অ্যাডিক্টেড টু ইউ পর্ব-২৮ এবং শেষ পর্ব

0
678

#অ্যাডিক্টেড_টু_ইউ
#অরনিশা_সাথী
#অন্তিম_পর্ব

ফুটফুটে পুত্র সন্তান কোলে নিয়ে অতি আনন্দে অশ্রু ঝড়াচ্ছে আদ্র। কিছুক্ষণ আগেই একজন নার্স এসে সাদা টাওয়ালে পেঁচানো ফুটফুটে বাচ্চা আদ্র’র কোলে দিয়ে গেলেন। কাঁপা কাঁপা হাতে আদ্র বাচ্চাটাকে কোলে তুলে নেয়৷ নার্স হাসিমুখে বলেন,
–“কংগ্রাচুলেশনস, আপনার স্ত্রী ছেলে বাবু জন্ম দিয়েছেন।”

আদ্র খুশিতে আটখানা হয়ে ছেলের কপালে চুমু খায়। ছেলের গাল নিজের গালের সাথে ঠেকিয়ে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে,
–“আমার স্ত্রী___”

নার্স আবারো মিষ্টি হাসি উপহার দিয়ে বললেন,
–“চিন্তা করবেন না, উনি একদম ঠিক আছেন। এখনই বেডে শিফট করা হবে উনাকে৷ তারপর আপনারা গিয়ে দেখা করে নিতে পারবেন।”

আদ্র আবারো ছেলের সারামুখে চুমু দিয়ে ভরিয়ে ফেললেন। আল্লাহর দরবারে হাজারো শুকরিয়া জানালেন বউ বাচ্চা দুজনেই সুস্থ আছেন বলে। সাথে ক্ষানিকটা হাসলেনও, শেষমেশ লিটেল আদ্রই এসেছেন।

চোখ বন্ধ করে শুয়েছিলাম। তখনই কেবিনের দরজা খুলে আদ্র এলেন। উনাকে দেখে উঠে বসার চেষ্টা করতেই আদ্র মৃদু ধমকে উঠলেন আমাকে। কিছুটা রাগী স্বরেই বললেন,
–“একা একা এতো পাকামো করতে হবে না। চুপচাপ শুয়ে থাকো। কে উঠতে বলেছে তোমায়?”

আদ্র’র এমন কথায় অভিমানে গাল ফোলালাম আমি। অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বললাম,
–“এক বাচ্চার মা হয়ে গেছি। এখনো আপনি আমাকে বকাঝকা করতে পারেন না।”

আমার এরকম কথায় আদ্র গলা ফাটিয়ে হেসে উঠলো। হাসতে হাসতেই চেয়ার টেনে বেডের কাছে বসলেন। আমার হাতদুটো উনার হাতের মুঠোয় নিয়ে বললেন,
–“স্যরি বউ, আমি তো ভুলেই গেছিলাম তুমি এক বাচ্চার মা হয়েছো। ইশ্! এক বাচ্চার মা হয়ে আমার বউটা বহুত বড় হয়ে গেছে দেখছি।”

আমি আড়চোখে আদ্র’র দিকে তাকিয়ে বললাম,
–“মশকরা করছেন আমার সাথে?”

আমার কথায় আদ্র আবারো ঘর কাঁপিয়ে হেসে উঠলো। আর এদিকে আমার অভিমান আকাশ ছুঁলো। লোকটা এমন কেন? আমার কোনো কথা-ই সিরিয়াস ভাবে নেন না। আদ্র আমাকে উনার দিকে ঘুরিয়ে বললেন,
–“রাগ করলো আমার বউটা?”

–“হুম।”

–“তো ম্যাডামের রাগ কিভাবে ভাঙাতে পারি এখন?”

আমি কিছুটা ভাবুক হয়ে বললাম,
–“উমমম, ওয়েট কিছুক্ষণ ভাবতে দিন আমাকে।”

কথাটা বলার পরপরই আদ্র আমার গালে টুক করে চুমু খেয়ে বসলো। আচমকা উনার এমন কাজে বিষম খেয়ে গেলাম আমি। আদ্র আমার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসলো। আমি আদ্রকে হাতের ইশারায় কাছে ডাকলাম। উনি কাছে আসতেই একহাত দিয়ে উনার মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিয়ে আমিও চটপট চুমু খেলাম উনার গালে। তারপর উনাকে নিজের থেকে কিছুটা সরিয়ে দিয়ে কিছুটা ভাব নিয়ে বললাম,
–“আমিও ঋণী থাকি না কারো কাছে।”

আমার কথায় আদ্র আরেক দফা হাসলেন। তখনই কেবিনের দরজা খুলে একে একে আমাদের দুই বাড়ির সকলে এসে উপস্থিত হলেন৷ আদ্র আমাকে উঠে বসতে সাহায্য করলেন। আম্মু এসে আমাদের ছেলেকে আমার কোলে দিলেন৷ প্রথমবার ছেলেকে কোলে নিয়ে খুশিতে কেঁদে দিলাম আমি। মা হওয়ার অনূভুতিটা সত্যিই খুব সুখের। ছেলেকে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে নিলাম। তিন্নি আমাকে আর আদ্র’কে উদ্দেশ্য করে বললো,
–“আচ্ছা ভাইয়া ভাবী, আমাদের পুচকেটার নাম কি হবে? ঠিক করেছো তোমরা?”

