ইট পাটকেল পর্ব-২২+২৩

0
1072

#ইট_পাটকেল
#সানজিদা_বিনতে_সফি
#পর্ব_২২

কনফারেন্স রুমে মুখোমুখি বসে আছে আশমিন আর নূর।তার পাশেই আমজাদ চৌধুরী অমি আর সানভি বসে আছে। সবার মুখে চিন্তার ছাপ থাকলেও নূর স্বাভাবিক ভাবে কিছু একটা ভেবে যাচ্ছে।আজ সকাল থেকেই শেয়ারবাজারে তাদের শেয়ারের রেট কমছে।এভাবে চলতে থাকলে কোম্পানি অনেক বড় লসের মুখে পড়বে। বড় বড় কোম্পানি গুলো তাদের প্রোডাক্ট কম দামে ছেড়ে দিচ্ছে। সবার কোম্পানি তেই ইনভেস্ট করেছে আর এস কোম্পানি।তাই আজ সবাইকে মিটিং এ ডেকেছে নূর। চৌধুরী গ্রুপ অব ইনডাস্ট্রিজের এম ডি হিসেবে আশমিন আর আমজাদ চৌধুরী এখানে উপস্থিত হয়েছে। আশমিন একটু পর পর হাই তুলছে। আজ একটা সমাবেশ আছে তার। এভাবে বসে থেকে সময় নষ্ট করার সময় নেই তার।বিরোধী দল আজ একটা ঝামেলা পাকাবেই।সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে যাচ্ছে সে। নিজের হিংস্রতা যতটা সম্ভব লুকিয়ে রাখে সে। আবার এক বেওয়ারিশ বাদর ছানা এসে জুটেছে।নাহ! আর ভালো হওয়া হলো না। আফসোসের শিষ তুললো আশমিন।আমজাদ চৌধুরী প্রচুর ক্ষেপে আছে কামিনী চৌধুরীর উপর। ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে আজ এই দিন ডেকে এনেছে সে।প্রথম দফায় লাগাম টেনে ধরলে বুড়ো বয়সে এসব দেখতে হতো না।

আশমিন সপ্তম বারের মতো হাই তুলে জোরে বললো,

— আস্তাগফিরুল্লাহ।

আমজাদ চৌধুরী ভ্রু কুচকে তাকালো ছেলের দিকে। আশমিন সরল হেসে বললো,

— নতুন বর যে!কি খবর আপনার?দিনকাল কেমন চলে?

আমজাদ চৌধুরী বিরক্ত হয়ে চোখ সরিয়ে নিলেন। নূর অমি কে কিছু কাজ বুঝিয়ে দিয়ে নিজের কেবিনে দেখা করতে বললো।অমি মুচিকি হেসে সায় জানিয়ে চলে গেলো।

হঠাৎ আশমিন গম্ভীর গলায় নূর কে ডাকলো,, নূর।

— কি হয়েছে?(ভ্রু কুচকে)

— তুমি আশিয়ানের কথা আগে থেকেই জানতে?(শীতল গলায়)

আশমিনের প্রশ্নে তপ্ত শ্বাস ছাড়লো নূর।ভরাট গলায় বলল,

— নাহ।কিছুদিন আগে জেনেছি।

— মামা কে ভুল বুঝো না নূর।আমরা সবাই পরিস্থিতির স্বিকার।

চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো নূরের।শক্ত গলায় বলল,

— নাহ মন্ত্রী সাহেব। আমরা আপনার মায়ের লোভের স্বীকার,আপনার মায়ের হিংসার স্বীকার, আপনার মায়ের জেদের স্বীকার। আপনার মায়ের পাপ কে পরিস্থিতির উপর চাপিয়ে দিবেন না।

আশমিনের চোখ ঘোলাটে হলো। মলিন গলায় বলল,

— আমাকে ঘৃণা করো নূর?

নূর থমকালো। উত্তর না দিয়ে শান্ত দৃষ্টিতে তাকালো আশমিনের দিকে। আশমিন মলিন হাসলো। চোখ বন্ধ করে আমজাদ চৌধুরী কে উদ্দেশ্য করে বললো,

— আমি মিসেস চৌধুরী কে কিভাবে ক্ষমা করবো আব্বু?সে যে আমার মমতাময়ী মায়ের খু*নি।তার মধ্যে বাস করা আমার আম্মুকে সে মেরে ফেলেছে। সে এখন শুধু কামিনী চৌধুরী। তার আর কোন পরিচয় নেই।

বিশাল কনফারেন্স রুমে তিনজন মানুষের নিরবতা তাদের হারানোর বিশালতা জানিয়ে দিচ্ছে।

— এতো কিছুর পরেও তুমি তাকে কিভাবে এতো ভালবাসো আব্বু?

