে। নূর আর তন্বি আম্মুর রাগকে বরাবরই ভয় পায়। দুইজনই টেবিলের নিচে ঢুকে পড়লো। নূর তন্বিকে দোষ দিচ্ছে তন্বি নূরকে দোষ দিচ্ছে। আম্মু দুইজনকে কান ধরে টেনে টেবিলের নিচ থেকে বের করল।
আম্মুঃঃ- এখন তোরা দুইজন রান্নাঘর পানির পাত্র পরিষ্কার করবি। আর ১০ মিনিটের মধ্যে চা বানিয়ে আনবি। আর একটা কথাও যেন বলতে না হয়।
আম্মু বলতে দেরি দুই বোন ঝড়ের গতিতে এমন দৌড় দিল রান্নাঘরে। কি করবে না করবে ভেবে পাচ্ছে না। পানি মুছতে কাপড়ও খুঁজে পাচ্ছে না। দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে দুইজন খেল মাথায় বারি। নূর এক টানে তন্বির ওড়না নিল পানি মুছতে। মুছতে যাবে তখনই আম্মু বাঁধা দেয়। কিছু না বলে একটা কাপড় দিল। তন্বি পরিষ্কার করতে লাগলো। নূর চা বানাতে লাগলো। এগুলো আম্মু মুখ টিপে টিপে হাসছে। আব্বু এসে ড্রয়িং রুমে বসল ততক্ষণে নূর আর তন্বি চা নিয়ে এলো।
আব্বুঃঃ- কি হলো? কিসের এত নিরবতা পালন করছ। আর এই কি আমার দুই মেয়ে দেখি আমার জন্য চা বানিয়ে আনলো। বাহ্!
আম্মুঃঃ- একটু আগে যে কান্ড পাকিয়েছে তারই পশ্চাত্তাপ করেছে। (একটু আগে ঘটে যাওয়া কান্ড বলতেই আব্বু জোরে হেসে উঠল) হ্যাঁ তুমি আরো মাথায় তুলো।
রাতে খাবার পর নূর আর তন্বি বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়াল। আকাশে মেঘ জমেছে। হয়তো বৃষ্টি হবে। হালকা শীতল বাতাস আলতো করে ছুঁয়ে যাচ্ছে। ভালোই লাগছে বাতাসটা। দুইজনই চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। নিরবতা ভেঙে তন্বি বললো_
তন্বিঃঃ- আপু একটা বলি? (নূর মাথা নেড়ে সাই দিল) তোমাদের ভার্সিটির ছেলেগুলো কি বেশি জ্বালায়?
নূরঃঃ- (এক দীর্ঘ শ্বাস নিল) তা তো দুই দিনে যা দেখলাম মনে হয় একেকটা ঘাড় ত্যাড়া। ভবিষ্যতে কি হয় বলতে পারি না।
তন্বিঃঃ- আপু শুনেছি কিছু মেয়েদের একটা এন্টি র্যাগিং টিম আছে। মানে যারা অন্যদের র্যাগিং করে মেয়েগুলো তাদের র্যাগিং করে। আর আমাদের কলেজের ওই স্টুডেন্টদেরও নাকি তারাই শায়েস্তা করেছে। তোমাদের যদি ওই ছেলেরা বেশি জ্বালায় তাহলে ওই এন্টি র্যাগিং টিমের সাথে যোগাযোগ করতে পারব।
নূর বিড়বিড় করে কি যেন বললো। তন্বি জিজ্ঞেস করাই বললো এমন কিছু হলে জানাবে। তারা গিয়ে শুয়ে পড়ল। সারারাত প্রচুর বৃষ্টি পড়েছে। সকালে থমথমে পরিবেশ। সূর্যের আবছা আলোয় আলোকিত হয়ে আছে। রাস্তা-ঘাট ভিজে চুপসে আছে। অনেক জায়গায় কাঁদা মাখামাখি হয়ে আছে। তন্বি আর কলেজে যায়নি। নূর ও বাকিরা গেল ভার্সিটি।
মেহেরঃঃ- কি অবস্থা রাস্তা-ঘাটের দেখছিস। সামান্য বৃষ্টি হলেই জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
আলিফাঃঃ- বিল্ডিংয়ের উপর বিল্ডিং তুলবে কিন্তু চলাচলের পথ ঠিক রাখবে না। কয়দিন পর দেখবি এসব রিকশা বাস কার বাদ দিয়ে নৌকা জাহাজে যাতায়াত করতে হবে। দেখ ভার্সিটির মাঠ দেখ। কাঁদায় ভরা।
সিমাঃঃ- তোদের দুইজনকে সড়ক মন্ত্রী বানাবো। কি বলিস?
