#আনমনে_সন্ধ্যায়
#নূপুর_ইসলাম
#পর্ব- ৩২
নাঈম এসে সাব্বিরের পাশে বসলো। বসে কাঁধে হাত রাখলা। বলার মতো অবশ্য কোন শব্দ পেলো না। কিছু কিছু কষ্টের কাছে শব্দ বেমানান। কেননা ভালোবাসার মানুষকে হারানোর ক্ষত পূরণ করবে এমন শব্দ পৃথিবীতে নেই।
সে অবশ্য এতোকিছু জানতো না । তবে গতকাল থেকে এর অবস্থা দেখে আন্দাজ করেছে। পরে নিসা সব খুলে বললো।
নিসা মেয়েটাকে ভাইয়ের পছন্দ হিসেবে দেখতে না পারলেও, মরন চাইবে এমন শত্রুও না! রুমে বসে বসে কাঁদছে। অবশ্য ভাইয়ের জন্য না রিমির জন্য সে জানে না।
কাঁদতেই কাঁদতেই তাকে ঢেলে পাঠালো। ভাই তার একা। কতোক্ষণ কাঁদছে, কতোক্ষণ হাঁসফাঁস করছে আবার কতোক্ষণ রিমির গুষ্টি উদ্ধার করছে। আবার থেমে বলছে, — মেয়েটা ঠিক আছে তো? এই মেয়েকে বোঝা মুশকিল। অন্তত নাঈমতো পারে’ই না।
সাব্বির নিচু হয়ে দু- হাতে মাথা রাখলো! এই পৃথিবীটা সাধারণ মানুষের জন্য অনেক কঠিন। চাইলেও কিছু করা যায় না। এই যে সেও তো কিছু করতে পারছে না। অথচো পাশে থাকার ওয়াদা করেছিলো। সে নির্জীব কন্ঠে বললো,
— আর কোন খবর আছে?
নাঈম দীর্ঘশ্বাস ফেললো!
— রিমি যেই গাড়িতে উঠেছে, সেটা পাওয়া গেছে। ঢাকার মধ্যেই এক বাজারের রাস্তায় । শেষ বার দেখা গেছে এক দোকানের সি সি ক্যামেরায় । রিমি নিজেই হেঁটে যাচ্ছে। পাশে সেই লোক। চেনার উপায় নেই। তারপরে কোন দিকে গেছে বোঝা যাচ্ছে না। গাড়িতেই তার পার্স, মোবাইল সব পাওয়া গেছে।
সাব্বির চোখ বন্ধ করলো! রিমির হাসিখুশি মুখটা ভেসে উঠলো।সে চোখ বন্ধ করেই সেই হাসিখুশি মুখটার দিকে তাকিয়ে রইলো।
নাঈম সাব্বিরের কাঁধে হাত বুলিয়ে বললো, — যেখানে সব চেষ্টার সমাপ্তি ঘটে, সেখান থেকেই শুরু হয় উপরে যিনি আছেন তার ক্ষমতা। তার উপরে ভরসা রাখ। তিনি সব ঠিক করে দিবেন।
সাব্বিরের ভেতর ভারী হয়ে এলো। অবশ্য কাঁদতে পারলো না। গলার কাছে এসে আটকে রইলো। ইশ! কি কষ্ট। তার মনে হলো বুকের উপরে শক্ত কিছু একটা ফেলা রাখা। না সে সরাতে পারছে, না সে নড়তে পারছে, না নিশ্বাস ফেলতে পারছে। সে মনে মনে বললো, — আল্লাহ এই কষ্ট থেকে মুক্তি দাও।
রিমির মোবাইল পার্স সব পাওয়া গেছে। মোবাইলে কথা সাব্বিরের মাথায় ঘুরতেই সে ঝট করে চোখ খুললো। রিমি যতোই যা করুক। সে সব সময় নিজেকে সেভ রেখে করতো। আর ওলীদ তো তাকে সোজা হুমকি দিয়েছে। সে নিশ্চয়ই এমনি এমনি চলাফেলা করবে না। সাথে সাথেই সে একটু ধাক্কা খেলো। রিমি কোন পুরুষ মানুষকে বিশ্বাস করে না। সেখানে ওলীদ কি, শামীম কি বা অন্য কেউ ই কি।
সে শুধু বিশ্বাস করেছে একজনকে, তাইতো যেদিন ওলীদের ফ্ল্যাটে যাবে … সে ঝট করে উঠে দাঁড়ালো। তার মোবাইল কোথায়? শিট! এই মেয়েকে নিয়ে সে কি করবে। সব কিছু নিয়ে হেঁয়ালি। শার্লক হোমস্ সে?
