অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী ২ পর্ব-৩৮+৩৯

0
258

#অনিমন্ত্রিত_প্রেমনদী
#দ্বিতীয়_অধ্যায়
#পর্ব_৩৮
#জিন্নাত_চৌধুরী_হাবিবা

(কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ)

“বউ নিয়ে এসে গিয়েছে” বলে হৈচৈ লেগে গেল। তরীর দায়িত্ব বেশি। সে কোনদিকে যাবে? ওদিকে ভাইয়ের যে দায়িত্ব নেওয়ার মতো সে ছাড়া আর কেউ নেই। আয়েশা সুলতানা হয়তো বুঝলেন। তিনি তরীকে বললেন,“ওদিকটা গিয়ে সামলাও। এখানে ইরা আছে, আমি আছি।”

তরী মনে মনে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করলেেও ঠোঁটে টানলো স্বচ্ছ হাসি। পরনের ভারী শাড়ি বদলে নিয়ে হালকা একটা জামা পরে নিলো। অমি এখানেই রইলো। অরুকে নিয়ে ঘরে প্রবেশ করলো রামি। অরু উসখুস করছে কিছু বলার জন্য। কিন্তু সবাই সামনে থাকায় বলতে পারছে না। রামি অরুকে পর্যবেক্ষণ করে কন্ঠ খাটো করে শুধালো,“কোন সমস্যা হচ্ছে?”

অরু রামির দিকে তাকালো না। সামনে তাকিয়ে থেকে সে-ও চাপা স্বরে আবদার করে বসলো।
“আমার তো একটা মাত্র ভাই। তাঁর বিয়ের নিয়মকানুন সব আমাদের বাসায় হচ্ছে আর আমি এখানে। আমার না যেতে ইচ্ছে করছে!”

রামি কিছু বললো না। চুপচাপ উঠে গেল। অরুর অল্পস্বল্প অভিমান হলেও তা আর পাত্তা দিলো না। সে-ও তো নতুন বউ। এভাবে সবাইকে এখানে রেখে নিজের বাসায় যাওয়ার ইচ্ছে পোষণ করাটাও বেমানান। রামিরই বা এখানে কী করার আছে! মনকে উপরি উপরি যতই বুঝ দিক না কেন, ভেতরে ভেতরে নিজের বাসায় যাওয়ার জন্য ছটফটিয়ে উঠলো। রামি সোজা গিয়ে ইরার পাশে দাঁড়ালো।

“কীরে, কিছু বলবি?”

“হ্যাঁ, অরুর মাথাব্যথা। ওখানে অনেক মুরব্বিরা আছেন। আমি কিছু বললে হয়তো নেতিবাচকভাবে নেবেন। অনেকে মনে কষ্ট নিয়ে বসবেন। তুমি বরং অরুকে নিয়ে চেঞ্জ করিয়ে দাও।”

“আচ্ছা তুই যা। আমি অরুকে নিয়ে আসছি।”

মুরব্বিদের মাঝ থেকে কৌশলে অরুকে নিয়ে এসেছে ইরা। এজন্য কম প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়নি। অরুকে রামির ঘরে নিয়ে একটা সুতি শাড়ি বের করে নিলো। শাড়ির পিন খুলতে সাহায্য করে ইরা বলল,“মাথাব্যথা বেশি হচ্ছে? তুই কিছুক্ষণ শুয়ে থাক। আমি চা নিয়ে আসছি।”

মাথাব্যথা এখন খুব একটা নেই। তবুও অরু চুপ করে রইলো। ইরা চলে যেতেই দরজা চাপিয়ে সুতি শাড়িটি শরীরে জড়িয়ে নিলো। এখন অনেকটা হালকা লাগছে। কিছুক্ষণের মাঝেই ইরা চা দিয়ে গেল। চা খেয়ে মনে হচ্ছে মাথাব্যথা পুরোটাই সেরে গিয়েছে। রামি ঘরে ঢুকলো। তার গায়ে পোশাক পরিবর্তন করা। হয়তো অরু ঘরে আসার পূর্বেই পালটে নিয়েছে।
রামি বলল,“চল।”

অরু কৌতুহল নিয়ে শুধালো,“কোথায়?”

“আমার শশুর বাড়ি।”

অরুর ঠোঁটে হাসি ফোটে। বিষন্ন মনটা ফুরফুরে লাগছে। রামির বাহু আঁকড়ে বলল,“সত্যি?”

প্রত্যত্তরে হাসলো রামি। মুহূর্তেই অরু দ্বিধা নিয়ে প্রশ্ন করলো,“কেউ কিছু বলবে না?”

