#এই_ভালো_এই_খারাপ
#পর্ব_১৫
#প্রিমা_ফারনাজ_চৌধুরী
ডোডো ঘুম থেকে উঠামাত্রই কোলবালিশ ধরে উঠে বসেছে। তারপর হাত দিয়ে চোখ কচলাতে কচলাতে কেঁদে তার মাকে ডাকলো। তিথি এসে তাকে কাঁদতে দেখে বলল,
” আমাকে জ্বালাতে উঠে বসেছে। তোর চোখে কি ঘুম নেই ডোডো?”
ডোডো হাত বাড়িয়ে দিল মায়ের দিকে। কোলে নেয়ার আবদার জানিয়েছে।
তিথি কোলবালিশ নিয়ে ফেললে ডোডো ঢলে পড়ে গেল বিছানায়। পড়ে যাওয়ায় কেঁদে উঠলে তিথি তাকে ভ্যা ভ্যা বলে উপহাস করলো। মায়ের উপহাস করা দেখে রাগে দুঃখে জোরে জোরে কাঁদলো ডোডো। আম্বিয়া বেগম দরজা ধাক্কা দিতে দিতে বলল,
” আমার নাতিটারে এত কাঁদাচ্ছিস কেন রে? ”
তিথি বলল, ” ডোডো আরও জোরে কাঁদ। আজ তোর বাপ এলে বলবি তোমার বউ আমাকে মারছে। বলবি তো? তুই তো বোবা। কিভাবে বলবি?”
কান্নায় করায় ডোডোর চোখ লাল হয়ে গেল। তিথি কোলে তুলে দুগালে আদর করতে করতে বলল,
” ওলে ওলে বাবালে। তুই দেখছি আমার চাইতে কম ঢং জানিস না ডোডো। ”
ছেলেকে আদর করতে করতে হাসতে লাগলো তিথি। বলল,
” আয়জা চা আনোতো আমার ছেলের জন্য। মগ ভরে চা আনবে। ”
ডোডো এদিক-ওদিক তাকালো। তিথি হেসে বলল,
” ওরে চালাক রে। তুই এমন চা-খোর কেমনে হলি রে ডোডো। তোকে চা খাওয়ানো যাবে না আর। আমি চা-পাতা আর দুধ কিনতে গিয়ে ফকির হয়ে যাবো পরে। আমার জামাইয়ের টাকা পয়সার প্রতি আমার একটা দরদ আছে। ”
ডোডো গা ঝাড়া মেরে মাকে হাঁটার জন্য ইঙ্গিত দিল। দরজার দিকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। তিথি বলল,
” পারবো না হাঁটতে। তুই আমাকে পেয়েছিসটা কি? আমার গায়ে ভীষণ জ্বর ডোডো। তোর কাপড়চোপড় ধুতে ধুতে আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি। তুই আমাকে এত জ্বালাস কেন? ”
ডোডো মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো। তিথি তার নাকে টুপ করে আদর দিয়ে বলল,
” হা করে কি দেখছিস? তোর মা কালো তাই তো?”
ডোডো হাসলো। তিথি বলল,
” ওমা আবার হাসে? ”
ডোডো আজকাল কিছু কিছু শব্দ উচ্চারণ করে। তিথি ওর কথা শুনে হেসে গড়াগড়ি খায়। ডোডো ড্যাবড্যাব করে মায়ের দিকে তখন চেয়ে থাকে।
__
তিথির এ কয়েক মাস ডোডোকে নিয়ে সময় কেটে গেছে। আজলান বাড়িতে একদম সময় দিতে পারেনি। কাজের চাপে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ফিরলেও তারপরের দিন আবারও সদরে রওনা দিতে হয়েছে। তাদের মিশন শেষ হওয়ার পর হঠাৎ করে সে না জানিয়ে একদিন বাড়ি ফিরলো। বাড়ি ফিরে শুনতে পেল, তিথির ভীষণ জ্বর। তাই ঘরে ওর ছেলেকে নিয়ে শুয়ে আছে। আয়জা বলল,
” বাবুও ঘুমিয়েছিলো। তাই ওর মায়ের পাশে শুইয়ে দিয়ে এসেছি। ”
