আকাশে তারার মেলা ২ পর্ব-৩২+৩৩

0
651

#আকাশে_তারার_মেলা_২
#লেখিকাঃআসরিফা_সুলতানা_জেবা
#পর্ব_৩২

অন্তু পড়ে আছে ক্ষেতের কাঁদা মাটিতে চিৎ হয়ে। তার বুকে মুখ থুবড়ে জড়োসড়ো ভাবে পড়ে আছে পায়েল। রাগে ধপধপ করছে পায়েলের চক্ষুযুগল। অন্তু কে খুন করার জন্য রক্ত টগবগ করছে। ক্রোধের অনলে অন্তুকে ভস্ম করতে পারলেই কলিজা ঠান্ডা হবে তার। অন্তু পায়েলের কোমর শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ড্যাবড্যাব চোখে চেয়ে আছে রাগান্বিত চেহারায়। কেন যে আজ পায়েলের ক্রোধ তার মনে ভয় জাগাচ্ছে না। বরং কোমর টা আরেকটু শক্ত করে বুকে মিশিয়ে নিতে ইচ্ছে করছে। কোমরে হাতের হালকা চাপ পড়তে না পড়তেই আগুনে ঘি ঢালার মতো জ্বলে উঠল পায়েল। চিল্লিয়ে ঝাঁঝরা করে দিল অন্তুর কান।

” অন্তুর বাচ্চা সন্তু!তোর সাহস কি করে হলো আমাকে নিয়ে পড়ার?কতবার বলেছি দিব না তোর কাছে জুতা। তবুও কাড়াকাড়ি শুরু করলি। আমাকে নিয়ে ক্ষেতে পড়লি। জুতার জন্য আমাকে নিয়ে পড়লি তো!দাঁড়া ওই জুতা দিয়েই আজ তোর পিঠের ছাল তুলব আমি।”

” তোর গেজ দাঁত টা আমাকে ভীষণ টানছে রে পায়েল। ইশ!আমার গজদন্তিনী।”

অন্তুর কথায় পায়েল চোখ বড় বড় করে তাকালো। সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করল পায়েলের তীক্ষ্ণ বানী কে। স্বর নিচু হলেও অতি নিকটে থাকায় হুর হুর করে কথাটা কানে ঢুকে গেল পায়েলের। অন্তুর দিকে দৃষ্টি রাখতে পারছে না একদম। ভিতরটা হাহাকার করছে। শার্টের কলার আঁকড়ে ধরল শক্ত করে। অন্তুর ঘোর কাটল পায়েলের হাতের চাপে। বুকের ব্যাথায় মৃদু আর্তনাদ বেরিয়ে এল কন্ঠনালি হতে। বেশ জোরেই অন্তুর বুকে হাতের চাপ দিয়ে উঠে দাড়িয়েছে পায়েল। আদ্র দৌড়ে এসে কাঁদা মাটিতে নেমে অন্তু কে উঠালো। বেচারা যেন এক ঘোরের মাঝে ডুবে গেছে আবারও। সাগর হাসতে হাসতে বললো,

” কি রে অন্তু কাঁদা মাটি কি এতোই পছন্দ একদম লেপ্টে গিয়েছিলি?তোর পিছনে তো ইয়া বড় সিল পড়েছে। ”

সবাই তাকিয়ে দেখল অন্তুর পিছনটা কাঁদায় মাখামাখি। মুখ টিপে হেসে উঠল সকলে। তুলি কিছুটা দূরে জমিতে পানি দেওয়ার মেশিন দেখিয়ে বললো,

” ওই তো পানি আছে। ওইখানে ধুয়ে নিন ভাইয়া। ”

” ধুলে কি আর চলবে। গোসল দিতে হবে। কি আর করবো আপাতত ভিজা শরীরেই ঘুরতে হবে। আজকাল উপকারের বিপরীত শাস্তি। কতো কষ্ট করে বুকে আগলে রেখে কাঁদা থেকে বাঁচালাম অথচ উল্টো রাগ দেখানো হচ্ছে আমাকে। আগেই জানতাম ভালো মানুষের কোনো দাম নেই। অন্তু রে ভালো হয়ে বিরাট ভুল করলি।”

অন্তুর আফসোসের স্বরের কথা শুনে পায়েল চোখ পাকিয়ে তাকালে। বাকি সবাই হেসে কুটিকুটি। আদ্র কপাল কুঁচকে বিরক্তিকর স্বরে বলে উঠল,

” তোরা দুটো একসাথে থেকে আজীবন একটা একটা করে দু’জনের চুল ছিঁড়লেই তো পারিস। যেখানেই যাস দু’জনে লেগে পড়িস। মেডিক্যাল ক্যাম্প, ট্যুর, অনুষ্ঠান, কলেজ মুখোমুখি হলেই তোরা সাপে-নেউলে পরিণত হতে দেরি হয় না। শেষ পর্যন্ত আমার শশুর বাড়ির,নানার বাড়ির পথ-ঘাট, ক্ষেত কেও ছাড় দিলি না।”