“সেসব আমি দেখবো। তুই চল তো।”

অরুকে আবারো প্রাণবন্ত দেখালো। রামি তাকে নিয়ে বেরিয়ে গেল। আয়েশা সুলতানা দেখলেন। কিন্তু আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো তিনি বাঁধা দিলেন না, কোথায় যাচ্ছে প্রশ্ন করলেন না! বরং বললেন ‘তাড়াতাড়ি চলে আসিস’। রামিও সায় জানালো।
অরু বিস্ময় প্রকাশ করলো। গেট পেরিয়ে আসতেই চেপে ধরলো রামিকে।
“মা কিছু জিজ্ঞেস করলেন না কেন?”

“সেসব নিয়ে তোকে মাথা ঘামাতে হবে না।”
বলে অরুর হাত পাকড়ে হাঁটলো রামি। একটু আগে সে মায়ের ঘর থেকে বেরিয়েছে। অনেক কষ্টে মাকে বুঝিয়ে সফল হয়েছে সে।

★★★

সুহার এখনো জ্ঞান ফেরেনি। মিঠু তাকে কোলে নিয়ে ঘরে প্রবেশ করলো। আপাতত তরীর নির্দেশে অরুর ঘরে শুইয়ে দিয়েছে তাকে। সুহাকে কোলে নিতেই সকলে হৈহৈ করে উঠলো। হাতে পানি নিয়ে ছিটিয়ে দিলো সুহার মুখে। কোন সাড়া নেই। তরী হাতে একটুকরো লেবু নিয়ে এলো। সুহার ঠোঁট ফাঁক করে লেবু চিপে দিতেই চোখমুখ কুঁচকে এলো মেয়েটার। ধীরে ধীরে চোখ খুলে তাকালো। তাকে ঘিরে সকলে বসে আছে। মিঠুও তার দিকেই তাকিয়ে আছে। সুহার চোখে চোখ পড়তেই জিজ্ঞেস করলো,“এখন কেমন লাগছে?”
লজ্জা পেল সুহা। একজন মশকরা করা বলল,“তুই এখান থেকে যা তো মিঠু। এসব জিজ্ঞেস করার জন্য আমরা আছি।”

তরী চোখে ইশারা দিলো। মিঠু আর দাঁড়ালো না। লম্বা কদম ফেলে দ্রুত ঘর ছাড়লো। সামনে পড়লো অরু আর রামি। মিঠু জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। রামি বলল,“কী করবো বল? তোর বোনের জন্য মাকে ম্যানেজ করে এসেছি।”

মিঠু সরু চোখে তাকিয়ে অরুকে বলল,“বিদায় করতে না করতেই আমার বারোটা বাজার জন্য চলে এলি? একটা ঘন্টাও অপেক্ষা করতে পারলি না?”

অরু দুপাটি দাঁত দেখিয়ে হাসলো। বলল,“তোমার বউকে কান পড়া দিতে এসেছি। সাথে এটাও শিখিয়ে দেব কীভাবে তোমাকে দৌড়ের উপর রাখা যায়।”

মিঠু অরুর মাথায় একটা থাপ্পড় মা*র*তে*ই গর্জে উঠলো রামি।
“তুই আমার বউকে মা*র*লি কোন সাহসে?”

চোখ সরু করে তাকালো মিঠু। খানিক সময় নিরব থেকে বলল,“তোর বউ হওয়ার আগে আমার বোন হয়।”

“তোর বোন পরে। আগে আমার বউ, পাঁচটা না দশটা না একটা মাত্র বউ।”

“ঠিক আছে, মা*র*লা*না। তবে একটা কথা, আমার বোন যদি একবার তোর বাসা থেকে চোখে পানি নিয়ে এ বাসায় আসে, আমি ভুলে যাব তুই কে।”

রামি করুণ গলায় বলল,“বোনের জন্য বন্ধুকে ভুলে যাবি?”

“আমি আগে বোনের চোখে পানি দেখবো, আর বোন জামাইকে বেধড়ক পে*টা*বো। তারপর বন্ধুর জন্য দরদী হয়ে তাকে হাসপাতালে পাঠাবো।”

অরু আগে মিঠুর পেটে ঘু*ষি মে*রে প্রতিশোধ নিলো। তারপর বলল,“তোমাকে লাগবে না। আমার সাথে সাতপাঁচ করলে ধরে ছাদ থেকে ফেলে হাত-পা ভেঙে দেব।”

মিঠু রামির দিকে তাকিয়ে ফিচেল হাসলো।
“দেখলি কার বোন? রক্ত কথা বলে।”

রামি অতিষ্ঠ হয়ে বলল,“তোরা তো রা*জা*কা*রে*র বংশধর। জেনেটিক্যালি সেই স্বভাবটা রয়ে গিয়েছে। শুধু পার্থক্য হলো তার আদিকালের আর তোরা ডিজিটাল রা*জা*কা*র।”