আজলান ঘরের দরজার সামনে দাঁড়াতেই দরজার ফাঁক দিয়ে দেখতে পেল, তিথি চোখ বুঁজে আছে। ডোডো উঠে বসেছে। মায়ের গায়ে হাত দিয়ে খামচে দিচ্ছে। কেন তার মা অমন করে শুয়ে আছে চোখ বুঁজে এটাই তার প্রশ্ন। ওর খামচি খেয়ে তিথির ঘুম ছুটে গিয়েছিলো যদিও কিন্তু সে চোখ বুঁজে শুয়ে আছে।
ডোডো ওর বুকে দু’হাতে খামচে দিতে দিতে বলল,
” আম্মামমা তুত্তু দো। ”
তিথি ওর হাত সরিয়ে দিয়ে বলল,
” নেই। তোর বাপের কাছে যাহ। সারাক্ষণ শুধু খায় খায় করবে। দেব না তুত্তু। ”
ডোডো ঠোঁট টানলো তারপর ধপাস করে মাযের গায়ের উঠে মাথা ঠুকালো। তিথি হাসতে হাসতে বলল,
” তোর মায়ের খুব জ্বর ডোডো। তারউপর মারছিস? ”
ডোডো শাড়ির আঁচলের তলে মুখ ঢুকিয়ে বলল,
” তুত্তু দ্যা। ”
তিথি হেসে উঠে তার গালে আলতো করে চড় দিল। ডোডো বসে দু’হাতে চোখ কচলাতে কচলাতে ফোঁপাতে লাগলো। তিথি বলল,
” আচ্ছা আচ্ছা কান্না করে না। ”
ডোডো বসা অবস্থায় মায়ের শাড়ির আঁচল মাথার উপর তুলে দিয়ে মুখে শব্দ করলো, ” উম উম। ”
তিথি ঘুমিয়ে গেল।
আজলান দরজা খুলে ঘরে ঢুকতেই ডোডো শাড়ির আঁচল তলা থেকে বেরিয়ে এসে আজলানের দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকালো। হেসে আবারও মায়ের বুকে মুখ ঢুকিয়ে নিল। কিছুক্ষণ পর আবারও বেরিয়ে এল। আজলান হাত ধুয়ে এসে তার কাছে এসে বলল,
” মা ঘুম আর আপনি খাওয়াদাওয়া করছেন? ”
ডোডো তিথির গায়ের উপর উঠে শুয়ে থাকলো শাড়িটা মাথার উপর তুলে দিয়ে। আজলান সেখান থেকে টেনে কোলে নিয়ে বলল,
” মাকে জ্বালাচ্ছেন কেন? হুম? ”
ডোডো বলল, ” তুত্তুহ। ”
আজলান বলল, ” তুত্তু খাচ্ছেন? বাবা আপনার জন্য ঘোড়া এনেছে। দেখবেন? ”
স্যুটকেস থেকে একটা কাঠের ঘোড়া বের করে দিল আজলান। রিমোট চেপে দিলে সেটি হুংকার ছাড়ে, তারপর দৌড়ায়। আরেকবার চেপে দিলে সেটি পুনরায় ফিরে আসে। ঘোড়াটি পা তুলে হুংকার তুলে ছুটতে দেখে ডোডো কি খুশি! চিল্লিয়ে উঠলো হাততালি দিয়ে। তার খুশি দেখে আজলান তার গালে চেপে চেপে আদর করলো।
ডোডো খেলার ফাঁকে আবারও বিছানায় উঠে গেল। আবারও মায়ের বুকে মুখ আড়াল করে শাড়িটা মাথার উপর টেনে দিল।
কিছুক্ষণ পর তিথি আচমকা চেঁচিয়ে উঠলো। আজলান ভড়কে গিয়েছে ওর চেঁচামেচি শুনে। তিথি দডোডোকে ঠাস করে মেরে বলল,
” অসভ্য ছেলে। তোর সবকটা দাঁত ফেলে দেব আমি। ”
পরে আজলানকে দেখে সব ব্যাথাবেদনা জ্বর ভুলে গিয়ে বলল,
” আমার জানাজায় আসতে। এত তাড়াতাড়ি কেন এসেছ? ”
আজলান ইউনিফর্ম চেঞ্জ করতে করতে বলল,
” তুমি তোমার ছেলেকে নিয়ে দিব্যি আছো। ”
ডোডোর খাওয়া তখন সম্পন্ন হয়নি। সে খেতে খেতে একবার মায়ের মুখের দিকে আরেকবার বাবার মুখের দিকে তাকাচ্ছে। তিথি বলল,
” এই ছেলেকে আমি বেঁচে দেব। কেউ বাঁদর ছেলে কিনবে কিনা দেখিওতো। ”
আজলান বলল,
