#আমার_হৃদয়ে_সে
#রোকসানা_আক্তার
||শেষ পর্ব||
৬৪.
বাড়িতে সময়টা বেশ ভালোই কাটছে।খালামণি,খালু,ফাহিম সবাই আছে।সবার সাথে কথাবার্তা,হাসি,তামাশা ফূর্তি,আমোদের শেষ নেই।শ্বশুর বাড়ি থেকে এসেছি সপ্তাহখানেকেরও বেশি হবে।ওখানে ফেরার আমার মাঝে তেমন ভাবান্তর নেই।আমি বেমালুম ভুলেই যে আমার একটা শ্বশুর বাড়ি আছে।অথচ তিন চারদিন থাকবো বলে এখানে বেড়াতে এসেছি।খুবই হাস্যকর ব্যাপার,তাই না?আর সবথেকে হাস্যকর ব্যাপার জি জানেন? হৃদয়ও আমাকে ওদের বাড়িতে ফেরতে ওত চাপ প্রয়োগ করে নি।ওর ভাষান্তরে অনেকগুলো মাস পর যেহেতু বাপের বাড়িতে এসেছি মন ভরে যতদিন চাইবে ততদিন বেড়াবে!সে অবশ্যি আমার সাথে এত লম্বা সময় নেয়নি।সে প্রথম কয়েকদিন থেকেই চলে যায় ওদের বাড়ি।আর যাওয়ার সময়বলে যায়,
“বেড়ানো শেষ হলে কল করতে!সে এসে নিয়ে যাবে।”
আহা আমার বিন্দাস লাইফ!লাবণ্যকে নিয়েও ওত প্যারা নেই।লাবণ্যকে রাখার এ বাড়িতে লোকের অভাব নাই।একবার ও মায়ের কাছে থাকে।একবার বাবার কাছে।আবার খালামণির কাছে।আবার ফাহিমও রাখে।খালু ফাঁকফোকরে!খালু সারাক্ষণ অফিস নিয়েই বিজি থাকেন ।উনার সাথে আমাদের দেখা রাতের সময় টুকু শুধু।
৬৫
দিনের শেষ সময়।ছাদে শুকাতে দেওয়া জামাকাপড়গুলো রুমে এনে জড়ো করেছি কিছুক্ষণ আগে হবে।সেগুলো এখন গুছিয়ে ওয়ারড্রবে রাখছি।অনেক জামাকাপড়।বিয়ের আগের পরের সবগুলো আজ ভালো মতন করে ধৌত করেছি।অনেকদিন ব্যবহৃত হয়নি তো ময়লা জমেছে কিছুটা।গোছগাছ শেষ হলে মাথার আলগা হয়ে আসা খোপাটা আবার শক্ত করে বেঁধে নিয়ে পা বাড়াই কিচেনের দিকে।লাবণ্যের জন্যে খাবার বানাতে হবে।সন্ধের পর প্রতিদিন লাবণ্যকে একটা সবজির নিরামিষ খাওয়াই।কিচেনের দরজা পর্যন্ত আসতে কলিংবেল বেজে উঠে।বাবা সোফায় লাবণ্যকে নিয়ে সোফায় বসা ছিলেন।তিনি নিজেই উঠে গিয়ে দরজা খুলেন।দরজা খুলতেই,
“আসসালামু আলাইকুম,বেয়াই সাহেব?”
একদন্ডও দেরী হলো না। বাবা সাথে সাথে হাসিমুখে সালামের জবাব নেন।এবং নিজেও আবার সালাম করে উঠেন।তারপর বলেন,
“বেয়াই ভেতরে আসুন!ভেতরে আসুন।”
আমার শ্বশুর ভেতরে আসেন।আমি মাথায় চওড়া করে ঘোমটা টেনে এগিয়ে উনাকে সালাম করি।ইতোমধ্যে এখানে ছোট্ট একটা হৈচৈ এর আওয়াজ শুনে ভেতর থেকে আমার খালামণি,মা এবং ফাহিম বেরিয়ে আসেন।আর সবথেকে অবাক করার বিষয় হলো লাবণ্যও!সে তার দাদুকে দেখতে পেরে সোফা ছেড়ে সোঁজা উনার সামনে এসে দাঁড়ায়।আর তাট দাঁত বিহীন মুখে কুচিকুচি হেসে দেয়।এতটুকুন বাচ্চা এরকম কিছু করবে এটা আমার শ্বশুর যেমন অবাক হলেন তেমনি সবাই।আমি বলে উঠলাম,
“এতদিন বাবাকে দেখে নি তো হঠাৎ করে দেখেছে তাই হয়তো ছুটে এসেছে!”