মোবাইল হাতে নিয়েই সাব্বির দৌড় দিলো। তার ডানে বামে হুশ নেই। নাঈম হতবাক! কি হলো সে কিছুই বুঝতে পারলো না। সেও সাব্বিরের পিছে দৌড়ে লাগালো।
হন্তদন্ত হয়ে সাব্বির আসতেই শামীম ভ্রু কুঁচকে তাকালো। এই পাগল আবার কেন? তার গালের চাপা, নাক এখনো ব্যথা করছে।শুধু রিমির কথা ভেবে সে কিছু বলছে না। তা না হলে এতোক্ষণে এটার খবর ছিলো।
সাব্বির এগিয়ে শামীমের সামনে মোবাইল রাখলো। রেখে বললো এই নাম্বারের সিম কম্পানির সব গুলো কোড ট্রাই করে নাম্বার ট্র্যাক করুন। প্লিজ! যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব।
শামীম কিছুক্ষণ চুপচাপ সাব্বিরের দিকে তাকিয়ে রইলো। তারপর মোবাইল তুলে হাতে নিলো। রিমিই সেন্ড করেছে। সেই দিন ওলীদদের বাসায় যাওয়ার আগে।
সাথে সাথেই তার ভ্রু কুঁচকে গেলো। তার মানে তার কাছে আরেকটা মোবাইল আছে। সে ফট করে উঠে দাঁড়ালো। তড়িঘড়ি করে একজনকে ফোন দিলো। দিয়ে বললো, — একটা নাম্বার পাঠাচ্ছি যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব ট্র্যাক করো।
ট্র্যাক করতে সময় লাগলো না। নাম্বার একটিভ। এটা যে রিমি সন্দেহ নেই। থানা থেকে পুরো লোকেশন পাওয়া গেছে। সাথে সাথেই শামীম পুরো এক টিম রেডি করলো । গাড়িতে উঠতে যাবে তখন সাব্বিরও দাঁড়িয়ে বললো,
— আমিও যাবো।
শামীম বড় একটা শ্বাস ফেললো! ফেলে বললো — আমাদের অফিসিয়াল কাজে দরকার ছাড়া কোন ফ্যামিলির মেম্বারকে আমরা এলাউ করি না।
সাব্বির কাতর ভাবে বললো — প্লিজ….
শামীমের এই প্রথম ছেলেটার জন্য মায়া হলো। লোকেশন পেলেই কি সব হয়। এরকম অনেক লোকেশন’ই তারা পায়। যে হারিয়ে যায় তাকেও পায়। তবে শুধু দেহটা। রিমির কি অবস্থায় আছে কে জানে । এ ছেলেটা কি সহ্য করতে পারবে?
সাব্বির হয়তো বুঝলো! সে নিজে থেকেই বললো, — অন্তত সে এইটুকুতো জানবে তার সবচেয়ে আপনজন তাকে নিতে এসেছিলো। সে যেই অবস্থায়’ই থাক।
শামীম কি বলবে বুঝতে পারলো না। সাব্বির নিজেই আবার বললো, — আপনারা নিতে না চাইলে, আমি নিজে ব্যবস্থা করবো। তবুও আমি যাবোই।
শামীম আর সময় নষ্ট করলো না। গাড়িতে উঠতে উঠতে বলতে। উঠে পরুন…
রিমি ঘোলা ঘোলা চোখে তাকালো! যন্ত্রনা! অসহ্য যন্ত্রনা। তবে কোথায় সে এবারো ধরতে পারলো না। সব কেমন যেনো এলোমেলো। ভর দুপুর, চারিদিকে ঝকঝকে রোদ তবুও সে দেখছে অন্ধকার।
ওলীদ রিমির মুখের সামনে ঝুঁকলো! ঝুঁকে বললো
— কেমন আছো রিমি?
