অতঃপর প্রণয় পর্ব-২৬ এবং শেষ পর্ব

0
90

#অতঃপর_প্রণয়
#অন্তিম_পর্ব
#জেসমিন_জেমি

মাহিদ – আপনাকে কিছু বলার ছিলো আবিরা।

আবিরা থতমত খেয়ে বললো,
জি বলুন।

মাহিদ মাথা চুলকালো, ঠোঁটের কোনে তার মিষ্টি হাসির রেখা ফুটে উঠেছে। মাহিদ হুট করে আবিরার হাত দুটো নিজের হাতের মুঠোয় পুরে নিলো আবিরা হতভম্বিত চকিত হয়ে ফ্যালফ্যাল চোখে মাহিদের দিকে তাকিয়ে আছে। কি বলবে সে? এভাবে হুট করে হাত ধরায় বিব্রত হলো আবিরা পরপর চোখ ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই মাহিদ ধীরকন্ঠে বললো,
আই লাভ ইউ আবিরা। আপনি জানেন? দুবছর যাবৎ! দু বছর যাবৎ আপনাকে ভালোবাসি। ভীষণ ভালোবাসি। আপনাকে নিজের করার স্বপ্ন দেখি। ফাইনালি, ফাইনালি আপনি আমার হবেন একান্ত আমার।

আবিরা অবাক হলো। দু বছর যাবৎ? লোকটাকে তো তেমন একটা আবিরা দেখেই নি। হুট করেই মনে পরলো দু বছর আগে মাহিরা আপুর (মাহিদের বোন) বিয়েতে হয়তো একবার দেখেছিলো। আবিরা থতমত খেয়ে নিজের হাত সরিয়ে নিবে এমন সময় আবিরা চমকে উঠলো তার ঠিক সামনে স্বয়ং ইমির দাঁড়িয়ে আছে। আবিরা লক্ষ করে দেখলো ইমিরের চোখ মুখ লাল বর্ণ ধারণ করেছে ইতিমধ্যে। আবিরা হকচকিয়ে উঠে দাঁড়ালো সাথে মাহিদও। মাহিদ ইমিরকে দেখে হেঁসে বলল,
ইমির ভাই ভালো আছেন?

ইমির ভ্রু কুঁচকালো। গম্ভিরস্বরে বললো,
হুম।
আবিরা অবাক চোখে ইমিরের দিকে তাকিয়ে আছে । ইমির এক পলক আবিরার দিকে তাকালো পরপর আবিরা, মাহিদ কিছু বোঝে উঠার আগেই আবিরার হাত টেনে ক্যাফে থেকে বের হয় গেলো। আবিরা বিস্ময়ে ফ্যাল ফ্যাল করে তার হাত ধরে রাখা মানবটার দিকে তাকিয়ে। সব কিছু স্বপ্ন লাগছে তার কাছে। আবিরা বিরবির করে বললো,
এটা যদি স্বপ্নও হয় তবুও মুহুর্তটা এখানে ধমকে যাক। প্রিয় মানুষটার হাতে হাত রেখে এভাবেই বরং জীবন চলতে থাক। মাহিদ হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে রইলো। দু বার পিছুও ডাকলো ইমির আবিরা বোধহয় শুনলো না।

ইমির বাইরে গিয়ে আবিরাকে নিজের গাড়ীতে বসালো। আবিরা চুপচাপ উঠেও বসলো। আবিরা যেনো হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পরেছে। ইমির গাড়ীতে বসতেই স্পিডে গাড়ী চলতে থাকলো। আবিরা এখনো ইমিরের দিকে তাকিয়ে আছে। গাড়ীর গ্লাসভেদ করে ঝড়ো হাওয়া চোখে মুখে উপচে পড়তেই আবিরা সম্বিৎ ফিরে পেলো৷ আবিরা চেঁচিয়ে বললো,
কি করছেন? এভাবে কেউ ড্রাইভ করে? আরে সাবধানে ?

ইমির একমনে ড্রাইভ করতে লাগলো। আবিরা ভয়ে ইমিরের কাঁধ চেঁপে ধরলো। পরমুহর্তেই ইমির গতি কমালো। আবিরা হাফ ছেড়ে বাঁচলো আড়চোখে ইমিরের দিকে চেয়ে বুঝলো লোকটা ভীষন রেগে আছে কিন্তু কেনো? বাহিরের কোলাহলপূর্ণ রাস্তার হৈ চৈ গাড়ীর কর্কশশব্দে হর্ণের তীব্র আওয়াজ তবে গাড়ীতে পিনপিন নিরবতা। নিরবতা ভেঙে আবিরা ধীরকন্ঠে বললো,
ইমির ভাইয়া আমরা কোথায় যাচ্ছি?

