#আলো আধারের খেলা
#পর্ব_২৩
#মুমতাহিনা_জান্নাত_মৌ
দূর মিয়া কি বলো এসব?মাথা পাগল হইছে নাকি তোমার?তোমাদের দুই ভাই এর মিল মহব্বতের কথা পুরো এলাকার লোক জানে।সবাই বলে ভাই হলে রুবেল আর রুয়েলের মতো হও।কি সুন্দর মিল দুই ভাই এর।এমন ভাই এ ভাই এ মিল সত্যি আজকাল দেখা যায় না।মাথা গরম না করে সব মিটমাট করে নাও।আর একখানে থাকলে এমন দুই চার টা কথা এমনিতেই হয়।
রুয়েলের আত্নীয়স্বজন রা এভাবে বোঝাতে লাগলো রুয়েলকে।
এদিকে সব দোষ করেও রুবেল সাধু সেজে বসে থাকলো।আর ঊর্মি হলো ধার্মিক বউ।দুইটাই হলো নাটকবাজ।মুখে মধু আর অন্তরে বিষ।খুব সুন্দর করে মানুষ জন পটাতে পারে।যেভাবে তারা রুয়েলকে পটিয়ে সবকিছু আত্নসাৎ করেছে।আর এখন কি সুন্দর অভিনয় করছে মামা আর দুলাভাই এর সামনে। মামা আর দুলাভাই এর সামনে মায়া কান্না কেঁদে পটিয়ে নিলো তাদেরকে।সেজন্য মামা আর দুলাভাই ভাবলো সব দোষ রুয়েলেরই।আর রুবেল আর ঊর্মি নির্দোষ।সেজন্য মামা আর দুলাভাই রুয়েলকে বোঝাতে লাগলো।
কিন্তু রুয়েল বললো,না মামা!আমাকে আর বোঝাতে হবে না।যা বোঝার বুঝে গেছি আমি।আমি আর চাইছি না একসাথে থাকতে।
রুবেল সাথে সাথে তখন চিৎকার করে বললো, দেখছেন মামা!কত চেঞ্জ হয়েছে সে।এই কি সেই রুয়েল!দেখেন আপনারাই দেখেন।আলাদা হওয়ার জন্য কিভাবে উঠেপড়ে লাগছে।এখন আপনারাই বলুন আমার কি করা উচিত?
ঊর্মি ও রুবেলের সাথে সাথে গলা বাজিয়ে উঠলো,আমি কি আর সাধে চিল্লায়?ওদের দুইজনের কান্ডকারখানা দেখেই তো মুখ দিয়ে আমার কথা বের হয়।আলাদা হওয়ার জন্য আপনাদের পর্যন্ত বলেছে।কি দিনকাল আইলো ভাই।মুখোশধারী কিছু শয়তান মেয়ের জন্য এভাবে সংসারে ফাটল ধরে।জান্নাতকে উদ্দেশ্য করে বললো ঊর্মি।অথচ জান্নাত এ ব্যাপারে কোনো কথাই বলে নি।তবুও বার বার ঊর্মি জান্নাতের দিকে আংগুল তোলে।
রুবেল আবার বলতে লাগলো, জানেন দুলাভাই!আমাকে রুয়েল মারতেও এসেছিলো।ওর কতো বড় সাহস?আমাকে মারতে আসে।বলেন তো এখন!আমার মাথা টা কি করে ঠিক থাকে?
