অবশেষে ভালোবেসে পর্ব-১৩+১৪

0
891

#অবশেষে_ভালোবেসে
পর্বঃ ১৩
লেখিকাঃ মেহেরুন নেসা
.
সরি অর্নব কিন্তু আমাকে যেতে হবে আমার মনে হয় মি.কে কোনো প্রবলেম হয়েছে। বাকি কথা আমরা অন্য কোনোদিন কন্টিনিউ করবো বাট আজকে না সরি বলেই এবার ও ওর ব্যাগ টা নিয়ে বের হয়ে এলো। আসলে ও জানে অর্নব কি বলতে চায় তাই বারবারই সিচুয়েশন টা ইগনোর করতে চাচ্ছে এখনো সিওর হতে পারছেনা তাই হয়তো!!
.
অর্নব কে এবারো মাঝপথে রেখে সানভি চলে এলো ওইবার ও মি.কে এর জন্য চলে গিয়েছিলো আজও তার জন্যই….
তার কথা তে মনে হচ্ছিলো অনেক বড় কিছু হয়ে গেছে না জানি গ্রাম থেকে কোন নতুন ঝামেলা নিয়ে এসেছেন। তারাতারি স্টুডিও তে ঢুকতেই নির্ভান বা ওর বডিগার্ড কাউকেই দেখতে না পেয়ে নির্ভান কে ডাক দিলো কিন্তু কোনো রেসপন্স না পেয়ে নির্ভান কে কল করলো রিসিভ হতেই শুনতে পেলো আমার রুমে আসো। রুমে যাচ্ছিলো তাই ভাবলো ওইদিনের মতো কিছু যেন না দেখতে হয় তাই গেইট খোলার আগে

– মি. কে। বলে চোখ বুজে গেইট খুলে পা দিতেই পানির অস্তিত্ব বুঝতে পেরে চোখ খুলতেই দেখে নির্ভান খাটের উপর পা তুলে বসে আছে আর ওর ঘরে পানি টলমল করছে খুব বেশি না তবুও।,,,,, রুমে বৃষ্টি হয়েছিলো!

– ভোরে এসে গোসল করে এসেই ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম আর পানির কল টা চালু রয়ে গিয়েছিলো।

– এটাই সেই ডিজাস্টার?

– ইয়েস ইট ইজ।

– তো আমাকে কল না করে কাউকে ডাকিয়ে এনে পরিষ্কার করিয়ে নিলেই তো হতো। আমি কি পানি মুছবো এখন মি. কে?

– করতেই পারো। কারন বাসায় কেউ নেই তাই কাজের লোক ও সব ছুটি তে আমি আজকে এসেছি সবাই তোমার মতোই ভেবেছে বিকেল থেকে কাজ শুরু করবে আর বিজি ১, ২ কে আমি ওদের বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি ভাবলাম একটু রেস্ট করুক আর এখান দিয়ে এসব।

– আচ্ছা আমি কল করে কাউকে আনিয়ে দিচ্ছি। বলেই কল করে একজন কে আসতে বললো আর তার মধ্যেই হটাৎ নির্ভান এর সাথে ধাক্কা খেতে খেতে দুইজনই পানিতে বসে পরলো

– আহ মি.কে….

সানভির চিৎকার শুনে নির্ভান কিছুক্ষন ওর দিকে তাকিয়ে হেসে দিলো সানভি ও হেসে দিলো তারপর নির্ভান হটাৎ করেই গানের সুরে গেয়ে উঠলো

– ইয়ে তুনে কেয়া কিয়া….

– ইয়ে তো আপনে কিয়া।

– ইধার চালা মে উধার চালা জানে কাহা মে কিধার চালা ওর ফিসাল গায়া ও তেরে পাশ ফিসাল গায়া…. গেয়ে আবার হাসা শুরু করে দেয়ায় সানভি লাস্টের লাইন টুকু খেয়াল করলো না

– উফফ মি.কে বলেই সানভি কাপড় ঝাড়তে ঝাড়তে দাড়িয়ে নির্ভান কে উঠানোর জন্য হাত বাড়িয়ে দিলে ওর হাত ধরে নির্ভান উঠতে নিলেই আবার পানিতে স্লিপ কেটে পরতেই সানভি ও হুমরি খেয়ে ওর উপর পরে গেলো।। মুখোমুখি হয়ে যাওয়া সানভির হটাৎ কিস টার কথা মনে পরে গেলো আর সানভি ধাপ করে সরে যেতে নিলেই নির্ভান ওকে ধরে ফেলে

– মি.কে?

