#আবেগময়_সম্পর্ক
#২৯+৩০তম_পর্ব(নতুন মোড়)
#লেখিনীতে_মৃদু_সুপ্রিয়া
মেহুলের মৃত্যুর পর তার মৃতদেহ নিয়ে আসা হয়েছে বাড়িতে। আকাশ বাকরুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মেহুলের মৃত্যুটা তাকে ভেতর থেকে একদম ভেঙে দিয়েছে। নিজের অপরাধবোধও এখন তীক্ষ্ণ হয়ে উঠছে। অন্যদিকে মায়ান নিজের মায়ের মৃতদেহ দেখে সম্পূর্ণ অবাক হয়ে গেছে। সে বুঝতেই পারছে না তার মায়ের কি হয়েছে।
মেহুলের দেহটা মেঝেতে রাখা হয়েছে। একটু পরেই পিহু ও আশিক চলে আসে। মেহুলের মা-বাবাও চলে এসেছে ইতিমধ্যেই।
পিহু মেহুলের মৃত দেহ আকড়ে ধরে কাঁদতে থাকে৷ তারপর আকাশ ও রায়ানকে ভৎসর্না করে বলে, “তোমরা আমার বোনের মৃত্যুর জন্য দায়ী। তোমরা আমার বোনকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছ। তোমাদের আমি কখনো ক্ষমা করবো না।”
পিহু রায়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,“আমার আপি তোমাকে নিজের ছেলের মতো দেখত৷ অথচ তুমি তাকে কত বেশি অপমান করেছ। যার কারণে আমার আপি কত কষ্টে ছিল। আর দেখ তোমাকে বাঁচাতে গিয়ে আমার আপি..তুমি খুব খারাপ একটা ছেলে। তোমার কখনো ভালো হবে না। মিলিয়ে নিও আমার কথা।”
পিহু মায়ানের কাছে গিয়ে তাকে কোলে তুলে নেয়। মায়ানের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, “এই ছেলেটা শুধু তোমার জন্য আজ মা-হারা হয়ে গেল। তুমি রায়ান তুমি আমার আপির খু*নি।”
মায়ান বলে ওঠে,“না, আমার রায়ান বাইয়া অনেক বালো(ভালো)।”
মায়ান দ্রুত রায়ানের কাছে চলে যায়। রায়ান মায়ানকে কোলে তুলে নেয়।
আকাশ বলে, “আমি বুঝতে পারছি পিহু তোমার মানসিক অবস্থা এখন বেশি ভালো না। কিন্তু তুমি সবটা বোঝার চেষ্টা করো।”
পিহুর খুব রাগ হয়। সে বলে, “আপনি তো এক দমই কথা বলবে না। শুধু মাত্র আপনার জন্য আমার আপি.. আপনি খুব খারাপ মানুষ। আমি আজ আপনাদের সবার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলাম। আর কখনো আপনার মুখ দেখতে চাই না।”
মেহুলের দাফন কাজ সম্পন্ন হয়ে যায়৷ পিহু, আশিকের সাথে মিলে তৎক্ষনাৎ সিলেট ফিরে যায়। সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর কখনো এদের কারো মুখোমুখি হবে না। মায়ানকেও সাথে নিয়ে আসতে চেয়ে ছিল। কিন্তু মায়ান আসতে চায়নি। তাই আর জোর করেনি পিহু।
সম্পর্কের সমীকরণ এক মুহুর্তে বদলে গেল। জীবনের স্রোত কোন দিকে নিয়ে যায় সবাই কে। এখন সেটাই দেখার।
____________________________
২০ বছর পর,
ঢাকা সিটি হসপিটালের চলছে বিরাট প্রস্তুতি। আজ বিদেশ থেকে একটি সফল অপারেশন করে ফিরছে ডক্টর রায়ান খান। বিদেশের কোন ডাক্তারও যেটা করতে পারে নি বাংলাদেশের একজন ডাক্তার সেটা করে দেখিয়েছে। একজন মৃত্যু পথযাত্রী রোগীকে সারিয়ে তুলেছে। এটা বাংলাদেশের কাছে একটা বিরাট গর্বের বিষয়। নিউরোলজি স্পেশালিস্ট রায়ান খানকে বরণ করার জন্য তাই হসপিটালের সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছে।