পায়েল নাক ফুলিয়ে জুতা হাতে নিয়ে পানির দিকে আসল। অন্তুও আসল পিছু পিছু। শাড়ি আঁকড়ে ধরে পা ধুয়ে, জুতো গুলো ধুয়ে নিল। অন্তু কে ইশারা করে বলে শার্ট খুলে দিতে। চোখ কোটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম অন্তুর। পায়েলের এতো শান্ত স্বভাব সুবিধার ঠেকছে না তার কাছে। তবুও ভয়ে ভয়ে শার্ট টা খুলে পায়েলের হাতে দিল। শরীরে একটা কালো গেঞ্জি আছে যা কাঁদায় তত একটা ময়লা হয় নি। শার্ট টা পানিতে ধুয়ে ভালো করে চিপে নিল পায়েল, যেন পানি না থাকে। বিস্মিত ভঙ্গিতে ঠাঁই দাড়িয়ে থাকা অন্তুর হাতে শার্ট টা ধরিয়ে বললো,

” একটু হাতে নিয়ে রাখ তারপর পড়ে নিস।”

সবসময় রণমুর্তির রূপ ধারণ করে রাখা পায়েলের কেয়ারিং বিহেভিয়ার অন্তুর মনের ভয় বাড়িয়ে দিচ্ছে। শুকনো গলায় বলে উঠল,

” জুতা পেটা করবি না?”

” খেতে চাইলে অবশ্যই করব। খেতে চাস বুঝি?”

ভ্রুঁ উঁচিয়ে প্রশ্ন করলো পায়েল। অন্তু এক মিনিট ও স্থির থাকলো না। দৌড়ে যেতে যেতে বললো,

” তোর জুতো তোর পায়ে থাকুক। ”

এটুকু বলে আবারও থামল। পিছন ফিরে দৌড়ে আসল পায়েলের কাছে। জুতো জোড়া হাতে নিয়ে পূর্ণ দৃষ্টি মেলে বললো,

” অভিক না আসা অব্দি জুতা জোড়ার দায়িত্ব আমার।”

নির্নিমেষ দৃষ্টি পায়েলের। হৃদয় ভেদ করে কিছু একটা ছিন্নভিন্ন করে গায়েব হয়ে গেল। কি কষ্ট এই রক্তাক্ত হৃদয়ের,চাইলেও যে কাউকে দেখানো অসম্ভব!
____________

খোলা একটা বিস্তৃত মাঠ। ঘাসের উপর দিয়ে খালি পায়ে হাঁটতে বেশ লাগছে সবার। সামান্য দূরে তেঁতুল গাছ টা তার অমায়িক সৌন্দর্য নিয়ে গম্ভীর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার সৌন্দর্যের কারণ পাতার মতো ঝুলে থাকা তেঁতুল। তুলি ভালো করে তাকিয়ে বুঝল অন্যবারের তুলনায় তেঁতুল এবার বেশিই এসেছে। কেমন করে লোভাতুর দৃষ্টি নিক্ষেপ করে কাছে ডাকছে তুলি কে। তেঁতুলের লোভে সম্মোহনের ন্যায় গাছের তলায় এসে দাঁড়াল তুলি।
মনের কল্পনায় ভেসে উঠল ভয়াবহ এক স্মৃতি।