আমজাদ চৌধুরী হাসলো। ছেলের দিকে তাকিয়ে ক্লান্ত গলায় বলল,

— তোমরা তার বিনাশিনী রুপ কেই চেনো। আর আমি তাকে নিজের একমাত্র কাছের মানুষ হিসেবে চিনি।যে বিদেশের মাটিতে আমার একমাত্র আশ্রয় ছিল। আমার কান্নায় যে কাদতো,আমার হাসি তে যে হাসতো, আমার উদাসীনতায় যে বিষন্ন হয়ে যেত।আমার খারাপ সময়ে এক মিনিটের জন্য যে আমার হাত ছাড়েনি তার প্রতিশোধের আগুনে উন্মাদ হওয়ায় আমি কিভাবে তার হাত ছেড়ে দিতাম বলো? প্রত্যেকটি ঘটনার দুটো দিক আছে বাবা।কারণ ছাড়া এই পৃথিবীতে কিছুই ঘটে না।তোমার মা তার জায়গায় ঠিক। আবার তোমরা তোমাদের জায়গায় সঠিক। তবে যা ঘটছে তা ঠিক নয়। আমি শুধু তোমাকে একটা কথাই বলতে পারি বাবা,তোমার আম্মু যতো অন্যায় ই করুক না কেন আমি তাকে ভালবাসি।আমার এই ছোট্ট জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। সে আমার বেচে থাকার অনুপ্রেরণা। যাকে দেখে আমার আরো একটা জীবন বেচে থাকতে ইচ্ছে করে। আমার এই জীবন আমার নয়।তাকে ভালবেসে নিজের ভিতর নিজেকে অনুভব করতে পারিনা আমি।আমার পুরোটা জুরেই শুধু সে।তোমরা ছাড়া আমার আর কে আছে বলো? তুমি হয়তো ভাবছো আমি কেন তোমার মা কে সঠিক পথে নিয়ে এলাম না।তাহলে শুনে রাখো বাবা,তোমার মা বেচে আছে এই প্রতিশোধের তাগিদে। রাফসান ভাই তার নিজের কর্মফল ভোগ করেছে। ভাবি ও বাদ যায়নি।কামিনী ও করবে। আমি ও করছি।একটা কথা জেনে রাখো বাবা, একসময়ের আঘাত গুলো ই কামিনী এখন ফিরিয়ে দিচ্ছে।

— সে সুস্থ নয় আব্বু।

— আমি জানি(হালকা হেসে)।সামনে ঝড় আসছে।সামলে নিতে পারবে আমি জানি। যাকে ভালোবাসবে তাকে শত চেষ্টার পরেও ঘৃণা করতে পারবে না।হোক সে উন্মাদ, পাগল,ভয়ংকর অপরাধী। আর এখানেই আমার ব্যর্থতা। অতীত খুজতে যেয়ো না বাবা।অতীত খুজতে গেলে আমাকে হারাবে।

আমজাদ চৌধুরী নিঃশব্দে চলে গেলেন।নূর আমজাদ চৌধুরীর কোন কথা ই বুঝতে পারেনি। কি এমন করেছিল তার বাবা যার জন্য কামিনী চৌধুরী আজ এভাবে হিংস্র হয়ে উঠেছে? আশমিন চোখ বন্ধ করে গা এলিয়ে বসে আছে। এতো ক্ষমতা, এতো টাকা, আভিজাত্য দিয়ে কি হবে? যেখানে দম বন্ধ হয়ে আসে।চারিদিকে শুধু কষ্টের হাতছানি।

সানভি নক করে বললো,

— সবাই চলে এসেছে ম্যাম।

— ভিতরে পাঠিয়ে দাও।

— ওকে।

সানভি চলে যেতেই সোজা হয়ে বসলো আশমিন।নূর পেপার গুলো চেক করে আশমিনের দিকে এগিয়ে দিলো।

— অফিসের মধ্যে কি শুরু করলে।এখানে ও লাভ লেটার দিতে হবে? তোমাকে নিয়ে আর পারি না,কেন যে এতো ভালোবাসো আমাকে!