কথাটা বলে তিন্নি সহ সকলেই উৎসুক দৃষ্টিতে তাকালেন আমাদের দিকে। আমি আর আদ্র নিজেদের দিকে তাকালাম একবার। আদ্র মুচকি হেসে ছেলেকে আমার থেকে উনার কোলে তুলে নিলেন। অতঃপর কপালে চুমু খেয়ে বললেন,
–“হ্যাঁ ঠিক করেছি তো।”

মাইশা ধৈর্যহারা কন্ঠে বললো,
–“কি নাম ঠিক করেছো শুনি?”

মাইশার কথায় আদ্র আরো একবার তাকালেন আমার দিকে। তারপর মুচকি হেসে বললেন,
–“মাইশান রুদ্র।”

ইরান ভাইয়া হেসে বললো,
–“নিক-নেইম রুদ্র রাইট?”

ইরান ভাইয়ার কথায় আদ্র হেসে হ্যাঁ সূচক সম্মতি জানালেন। রুপ ভাইয়া এগিয়ে এসে আদ্র’র পিঠে হালকা ভাবে থাপ্পড় মেরে বললেন,
–“মুশফিকান আদ্র’র ছেলের নাম মাইশান রুদ্র। নাইছ চয়েজ ইয়ার।”

আদ্র মৃদু হাসলেন। ফারাবী ভাইয়া চট করেই বললেন,
–“রুহি’র নামের ফার্স্ট লেটার আর আদ্র’র নামের লাস্ট লেটার মিলিয়ে রুদ্র? রাইট?”

ফারাবী ভাইয়ার কথায় আদ্র এবারো আলতো হেসে হ্যাঁ সূচক সম্মতি জানালেন। তিন্নি একপ্রকার লাফিয়ে বলে উঠলো,
–“ওয়াও ভাইয়া! জোশ নাম ঠিক করেছো।”

তিন্নির এমন বাচ্চামোতে ফারাবী ভাইয়া এক পলক ভ্রু কুঁচকে তাকালেন ওর দিকে। সাথে সাথেই তিন্নি শান্ত হয়ে কাচুমাচু ভাবে মাইশার পেছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লেন। দুজনের হাবভাব প্রথমে ঠিক না লাগলেও কিছু একটা ভাবতেই মুচকি হাসলাম আমি।

তিনদিন পর আজ হসপিটাল থেকে বাড়িতে এসেছি। আম্মু আমাদের বাড়িতেই নিয়ে যেতে চেয়েছিলো, কিন্তু আদ্র’র জন্য সেটা পারেনি। উনার একই কথা, ‘আমার বউ বাচ্চা আমার বাড়িতেই থাকবে৷ আমি ওদের কোনো অযত্ন হতে দিবো না।’ তাই আম্মুও আর জোর করতে পারেনি আদ্র’কে। আদ্র’র কথামতো আজ উনাদের বাড়িতেই নিয়ে আসা হয় আমাকে। বাড়িতে ঢুকেই চোখ চড়কগাছ আমার। পুরো বাড়ি সাজানো হয়েছে রুদ্রকে ওয়েলকাম করার জন্য। বাড়িতে আসার পর এক প্রকার টানাটানি লেগে গেছে রুদ্রকে নিয়ে। কতক্ষণ মাইশা টানাটানি করে আবার কতক্ষণ তিন্নি। সাথে মামনি পাপা তো আছেই। বাড়িতে আসার পর থেকে এদের কারনে আমি একদমই রুদ্রকে কাছে পাচ্ছি না। শুধুমাত্র খাওয়ানোর সময় হলেই ওরা রুদ্রকে আমার কাছে নিয়ে আসে। তারপর খাওয়ানো শেষে আবার নিয়ে চলে যায়।