অরু তেজী গলায় বলল,“এখান থেকে বের হই একবার। তারপর তোমাকে রা*জা*কা*রে*র নমুনা দেখাবো।”

“ভাই-বোন শুধু আমাকে মা*রা*র হুমকিটাই দিতে পারবি।”

অরু দুজনকে রেখে ভেতরে চলে গেল। একটু আগে তর্কে জড়ানো দুই বন্ধু কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বেরিয়ে গেল। অরু সবকিছুর তদারকি করছে। দ্রুত বাসরঘর সাজানো কমপ্লিট করতে বলেছে। তার হাতে সময় কম। তরীকে বলল,“আপু, ভাইয়া আর ভাবিকে ঘরে ঢুকিয়ে দাও।”

তরী অবাক হয়ে বলল,“মাত্র তো নয়টা বাজলো। এত তাড়াতাড়ি? তাছাড়া রাতের খাবারটাও এখনো কেউ খায়নি।”

অরু বলল,“ওঁদের খাবার ঘরে দিয়ে দিও। দুজন একটু গল্পগুজব করবে। ভাবিকে ক্লান্ত দেখাচ্ছে। কতক্ষণ এই ভারী পোশাক পরে থাকবে?”

“তুই এত তাড়া দেখাচ্ছিস কেন?”

অরু কাঁদোকাঁদো গলায় বলল,“আমাকে ওই বাসায় চলে যেতে হবে একটু পর। তাই আমি থাকতেই সবটা দেখে যেতে চাচ্ছিলাম।”

“আচ্ছা ঠিক আছে, যা।”

অরু খুশিতে লাফিয়ে উঠে জড়িয়ে ধরলো তরীকে। রামি বাইরে থেকে এসেই অরুকে বলল,“এবার চল। মাকে বলেছি তাড়াতাড়ি ফিরবো।”

অরু আহ্লাদী স্বরে বলল,“আর একটুখানি প্লিজ!”

“আর কী করবি?”

“কাজ আছে। তুমি ভাইয়াকে ডেকে নিয়ে আসো। তাকে আর ভাবিকে ঘরে ঢুকিয়ে তারপর যাবো।”

“এত তাড়াতাড়ি?”

অরু খেঁকিয়ে উঠে বলল,“এত কথা বলো কেন? ভাইয়ার কাছ থেকে টাকা নেব। এমনি এমনি বাসর ঘরে ঢুকতে দেব না-কি?”

রামি কপাল চাপড়ানো ছাড়া আর কোন উপায় খুঁজে পেল না। অরুর হাত চেপে ধরে বলল,“টাকা তোকে আমি দেব। চল, বড়ো ভাইয়ের বাসর ঘরের সামনে তোকে দাঁড়াতে হবে না।”

অরু হাত ঝাড়া দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,“কীসের বড়োভাই? মিঠুর বাচ্চা মিঠু কি আমাকে ছোটোবোন বলে দুই টাকার দাম দেয়? যেন আমাকে সত্যি সত্যি ড্রেন থেকে তুলে এনেছে, তেমনভাবে ট্রিট করে।”

রামি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,“এখন আমাকে কী করতে হবে?”

“ভাইয়াকে নিয়ে এসো।”

রামি বাধ্য হয়ে মিঠুকে নিয়ে ফিরে এলো। অরু আর কিছু কাজিন মিলে আগেই সুহাকে বসিয়ে রাখলো ঘরে। মিঠু এসে দাঁড়াতেই সবগুলো তার পথ আটকে দাঁড়ালো। বাঁ ভুরু উঁচিয়ে তাকালো মিঠু,“কী?”

সবার আগে অরু হাঁক ছাড়লো।
“আমাদের সম্মানী দেওয়া ছাড়া ভেতরে যেতে পারবে না।”

“কত চাই?”

“দশ হাজার।”

মিঠু রামির দিকে ধারালো চোখে তাকালো।
“তুই এখনো এখানে কী করছিস? তোর আপদটাকে নিয়ে যাচ্ছিস না কেন? দেখলি তো কীভাবে আমার ঘাড় মটকাতে চাইছে।”

রামি ভাবলেশহীন হয়ে বলল,“সে আমি কী জানি! তোরা ভাই-বোন।”

মিঠু ক্রুর হেসে বলল,“আসছি, একটুপর আমিও তর কাছে আসছি।”

রামি ঢোক গিললো। কোন কুলক্ষণে যে সে বাঘের গুহায় পা দিতে গেল! ভাইটা ঠিক ছিলো। মাঝখান থেকে বোনটাকে বিয়ে করে চরম ফাঁসা ফাঁসলো। মনে হচ্ছে দুই ভাই-বোন দুদিক থেকে ক*রা*ত দিয়ে তার ঘাড় থেকে টে*নে মাথাটা আলাদা করে ফেলছে। অরুর হাত ধরে বলল,“তোর দোহাই লাগে অরু, চল! তুই এখানে থাকলেই তোর ভাই বড়ো দান মে*রে আমার পকেট ফুটো করবে।”

অরু ত্যাড়া হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। মিঠু পকেট থেকে দুই টাকার কচকচে বান্ডিল বের করে বলল,“বাচ্চা মানুষ তোরা। এগুলো দিয়ে চকলেট কিনে খাস। এখন আমার রাস্তাটা ছেড়ে দে।”

অরু পথ ছাড়লো না। বলল,“কোন দুনম্বরী চলবে না। দেখা গেল টাকা না দিয়ে ভেতরে ঢুকলে, আর বিছানার উপর বউ দেখতে পেলে না!”