— হয়ে গেছে? (দাতে দাত চেপে)

আশমিন হতাশার শ্বাস ফেলে বললো,

— হলো আর কই?তুমি তো সুযোগ ই দিলে না।এরকম একটা বউ রেখে আমি শুকিয়ে মরছি।দেখো, এই মাত্র দুই গ্রাম শুকিয়ে গেলাম।আল্লাহ কে ভয় করো নূর। এমন জনদরদি মন্ত্রী কে তুমি বউ শূন্যতায় শুকিয়ে মারছো।আল্লাহ সহ্য করবে না। এখনো সময় আছে।পাশের রুমে চলো।বাসর দিনটা সেরে ফেলি।

নূর চিৎকার করে বললো,

— চুপ করুন অসভ্য লোক।আপনার মুখে আমি পিন মেরে দিবো। সারাক্ষণ আজেবাজে কথা। আরেকটা কথা বললে বেইলি রোডে দাড় করিয়ে আখের রস বিক্রি করাবো।তখন মন ভরে জনসেবা করবেন আর নিজেকে ও ভিজিয়ে রাখবেন।অশ্লীল।

নূরের রক্তিম ফেস দেখে আশমিন আর কিছু বললো না। তারাতাড়ি ফাইল দেখায় মনোযোগ দিল।

~

— আপনাদের এখানে ডাকার কারণ আপনারা সবাই জানেন। নিয়ম অনুযায়ী আপনারা আমাদের সাথে করা চুক্তি ভঙ্গ করেছেন।আমাদের কোম্পানি কে ইনফর্ম না করে নিজেদের প্রোডাক্ট নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অর্ধেক দামে ছেড়ে দিয়েছেন। কন্ট্রাক্ট পেপারে উল্লেখ আছে যে,কোন বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার হলে সবার মতামত নিয়ে নিতে হবে। চেয়ারম্যান যা সিদ্ধান্ত নিবে তা ই চুড়ান্ত হিসেবে গণ্য হবে। আপনাদের কোম্পানি আমার কোম্পানির আন্ডারে আছে।আমাকে না জানিয়ে প্রোডাক্ট লঞ্জ করে দিয়েছেন।তাই আজ থেকে আপনার আর এস কোম্পানি থেকে কোন কাচামাল পাবেন না। আমদের কোম্পানি থেকে আপনাদের আলাদা করে দেয়া হলো।আগামী দশ দিনের মধ্যে আমাদের সমস্ত ইনভেস্টমেন্ট ব্যাক করবেন।না হলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং আপনাদের কোম্পানি সিল করে দেয়া হবে।

সবার কপালে সুক্ষ্ম ঘামের রেখা দেখা দিয়েছে। নূরের তেজী মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলার সাহস হচ্ছে না কারোর।

অমি সবার হাতে একটা করে নোটিশ ধরিয়ে দিলো। এতগুলো টাকা একসাথে ফিরিয়ে দেয়া কোন ভাবেই সম্ভব না। আশিয়ানের হুমকি তে পরেই তারা প্রোডাক্ট কম দামে বাজারজাত করেছে।প্রথমেই এতো লস।এখন এতো টাকা!

— ম্যাডাম আমরা জানে মারা যাবো। একটু দয়া করুন।আমরা নিরুপায় হয়ে এই কাজটা করে ফেলেছি।

লোকটা সব কিছু খুলে বললো নূর কে।

— আপনাদের আমাদের সাথে আলোচনা করা উচিত ছিল।

— ফ্যামিলির উপর রিস্ক হয়ে যেতো ম্যাডাম।আপনার বাবার সাথে থেকে আমরা বিজনেস করছি।কখনো এমন হয় নি।

আশমিন গম্ভীর গলায় বলল,

— যা হওয়ার হয়ে গেছে। প্রোডাকশন কয়েকদিন বন্ধ রাখুন।কয়েকদিন পরে নতুন করে আগের দামে মাল বাজারজাত করবেন। আপনাদের লস পুষিয়ে দেয়া হবে।

সবাই সন্তুষ্ট হলেও নূর হতে পারলো না। তবুও চুপ করে সম্মতি দিল।আশমিন নূরের মনোভাব বুঝতে পারলো। সবাই বেরিয়ে যেতেই শান্ত গলায় বললো,

— আমাদের ব্যক্তিগত শত্রুতার জন্য তারা কেন ভুগবে নূর?সব কিছুর দায় আমাদের। মাথা ঠান্ডা রাখো। কিছুতেই মাথা গরম করবে না।এমন কি আমি এই মুহুর্তে তোমাকে চুমু খেলেও না।

কথা,শেষ করেই নূরের অধরে অধর মিলিয়ে দিয়েছে আশমিন। হাত পা ছোড়াছুড়ি করেও যখন কাজ হলো না তখন শান্ত হয়ে গেলো নূর।নিজেও হালকা জরিয়ে ধরলো আশমিন কে। নূরের আলিঙ্গনে উন্মাদ হয়ে গেলো আশমিন। এক হাতে সুইচ টিপে সমস্ত রুমের ইলিক্ট্রেসিটি বন্ধ করে দিলো। কোমড় টেনে নূর কে নিজের সাথে চেপে ধরে কোলে বসিয়ে দিল।