স্কুলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নৃত্য দিয়েছে তুলি। আকাশের সাদা মেঘের ভেলা সরে গিয়েছে খানিকক্ষণ আগে। চারদিকে রক্তিম আভার ছড়াছড়ি। আকাশের নীল সৌন্দর্য কে গিলে নিয়েছে লালচে রক্তিম রঙ। দেরি না করে শাড়ি পড়া অবস্থায় তুলি কাঁচা রাস্তা ধরে বাড়ির দিকে এগিয়ে আসতে লাগল কিশোরী সঙ্গী মর্মিতা কে নিয়ে। দু বান্ধবী একসাথে নৃত্য দিয়েছিল। টুকটুকে লাল শাড়ি টা দু’জনের রূপের ঝলক বাড়িয়ে দিয়েছে। তেঁতুল তলায় আসতেই ধুক করে উঠল তুলির বুকটা। আহান ভাই বার বার বলেছিল অনুষ্ঠান শেষে যেন,ইংরেজি ম্যাডামের মোবাইল দিয়ে তাকে একটা কল দেওয়া হয়,সে এসে নিয়ে যাবে। কিন্তু তুলি আহানের আদেশ টা কে হাওয়ায় উড়িয়ে দিল। তেঁতুল তলায় ভর সন্ধ্যায় মেম্বারের নেশাখোর ছেলেকে দেখে ভয়ে অন্তর আত্মা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল। পা গুলো লোহার মতো ভারী হয়ে এলো। একেকটা কদম ফেলতেও খুব কষ্ট হচ্ছিল। এই বুঝি পথ আঁটকে বসল বদমাইশ ছেলে টা। এর আগেও দু’ দুইবার পথ আঁটকে তুলি কে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছে এই ছেলে। বলেছে রাজি নাহলে তুলে নিয়ে গিয়ে বিছানার সঙ্গী বানাবে। ছোট্ট অবুঝ তুলি দু’দিন ভয়ে স্কুলে যায় নি। কাউকে বলতেও পারে নি লজ্জা-সংকোচে। ছেলেটা পিছনের ছেলে দুটোর দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসল। দ্রুতগামী তুলির দিকে দৌড়ে এসে পথ আটকালো। অভিশঙ্কায় ছিটকে মাটিতে পড়ল তুলি। ভয়টা গ্রাস করে নিল ভয়ংকর ভাবে। মর্মিতা তুলি কে টেনে তুলে গলা উঠিয়ে বললো,

” পথ আটকাইলেন কিরে তৌহিদ ভাই। আমাদের যাইতে দেন। নাইলে কিন্তু খুব খারাপ হইবো।”

দুর্বোধ্য হাসলো তৌহিদ। ঠোঁট কামড়ে বললো,

” তুই যা মর্মিতা। আমার তো শুধু তুলি রে দরকার। যা তুই। ”

মর্মিতা তেতে উঠলো। বিক্ষিপ্ত স্বরে জানালো,

” আমি যামু না। তুলি রে ফালাইয়া যামু না। আপনে আমরার পথ ছাড়েন।”

“ছাড়মু না।”

বলেই তৌহিদ তুলির শাড়ির আঁচল ধরে টান দিল। নিমিষেই কোমড়ের বিছা ঝড় ঝড় করে মাটিতে ছড়িয়ে পড়ল। হাউমাউ করে কেঁদে উঠল তুলি। তৌহিদের থেকে ছিটকে গিয়ে দু হাত জোর করে বললো,

” আমারে যাইতে দেন তৌহিদ ভাই। আমার সর্বনাশ কইরেন না।”

” তোরে কেমনে যাইতে দেই আজ ক তো তুলি। তোর খালাতো ভাইডার নামি জানি কিতা?”

পাশের ছেলেটা হেসে বললো ” ভাই আহান।”

” হু আহান। হেতে আমারে মারার হুমকি দিছে। তোর দিকে চাইলেও বলে পরিমাণ বহুত খারাপ হইবো। আমি আজ দেখতাম চাই পরিণাম ডা তোর ইজ্জত হরণ কইরা।”

পিলে চমকে উঠল তুলির। মর্মিতার হাত টা আঁকড়ে ধরতেই বুঝলো মর্মিতাও কাঁপছে। তৌহিদ মর্মিতা কে সরিয়ে পুর্নবার তুলির শাড়ির আঁচল ধরতে নিলেই বুকে লাথির চোটে মাটিতে গা এলিয়ে পড়ল। প্রকান্ড জোরে কেঁপে উঠল তুলি, মর্মিতা উভয়েই। দিক বিদিক ভুলে কোনো দিকে দেখার প্রয়োজন অনুভব না করেই মর্মিতার হাত ধরে ছুটে এলো বাড়িতে। মায়ের বুকে হামলে পড়ে ডুকরে কেঁদে উঠল। কাঁপতে কাঁপতে এক সময় জ্ঞান হারালো। মনের দিক থেকে খুব দুর্বল মেয়েটা। অল্পতেই ভেঙে পড়ার স্বভাব তার। মর্মিতা কাঁপা কাঁপা কন্ঠে সবটা খুলে বললো আফসানা কে। তুলি যখন চোখ মেলল সামনে আমরিন,ইনশিতার চেহারা দেখতে পেল। ওদের কে দেখে খুশিতে জড়িয়ে ধরল। ইনশিতা দের ও তুলির নানুর বাড়ি তুলিদের বাড়ি থেকে দশ মিনিটের পথ। বেড়াতে আসলেই তুলি কে দেখে যায় ওরা। সেদিনের ভয়াবহ কান্ডের পর তুলি রুম থেকেই বের হয় নি কয়েকদিন। সায়েরা বেগম যাওয়ার দিন তুলির সাথে দেখা করতে এলো।