ইমির কিছু বললো না। আবিরা বললো,
কথা বলছেন না কেনো?

ইমির এবার আবিরার হাত শক্ত করে চেঁপে রাগীকন্ঠে বললো,
অ্যাই মেয়ে ছেলেদের সাথে ঘুরে বেড়াতে ভালো লাগে তোমার? যার তার সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছো লজ্জা করে না?

আবিরা যেনো আঁকাশ থেকে পড়লো সে ছেলেদের সাথে ঘুরলো কখন? রাগে ফুঁসে উঠলো আবিরা। আবিরা ছেলে, বুড়ো, নানা, দাদা যার সাথেই ঘুরতে যাক তাতে উনার কি? আবিরা কঁপাল কুঁচকে রাগ দেখিয়ে বললো,
হাত ছাড়ুন ইমির ভাই লাগছে।

ইমির দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

ছাড়বো না।

আবিরা – আপনি কিন্তু অসভ্যতামি করছেন।

ইমির হাত ছেড়ে দিলো। আবিরা রাগীকন্ঠে বললো,
যার তার সাথে নয় মাহিদ আমার উডবি আপনি কি জানেন না? আপনাকে কি জানানো হয়নি।
কিছুদিন পর উনার সাথে আমার বিয়ে,,

আবিরা কথা শেষ করতে পারলো না। ইমির আয়েশ করে গাড়ীতে হেলান দিয়ে আবিরার হাত মুঠোয় পুরো গম্ভিরকন্ঠে বললো,
বিয়েটা হচ্ছে না।

আবিরা থমকালো, বললো,
মানে?

ইমির বললো,
হুম।

আবিরা কপাল কুচকালো। বললো,
আপনি বললেই হলো?

ইমির কিছু বললো না। আবিরা বললো,
চুপ করে আছেন কেনো? বলেন?

ইমির ধীরকন্ঠে বললো,
সময় হলো সব জানবে।

আবিরা অবাক চোখে ইমিরের মুখ পানে চেয়ে রইলো। সব যেনো মাথার উপর দিয়ে গেলো। ফ্যালফ্যাল চোখে তাকিয়ে রইলো শুধু। ইমির বাঁকা হাসলো। ইমিরের অভ্যাস হয়ে উঠে আবিরাকে অন্য কারো বউ হতে ইমির কখনোই দিবে না । প্রথম প্রথম মেয়েটাকে বিরক্ত লাগতো। সেদিন যখন মেয়েটাকে তাকে ভালোবাসি বললো রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছিলো ইমিরের রাগের মাথায় লাগিয়ে দিয়েছিলো একটা থাপ্পর তারপর গত ১টা মাসে আবিরা আর জোগাজোগ করলো না। না মেসেজ করলো, না কল আর না ইমিরের সামনে আসলো। এই একটা মাসে ইমির বেশ করে বুঝেছে মেয়েটা তার অভ্যাস হয়ে উঠেছে। ইমির ছটফট করেছে। নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টাও করেছে। মেয়েটার থেকে দূরে থাকার কত চেষ্টা তার। আজ যখন মেয়েটাকে অন্য কারো সাথে দেখলো। মেয়েটার হাসি মুখ দেখলো, অন্য কারো হাতের মুঠোয় আবিরার দুটো হাত তখন ইমিরের ভিতরটা জ্বলে উঠলো। ইমির আর পারলো না নিজেকে এই মেয়েটার থেকে দূরে রাখতে।

আবিরাকে বাড়ী পৌঁছে দিয়ে ইমির সোজা চলে গেলো। আবিরা বোকা বোকা চোখে ইমিরের চলে যাওয়া দেখলো। তূর্ফা তড়িঘড়ি করে চলে এসেছে গেটের সামনে আবিরাকে এভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে তূর্ফা
আবিরার মাথায় থাপর মেরে বললো,
এভাবে রেখে চলে আসলি কেনো?

