#আষাঢ়ে_শ্রাবণের_বর্ষণ
#মাইশাতুল_মিহির
[পর্ব-৩২]
“ম্যাডাম, ঘুমিয়ে ছিলেন তাই ডাক দেই নি। অভ্রকে নিয়ে বাহিরে যাচ্ছি। গতকালকের মতো আবার টেনশন করে প্রেশার লো করবেন না। সন্ধ্যায় ফিরবো। টেক কেয়ার বউজান।” – এবি।
ঘুম থেকে উঠে বালিশের পাশে আবরারের রেখে যাওয়া চিরকুট টা পড়ে আনমনে মুচকি হাসলো দীবা। আজকের সকালটা সুন্দর। মোহনীয় করে তুলেছে আবরার। অনুপস্থিত থেকেও মুগ্ধতায় ছড়িয়ে দিয়েছে দীবার অবুঝ মন। কিন্তু দেয়াল ঘড়িতে সময় দেখে চোখ দুটো তার চড়কগাছের ন্যায়। প্রতিবার এমন হয়! যেদিন আবরার পাশে থাকে সেদিন-ই ঘুম ভাঙ্গে দেরিতে। এমনটা হয় কেন? ওইদিন রাতেই কেন ভালো ঘুম আসে চোখে? দীবা এক মুহূর্তও বিলম্ব না করে দ্রুততার সঙে নিজের রুমে ছুটে আসলো। দরজাক ঠেলে ভিতরে ঢুকে প্রথম দফায় হতবাক হয়ে গেলো। রিমি নুরাকে রুমে বসে থাকতে দেখেই সাথে সাথে বিড়বিড় করে বলে উঠলো, ‘ডাইনি দুইটা এখানে কি করছে?’
রিমি বিছানার হেডসাইডে গেলান দিয়ে আপন মনে ইন্ট্র্যাগ্রাম চালাচ্ছে। নুরা স্টাডি টেবিলের উপর পা তুলে বসে উপন্যাসের পৃষ্টা ঘাটছে। দুইজনই ইউনিফর্ম পরিহিত। সকালে সময় মতো তৈরি হয়ে দীবার রুমে এসেছিলো দুইজন। প্রতিদিনকার মতো আজও তিনজন একইসঙ্গে নাস্তার টেবিলে যাবে এই ভেবে। কিন্তু সে গুড়ে বালি। রুমে এসে দেখলো দীবা নেই। অনেক খুঁজাখুঁজি ও ভাবাভাবির পর বুঝতে পারলো আবরারের রুমে। তখন থেকেই দুইজন এখানে অপেক্ষায় আছে।
দীবা মৌনতার সঙ্গে রুমের ভিতরে ঢুকলো। নিজের মতো করে কাভার্ড থেকে কাপড় নামাতে লাগলো। ভাব এমন যেন এখানে সে ব্যতিত আর কারোর উপস্থিতি নেই। দীবার এমন ডোন্ট কেয়ার ভাব দেখে রিমি নুরা ভ্রুঁ কুঁচকে একে অপরের দিকে তাকালো। নুরা হাতে থাকা বই বন্ধ করে লম্বা হাই তুলে বলে উঠলো, ‘রিমি রে? আমাদের রুটিন বদলাতে হবে।’
রিমি হেলান দেওয়া অবস্থা পরিবর্তন করে সোজা হয়ে বসলো। কথার তাল মিলিয়ে নিজেও শুধাল, ‘হ, আমরা তো আর মিঙ্গেল না যে সকালে উঠতে দেরি হবে। রাতে তাদের কতো কাজকারবার থাকে।’
রিমির এমন কথা শুনে স্তম্ভিত হয়ে গেলো দীবা। অবাক হয়ে চোখ দুটো ছোট ছোট করে রিমির দিকে তাকালো। নুরাও রিমির কথার প্রত্যুত্তরে বললো, ‘হ ভাই। এখন থেকে রেডি হয়ে সোজা নাস্তার টেবিলে চলে যাবো। মানুষ তো ঘুমিয়ে থাকবে। তাদের জন্য আমাদের দেরি করে লাভ কি?’
