অ্যাডিক্টেড টু ইউ পর্ব-২১+২২

0
444

#অ্যাডিক্টেড_টু_ইউ
#অরনিশা_সাথী
#পর্ব_২১

–“কি ব্যাপার? আপনি আমার জামা-কাপড় প্যাক করছেন কেন? আমি তো কোথাও যাচ্ছি না।”

রুমে এসেই আদ্র’কে আমার জামা-কাপড় প্যাক করতে দেখে উপরোক্ত কথাটা বললাম। আদ্র আমার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে প্যাকিং করতে লাগলো। আমি এত এত প্রশ্ন করে যাচ্ছি কোনো উত্তরই দিচ্ছে না। ধৈর্য্য হারা হয়ে এবার বললাম,
–“কি হলো? কথা বলছেন না কেন? আরেহ ভাই আমি তো কিছু জিজ্ঞেস করছি। উত্তর দিচ্ছেন না কেন?”

এবারেও আদ্র তেমন কিছুই বললো না। ক্ষানিকটা রাগ হলো। বুঝে গেছি ইনি আমার প্রশ্নের উত্তর আপাতত দিবে না। তাই ফোঁস করে একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে বিছানায় বসে পড়লাম। আদ্র প্যাকিং একেবারে শেষ করে আমার পাশে এসে বসলো। আমাকে উনার দিকে ঘুরিয়ে আমার হাতদুটো নিজের হাতের মুঠোয় নিলো। তারপর মুচকি হেসে বললো,
–“তুমিও যাচ্ছো আমার সাথে, তাই তোমার জামা-কাপড়ও প্যাক করে নিলাম।”

চমকে তাকালাম উনার দিকে। আমি যাচ্ছি? আমি যাচ্ছি কেন? উনি তো অফিসের কাজে যাচ্ছেন। এই ভেবে উনার চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম,
–“আমি যাচ্ছি মানে? কেন? আপনি তো অফিসের কাজে যাবেন। আমি গিয়ে করবো?”

–“অফিসের কাজ তো দু/তিন দিনেই শেষ হয়ে যাবে। বাকী সময়টা তোমার জন্য।”

বিস্ময়ে তাকালাম উনার দিকে। উনি আমার গাল টেনে দিয়ে এক ভ্রু নাচিয়ে বললো,
–“আমার যাওয়ার কথা শুনেই তো ইগনোর করা শুরু করে দিয়েছিলে। মন খারাপ করে বসে থেকেছো ঠিক ভাবে কথা বলোনি, তোমায় রেখে গেলে আস্ত রাখতে তো আমায়?”

মাথা নিচু করে নিলাম আমি। আসলেই উনার যাওয়ার কথা শুনে ভীষণ মন খারাপ হচ্ছিলো। ইগনোর করে যাচ্ছিলাম উনাকে। উনাকে দেখলেই কান্না কান্না পেতো। আদ্র আবারো বললেন,
–“তাছাড়া বিয়ের কয়েক মাস হতে চললো, এখনো কোথাও ঘুরতে নিয়ে যেতে পারিনি কাজের চাপে। আপাতত না হয় কাছেপিঠেই কোথাও ঘুরে আসি? এরপর দূরে কোথাও একটা লং ট্যুর দিবো। কি বলেন ম্যাডাম?”

অবাক চোখে তাকালাম লোকটার দিকে। আদ্র আমায় কাছে টেনে নিয়ে বুকে আগলে নিলো। আমিও উনার বুকে মাথা রেখে শান্তিতে চোখ বুঝলাম।

–“রুহি, রুহি গেট আপ। এবার না উঠলে কিন্তু লেট হয়ে যাবে। উঠো প্লিজ।”

–“উঁহু__আর একটু ঘুমাই প্লিজ।”

–“আর এক মিনিট ঘুমালেও এরপর লেট হয়ে যাবে বউ, প্লিজ উঠো।”

–“উঁহু, আমি ঘুমাবো আরো। আপনি কাল রাতে আমায় ঘুমাতে দেননি। প্লিজ এখন ডাকবেন না একদম।”

–“আমার ইচ্ছা আছে আজ রাতেও ঘুমাতে দিবো না তোমায়।”

–“যাহ অসভ্য, ডোন্ট ডিস্টার্ব।”