রিমি কিছু বললো না । তার গাল থেকে সোজা দু- ঠোঁট হয়ে থুতনি পর্যন্ত হয়ে এক লম্বা দাগ। হা হয়ে আছে। রক্ত পড়াটা কিছুক্ষণ হলো থেমেছে। সেই রক্তের মধ্যেই রিমি শুয়ে আছে।
ওলীদ মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। তাকিয়েই বললো, — তোমাকে কেমন লাগছে রিমি জানো? মনে হচ্ছে একগুচ্ছ লাল গোলাপের পাপড়ির উপর শুয়ে আছো।
রিমি চোখ বুঝলো! আর কতো?
ওলীদ নিচু হলো! রিমির কপালে চুমু খেলে। তারপর বললো, — কিছুক্ষণের মধ্যেই আমি চলে যাবো। আমি যতোদিন বেঁচে থাকবো তোমাকে মনে রাখবো। উঁহু! চৈতির মতো না। চৈতিকে আমি ঘৃণা করি। তোমাকে আমি ভালোবাসি রিমি। বিশ্বাস করো এই ভালোবাসায় কোন খাদ নেই। তোমার সাথে যা হচ্ছে ওটা তোমার’ই দোষে। আমি তোমাকে পেলাম না তাহলে অন্য কেউ পাবে কেন বলোতো ? এই যে তোমার এই ঠোঁট আমি ছুঁলাম, এটা অন্য কেউ ছুঁবে এটা আমি সহ্য করবো কিভাবে ? তুমি আমার হলে না, তাই অন্য কারো হতে পারবে না। আমার যদি হতে তাহলে সব অন্য রকম হতো।
রিমি আবার পিটপিট করে চোখ খুললো।
ওলীদ হাসলো! হেসে বললো,
— তোমার কি কোন শেষ ইচ্ছা আছে রিমি?
রিমি কিছুক্ষণ নিঃষ্পল তাকিয়ে রইলো। সে অবশ্য কিছু দেখছে না তবুও। অনেকটা সময় নিয়ে অনেক কষ্টে অস্ফুটভাবে গুঙ্গিয়ে বললো — আপনার মৃত্যু।
ওলীদ আবার হাসলো! হো হো করা হাসি। ইশ! এই হাসিটা সে অনেক মিস করবে। অনেক! মেয়েটা এতো হাসাতে পারে। সে মুখে হাসি নিয়েই বললো,
— দুঃখিত রিমি, এটা পূরণ করতে পারছি না।
বলেই ওলীদ উঠলো। তার বেড়িয়ে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে। ফ্লাইট রাতে ! এখন না বেরুলে সময় মতো পৌঁছানো যাবে না। সে ব্যাগ থেকে আরেকটা ছুরি বের করলো। এটা তার ফেবারিট। এটা দিয়েই তার এই জীবনের শুরু। চৈতির গলাটা সে এটা দিয়েই কেটেছিলো।
সাথে সাথেই তার ভ্রু কুঁচকে গেলো। নাকে একটা ঘ্রাণ লাগছে। কোন ফুলের। এখানে ফুল আসবে কোথা থেকে? সে অবাক হলো! অবাক হয়ে আশে পাশে তাকালো! ঘ্রাণটা ধীরে ধীরে তীক্ষ্ণ হচ্ছে। সাথে শীতল একটা বাতাস গায়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে। যেন ধীরে ধীরে ঘ্রাণটা এগিয়ে আসছে।
রিমি বুক ভরে শ্বাস নিলো। তার কাটা ঠোঁটের কোণে হাসি। সে সেই হাসি নিয়েই ফিরে গেলো সেই ছোট্ট বেলায়। সে রাগ করে বাসা থেকে পালালো। যেই লোক তাকে সন্তান বলে শিকারই করেনি। তার টাকা সে কেন নেবে?