খালামণি পাশ থেকে বলে উঠেন,
“বুঝলাম,বেয়াই মনে হয় লাবণ্যকে সবার থেকে একটু বেশি আদর করে।”
বলে খালামণি হাসেন।সাথে আমার শ্বশুরও হেসে দিয়ে বলেন,
“লাবণ্য সবারই আদরের।”
বলে তিনি লাবণ্যকে কোলে নিতে উদগ্রীব হোন।তবে বাঁধ সেঁধে যায় উনার হাতে থাকা ভারী ভারী মিষ্টি,দুই এবং ফলের প্যাকেটে। আমি উনার হাত থেকে সেগুলো নিয়ে ঝাপলা মুক্ত করি।এবার তিনি লাবণ্যকে কোলে তুলে নেন।বাবা বলে উঠেন,
“আরেহ বেয়াই সাহেব?দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলবেন নাকি?সোফায় আসুন!”
তারপর আমার শ্বশুর এবং আমার বাবা গিয়ে সোফায় বসেন।আর এদিক দিয়ে খালামণি এবং মা কী বানাবে তা নিয়ে ব্যস্ততুর হয়ে যান।তারপর মোটামুটি অনেকগুলো নাস্তার আইটেম কম সময়ের ভেতর তৈরী করে সব নিয়ে সেন্টার টেবিলের উপর জড়ো করেন।খাওয়া পরিবেশন শেষ হলে আবার সবাই হাসি, আনন্দে,খুশিতে একে-অপররে সাথে কথায় মর্তে উঠেন।সবার সাথে সবার কি সুন্দর সৌহার্দ্যতা,সম্মাননা, সামাজিকতা!একসময় এরা একে-অপরের উপর রাগে ছিল,কষ্টে ছিল,ক্ষোভে ছিল, আবার বা অভিমানেও ছিল তা যেন আজ তারা তা নিমিষেই ভুলে গেলো!দূর থেকে লাবণ্যকে নিয়ে উনাদের এমন রঙ্গতামাশা দেখছি আর মনে মনে ভীষণ হাসছি।হাসিটা আনন্দের!খুব বেশী আনন্দের।ওই বাড়িতে সবার মান-অভিমান ভাঙ্গানোর পর অপেক্ষায় ছিলাম শ্বশুরের এই বাড়ির সবার থেকে কবে রাগ-অভিমান ভাঙ্গবে! মহান আল্লাহর অশেষ কৃপায় আমার শ্বশুর আজ নিজেই স্বইচ্ছে এসে সবার রাগ-অভিমান ভাঙ্গিয়ে দিলেন।শুকরিয়া।
তবে সবশেষে এটুই যে,আমার শ্বশুর হয়তো তার মনে ভুল ধারণা পোষণা করাটা বুঝতে পেরেছেন!ডিভোর্সি বলেই সম্মান শেষ না!সমাজে ছোট্ট না!বরং সমাজই শিখিয়েছে এসব কু-মন্ত্রপ্রথা!
৬৮.
“লাবণ্য?লাবণ্য কোথায় তুমি আম্মু?”
বেলকনি থেকে টুপ করে মাথাটা বের করে বলে উঠে মেয়েটা,
“এই তো মাম্মিকে আমি এখানে!”