ঘুম জড়ানোর কন্ঠে কথাটা বলে অন্যপাশ ফিরে ঘুমোতে গেলেই আদ্র একটানে আমায় কোলে তুলে নিলো। আমি যেন ঘুমানোর জন্য আরো উপযুক্ত জায়গা পেলাম। উনার বুকে মাথা রেখে উনার গলা জড়িয়ে ধরলাম। আবারো ঘুমটা লেগে আসতেই মনে হলো কেউ আমাকে ছোটখাটো পুকুরে ছুড়ে মেরেছে৷ ধরফরিয়ে উঠতেই নিজেকে বাথটবে দেখতে পেলাম। সামনেই আদ্র দাঁড়িয়ে বাকাঁ হাসলো আমায় দেখে৷ আমি উঠে আসতে নিলেই উনি নিজেও আমাকে নিয়ে আবারো বাথটবে পড়লেন। ঘুরিয়ে আমাকে উনার বুকের উপর নিয়ে উনি নিচে শুলেন। আমি নিজেকে ছাড়াতে ব্যস্ত। ব্যর্থ হয়ে রাগী স্বরে বললাম,
–“এত্ত সকাল সকাল ভেজালেন কেন?”

–“ভুলে গেছো চিটাগং যেতে হবে আজ?”

উনার কথায় মনে হলো সত্যিই আজ চিটাগং যাওয়ার কথা। জীহবা কামড়ে ধরে বললাম,
–“ইশ্! একদম ভুলে গেছি। সরুন তো। এখন ছাড়ুন লেট হয়ে যাবে পরে।”

–“হোক।”

–“একটু আগে না আপনি নিজেই তাড়া দিচ্ছিলেন? এখন আবার এই কথা কেন?”

–“এতক্ষণে হুশ ফিরলো আপনার? আপনার তো ঘুমই ভাঙছিলো না।”

–“আপনি নিশ্চয়ই ভালোভাবে ডাকেননি আমায়। ভালোভাবে ডাকলে ঠিকই উঠতাম হুহ।”

–“হ্যাঁ এখন সব দোষ আমার। এবার তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে রেডি হও। নয়তো এরপর সত্যি সত্যিই ফ্লাইট মিস করবো।”

–“আপনি আমায় ছাড়লে তো আমি উঠবো।”

আদ্র এবার ছেড়ে দিলেন আমায়৷ আদ্র শাওয়ার নিয়ে বের হওয়ার কিছু সময় বাদে আমিও শাওয়ার নিয়ে বের হলাম। আদ্র পুরো ফর্মাল লুকে আছে৷ আর আমি সাদা চুড়িদার পড়েছি। দুজনে একেবারে রেডি হয়ে লাগেজ নিয়ে নিচে নেমে এলাম। আটটা নাগাদ বাজে তখন। পাপা ব্রেকফাস্ট করছে। মামনি পাশে বসে আছে। আমরা গিয়ে বসতেই আমাদের ব্রেকফাস্ট সার্ভ করে দিলো মামনি। চারজনে একসাথেই ব্রেকফাস্ট সেরে নিলাম। মাইশা আর তিন্নির আজ ক্লাস নেই, তাই দুজনেই বেঘোরে ঘুমোচ্ছে। আমি আর আদ্র, পাপা ও মামনির থেকে বিদায় নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লাম এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে।

চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের বাইরে এসে দাঁড়িয়েছি৷ আদ্র কাউকে ফোন দিতেই দু মিনিটের মাথায় একটা গাড়ি এসে থামলো আমাদের সামনে। ড্রাইভার নেমে আমাদের লাগেজ গাড়িতে তুললো৷ আদ্র আর আমি ততক্ষণে গাড়িতে উঠে বসেছি। প্রায় আধ ঘন্টা বাদে একটা বড় হোটেলের সামনে গাড়ি এসে থামলো৷ আমরা নামতেই একজন লোক এসে আদ্রকে ওয়েলকাম জানালো৷ লোকটাই আমাদের ভিতরে নিয়ে গেলো। রিসেপশন থেকে চাবি নিয়ে আমাদের জন্য বুকড্ করে রুমে চলে এলাম আমরা৷ আদ্র এসে ফ্রেশ হতে ঢুকেছে৷ আধ ঘন্টা বাদেই উনার মিটিং। আমি এসেই ফ্রেশ না হয়ে শুয়ে পড়লাম। ক্লান্ত থাকায় সাথে সাথেই ঘুমে তলিয়ে গেলাম। ঘুমের ঘোরে শুনতে পেলাম আদ্র বেরোনোর আগে আমাকে আসছি বলে কপালে একটা গভীর চুমু খেয়ে বেরিয়ে গেলেন।

আদ্রর ডাকাডাকিতে আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসলাম। কতক্ষণ ঘুমিয়েছি জানা নেই। তবে আদ্রকে দেখে বুঝতে পারলাম উনি মিটিং শেষ করে এসে ফ্রেশ হয়ে জামা কাপড় অব্দি পালটে নিয়েছেন। আমি কিছুক্ষণ থম মেরে বসে থেকে উঠে দাঁড়ালাম। লাগেজ থেকে একটা শাড়ি বের করে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়াতেই আদ্র থামিয়ে দিলেন। আমার হাত থেকে শাড়িটা নিয়ে আবারো লাগেজে রেখে দিলেন। তারপর অন্য একটা প্যাকেট আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন,
–“ফ্রেশ হয়ে এটা পড়বে।”