” আমার ছেলেটা এসেছে তুলি। জানিসই তো ও কখনও আসে না নানার বাড়িতে। বছর দুয়েক আগে এসেছিল তখনও তোর সাথে দেখা হলো না। আর এইবার এসেই লঙ্কাকান্ড বাঁধিয়েছে ছেলেটা। মেম্বারের ছেলে কে মেরে হসপিটালে পাঠালো। না জানি কি করেছে তৌহিদ! আদ্রর রাগ হলে ওকে সামলানোর সাহস কারোই নেই। ”

বিচলিত দৃষ্টি ফেলল তুলি। ঠাওর করে নিল ওই দিন তৌহিদের হাত থেকে বাঁচানো মানুষ টা তার সায়েরা খালা মণির ছেলে আদ্র। গতকাল মর্মিতা এসেও জানিয়েছিল আদ্র নামের এক ছেলে নাকি ওইদিন ওদের বাঁচিয়েছে। সেই সাথে মর্মিতা খুব করে প্রশংসাও করল আদ্রর। তুলির খুব ইচ্ছে হলো এক পলক মানুষ টা কে দেখার। দেখার জন্য প্রায় মরিয়া হয়ে উঠল। সায়েরা বেগম বিদায় জানিয়ে বেরিয়ে আসতেই পিছু পিছু এলো তুলি হন্তদন্ত হয়ে। কিন্তু কোথাও মেলল না সেই মানুষ টার দেখা। মায়ের কাছে শুনলো আদ্র নিজের গাড়ি করে হসপিটালে ইমারজেন্সি থাকায় আগে আগে চলে গেছে। এক বুক হতাশা নিয়ে রুমে এলো তুলি। চেয়ার টেনে বসে চোখ স্থির করলো বইয়ের উপরে পড়ে থাকা ভাজ করা সাদা কাগজ টার দিকে। কিঞ্চিৎ কুঁচকে এলো ভ্রুঁ। হৃদয়পটে বাসা বাঁধা ভয়ের কারণে হুঁশ যেন থেকেও ছিল না এই কটা দিন। কোথা থেকে আসল এই কাগজ জানা নেই তুলির। উৎসুক মন নিয়ে পড়া শুরু করল,

” বেক্কল!”

প্রথমেই বেক্কল শব্দটা চোখে বিঁধতেই থতমত খেয়ে গেল তুলি।

” এই মেয়ে এতো বেক্কল আর ভীতু কেন তুৃমি?ভয়ে নিজেকে বন্দি করে নিলে?দেখতে এসেছিলাম তোমাকে। এসেই দেখলাম গভীর নিদ্রায় বিভোর তুমি। চোখের কার্নিশে জল বিন্দুর ছাপ ছিল স্পষ্ট । বুঝতে পারলাম আমার সহ্য হচ্ছে না। সহ্য হচ্ছে না তোমার নোনতা অশ্রু দানা। তাই নিজের ঠোঁটের স্পর্শে শুষে নিয়েছি চক্ষুজল।”

বিস্মিত, নির্জীব ছিল তুলি কয়েক পল। হুট করেই তুলির মনে হলো লেখার মালিক তার আপনজন। অতি আপনজন।

আকস্মিক কোমরে চিমটি পেয়ে ব্যাথায় কুঁকড়ে গেল তুলি। ছিঁড়ে গেল ভাবনার জাল। হাত দিয়ে মালিশ করতে করতে পাশ ফিরে তাকালো ব্যাথাতুর দৃষ্টি নিক্ষেপ করে। আদ্রর ঠোঁটের কোণে প্রস্ফুটিত হাসি। নীলাভ চোখ দুটোর দৃষ্টি প্রখর। সবার অগোচরে তুলির হাত টা সরিয়ে নিজেই কোমরে হাতের মালিশ করে দিল,শান্ত দৃষ্টিতে জিজ্ঞেস করলো,

“ব্যাথা পেয়েছো বউ?”

একরাশ বিস্ময় দেখা দিল তুলির আখিদ্বয়ে। এ কেমন ডাক্তার! ব্যাথা দিয়ে বলছে ব্যাথা পেয়েছে কিনা!অস্ফুটস্বরে বেরিয়ে এলো,

” হু।”

” এভাবে হাত উঁচিয়ে কি ভাবছিলে?তোমার উম্মুক্ত কোমরে আমার হাত রেখে জড়িয়ে ধরার লোভ সামলাতে পারছিলাম না আমি। ”

তুলির এতোক্ষণে খেয়াল হলো। চারপাশে তাকিয়ে দেখল সবাই সবার মতো মগ্ন। তেঁতুলের ঢাল ধরে এতো সময় অব্দি স্মৃতি চারণে ডুবে ছিল। আদ্র সেদিন ঠিকি বলেছিল,” বেক্কলই আমি।”