রুয়েল চুপচাপ থাকলো।সে একটি কথাও বললো না।কারণ সে আর কিছুতেই একখানে খাবে না।কারণ তার মন একদম বিগড়ে গেছে।তার ভাই যত কাহিনীই করুক না কেনো রুয়েলের মন আর গলাতে পারবে না।
রুয়েলের মামা তখন বললো, আচ্ছা সবাই এখন একটু চুপ করো।আমি যা সিদ্ধান্ত নেবো তোমাদের কিন্তু এখন সেটাই শুনতে হবে।আর সেভাবেই চলতে হবে।শুনবে আমার কথা।
রুয়েল তখন বললো,হ্যাঁ অবশ্যই মামা।আপনি হলেন গুরুজন। আশা করি বুঝে শুনেই সিদ্ধান্ত নেবেন।
মামা তখন বললো, প্রথম পরামর্শ হলো এতোদিন যা যা হয়েছে সবকিছু ভুলে যাও। আর কখনোই ভুল করে আলাদা হওয়ার কথা বলবে না।দুইভাই মিলেমিশে থাকো।আমরা চাই না তোমরা আলাদা হও।কারণ বাহিরের লোকজন খারাপ বলবে।তোমরা দয়া করে বাহিরের মানুষের হাসির পাত্র হও না।এভাবে একটা সুখের সংসারে আমরা কিছুতেই ফাটল ধরতে দিবো না।আমরা আজ তাহলে আসি।
রুয়েল তখন বললো,না মামা।আপনারা আগেই যাবেন না।আমি বলেছি তো আর হবে না আমাদের একসাথে থাকা।যে হাঁড়ি ভেংগে যায় তা আর কখনো জোড়া লাগে না।ঠিক তেমনি ভাবে আমাদের সংসার ইতোমধ্যে ভেংগেই গেছে।এটা আর জোড়া লাগানো সম্ভব না।আমি আর পারছি না।আমার সহ্যের সীমা ছেড়ে গেছে।আপনারা এখনো আসল কাহিনী জানেন না।সংসারে যা শুরু হইছে সেখানে একটা সুস্থ মানুষ কিছুতেই থাকতে পারে না।
রুবেল সেই কথা শুনে বললো, তোকে কে বারণ করছে? যা আলাদা হ।কেউ কি তোকে ধরে আছে?যা এখনি এবং আজ থেকে আলাদা হয়ে যা।
রুয়েল তখন বললো,তাহলে আমার সবকিছু বুঝিয়ে দাও।আমার বিল্ডিং জমি জমা,আর গাড়ি আমাকে দিয়ে দাও।ব্যাংকে আমার কত টাকা আছে তার হিসাব দাও আগে।
–টাকা?কিসের টাকা?ব্যাংকে কোনো টাকা নাই তোর।তুই ব্যাংক চেক করে দেখ গিয়ে।একটা টাকাও নাই।এই বলে রুবেল ঊর্মির দিকে তাকালো।ঊর্মি তখন মুখ ভেংচিয়ে বললো,তুই টাকা পাঠালে তো টাকা থাকবে ব্যাংকে?তুই কোনো টাকাই পাঠাস নি।
রুবেল আর ঊর্মির কথা শুনে রুয়েলের মাথা যেনো আরো বেশি হিট হয়ে গেলো।সে তবুও স্বাভাবিক ভাবেই বললো,টাকা পাঠাই নি মানে?তাহলে বিদেশ থেকে আমি মাসে মাসে কাকে টাকা দিতাম?
–সেটা তুই ভালো জানিস।তোর টাকা কাকে দিয়েছিস সেটা আমরা কি করে জানবো?এই বলে রুবেল তার মামাকে বললো,মামা শোনেন!আজ আমি একটা সত্য কথা বলছি।রুয়েল আগে ভালোই টাকা পাঠাতো।আর সেই টাকা দিয়ে গ্রামে কিছু জমি নিয়েছি।কিন্তু তারপর যে কাকে টাকা দিয়েছে সেটা আমার জানা নাই।এই বিল্ডিং কিন্তু আমার টাকাই বানিয়েছি।এতে ওর একটা টাকাও ছিলো না।তবুও দয়া করে ওর নাম বসিয়েছি।আর আজ সেই বিল্ডিং এর ভাগ চাইতে আসছে।কত বড় বেঈমান ভাবতে পারছেন?
রুয়েল এবার আর চুপ করে থাকতে পারলো না।সে রাগ দেখিয়ে চিৎকার করে বললো,ভাইয়া আল্লাহকে একটু ভয় করেন।দয়া করে এভাবে মিথ্যা কথা বলবেন না।আল্লাহ কিন্তু সব দেখছে।কেনো এভাবে ঠকাচ্ছেন আমাকে?আমার কষ্ট করা উপার্জনের টাকায় কিন্তু বিল্ডিং দুইটা তৈরি হইছে।আপনি তো অনেক আগেই বিদেশ থেকে চলে এসেছেন।আপনি টাকা পেলেন কই?