বিশ মিনিট পর দরজায় নক করলো সানভি।ততক্ষণে সবকিছু অনেকটা হাতের বাইরে চলে গেছে। ঘনঘন শ্বাস টেনে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করলো আশমিন। নূরের অবস্থা নাজেহাল। পরিপাটি করা চুলগুলো এলোমেলো হয়ে মুখের সামনে পরে আছে।আশমিনের শুভ্র পাঞ্জাবি ফ্লোরে লুটপুটি খাচ্ছে। নূর কে কোলে তুলে পাশের বিশ্রামের জন্য বরাদ্দকৃত রুমের দিকে অগ্রসর হলো আশমিন। বেডে শুয়িয়ে দিয়ে এলোমেলো চুল গুলো হাত দিয়ে ঠিক করে দিলো। পোশাক ঠিক করে দিয়ে নেশালো গলায় বলল,

— যেতে হবে বউ। আজ রাত টা আমাদের হবে।আর কোন দূরত্ব চাই না আমি। আই নিড ইউ ব্যাডলি।

নূর চোখ বন্ধ করে আছে। আশমিন নূরের ঠোঁটে হালকা চুমু খেয়ে বললো,

— এখানে কিছুক্ষণ থাকো।আমি আসছি।রাতে দেখা হবে।অপেক্ষা করবে তো আমার জন্য?

নূর জরিয়ে ধরলো আশমিন কে। ধীর গলায় বলল,

— করবো।

হালকা হেসে বেরিয়ে গেল আশমিন। পাঞ্জাবি গায়ে দিয়ে নিজেকে পরিপাটি করে বেরুলো রুম থেকে। সানভি মুখ লটকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আশমিন সেদিকে পাত্তা না দিয়ে সরাসরি সিসিটিভি কন্ট্রোল রুমে চলে গেলো। কিছু ফুটেজ ডিলিট করে গটগট করে বেড়িয়ে গেলো অফিস থেকে। সানভি দৌড়ে এলো আশমিনের পিছু।

— আজকে সারা রাত তুমি সুইমিংপুলে দাঁড়িয়ে থাকবে সান।এটা তোমার শাস্তি।

সানভি অবাক হয়ে গেলো। ভয়ার্ত গলায় বলল,

— আমি কি করেছি স্যার।

আশমিন কটমট করে তাকালো সানভির দিকে। দাতে দাত চেপে বললো,

— আমার ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পৃথিবীতে আসতে বাধা দিয়েছো।এতো বড় সাহস তোমার! নাহ!সুইমিংপুলে না তুমি হাতিরঝিলের নর্দমায় দাড়িয়ে থাকবে সারা রাত।আমি নিজে পাহারা দিবো তোমায়।

সানভির মুখটা কাদো কাদো হয়ে গেলো। সে বুঝতেই পারছে না সে কি ভুল করে বসেছে।

চলবে,,,

#ইট_পাটকেল
#সানজিদা_বিনতে_সফি
#পর্ব_২৩

উত্তরায় বিশাল সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। আশমিন সেখানে চিফ গেস্ট। সিটি করপোরেশনের মেয়র সহ কয়েকজন এমপি ও সেখানে উপস্থিত আছে। আশমিনের গাড়ি বহর ঢুকতেই সাংবাদিকরা হামলে পরলো। সানভি ড্রাইভারের পাশের সিটে মুখ কুচকে বসে আছে। মেয়ে হলে এতক্ষণে সে কেদে ভাসিয়ে দিত। আশমিনের সেদিকে ধ্যান নেই। সে ব্যাস্ত ভঙ্গিতে ফোনে কারোর সাথে কথা বলে যাচ্ছে। বিগত কয়েক মাস যাবৎ ঢাকার বিভিন্ন স্কুল কলেজ থেকে মেয়েরা নিখোজ হচ্ছে। কয়েকজনকে পাওয়া গেলেও বাকিদের খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। পুলিশ আর গোয়েন্দা বিভাগের সাথে সাথে আশমিন নিজের লোকদের ও লাগিয়ে দিয়েছে।কিন্তু ফলাফল শূন্য। প্রায় পঁচাত্তর জন মেয়ে নিখোঁজ। যেদের পাওয়া গেছে তারা বয়ফ্রেন্ড নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। বাকিদের এরকম কোন রেকর্ড নেই।আশমিন পুলিশের উপর চাপ সৃষ্টি করে রেখেছে।আজকের সমাবেশ শেষে এই নিয়ে একটা মিটিং আছে।