আদ্র শাড়ি টা একটু তুলে কোমর ঢেকে দিল। লজ্জায় স্তম্ভিত হয়ে পড়ল তুলি। শার্টের হাতা ফ্লোড করে তেঁতুলের ঢাল টেনে অনেকগুলো তেঁতুল পেরে ধরিয়ে দিল তুলির হাতে। ঢাল গুলো নিচের দিকে ঝুলে থাকায় খুব একটা কষ্ট করতে হয় নি। হাত ঝেড়ে তুলির পাশে দাড়িয়ে ফিচেল স্বরে বললো,

” আমার নিজেকে নিয়ে খুব গর্ব হচ্ছে তুলা।”

তুলির কপালে ভাজ পড়ল। চোখে আটকালো আদ্রর ম্লান হাসি। ছোট্ট করে প্রশ্ন করল,

” কেন?”

” এই যে ফুলশয্যার তিন দিন অতিবাহিত হতে না হতেই তেঁতুল খাওয়া শুরু করে দিলে তুৃমি।”

তুলির চোখ বড়সড় হয়ে এলো নিমেষ। বক্ষস্থল কেঁপে উঠল নিদারুণভাবে। লজ্জার আভা ছড়িয়ে গেল শ্যাম বরণ মুখশ্রী তে। আদ্র দূরত্ব কমালো। সেই সাথে বাড়ালো হৃদস্পন্দনের অস্বাভাবিক উঠানামা। চতুর্দিকে দৃষ্টি বুলিয়ে চট করে অধর ছুয়ে দিল তুলির লজ্জা মাখা কপোলে। পাকা তেঁতুলের খোসা ছাড়িয়ে দিতে দিতে বললো,

” সমস্যা নেই তুলা। বেশি বেশি তেঁতুল খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিব আমি।”

দখিনা বাতাসে নড়ে উঠলো হালকা। শ্রবণগ্রন্থি গরম হয়ে এসেছে আদ্রর রসাত্মক বাক্যে। তুলির মনে হচ্ছে এইবার জ্ঞান হারাবে। ইশ!একটু যদি সুযোগ হতো তবে তুলি আদ্রর বুকে মুখ টা লুকিয়ে ফেলত। এটাই তো তুলির রক্তিম মুখশ্রী লুকানোর একমাত্র স্থান!লজ্জা নিবারণের শেষ আশ্রয়।

#চলবে,,,,

(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)

#আকাশে_তারার_মেলা_২
#লেখিকাঃআসরিফা_সুলতানা_জেবা
#পর্ব_৩৩

উষ্ণতা বোধহয় প্রেমময় চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে প্রকৃতির সাথে। প্রকৃতির উপর দিনকে দিন তার প্রেমের গভীরতা বাড়িয়ে চলছে তো চলছেই,সামান্য একটু নিজের তেজী প্রেম কমানোর নাম পর্যন্ত নিচ্ছে না। হায় এ কেমন বেহায়া উত্তাপ!ঠিক যেন তুলির ডাক্তার সাহেবের মতো। সময়ের সাথে গম্ভীরতার খোলস ভেঙে নিজেকে আবৃত করে নিয়েছে বেপরোয়া খোলসে। গোসল সেড়ে এসে কোমরে শাড়ির আঁচল গুঁজে নিল তুলি। জানালার পর্দা গুলো সরিয়ে অংশুমালী কে ঘরে আসার সুযোগ করে দিল। তুলির দয়ায় আনন্দিত হয়ে সূর্য প্রথম কিরণ টা শ্যামবতীর বদনে আলিঙ্গন করে ছুঁয়ে দিতে লাগল পরম যত্নে। কিন্তু শ্যামবতীর ডাক্তার সাহেবের তা একটুও পছন্দ হয় নি। একটুখানিও না।

উন্মুক্ত কোমরে ঠান্ডা হাতের স্পর্শে উত্তাল ঢেউ গর্জে উঠলো তুলির হৃদপিণ্ডের প্রতি অংশে। মৃদু কাঁপন ধরলো দেহের সর্বাঙ্গ জুড়ে। ভেজা চুল গুলো একপাশে সরিয়ে ঠোঁটের পরশ বুলিয়ে দিচ্ছে অনবরত আদ্র। পেটে হাতের চাপ প্রগাঢ় হতেই তুলির বুকের উচাটন বেড়ে গেল। তরঙ্গের ন্যায় শিহরণ খেলে গেল সারা কায়ায়,অভ্যন্তরস্থানে। আদ্রর হাতের বাঁধন শীতল হওয়া মাত্র ঝটপট পিছন ফিরল। চোখের পাতায় ভেসে উঠল আদ্রর অর্ধ নগ্ন দেহ। সদ্য স্নান সেরে এসেছে আদ্র। শরীরে শুধু টাওয়াল জড়ানো। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাওয়ার উপক্রম তুলির। বিয়ের এতগুলো মাস পার হয়েছে। পার হয়ে গেছে এক বসন্ত। তবুও তুলির কাছে আজও অসম্ভব হয়ে উঠেছে আদ্র এহেন রূপ দেখা। যখনই ভুলবশত নেত্রযুগলে ধরা পরে যায় আদ্রর অর্ধ উম্মুক্ত ফর্সা বলিষ্ঠ দেহ তখনই এক আকাশসম লজ্জা তুলি কে ঘিরে,আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নেয় তীব্রভাবে। তুলির ভাবতেই কাঁপুনি ছুটে যায় এই সুদর্শন পুরুষের ছোঁয়ার বিচরণ তার দেহ জুড়ে। চুল টা ভালো করে ঝেড়ে রুম থেকে বের হওয়ার জন্য অগ্রবর্তী হতেই আদ্রর শক্তপোক্ত হাতের বাঁধনে বাঁধা পড়ল। মুহুর্তেই জমে গেল পুরো দেহ।