হাসলা।মমেয়েটা আমার তিনবছরে পা দিয়েছে সবে।
খুব সুন্দর মতন পটপট করে কথা বলতে জানে।কথা বলতে শিখেছে সেই বয়স দেড় বছর বয়স থেকে।ওর বাবা খুব চেষ্টা তেষ্টা করে ওর কথা বলাটা রপ্ত করিয়েছে।এক্ষেত্রে আমার থেকেও হৃদয়ের অবদান বেশি বলা যায়।আমি লাবণ্যের দিকে এগিয়ে গেলাম। বললাম,
“আমরা সূর্যাস্ত দেখতে বেরুবো।আসো তোমাকে আম্মু রেডি করিয়ে দিচ্ছি ।”
“আচ্ছা। ”
হাত ধরে লাবণ্যকে ভেতরে নিয়ে এলাম।বেলকনির দরজা বন্ধ করলাম।জানলা গুলোও বন্ধ করলাম।সাদা পর্দাগুলো খুলে দিয়ে তারপর মেয়েকে রেডি করাতে ব্যস্ত হলাম।আর আপনারা কী জানেন?আমরা এখন কোথায় আছি?আমরা এখন আছি কক্সাবাজারে। সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে এসেছি আমি, হৃদয় এবং লাবণ্য।বিয়ে হলো আমার এবং হৃদয়ের আজ চার বছর চলতেছে।সংসার,ধর্ম,কর্ম নিয়েই ব্যস্ততায় কেঁটেছে বছরগুলো।এরফাঁকে আমাকে নিয়ে হৃদয়ের একবার কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয়নি।তাই সে এবার তার কলেজে শীতের ছুটি পাওয়া মাত্রই আমাকে সোঁজা নিয়ে এসেছে এখানে।গত তিনদিন ধরে আমাদের সৈকতের মোটামুটি সব ঘুরে দেখা শেষ।শুধু সূর্যাস্তটা বাকি।সূর্যাস্তটা দেখা হয়নি।সেটা আজ দেখবো।লাবণ্যকে ঝটপট রেডি করিয়ে আমিও রেডি হই।আমার রেডি হওয়ার পরপরই হৃদয় আসে।হৃদয় এতক্ষণ বাইরে ছিলো।আমাকে এবং লাবণ্যকে দেখে বলে,
“বাহহ!ভালোই তো সেজেছো মা-মেয়ে!”
লাবণ্য তার বাবার কথা শুনে খিলখিল করে হেসে উঠে।আর আমি মাথা নুইয়ে নৈঃশব্দ্যে!হৃদয় বলে,
“আচ্ছা আর দেরী করা যাবে না।দেরী হয়ে যাচ্ছে।চলো এবার!”
আমরা সৈকতের পাড়ে এসে দাঁড়ালাম।সূর্য আকাশের বুকে এখনো।মৃদু তার রোদ।আমরা অপেক্ষায় সূর্যাস্তের জন্যে! অনেকক্ষণ এভাবে দাঁড়িয়ে থাকার মাঝে হঠাৎ লাবণ্য,
“বাবা?বাবা?ওই দ্যাখো?সূর্যি মামা!কি সুন্দর!”
লাবণ্যের কথায় আমি এবং হৃদয় পূর্বদিকে তাকাই।একটু একটু করে সাগরের বুকে হেলে পড়ছে সূর্য!সাগরের বুকে যতই হেলে পড়ছে ততই আবির রঙ্গা হয়ে উঠছে আকাশ,এবং চারপাশ! চারপাশে থাকা দর্শনার্থীরা নিরবে সৈকতে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের উপর পা ভিজিয়ে সূর্যাস্মিত দেখায় ব্যস্ত।কেউবা ছবি তুলতে,ভিডিও করতে ব্যস্ত!আমি তাদের থেকে চোখ সরিয়ে আবার আকাশপানে তাকালাম।চোখের সামনে সূর্য আরো নিচে হেলে পড়লো, যেন সাগরের বুক ছুই ছুই!সূর্যের লাল আভা ছড়িয়ে গেলো সাগর জলে।ততক্ষণে লাল সূর্য সাগরে নিজেকে বিলিয়েও দিয়েছে অর্ধেক।
আমি আর লোভ জমিয়ে রাখতে পারলাম না! ঢেউয়ের উপর পা রাখলাম।আর এগিয়ে গেলাম সামনের দিকে।লাবণ্য হৃদয়ের কোলে।লাবণ্য পেছন থেকে বলে উঠে,
“মাম্মি? আমাকে কোলে নাও!?আমিও কাছ থেকে দেখবো!”