আরো কয়েকটা দিন পার হয়৷ সন্ধ্যার দিকে বিছানা ঝাড়ছিলাম। জরুরী মিটিংয়ে আদ্র বিকেলের দিকে অফিস গিয়েছেন। বলেছেন সন্ধ্যা নাগাদ ফিরে আসবেন। রুদ্রটাও কাছে নেই৷ তিন্নি নিয়ে গেছে ওকে। মাইশা গত পরশু ইরান ভাইয়াদের বাড়ি গেছেন। ক্লাশ শেষে বাসায় ফিরে তিন্নি সারাটা সময় রুদ্রকে নিজের কাছে রাখবে। আর তাছাড়া পাপা মামনি তো আছেনই রাখার জন্য। রাতে ঘুমানোর সময় ছেলেটাকে একটু কাছে পাই আমি। বিছানা গোছানো শেষে, রুদ্র’র জামাকাপড় ভাজ করছিলাম। তখনই পেছন থেকে দুহাতে কেউ কোমড় জড়িয়ে ধরেন৷ স্পর্শটা ভীষণ চেনা আমার। আদ্র’র হাতের উপর হাত রেখে বললাম,
–“এখন আসার সময় হয়েছে আপনার?”

আদ্র আমাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলেন। তারপর কপালে কপাল ঠেকিয়ে বললেন,
–“মিস করছিলে বুঝি?”

আমি অভিমানের সুরে বললাম,
–“হ্যাঁ করি তো, সারাদিনেও ছেলেকে নিজের কাছে পাইনা কখনো মামনি তো কখনো তিন্নি আবার পাপা বাড়ি ফিরলে উনার কাছে থাকে। তার উপর আবার আপনি অফিস চলে যান। সময় কাটে না তো আমার। আমি একা একা বোর হই খুব।”

আদ্র আমার নাক টেনে দিয়ে বললো,
–“আচ্ছা বউ, এরপর থেকে আর বোর হতে হবে না তোমায়। আমি আর অফিস যাচ্ছি না। বাড়িতে বসেই অফিসের কাজ করে নিবো কিছুটা। আর তোমার সাথেই আঠার মতো লেগে থাকবো। চলবে তো?”

আমি হেসে আদ্রকে জড়িয়ে ধরে বললাম,
–“চলবে না একদম দৌড়াবে।”

মাঝে তিনটা বছর কেটেছে। এই তিনবছরে অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়েছে। সম্পর্কের সমীকরণ বদলেছে। হিমাদ্রি আর নিশাদ ভাইয়ার বিয়ে হয়েছে বছর দুই আগে৷ ফুপ্পি ওদের সম্পর্কে রাজি ছিলো না। নিশাদ ভাইয়া একা বহু কষ্টে দুই ফ্যামিলি রাজি করিয়ে হিমাদ্রিকে নিজের করেছে। এর মাঝে ফারাবী ভাইয়া আর তিন্নির বিয়েটাও হয়ে গেছে। এইতো আর মাত্র দু মাস বাদেই ওদের বিয়ের এক বছর পূর্ণ হবে৷ সেদিন হসপিটালে আমি ফারাবী ভাইয়ার চোখের ভাষা বুঝতে পারছিলাম। ফারাবী ভাইয়ার চাহনীতেই বুঝতে পেরেছিলাম এতদিনে ফারাবীর ভাইয়ার মনে কাউকে ধরেছে। তিন্নিকেও জিজ্ঞেস করেছিলাম ফারাবী ভাইয়ার কথা, ও জানায় ওদের সম্পর্ক নেই, কেউ কখনো একে অপরের সাথে কথাও বলেনি। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে ফারাবী ভাইয়াকে ভীষণ ভালো লাগে ওর। ব্যাস! এতেই যা হওয়ার হয়েছে। ফারাবী ভাইয়া আর তিন্নির মাঝে প্রেম হওয়ার অনেক সময় দিয়েছিলাম। কিন্তু শেষ অব্দি যখন কেউ কাউকে মনের কথা জানাতে পারেনি তখন আমি আর আদ্র মিলেই দুই ফ্যামিলিকে জানিয়ে ওদের বিয়েটা দিই।

রুশাপুর ছেলে রুশানের সাড়ে চার বছর এখন। এদিকে আপি আর মুগ্ধ ভাইয়ার একমাত্র মেয়ে নিধি ও আমাদের রুদ্র’র চার মাসের বড়। আমাদের ছোট্ট মাইশুটাও নিজে মা হয়েছে। এক কন্যাসন্তান জন্ম দিয়েছে ও। মাইশা আর ইরান ভাইয়ার মেয়ের নাম ইরহা৷ ও আমাদের আদ্র’র বছর খানেকের ছোট।

রুদ্র এখন পুরো দমে দৌড়াদৌড়ি করতে পারে। আধো আধো বুলিতে সব কথা বলতে পারে। কিছু কিছু কথা স্পষ্ট আবার কিছু কিছু কথায় বেজে যায়। ছেলেটা প্রচন্ড রকম দুষ্টু হয়েছে। একদিকে ছেলে আরেক দিকে বাবা দুজনেই চূড়ান্ত পর্যায়ের ফাজিল। এই বাপ-বেটার অত্যাচারে আমার মতো নিরীহ, শান্ত, অসহায় মানুষটা একদম শেষ হয়ে যাচ্ছে। আগে শুধু বাবা জ্বালাতো এখন সাথে ছেলেও যোগ হয়েছে৷