আমি বিনাবাক্যে চলে গেলাম ওয়াশরুমে৷ ফ্রেশ হয়ে জামা পাল্টানোর জন্য প্যাকেট খুলতেই আমার চোখ চড়কগাছ। ব্ল্যাক কালার শর্ট স্লিভলেস নাইটি আছে প্যাকেটে। যেটা পড়লে হাটুরও অনেকটা উপরে থাকবে৷ বুক ধরফর করছে৷ এটা পড়ে উনার সামনে যাবো কি করে আমি? দরজাটা হালকা খুলে মাথা বের করে বললাম,
–“শুনুন না।”

আদ্র ল্যাপটপে কিছু একটা করছিলেন৷ আমার ডাক শুনে ল্যাপটপ থেকে চোখ সরিয়ে আমার দিকে তাকালেন। তারপর বললেন,
–“ওভাবে উঁকি দিয়ে আছো কেন? বেরিয়ে এসো।”

–“আমি ওটা পড়তে পারবো না।”

–“কোনটা?”

–“যেটা দিয়েছেন আপনি।”

–“উঁহু, তা হবে না৷ আজ ওটাই পড়তে হবে।”

–“প্লিজ। ওসবে কম্ফোরটাবেল ফিল করি না আমি। খুব ছোট ওটা।”

–“হোক ছোট তাতে কি? আমিই তো দেখবো। পরপুরুষ তো আর না। তোমার নিজেরই বর।”

উনার এমন কথায় লজ্জা পেয়ে ঠাস করে দরজা বন্ধ করে দিলাম আমি। উনি উঠে এসে ওয়াশরুমের দরজায় দু/তিনবার কড়া নেড়ে বললেন,
–“বউ, ওটা পড়েই বের হতে হবে৷ তাই সময় নষ্ট না করে তাড়াতাড়ি চেঞ্জ করে এসো।”

–“পড়বো না আমি। আপনি শাড়ি বের করে দিন।”

–“তুমি নিজে না পড়লে কিন্তু আমি এসে পড়িয়ে দিবো। তখন লজ্জাটা কিন্তু বেশিই পাবে।”

–“প্লিজ___”

–“কোনো মানা শুনছি না৷ চুপচাপ ওই ড্রেস পড়ে বেরিয়ে এসো। নয়তো আমি যা বলেছি তা-ই করবো। আর তুমি নিশ্চয়ই জানো, আমি যা বলি তাই করি। তোমাকে ফাইভ মিনিটস টাইম দিলাম। এরমাঝেই বেরিয়ে আসবে।”

কথাগুলো বলে আদ্র আবার নিজের জায়গায় বসে কাজে মনোযোগ দিলো। এদিকে আমি দাঁড়িয়ে ভাবছি কি করা যায়? আদ্রর দেওয়া সময় শেষ হতে চললো। এর মাঝেই উনি বেশ কয়েকবার হাঁক-ডাক দিয়েছেন। আদ্র শেষে বিরক্ত হয়ে বললো,
–“লাস্ট দু মিনিট টাইম দিচ্ছি। এর মাঝে বের না হলে আমি দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে নিজে চেঞ্জ করাবো।”

আদ্র’র এমন ছোটখাটো হুমকিতে আমার প্রান-পাখিটা বেরিয়ে আসার উপক্রম। উনি এক কথার মানুষ। এবার যদি না বের হই তাহলে বোধহয় উনি সত্যি সত্যিই নিজে এসে চেঞ্জ করাবেন। তাই দ্রুত কাঁপা কাঁপা হাতে চেঞ্জ করে নিলাম। ছোট্ট ছোট্ট কদম ফেলে ওয়াশরুমের দরজা খুলে বেরিয়ে এলাম। দরজা খোলার শব্দে আদ্র চোখ মেলে তাকালো আমার দিকে। আমি নাইটির উপর গায়ে উড়না জড়িয়ে আছি৷ আর নাইটিটা বারবার টেনে বড় করার চেষ্টা করছি। আদ্র বেশ কিছুক্ষণ স্থির তাকিয়ে থাকে আমার দিকে। তারপর বলে,
–“উড়না গায়ে জড়িয়েছো কেন? আর নাইটি ধরে টানাটানি করলেই ওটা বড় হয়ে তোমার হাটুর নিচে নেমে যাবে না৷ উলটো ছিঁড়ে যাবে।”