সারাদিন এখানে ওখানে ঘুরলো। রাতে কি করবে? রাত যতো বাড়তে লাগলো, তার ভয়ও। কোথায় যাবে সে? তারতো কেউ নেই। তার কেউ নেই, যাওয়ার কোন জায়গা নেই। এই যে এতো বড় পৃথিবী। এই পৃথিবী এতোটা একা কেন সে?
পেটে ক্ষুধা! হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত সে। কোথায় এসেছে সে তাও জানে না। শীতের রাত চারিদিকে অন্ধকার, কুয়াশা যেন সব কিছুকে জাপটে ধরে বসে আছে।
সে ভয়, ক্ষুধা, ক্লান্তি নিয়ে একটা গাছের নিচে বসলো! কি গাছ সে জানে না। ছোট ছোট ফুলে ঘিরে আছে। সুন্দর একটা ঘ্রাণ চারিদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
পাশেই মসজিদ! কেউ না থাকলেও আলো জ্বলছে। সে গুটিগুটি মেরে সেই গাছের নিচেই শুয়ে পড়লো। আর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো। তার কেউ কেন নেই। কেন ঘর নেই। কেন আপন একজন মানুষ নেই।
তার এই শূণ্য পৃথিবীতে সেই দিন রাতে একজন কে পেলো। যে পরম আদরে তার মাথাটা কোলে নিলো। গায়ে হাত রাখতেই সব শীত চলে গেলো। ফিসফিস করে কোমল সুরে বললো,— ভয় নেই! আমি আছি। ঘুমাও…..
সে জানলো না কে, বুঝলো না কে। কিন্তু অন্যরকম একটা প্রশান্তি অনুভব করলো। সেই প্রশান্তি নিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়েও গেলো।
ঘুমিয়ে গেলো সেই দিনও। যেইদিন ছোট মামির ভাই বাড়ির পেছনে তাকে মাটিয়ে চেপে ধরলো। টেনে পায়জামা খুললো। সে শুধু দেখলো দু- টো হিংস্র চোখ। আর নিশ্বাস বন্ধ হয়ে এলো। আর তখনি মিষ্টি একটা ঘ্রাণ। যে ঘ্রাণে ঘোর লেগে যায়। সেই ঘোরের মধ্যেই কেউ ফিসফিস করে বললো,— ভয় নেই! ঘু..মাও।
আজও রিমি আবার সেই পরিচিত কন্ঠ শুনলো ” যে কোমল মায়াভরা কন্ঠে বলছে, — আমি আছিতো! কোন ভয় নেই! ঘুমাও রিমি, ঘু..মাও …. রিমি পরম নিশ্চিন্তে সাথে সাথেই ঘুমিয়ে গেলো। সে জানে সত্যিই এখন আর কোন ভয় নেই। সত্যিই নেই!
ওলীদের হাত থেকে ছুরি পড়ে গেলো। পুরো ঘরে ফুলের সুবাস। বকুল ফুলের! এই ঘ্রাণ তার চেনা। ভীষণ ভীষণ চেনা। তাদের বাড়ির উঠানের এক সাইডে ছিলো। কতো সময় যে সে এই গাছের নিচে কাটিয়েছে। তার সকল দুঃখ কষ্টের সাক্ষী ছিলো এই গাছ। তাই এই ঘ্রাণ চিনতে তার ভুল হবে না।
সেই ফুলের সুবাসের মাঝে তার সামনে রিমি দাঁড়িয়ে। তার রক্তে মাখানো কোমর সমান চুল বাতাসে এলোমেলো ভাবে উড়ছে। হাতে তার সেই ঝিনুকের খোলস। শক্ত করে মুঠো করে ধরা। এটা সে ফেলে দিয়েছিলো। কোথায় পেলো?
