অপেক্ষার বসন্ত পর্ব-১৫

0
226

#অপেক্ষার_বসন্ত
ফাহমিদা তানিশা

পর্ব ১৫

[কপি করা নিষিদ্ধ]

রকি অর্নির দিকে গুলি ছুড়ছে দেখে আরাফ সামনে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। তখনি গুলিটা তার বুকে গিয়ে লাগে।আরাফের এমন অবস্থা দেখে অর্নি দৌড়ে আসে। কিন্তু তার আগে আরাফ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।আরাফের এমন করুণ অবস্থা দেখে অর্নি আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছে না। ইচ্ছে করছে পুরো পৃথিবীটা থামিয়ে দিতে।সে তো ভেবেছিল গুলি চালালে কারো প্রাণনাশ হতে পারে। তাই গুলি না চালিয়ে সে সবাইকে হাতেনাতে গ্রেফতার করবে। আর যা করার আইন করবে।কিন্তু তা আর হলো কোথায়?রকি সব উল্টে দিলো। তাহলে সেও কেনো রকিকে ছাড়বে?তার সাথে থাকা পিস্তলটা বের করে রকির দিকে তাক করলো। তখনি তার পুরো টিম এসে পৌঁছালো।তাতে তার কি?সে ছুঁড়ে দিলো কয়েক রাউন্ড গুলি।রকির পায়ে গিয়ে গুলিটা পড়েছে। আরেকটা গুলি ছুঁড়লো সেটা রকির পেটে গিয়ে লাগলো।

একটু পর অর্নির টিম তাদের সবাইকে কব্জায় নিলো। তাদের খুব একটা সময় লাগেনি। অনেকটা দ্রুত সবাইকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হলো পুরো টিমটা। অর্নি এবার সবকিছু বাদ দিয়ে আরাফের কাছে ছুটে গেলো। সেই সাথে কয়েকজন সোর্সকে নিয়ে আরাফকে গাড়িতে তুললো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য।অর্নি চায় না আরাফকে একা ছাড়তে।তার একটু অবহেলার কারণে আজ এই অবস্থা। তাকে তো সাথে যেতেই হয়।রকিকে আহত অবস্থায় থানায় নিয়ে যাওয়া হলো।তার সাথে জুঁইকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। লোভের শাস্তি তো শেষ পর্যন্ত এমন হয়।

একটা সময় শেষে ঠিকই সব প্রকাশ পায় যেমনটা আজ হলো। কিন্তু অর্নির একটু বোকামি তাকে অনেকটা বিপদে ফেলে দিলো।আসলে বোকামি বলা যায় না।যদি বলতে হয় তাহলে দূরদর্শিতার অভাব হয়েছে বলা যায়।সে বুঝতেই পারেনি রকি এতো জঘন্য হতে পারে। অর্নি তো এসেছিল রকি এবং জুঁইয়ের সাথে কথা বলতে।তাই শুধু একজন সহকর্মীকে সাথে নিয়ে এসেছে।সে কি জানতো রকি তাকে এবং আরাফকে এক জালে বন্দী করে মারার জন্য লোক ঠিক করে রেখেছে!জানতো না বলেই তার টিমকে সাথে আনেনি।আজ যদি প্রথম থেকে তার টিম থাকতো তাহলে আরাফের গায়ে একটা আঁচ লাগতো না, গুলি তো দূরের কথা।তার একটা ভুলের জন্য আরাফের এতো বড় মাশুল দিতে হচ্ছে। তবু ভাগ্য ভালো বলে রুমানা শেষ পর্যায়ে এসে টিমকে ফোন দিয়েছিল।তারাও ঠিক সময়ে এসে পৌঁছাতে পেরেছিল। অর্নি তবু নিজেকে সান্ত্বনা দিচ্ছে।এর চেয়ে ভয়ংকর হলে কি হতো?সে তখন কি করতে পারতো?