আবিরা চঁকিতে পাঁশে ফিরলো তবে মুখে কিছু বললো না। তূর্ফা বললো,
ভাগ্যিস চলে এসেছিলাম। জোর বাঁচা বেঁচে গেলাম। আল্লাহ!

————–

পরের দিন বিকেল বেলায় ইলমি খুঁশিতে গদগদ হয়ে আবিরাকে লাল টুকটুকে একটা শাড়ী পড়িয়ে দিলো । তূর্ফা তূর্ণা আবিরাকে টেনে আয়নার সামনে বসালো। দু বোন মিলে হালকা মেক আপ এ আবিরাকে সাজালো । আবিরা হাই তোলে কঁপাল কুঁচকালো বললো,
কি হচ্ছে কি? ঘুম থেকে টেনে তুলে এভাবে সাজাচ্ছিস কেনো?

তূর্ফা মুচকি হাসলো, তূর্ণা কিছু বলতে নিলেই তূর্ফা মুখ চেপে ধরলো। আবিরা কপাল কুচকে বললো,
কি হলো বল?

তূর্ফা বললো,
সময় হলে সব জানবে জানেমান।

———
হুট করেই ইমির আবিরার আকদ হয়ে গেলো। আবিরা ঘুমের ঘোরে সবাইকে এক পলক দেখলো। পরপর তাকালো সামনে বসা ইমিরের দিকে ইমির বাঁকা হাসলো। আবিরা যেনো অবাকে উপর অবাক হলো। কি হচ্ছে এসব?
ইমির একদিনের ব্যবধানে এসব কিভাবে করলো? আবিরা ইমরুল তালুকদারের দিকে তাকিয়ে দেখলো ইমরুল তালুকদার বেশ আয়েশি ভঙ্গিতে সোফায় বসে জহির মির্জার সাথে গল্প করছে। আবিরার মাথা ভনভন করে উঠলো। আবিরা ভাবছে এরা স্বপ্ন সে এখনো ঘুমে। ইলমি আবিরার হাবভাব দেখে মুচকি হাসলো। এসব তো ইলমি, ইমির আর আবরারের কারসাজি ।

বাড়ীর বড়রা মিলে ঠিক করলো আবিরাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ১বছর পর তুলে দেওয়া হবে।

৫ বছর পর।
দ্বিতীয় বারের মতো এমপি নির্বাচিত হলো আবরার। পুরো তালুকদার বাড়ী আনন্দে মেতে উঠলো। টিভিতে নিজের আব্বা দেখে ইনশিরাহ্ চেঁচিয়ে উঠে বললো,
আমার আব্বাহ।

আছমা বেগম নাতনীর ফুলোফুলো গাল টেনে বললো,
নাহ আমার আব্বাহ।

টিভিতে বিজয়ের জয়ধ্বনি শুনতে পেয়ে ইলমি ছুটে আসলো। ইনশিরাহ মাকে দেখে গুটি গুটি পায়ে নেমে এলো মায়ের কাছে হাত ইশারায় ভাঙ্গা কন্ঠে বললো,
আমার আব্বাহ।

ইলমি হাসলো। মেয়েকে কোলে তোলে ফর্সা গালে শব্দ করে চুমু খেলো। বললো,
আমার এমপি সাহেব। ইলমির এমপি সাহেব।

ইনশিরাহ্ ফ্যালফ্যাল চোখে তাকিয়ে রইলো। ইলমি হোঁ হোঁ করে হেঁসে উঠলো।

তালুকদার বাড়ী আজ মেতে উঠেছে আনন্দে। বাড়ীর তিন মেয়ে,তিন মেয়ের জামাই। বাড়ীটা মেতে উঠেছে। ইনশিরাহ্ বাড়ীটাকে মাথায় তুলে রেখেছে। ইনশিরাহের বয়স ৪ বছরে পড়লো এবার। সারাদিন ছুটাছুটি এ ঘর থেকে ও ঘর।ইলমি হাঁপিয়ে যায় মেয়েকে সামলাতে সামলাতে। আমেনা বেগমের ভাস্যমতে ইনশিরাহ্ ইলমির জিরোস কপি। ইলমি ছোট বেলায় ইনশিরাহ্ থেকে দুষ্টু ছিলো। ইলমি মাঝে মাঝে নিজের মায়ের জন্য হা হুতাশ করে। সে যদি ইনশিরাহের থেকে দুষ্টু হয় তাহলে তার মায়ের কি হাল করে ছেড়েছে ভেবেই দীর্ঘশ্বাস ফেলে।