উনার এমন কথায় আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে পড়লাম। তবুও মাঝে মধ্যে বারবার নাইটির নিচের অংশে হাত চলে যাচ্ছে। আদ্র এবার ল্যাপটপ অফ করে সেন্টার টেবিলে রেখে দিলো। তারপর এগোলো আমার দিকে। উনি যত এগিয়ে আসছেন আমি তত পিছিয়ে যাচ্ছে৷ এক পর্যায়ে উনি শক্ত হাতে ধরে ফেললেন আমাকে। সোজা করে দাঁড় করিয়ে দিয়ে একটানে গায়ে থেকে উড়না নিয়ে ছুঁড়ে ফেললেন। অস্বস্তি হচ্ছে খুব। দ্রুত দু হাত দিয়ে ক্রশ ভাবে বুকে হাত দিতে গেলেই উনি দুহাত চেপে ধরে বললো,
–“কাঁপা-কাঁপি বন্ধ করে শান্ত হয়ে দাঁড়াও।”

–“উড়না ছুঁড়ে ফেললেন কেন এভাবে___”

সম্পূর্ণ কথা শেষ করার আগেই আমাকে থামিয়ে দেয় আদ্র। তারপর আমাকে সোজা করে দাঁড় করিয়ে ভালোভাবে চোখ বুলায় আমার দিকে। তার অশান্ত দৃষ্টি হঠাৎই শান্ত হয়ে যেতে দেখে বুঝলাম আমাকে এভাবে দেখে থমকে গেছেন উনি। হয়তো উনার ভাবনার থেকেও বেশি আকর্ষণীয় লাগছে দেখতে৷ আদ্র বাঁকা হেসে বললো,
–“এমন করছো মনে হয় আগে তোমাকে আর দেখিনি। এখন তো তাও নাইটি পড়া আছো৷ আমি তো তোমাকে উম্মুক্ত___”

–“চুপ, আর একটাও অসভ্য টাইপ কথা বলবেন না।”

এই বলে উনার মুখ চেপে ধরলাম। আদ্র হেসে উনার মুখ থেকে আমার হাত সরিয়ে আমার দিকে ঝুঁকে বললো,
–“খুব আকর্ষণীয় লাগছে তোমায়৷ দূরে থাকতে পারছি না আর।”

কথাটা বলেই চট করে আমার ঠোঁটজোড়া উনার আয়ত্তে নিয়ে নিলেন। বেশ কিছু সময় ঠোঁটে চুমু খাওয়ার পর শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন বেশ কিছু সময়। তারপর ছেড়ে দিয়ে একটানে উনার গায়ে থাকে টি-শার্ট খুলে ছুড়ে ফেললেন সোফায়। আচমকাই আমাকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানার দিকে পা বাড়ালেন। আমি শক্ত হাতে উনার গলা জড়িয়ে ধরে বুকে মুখ লুকালাম।

চলবে~

#অ্যাডিক্টেড_টু_ইউ
#অরনিশা_সাথী
#পর্ব_বাইশ

অফিসের কাজ দুদিনেই শেষ হয়ে গেছে। আজ বিকেলেই এখান থেকে কক্সবাজার যাওয়ার জন্য রওনা দিবো আমরা। শাওয়ার নিয়ে বের হয়ে এলাম। আদ্র তখন ঘুমোচ্ছে। ঘড়িতে সকাল ন’টা বাজে। ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে কাল রাতের খুলে রাখা ছোট্ট ইয়ার-রিং, চেইন, হাতে দুটো রিং এবং দুহাতে চিকন সোনার চুড়ি পড়ে নিলাম। উঠে গিয়ে আদ্র’র মাথার কাছে বসে চুলগুলো এলোমেলো করে দিলাম। আদ্র’র গালে আর কপালে আলতো করে চুমু খেলাম। ইচ্ছে করলো আদ্র’র উম্মুক্ত বুকে ঠোঁট ছোঁয়াতে। তাই কোনোকিছু না ভেবেই আদ্র’র বুকে চুমু খেলাম। লোকটা নড়েচড়ে আবার ঘুমিয়ে গেলো। আমি উঠে আসতেই আদ্র’র ফোন বেজে উঠলো। ফোন হাতে নিতেই দেখলাম মামনির ফোন। এসময়ে মামনির ফোন দেখে অবাক হলাম কিছুটা৷ আদ্র’কে না ডেকেই ফোন রিসিভ করলাম আমি। ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে মামনি কান্নারত অবস্থায় বললো,
–“আদ্র, আদ্র মাইশাকে কোত্থাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বাবা। আমরা, আমরা__”