গাড়িতে অর্নি আরাফের হাত ধরে আছে।আরাফের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। আগে সবসময় অর্নি হাত ধরলে সে হাতটা ছেড়ে দিতো।আজ চুপচাপ শুয়ে আছে। কোনো শব্দ করছে না সে।চোখ দুটো বন্ধ করে আছে। আসলেই আরাফের অনেক ধৈর্য।এমন জটিল অবস্থায় এসেও সে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছে।ব্যথা হচ্ছে তবু চুপচাপ চোখ দুটো বন্ধ করে শুয়ে আছে।অর্নি বারবার তাকে দেখছে আর চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে।আজ সে জিতে গিয়েও যেনো হেরে গেলো।এমনটা তো চায়নি সে।

হঠাৎ মনে পড়লো বাড়ির কাউকে এসব খবর জানানো হয়নি। কিন্তু সে তার ব্যাগটা বাংলোতে ফেলে এসেছে। সেখানে তার ফোনটা ছিল। এখন তো কাউকে ফোন করতে পারছে না।বিপদের সময় একসাথে সব হয়। টেনশনে কোনো কিছুই মাথাতে আসছে না অর্নির। সিআইডিতে থাকায় অনেকবার প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছিল কিন্তু এবারের মতো নয়। এবার কেনো জানি সে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছে না।তখনি তার সাথে থাকা একজন সহকর্মীর কাছ থেকে ফোন নিয়ে তার মাকে কল দিলো। কয়েকটা রিং পড়ার পর তিনি ফোনটা ধরলেন।
_কে বলছেন?
_আম্মু আমি

মায়ের আওয়াজ শোনার পর কিছুতেই সে কান্না আটকাতে পারছে না। ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো সে। ওদিকে তার কান্নার আওয়াজ শুনে তার মা ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। বিভিন্ন আশংকায় তিনিও ঘাবড়ে গেলেন। তবু মেয়েকে শান্ত করার জন্য বৃথা চেষ্টা করেই যাচ্ছেন।
_কি হয়েছে বল মা?কিছুই হবে না। একটু ধৈর্য ধর।
অর্নি কেঁদেই চলেছে। কান্নার মাত্রা কমার চেয়ে দ্বিগুণ গতিতে বাড়ছে আরো। সেই সাথে আওয়াজটাও বেড়ে যাচ্ছে।তার সাথে থাকা কর্মীরা তাকে বারবার সান্ত্বনা দিচ্ছে।ফোনে তার মাও বারবার ডেকে ডেকে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে।আচমকা আরাফ তার হাতটা শক্ত করে ধরলো।সে চোখ খোলার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না।হাতটাও কাঁপছে বেশ।অর্নি সাথে সাথে থেমে গিয়ে তার দিকে তাকালো‌। জোর গলায় বললো:কি করলেন এসব? আমাকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের কি হাল করলেন?সবসময় তো বলতেন ভালোবাসেন না। তাহলে আমাকে বাঁচানোর জন্য নিজেকে উৎসর্গ করলেন কেনো?

আরাফ আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। এদিকে আজকে পথটাও যেনো ফুরাচ্ছে না। অর্নি কথা বলতে পারছে না বলে তার একজন সহকর্মী তার মাকে সব বুঝিয়ে বললো। তিনিও সকাল সকাল এমন একটা খবর শুনে আগের অবস্থায় নেই।

গাড়ি হাসপাতালে এসে পৌঁছাতেই একজন দ্রুত গিয়ে স্ট্রেচার নিয়ে আসলো।আরাফকে স্ট্রেচারে করে ইমার্জেন্সি রুমে নিয়ে যাওয়া হলো। হাসপাতালের সবাই আরাফের পরিচিত হ‌ওয়ায় ট্রিটমেন্টে কোনো হেঁয়ালি হবে না এটা তারা জানে। কিন্তু তবু মনের মধ্যে ভয় কাজ করছে ভীষণ। মৃত্যু অনিবার্য থাকলে শত ডাক্তারের সামনেও রোগী মরতে পারে। এখন আরাফের ভাগ্যে কি আছে তা তো অর্নি জানে না।