– মিস.সান ওয়েট। বলেই ওর গলায় থাকা লকেট টা সানভির ওরনা থেকে ছাড়িয়ে নিলো,,, ছিড়ে যেতো। বলেই সানভির হাত ছেড়ে দিলেও সানভি উঠতে পারলো না নিজেই কেন যানি থেমে ছিলো তারপর উঠে গেলো

– আমি দেখছি কেউ আসছে কিনা।।
এবার আর নির্ভান কে উঠালো না বের হয়ে গেলো কিন্তু হাটতে খুব কষ্ট হচ্ছিলো, ড্রেস টা ভিজে ভার হয়ে গেছে।
একজন এসে রুম টা পরিষ্কার করে দিয়ে গেছে, নির্ভান ও কাপড় বদলাতে গিয়ে গোসল করেই চলে এসেছে। এসে সানভি কে ভিজা কাপড় এ দেখে বলে

– তুমি এখনো ভেজা কাপড়ে! ঠান্ডা লেগে যাবে তো।

– হ্যাঁ এইতো এখনি বাসায় যাবো মি.কে।

– না না এই ভাবে তো যেতে পারবে না। কাউকে দিয়ে ড্রেস আনিয়ে দিবো? বা আমি গিয়ে নিয়ে আসবো?

– নাহ আমি গিয়েই নিয়ে আসতে পারবো আপনার যেতে হবে না।

– না তুমি তো এই অবস্থায় যেতে পারবে না।

– বাট বাসায় তো….

– আচ্ছা তো আমার টিশার্ট এন্ড ট্রাউজার পরবে? না না আম্মুর শাড়ি পরতে পারবে চলো।

– উফফ মি.কে আন্টি নেই তার মধ্যে আমি তার শাড়ি। না নাহ।

– আমি কোনো কথা শুনবো না। এই ভেজা কাপড়ে থাকলে ঠান্ডা লাগবে জ্বর আসবে দেন আবার ছুটি নিবে আর অনেক কিছু না না তা চলবে না চলো।

– আমি শাড়ি পরতে পারি না তো।

– ও ওহ আচ্ছা তাহলে ম্যাক্স কে বলি একটা ড্রেস পাঠিয়ে দিতে। হু এটাই বেস্ট হবে।

– কিন্তু আমার..

– নো ইফ নো বাটস। আমি এখনি বলছি কিছুক্ষনের ব্যাপার জাস্ট।
নির্ভানের কথায় সানভি কে ম্যাক্স এর পাঠানো ড্রেস টাই পরতে হলো এবার আর সেই প্রথম বারের মতো সর্ট ড্রেস আনায় নি। এবার সময়ের প্রবর্তনের সাথে সাথে সানভি নিজেকে যতোটুকু বদলেছে সেই অনুযায়ী একটি ড্রেস আনিয়েছে।
এসব করতে করতেই দুপুর হয়ে যাওয়ায় আজকে দুইজন একসাথেই লাঞ্চ করেছে। বিকেলে একটা মিটিং আছে স্পন্সর এর সাথে সেখানে যাওয়ার জন্যই কিছুক্ষন পর বের হবে ওরা।

সময় হয়ে এলে নির্ভান কে নিয়ে রওনা হয় গন্তব্যে।
সব ঠিকঠাক করে চলেও আসে। একটা কন্সার্ট হবে নির্ভান ১ সপ্তাহ পর ঢাকার বাহিরে আর সামনের মাসে একটা ইভেন্ট এ যাবে চিফ গেস্ট হিসেবে কন্ট্রাক্ট সাইন করেছে।

মিটিং শেষে নির্ভানের সাথে ওর স্টুডিও তেই চলে আসে সানভি ওর ড্রেস নিতে হবে তাই। মিটিং এর মাঝে অনেকবার অর্নব কল দিয়েছে এর আগেও দিয়েছে অনেকবার কিন্তু সানভি রিসিভ করতে পারেনি। মেসেজ এসেছিলো তা ও দেখতে পারেনি। ড্রেস টা প্যাক করে ফোন এ আবার একটা মেসেজ আসায় চেক করতে নিবে তখনই নির্ভানের বডিগার্ড এসে বলে গেলো ওর কুরিয়ার এসেছে।

– মিস.সান তোমার কুরিয়ার এখানে!