মামনির এতটুকু কথা কর্ণগোচর হতেই হাত-পা কাঁপতে শুরু করলো আমার। মাইশাকে পাওয়া যাচ্ছে না? আমি কাঁপা কাঁপা স্বরে বললাম,
–“মামনি কি বলছো? খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না মানে কি? আশেপাশে ভালো করে দেখো।”

–“আশেপাশে সব জায়গায় খুঁজেছি ওর ফ্রেন্ডদের থেকে খোঁজ নিয়েছি কোত্থাও নেই ও। আর আজ ওর কোনো ক্লাসও ছিলো না।”

আমি নিজেকে যথাসম্ভব সামলে রেখে মামনিকে সাহস দেওয়ার জন্য বললাম,
–“মামনি চিন্তা করো না, হয়তো আশেপাশে কোথাও আছে। ঠিক ফিরে আসবে দেইখো।”

–“নারে মা ও কোত্থাও নেই। আলমারিতে ওর অনেক জামা-কাপড়ও নেই।”

এবার যেন সত্যি সত্যিই পায়ের তলার মাটি সরে গেলো। কোথায় গেলো মেয়েটা? আমি কোনোমতে মামনিকে বুঝিয়ে শুনিয়ে বললাম,
–“চিন্তা করো না। তোমারা আশেপাশে ভালো করে খুঁজে দেখো, আমরা ফিরছি এখনই।”

কথাটা বলেই লাইন কেটে দিলাম। হাত পা থরথর করে কাঁপছে আমার। হঠাৎ করে মাইশা যাবে কোথায়? কার সাথে সম্পর্ক ছিলো ওর? কখনো তো তেমন কিছু বলেনি। কোনো ছেলের কথাও কোনোদিন বলেনি। আমি সময় নষ্ট না করে দ্রুত আদ্রকে ডাকলাম। আদ্র ধরফরিয়ে উঠে বসে। আমার দিকে তাকিয়ে অস্থির গলায় বলে,
–“রুহি অল ওকে? এমন লাগছে কেন তোমায়? সব ঠিক আছে?”

–“মাইশাকে সকাল থেকে কোত্থাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।”

–“হোয়াট?”

–“মামনি ফোন দিয়ে কান্নাকাটি করছিলো৷ ওর ফ্রেন্ডদের বাড়ি এমন কি আশেপাশে সব জায়গায় খোঁজ নিয়েছে কোত্থাও নেই ও।”

আদ্র দ্রুত উঠে মামনিকে ফোন লাগিয়ে ব্যালকোনিতে চলে গেলো। কি কথা হলো জানি না। তবে আদ্র বেশ চটে গেছে। চিল্লাফাল্লা শুরু করে দিয়েছে। রুমে এসে ফোনটা বিছানায় ছুড়ে মেরে বললো,
–“দ্রুত লাগেজ গোছাও, দশ মিনিটের ভিতর বেরোবো আমরা।”

কথাটা বলেই গটগট করে ওয়াশরুমে চলে গেলো। আমি থম মেরে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে দ্রুত লাগেজ গোছানোতে মনোযোগ দিলাম। মিনিট পাঁচেক বাদেই আদ্র ফ্রেশ হয়ে বের হলেন। তারপর দ্রুত চেঞ্জ করে আমাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে। চেনাজানা কয়েকজনকে ফোন করে ইমারজেন্সি টিকিটের ব্যবস্থা করেন উনি।

বাড়িতে এসেই ভাংচুর শুরু করে দিয়েছেন আদ্র। সাথে চিৎকার চেঁচামেচি তো আছেই। রাগে শরীর থরথর করে কাঁপছে সমানে। উনি চেঁচিয়ে বললেন,
–“এতগুলো মানুষ বাড়িতে থাকার পরও মাইশা কিভাবে পালিয়ে যায়? এতগুলো মানুষ বাড়িতে কি করেছো তোমরা? পালালো কিভাবে ও?”