অর্নিকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।সে চেয়েছিল ভেতরে যাবে।আরাফের হাতটা ধরে বসে থাকলে তার কষ্টটা একটু কম হবে।আরাফের মাঝেও একটা সাহস থাকবে। কিন্তু আরাফের বন্ধুরা তাকে ভেতরে যেতে নিষেধ করলো। তাদের কথা একটাই।” আপনি ভেতরে গিয়ে এভাবে কান্নাকাটি করলে আরাফের মেন্টালি প্রেসার হবে।তাই আপনি বাইরে থাকুন।”

অর্নিও ভাবলো তাদের কথা।আসলে ভুল কিছু বলেনি তারা।সে এমনেও নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছে না।তার মধ্যে এখন আরাফের পুরো শরীর রক্তে ভেজা হয়ে যাচ্ছে। এখন কিভাবে সে নিজেকে সামলাবে?

ইমার্জেন্সি থেকে একজন ডাক্তার বের হয়ে বললো:আরাফকে ইমিডিয়েটলি অপারেশন করাতে হবে।তার শরীর ভেতর থেকে গুলিটা বের করতে হবে।
অর্নির আর কি বলার আছে?সে তো জানে গুলি বের করতে অপারেশন করাতেই হবে। তাই সম্মতি দিলো। শান্ত কন্ঠে বললো:আমি রক্ত রেডি করছি।
_না রক্ত আমাদের হাসপাতালে আছে। আপনাকে এক্সট্রা প্রেসার নিতে হবে না।

অর্নি এবার ছোট গলায় “আচ্ছা ধন্যবাদ” বলে চুপ করে থাকলো।আর দাঁড়াতে পারছে না সে। বুকের ভেতর বারবার মোচড় দিয়ে উঠছে।আরাফকে অপারেশন রুমে ঢোকানো হবে কিন্তু বাড়ির কেউ আসছে না এখনো।এটা নিয়েও টেনশন লাগছে।সে একা একা কারো সাথে কথা না বলে অপারেশন করতে সম্মতি দিয়ে দিলো।যদি কোনো সমস্যা হয় তখন সব দোষ তার ঘাড়ে গেলে তখন কি হবে? ভালো-খারাপ বিভিন্ন জল্পনা কল্পনা মাথায় আসছে এখন। বিপদের সময় তো এমন হয়। বিভিন্ন অনিশ্চয়তার আশংকা ঘিরে থাকে মনের মধ্যে।এতো চাপ সে নিতে পারছে না। সামনে রাখা চেয়ারে বসে মাথাটা এলিয়ে দিলো। চোখ দুটো বন্ধ কিন্তু চোখের জল পড়ছে অনবরত।

একসাথে অনেকের পায়ের আওয়াজ পেয়ে অর্নি দ্রুত চোখ খুললো।আরাবি,অবনি,আরাফের বড়ো আম্মু,আরাফের বাবা সবাই একসাথে এসেছে।সকাল সকাল হ‌ওয়ায় সবাই বাড়িতে ছিল।খবরটা পেয়ে সাথে সাথে সবাই ছুটে এসেছে।অর্নি তাদের দেখে উঠে দাঁড়ালো। আরবি তাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করছে। দুজনেই একসাথে কান্না করছে।আরাফের বাবা অর্নিকে প্রশ্ন করলেন:আরাফ কোথায়?

অর্নি কাঁদো কাঁদো গলায় বললো: ইমার্জেন্সি রুমে আছে।অপারেশন রুমে নিয়ে যাবে বলেছে এখন।
আরাফের বাবা অর্নির কথা শুনে ইমার্জেন্সি রুমের ভেতরে গেলেন।বাকিরা বাইরে আছে।আরাবি তার বাবার সাথে যেতে চেয়েছিল কিন্তু তাকে যেতে দেওয়া হয়নি।সবাই বাইরে বসে অপেক্ষা করছে।