– তাই তো আমার কুরিয়ার এখানে কেন আসবে। হয়তো আপনার কোনো ফ্যান পাঠিয়েছে আমি দেখে আসছি। বলে বাহিরে চলে গেলো নির্ভান ও কোতুহলে ওর পেছনে গিয়ে বাহিরের একটা সোফায় বসলো।
সানভি প্যাকেট টা নিয়ে নারিয়ে দেখে খুলতেই ওর আর নির্ভান এর সেই পানিতে বসে থাকার পিক গুলো বেরিয়ে এলো। নির্ভান ওর হাত ধরে আছে, সানভি তাকিয়ে আছে, নির্ভান হাত তুলছিলো লকেট টা ছুটানোর জন্য কিন্তু ছবিতে মনে হচ্ছে সানভির গাল ধরবে খুবই ঘনিষ্ঠ দেখাচ্ছে পিক গুলো তে ওদের।।।

– ছবি মনে হচ্ছে! কার ছবি?

কিন্তু সানভি নির্ভান কে কিছু বললো না দেখানো তো দূরেই থাক।

– আহ আমার আর আমার ফ্রেন্ড এর পিক আমার এক ফ্রেন্ড পাঠিয়েছে। বলেই ভেতরে এসে ছবি গুলো দেখতে দেখতেই একটা কাগজ বেরিয়ে এলো
“” কাল সকালে এই পিক গুলো নিউজপেপারের বিনোদন পাতায় বড় বড় অক্ষরে হেডলাইন সহ না দেখতে চাইলে এখনি নিচের দেয়া এড্রেস টায় চলে আসো। আজকে মানেই আজকে আর একা মানে একাই। মেসেজ ইগনোর করেছো অনেক হয়েছে এটা ইগনোর করলে…. “”
তারপর আবার ছবি গুলো দেখলো।

– এই ছবি গুলো বাহিরে গেলে মি.কে এর খুব সমস্যা হবে আর ফ্যান, জনগন এর রিয়েক্সন সবই জেকে বসবে। তার মধ্যে ওর কন্সার্ট এক সপ্তাহ পর ইভেন্ট সব কিছু তে ইফেক্ট পরবে। এইসব কোনো ভাবেই মিডিয়ায় ছড়াতে পারেনা মি.কে নিজের ক্যারিয়ারে এসবের কোনো ছাপ পরতে দেয়নি আর এখানে তো দেখে মনে হচ্ছে মি.কে আমার সাথে ফ্লার্ট করছে এসব পিক!! না না কি চাইছে জানতে হবে।
ভেবেই ব্যাগ টা আর ছবি গুলো নিয়ে নির্ভানের কাছে গিয়ে তাড়াহুড়ো করে বললো

– আমি আসি মি. কে কাল দেখা হবে।
আর কোনো কথা শুনলো না সকাল থেকে এমন ছোটাছুটি তেই আছে প্রবলেম যেন শেষ ই হচ্ছে না।
তাড়াতাড়ি ঠিকানা মতো পৌছে গেলো যাওয়ার আগে একটু সন্দেহ আর ভয় দুটোই লাগছিলো। তবুও যেতে তো হবেই এই লোককে দেখতে যে মি.কে এর স্টুডিও তে ও এসে পরলো আর কিনা ছবি!! উফফ আর তাছাড়া এটা তো পাবলিক প্লেস।। তাও বুঝে শুনে কর‍্তে হবে যা করার।
ভাবতে ভাবতে কাগজ টায় উল্লেখ করা টেবিল টার দিকে এগিয়ে যেতেই যাকে দেখলো তাকে দেখার জন্য ও মোটেও প্রস্তুত ছিলো না…
.
.
.
চলবে।

#অবশেষে_ভালোবেসে
পর্বঃ ১৪
লেখিকাঃ মেহেরুন নেসা
.
ভাবতে ভাবতে কাগজ টায় উল্লেখ করা টেবিল টার দিকে এগিয়ে যেতেই যাকে দেখলো তাকে দেখার জন্য ও মোটেও প্রস্তুত ছিলো না…
.
– অমিও!!