“টাকা আমার পকেটে নেই। ড্রয়ারে আছে। কিন্তু তারজন্য তো আমাকে ভেতরে ঢুকতে হবে।”

অরু বলল,“ঠিক আছে। চল, আমিও যাই।”

অরু সত্যি সত্যি মিঠুর সাথে ভেতরে ঢুকলো। টাকা নিয়ে তবেই সে ক্ষান্ত হলো। সবার মাঝে ভাগাভাগি শেষে অরুকে নিয়ে রামি ফিরে এলো বাসায়। আয়েশা সুলতানা তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে আছেন। সব বি*প*দ ব*খা*টে ছেলেদের মতো তার দিকেই হা করে তাকিয়ে থাকে। কখন তার ঘাড়ে এসে টপকাবে সেই অপেক্ষায় থাকে। দেরি হলো অরুর জন্য। অথচ জবাবদিহি করতে হবে তাকে।

★★★

মিঠু দরজা লক করে বিছানার কাছে এগিয়ে গেল। সুহা সালাম দিলো কাঁপা স্বরে। মিঠু শান্ত গলায় সালামের উত্তর দিয়ে পাশে বসলো। দু’হাতে ঘোমটা তুলতেই লজ্জা আর শঙ্কায় জড়োসড়ো একখানা মুখ দেখতে পেল। চোখমুখ খিঁচে বন্ধ করে আছে। মিঠু হাসলো। আওয়াজ হলো খুবই ক্ষীণ, হিসহিস শব্দ। সুহা চোখ খোলার সাহস করলো না। তার হৃৎপিন্ড তড়িৎ বেগে লাফাচ্ছে। সেদিনের মতো আজও নেশাতুর গলায় ডাকলো মিঠু,“মাদকতা!”

শিউরে উঠলো সুহা। ধীরে ধীরে চোখের পাতা স্বাভাবিক করলো। ক্ষীণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো বিছানার উপর। আচানক মিঠুর আক্রমণে ভড়কে গেল সে। কিছু বুঝে ওঠার পূর্বেই ওষ্ঠদ্বয় আঁকড়ে ধরলো মিঠু। চিনচিন করে উঠলো অধর। দু’সেকেন্ডের মাঝেই ছেড়ে দিয়ে বসলো মিঠু। তবে দূরত্ব বাড়ালো না। মাথা ঝুঁকিয়ে রেখেই উৎফুল্ল মেজাজে বলল,“আমি নেশাক্ত মাদকতা! আমার এই নেশা সারাজীবনেও কাটবে না। সব দো*ষ আপনার। আপনি কেন নে*শা ধরালেন?”

সুহা শক্ত হয়ে জমে রইলো। গলা দিয়ে শব্দ বের হচ্ছে না। হুট করে সুখের দেখা পেয়ে শব্দ হারিয়ে ফেলেছে সে। মিঠু কিছুক্ষণ নিরব থেকেও কোন জবাব পেল না। তাই নিজ থেকেই দূরত্ব বাড়িয়ে দিল। বিছানা থেকে নেমে জামাকাপড় বের করলো। পাঞ্জাবির বোতামে হাত রেখে উপরের দিকের দুটো বোতাম খুলে এক টা*নে পাঞ্জাবি খুলে ফেললো। স্বর পাল্টে গেল তার। এতক্ষণের মোহাবিষ্ট স্বর মুহুর্তেই গম্ভীর হয়ে উঠলো।
সুহার উদ্দেশ্যে বলল,“আপনি এখনো আমার সাথে সহজ হতে পারেন নি। নিজেকে সহজ করুন। আমি অপেক্ষা করবো।”