——

রাত ১১।
আবিরার কোলে তার আড়াই বছরের ছেলে আশফাক। আবিরা ছেলেকে আমেনা বেগমের কোলে তুলে দিয়ে খেতে বসেছে মাত্রই। ছেলেটা কেঁদে চলেছে। ইলমি রাতের খাবারের ব্যবস্থা সবটা একাই করেছে। যদিও টুকটাক সাহায্য সুফিয়া করেছে। ইলমি ঘেমে নেয়ে চিপচিপে অবস্থা ক্লান্ত হয়ে কিচেন থেকে বের হলো মাত্রই। ইলমিকে দেখা মাত্রই আশফাক ভাঙা কন্ঠে ডেকে উঠলো,
ফুমাম্মি।

হিমি বেগমের আর আছমা বেগমের সাথে বকবক করে যাচ্ছে ইনশিরাহ। মাকে দেখেই মেয়ে সেখান থেকে এগিয়ে আসলো। ইলমি মেয়েকে রেখে আশফাক কে কোলে তুলে নিলো। পরপর আশফাকের গালে চুমু এঁকে দিলো। আশফাক খিলখিল করে হেসে উঠলো।ইনশিরাহ সবটা দেখে রাগে দুঃখে গাল ফুলালো। ছোট ছোট পায়ে সরে গেলো। তূর্ণার রুমের সামনে দিয়ে যেতে গিয়ে উঁকি দিলো দেখলো তুর্ণা শুয়ে আছে। ইনশিরাহ রুমে ঢুকতেই তূর্ণা বললো,
আম্মা আসেন। কি হয়েছে?

ইনশিরাহ গাল ফুলিয়ে বললো,
আম্মা পতা।

তূর্ণা উঠে বসলো, হেঁসে বললো,
আম্মা পচা কেনো?

ইনশিরাহ বললো,
আম্মা আছফাক চুমু খাই।

তূর্ণা হো হো করে হেঁসে উঠলো। ইনশিরাহকে বিছানায় উঠিয়ে ইনশিরাহের গালে চুমু খেয়ে বললো,
হিংসে করছেন কেনো? আশফাক আপনার ভাই তো। ভাইয়ের সাথে কেউ হিংসে করে।

ইনশিরাহ গাল ফুলিয়ে বললো,
বাই ।

তূর্ণা ইনশিরাহ গাল টেনে হেঁসে বললো,
হ্যাঁ । আপনি বড় আপু আপনারও উচিত আশফাককে ভালোবাসা।

ইনশিরাহ ভাঙা কন্ঠে বললো,
ভালুবাসবো।

তূর্ণা বললো
আম্মাহ লক্ষি।

ইনশিরাহ হেসে উঠলো তখনিই রুমে ঢুকলো তূর্ফা।
তূর্ফা- কি কথা হচ্ছে দুজনের?

তূর্ণা হেসে বললো,
মেয়ের হিংসে হয় তার মা আশফাককে চুমু খায় কেনো?

তূর্ণা হেসে উঠে ইনশিরাহকে কোলে তুলে বললো,
চুমু তো খাবেই আম্মাহ আশফাক আপনার ভাই হয় তো!

ইনশিরাহ বললো,
বাই।

তূর্ণা বললো,
কয়েকদিন পর আপনার আরেকটা ভাই আসবে।

ইনশিরাহ বুঝলো না বোধহয়। তূর্ণা বললো ফুপির ফোলা পেটে কি আছে জানেন?
আপনার আরেকটা ভাই।

ইনশিরাহ কি বুঝলো সে নিজেই জানে খিলখিলেয়ে হেসে উঠে বললো,
বাই বাই।
তখনি রুমে ডুকলো আবির তূর্ফা ইনশিরাহকে নিয়ে বের হয়ে গেলো। আবির তূর্ণার কাছে গিয়ে বসে মাথায় হাত রাখলো বললো,
বেশি খারাপ লাগছে?