– সারপ্রাইজ… বলেই উঠে এগিয়ে এলো অমিও। সানভি বিশ্বাস হচ্ছেনা একটা কাজিন তার ভাইয়ের ইমেজ নষ্ট করার ব্ল্যাকমেইল করছে।,,, কি অবাক লাগছে? এসব তো তোমার জন্যই হচ্ছে। আমার ভাইয়ের সাথে এতো রোমান্টিক সিন করে ফেলছো আর আমার সাথে একটু কমেডি করতেও প্রবলেম তোমার?

– কি বলছেন এসব? ওইটা এক্সিডেন্টলি আমরা পানিতে স্লিপ কেটে পরে গিয়েছিলাম আপনি সেটার সুযোগ নিতে পারেন না।

– অবশ্যই পারি। আহ চলো চলো বসে কথা বলি অনেক কথা আছে তোমার সাথে।

– বসে কথা বলতে আমি মোটেও ইনট্রেস্টেড না। যা বলার এখানেই বলেন।

– যলদি এসে বসো নাহলে ছবিগুলোর অনেক গুলো কপি এখানেই ছড়িয়ে দিবো।

– অমিও এবার আপনি অতিরিক্ত করছেন । আপনি মি.কে এর ইমেজ এর সাথে এমন কেন করতে চাইছেন?

– আমি কিছু করছি না তুমি করছো আমার কথা না শুনে।।
সানভি গিয়ে বসলো টেবিল টায়।

– বলেন এখন কি বলবেন।

– আমার সাথে প্রেম করো মিস সান মাই সান। যেমনটা তুমি তোমার মি.কে এর সাথে তেমন টাই আমার সাথে করো That’s it.

– হোয়াট মাথা ঠিক আছে আপনার কি বলছেন এসব?

– যা শুনতে পাচ্ছো তাই বলছি মাই সান।

– স্টপ ইট।অনেক শুনেছি আপনার কথা আর শুনতে চাই না আমি গিয়ে এখনি মি.কে কে জানাচ্ছি।। বলেই উঠে যাচ্ছিলো কিন্তু অমিও থামালো না। সানভি বের হয়ে যেতেই ওর পেছনে গিয়ে সামনে থাকা একটা গাড়ির সাথে লাগিয়ে দাড় করিয়ে রাখলো । সানভি অনেক চেষ্টা করছিলো নিজেকে ছাড়ানোর কিন্তু ও অমিওর সাথে পেরে উঠলো না।

– মাই সান তুমি কি ভেবেছো তুমি আমার শক্তির সাথে পারবে??

– ছাড়ুন আমাকে আম…. সানভির মাঝ পথেই থামিয়ে দিয়ে পেছন থেকে নির্ভান বলে উঠলো

– কাট।
শুনে সানভি ও অবাক হয়ে আছে আর অমিও সানভি কে ছেড়ে দিয়ে নির্ভানের দিকে তাকিয়ে আছে। সানভি ছাড়া পেয়েও ওইদিকেই দাঁড়িয়ে আছে

– নির্ভান ভাই তুমি এদিকে?

– হ্যাঁ অবশ্যই ভিলেন থাকবে আর নায়ক আসবে না তা কি হয়??

– কি কিন.. কিন কিন্তু…

– চুপ। মিস সান এদিকে আসো।
সানভি নির্ভানের ঝাড়ি খেয়ে তারাতারি ওর দিকে চলে গেলো।

– এতো বেশি পাকনামি কে করতে বলেছে তোমাকে?

– জী???