আজ রুদ্রু’র থার্ড বার্থডে। তাই বড়সড় একটা বার্থডে পার্টির আয়োজন করেছে আদ্র। নিচে সকল অতিথি আসতে শুরু করে দিয়েছেন। এদিকে আমি এখনো রেডিই হতে পারলাম না। রুদ্র’র পেছনে ছুটতে ছুটতেই দিন শেষ হয়ে যায় আমার। এই যে এখনই তো রুদ্র’র পেছন ছুটছি ওকে রেডি করানোর জন্য। কিন্তু ছেলে আমার কোনো কথাই শুনছে না। শেষে হাল ছেড়ে দিয়ে বিছানায় বসে পড়লাম আমি৷ তখনই আদ্র রুমে এলেন। নীল রঙা কোর্ট প্যান্টে দেখতে বেশ ভালোই লাগছে উনাকে। আমাকে এভাবে বসে থাকতে দেখে আদ্র আমাকে রাগানোর জন্য বললেন,
–“এখনো ছেলেকে রেডি করাতে পারলে না? আচ্ছা ওইটুকু একটা বাচ্চা ছেলের সাথে কিভাবে পারো না তুমি বলো তো?”

আদ্র কথায় সত্যি সত্যিই রেগে গেলাম আমি। তেড়ে উনার কাছে গিয়ে রুদ্র’র শার্ট উনার হাতে ধরিয়ে দিয়ে তেজ দেখিয়ে বললাম,
–“পারবো না আমি, আপনার ছেলেকে আপনিই রেডি করান৷ কখন থেকে রেডি করানোর জন্য পেছন পেছন ছুটছি কিন্তু উনি আমার কথা শুনলে তো। যেমন ছেলে তার তেমন বাপ।”

কথাগুলো বলে রেগেমেগে আবারো বিছানায় গিয়ে বসে পড়লাম। আদ্র’র কন্ঠস্বর শুনে রুদ্র ততক্ষণে শান্ত হয়ে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে পড়েছে। আমার কথা শুনে আদ্রও ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রুদ্র পা টিপে টিপে ওর বাবার সামনে গিয়ে বললো,
–“বা্ বা___মা্ ম্মা কি লাগ কলেছে?”

আদ্র মুচকি হেসে ছেলেকে কোলে তুলে নিলো। তারপর ওকে বিছানায় দাঁড় করিয়ে দিয়ে রেডি করাতে লাগলো। বাবা ছেলে দুজনেই আজ নীল রঙা কোর্ট প্যান্টে নিজেকে রাঙিয়েছে। রুদ্র আবারো বললো,
–“মা্ ম্মা কতা বলেনা।”

আদ্র রুদ্র’র দিকে ঝুঁকে গিয়ে বললো,
–“তোমার মাম্মা ভীষণ চটে আছে বাবা। তুমি মাম্মাকে এত দৌড় করাও কেন?”

রুদ্র ঠোঁট উলটে বললো,
–“তুমি মা্ ম্মা কে মেলেছো।”

রুদ্র’র এমন কথায় আদ্র আহাম্মক হয়ে গেলো। আর এদিকে আমি শব্দ করে হেসে দিলাম। আমাকে হাসতে দেখে রুদ্র আমার কাছে এসে আমার গলা জড়িয়ে ধরে বললো,
–“মা্ ম্মা বা্ বা__তোমাকে মেলেছে?”

আমি মুচকি হেসে ছেলের কপালে চুমু খেয়ে বললাম,
–“না বাবা, তোমার বাবা আমায় মারেনি।”

রুদ্র শক্ত ভাবে আমার গলা জড়িয়ে ধরে গালে চুমু দিলো। তা দেখে আদ্র আমার পাশ ঘেঁষে বসে রুদ্রকে কোলে তুলে নিলেন। তারপর বললেন,
–“শুধু কি মাম্মাকেই আদর দিবে? বাবাকে আদর দিবে না?”