আশমিনের গাড়ি থামতেই বাহাদুর তার টিম সহ পুরো গাড়ি ঘেরাও করে ফেললো। প্রয়োজনের তুলনায় আজ অনেক বেশি সিকিউরিটি দেয়া হচ্ছে আশমিন কে।রাজনীতি বিদদের উপর এরকম জনসমাগমেই সবচেয়ে বেশি হামলা হয়। নূর নিজের সিকিউরিটি টিম ও পাঠিয়ে দিয়েছে আশমিনের অগোচরে। আশমিনের উপর রাগ টা কমে এসেছে নূরের।আশমিন কানাডা থাকা অবস্থায় আমজাদ চৌধুরী তাকে সবকিছু খুলে বলেছে।কামিনী চৌধুরীর করা কীর্তি আর আশিয়ান অমির ব্যপারে সব জানে নূর।বাকরুদ্ধ হয়ে শুনেছিল সব।তাই আশিয়ান কে দেখে সে অবাক হয় নি। হোটেল রুমের সেই মেয়ের ঘটনার পিছনে লারার হাত আছে।আর তাকে সাহায্য করেছে কামিনী চৌধুরী। উদ্দেশ্য ছিল শুধু নূর কে আশমিনের জীবন থেকে সরানো।এতো টা ঘৃণা কেন করেন কামিনী চৌধুরী তার উত্তর পায়নি নূর। আশমিন কে করা ড্রাগস দেয়া হয়েছিল সেদিন।সানভি সময় মতো না পৌছালে আশমিনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যেতো সেদিন।সেই মুহুর্তে মাথায় খু*ন চেপে গিয়েছিল নূরের। আমজাদ চৌধুরী থামিয়েছে তাকে।এখনো অনেক কিছু খোলসা হওয়া বাকি।তাই কামিনী চৌধুরী কে নিজের মতো ছেড়ে দিতে হবে।সবকিছু শুনে নিজেকে শান্ত করেছে নূর।মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছে কামিনী চৌধুরীর বুকে প্রথম গু*লিটা সে ই করবে।শুধু সময়ের অপেক্ষা। নূরের আশমিনের উপর রাগটা এখন আর এতটা প্রখর ভাবে নেই।সে নিজেও চায় জীবন টা কে গুছিয়ে নিতে।আশমিন কে টাইট দেয়ার জন্য সারাজীবন পরে আছে।

আশমিন মনোযোগ দিয়ে ফোনে কিছু একটা করছে। সানভি ভয়ে ভয়ে বললো,

— স্যার,,

আশমিন ভ্রু কুচকে তাকালো সানভির দিকে। তারা এখনো গাড়ির ভিতর অবস্থান করছে।ভীড় নিয়ন্ত্রণে আসলে গাড়ি থেকে নামবে।সানভি ইতস্তত করতে করতে বললো,

— আপনার পাঞ্জাবি টা চেঞ্জ করা দরকার।

আশমিন এক ভ্রু উচু করে তাকালো সানভির দিকে। সানভি ফোনে একটা ছবি তুলে আশমিনের দিকে এগিয়ে দিল।আশমিন ছবি দেখে হালকা হাসলো। প্রিয়তমার দেয়া চিহ্ন জ্বলজ্বল করছে তার পাঞ্জাবি তে। ভালবাসার মুহুর্ত গুলো মনে করতেই কটমট করে তাকালো সানভির দিকে। সানভি বেলুনের মতো চুপসে গিয়ে আরেকটা পাঞ্জাবি এগিয়ে দিলো আশমিনের দিকে। গাড়ি তে সব সময় এক সেট কাপড় থাকে আশমিনের।

— তোমার শাস্তি আরো বারানো হলো সান।বিয়ের পর তুমি একা হানিমুনে সুইজারল্যান্ড যাবে। এটা আমার পক্ষ থেকে তোমার বিয়ের গিফট।

সানভি অসহায় চোখে তাকালো আশমিনের দিকে। সামান্য একটা পাঞ্জাবি চেঞ্জ করতে বলার অপরাধে তাকে একা একা সুইজারল্যান্ড হানিমুনে যেতে হবে! সানভি দুঃখী দুঃখী গলায় বলল,,

— বউ খুব রাগ করবে স্যার।

আশমিন সেদিকে পাত্তা দিলো না।পাঞ্জাবি চেঞ্জ করে ফেললো। গায়ের পাঞ্জাবি সানভির হাতে দিয়ে বললো,