– আবার কথা বলে। তোমার কুরিয়ার আমার বাসায় এসেছে দেখেই গোলমাল লাগছিলো তার মধ্যেই কুরিয়ার দেখেই যেই তাড়াহুড়ো করে বের হয়ে এসেছো তাতে তো সন্দেহ হয়েছিলো পরে ফেলে যাওয়া একটা ছবি দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম ম্যাটার সোলভ করতেই এসেছো। আমি রেস্টুরেন্টের বাহিরে গাড়িতেই বসে ছিলাম অমি কে দেখে বের হইনি দেখছিলাম এটা কতোদূর যায়।। অমি ছিলো বলে অন্য কেউ হলে? প্রবলেম যদি আরো বড় হতো?

– সরি মি.কে।

– হু। এখন উনাকে নিয়ে বোঝা পড়ার টার্ম। বলেই অমিওর কাছে গিয়েই একটা থাপ্পড় মারলো ওকে।

– ভাই??

– বড় ভাই হিসেবে মারতেই পারি। কি সমস্যা তোর? খালামনি কে এবার বলতেই হবে আর শুধু আজকের টা না আগের ফুটেজ টাও দেখাতে হবে।। তুই তোর ভুল শোধরাতে পারছিস না।

– না ভাইয়া না প্লিজ মাম্মি কে কিছু বলো না। ভাইয়া প্লিজ আমি আর কিছু করবো না।

– না এটা করতেই হবে তুই মিস.সান এর সাথে যা করছিস এটা ইগনোর করা যায় না অমি। তুই কি করছিস এসব? আর এই ছবি,,পকেট থেকে ওর আর সানভির একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকা ছবি টা বের করে দেখিয়ে,,, এই ছবি? এসব কি? তুই জানিস না এতে আমার ইমেজ এ সানভির নরমাল লাইফে কতো টা ইফেক্ট করতে পারে?

– বাট ভাইয়া আই রিয়েলি লাইক মাই সান। ও আমাকে একটা চান্স দেক আমি জাস্ট তা ই চাই। কথাটা শুনেই নির্ভান হাত উঠিয়েছে আবার মারার জন্য কিন্তু নির্ভানের হাত থামিয়ে সানভি বলে

– Mr. K people’s are watching. বলেই নিজের ব্যাগ থেকে একটা মাস্ক বের করে বললো,, এটা পরে নিন। এই ম্যাটারে এখানে বলা সেফ না। বলেই নির্ভান কে প্রায় টেনেই এখান থেকে নিয়ে গেলো।
অমিও চুপে চুপে ওদের পেছনে পেছনে গাড়িতে উঠে বসলো। নির্ভান কিছু বলতেই নিচ্ছিলো কিন্তু সানভি এবার ও ওকে কিছু বলতে দিলো না

– মি.কে স্টুডিও তে যেয়ে নিন প্লিজ।

– মিস.সান। বলেই তাকিয়ে রইলো রাগ নিয়ে।
.
সারা রাস্তায় নির্ভান আর কিছু বলেনি। স্টুডিও তে ঢুকেই

– অনেক হয়েছে আমি যাচ্ছি খালামনি মা, পাপা সবাই আছে ওই বাড়িতে আমি এখনই গিয়ে বলছি আমি হ্যান্ডেল করতে পারবো না। একটা মেয়ের সেল্ফ রেসপেক্ট নিয়ে খেলছিস তুই।

– না ভাই প্লিজ ভাই প্লিজ। এবারের মতো মাফ করে দে মাম্মি কে বলিস না বললে মাম্মি আমাকে মেরেই ফেলবে।

– আগে মনে ছিলো না।
বলেই নির্ভান বের হয়ে যাচ্ছিলো তখনই অমিও গিয়ে সানভি কে বললো

– মাই সান… আই মিন সানভি প্লিজ ভাইয়া কে থামাও আমি আর কখনো তোমার সাথে এমন করবো না প্রমিজ প্লিজ জাস্ট এই লাস্ট চান্স।

– তুই আবার ওর কাছে গিয়েছিস?