নিজের সাথে জড়িয়ে নিয়ে আদ্র অন্য হাত মেলে ধরল তুলির দিকে। হাতের মুঠোয় জিনিস টা দেখে তুলির হুঁশ উড়ে গেল। ভয়ে ধুকপুক শুরু হয়ে গেল বুকের। আদ্রর চোখের মণি লাল হয়ে উঠেছে ইতিমধ্যে। দাঁতে দাঁত চেপে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল তুলির দিকে।

” হোয়াট ইজ দিস তুলা?লুকোচুরি, ফাঁকিবাজি শুরু করেছো আমার সাথে?তোমাকে কতোবার বলতে হবে বেবী এখন নিব না আমরা। তুমি এখনও পারফেক্ট না মা হওয়ার জন্য। আর মাস খানেক পরেই তো তোমার ফাইনাল এক্সাম। একটু সবুর করো,ধৈর্য ধরো। কেন আমার কথা অমান্য করছো তুৃমি?তুমি না বোকা ছিলে?এতো চালাক হলে কিভাবে?কে শিখিয়েছে আমার কথা অমান্য করা? টেল মি।”

তুলি কাঁপা কাঁপা হস্তে হাতে দলা মোচড়ানো ছোট্ট কাগজ টা নিয়ে নিল আদ্রর হাত থেকে। মেলে দেখল লিখা টা ঠিকঠাক লিখেছিল কিনা!” আপনি কি বাবা হতে চান ডাক্তার সাহেব?” হ্যাঁ একদম সঠিক লিখেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ভোর বেলা তুলি এই এক বাক্য ছোট্ট কাগজে লিখে ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় আটকে রাখে। মুখে বলতে খুব সংকোচ তার। লজ্জায় ভারি হয়ে যায় মনটা তৎক্ষনাৎ। অতঃপর চেয়েও অসম্পূর্ণ থেকে যায় মুখের বুলি। তাই তো কাগজে মনের কথা, ইচ্ছা জানানোর উপায়,মাধ্যমের উৎপত্তি ঘটিয়েছে ইদানীং। কাগজ টা আদ্রর হাতে আবারও গুঁজে দিয়ে মায়াময় দৃষ্টি নিক্ষেপ করল তুলি। নিমিষেই নিভে গেল আদ্রর রোষপূর্ণ অগ্নিময় চাহনি। তুলি কে টেনে এনে বিছানায় বসালো। নিজে বসে পড়ল তুলির সামনে হাঁটু মুড়ে। শাড়ি সরিয়ে পেটে চুমু খেল গভীরভাবে। ঘন ঘন নিঃশ্বাস ছেড়ে আদ্রর চুল খামচে ধরল তুলি। আদ্র তুলির পেটের দিকে চোখ জোড়া নিবদ্ধ করে, ম্লান হেসে বলে উঠল,

” তুমি চাও তোমার এই ছোট,কোমল পেটে আমাদের প্রণয়ের ফলস্বরূপ একটা কোমলপ্রাণ বেড়ে উঠুক?”

আদ্রের দৈবাৎ প্রশ্নে তুলি হকচকালো। ক্ষীণ লজ্জা অনুভব করল। তৎপরে আলগোছে সরিয়ে আনল হাত। গাল গুলো কেমন উত্তাপে গরম হয়ে এসেছে। এমন অস্বস্তি কেন হচ্ছে আমার?আমি নিজেই তো চাইছি ডাক্তার সাহেবের ভালোবাসা অস্তিত্ব রূপে আমার গর্ভে আসুক। মনে মনে আওড়াল তুলি। ডাগরডাগর আখিঁ পল্লব সরিয়ে মাথা নেড়ে সায় জানালো। ঠোঁটে লজ্জালু রেখা স্পষ্ট প্রতীয়মান। ক্লান্ত নিঃশ্বাস ছাড়ল আদ্র। তুলির হাত নিজের দু’হাতের ভাঁজে নিয়ে ঠোঁট ছোঁয়াল। কন্ঠে গম্ভীরতা এঁটে বললো,