— এটা এভাবেই আমার কভার্ডে রেখে দিবে।

সানভি মাথা দুলিয়ে সায় জানালো।বাহাদূর দরজা খুলতেই আশমিন গটগট করে বেড়িয়ে গেলো। সবার সাথে কথা বলে বিশ্রামের জন্য বরাদ্দকৃত রুমে চলে গেলো। মন খুব বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে।কপালে চিন্তার ভাজ পরেছে আশমিনের। আশিয়ানের একটা ব্যবস্থা খুব তারাতাড়ি করতে হবে। হাত পা বাধা না থাকলে এক গু*লিতে কাহিনি খতম করে ফেলতো সে।বিরক্তি তে মুখ তেতো হয়ে গেলো আশমিনের। তার হাত পা বাধা থাকলেও আশিয়ানের নেই।সে যে কোন সময় আক্রমণ করতে পারে।চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে বাকা হাসলো আশমিন। বিরবির করে বললো,

— দুই একবার ছাড় পাবি ছোট ভাই। আমি আবার ভালো সাজার ভং বেশিক্ষন ধরে থাকতে পারবো না। আমি জন্মগত ব্যাড বয়।

~

নূরের মুখোমুখি বসে আছে অমি।মলিন মুখে ইতস্ততার ছাপ স্পষ্ট।

— আমার উপর রেগে আছো অমি?

অমি অবাক চোখে তাকালো নূরের দিকে। তড়িঘড়ি করে বললো,

— না না।কি বলছেন ম্যাম?আমি কেন রাগ করবো আপনার উপর?

— সত্যি টা আমরা দুজনেই জানি অমি।সম্পর্কে আমরা ভাই বোন। তুমি সব আগে থেকেই জানতে।সব সময় বড় ভাইয়ের মতো আগলে রেখেছো আমাকে।কখনো নিজের পরিচয় প্রকাশ করো নি। একবার বোন বলে কাছে ডেকেই দেখতে। নিরাশ করতাম না তোমায়।আমার নিঃসঙ্গ সময়ের একমাত্র সাথী তুমি। ভাইয়া বলে জরিয়ে ধরার অধিকার কি নেই আমার?

অমি নিচের দিকে তাকিয়ে নিজের চোখের পানি লুকাতে ব্যস্ত। ছোট বোন টাকে সে প্রচন্ড ভালবাসে।কিন্তু নিয়তি তাকে হাতে পায়ে বেড়ি পরিয়ে দিয়েছে। চাইলেও সে বুকে আগলে ধরতে পারেনি তার বোনকে।নিজের বাবার লাশের পাশে বসে দু ফোটা চোখের পানি ফেলতে পারার অধিকার ও তার ছিল না। অবৈধদের এতো অধিকার থাকে না। আর পাচটা সাধারণ মানুষের মতো সে বাবার কবরে দু মুঠো মাটি দিয়েছে।

নূর নিজের চেয়ার থেকে উঠে এসে একপাশ থেকে জরিয়ে ধরলো অমি কে।যে নিঃস্বার্থ ভাবে সারাজীবন আগলে রেখেছে তাকে।অমি ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো।শক্ত করে জরিয়ে ধরলো বোন কে।নূরের চোখ থেকেও পানি ঝরছে।দুটো ভাই আছে তার। একজন শামুকের আবরণের মতো আগলে রাখে তাকে।আরেকজন মারার পায়তারা করছে।অমি নূররে মাথায় চুমু খেয়ে ভরাট কন্ঠে বললো,

— আমার বোন তুই।সসম্পর্কের মানদন্ড আমাদের যেমন ই হোক না কেন।তোর ভাই সারাজীবন তোর সাথে আছে। আশিয়ান কে নিয়ে ভাবিস না।সেও নিজের ভূল বুঝতে পারবে একদিন। আমরা দুই ভাই আগলে রাখবো তোকে।আমাদের ম্যাম হয়েই থাকবি তুই।তুই যে খুব আদরের বোন আমার।

নূর শক্ত করে জরিয়ে রইলো তার ভাই কে। তার আপনজন। তার ও ভাই আছে ভাবতেই বুক খুশিতে নেচে উঠলো।

~

আশমিন সব সময় শান্ত থাকতে পছন্দ করে। অতিরিক্ত রেগে গেলেও তার মুখবয় থাকে শান্ত।সেই শান্ত মানুষ টা আজ কোন ভাবেই শান্ত থাকতে পারছে না।অস্থির হয়ে পা নাচিয়ে যাচ্ছে বারবার। পাশের কয়েকজন তার অস্থিরতা দেখে নিজেরাও অস্থির হয়ে উঠছে।বার নার জানতে চাইছে সে ঠিক আছে কি না।সে কিভাবে বোঝাবে তার এখন বউ কোলে নিয়ে বসে থাকতে ইচ্ছে করছে। বিকেল পাচটা বেজে গেছে।লম্বা বক্তৃতা শুনতে শুনতে কান পচে গেলো। এদের মুখেই শুধু বড় বড় কথা।কাজের বেলায় ঠনঠনা ঠন ঘন্টা। নিজের বিরক্তি প্রকাশ করেই ফেললো আশমিন। গম্ভীর গলায় বলল,