রুবেল একদম রুয়েলের মুখের কাছে চলে গেলো আর আংগুল দেখিয়ে বললো,এই বেঈমান!আমাকে আল্লাহর ভয় দেখাচ্ছিস?তুই আগে ভয় কর আল্লাহকে।আগে বল আমি যদি তোকে না নিয়ে যেতাম বিদেশ তুই কি যেতে পারতিছ সেখানে?বিদেশ নিয়ে গেছি দেখেই তো টাকার মুখ দেখেছিস।
রুয়েল তখন বললো, সেই টাকা তো আপনারাই খেয়েছেন।আমার কি কোনো বউ বাচ্চা ছিলো?যে তারা ভোগ করছে আমার টাকা?আপনার বউ বাচ্চা তারাই তো খেয়েছে আমার কামাই।আমি যা ইনকাম করছি সব আপনাদেরই পাঠায়ছি।আপনারা সবাই বসে থেকে খেয়েছেন।
–বেঈমান!তুই যে এমন মুনাফিক হবি আমার তা জানা ছিলো না।যা আজ থেকে তুই এই বাসাতেও থাকতে পারবি না।বের হয়ে যা আমার বাসা থেকে।তোকে কোনো কিছুর ভাগ দিবো না আমি।দেখি তুই কিভাবে এসবের ভাগ পাস?
–আপনি বললেই হলো নাকি?মগের মুল্লুক পাইছেন?সব কিছু জোর করে আদায় করা যায় না কিন্তু।আমি আমার অধিকার ঠিক আদায় করে নেবো।
রুবেল এই কথা শোনামাত্র রুয়েলকে আবার মারতে এলো। আর মামা দুলাভাই এর সামনেই রুয়েলকে চড় মারতে লাগলো।রুয়েল এবার আর নিজেকে সামলাতে পারলো না।কারণ বার বার এভাবে চড় খেতে খেতে তার শরীরের রক্ত গরম হয়ে গেলো।তখন সেও রাগ করে তার ভাইকে ধাক্কা দিয়ে বললো,বার বার বলেছি আমার গায়ে হাত তুলবেন না।আমি কিন্তু আর ছোট নই।তবুও কেনো আমাকে এভাবে মারেন?
মামা তখন দৌঁড়ে এসে রুবেলকে তুললো,আর দুলাভাই রুয়েলকে বললো, রুয়েল কি হচ্ছে এসব?তুমি তোমার ভাইকে ধাক্কা দিলে?
রুয়েল তখন বললো, আমি আগে হাত তুলেছি?উনিই তো আমাকে আগে মারলেন। আজকাল আমাকে কথায় কথায় মারছেন।যখন তখন মারছেন।এর বিচার কে করবে?
–উনি মারতেই পারে।কারণ উনি তোমার বড় ভাই হয়।তুমি আসলেই বেয়াদব হয়ে গেছো।ছিঃ রুয়েল তোমার দ্বারা এই কাজ আমরা আশা করি নি।
এদিকে ঊর্মি হাউমাউ করে কাঁদছে।ও আল্লাহ এই দিন দেখার জন্য বাঁচিয়ে রেখেছো।ছোট ভাই এর হাতে বড় ভাই মার খায়।কি জামানা আইলো।
রুয়েলের মা এবার কথা বলে উঠলো।তিনি এতোক্ষণ চুপচাপ ছিলেন।তিনি তার ভাইকে বললেন,
ভাই শোন!আমি কারো দোষ দিতে চাই না।আমি এই কয়দিনে যা বোঝার বুঝে গেছি।তোরা আর এদের দুইজনকে বোঝাস না।আমার মনে হয় এদের কে আলাদা করাই ভালো হবে।তা না হলে খুব খারাপ কিছু ঘটতে পারে।তোরা আজ এসে ভালোই করেছিস।এদের দুইজনকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আলাদা করে দে।
রুয়েলের মায়ের কথা শুনে ঊর্মি গলা বাজিয়ে উঠলো, আর বললো,আপনি এটা বলতে পারলেন?আপনার রুয়েল চোখের সামনেই রুবেল কে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো তারপরেও ওকে কিছু বললেন না?ছেলের হয়ে ওকালতি করতে আসছেন?ওকে আলাদা করে দেওয়ার আইডিয়া টা কি তাহলে আপনারই?
–ঊর্মি চুপ করো থাকো।খুব মুখ ফুটেছে আজকাল তোমার।যা নয় তাই বলো।আর আলাদা হওয়ার কথাতো তুমিই প্রথম বলেছো।জান্নাত আর রুয়েল একবারও বলে নি।সংসারের মধ্যে অশান্তি তুমিই কিন্তু শুরু করেছো?