আদ্র’র কথায় রুদ্র চট করে আদ্র’র গালে চুমু দিয়ে বললো,
–“এই নাও, তোমালেও আদল কললাম।”

রুদ্র’র এমন কথায় আমি আদ্র দুজনেই হেসে দিলাম। দুজনে দুপাশ থেকে রুদ্রকে জড়িয়ে ধরে একসাথে ওর দুগালে চুমু দিলাম। আদ্র রুদ্রকে কোল থেকে নামিয়ে দিয়ে বললো,
–“নিচে তোমার রুশান ভাইয়া, নিধি আর ইরহা অপেক্ষা করছে তোমার জন্য। নিচে যাও বাবা।”

রুদ্র ওদের তিনজনের নাম শুনেই দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো৷ রুদ্র বেরিয়ে যেতেই আদ্র আমার কাছ ঘেঁষে বসলো। আমি কিছুটা সরে গেলাম। উনি আবারো কাছে এসে বসলেন। এরকমই বেশ ক’বার হচ্ছিলো। লাস্ট টাইম আদ্র আমার কোমড় চেপে ধরে একদম উনার বাহুডোরে নিয়ে এলেন আমাকে। আর ধমকের স্বরে বললেন,
–“সরে যাচ্ছো কেন বারবার?”

ধমক দিয়ে কথা বলায় অভিমান হলো বেশ। গোমড়া মুখে বললাম,
–“তো বারবার কাছে আসছেন কেন আপনি?”

–“আমার বউয়ের কাছে আমি আসবো না তো কে আসবে? শুধু কাছেই না ইচ্ছে হলে আরো অনেক কিছুই করতে পারি।”

আদ্র’র কথায় লজ্জা পেয়ে বললাম,
–“যাহ, শুধু অসভ্য মার্কা কথাবার্তা।”

কথাটা বলে উঠে আসতে নিলেই আদ্র আমার শাড়ির আঁচল ধরে নিলো। আমি পেছন না ফিরেই বললাম,
–“ছাড়ুন রেডি হবো, লেট হচ্ছে তো।”

আদ্র উনার হাতে শাড়ির আঁচল পেঁচাতে পেঁচাতে উঠে আমার পিছনে এসে দাঁড়ালেন৷ পেছন থেকে আমায় জড়িয়ে ধরে ঘাড়ে শব্দ করে চুমু খেলেন। ক্ষানিকটা কেঁপে উঠলাম আমি। উনি দুহাতে আমার পেট জড়িয়ে ধরে বললো,
–“চলো আজ আমি রেডি করিয়ে দেই তোমায়।”

আমি দ্রুত আদ্র’র কাছ থেকে সরে এসে বললাম,
–“পাগল নাকি? আপনি শাড়ি পড়াতে জানেন?”

আদ্র বাঁকা হেসে বললো,
–“কি মনে হয়? তোমার বর সব পারে বুঝলে?”

কথাটা বলে আদ্র আমার কাধে থেকে শাড়ির পিন খুলতে গেলেই আমি দু কদম পিছিয়ে গিয়ে বললাম,
–“কি করছেন কি?”

আদ্র দুষ্টু হেসে বললো,
–“বললাম না আমি রেডি করাবো?”

আমি আরো ক্ষানিকটা পিছিয়ে গিয়ে বললাম,
–“আ্ আমি চে্ চেঞ্জ করে আসছি, আপনি শাড়ি পড়িয়ে দিয়েন।”

কথাটা বলেই ব্লাউজ আর পেটিকোট নিয়ে এক ছুটে ওয়াশরুমে চলে গেলাম। আমার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আদ্র ঘর কাঁপিয়ে হেসে উঠলো৷ ইশ! লোকটা পারেও বটে। আমাকে শুধু শুধু লজ্জা দেয়।

পেটিকোট আর ব্লাউজ পড়ে দাঁড়িয়ে আছি। আজ হুট করেই উনার সামনে এভাবে যেতে ভীষণ রকমের লজ্জা লাগছে৷ বিয়ের চার বছর পরও বরের সামনে যেতে লজ্জা লাগছে, তিন বছরের একটা ছেলেও আছে তবুও লজ্জা কাটছে না। অন্যের কাছে এসব হাস্যকর লাগবে৷ যেখানে বিয়ের চার বছরে বরকে ছাড়া একটা রাতও এদিক সেদিক থাকিনি। সেখানে এখনো কিনা বরের সামনে যেতে লজ্জা লাগছে? এসব ভাবতে ভাবতেই দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ পেলাম। আদ্র দরজায় নক করে বলছে,
–“এই রুহি কতক্ষণ লাগে চেঞ্জ করতে? নিচ থেকে অলরেডি তিন/চার বার ডাক এসেছে। সকল অতিথিরাও চলে এসেছে।”

কাঁপা কাঁপা স্বরে বললাম,
–“এইতো, আ্ আসছি।”