কয়েকজন ডাক্তার রায়ান খানের অনেক প্রশংসা করছে। মাত্র ৩১ বছর বয়সে তিনি যে এত সফলতা অর্জন করেছেন সেটাই অবিশ্বাস্য। কিছু মেডিকেল ছাত্রী একে অপরের সাথে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিল৷ একজন বলছিল, “শুনেছি ডক্টর রায়ান খান যেমন গুণী, দেখতেও নাকি তেমন হ্যান্ডসাম। একবার দেখলেই সবাই ফিদা হয়ে যাবে। অথচ তিনি এখনো অবিবাহিত। ইশ, যদি ওনার স্ত্রী হতে পারি তাহলে ভাগ্যটাই বদলে যাবে ”
আরেকজন টিপ্পনী কে*টে৷ বলে,“এসব স্বপ্ন দেখা বন্ধ কর বোন। ওনার কাছে দুই টাকার পাত্তাও আমরা পাবো না। ওনার যিনি লাইফ পার্টনার হবে তাকে সব দিক দিয়ে পার্ফেক্ট হতে হবে। এমন মেয়েকেই শুধু রায়ান খানের পাশে মানাবে।”
এসব কথার মাঝেই সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে কারণ রায়ান খান চলে এসেছেন। একটি কালো কালারের দামী গাড়ি থেকে নামেন রায়ান খান। গাড়ি থেকে নেমেই খুব সুন্দর একটি হাসি উপহার দেন। তার এই হাসি দেখে যে কেউ মুগ্ধ হয়ে যাবে। এরপর তিনি সামনের দিকে অগ্রসর হন। হাসপাতালের সবাই তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়। রায়ানকে হাসপাতালের প্রধান ফুল দিয়ে বলে,“উই প্রাউড অফ ইউ, রায়ান খান। আপনি শুধু আমাদের এই হাসপাতাল না আমাদের দেশের মুখও বর্হিবিশ্বে উজ্জ্বল করেছেন।”
রায়ান মুচকি হেসে ফুলটা হাতে নিয়ে বলে,“এটা আমার ডিউটি ছিল স্যার। আর নিজের ডিউটি ফুল ফিল করতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।”
“বিদেশে তো অনেক ভালো ভালো হসপিটাল আপনাকে অফার করেছিল তাহলে আপনি সেসব অগ্রাহ্য করে এখানে কেন ফিরে এলেন?”
“আমি নিজের দেশেই থাকতে চাই। বিদেশে থাকার ইচ্ছা আমার নেই।”
সবাই মুগ্ধ হয়ে যায় ডাক্তার রায়ান খানের এমন উত্তর শুনে৷ রায়ান এরপর হাসপাতালে প্রবেশ করে। নিজের কেবিনে গিয়ে বসে। রায়ানের কেবিনে মেহুলের সাথে তার ছোটবেলার একটি ছবি বাধানো আছে। রায়ান সেই ছবিটা দেখে বলে,“আজ তুমি বেঁচে থাকলে, আমার এই সাফল্য দেখে অনেক খুশি হতে নতুন মা। আমি তোমার সব কথা রেখেছি। মায়ানকে আগলে রেখেছি সব সময়। এখন ও অনেক বড় বিজনেস ম্যান। আমার নানা আমার নামে যেসব সম্পত্তি রেখে গিয়ে ছিল সব আমি মায়ানকে দিয়ে দিয়েছি। এখন সে সব কিছু একা হাতে সামলাচ্ছে। অনেক গ্রোথও করছে। আমি জানি, তুমি যেখানেই থাক না কেন আমাদের এই উন্নতি দেখে তুমি অনেক খুশি হবে নতুন মা।”
____________________________
বিশাল একটি অফিসের মধ্যে নিজের কেবিনে বসে আছে মায়ান। থাই গ্লাসের দিকে তাকিয়ে কারো অপেক্ষা করছে। একটু পরেই কেবিনের বাইরে থেকে এক জন এসে বলে, “মে আই কাম ইন স্যার?”