মামনি সোফায় বসে কেঁদে চলছে৷ আমি আর তিন্নি উনাকে শান্ত করার চেষ্টা করছি। পাপা সারা ড্রয়িংরুম জুড়ে পায়চারী করছে৷ একের পর এক ফোন কল এসে চলছে উনার ফোনে৷ শেষে ফোন অফ করতে বাধ্য হয় পাপা। ফোন রিসিভ করলেই সবার একই প্রশ্ন, ‘আপনার মেয়ে নাকি কোন ছেলের হাত ধরে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে।’ এই একই প্রশ্ন শুনতে শুনতে আমরা বাড়ির সকলে ক্লান্ত। পাপার ফোন বন্ধ পেয়ে এবার আদ্রর ফোন বাজতে শুরু করলো। আদ্র ফোনটা ফ্লোরে ছুড়ে মারতেই সেটা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। ভয়ে আমি আর তিন্নি জড়োসড়ো হয়ে গেলাম। আদ্র হনহনিয়ে চলে গেলো রুমে। চিটাগং থেকে ফিরেছি ঘন্টা তিনেক হবে। আদ্র এসে কাছেপিঠে পরিচিত সব জায়গায় খুঁজেছে কোত্থাও কোনো হদিস পায়নি। সারা শহরে লোক লাগিয়ে দিয়েছে আদ্র যাতে ওরা কোনোভাবে শহর ছেড়ে পালাতে না পারে। প্রতিটা বাস স্টপ, রেলষ্টেশন, এয়ারপোর্ট সব জায়গায় মাইশার ছবি পাঠানো হয়েছে। কোথাও থেকে কোনো খোঁজ আসেনি এখনো। আমি মামনিকে শান্ত করে আদ্র’র পিছে পিছে উপরে উঠে গেলাম। লোকটা প্রচন্ড রেগে আছে মাইশার এমন কান্ডে। রাগের বসে কখন কি করে বসে ঠিক নেই।

রুমে গিয়ে দেখলাম আদ্র সারা রুম পায়চারী করছে এবং কারো সাথে বেশ উচ্চস্বরে কথা বলছে ফোনে। কিছুদিন আগেই ফোনটা কিনেছিলো আদ্র। এতদিন ড্রয়ারে অযত্নে পড়েছিলো এখন সেটাতেই কথা বলছেন উনি। আদ্র ফোন কেটে সোফায় বসলেন। দুহাতে চুল টেনে ধরে নিচ দিকে মাথা দিয়ে আছেন৷ আমি গিয়ে উনার পাশে বসলাম। উনার কাঁধে হাত রাখতেই উনি তাকালেন আমার দিকে। তারপর আমার দিকে ঘুরে বললেন,
–“মাইশা কি কখনো কোনো ছেলের কথা বলেছিলো তোমাকে?”

–“নাহ__”

–“ভালো করে ভেবে বলো। এমন কিছু কখনো বলেছিলো যেটা অন্যরকম মনে হয়েছে তোমার?”

–“না এমন কিছু তো___”

–“তিন্নিকে ডেকে পাঠাও।”

আমি চুপচাপ রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম তিন্নিকে ডাকার জন্য৷ তিন্নি তখন নিজের ঘরে ফোনে কিছু একটা করছিলো। আমার ডাকে রুম থেকে বেরিয়ে আসে। আমি ওকে আসতে বলে চলে এলাম রুমে। কিছু সময় বাদেই তিন্নি গুটিগুটি পায়ে রুমে প্রবেশ করে। তীক্ষ্ণ চোখে আদ্র তিন্নির দিকে তাকিয়ে আছে। আর তিন্নি মাথা নিচু করে রেখেছে। আদ্র নিজেকে সামলে নিয়ে বেশ নরম গলায় জিজ্ঞেস করলো,
–“মাইশার মুখে কখনো কোনো ছেলের বিষয়ে শুনেছিস?”

–“ন্ নাহ ভাইয়া।”

–“ভেবে চিন্তে বল তিন্নি। কোনো ছেলের সাথে দেখেছিস কিনা কখনো? বা কোনো ছেলের ব্যাপারে কিছু বলেছে কিনা? যে কোনো কিছু।”

–“নাহ ভাইয়া, ও কখনো আমায় সেরকম কিছু বলেনি। তবে লাস্ট ক’মাস যাবত নোটিশ করেছি ও কলেজ বা বাসা যেখানেই হোক ফোন নিয়েই বিজি থাকতো৷ ম্যাসেজিং করতো আবার মাঝে মধ্যে মুচকি হাসতো। আমি কিছু জিজ্ঞেস করলে বলতো ফ্রেন্ডদের সাথে কথা বলছে৷ তাই আর তেমন ভাবে গুরুত্ব দেইনি।”

আদ্র সেন্টার টেবিলে লাথি মেরে সেটাকে দূরে ঠেলে দিলো। তারপর দু হাতে নিজের চুল টেনে ধরে বললো,
–“ড্যাম ইট। ও কোনো ফ্রেন্ডদের সাথে কথা বলতো না। নিশ্চয়ই যে ছেলেটার সাথে পালিয়েছে তার সাথে কথা বলতো ও। আগে বলিসনি কেন আমাকে?”