দীবা কোমড়ে এক হাত রেখে চোখ পাকিয়ে বলে উঠলো, ‘আশ্চর্য ভাই। যা বলার সরাসরি বল না। এভাবে কথা বলছিস কেন?’
রিমি চেহারায় কাদুকাদু ভাব এনে বললো, ‘নুরা বোইন রে, আমাদের আর ভিতরে বউ রেখে দরজা আটকে ভাইয়ের থেকে টাকা আদায় করা হবে না।’
দীবা বুঝতে না পেরে প্রশ্ন করলো, ‘কিসের টাকা?’
নুরা ধপাস করে টেবিল থেকে নেমে দাঁড়ালো। দীবার কাছে এসে মাথায় একটা গা:ট্টা মে:রে বললো, ‘বাসর রাতের কথা বলছে গাধা।’
মাথায় গা:ট্টা মা:রায় চোখ পাকিয়ে তাকালো দীবা। রিমি বিছানা থেকে নেমে এসে দীবার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ভ্রুঁ জোড়া নাচিয়ে নাচিয়ে বললো, ‘আমরা কি ফুফুর ডাক শুনতে পারবো বেইব?’
‘তোদের মন্ডু!’ কথাটা বলেই কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো দীবা। সে যেতেই রিমি নুরা উচ্চস্বরে হাসিতে মেতে উঠলো। দুইজন-ই খুশি হলো এই ভেবে যে আবরার আর দীবার সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
___________________________
আষাঢ়মাস শেষ হতে আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। বাদলা দিনের সুবিশাল আকাশটা ঘন কালো মেঘে আচ্ছন্ন। কলেজের পাশে কৃষ্ণচূড়া ফুল গুলো বৃষ্টির পানিতে ভিজে টুইটুম্বুর। সদ্য ফোটা কচি পাতা গুলো তার সবুজ রঙ্গে চট্টগামের পরিবেশ করেছে প্রাকৃতিক রানী। পানিতে ফোটা শাপলা ফুলের মনোরম সৌন্দর্য যেন বর্ষাকালের ঋতুকে শ্রেষ্ঠ ঋতু হিসেবে গণ্য করে। সকাল থেকেই শীতর বাতাসের সঙ্গে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি ছিলো। দুপুরের দিকে আকাশটা স্বচ্ছতায় মুখরিত হলো। ক্লাস শেষে বেল পরতেই আগ্রাবাদ মহিলা কলেজ কোলহলে পরিপূর্ণ হলো। শিক্ষার্থীদের আনাগোনা শুরু হলো চারপাশে। দীবা সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় রিমি ও নুরার উদ্দেশ্যে বললো, ‘তোরা বাড়ি চলে যা। আমি নোট গুলো রাজ স্যারকে দেখিয়ে আসছি।’
সিঁড়ির থেকে নেমে তিনজন একপাশে দাঁড়ালো। নুরা বললো, ‘ পরে তুই একা যাবি কিভাবে? আমরা নাহয় একটু দাঁড়িয়ে থাকি। তোর কাজ শেষ হলে এক সাথে যাবো।’
রিমিও সম্মতি দিলো নুরার কথায়। কিন্তু দীবা শুনলো না। নোট গুলো দেখাতে দেখাতে অনেক সময় লাগবে। তাছাড়া এখন বৃষ্টির সময় একা রিকশা দিয়ে বাড়ি যেতে ইচ্ছে করছে তার। তাই রিমি নুরাকে রাখতে চাইলো না। জোরপূর্বক দুজনকে পাঠিয়ে দিলো বাড়িতে। ওরা যেতেই স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো দীবা। মনে মনে ভাবলো অন্য কোনো সময় তিনজন মিলে ঘুরবে। অতঃপর সময় নষ্ট না করে রাজের কেবিনের দিকে পা বাড়ালো। দরজার সামনে এসে হাত উঠালো টোকা দিতে। তখুনি রাজ কেবিনের দরজা খুলে বাহিরে আসলো। হঠাৎ বাহিরে আসায় টোকা দরজায় না পরে রাজের গায়ে পরলো। আকস্মিক ঘটনায় হকচকিয়ে গেলো দীবা। ভড়কে গিয়ে আমতা আমতা করে বললো, ‘আই’ম সরি স্যার। আমি দেখতে পাই নি। সরি। আসলে নক করতে এসেছিলাম তখুনি..! ‘
দীবার কথা সম্পূর্ণ শেষ করতে দিলো না রাজ। তার আগেই রাজ বলে উঠলো, ‘ইট’স ওকে। এখানে তোমার দোষ নেই। আমি হঠাৎ বেরিয়েছিলাম তাই গায়ে লেগেছে।’
দীবা প্রত্যুত্তর করলো না। অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য কিছুটা লজ্জিত হলো দীবা। অপরাধীর মতো তাকিয়ে রইলো কেবল। রাজ মৃদু হেসে দীবাকে স্বাভাবিক করতে বললো, ‘কি বলতে এসেছিলে নাকি?’