মায়ান দরজার দিকে না তাকিয়েই বলে,“ইয়েস কাম।”
মায়ানের সেক্রেটারি আজিজ তার কেবিনে প্রবেশ করে। টেবিলে কিছু ফাইল রেখে বলে,“স্যার এখানে আমাদের কোম্পানির গ্রোথ রেট এবং কিছু প্রজেক্টের ফাইলস আছে। আপনি একটু দেখে নিন।”
রকিং চেয়ার ঘুরিয়ে নিজের সেক্রেটারির দিকে তাকায় মায়ান। তারপর একটা ফাইল হাতে নিয়ে বলে,“এসব কিছু তো ঠিকই আছে, কিন্তু তোমাকে যেই ব্যাপার টা দেখে আসতে বলেছিলাম সেটা কি দেখেছ?”
সেক্রেটারি মাথা চুলকে বলে, “কোন ব্যাপার স্যার?”
মায়ানের হুংকার দিয়ে বলে,“আজকাল কি কিছু মনে থাকে না তোমার? বেশি করে হরলিক্স খাও। নাহলে মাথার ডাক্তার দেখাও।”
সেক্রেটারি বলে,“তাই করতে হবে স্যার।”
“সাট আপ রাস্কেল। তোমাকে আমি উত্তরার আবাসন প্রজেক্ট নিয়ে যে প্রব্লেম তৈরি হয়েছে তার সলিউশন করতে বলেছিলাম।”
“ওহ, হ্যাঁ তাইতো৷ আমি ভুলে গেছিলাম। যাইহোক আপনি টেনশন করবেন না। এসব সামান্য ব্যাপারে আমাদের কোম্পানির কোন লস হবে না।”
মায়ান তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,
“ছোট ছোট বালু কনা
বিন্দু বিন্দু জল
গড়ে তোলে মহাদেশ সাগর অতল।”
সেক্রেটারি আজিজ পুনরায় মাথা চুলকে বলে, “ঠিক বুঝলাম না স্যার।”
মায়ান রাগে টেবিলে জোরে শব্দ করে বলে,“রাবিশ। ছোটবেলায় কি সারমর্ম সারাংশ কিছু পড়ো নি?”
“না স্যার, আমি তো ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়েছি।”
“ডিসগাছটিং। এইজন্যই কিছু জানো না, আমার কথার মানে হলো কোন কিছুকেই হালকা ভাবে নিতে নেই। এসব ছোট সমস্যা থেকেই বড় সমস্যা তৈরি হয়। তাই যত দ্রুত সম্ভব এই সমস্যার সমাধান করো।”
“ওকে স্যার। আপনি কোন টেনশন করবেন না। আমি ব্যাপারটা দেখছি।এটার সলিউশন করেই ছাড়ব।”
“গুড, এখন যাও আর আমার জন্য এক কাপ ব্ল্যাক কফি পাঠিয়ে দেও। আমার মাথা খুব ব্যাথা করছে।”
সেক্রেটারি আজিজ রুম থেকে বেরিয়ে যায়। মায়ান ফোনের দিকে তাকায়। আজকের তারিখ দেখে চমকে যায়। উত্তেজিত হয়ে বলে, “ড্যাম ইট। আজকে তো ১৫ তারিখ। রায়ান ভাইয়ার তো আজকেই দেশে ফেরার কথা। ওহ গড, আমি তো ভুলেই গেছিলাম। রায়ান ভাইয়া কত বড় একটা সাকসেস অর্জন করে দেশে ফিরছে। তার জন্য তো বড় কোন ইভেন্টের এরেঞ্জমেন্ট করার দরকার।”
একটু পর সেক্রেটারি আজিজ ব্ল্যাক কফি নিয়ে আসে। মায়ান ব্ল্যাক কফি হাতে নিয়ে বলে, “শোন আজিজ তোমাকে একটা কাজ করতার হবে।”
“ইয়েস স্যার বলুন কি করতে হবে আমি করবো।”
“ডেকোরেটরের লোকদের সাথে কথা বলো। আজ আমাদের বাড়িতে পার্টির এরেঞ্জমেন্ট করতে হবে।”
“পার্টি কেন স্যার?”