হাসাহাসিতে মেতে উঠল। এমন সময় এলো ভূমিকম্প মানে আফরান আর তার বন্ধুরা জীপ নিয়ে ভার্সিটিতে প্রবেশ করল। এমন সময় দেখল নূর আর বাকিরা মাঠে দাঁড়িয়ে হাসছিল। তারপর শয়তানি বুদ্ধি মাথায় এলো। জীপটা ফুল স্পীডে চালিয়ে তাদের সামনে কাঁদার মধ্য দিয়ে গেল। কাঁদা সব ছিটকে তাদের গায়ে পড়লো। তারা বুঝতে পারলো না হঠাৎ কি হলো? সামনে তাকিয়ে দেখে তাদের আর বুঝতে বাকি রইল না। আফরানরা তাদের অবস্থা দেখে হাসতে হাসতে খারাপ অবস্থা। হাসারই কথা তাদের এখন দাঁড় করিয়ে দিলে স্ট্যাচুর চেয়ে কম লাগবে না। মেয়েরা পারছে না তাদের ঘাড় মটকে দিতে। রাগে পুরো শরীর জ্বলে যাচ্ছে। ছেলেরা তাদের সামনে এসে হাসতে লাগলো। হাসতে হাসতে এমন অবস্থা যে একজন আরেক জনের গায়ের উপর পড়ে যাচ্ছে। নূর ইশারা দিতেই মেয়েরা হাত ভরতি কাঁদা নিল। ছেলেদের হাসি উধাও হয়ে গেল। তারা বুঝতে পারলো এখন কি হবে। কি বলা বা বোঝার আগেই কাঁদা ছুড়ে মারল তাদের গায়ে। রাগে তারাও কুটিকুটি হয়ে গেল।
রিহানঃঃ- হোয়াট দ্যা হেল ইজ দিস? (প্রচন্ড রেগে গিয়ে)
পুষ্পঃঃ- ইট ইজ নট হেল। ইট ইজ কাঁদা। (বলে আবার কাঁদা ছুড়ে মারল।)
নূরঃঃ- সেটা আগে বোঝার উচিৎ ছিল। নিউটন নানা বলে গেছিলো। প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে। আপনারা ক্রিয়া করেছেন আমরা তার প্রতিক্রিয়া করছি। (বলে আফরানের গায়ে কাঁদা মারল।)
আফরান তো রাগে শেষ। কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। তাই সেও কাঁদা ছুড়ে মারল নূরের গায়ে। এক প্রকারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। একে অপরকে কাঁদা ছুড়াছুড়ি। সারা মুখে কাঁদা মাখিয়ে দিল একে অপরের। এক প্রকারে কাঁদা দিয়ে হোলি খেললো তারা। কাউকে চেনা যাচ্ছে না এমন অবস্থা হয়েছে। তাদের এই কান্ড দেখে সারা ভার্সিটির সবাই হাসতে হাসতে শেষ। অনেকে ছবি আর ভিডিও তুলছে। প্রায় এক ঘন্টা ধরে এই যুদ্ধ চলল। অবশেষে ক্লান্ত হয়ে থেমে গেল। পারছে না একে অপরকে এই কাঁদার মধ্যেই চুবিয়ে মারতে। এই অবস্থায় তো আর ক্লাস করা যাবে না। ছেলেরা রাগে জীপে উঠে গেল। নূর কাঁদা নিয়ে জীপের সামনের গ্লাসে ছুড়ে মারল।
আফরানঃঃ- হোয়াট দ্যা…….
নূরঃঃ- কাঁদা।
বলেই দৌড় দিল। তার পিছে বাকিরাও দৌড়। বাইরে এসে একে অপরের দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। আর আমরিনের সেলফি তা তো আছেই। ওইদিকে আফরানরাও একে অপরের দিকে তাকিয়ে ফিক করে হেসে দিল। তারপর বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিল।
.
.
.
কলিং বেল বাজাতেই তন্বি এসে দরজা খুলল।
তন্বিঃঃ- আম্মু এখানে কে যেন স্ট্যাচু রেখে গেল।
নূরঃঃ- ওই শাকচুন্নি এটা আমি।
তন্বিঃঃ- (হাসতে হাসতে পেট ধরে নিচে বসে গেল) তোমার এই অবস্থা কেন?
আম্মুঃঃ- কি হয়েছে?
আম্মুকে দেখি সেও হাসছে। কোমরে হাত দিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ভিতরে গেল। গোসল করে ফ্রেশ হয়ে বসল বেডের উপর। তন্বি হাসতে হাসতে এসে তার পাশে বসল। নূর তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তার দিকে তাকাল। সে তাড়াতাড়ি হাসি চাপা দিল।
তন্বিঃঃ- নিশ্চয় ওই ছেলেরাই করেছে?
নূরঃঃ- হো। খাচ্চর খাটাশ বেটা। আমিও কম না। সুন্দর করে কাঁদা দিয়ে এক্কেরে মেকআপ করিয়ে দিছি।
তন্বি আর হাসি চাপা রাখতে না হাসতে হাসতে বেডের উপর গড়াগড়ি খাচ্ছে। আপু তুমিও এক্কান চিজ।
নূরঃঃ- শুধু চিজ??? আরে মে চিজ বাড়ি হু মাস্ত মাস্ত। মে চিজ বাড়ি হু মাস্ত….. (বলে সেও বেডের উপর শুয়ে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।)
.
.
.
চলবে
বিঃদ্রঃ ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন 😊