কথাটা বলার কয়েক সেকেন্ড বাদেই কাচুমাচু হয়ে বের হলাম ওয়াশরুম থেকে৷ আদ্র তখন বিছানায় বসে ফোন দেখছিলো। আমি উনার থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে গলা ঝারলাম। উনি চোখ তুলে তাকালেন আমার দিকে। কয়েক সেকেন্ড ওভাবেই তাকিয়ে ছিলেন৷ আমার ডাকে উনার হুশ ফিরতেই উনি ফোন পকেটে পুরে শাড়ি হাতে এগিয়ে এলেন আমার দিকে। উনার কাছে আসাতে আমার হার্টবিট ক্রমশ বেড়েই চলছে৷ আমি নিজেকে সামলে নিয়ে পাথরের ন্যায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে আদ্র আমাকে শাড়িটা পড়িয়েও দিলেন৷ শাড়ির কুচিগুলো গোজার সময় যখন উনার হাত আমার পেট স্পর্শ করছিলো তখন আবেশে চোখ বন্ধ করে নিছিলাম। অদ্ভুত একটা ফিলিংস হচ্ছিলো। শ্বাস দ্রুত নিচ্ছি৷ আদ্র হালকা হেসে আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললো,
–“বউ___”

উনার নেশা জড়ানো কন্ঠে কেঁপে উঠলাম আমি। উনি আবারো ঘোর লাগা কন্ঠে বললেন,
–“তোমাকে দেখলে এখনো সেই প্রথম দিনের মতোই নেশা কাজ করে৷ কি আছে তোমার মাঝে? তোমাকে দেখলেই আমি বেসামাল হয়ে পড়ি কেন বলো তো?”

আমি উনার থেকে সরে আসতে চাইলে আরো গভীর ভাবে জড়িয়ে ধরে বললো,
–“বলছিলাম কি, শোনো না___”

আমি কাঁপা কাঁপা স্বরে বললাম,
–“ব্ বলুন।”

আদ্র বাঁকা হেসে বললো,
–“আমাদের ছেলের আরেকজন পার্টনার দরকার না?”

আমি দ্রুত উনার থেকে সরে ভ্রু কুঁচকে তাকালাম উনার দিকে৷ আদ্র এক ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
–“কি?”

আমি কিছুক্ষণ ভাবুক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
–“পার্টনার মানে?”

–“এই যে আমাদের ছেলেটা সারাদিন একা একা খেলে। রুশান, নিধি, ইরহা ওদের পেলে কত্ত খুশি হয় দেখেছো? আমাদের বাড়িতে তো আর কোনো বাচ্চাও নেই যার সাথে রুদ্র সবসময় খেলবে। সো___”

–“সো?????”

–“সো রুদ্র’র জন্য একটা খেলার সাথী আনতে হবে তো তাই না?”

–“ইরহাকে নিয়ে আসুন, ও খেলবে সবসময় রুদ্র’র সাথে।”

আদ্র আমার দিকে এগোতে এগোতে বললো,
–“ইরহাকে দিয়ে হবে না তো। রুদ্র’র নিজের একটা বোন চাই না? আমার তো চাই আমার প্রিন্সেসকে।”

আমি পেছাতে পেছাতে বললাম,
–“আপনি আমার দিকে আসবেন না৷ দূরে যান বলছি, আপনার মতলম ভালো ঠেকছে না আমার কাছে।”

আদ্র খপ করে আমার হাত ধরে একটানে উনার কাছে নিয়ে এলেন। উনার বুকের সাথে হালকা বাড়ি খেলাম আমি। মাথা তুলে আদ্র’র দিকে তাকাতেই আদ্র আমাকে একহাতে জড়িয়ে নিয়ে মুখে উপচে পড়া চুলগুলো কানের পিঠে গুজে দিয়ে বললো,
–“আমার লিটেল রুহি চাই।”

উনার কথায় থমকালাম আমি৷ লোকটা এই মূহুর্তেও এসব বলতে পারে? আমি উনার থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে বললাম,
–“দেখি ছাড়ুন তো আমায়। নিচে যেতে হবে সবাই ওয়েট করছে তো।”

কথাটা বলে একপ্রকার পালিয়ে গেলাম রুম থেকে। লোকটা দিন দিন ভারী অসভ্য হয়ে যাচ্ছে। আগে তো অসভ্য ছিলোই এখন ছেলে হওয়ার পর অসভ্যের চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।

আদ্র আমি এবং আমাদের ছেলে রুদ্র, তিনজনেই আজ নীল রঙের ড্রেস-আপে আছি। আদ্র’রই চুজ করা। আদ্র নিজে পছন্দ করে উনার আর ছেলের জন্য একই রকম কোর্ট প্যান্ট বানিয়েছেন এবং আমার জন্য নীল রঙের শাড়ি এনেছেন৷ তার ইচ্ছে মতোই সেজেছি আমরা। নিচে নামতেই দেখলাম সকল অতিথি এসে গেছেন। রুশান, নিধি, রুদ্র, ইরহা চারজনেই ছোটাছুটি করছে। এদিকে সেদিক দৌড়াচ্ছে৷ আমার পেছন পেছন আদ্র’ও নেমে এলেন। সর্বশেষ, সবাই মিলে একসাথে কেক কাটা হলো৷ আনন্দ হই হুল্লোড় করা হলো৷ অতিথিরা সকলে খেয়েদেয়ে অনেকে বাসার উদ্দেশ্যে বেড়িয়েও পড়েছেন৷