– ইটস ওকে মি. কে এবারের মতো মাফ করে দিন উনাকে।

– সানভি। নির্ভানের মুখে ওর পুরো নাম শুনে সানভি বুঝতে পারলো নির্ভান এখন খুব সিরিয়াস মুডে আছে।

– প্লিজ মি.কে। এটাই লাস্ট চান্স এর পর ও আর কিছু করবে না আমার বিশ্বাস এটা আর করলে আমি ও চুপ থাকবো না আর।

– হ্যাঁ ভাইয়া সত্যি প্রমিজ।

– যা মন চায় করো নেক্সট এ আমি আর এর মধ্যে পরবো না। বলেই নিজের রুমে গিয়ে গেইট খুব শব্দ করে লাগিয়ে দিলো। সানভি ও ওর ডেস্ক এ রাখা ওর কাপড় এর ব্যাগ টা নিয়ে বের হয়ে এলো। আসার সময় দেখলো অমিও সোফায় মাথা নামিয়ে বসে আছে।
.
বাড়িতে ফিরেই ড্রেস টা পর্যন্ত চেঞ্জ করার শক্তি পাচ্ছিলো না অনেক টাফ একটা দিন ছিলো আজকে। সব মনে পরতেই দিন টা কি হাসিখুশি থেকে কেমন অদ্ভুত ভাবে শেষ হলো। শেষ হলো! ইলা কে সব জানাতে হবে ভেবেই ব্যাগ থেকে ফোন টা বের করছিলো তখন ছবি গুলো ও বের হয়ে এলো।

– ব্যাপার টা কি ছিলো আর ছবিতে কেমন লাগছ। বলেই ছবি গুলো রেখে ইলা কে ফোন দিবে দেখে ফোন বন্ধ হয়ে আছে৷ চার্জ নেই ধ্যাৎ। বলেই ফোন টা চার্জে দিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে এসে ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি আর একটা আপেল বের করে খেতে শুরু করলো।। খুব ক্ষুধা লেগেছে কিন্তু কিছু বানাতে ইচ্ছে করছে না তাই আপেল দিয়েই কাজ চালাবে। গিয়ে ফোন টা চালু করতেই সাথে সাথেই নির্ভানের কল আসায় ফোন টা ওর হাত থেকে ভয়ে পরে যেতে নিচ্ছিলো তবুও ধরে কল টা রিসিভ করেই বললো

– জি মি.কে?

– ফোন বন্ধ কেন ছিলো? বাসায় পৌছেছো?

– হ্যাঁ। চার্জ ছিলো না তো তাই।

– অমিও আর কিছু বলেছিলো?

– না মি. কে আপনি…

– আচ্ছা ঠিকাছে। বলেই কল টা কেটে দিলো।

কল টা কেটে দেয়ায় সানভি বুঝতে পারলো তিনি আসলেই রেগে আছেন। তারপর বিছানায় গিয়ে শুয়ে ইলা কে কল দিতে নিচ্ছিলো কিন্তু মেসেজ গুলো চেক করতে গিয়ে দেখে আর কিছু খেয়াল করতে পারলো না ফোন সাইডে পরে গেলো কারন ও এখন ঘুমের রাজ্যে চলে গেছে কি হচ্ছে তাতে আর কোনো খেয়াল নেই।
.
সকালে ফোনের রিংটোন এ ঘুম ঘুম চোখেই ফোন টা রিসিভ করেই কানে নিয়ে রেখে দিলো কিছু বললো না কিন্তু যা শুনলো তাতে ধাপ করে উঠে বসলো

– কি???

– হ্যাঁ সানু তুই ঠিকই শুনেছিস অর্নব তোর বাড়ির নিচে দাঁড়িয়ে আছে তোর সাথে দেখা করবে আর এটা ইম্পর্ট্যান্ট সো যলদি নিজেকে একটু গুছিয়ে গিয়ে দেখা করে আসো বেবি৷

– ইলা বলে দে বাসায় নেই আমি। এখন দেখা করতে পারবো না।

– এবার ওকে ইগনোর করলে খবর আছে সানভি তোর কথা নেই তোর সাথে।

– আচ্ছা ঠিকাছে যাচ্ছি।
কল কেটে উঠে গিয়ে দাড়ালো আয়নার সামনে ড্রেস ঠিকাছে চুল টা আঁচড়ে ব্রাস করে মুখ ধুয়ে ফোন আর চাবি নিয়ে নিচে নামতেই দেখে অর্নব একটা গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে। অনেক সকাল হওয়ায় আসেপাশে মানুষ নেই তাই সমস্যা হবে না কোনো। অর্নব এর দিকে খেয়াল করতেই দেখে অর্নব নীল রঙের শার্ট আর জিন্স প্যান্ট পরে এসেছে এই নীল রঙের শার্ট টা সানভির একটা দূর্বলতা বললেই চলে ও তখন নিজের নজর ফেরাতে পারেনা। তার মধ্যে অর্নব এর ফেস এ একটা মায়া আছে যাতে ওকে আরো বেশি মানিয়ে তুলেছে। অর্নব ওকে দেখে হাত নারাতেই সানভি ও একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে এগিয়ে গেলো।