মিঠুর কথায় কিছু একটা মেশানো ছিলো সূক্ষ্ম অভিমান টের পেল সুহা। মিঠুর সম্পূর্ণ মনোযোগ হাতে থাকা টি-শার্টের উপর। সুহা নিজেকে বোঝাতে পারলো না মিঠুর কাছে। সে ব্যর্থ। মিঠু তাকে ভুল বুঝলো। ধীরে ধীরে বিছানা ছেড়ে নেমে গিয়ে মিঠুর ঠিক পেছনে দাঁড়ালো। মিঠু নিজের পিঠে কিছুর উষ্ণ ছোঁয়া পেল। অনুমান করলো একজোড়া পাতলা ঠোঁট তার পিঠের ক্ষ*ত ছুঁয়ে দিচ্ছে গভীরভাবে। নড়াচড়া করলো না সে। খানিক সময় পর একজোড়া হাত পেছন থেকে তার বুকে এসে বাঁধলো। শক্ত করে জড়িয়েছে তাকে। পিছে মাথা রেখে দাঁড়ালো। একটু পর মিঠু অনুভব করলো তার পিঠ ভিজে যাচ্ছে। ঝট করে সামনে টে*নে আনলো সুহাকে। নজরে পড়লো তার অশ্রুসিক্ত চোখজোড়া। মিঠু অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো৷ সুহা মিঠুর দৃষ্টির পরোয়া করলো না। তার বুকে হামলে পড়লো। কান্নামাখা গলায় বলল,“আপনি আমাকে ভুল বুঝে বসে থাকেন কেন? একটু ঠিকভাবেও তো বুঝতে পারেন।”

মিঠু নিটোল হেসে শান্ত গলায় শুধালো, “আচ্ছা ঠিকটা কী?”

“এই যে আমি আপনাকে….”
এতটুকু বলে আর বাকিকথা সম্পন্ন করলো না সুহা। এখন তার ভীষণ লজ্জা হচ্ছে। যেভাবে মিঠুর বুকে হামলে পড়েছে, ঠিক সেভাবেই ঝট করে দূরে সরে গেল। কথা কাটানোর জন্য বলল,“আমার ঘুম পাচ্ছে।”

মিঠু সরল চোখে তাকিয়ে রইলো। তার ঠান্ডা কন্ঠেও কেঁপে উঠলো সুহা।
“আমায় অনুভূতির সাগরে ফেলে পালাতে চাইছেন সুহা? আজ যে আপনার ছুটি নেই।”

#চলবে…..

(রি-চেইক না করেই পোস্ট করেছি। ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন।)

#অনিমন্ত্রিত_প্রেমনদী
#দ্বিতীয়_অধ্যায়
#পর্ব_৩৯
#জিন্নাত_চৌধুরী_হাবিবা

(কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ)

দশটা বাজতেই সবাই খেতে বসলো। তরী এসে দাঁড়ালো মিঠুর দরজার সামনে। জড়তা নিয়ে একবার নক করলো। এখন তো আর মিঠু একা নেই।
প্রথমবারেই সাড়া দিল মিঠু।
“কে?”

“খাওয়ার সময় হয়েছে মিঠু। আমি কি এখন খাবার পাঠিয়ে দেব। না-কি পরে খাবি?”

দরজা খুলে দিল মিঠু। বলল,“নিচে আসছি আমরা।”

“নিচে যেতে হবে না। ওখানে সবার সামনে হয়তো ঠিকমতো খেতে পারবে না সুহা। আমি বরং খাবার পাঠিয়ে দিচ্ছি।”

“ঠিক আছে।”

তরী খাবার আনতে চলে গেল। মিঠু দরজা ছেড়ে ভেতরে ঢুকলো। সুহার উদ্দেশ্যে বলল,“চেঞ্জ করে নিন। আপু খাবার নিয়ে আসছে।”

সুহা একটা সুতি শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকলো। মেকআপ তোলা সহ অনেকটা সময় লাগলো তার। বের হয়েই দেখলো মিঠু খাবার সামনে নিয়ে বসে আছে। সুহাকে দেখতেই বলল,“বসে পড়।”

কথাটি বুঝতে সুহার বেগ পেতে হলো। নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরেকবার শুনতে চাইলো।
“হুঁ?”

“খেয়ে নাও, খাবার ঠান্ডা হলে খেতে ভালোলাগবে না।”

সুহা এবার নিশ্চিত হলো। না, মিঠু জেনে-বুঝেই সম্বোধনটাকে ঘনিষ্ঠ করেছে। মনে মনে বরং খুশিই হলো সে। এখনো যদি আপনি আজ্ঞে করে, তবে লোকে কী বলবে? চুপচাপ মিঠুর সামনে বসে পড়লো। সুহা খাচ্ছে কম, খাবারে হাত নাড়াচাড়া করছে বেশি। মিঠু সুহার দিকে না তাকিয়েই বলল,“ঠিকভাবে খাও। ওখানে সবার সামনে ঠিকঠাক খেতে পারবে না বলেই আপু ঘরে খাবার পাঠিয়ে দিয়েছে।”

সুহা মৃদু আওয়াজে বলল,“খাচ্ছি তো।”