আমি, তিন্নি, মাইশা তিনজনে মিলে মামনির হাতে হাতে সবকিছু গোছগাছ করছি। কাজ শেষে ড্রয়িংরুমে আসতেই দেখলাম রুদ্র আম্মু, আব্বুর সাথে খেলছে৷ আমাকে দেখে আম্মু এগিয়ে এসে বললো,
–“অনেক রাত হয়েছে, আমরা তাহলে এখন আসছি৷ নানু-ভাইয়ের খেয়াল রাখিস।”

আমি কিছু বলার আগেই আদ্র বললেন,
–“সেকি মামনি? আজ তো ছাড়ছি না আপনাদের। আপনারা এখানেই থাকবেন।”

আম্মু মুচকি হেসে বললো,
–“না বাবা, বাসা পুরো ফাঁকা। অন্যদিন থাকবো।”

আমি আম্মুকে জড়িয়ে ধরে মুখ ভাড় করে বললাম,
–“আম্মু থেকে গেলে হয় না?”

আব্বু এসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন,
–“অন্যসময় আসবো মা, আজ যাচ্ছি আমরা। আমি বেয়াইকে বলে রেখেছি কাল সকাল সকাল তোমরা মাইশা তিন্নি ওদের সকলকে নিয়ে আমাদের ও বাড়ি চলে যেও।”

আমি মুখ গোমড়া করেই সম্মতি জানালাম। মামনি পাপা সকলেই অনেক করে বলছেনে আব্বু আম্মুকে থাকতে, কিন্তু বাসা একদম ফাঁকা বলে আব্বু আম্মুর থাকা হয়ে উঠেনি। আব্বু আম্মুর চলে যাওয়ার সময় রুদ্র’র সেকি কান্না৷ ও সাথে যাবে। শেষে আম্মু জোর করেই রুদ্র’কে সাথে করে নিয়ে যায়৷ আমি বা আদ্র কেউ-ই যেতে দিতে চাইছিলাম না। রুদ্রকে ছাড়া একদমই ঘুম হয় না আমাদের। কিন্তু ওর কান্নার কাছে হার মেনে অবশেষে রাজি হই। ছেলেটাও হয়েছে একদম বাবার মতো৷ রাগ জেদ এটিটিউড সব বাবার মতো পেয়েছে।

মাইশা তিন্নির সাথে বেশ কিছু সময় আড্ডা দিয়ে বারোটা নাগাদ রুমে এলাম। দেখলাম আদ্র ল্যাপটপে কিছু একটা করছে৷ আমি দরজা আটকে দিয়ে ঘুমানোর জন্য বিছানা ঠিক করছিলাম। আদ্র ল্যাপটপে মনোযোগ দিয়েই বললেন,
–“এতক্ষণে ম্যাডামের আসার সময় হলো? আমি তো অপেক্ষা করতে করতে বুড়ো হয়ে যাচ্ছিলাম।”

আদ্র’র কথায় ক্ষানিকটা হাসলাম আমি। তারপর উনাকে রাগানোর জন্য বললাম,
–“তো আপনি কি নিজেকে যুবক মনে করছেন?”

কথাটা বলে পেছন ফিরতেই আদ্র’র বুকের সাথে বাড়ি খেলাম। লোকটা কখন যে পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে টেরই পায়নি৷ আদ্র আমার কোমড় জড়িয়ে ধরে বললো,
–“আমি বুড়ো?”

আমি অবাক হয়ে বললাম,
–“তা নয়তো কি? এক বাচ্চার বাপ হয়ে গেছেন। আর ঊনত্রিশ বছরের বুড়ো আপনি সেটা ভুলে যাবেন না।”

–“আমি বুড়ো হলে তো তুমিও বুড়ি, কারন তুমিও এক বাচ্চার মা।”

–“এহহহ! একদম না, আমি গুনে গুনে আপনার থেকে আট বছরের ছোট।”

আদ্র আমাকে আরো কাছে টেনে নিলেন। তারপর বললেন,
–“আচ্ছা শোনো না___”

আমি নিজেকে উনার থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম,
–“একদম উ/ল্ট/পা/ল্টা কথা বলবেন না আপনি। ঘুমাবো এখন। প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে।”

কথাটা বলে লাইট অফ করে ড্রিম লাইট জ্বালিয়ে দিলাম। আদ্র আমার পেছন পেছন এসে বললো,
–“ঘুম তো আমারো পাচ্ছে বউ। কিন্তু ঘুমানোর আগে লিটেল রুহিকে আনার প্রসেসিং শুরু করলে ভালো হয় না?”