শুকিয়ে যাওয়া উষ্ঠধয়ে জিভ বুলিয়ে ভিজিয়ে নিলো। শুধাল, ‘আসলে স্যার নোট গুলো আপনাকে দেখাতে এসেছি। সব কিছু ঠিক ঠাক আছে কিনা তাই। যদি একটু হেল্প করতেন।’
‘কিন্তু এখন তো কলেজ ছুটি হয়ে গেছে। ব্রেক টাইমে আসতে পারতে।’
দীবা মাথা কিছুটা নত করে অন্য দিকে তাকিয়ে মিনমিনে কন্ঠে বললো, ‘আসলে ব্রেক টাইমে আসবো ভেবেছিলাম। কিন্তু তখন অনেক ক্ষিদে পেয়েছে। তাই আর…”
দীবার কথা শুনে আলতোভাবে হাসলো রাজ। যতোবার দীবার সাথে দেখা হচ্ছে ; ততবার দীবার সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য জানতে পারছে। মেয়েটার সব কিছুই মুগ্ধ হওয়ার মতো। এই যে ডিনারের সময়! দীবার খাওয়া দেখে অবাক হয়েছিলো রাজ। মেয়েটা এতো আস্তে আস্তে খায়? মুরগির বাচ্চাও বোধহয় দীবার থেকে বেশি খায়। তাই তো শরিরের এই অবস্থা। ভাবতেই দীবার অগোচরে হাসলো রাজ। অতঃপর কেবিনের দরজা লাগিয়ে বললো, ‘সমস্যা নেই। আসো পাশের রেস্টুরেন্টে যাই। আমার প্রচুর ক্ষিদে পেয়েছে। এক সাথে লাঞ্চ করে নিবো আর তোমার নোট গুলো দেখে নিবো। আসো।’
দীবা কিছুটা ইতস্ততবোধ করতে লাগলো। যাবে কি যাবে না এই নিয়ে দ্বিধায় পরেছে সে। রাজ আবারো বলল, ‘সমস্যা হলে থাক। লাইব্রেরিতে বসি ওখানেই দেখে নিচ্ছি নোট গুলো।’
দীবা মনে মনে ভাবতে লাগলো। নোট গুলো তো দেখতে অনেক সময় লাগবে। এতোক্ষণ স্যার না খেয়ে থাকবে? ব্যাপার টা তার খারাপ লাগলো। তাই আর দ্বিমত পোষণ করলো না। রাজি হয়ে গেলো যাওয়ার জন্য। উপরে উপরে শান্ত থাকলেও ভিতরে মহা খুশি হলো রাজ। সময়টা অল্প হোক, তবুও একান্তে দীবার পাশাপাশি থাকতে পারবে সে। এতো গুলো বছর অনেক দূরত্ব সহ্য করেছে। এখন আর না। এইসএসসি এক্সামের পরেই দীবাকে তার নিজের করে নিবে। একান্তই নিজের।
_______________________
চট্টগ্রাম মানেই প্রাচুর্যের রানী। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য চট্টগাম অতুলনীয়। সেখানে যদি হয় বর্ষাকাল তাহলে তো আর কোনো কথাই নেই। সকাল থেকে দুপুর অব্দি ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তা ঘটা ভিজে আছে। গাছের পাতা গুলো বৃষ্টির পানিতে ভিজে চকচকে রূপ ধারণ করেছে। ভিজে যাওয়া পিচ ঢালা রাস্তায় পাশাপাশি হাঁটছে আবরার ও অভ্র। দুইজনের পরনে সাদা হুডি। মাথায় হুডি তুলে মুখে কালো মাক্স