মিঠুর খাওয়া দ্রুত হয়ে গেল। এঁটো প্লেট হাতে তুলে বের হতে গিয়ে থেমে গেল। সুহার দিকে তাকিয়ে বলল,“তুমি ধীরেসুস্থে খাওয়া শেষ করো। আমি একটু বাইরে থেকে আসছি।”

“এখন বাইরে কী করবেন?”
খাওয়া থামিয়ে প্রশ্ন করলো সুহা।
মিঠু বলল,“রামির বাসায় যাচ্ছি। বেশিক্ষণ লাগবে না।”

“ঠিক আছে।”

মিঠু বেরিয়ে গেল। রান্নাঘরে প্লেট রেখে চলে গেল রামির বাসায়। অরু, রামির জন্যেও ফুল দিয়ে ঘর সাজানো হলো, ঠিক মিঠুর ঘরের মতোই।
ইরা অরুকে বসিয়ে দিয়ে বাইরে বের হলো। রামি মায়ের ঘর থেকে বের হলো। ও বাসা থেকে দেরি করে আসার জন্য কয়েকটা কড়া কথা শুনতে হলো তাকে। সাধারণ দিন হলে অরু এখন ওই বাসায় থেকে গেলেও কিছু বলতেন না আয়েশা সুলতানা। বিয়ের দিন, বাসা ভর্তি মেহমান। আর নতুন বউ বাসায় নেই। ব্যাপারটা কেমন দেখায়? রামি চোখ বন্ধ করে মায়ের কথা হজম করে নিলো। তাকে যে পেয়েছে, সে-ই জিতেছে। মা, বউ, ভাই, বন্ধু সবাই জিতেছে। মাঝেমধ্যে মনে হয় তার বাচ্চারাও তাকে বাবা হিসেবে পেয়ে জিতবে। সবাই তাকে উলোটপালোট করে বলে যায়, আর সে চোখ বন্ধ করে শুনে যায়। বউ থেকে শুরু করে ভাই, বন্ধু সবাই তাকে প্যারায় রাখতে ভালোবাসে। বেচারা মুখ বুজে সব সহ্য করে নেয়। ইরা এসে ডেকে নিলো তাকে।
“চল্ অরু একা বসে আছে।”

রামি এগিয়ে গিয়ে নিজের দরজার সামনে মিঠুকে দেখে থমকে দাঁড়ালো। এখন তার উলটো ছুট দিতে ইচ্ছে করছে। ইরা হাত টেনে সামনে এগিয়ে বলল,“কীরে চল্।”

রামি সরু চোখে মিঠুকে পর্যবেক্ষণ করে শুধালো,“এটা এখানে কেন? বাসর ঘরে না দিয়ে আসলাম?”

ততক্ষণে ইরা তাকে দরজা পর্যন্ত টে*নে নিয়ে গিয়েছে। তাকে দেখেই মিঠু ফিচেল হাসলো। রামি কাউকে পরোয়া না করে দরজা ধরে ভেতরে ঢুকতে নিলেই পেছন থেকে কলার চেপে ধরলো মিঠু। রামি ঘাড় কাঁত করে পেছন ঘুরতেই মিঠু দু-আঙ্গুলের ইশারায় বোঝালো ‘টাকা দিয়ে তারপর যাবি’।
“ছিঃ! তুই অরুর বড়োভাই হয়ে, ছিঃ! ভাবতেই আমার লজ্জা হচ্ছে।”

রামি এমন মুখভঙ্গি করলো যেন সে লজ্জায় ম*রে যাচ্ছে। মিঠুও কম যায় না। বলল,“অরু কে? আমি তো এসেছি বন্ধুর কাছে। চুপচাপ দ্বিগুণ টাকা বের কর।”

রামির চোখ ছানাবড়া। সে আঁতকে ওঠা গলায় বলল,“আমি কি এমনি এমনি তোদের ডা**কা**ত বলি? উচিত শব্দে উচিত বাক্য সাজিয়ে উচিত জবাব দেওয়ার জন্য আমার নাম ইতিহাসের পাতায় ওঠা উচিত। যেখানে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে আমার নাম। কিন্তু আফসোস, আজ পর্যন্ত আমার মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারভিউ নিতে কোন সাংবাদিক এলো না। বড়োই আশ্চর্যের কথা! তাঁদের আর কী বলবো? বাঙালি জাতি মানেই ভালোর কদর জানেনা।”

“তোর লেকচার শুনতে আসিনি। দ্রুত আমার পাওনা বুঝিয়ে দে।”

“টাকা কি গাছে ধরে না-কি? আমি এখন এতটাকা কোথায় পাবো?”

“তখন আমার উপর মায়াদয়া হয়নি? ঠিকই তো নিজের বউ নিয়ে গিয়ে আমার পকেট মে*রে*ছি*স। তাছাড়া বউকে তো যা চেয়েছিল, তাই কিনে দিলি। তখন তো টাকার কমতি দেখিনি! আমার বেলা এসেই তুই ফকির হয়ে গিয়েছিস?”