” আমার চোখের দিকে তাকাও তুলা।”

অমান্য করল না তুলি আদ্রের আদেশ সূচক বাক্য। বুকে উঠা তোলপাড় সংযত করে চক্ষু স্থির করল আদ্রর নীল চোখের মণিতে। অন্যরকম কম্পন অনুভত হয় তুলির এই চোখ জোড়ায় চোখ রাখলে। দৃষ্টিতে প্রখর মাদকতা ভরপুর,সেই সাথে ফুটে আছে একরাশ মুগ্ধতা। ঘোর লেগে এলো তুলির। আদ্র অত্যন্ত শান্ত স্বরে প্রশ্ন করল,

” কি দেখতে পাচ্ছো?”

” ভালোবাসা। ”

ঘোর লাগা কন্ঠেই বিনা সময় বিলম্বে তুলির দ্রুত প্রতুত্তর। জবাব দিয়ে সে নিজেই বিস্মিত। ঠোঁটে ছড়িয়ে হাসল আদ্র। তুলির দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করল,

” ইয়েস ভালোবাসা। শুধু ভালোবাসা নয়,তুমি আমার অস্তিত্ব। আমার তুলার গর্ভে আমার অন্য এক ভালোবাসার আগমন ঘটবে এটা আমার জন্য জীবনের সব থেকে বড় পাওয়া হবে। সত্যি খুব বড় পাওয়া হবে। কিন্তু তার জন্য যে আমি আমার তুলা কে কষ্ট দিতে পারব না । জেনেশুনে তার জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারব না। আমি পায়েলের সাথে কথা বলেছি তুলা। মনে নেই গত মাসে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলে তুমি?পায়েল তখন জানিয়েছে তোমার শরীর খুব দুর্বল। এখন বাচ্চা নিলে তোমার জন্য রিস্ক। তাই পরীক্ষা অব্দি খেয়ে দেয়ে নিজেকে শক্তিশালী প্রমাণ করো,আমি বিনা দ্বিধায় মেনে নিব। জাস্ট এটাই মনে রেখো তোমার নিঃশ্বাসের উপর ভিত্তি করে তোমার ডাক্তার সাহেবের প্রাণ টিকে আছে। জীবনে কোনো এক মহৎ কর্মের উপহারসরূপ হয়তো মহান আল্লাহ তায়া’লা তোমাকে আমার জীবনে পাঠিয়েছেন। আমি বহু বছর বাঁচতে চাই। তাহলে কি করে নিজের প্রাণের রিস্ক নেই বলো?স্বার্থপর মনে হলে তোমার দৃষ্টিতে আমি স্বার্থপরই। কেননা আমার স্বার্থপরতার পিছনে একটাই লক্ষ্য আমি চিরকাল আমার তুলা কে আমার বুকে চাই। যদি তোমার ইচ্ছে হয় তাহলে কেঁড়ে নাও আমার প্রাণ।”

টুপ টুপ করে কয়েক ফোঁটা জল গড়িয়ে গেল তুলির চোখ থেকে। আদ্রের শেষ কথাটা তীরের মতো বিঁধেছে হৃদপিণ্ডে। কোনো কিছু না ভেবে আছড়ে পড়ল আদ্রর বুকে। আকস্মিক হামলে পড়ায় আদ্র তাল সামলাতে পারল না। তুলি কে নিয়ে সটান হয়ে শুয়ে পড়ল মেঝেতে। তুলি চোখ মুখ কুঁচকে তাকাল আদ্রর দিকে। অশ্রু সিক্ত কন্ঠে বললো,

” ডা. আদ্র আহনাফ দ্যা বেস্ট হার্ট সার্জন। শুনুন,,”

” শুনছি বলুন।”

” যদি একবারও আবল তাবল বকেছেন তবে আপনার হার্ট অসুস্থ হয়ে যাবে। ”

” যতদিন আদ্রের সংস্পর্শে তার কুমিল্লার তুলা আছে,ততদিন এই হার্ট একদম সবল থাকবে। ইনশাআল্লাহ। ”