তূর্ণা মাথা নাড়লো। যার মানে একদমই না
আবির হাসলো। তূর্ণার চশমা টি টেবিলে রেখে বললো, ঘুমিয়ে পড়ো রাত হয়েছে। আবির পাশে শুতেই তূর্ণা আবিরের গা ঘেঁষলো।

তূর্ফা ইনশিরাহ সাথে বেশ সময় নিয়ে গল্প করলো। তন্ময় র ফিরতেই ইনশিরাহ হেসে উঠে বললো,
ফুপাহ।

তন্ময় হেসে বললো,
ফুপাহ। দুটো চকলেট এগিয়ে দিলো ইনশিরাহ হাতে নিয়ে খিলখিল করে হাসলো। তন্ময় অফিস থেকে সোজা এখানে এসেছে তূর্ফা তন্ময়ের মাথায় হাত রাখলো। বললো,
ফ্রেশ হয়ে আসেন। আমি ততক্ষনে ওকে রুমে দিয়ে আসি। তন্ময় মাথা নেড়ে ওয়াশ রুমে ঢুকলো। তূর্ফা ইনশিরাহকে নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।

ইলমি সব কাজ শেষ করে রুমে ফিরলো। ফ্রেশ হতেই তূর্ফা ইনশিরাহ্কে রুমে দিয়ে গেলো। আবরার সেই বিকেলে বের হয়েছে এখনো ফিরে নি। ইলমি ইনশিরাহকে কোলে নিয়ে বিছানায় বসালো। ইনশিরাহ গাল ফুলিয়ে বসে রইলো। ইলমি আড়চোখে মেয়ের হাবভাব দেখলো। বললো,
কি সমস্যা গাল ফুলিয়েছেন কেনো?

ইনশিরাহ বললো,
আম্মা পতা।

ইলমি হাসলো এগিয়ে এসে মেয়ের কোলে মাথা রেখে বললো,

আম্মা পচা কেনো?

ইনশিরাহঃ আম্মা আশফাক চুমু খাই।

ইলমি হো হো করে হেঁসে উঠলো। বললো,
দিন দিন হিংসুটে হয়ে যাচ্ছিস মাইয়া।
পরপর ইমশিরাহ গালে চুমু একে দিলো। পরপর পেটে সুড়সুরি দিতেই ইনশিরাহ খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো। ইলমি বললো,
আম্মাহ একটা শান্তি দেন।

ইনশিরাহ শক্ত করে মাকে জড়িয়ে বললো,
ছান্তিইইই।

ইলমিও সাথে সাথে বললো,
শান্তিইই

মা মেয়ে এক সাথে হেসে উঠলো তখনি আবরার ফিরলো মা মেয়েকে এভাবে হাসতে দেখে ভ্রু কুচকালো। ইনশিরাহ আব্বাকে দেখে ডেকে উঠলো আবরার মেয়েকে জড়িয়ে নিলো।ইলমি বললো,
আপনার আব্বাকে ফ্রেশ হতে দেন।

আবরার ফ্রেশ হয়ে ফিরলো। ইলমি টেবিলে খাবার এনে রেখেছিলো। আবরার নিজে খেতে খেতে মা মেয়ের মুখে তুলে দিলো। অনেকটা সময় নিয়ে মা মেয়ের বকবক শুনলো। একসময় ইনশিরাহ বাবার কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে গেলো। আবরার মেয়েকে শুয়িয়ে দিয়ে কপালে চুমু এঁকে দিলো। ইলমির কোলে মাথা রেখে বললো,
মা মেয়ে বকবক শুনতে শুনতে মাথা ব্যথা শুরু হয়ে গেছে মাথাটা টিপে দে।

ইলমি বিনাবাক্যে মাথা টিপে দিতে লাগলো। আবরার ভ্রু কুচকে বললো,
বাহ বাধ্য বউ!

ইলমি হাসলো বললো,
হু

পরপর মাথা নিচু করে আবরারের কপালে চুমু একে দিলো। বললো,
ভালোবাসি এমপি সাহেব।

আবরার হাসলো ভীষণ সুন্দর সেই হাসি। বললো,
হুম।

ইলমি কপালকুচকে বললো,
হু কি?

আবরার বললো,
ভালোবাসিস।

ইলমি – আপনি বাসেন না?

আবরার – নাহ।

ইলমি চটপট আবরারকে কোল থেকে সরিয়ে দিয়ে বললো,
সড়ুন তো।

আবরার হো হো করে হেসে উঠে বললো,
ভালোবাসি।

ইলমি অভিমানে ঠোঁট ফোঁলালো । আবরার উঠে ইলমির ঠোট জোড়া নিজের আয়ত্বে নিয়ে নিলো।

-সমাপ্ত-
(ভূলক্রুটি মার্জনীয়।)