আরাফের মা মিসেস আরমিন আসলেন না হাসপাতালে। হয়তো তাকে বিষয়টা জানানো হয়নি। এমনেই তিনি অসুস্থ তার মধ্যে একমাত্র ছেলের এমন অবস্থা কিভাবে মেনে নিবেন?তাই তাকে জানানো হয়নি।আরাফের বড়ো আম্মু বারবার শিউরে উঠছেন। তার মনে হচ্ছে সবকিছুর জন্য তিনি দায়ী।কি দরকার ছিল পরের একটা ছেলেকে নিজের ছেলের মতো করে মানুষ করার?সে তো মানুষ না হয়ে অমানুষ হয়ে ঘরের ছেলেটাকে শেষ করে দিলো।

আরাফের বড় আম্মু রকির মা মারা যাওয়ার পর তাকে নিজের করে নেন।তার একমাত্র মেয়ে অবনি।অবনি হ‌ওয়ার পর আরাফের বড় আব্বু মারা যান।তার আর কোনো সন্তান না থাকায় রকিকে নিজের সন্তানের মতো লালন-পালন করেন।আরাফকে যেভাবে ছোট থেকে মানুষ করেছে এক‌ইভাবে রকিকে মানুষ করেছে। কখনো তিনি বুঝতে দেননি রকি তার ছেলে নয়। শুধু তিনি নয়।আরাফের মা বা বাড়ির অন্য সদস্যরাও রকিকে আপন মনে করতো। কিন্তু রকি তাদের আপন করতে পারলো না। সবার ভালোবাসা তার লোভের কাছে হেরে গেলো।আরাফের বড় আম্মু আরাফকেও অনেক আদর করতো। দেবরের একটামাত্র ছেলে তাও আবার ভদ্র- নম্র। তাকে তো ভালোবাসতেই হয়।

একটু পর আরাফের বাবা ইমার্জেন্সি রুম থেকে বের
হয়ে বললেন আরাফকে অপারেশন রুমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।সবাই যেনো তার জন্য দোয়া করে‌।সবাই বাইরে অপেক্ষার প্রহর গুনছে। ঘড়ির কাঁটা ধীরে ধীরে চলছে।অর্নি বারবার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে। আজকের দিনটা যেনো অনেক লম্বা!কতো ঘটনা ঘটে গেলো কিন্তু দিনটা এখনো শেষ হলো না।এর মাঝেই অর্নির বাবা-মা এসেছেন হাসপাতালে। তাদের মুখশ্রীও দেখার মতো নয়।কোনো কারণ ছাড়া মাঝখান থেকে তাদের মেয়েটা কষ্ট পাচ্ছে।কেনো যে তারা মেয়ের বিয়েটা এই বাড়িতে দিতে গেলেন?আজ মেয়েকে কতো কিছুর সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে একটা হাসি মুখ অর্নির সামনে এসে দাঁড়ালো।অর্নির কাছে মুখটা আজ সবচেয়ে বিশ্রী লাগছে।এতো জঘন্য রকমের টেনশনের মাঝে কেউ যদি তার সামনে এসে দাঁত কেলিয়ে থাকে তাহলে তাকে তো কষিয়ে দুটো চড় দিতে মন চাইবে। ছেলেটি আর কেউ নয় পারভেজ। অর্নি তাকে দেখে বসা থেকে উঠে তার দিকে গেলো।সে এখনো দাঁত কেলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।অর্নির তা দেখে আরো রাগ হচ্ছে। সামনে গিয়ে রাগী গলায় বললো; এভাবে হাসছেন কেনো? সমস্যা কোথায়?
অর্নির এমন আচরণ দেখে সে ভ্রু কুঁচকে তাকালো। তারপর বললো: আপনাকে দেখলাম তাই হাসলাম আরকি। এখানে সমস্যার কি?
_আমার এই অবস্থা দেখে আপনার হাসি আসছে? বাহ্! কেমন মানুষ আপনি?যেমন ব‌উয়ের তেমন জামাই। দুইটাই এক।
_মানে বুঝলাম না। আপনি এভাবে কথা বলছেন কেনো?আর যেমন জামাই এর তেমন ব‌উ মানে?
_আপনাকে আমি এতো এক্সপ্লেইন করতে পারবো না। সামনে থেকে বিদায় হোন।
_বাই দ্যা ওয়ে, হাসপাতালে আসলেন কেনো?আমি কি কোনো হেল্প করতে পারি?