“আরে ইডিয়েট, মনে নেই আমার রায়ান ভাইয়া আজ দেশে ফিরেছে। কত বড় একটা অপারেশন সাকসেস করে এসেছে। তাকে তো ভালো ভাবে ওয়েলকাম জানাতে হবে নাকি?”
“ও হ্যাঁ, তাইতো। আপনি কোন টেনশন করবেন না। পার্টির সব এরেঞ্জমেন্ট হয়ে যাবে। আমি শহরের বেস্ট ডেকোরেটরারদের সাথে কথা বলব।”
মায়ান স্বস্তি পায় এবং কফির কাপে চুমুক দেয়৷
____________________________
প্রমি ছুটছে তো ছুটছেই! এতে অবশ্য অবাক হওয়ার কিছু নেই। একজন সাংবাদিক হওয়ার দরুণ এটাই তার কাজ৷ একজন নিউজ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করে সে। আগে এন্টারটেইনমেন্ট রিপোর্টার ছিল। তখন জীবনটা অনেক সুন্দর ছিল। বিভিন্ন সেলিব্রিটির ইন্টারভিউ নিত, আর গসিপ তৈরি করত। কিন্তু তার পর না জানি তার মাথায় কোন পোকায় কামড় দিল সে নিউজ রিপোর্টার হয়ে গেল। এখন সারাদিন নিউজের পেছনে ছুটতে হয়। সাথে থাকে ক্যামেরাম্যান রাজীব।
প্রমি ক্লান্ত শরীর নিয়ে রাজীবকে জিজ্ঞেস করে, “এবার আমাদের কোথায় যেতে হবে?”
রাজীব বলে, “কেন ম্যাম আপনার মনে নেই? উত্তরা আবাসন প্রজেক্ট নিয়ে যেই দূর্নীতি হয়েছে আমাদের সেই বিষয়ে নিউজ করতে হবে।”
প্রমি বলে ওঠে, “ও হ্যাঁ মনে পড়েছে। উত্তরার ঘটনাটা যেন কি?”
“ম্যাম ভুলে গেছেন আপনি? উত্তরায় আবাসন প্রজেক্টের নামে কিছু মানুষের কাছে টাকা নেয় আরএম কোম্পানি৷ তাদের সেখানে কিছু ফ্ল্যাট দেওয়ার নাম করে টাকা নেয়, কিন্তু টাকা নেওয়ার পর তাদের আর ফ্ল্যাট ভাড়া দেওয়া হয়না। অন্য মানুষদের কাছে ফ্ল্যাট দিয়ে দেওয়া হয়৷ পরবর্তীতে এই নিয়ে ঝামেলা হয় এবং যারা টাকা দিয়েছিল তারা টাকা ফেরত চায় কিন্তু তাদের আর টাকা ফেরত দেওয়া হয় না। এই নিয়েই মূলত ঝামেলার সূত্রপাত হয়েছে। যেই বিষয় টা নিয়ে এখন আমাদের কে নিউজ করতে হবে।”
প্রমি সব কথা মনযোগ সহকারে শোনে৷ একটু পরেই তার ফোন বেজে ওঠে। প্রমি ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে তার মা পিহু ফোন করেছে। ফোনটা রিসিভ করামাত্রই পিহু বলে ওঠে,“কি রে কখন থেকে ফোন করছি ধরছিস না কেন?”
পিহু খেয়াল করে দেখে ৫ টা মিসড কল। সে দাঁত দিয়ে জিহ্বে কামড় দিয়ে বলে, “একটু ব্যস্ত ছিলাম তো তাই খেয়াল করিনি।”
পিহু হতাশার গলায় বলে, “তোর এই ব্যস্ততা আর শেষ হবে না। সারাদিন সাংবাদিকতা নিয়েই থাক। এইদিকে যে, বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে সেদিকে খেয়াল আছে?”
প্রমি বলে, “মাত্র তো ২৪ বছর। এ আর এমন কি?”