–ও মোর আল্লাহ!কি বলে ইনি।এতোদিন তাহলে কি আমরা দুধ দিয়ে কালসাপ পুষেছি। যার এতোদিন খেলো তার সাথেই বেঈমানি করছে।এই বলে ঊর্মি মায়া কান্না জুড়ে দিলো।
রুয়েল তখন বললো মুখ সামলিয়ে কথা বলো ভাবি।উনি আমার মা হয়।মায়ের সাথে ভালো করে কথা বলো।আর তুমি কি বললে তোমার টা খেয়েছে মা?তুমি টাকা কই পেলে?বরং তুমিই ওনার ছেলের ইনকাম বসে বসে খাচ্ছো।
ঊর্মি তখন রুবেলের কাছে গিয়ে বললো,তুমি কিছু বলছো না কেনো?তোমার ভাই যে আমাকে যা নয় তাই বলছে তুমি তবুও চুপ করে থাকবে?সবার সামনে আমাকে কিভাবে অপমান করছে?
রুবেল ঊর্মির প্রশ্নের কোনো উত্তর দিলো না।সে তখন তার মামার কাছে গিয়ে বললো,মামা ডিসিশন ফাইনাল করলাম আমি।আমি নিজেও আর একসাথে থাকতে চাই না।ওকে আলাদা করেই দিতে চাই।তবে রুয়েল বিল্ডিং এ থাকতে পারবে না।ওকে গ্রামে গিয়ে আলাদা থাকতে হবে।
রুয়েল সেই কথা শুনে বললো, ভাই আপনি কিন্তু আবার ঝগড়ার সৃষ্টি করছেন।সারাবছর কষ্ট করে ইনকাম করলাম,আর বাড়ি তৈরি করলাম।তাতে আমি থাকতে পারবো না?
–শোন আগে পুরো কথা।আমি তো বলছি না থাকতে পারবি না।থাকবি, অবশ্যই থাকবি।তবে দুই মাস পরে। কারণ কোনো ফ্লাট খালি নাই এখন।আর সবাই দুইমাসের অগ্রিম ভাড়া দিয়ে উঠেছে।সেজন্য বিল্ডিং এ থাকতে হলে দুইমাস অপেক্ষা করতে হবে।
রুয়েল তার ভাই এর কথা শুনে আর কিছু বললো না।কারন সে কিছু বললেই ঝগড়া হয়ে যায়।রুয়েল ভাবলো,দুইমাসের ই তো ব্যাপার।তারপর তো সে তার বিল্ডিং পেয়েই যাবে।তবে সে সিদ্ধান্ত নিলো গ্রামে গিয়ে থাকবে না।কারণ গ্রামে গিয়ে থাকলে পরে যদি রুবেল আর বিল্ডিং না দিতে চায়?সেজন্য এখানে থেকেই তাকে তার বিল্ডিং দখল করতে হবে।
এইভাবে সবাই আবার একসাথে থাকা শুরু করলো।তবে সেটা শুধুমাত্র দুইমাসের জন্য।দুইমাস পরেই রুবেল রুয়েলের ভাগ বুঝে দেবে সবার সামনে সেটাই কথা দিলো।
🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂
ইদানীং ঊর্মি অনেক ভালো হয়ে গেছে।সে আর অযথাই চিল্লাচিল্লি করে না।সবার সাথে ভালো করেই কথা বলে।সেজন্য রুবেল ও আর সংসারে অশান্তির সৃষ্টি করে না।
রুয়েল তার ভাই ভাবীর এতো পরিবর্তন দেখে ভীষণ খুশি হলো।সে ভাবলো জমিজমা ভাগ হওয়ার কথা শুনে হয়তো তারা ভালো হয়ে গেছে।এইভাবে মিলেমিশে প্রথম থেকে থাকলে তো আর কোনো অশান্তিই হতো না সংসারে।রুবেল নিজের মুখে রুয়েলকে দোকানেও বসতে বললো।রুবেলের ব্যবহার দেখে মনে হলো এতোদিন কিছুই হয় নি তাদের সাথে।