পারভেজের প্রশ্নে অর্নি চোখ তুলে তাকালো তার দিকে।তার মানে কি পারভেজ জানে না এসব?নাকি ইচ্ছে করে অর্নিকে কাঁটা গায়ে নুনের ছিটা দেওয়ার জন্য জিজ্ঞেস করছে? কিন্তু তার চেহারা দেখে মনে হচ্ছে না সে কিছু জানে। তবু অর্নির ইচ্ছে করছে না এতো কিছু এক্সপ্লেইন করতে। শান্ত কন্ঠে বললো: আপনি আমার চেহারা দেখে নিশ্চয় বুঝতে পারছেন আমার পরিস্থিতি। এখন কিছু বলতে চাই না। আপনি প্লিজ এখন আসুন।

পারভেজ আর কিছু বললো না। একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেলো সে। অর্নি তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। সবকিছুর মূল তো এই পারভেজ।সে যদি জুঁইকে আরাফের পেছনে লেলিয়ে না দিতো তাহলে আরাফ জুঁইকে পেতো না আর এতো কিছু হতো না।কি লাভ পেলো পারভেজ?আর জুঁইকে তো অর্নি ছাড়বে না।আরাফের অপারেশন শেষ হলেই সে যাবে অফিসে। তারপর জুঁইকে দেখে নিবে।আজ জুঁইকে তার হাত থেকে কেউ আটকাতে পারবে না।এই ভেবে চোয়াল শক্ত করলো অর্নি। তারপর আগের জায়গায় গিয়ে বসলো।

দীর্ঘ দুই ঘণ্টা পর অপারেশন রুম থেকে ডাক্তার বের হলেন। সবাই চুপচাপ সেদিকে তাকিয়ে আছে যেমনকি তারা নিরবতা পালন করছে। আসলে এমন পরিস্থিতিতে কারো হুশ-জ্ঞান ঠিক থাকে না। ডাক্তার আরাফের শিক্ষক হ‌ওয়ায় তিনি নিজ থেকে এসে বললেন: অপারেশন সাকসেসফুল কিন্তু জ্ঞান ফিরতে সময় লাগবে। আমরা আছি আরাফের সাথে সবসময়।আপনাদের টেনশন করতে হবে না।
ডাক্তারের কথায় সবার বুকে অজানা একসাহস আসলো। সবার মুখে হাসির রেখা স্পষ্ট হয়ে আছে। অর্নি এবার উঠে দাঁড়ালো।এমনেও এখন আরাফের সাথে দেখা বা কথা হবে না তার।এই সুযোগে সে জুঁইয়ের সাথে দেখা করে আসুক।

অবনি আর আরাবিকে বলে সে হাসপাতাল থেকে বের হলো। গন্তব্য তার অফিস। সেখানে জুঁইকে আর রকিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রকিকে ফরেনসিক ডিপার্টমেন্ট থেকে ডাক্তার এনে প্রাথমিক চিকিৎসা চিকিৎসা দেওয়ার কথা ছিল।কি করেছে তা অফিসে গেলে জানা যাবে। ড্রাইভারকে গাড়ি ঘুরাতে বলে সে গাড়িতে উঠে বসলো।মাথাটা সিটের সাথে এলিয়ে দিয়ে বাইরের পরিবেশ দেখছে সে।আরাফকে এই অবস্থায় রেখে যেতে ইচ্ছে করছে না তার। ভীষণ কষ্ট লাগছে।কিন্তু উপায় নেই।এখন না গেলে সে আর জুঁইকে পাবে না।তাই এখনি গিয়ে জুঁইয়ের সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ করতে চায় সে।

চলবে…