রামি তর্কে হেরে গিয়ে পকেটে হাত ঢুকালো। মিঠুকে পকেট দেখিয়ে বলল,“আমার পকেট ফুটো হয়ে গিয়েছে। এক টাকাও অবশিষ্ট নেই। যার পকেট ফুটো, তার মতো গরিব আর এই দুনিয়ায় আছে? আমি এখন কোত্থেকে তোকে টাকা দেব বল?”

“তাহলে দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে থাক।”

রামি ক্রুর হেসে বলল,“আমাকে পাহারা দিতে হলে তো তোকেও আজ রাত বউ ছাড়া কাটাতে হবে। তুই পারলে আমিও আজ বাইরে থাকতে রাজি।”

সূঁচালো চোখে তাকিয়ে রইলো মিঠু। কিছুক্ষণ নিরব থেকেই অরুকে ডেকে উঠলো। ভেতর থেকেই জবাব দিলো অরু। মিঠু রামির দিকে তাকিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট চেপে হাসলো। অরুকে বলল,“একটু বেরিয়ে আয় তো।”

রামি মাথা খাটিয়ে মিঠুর পরিকল্পনা বোঝার চেষ্টা করছে। মেশিন ঘুরছে না। হ্যাং হয়ে একজায়গায় থেমে রইলো। অরু ধীর পায়ে বেরিয়ে এলো। মিঠু বলল,“রামি তোর হাজবেন্ড, এছাড়া ওর সাথে তোর আরেকটি সম্পর্ক আছে। বলতো সেটা কী?”

অরু ভেবে বলল,“আপুর দেবর, তাহলে আমাদের বেয়াই।”

“তোর ব্রেইন খুব ভালো, আমার বোন বলে কথা। বউয়ের চ্যাপ্টার ক্লোজ কর। বেয়ান হিসেবে রামির বাসরঘরের গেট ধরা টাকা তোর পাওনা। পাওনা কিনা বল?”

অরু এক পায়ে খাড়া হয়ে বলল,“অবশ্যই।”

রামি হতাশার নিঃশ্বাস ছেড়ে দরজা ঠে*লে ভেতরে ঢুকে গেল। দরজা চাপানোর আগে মুখ বাড়িয়ে বলল,“তোরা ভাই-বোন বাইরে থেকে সারারাত চো*র পাহারা দে। আমি ঘুমাচ্ছি, আল্লাহ হাফেজ।”

অরু চোখ রাঙিয়ে তাকালো মিঠুর দিকে। কটমট করে বলল,“আমাকে যে বের করে আনলে, এবার আমি ঘুমাবো কোথায়? ওই ব্যাটাতো অ*ভ*দ্র*র মতো বউ বাইরে রেখে নিজে ঘরে ঢুকে বসে আছে।”

মিঠু ব্যঙ্গ করে বলল,“আমাকে যে বের করে আনলে, তুই তো টাকার জন্য নেচেছিলি। টাকা না লাগলে তুই ঘরে গিয়ে বসে থাকতি, আমি তোকে আটকে রেখেছি? এত নাটকবাজ কীভাবে হলি? আমার নাকের ডগা দিয়ে এতবড়ো একটা বা*ট*পা*র বড়ো হলো, অথচ কিছুই করতে পারলাম না আমি! জাতি আমাকে ধি*ক্কা*র জানাবে।”

রামি অধৈর্য হয়ে দরজা ফাঁক করে দেখলো দু’ভাইবোন কী করছে৷ ওদের ঝ*গ*ড়া করতে দেখে ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছাড়লো। দশ হাজার টাকা মিঠুর হাতে দিয়ে বলল,“আর নেই। এবার যা।”

“বাকিটাকা মাফ করে দিলাম।” বলে মিঠু চলে যেতে নিতেই তার হাত চেপে ধরলো অরু। তার পথ আটকে বলল,“আমার ভাগ কোথায়?”

“তোর কীসের ভাগ? এতক্ষণ না আমার উপর দো*ষ চাপাচ্ছিলি? পথ ছাড়!” বলে ঝাড়ি দিল অরুকে।

অরু সরলো না। ত্যাড়ামো করে বলল,“আমার অর্ধেক দিয়ে যাও।”

রামি পেছন থেকে অরুর হাত টে*নে ধরে বলল,“তোকে আমি দেব ভাই, এবার ঘরে চল।”

অরু রামিকে ঝাড়ি দিয়ে বলল,“এ্যাই, কে তোমার ভাই? বুদ্ধিসুদ্ধি খেয়ে বসে আছো না-কি?” পা*গ*ল হয়ে বউকে ভাই বলো?”