লাবণ্যের কথায় হৃদয় আর দেরী করলো না।সেও তাল মিলিয়ে পা ভিঁজালো সাগর জলে।আমি আনন্দে মুখরিত মুখে হৃদয়কে বলে উঠলাম,
“হৃদয় এমন মুহূর্তে একটা সেলফি তোলা হোক আমাদের!”
হৃদয় বললো,
“সেলফি না।হোল ফটো তুলবো ।সূর্যাস্তয়ের সময় হোল ফটো ক্যাপচারড দারুণ দেখাবে।”
বলে হৃদয় কারো মাধ্যমে ছবি তুলতে চারপাশে তাকালো।হৃদয়ের উল্টো দিকে একজনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেলো।হৃদয় ওমনি বলে উঠলো,
“এই যে ভাইয়া?আমাদের দুইটা ছবি তুলে দিতে পারবেন?”
লোকটি পেছনে ফিরলো।আমিও হাসোজ্জল মুখে ছবি তুলে দেবে লোকটির দিকে তাকালাম।কিন্তু ততক্ষণে আমার হাসোজ্জল মুখের মনোকাশে কালো মেঘে ছুঁয়ে যায়! যে ছবি তুলে দেবে সে হলো অভি!মানে আমার প্রাক্তন স্বামী!আমি দেখলাম অভি আমাদের ছবি তুলে দিতে কোনো রকম অনাগ্রহ দেখালো না।সহজ-সাবলীল মুখে হেসে এগিয়ে এসে হৃদয়ের থেকে ফোন নিল।
“ঠিক হয়ে দাঁড়ান। তুলে দিচ্ছি। ”
হৃদয় লাবণ্যকে নিয়ে আমার পাশে এসে দাঁড়ালো।মহূর্তে ক্যাপচারড হলো লাল আভায় রাঙ্গানো সূর্যাস্তে আমাদের ফ্যামিলির মেমোরিয়াল মুহূর্ত!আর আমার মুখে ছিল কৃত্রিম হাসি।যে হাসির আড়ালে ছিল দুঃখ,কষ্ট বেদনার রাশি।যেটা জানে না হৃদয়,হয়তো জানে না অভিও।তবে সাক্ষী ছিল ওই সূর্যাস্ত!ছবি তোলা শেষ হলে অভি হৃদয়ের দিকে ফোন এগিয়ে দেয়।দুইটা ফটো তুলেছে।দুটো ফটোই খুবই সুন্দর উঠেছে।হৃদয় খুশিতে আত্মহারা।বলে,
“আরেহ ভাই,আপনিতো বেশ ভালো ছবি তুলতে পারেন!আপনি কি কোনো ফটোগ্রাফার নাকি?”
“নাহ,ভাইয়া!”
“তাহলে…?”
“মাঝে মাঝে কিছু সুখী এবং ভালো মানুষদের ছবি তুললে আপনাআপনিই ছবি সুন্দর উঠে যায়।”
“দোয়া করবেন ভাই!আমি আমার বউকে নিয়ে খুব হ্যাপী!”
“দেখেই বুঝা যাচ্ছে হ্যাপী ফ্যামিলি!”
“জ্বী। আপনার কেউ নেই?আইমিন গার্লফ্রেন্ড অথবা অন্যকেউ?নাকি আবার ম্যারিড!”
অভি হাসলো।খুবই তাচ্ছিল্যকর সেই হাসি।অতঃপর হাসি চাপিয়ে তারপর বললো,
“একটা সময় সবাই ছিল!এখন আর নেই।এখন আমি একা!ভীষণ একা।কেউ নেই আমার আর!”
“ভীষণ একা মানে?আর কেউই নেই মানে!?”
“কিছু না।দেরী হয়ে যাচ্ছে গেলাম!বেস্ট অফ লাক,ভাই!”
চলে গেলো অভি।পরপর সূর্যটা সাগরের জলে কখন ডুবে গেলো বুঝতেই পারি নি!
৬৯.