— নিজের বক্তব্য ছোট করুন।অপ্রয়োজনীয় কথার দরকার নেই।যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু বলুন।

সবার বক্তব্য শোনার পর আশমিনের কপালে চন্তার ছাপ পরলো। এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে।

— ঢাকা শহরের এমনকি মফস্বলের প্রত্যেকটি স্কুল কলেজের সামনে দুজন করে পুলিশ মোতায়ন করুন।সংবাদ সম্মেলন করে বাবা মা এবং স্কুল কলেজ কর্তৃপক্ষ কে সাবধান করে দিন।স্কুল কলেযে থাকাকালীন শিক্ষকেরা এবং বাইরে থাকাকালীন বাবা মায়েরা যেত তাদের সন্তানের উপর কড়া নজরদারি রাখে। সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। তাদের কেউ সতর্ক থাকতে হবে। যেহেতু স্কুল কলেজ থেকেই বেশি অপহরণ হচ্ছে সেহেতু সেদিকেই বেশি খেয়াল রাখুন।স্টুডেন্ট সাজিয়ে আপনাদের কিছু টিম মেম্বার পাঠিয়ে দিন।হাত ফস্কে যাবে কোথায়? ঠিক এসে জালে আটকা পরবে।নিজেদের দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করবেন। দায়িত্বে অবহেলা করলে কেউ ছাড় পাবেন না।

মিটিং শেষ করে আশমিন বেড়িয়ে গেলো। ঘড়ি তে অলরেডি রাত দশটা বাজে।ক্লান্তিতে শরীর ভেঙ্গে আসছে। গাড়ি তে বসে গা এলিয়ে দিলো আশমিন।

— সোজা বাড়িতে যাবে সান।

সানভি তারাতাড়ি গাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দিল।আশমিন কে ক্লান্ত লাগছে খুব।

বাড়িতে প্রবেশ করতেই আমজাদ চৌধুরীর কে গোমড়া মুখে বসে থাকতে দেখে তার দিকে এগিয়ে গেলো আশমিন। ঘড়ির কাঁটা বারোটার ঘরে যেতে পনেরো মিনিট বাকি আছে।

— দুই দুটো বউ থাকতে এতিমের মতো এখানে বসে আছো কেন? আর কি চাই(কপাল কুচকে)?

আমজাদ চৌধুরী আশমিনের কথায় পাত্তা না দিয়ে আগের মতোই বসে রইলেন। আশমিন তার মুখের দিকে তাকিয়ে চোখ বড় বড় করে বললো,

— আস্তাগফিরুল্লাহ! তুমি কি আবার বিয়ে করতে চাইছো? এসব বায়না চলবে না। দুটো পর্যন্ত ঠিক আছে। নিজের বয়স টা ও তো একবার দেখো। এই বয়সে এতো গুলো বউ সামলাতে পারবে না। যাও রুমে যাও।ভালো ছেলেরা জেদ করে না।

আমজাদ চৌধুরী আগুন চোখে তাকালো আশমিনের দিকে। দাত কড়মড় করতে করতে বললো,

— চুপ করো বেয়াদব ছেলে। মুখের লাগাম কি নর্দমায় ফেলে দিয়ে এসেছো? বাবা হই তোমার। সম্মান দিয়ে কথা বলো। বাবার সাথে এসব কি ধরনের কথাবার্তা!

আশমিন অবাক হওয়ার ভান করলো। নাদান গলায় বলল,

— আমি আবার কি বললাম?

আমজাদ চৌধুরী আর কিছু বললো না। কামিনী চৌধুরী কে হাজার অনুরোধ করে ও গলাতে পারেনি সে।কতদিন হলো ঠিক মতো চোখের দেখা টাও দেখতে পায়না। নিজেকে খুব অসহায় লাগছে।গেস্ট রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল সে।এই নির্লজ্জ ছেলের যন্ত্রণায় কোথাও বসেও শান্তি নেই।

বাবার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে তপ্ত শ্বাস ছাড়লো আশমিন।এভাবে কথা না বললে সে সারারাত এখানে বসেই পাড় করে দিতো।

নিজের রুমে ঢুকে মুচকি হাসলো আশমিন। সারা রুমে ফুলের ছড়াছড়ি। বউ তার জন্য অপেক্ষা করছে ভাবতেই মন খুশিতে ভরে উঠলো। তারাতাড়ি ওয়াশরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে।নূর রুমের কোথাও নেই। ফ্রেশ হয়ে এসে সোজা বেলকনিতে চলে গেলো আশমিন। সিদুর লাল শাড়ি তে নূর কে অপ্সরাদের মতো লাগছে।শুকনো ঢোক গিলে দাঁড়িয়ে গেলো আশমিন। কোমোড়ের নিচ পর্যন্ত লম্বা কোকড়ানো চুল গুলো আশমিনের দূর্বলতা। হালকা পায়ে এগিয়ে গিয়ে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো নূর কে।কেপে উঠলো নূর।