–“আমি ভেবেছিলাম___”

–“ও বললো ফ্রেন্ডদের সাথে কথা বলে আর তুই সেটা মেনে নিলি? ওর মাঝের চেঞ্জ গুলো লক্ষ্য করেও কেন সেগুলো নিয়ে ভাবিসনি? আমাকে কেন বলিসনি? আগে যদি এসব বলতি তাহলে আজ এ দিন দেখতে হতো না।”

–“স্যরি ভাইয়া। আমি___”

–“আমার নিজের বোন আমাদের কথা ভাবেনি, এ বাড়ির সম্মানের কথা ভাবেনি। ও যদি কাউকে ভালোবেসে থাকে তাহলে সেটা আমাকে বললেই পারতো, কেন এভাবে চলে গেলো কাউকে কিচ্ছু না বলে? আমি কি এতটাই খারাপ ভাই ওর যে ওর ভালো লাগা খারাপ লাগা নিয়ে ভাববো না?”

আদ্র নিজের চুল টেনে ধরে নিজে নিজেই এসব বলে যাচ্ছে৷ আমি আর তিন্নি সামলানোর চেষ্টা করছি উনাকে। উনি হঠাৎই তিন্নির দুগালে হাত রেখে বলে,
–“আই হোপ তুই আমার বিশ্বাসটা রাখবি তিন্নি। তুই কখনো এমন কিছু করবি না এই আশাটা রাখতে পারি তো আমি তোর থেকে? তোর কাউকে ভালো লাগলে তুই আমার সাথে কথা বলবি। সরাসরি আমাকে বলতে না পারলে তোর ভাবীকে জানাবি৷ তবুও মাইশার মতো কাজ করিস না। আমি তোদের দুজনকে কখনো আলাদা চোখে দেখিনি৷ আই হোপ আমার একবোন আমার কথা রাখেনি কিন্তু আমার আরেক বোন নিশ্চয়ই আমার কথা রাখবে? কিছু করার আগে অন্তত একবার আমার কথা ভাববে?”

তিন্নি ঝাপিয়ে পড়লো আদ্র’র বুকে৷ আদ্রকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললো,
–“আমি তোমার বিশ্বাস কক্ষনো ভাঙবো না ভাইয়া। তুমি দোয়া করো যাতে আমি তোমার বিশ্বাসটা রাখতে পারি।”

এদের দুই ভাই-বোনের কান্নাকাটি দেখে আমার চোখের পানি জমে। এদের দেখলে কে বলবে এরা আপন ভাইবোন না? কে বলবে এদের রক্তের কোনো সম্পর্ক নেই? ইশ্ তিন্নির মতো করে মাইশাটাও যদি বুঝতো তাহলে আজ এমন কিছু হতো না। এসব ভেবে নিজের চোখের পানিটা মুছে নিলাম আমি। আদ্র তিন্নিকে ছেড়ে দিয়ে বললো,
–“রুমে যা একদম কান্নাকাটি করিস না৷”

তিন্নি বাধ্য মেয়ের মতো নিজের রুমে চলে গেলো। হুট করেই আমার ইরান ভাইয়ার কথা মনে হলো। আমাদের বিয়ের পরপর মাইশা বেশ ক’বার আমকে ইরান ভাইয়ার কথা জিজ্ঞেস করেছিলো। আচ্ছা ইরান ভাইয়ার সাথেই কি? কিন্তু এটা কি করে সম্ভব? ইরান ভাইয়ার মনে তো আমার জন্য ফিলিংস ছিলো। সেখানে হুট করেই মাইশার সাথে কি করে সম্ভব এটা? নাকি মাইশা অন্যকোনো ছেলের চক্করে পড়েছে?

একা একা এসব ভাবছিলাম৷ রাত পৌনে ন’টা বাজে৷ আদ্র অনেক আগেই বেরিয়ে গেছে বাসা থেকে৷ ভাবনার ছেদ ঘটে ফোনের রিংটোনে। ফোন হাতে নিতেই আননোন নাম্বার দেখে ভ্রু কুঁচকে গেলো আমার। সচারাচর আমার ফোনে আননোন নাম্বার থেকে ফোন আসেনা। এসব ভাবতে ভাবতেই ফোন কেটে গেলো৷ আবারো নতুন উদ্যমে বেজে উঠলো ফোন। এবার আর দেরী না করে দ্রুত ফোন রিসিভ করলাম। ওপাশ থেকে কেউ অনবরত কান্না করছে। আমি বেশ কিছু সময় চুপ থেকে বললাম,
–“মাইশু? মাইশু কোথায় তুমি? জানো তোমার জন্য বাড়ির সবার কি অবস্থা? পাপা মামনি তো চিন্তায় খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। তোমার ভাইয়া পাগলের মতো সারা শহর খুঁজে বেড়াচ্ছে তোমাকে। কোথায় আছো তুমি?”

–“ভাবী, ভাবী আমি___”

–“কান্না থামাও, তারপর ধীরে সুস্থে বলো। কোথায় আছো? কার সাথে আছো?”