পিহু তখন বলে, “আমি এত কথা শুনতে চাইনা। তোর ফোনে কয়েকটা ছেলের ছবি পাঠাচ্ছি। তুই দেখে নে। যেই ছেলেটাকে ভালো লাগবে আমায় বলবি তার সাথে এবার তোর বিয়ে দিয়ে আমার শান্তি।”
প্রমি মনে মনে বলে,“উফ, মা দেখছি আমার বিয়ে না দিয়ে শান্তি পাবে না। আমি তো বিয়ে করতে চাই না। এসব আমার অসহ্য লাগে। মাকে কে বোঝাবে সেটা।”
কিন্তু ফোনে বলে,“আচ্ছা ঠিক আছে আমি দেখে তোমাকে জানাবো। এখন ফোন রাখছি বাই।”
প্রমি ফোন রাখতেই পিহু বলে,“জানি আমি ও এক দম শুনবে না। বলে তো দিল দেখবে কিন্তু ও যে বিয়ে করতে চায় না সেটা আমিও জানি।”
পাশ থেকে আশিক বলে,“যখন তুমি জানো ও বিয়ে করতে চায়না তাহলে জোর করো কেন?”
পিহু বলে, “মেয়ে বড় হলে তাকে তো বিয়ে দিতেই হবে। তাছড়া তুমি তো ওর ব্যাপারে সবই জানো। পিহু আমাদের নিজের সন্তান নয়। আমার যখন সিড়ি থেকে পড়ে গিয়ে পেটের বাচ্চাটা নষ্ট হয়ে যায় তখন ডাক্তার বলে দিয়ে ছিল আমি আর কোন দিনও মা হতে পারবোনা। সেই সময় আমি কতটা কষ্টে ছিলাম। সেই মুহুর্তে তুমি অনাথ আশ্রম থেকে প্রমিকে দত্তক করে নিয়ে আসো। ছোট্ট ফুটফুটে ৪ বছরের একটা বাচ্চা। আমরা ওকে নিজের মেয়ের মতোই মানুষ করেছি। কখনো এটা বুঝতেই দেই নি যে ও আমাদের মেয়ে নয়। ও আমাদেরকে নিজের আসল মা-বাবা ভাবে। আমরা আর কত দিন বাঁচবো বলো? আমাদের কিছু হয়ে গেলে ওকে কে দেখবে?”
“তুমি এত চিন্তা করো না পিহু। দেখবে সব ঠিক হবে। সঠিক সময় এলেই ওর বিয়ে হবে।”
এরপর আশিক বলে, “আমি তোমাকে একটা কথা বলতে চাই।”
“হ্যাঁ বলো।”
“আমরা কি আকাশ ভাইয়ার সাথে…”
“এই ব্যাপারে কথা না বলাই ভালো।”
“আর কত দিন রাগ করে থাকবে তুমি? মেহুল ভাবি তো মারাই গেছে৷ তিনি বেঁচে থাকলে তোমার এই কান্ডে খুব কষ্ট পেতেন। আমাদের এভাবে কারো সাথে সম্পর্ক নষ্ট করে কি লাভ হচ্ছে?”
“আমি এত কিছু জানতে চাই না। ওরা আমার আপির খু*নি। ওদের সাথে যোগাযোগ করার প্রশ্নই ওঠে না।”
“তোমার মেহুল আপির ছেলেও তো আছে ওখানে।”
“ওর সাথে কোন একদিন যদি ভাগ্যক্রমে দেখা হয় তো ভালো। কিন্তু আমি কারো সাথে যোগাযোগ করবো না। এটাই আমার ফাইনাল ডিশিসন।”
কথাটা বলেই পিহু ঘরের দিকে অগ্রসর হয়। আশিক সেদিকে তাকিয়ে বলে,“এত দিন পরেও তোমার রাগ ওসের উপর থেকে একটুও কমল না। তোমার জন্য আমিও নিজের ভাই আর ভাতিজার সাথে দেখা করতে পারলাম না। কারণ তুমি বলেছ ওদের সাথে দেখা করলে তুমি আমার সাথেও সম্পর্ক রাখবে না। জানি না তোমার এই রাগ কখন কমবে।”
#চলবে