আমি উনার দিকে চোখ পাকিয়ে বললাম,
–“বলেছি না একদম উ/ল্টা/পা/ল্টা কথা___”

আদ্র আমাকে পুরো কথা বলার সুযোগ না দিয়েই কোলে তুলে নিয়ে বিছানার দিকে এগোচ্ছে। আমি ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করে বলছি,
–“আহ! এই রাতদুপুরে কি শুরু করলেন আপনি?”

আদ্র আমার কানের লতিতে কামড় দিয়ে ফিসফিস করে বললো,
–“হাসবেন্ড ওয়াইফ এক ঘরে থাকলে রাত দুপুরে যা করে তাই।”

আমি উনার বুকে মুখ লুকিয়ে বললাম,
–“এক ছেলের বাবা হয়েছেন এখনো অসভ্যতামি ছাড়লেন না।”

–“তুমিও তো এক ছেলের মা হয়েছো, কই তোমার লজ্জা তো কমেনি এখনো।”

আমি আবার মাথা তুলে উনাকে কিছু বলার আগেই উনি আমায় বিছানায় শুইয়ে দিলেন।
–“আপনিইইইই____”

আমাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই আমার উপর সম্পূর্ণ ভর ছেড় দিয়ে উনার ঠোঁট দিয়ে আমার ঠোঁট নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিলেন। উনার এরকম আচমকা হামলে পড়াতে প্রথমে ভড়কে গেলেও পরমূহুর্তেই নিজেকে সামলে নিলাম। বেশ কিছুক্ষণ পর আদ্র আমার ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে পাশে শুয়ে পড়লেন। দুজনেই হাঁপাচ্ছি। কামড়ে কামড়ে বেহাল দশা বানিয়ে ফেলেছেন ঠোঁটের। তা ঠোঁট জ্বালাপোড়া করাতে বেশ বুঝতে পারছি। লোকটা না আস্ত একটা পাগল। আমার সান্নিধ্যে এলে আর নিজের মধ্যে থাকে না। আদ্র আমাকে উনার বুকে নিয়ে বললেন,
–“আল্লাহ কি দিয়ে বানিয়েছেন তোমায়? তোমাকে দেখলে আমার এত্ত নেশা নেশা লাগে কেন রুহি? তোমার স্পর্শ না পেলে পাগল হয়ে যাই আমি। কি আছে তোমার স্পর্শে? তোমার স্পর্শ আমাকে এত সুখ এনে দেয় কিভাবে?”

নিঃশ্বাস ঘন হয়ে আসছে আমার। কাঁপা কাঁপা স্বরে বললাম,
–“আপনি আমায় ভালোবাসেন যে, তাই এমন হয়।”

আদ্র আমার কপালে শব্দ করে চুমু খেয়ে বললো,
–“আ’ম #অ্যাডিক্টেড_টু_ইউ রুহি। তোমার নেশাতে এভাবেই সারাজীবন আসক্ত থাকতে চাই আমি।”

আমি চুপ করে উনার কথাগুলো ফিল করছিলাম। লোকটা আসলেই অসম্ভব পাগল আমার জন্য৷ প্রচন্ড ভালোবাসেন আমাকে। আমিও যে ভীষণ রকমের ভালোবাসি। উনাকে ছাড়া যে এখন নিজেকে কল্পনাও করতে পারি না আমি। আদ্র আমার ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে বললো,
–“ভালোবাসি বউ। ভীষণ ভীষণ রকমের ভালোবাসি।”

আদ্র’র স্পর্শে আবেশে চোখ বন্ধ করে নিলাম আমি। আদ্র’র চুল খামচে ধরে আমার গলায় আরো গভীর ভাবে উনার মাথা চেপে ধরে বললাম,
–“আমিও ভালোবাসি আপনাকে। হয়তোবা আপনার মতো না, তবুও অনেকটা ভালোবাসি।”

আমি কথাগুলো বলতেই আদ্র আমাকে নিচে শুইয়ে দিয়ে আমার উপর উঠে গেলো৷ পাগলের মতো সারামুখে ঘাড়ে গলায় চুমু খেয়ে যাচ্ছে। অতঃপর ডুব দিলো এক অতল ভালোবাসার রাজ্যে। সারা ঘরময় এখন দুজন ভালোবাসার মানুষের আঁচড়ে পড়া নিঃশ্বাসের শব্দ আর সেই সাথে কিছু যন্ত্রণাময় সুখের কাতর গোঙানির কন্ঠস্বর ছাড়া আর কিছুই শোনা যাচ্ছে না।

|সমাপ্ত|