– আপনি এতো সকালে??

– ফার্স্ট এ ই শুভ সকাল।

– ওহ শুভ সকাল।

– ভালো আছো?

– জি আপনি?

– হ্যাঁ আমিও এখন অনেক ভালো আছি।

– কালকের জন্য আই এম সরি। আসলে কাজ তো জানেনই।

– হু। বুঝতে পেরেছি।
সানভি আবার হাসি দিলো

– সানভি।

– হু?

– অফিস থেকে একটা প্রোজেক্ট এর জন্য আজকে ঢাকার বাহিরে যাচ্ছি ফিরবো এক সপ্তাহ পর।

– ওহ।

– আসলে আজকে তোমাকে একটা প্রশ্ন দিয়ে যেতে চাই। যেটার উত্তর তোমাকে এখন দিতে হবে না আমি প্রোজেক্ট শেষে ফিরে এসে এই এখানে দাঁড়িয়েই তোমার উত্তর টা চাই।
সানভি বুঝতে পারছিলো অর্নব কি বলতে চায় তবুও জিজ্ঞেস করলো

– কি প্রশ্ন?

– সানভি Will you will you marry me?

– কিহ??
সানভি ভাবেনি ও ওকে ডিরেক্ট বিয়ের কথা বলবে।।

– Take your time no pressure. Taake care and wait for me. Bye see you again. বলেই পেছনের গাড়ি টায় বসে আবার বায় দেখিয়ে চলে গেলো। সানভি এখনো সেই শক এই দাঁড়িয়ে আছে ও তীর টা ছুড়ে চলে গেলো কোথায় গিয়ে লেগেছে তা অর্নব জানে না।
.
নিজের রুমে ফিরে ইলা কে কল করে জানালো সানভি ইলা শুনে যেন আকাশে উরছে ও নিজেও ভাবেনি অর্নব সোজাসুজি বিয়ের কথায় চলে যাবে তবুও এক সপ্তাহ হাতে আছে ভাবার জন্য।
এখনো নির্ভানের স্টুডিও তে যেতে সময় আছে তাই আধশোয়া অবস্থায় ভাবছে কি করবে ও এখন ভাবতেই ও একটু একটু লজ্জা পাচ্ছে। যেটা ওর স্বপ্ন ছিলো আজ তাই পূর্নতা চাচ্ছে আর অর্নব ও খুব ভালো ইলার কথা শুনে আর নিজেও এই কয়েক বার এর পরিচয়ে ওর ভালোই লেগেছে। কি করবে আগে পিছে তেমন কোনো গার্জিয়ান নেই ওর কাকেই বা বলবে কার অনুমতি ই বা চাইবে! অনেক ভেবে বললো,,, মি. কে এর মায়ের কাছে সাজেশন চাইবো? ইশশ নিজের কথা বলবো!? নাহ ফ্রেন্ড এর কথা বলে জিজ্ঞেস করবো নে। উনার সাথে এসব নিয়ে আলোচনা করার মতো সম্পর্ক তো আছেই উনি নিজেই বলেছেন কোনো প্রবলেম হলে বলতে এটা তো প্রবলেম না কিন্তু তাকে তো আমার কথা না বলে ফ্রেন্ড এর কথা বলে জিজ্ঞেস করে নিবো নে।
.
নির্ভানের স্টুডিও তে এসে নির্ভান কে তো পেলোনা কিন্তু অমিও কে দেখতে পেলো। ওকে ইগনোর করেই ও নিজের রুমে যাচ্ছিলো তখনই

– মাই সান ওয়েট….
.
.
.
চলবে।