পরেছে যেন কেউ চিনতে না পারে। পড়ন্ত বিকেলের আভাষ চারপাশে। সূর্যমামা মাথার উপর থেকে পশ্চিম দিকে হেলে পরেছে। পরিবেশ শীতল। সারাটা দিন ঘুরাঘুরির পর মনটা হালকা হালকা লাগছে অভ্রের। অবশ্য আবরারের পাশে থাকলে তার মন কখনোই খারাপ থাকে না। আবরারকে বড় ভাই হিসেবে সবসময় ট্রিট করে এসেছে অভ্র। হাঁটতে হাঁটতে দীবাদের কলেজের সামনে সতেরো নাম্বার রোডে এসে পরেছে। আবরার দীবাদের কলেজটা দেখিয়ে দিলো। তারপর হঠাৎ-ই তার পুরনো বন্ধুর কথা মনে পরলো।
‘আসো আজ তোমাকে আমার ছোটবেলার একটা বন্ধুর সাথে পরিচয় করিয়ে দেই।’
অভ্র জানতে চাইলো, ‘নাম কি? বাড়ি যাবেন নাকি তার?’
আবরার প্রত্যুত্তর করলো, ‘পল্লব দাশ। বাড়িতে যাবো না। পল্লবের একটা রেস্টুরেন্ট এখানেই আছে। চলো যাই।’
অভ্রকে নিয়ে কাঙ্ক্ষিত রেস্টুরেন্টে এসে পৌঁছালো আবরার। একটা ওয়েটারের কাছে নাম বলতেই ওয়েটার তাদের নিয়ে রেস্টুরেন্টের মালকিনের কাছে নিয়ে যায়। আবরার তার বন্ধু পল্লবকে নিজের পরিচয় দিতেই খুশিতে আমোদিত হয়ে উঠে পল্লব। শৈশবের প্রাণপ্রিয় বন্ধুকে কাছে পেয়ে জড়িয়ে ধরলো প্রথমে। পরিচয় করিয়ে দিলো অভ্রের সাথে। খুশিতে বসে তিনজন আলোচনায় মশগুল হলো। আবরার প্রথমেই অনুরোধ করলো তার পরিচয় এখানে না দিতে। তাই করলো পল্লব। আশেপাশের কেউ টেরও পেলো না এখানে এতো বড় নামকরা গায়ক আছে।
দীর্ঘসময় ধরে দুই বন্ধু জমিয়ে আড্ডা দেবার পরে উঠে দাঁড়াল আবরার। পল্লবের কাছ থেকে বিদায় নিলো। অভ্র কে নিয়ে বেড়িয়ে যাবার মুহূর্তেই দূরের একটা টেবিলে নজর গেলো তার। বিস্মিত হলো আবরার। হাত ঘড়িতে সময় দেখে নিলো একবার। দীবাদের কলেজ তো অনেক আগেই ছুটি হয়ে গেছে। তাহলে মেয়েটা এখানে কি করছে? ছুটির পর দীবা বাড়ি যায় নি রা পরনের ইউনিফর্ম দেখেই বুঝে গেছে আবরার। প্রথমে ভেবেছিলো দীবার কাছে যাবে। কিন্তু তার আগেই দীবার সামনে বসে থাকা লোকটাকে দেখেই চোয়াল শক্ত হয়ে এলো তার। দাঁতে দাঁত লেগে আসলো নিরবে। মারাক্তক লেভেলের রাগের কারণে কপালের রগ ফুলে নীল বর্ণ ধারণ করেছে। কিন্তু প্রতিক্রিয়া দেখালো আবরার। চুপচাপ বেড়িয়ে গেলো অভ্রকে নিয়ে। যদিও অভ্র দীবাকে দেখে নি।
______________________
হাত ঘড়িতে সময় দেখলো রাজ। তারপর দীবার দিকে তাকিয়ে বললো, ‘তোমার সব গুলো নোট পারফেক্ট হয়েছে। আমি যেগুলো দাগিয়ে দিয়েছি তা আবারো লিখে দেখাবে। আর হ্যাঁ বাড়িতে বেশি বেশি প্র্যাক্টিস করবে।’