রাত ঠিক ন’টা!বারান্দা একা দাঁড়িয়ে আছি।অনেক সময়ই হলো একা যে দাঁড়িয়ে আছি! এভাবে একা দাঁড়িয়ে হৃদয়ও অনেকবার লক্ষ করেছে আমাকে।তবে,কিছু বলে নি।আমার মনের ভেতরটা কেনজানি ভালো নেই।ভেতরটা বারবার কেনজানি একটা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চেষ্টা করছে।প্রশ্নটা কী আমি তাও জানি না।ফোনটা বেজে উঠে তৎক্ষনাৎ।টনক নড়ে উঠে আমার এবার। স্ক্রিনে তাকিয়ে খালামণির নাম্বার! রিসিভ করলাম।
“কিরে কেমন কাটছে তোদের ট্যুর?”
বড় এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিজেকে ধাতস্থতা করলাম।মিহি স্বরে বললাম,
“ভালো।”
“কবে ফিরছিস!?”
“গতকাল!”
“তাহলে দেখা হচ্ছে তাড়াতাড়ি?সাবধানে আসিস তোরা।”
চুপ করে রইলাম।খালামণি হয়তো ফোনটা কাটতে নেবেন।হাঁক ছেড়ে আস্ত গলায় বলে উঠলাম এবার,
“খালামণি অভি?..”
পুরো কথা না শেষ করার আগেই খালামণি বলে উঠলেন,
“আবার ওই বাটপারের কথা ক্যান?গতকাল তোর বাবাড থেকে জানতে পারলাম ছয়মাস আগে ওর দ্বিতীয় বউয়ের সাথে নাকি ডিভোর্স হয়েছে!তোর বাবার সাথে অভির বাবার নাকি গতকাল দেখা হয়েছে।উনারা এখন আর অভির সাথে থাকে না।ব্যাটা খুবই খারাপ।কেউ থাকবো না ওই ব্যাটার সাথে।হাহাহাহা!যাইহোক,ভালো থাক তাহলে।পরে সব কথা হবে।রাখলাম।গুড নাইট।”
কেঁটে দিলো কল!মনখারাপের কারণটা অতঃপর খালামণির ফোনকল থেকে তার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেলো!অভির আসলেই হয়েছে টা কী!আর আজ কেনইবা এতটা উন্মাদ দেখেছি!তবে….এমন অপ্রত্যাশিত কিছুই কি মানুষ পেয়ে থাকে যখন সে তার ভুল কর্ম করে? চুপ করে থাকলাম খানিক্ষন। তারপর নিজেকে আবার শুধালাম।থাক ওকে নিয়ে ভাবছি কেন আর!ওতো আমার অতীত!বিষাদময় অতীত!কাঁটা-জরাকীর্ণ অতীত!আমার ওই অতীত থেকে যে আমাকে টেনে তুলে সুন্দর একটা জীবন দান করেছে সেই তো আমার ভূবণআমার জীবন!আমার মরণ!আমার প্রিয়সুখ! দেরী করলাম না।দ্রুত পদে হেঁটে রুমে ঢুকলাম।লাবণ্য ঘুমিয়ে গেছে।তার পাশেই আধশোয়া হয়ে শুয়ে আছে হৃদয়। আমি একটুখানি মৃদু হেসে হৃদয়েরর কাছে গেলাম।একদম কাছে!গালে আলতো ছুঁয়ে বললাম,
“ঘুমিয়ে গেছেন?”
হৃদয় চোখ মেললো।বললো,
“নাহ!”
“কেন?”
“অপেক্ষা করছি তোমার জন্যে?”
“কেন অপেক্ষা?”
হৃদয় একদণ্ড চুপ থেকে মুখে কেনজানি দুষ্ট হাসি টানলো।বললো,
“ভালোবাসার পিপাসু আমি।ভীষণ ভালোবাসা প্রয়োজন!”
বলে একহাতে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।আমি উষ্ণতা ভরা গলায় বললাম,
“ভালোবাসি,হৃদয়!তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি!”
হৃদয় নরম হাসলো।ফিসফিস করে বললো,
“আমিও!”
সমাপ্তি!