আজ জান্নাতের এস,এস,সি পরীক্ষার রেজাল্ট বের হলো।জান্নাত তার স্কুলের মধ্যে একাই এ প্লাস পেয়ে পাস করেছে।জান্নাতের থেকে রুয়েল বেশি খুশি হলো।খুশিতে সে সারা এলাকা মিষ্টি বিতরণ করে বেড়ালো।আর এই মিষ্টি কিনে এনেছে রুবেল নিজেই।
এদিকে ঊর্মি বাসায় হরেক রকমের খাবার রান্না করলো আজ।জান্নাতের ফ্যামিলির সবাইকে তাদের বাসায় ইনভাইট করেছে।জান্নাতের বাবা মা দাদী তো একদম খুশিতে আত্নহারা হয়ে গেছে।জান্নাত নিজেও বেশ খুশি আজ।
রুবেল তখন সবার সামনে রুয়েলকে বললো,জান্নাতকে এখন ভালো একটা কলেজ এ ভর্তি করে দে।ও যখন মেধাবী স্টুডেন্ট তাহলে কেনো সে পড়াশোনা বাদ দেবে।সংসারের পাশাপাশি পড়ালেখা টাও চালিয়ে যাবে সে।
রুয়েল সেই কথা শুনে বললো, হ্যাঁ অবশ্যই।আমিও চাই জান্নাত কলেজে পড়ুক।জান্নাত নিজেও অনেকদূর পর্যন্ত পড়তে চায়।তার ভীষণ ইচ্ছা পড়ালেখা করার।সে তার ইচ্ছার কথা আমাকে বলেছে।রুয়েল জান্নাতকে কথা দিয়েছে সে যতদূর মন চায় পড়তে পারবে।
জান্নাত তার কলেজে পড়ার কথা শুনে ভীষণ খুশি হলো।কারণ সে তো এটাই চায়।তার স্বামীর বাড়ির সবাই যে তাকে এভাবে সাপোর্ট করবে সত্যি সে ভাবতে পারে নি।আর ঊর্মি আর রুবেলের পরিবর্তন দেখে সত্যি সবাই তাজ্জব লেগে গেলো।তবে রুয়েলের মা কিছুতেই এটা বিশ্বাস করতে পারলেন না।এটা কি করে সম্ভব?
ঊর্মি আর রুবেল হঠাৎ এতো ভালো হলো কেমনে?
এদিকে জান্নাতের বাবা যখন জান্নাতের স্কুলের স্যারদের মিষ্টি দিতে গেলেন তখন জান্নাতের স্যার ম্যাডামরা জান্নাতের বিয়ের কথা শুনে ভীষণ রেগে গেলেন।তিনি জহির সাহেব কে বললেন,আপনারা মস্ত বড় এক ভুল করেছেন।এতো তাড়াতাড়ি কেনো বিয়ে দিয়েছেন জান্নাতের?
জহির সাহেব তখন বললো, স্যার আমরা মধ্যবিত্ত ঘরের মানুষ। অতোদূর পড়ার সামর্থ আমাদের নেই।তাছাড়া ভালো ঘর পেয়ে কি করে হাতছাড়া করি?তবে আমার জামাই আর জামাই এর ফ্যামিলির লোকজন কিন্তু জান্নাতকে ভালো কলেজে ভর্তি করে দেবেন।তারা তাকে পড়াতে চায়।
–ও তাই নাকি?তাহলে তো ভালোই।আমরা ভেবেছি জান্নাত মনে হয় আর পড়বে না।
আজ রুয়েল জান্নাতের সাথে স্পেশাল ভাবে সময় কাটাতে চায়।কারণ বিয়ের পর থেকে জান্নাত ঘরের মধ্যে বন্দি হয়ে আছে।সংসারের এসব ঝামেলার কারণে জান্নাতকে নিয়ে সে কোথাও যেতে পারে নি।সেজন্য রুয়েল ঠিক করলো জান্নাত কে নিয়ে সে বেড়াতে যাবে।আজ সারাদিন ঘুরে বেড়াবে।তারপর ওই পাশ দিয়েই আজকেই তার শশুড় বাড়ি যাবে।তারপর সেখানে গিয়ে কিছুদিন থাকবে।তাহলে জান্নাতের মন টা অনেক ভালো হয়ে যাবে।সে সংসারের এসব অশান্তির কথা ভুলে যাবে।তাছাড়া কলেজ শুরু হলে তো আর জান্নাত বাবার বাড়ি যেতে পারবে না।
#চলবে,