— আমার হাত পা কাপছে বউ। তোমাকে দেখলে আমি হয়তো আজ ম*রেই যাবো। পাগল পাগল লাগছে নিজেকে।

নূর ঘুরে তাকাল আশমিনের দিকে। সত্যিই আশমিনের হাত পা কাপছে। নূরের মুখের দিকে তাকিয়ে কাপাকাপি বন্ধ হয়ে গেলো আশমিনের। চাদের আলোয় নূরের সৌন্দর্য উপচে পরছে। ঘোরে চলে গেলো আশমিন। এক হাতে কোমড় পেচিয়ে ধরে নিজের কাছে নিয়ে এলো নূর কে।নূরের শরীরের হালকা কাপুনি আরো অস্থির করে তুলছে আশমিন কে। বারান্দার দেয়ালের সাথে চেপে ধরেই দুজনের ওষ্ঠ এক করে দিলো সে। আশমিনের বেহায়া হাতের বিচরণ থেকে বাচতে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো নূর। আশমিন আরো শক্ত করে চেপে ধরলো। ঠোঁট ছেড়ে কপালে কপাল ঠেকিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে দুজন। আশমিন নেশালো গলায় বলল,

— আমার তোমাকে চাই নূর।এই মুহুর্তে চাই।আর অপেক্ষা করতে পারছি না।

নূর জরিয়ে ধরলো আশমিন কে।লজ্জায় মুখ গুজে দিলো আশমিনের বুকে।আশমিন শব্দ করে হাসলো।প্রেয়সীর কপালে চুমু খেয়ে কোলে তুলে নিল তাকে।রুমের ভিতর অগ্রসর হতে হতে শয়তানি হেসে বললো,

— আজ তোমাকে কে বাচাবে সুন্দরী?

রাতটা স্বপ্নের মতো সুন্দর মনে হলো নূরের কাছে।আশমিন এতো বছরের ভালবাসা তাকে উজার করে দিয়েছে।প্রতিটি মুহুর্তে তাকে অনুভব করিয়েছে তার ভালবাসার গভীরতা। ভালবাসায় উন্মাদ হলেও তার সুভিধা অসুভিধার দিকে সম্পুর্ন ধ্যান ছিল আশমিনের।

সকালে আশমিনের চিৎকারে ঘুম ভাঙ্গলো নূরের। মাত্র দুই ঘন্টা হয়েছে ঘুমিয়েছে সে। সারা শরীরের সাথে মাথার যন্ত্রণা ও এসে যোগ হলো আশমিনের চিৎকারে।

— এভাবে আমার সর্বনাশ করলে নূর! আমার ইজ্জত লুটে নিতে তোমার লজ্জা করলো না? একজন ভোলা ভালা মন্ত্রীর ইজ্জত হরণ করেছো তুমি।কি সাংঘাতিক!

নূর ঘুম ঘুম চোখে নিজের কপাল চাপড়ালো।সারা রাত নিজেই ওকে ঘুমাতে দেই নি।এখন এসে সকাল সকাল নাটক শুরু করেছে।নূর আবার শুয়ে পরলো।গায়ে কম্বল জড়াতে জরাতে বললো,

— থানায় ফোন দিয়ে বলুন আপনার বউ আপনার ইজ্জত লুটে নিয়েছে। তারা নিশ্চয়ই আপনাকে সাহায্য করবে।

আশমিন পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো নূর কে। ঘাড়ে চুমু খেয়ে টেনে বসিয়ে দিল। নূর বিরক্ত চোখে তাকালো আশমিনের দিকে। আশমিন হালকা হেসে একটা একবাটি নুডুলস এগিয়ে দিলো নূরের দিকে। নিজেই চামচ নিয়ে মুখের সামনে ধরলো। নূর কিছু না বলে খেয়ে নিলো। না খেলে আশমিন ছাড়বে না সে খুব ভালো করেই জানে। কয়েক চামচ খেয়ে আর খাবে না জানালে একটা পেইন কিলার খাইয়ে দিল নূর কে। হালকা জ্বর জ্বর ভাব আছে শরীরে।
নূর আবার শুয়ে পরতেই আশমিন ও তাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে পরলো।
চোখ বন্ধ করে ভাবলো সানভির একটা খোঁজ নেয়া দরকার। সত্যি সত্যি নর্দমায় নেমে গেছে নাকি দেখতে হবে।

চলবে