দীবা প্রত্যুত্তরে মুচকি হেসে বললো, ‘ঠিক আছে।’
‘তাহলে চলো। এবার উঠি।’
বিল পে করে উঠে দাঁড়ালো দুজন। রেস্টুরেন্ট থেকে বেড়িয়ে আসার জন্য পা বাড়ালো। দীবা রাজের পিছু পিছু হাঁটছে। রাস্তার একপাশে দাঁড়িয়ে দীবার উদ্দেশ্যে রাজ বলে উঠলো, ‘অনেক দেরি হয়ে গেছে তোমার তাই না? একা যেতে হবে না। বাড়ি পৌঁছে দেই আসো।’
দীবা চটজলদি বারণ করে বললো, ‘না স্যার। আমি একা যেতে পারবো। সমস্যা নেই।’
রাজ আবারো হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললো, ‘আমি এখন ফ্রি আছি। পৌঁছে দিতে পারবো। আসো?’
দীবা প্রথমের মতোই নাকচ করলো, ‘আমি একাই যেতে পারবো। আমাকে একটা রিকশা ডেকে দেন শুধু।’
রাজ দীবার কথা মতো একটা রিকশা ডেকে দিলো। দীবা সেখানে উঠে বসতেই বিদায় জানালো রাজ। চলতে লাগলো রিকশা। পকেটে দুই হাত গুঁজে রিকশার দিকে তাকিয়ে রইলো রাজ। মৃদু হাসি ফুটে এলো তার ঠোঁটে।
______________________
শান্তিনিবাসের সামনে রিকশা থামতেই দীবা তড়িঘড়ি করে ভাড়া দিয়ে বাড়ির ভিতরে দৌড় লাগালো। আজ সত্যি অনেক দেরি হয়ে গেছে। হাত ঘড়ির দিকে সময় দেখে তার চোখ চড়কগাছ প্রায়। শুকনো ঢোক গিললো একটা। মনে মনে এই ভেবে স্বস্তি পেলো যে আবরার সন্ধায় বাড়ি ফিরবে। এখনো সন্ধ্যা হয় নি। আবরার আসার আগেই সে ফিরেছে। গেইটের কাছ থেকে দৌড়ে আসার কারণে হাঁপিয়ে উঠেছে দীবা। সদর দরজা দিয়ে চুপিচুপি বাড়ির ভিতরে ঢুকলো। ড্রয়িংরুমে কাউকে না দেখে মনে মনে খুশি হলো বেশ। চটজলদি পা চালিয়ে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠলো। রুমের সামনে গিয়ে দরজা খুলতে ভিতরে ঢুকার সময় থমকালো দীবা। অবাক চোখে আবরারের রুমের দিকে তাকাতেই স্তব্ধ হয়ে গেলো। আবরার পকেটে দুই হাত গুঁজে দরজায় হেলান দিয়ে দীবার দিকে তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষন এভাবে তাকিয়ে থাকার পর চুপচাপ রুমে ঢুকে শব্দ করে দরজা লাগিয়ে দিলো। আবরারের এমন রিয়েকশন দেখে ভয় পেলো দীবা। ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে রইলো আবরারের রুমের দিকে।
চলমান…
ভুল গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন গাইস। -,-