ওলীদ ঢোক গিললো ! রিমি দাঁড়িয়ে আছে খুব স্বাভাবিক ভাবে। মাথার আঘাত, মুখের কাটায় মনে হয় না তার কিছু হয়েছে। সে কাটা ঝুলে যাওয়া ঠোঁট নিয়েই ঠোঁট টিপে হাসছে। যেন খুব মজার জিনিস তার চোখের সামনে।
ওলীদ শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো ! অস্ফুটভাবে একবার ডাকলো, — রিমি?
রিমি হো হো করে হেসে উঠলো!
ওলীদ নিষ্পলক তাকিয়ে রইলো। কতো লাশ নিয়ে টানা হেচরা করেছে। অনায়াসেই ছুরি চালিয়েছে। মানুষের কাটা শরীর তার কাছে কখনো বীভৎস লাগেনি। বরং মুগ্ধ চোখে দেখেছে। শান্তি অনুভব করেছে। আর আজ রক্ত মাখানো মাথা, ঝুলে যাওয়া ঠোঁট নিয়ে হাসতে থাকা এই রমনী কে দেখে তার শুধু শরীর না, আত্মা পর্যন্ত কেঁপে উঠলো। একেই বলে বুঝি ভয়?
এই ভয়ে কাঁপতে কাঁপতেই তার মন বললো, — এটা রিমি না। কিছুতেই না…..
গাড়ি থামতেই সাব্বির তড়িঘড়ি করে বেরোলো। খোলা বিল! যতোদূর চোখ যায় খেত আর খেত। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকটা বালি দিয়ে ভরাট করে রাস্তার সমান করা হয়েছে। সেখানেই টিনের ছোট্ট একটা ঘর।
শামীম মানা করলো! সাব্বিরের সেই কথা কানেও গেলো না। সে উদভ্রান্তের মতো দৌড়ে গেলো । দরজা চাপানো! সে ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলতেই থমকে গেলো।
ওলীদ হাত পা ছড়িয়ে পড়ে আছে। গলা কাটা। রক্তে ভেসে যাচ্ছে ঘর। তার সামনে হাঁটু মুড়ে মূর্তির মতো রিমি বসে আছে। এই ভঙ্গি তার পরিচিত। ঠিক সেই দিনের মতো। হাতে সেই রক্তে মাখা ঝিনুকের খোলস।
সাব্বির ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলো। বাতাসে সেই দিনের মতোই ফুলের ঘ্রাণ। আজকে অবশ্য সেই ঘ্রাণ নিয়ে সাব্বির মাথাও ঘামালো না। তার চোখে পানি। কষ্টে দম বন্ধ হয়ে আসছে। তার দেখেই এতো কষ্ট। মেয়েটার না জানি কতো কষ্টের মধ্যে দিয়ে গেছে। সে হাঁটু মুড়েই রিমির সামনে বসলো। হালকা করে রিমির গালে হাত রাখলো।
সাথে সাথে রিমি কেঁপে উঠলো। কেঁপে সাব্বিরের দিকে তাকালো! তাকিয়েই চোখ বন্ধ করে ঢলে পড়ে যেতে নিলো।
সাব্বির পরম যত্নে আগলে ধরলো। যেন হালকা ছোঁয়াতেও ব্যথা তো ভালোই রিমি বুঝতেও না পারে।
আগলে ধরেই পা ছড়িয়ে বসে সে চোখ বন্ধ করলো। তার চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়তে লাগলো। শামীম সেই দৃশ্যই এসে দেখলো। কি আশ্চর্য! তার চোখেও পানি। এখনো তার ভেতরে অনুভূতিরা বেঁচে আছে তাহলে। সে চোখ মুছে সাথে সাথেই এম্বুলেন্সের জন্য ফোন করলো। রিমিকে গাড়িতে নেওয়া যাবে না।
চলবে…..