“তোরা ভাই-বোন যা শুরু করেছিস, কোন মানুষ সুস্থ থাকবে? আমি যে এখনো বাড়িছাড়া হইনি, এতেই তোর আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করা উচিত।”

দুজনকে রেখে মিঠু কে*টে পড়েছে। অরু পেছনে তাকিয়ে দেখলো মিঠু নেই। কোমরে হাত রেখে রামির দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো। যেন সব দোষ রামির। রামি বোকার মতো চেয়ে থেকে প্রশ্ন করলো,“আমি আবার কী করলাম?”

অরু নিজের চশমা খুলে রামির চোখে লাগিয়ে দিয়ে বলল,“ভালো করে দেখ, খালি চোখে তো দেখতে পাওনা। দেখ চলে গিয়েছে তোমার পরাণের বন্ধু।”

রামি ঝট করে চশমা খুলে ফেললো। মাথা ঘুরে উঠছে তার।
“বে*য়া*দ*ব, এক্ষুণি তো অন্ধ হয়ে যেতাম আমি।”
বলে রুমে ঢুকে গেল রামি। অরু ভাবলো রামি হয়তো ভীষণ ক্ষে*পে আছে তার উপর। পা টিপে সেও রুমে ঢুকলো। দরজা আটকে দাঁড়াতেই রামি গম্ভীরমুখে বলল,“সালাম দিচ্ছিস না কেন বে*য়া*দ*ব। এটাও শিখিয়ে দিতে হবে?”

অরু সালাম দিতেই সালামের উত্তর দিলো রামি। অরুর বিচলিত মুখশ্রী দেখে মিটিমিটি হাসলো সে। একটা ছোট্ট বক্স হাতে নিয়ে খুললো। সেখান থেকে একটা ব্রেসলেট বের করে অরুর হাত টে*নে পরিয়ে দিয়ে বলল,“পছন্দ হয়েছে?”

অরু মুগ্ধ হয়ে তাকালো। প্রিয় মানুষের দেওয়া উপহার যেমনই হোক, সেটা বরাবরই সবার প্রিয় হয়ে থাকে। অরুর যে পছন্দ হয়েছে সেটা তার চোখেমুখের উচ্ছ্বাস দেখেই বোঝা যাচ্ছে। বাইরে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি এবার ঝুমঝুমিয়ে নামলো।
যা ঠান্ডার পরিমাণ আরো বাড়িয়ে দিলো। অরু বাইরে তাকিয়ে বলল,“বৃষ্টি হচ্ছে।”

রামি মিটিমিটি হেসে বলল,“রোমান্টিক ওয়েদার। বৃষ্টিও জানে আজ আমাদের বাসর রাত।”

অরু দু-কদম পিছিয়ে বলল,“দূরে থাকো, সুস্থ থাকো। একজন ভবিষ্যৎ ডাক্তার হয়ে আমার কর্তব্য হলো সাধারণ জনগণকে সচেতন রাখা।”

রামি হেসে বলল,“অজু করে আয়। এরপর তোকে ডাক্তারি পড়ানোর দায়িত্বটা আমি নিচ্ছি।”

★★★

মিঠুর অপেক্ষায় বসে রইলো সুহা। সারাদিনই তার বসায় কেটেছে। উঠে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো। কিছুক্ষণ যেতেই নিচে চোখ গেল। মিঠু আসছে। সুহা বারান্দা ছেড়ে ঘরে আবার এসে দাঁড়ালো। মিঠু ঘরে ঢুকে ইচ্ছে করেই বলল,“ঘুমাও নি?”

সুহা মৃদুস্বরে বলল,“না।”

মিঠু ঠোঁট প্রশস্ত করে বলল,“কেন? আমার জন্য অপেক্ষা করলে বুঝি?”

বিপাকে পড়লো সুহা। উসখুস করছে। কী বলবে তৎক্ষনাৎ মাথায় এলো না। মিঠু বলল,“চল, আগে রবের নিকট শুকরিয়া আদায় করি।”

এতে অনেকটা স্বাভাবিক হলো সুহা। মিঠুর কথায় সম্মতি জানালো।
রবের নিকট শুকরিয়া জানিয়ে মিঠু জায়নামাজ ভাঁজ করে রেখে দিলো। অতঃপর সুহার ললাটে গভীর চুম্বন করে বলল,“একজন ভালো স্বামী হওয়ার পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। তোমার কাছ থেকে উত্তম সার্টিফিকেট পাওয়া হবে আমার সৌভাগ্য।”

সুহা স্বচ্ছ হাসলো। তার দু’চোখে হাজারও রঙিন স্বপ্ন। মনে মনে আওড়ালো “নতুন জীবনে আল্লাহ আমাদের দুজনকেই কবুল করুন”।
#চলবে………