হার্ট বরাবর নরম অধর ছুঁয়ে দিল তুলি। আদ্র তুখোড় দৃষ্টিতে তাকালো,যা দেখে নতজানু হয়ে উঠে পড়ল তুলি। ওই চোখে চোখ রাখার সাহস নেই আর। আদ্র উঠে একটানে তুলি কে কাছে টেনে নিল। আচমকা টানে তুলি দৃষ্টি ফেলার পূর্বেই আদ্র ওষ্ঠদ্বয় চেপে ধরল তুলির ওষ্ঠযুগলে। হতবাক, বিস্ময় তুলি। আদ্রর বুকে খামচে ধরল শক্ত করে। যতবার কাছে আসবে আদ্রর হাত,বুকে রক্তাক্ত করা যেন তুলির অভ্যেস হয়ে উঠেছে। আদ্রও মুখ বুঁজে সহ্য করে নেয় তার তুলার দেওয়া সূক্ষ্ম ব্যাথাটুকু। গলায় ঠোঁট ছুঁয়ে সরে এলো আদ্র। বুকে অয়েন্টমেন্ট লাগাতে লাগাতে বললো,

” ট্রাস্ট মি তুলা, তুমি বুকে ঝড় না তুললে আক্রমণ করতাম না তোমাকে।”

ব্যাস আদ্রর এইটুকু কথাই যথেষ্ট তুলির মুখে রক্তিম আভা ছড়ানোর জন্য। শাড়ি ঠিক করে চলে যেতে নিলে পা বাড়িয়েও ফিরে এলো আবার। আদ্রর ওয়ালেট বের করে দিয়ে টেবিলের উপর রাখলো। আমতা আমতা করে বললো,

” রিমি আপুর তো প্রেগন্যান্সির তিন মাস রানিং। কই ওনার তো কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আল্লাহর রহমতে সুস্থ আছেন।”

তড়তড় করে মাথায় রাগ চড়ে বসল আদ্রর। বুঝে গেল তুলি কে যতই বুঝানো হোক না কেন এই মেয়ে বুঝবে না। বুঝার চেষ্টাই করছে না। আজকাল রাগ দেখাতে গেলেও এই মেয়ের মুখ দেখে সবটুকু রাগ উবে যায়। অভ্যন্তর, মস্তিষ্কে সব জায়গায় জুড়ে হিম শীতল হাওয়া বয়ে যেতে থাকে। শার্টের বোতাম গুলো লাগিয়ে কলার ঠিক করে নিল আদ্র। জবাবের আশায় দাঁড়িয়ে থাকা তুলির দিকে নজর দিয়ে বলে উঠল,

” তুমি বড় নাকি রিমি বড়?”

” রিমি আপু।”

” তোমার আগে বিয়ে হয়েছে নাকি রিমির বিয়ে হয়েছে? ”

” রিমি আপুর।”

” বিয়ের কয় বছর পর বাচ্চা হচ্ছে রিমির?”

” দু’ বছরের মাথায়।”

” তোমার বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে ক’ মাস হয়েছে? ”

তুলি একটু ভাবল। হিসেবে করে উত্তর দিল।

” নয় মাস।”

” এক্সাক্টলি। রিমি যেহেতু বিয়ের দু’বছরের মাথায় কন্সিভ করেছে তাহলে তোমার এতো অধৈর্য হওয়ার কিছু নেই বউ। সবুর করো। ”

একটু থেমে হাসি মুখে বললো আদ্র,

” ইউ নো না? সবুরে মেওয়া ফলে।”

তুলি এতোক্ষণে ঠাওর করতে পারল রিমির উদাহরণ দিয়ে তাকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়েছে আদ্র। বিয়ের দেড় বছরেও তো সাগর-রিমির মাঝে ছিল অভিমানের দেয়াল। যেই দেয়াল ভেঙ্গেছে তুলিদের গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে। মনে মনে বললো,আমি তো অবুঝ নই আদ্র। আমার বেবী লাগবেই লাগবে। মনের জাগ্রত অনুভূতি কে সায় দিয়ে আদ্রের কথার প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ করে বলে উঠল,

” কিন্তু ফুলশয্যা তো আমাদের হয়েছে আগে।”

সাথে সাথেই ভ্রুঁ উঁচিয়ে চাইল আদ্র তুলির দিকে। তুলি নিজের কথায় নিজে ফাঁসলো। মুখ চেপে ধরল শক্ত করে। এটা কি বলল সে। কিভাবে হতে পারল এতোটা নির্লজ্জ! আদ্র কে নিজের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে পিছিয়ে ধপ করে খাটে বসে পড়ল। তুলির দু দিকে দু-হাত রেখে ঝুঁকল আদ্র। ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে গেল তুলি। হৃদস্পন্দনের শব্দ বিনা বাঁধায় আদ্রর কর্ণধার হচ্ছে ক্রমাগত। হুট করে আদ্র নিজের অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন অনুভব করল। তুলি কে বিব্রত করার জন্য নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে আওড়ালো,

” তুমি বলতে চাচ্ছো, আমাদের ফুলশয্যায় ঘাটতি ছিল?”

# চলবে,,,

( ভুল হলে ধরিয়ে দিবেন।)