–“ই্ ইরানের সাথে আছি।”

–“কিইইহ? ইরান, ইরান ভাইয়ার সাথে তুমি___”

–“ভাবী আমি ওকে খুব ভালোবাসি বিশ্বাস করো। ভাইয়াকে বলো আমাদের না খুঁজতে। আমি বাড়ি ফিরবো না। যদি ইরানকে মেনে নেয় তবেই বাড়ি ফিরবো আমি এর আগে না।”

–“মাইশু তুমি___তুমি কি করলে এটা? তুমি নিশ্চয়ই জানো তোমার ভাইয়া ইরান ভাইয়াকে পছন্দ করে না। প্লিজ লক্ষীটি বাড়ি ফিরে এসো। তোমার ভাইয়া কিচ্ছু বলবে না। এদিকটা আমি ম্যানেজ করবো৷ তুমি___”

বাকি কথা বলার আগেই কেউ একজন ছোঁ মেরে আমার থেকে ফোন নিয়ে নিলো। পেছনে ঘুরতেই আদ্র’কে দেখে চমকে উঠলাম আমি। উনি? উনি এসে পড়েছে? এখন কি হবে? আমি আদ্রকে বোঝাতে গেলে উনি হাত উঠিয়ে আমাকে থামিয়ে দেয়। এবং ফোন লাউডে দেয়৷ ওপাশ থেকে মাইশা বলছে,
–“ভাবী তুমি চিন্তা করো না। আমি ইরানের সাথে ওর বাড়িতেই আছি৷ ভাইয়া যেদিন ইরানকে মানবে সেদিনই ফিরবো আমি এর আগে না।”

আদ্র কথাগুলো শুনে নিয়েই ফোন কেটে দিলো। তারপর রাগী চোখে তাকালো আমার দিকে। তেড়ে আমার দিকে এগিয়ে শক্ত করে আমার দুহাতের বাহু চেপে ধরলো৷ দু বাহু ধরে ঝাকিয়ে চেঁচিয়ে বললো,
–“তুমি সবটা জানতে? ইরানের হাত ধরে মাইশা বাড়ি ছেড়েছে এটা আগে থেকেই জানতে তুমি রাইট?”

–“নাহ, জানতাম না আমি।”

–“আবার মিথ্যে বলছো? তুমি তো জানো রুহি ইরানকে আমার একদম পছন্দ না। ও আমার থেকে তোমায় নিয়ে নিতে চেয়েছিলো। ও তোমাকে ভালোবাসতো সেখানে ওর সাথেই কিনা মাইশা পালিয়ে গেলো?”

–“কি বলছেন এসব আপনি? আমি সত্যি বলছি ইরান ভাইয়া আর মাইশার কথা জানতাম না আমি। তবে আমাদের বিয়ের পর পর মাইশা কয়েকবার ইরান ভাইয়ার কথা জিজ্ঞেস করেছিলো আমাকে এই। এছাড়া ইরান ভাইয়াকে নিয়ে মাইশার সাথে কোনো কথা হতো না আমার।”

–“সত্যিই মাইশাকে ভালোবাসে তো ইরান? নাকি নতুন করে তোমাকে পাওয়ার আশাতেই মাইশাকে টোপ বানিয়ে এ বাড়িতে ঢুকতে চাইছে ও?”

আদ্র’র কথায় চমকে উঠলাম আমি। কিসব বলছেন উনি? ইরান ভাইয়া এরকম জঘন্য কাজ কেন করতে যাবেন? আমাকে চুপ থাকতে দেখে আদ্র আবারো চেঁচিয়ে বললেন,
–“যে কারনেই হোক, ও আজ আমার হাত মারা পড়বে। প্রথমে তুমি এখন আবার আমারই বোনের দিকে হাত বাড়িয়েছে ও।”

–“আপনি প্লিজ শান্ত হোন৷ এভাবে রেগে হঠকারিতায় কোনো সিদ্ধান্ত নিবেন না। এখানে যদিও দোষ করে থাকে তাহলে দুজনেই সমান দোষ করেছে। আপনি___”

আদ্র আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আমার ফোনটা পকেটে ঢুকিয়ে নিলো। তারপর গটগট করেই বেরিয়ে গেলো রুম থেকে। অনেকবার ডাকার পরও শুনলেন না উনি। এদিকে আমি চিন্তায় আছি ওখানে না জানি মাইশা আর ইরান ভাইয়ার কি অবস্থা করেন উনি। আমার ফোনটাও সাথে করে নিয়ে গেলেন যাতে আমি আদ্র’র যাওয়ার খবর না দিতে পারি। কি করবো এখন? মাইশা যে নাম্বার থেকে ফোন করেছিলো সেই নাম্বারটাও জানা নেই আমার যে অন্যকারো ফোন থেকে ফোন করবো। চিন্তায় হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে আমার।

চলবে~