” বাঁদর বানিয়েছে কে? ”
তিথি বলল,
” আমি বানিয়েছি? ”
” আর কে? ”
তিথি বলল, ” আচ্ছা আচ্ছা তুমি গোসল করে এসো। আমি খেতে দিচ্ছি। এখন ঝগড়া করব না।”
আজলান ডোডোর দিকে চেয়ে বলল,
” আগে উনার খাওয়া শেষ হোক। ডোডো শেষে দাঁতের জোর দেখাতে ভুলো না কিন্তু। ”
ডোডো কি বুঝলো না কে জানে? উম উম বলে শব্দ করলো। তিথি রেগেমেগে বলল,
” বাপের কথায় সায় দিচ্ছিস? তোকে আমি বেঁচে দেব ডোডো। তোর মতো ছেলে আমার দরকার নেই। তোরা বাপ ছেলে দুটোই অত্যাচারী। আমি থাকবো না আর এই বাড়িতে। ”
______
আজলান ফিরেছে দেখে আম্বিয়া বেগম নানান রকম রান্নার আয়োজন করেছে। আজলানের সাথে আয়জার বিয়ে নিয়ে কথা বলছিলো আফতাব সাহেব। আজলান আপাতত কোনো মন্তব্য জানায়নি। আফতাব শেখ জানালো আগামীকাল আয়জাকে দেখতে আসবে পাত্রপক্ষ। সে যেন উপস্থিত থাকে।
রাতে তিথি খাওয়াদাওয়া করতে পারেনি তেমন। বাড়িতে ডাক্তার এনেছিলেন আফতাব শেখ। ঔষধ খাওয়ার পর তিথির জ্বর আরও বেশি বেড়েছে। ডোডো খাওয়াদাওয়ার পর একা একা খেলছে। খিদে না পাওয়া অব্দি আর কান্না করবে না। আয়জা তাকে নিয়ে গিয়েছিলো কোলে করে। ফুপীর সাথে তার দারুণ ভাব। আম্বিয়া বেগমের চোখের মণি সে। এখন কথা বলা শিখছে। সারাক্ষণ দাদ্দাহ দাদ্দাহ বলে চিল্লায়। বাবা ডাকতে বলে, আব্বাববাহহ। সবাই তার কথা শুনে হেসে কুটিকুটি হয়।
তিথি জ্বরে উল্টাপাল্টা বকছিলো। আজলান ঘরের মেঝে মুছে, ঘরটা গোছগাছ করলো। সারাঘরে ডোডোর কাপড়চোপড়, খেলনাপাতি, দোলনা ইত্যাদি মিলে হযবরল অবস্থা। সব গোছগাছ করতে করতে সে খেয়াল করলো তিথি মাথাটা পর্যন্ত তুলতে পারছেনা। মাথাটা পানি দিয়ে ধুয়ে দিল সে। তারপর মুছে দিতে দিতে বলল,
” ইচ্ছেমতো পানিতে গা চুবিয়ে রেখেছিলো বাথটবে? তাই না? ”
তিথি বলল, ” তুমি এতদিন পরে এসে আমাকে বকছো কেন গো? ”
আজলান ধমকে বলল,
” আমার প্রশ্নের অ্যানসার দাও মেহবুব। ”
তিথি বলল,
” জ্বর তোমার হয় না? ”
” না হয় না। ডোডোরও যদি এমন হয়? বাচ্চাটার কি হবে তখন? ”
তিথির মাথাটা তার বুকে ঠেকলো। বলল,
” আমার ডোডো অনেক শক্তিশালী। ওর বাহু তোমার চাইতে মোটা হবে বুঝেছ? ওর মায়ের বুকের দুধে কত ভাইটামিন আছে জানো? ”
আজলান বলল,
” ডাক্তার কি বলেছে? ”
” বলেছে আজ মরেও যেতে পারি। ”
আজলান তাকে বুক থেকে সরিয়ে দিয়ে বলল,
” সবসময় ফালতু কথা বলবেনা মেহবুব। ডোডোর কথা ভাবো এসব বলার আগে। ফালতু মেয়েমানুষ। ”
তিথি বিছানায় ঢলে পড়ে বলল,
” ডোডোকে তুমি রেখো। আমি চলে যাবো। ”
আজলান বলল,
” আরেকবার এসব ফাউল কথাবার্তা বললে সোজা ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দেব। ”
তিথি হেসে বলল, ” ধুর বোকালোক। আমার বাপের বাড়িতে যাওয়ার কথা বলছি। ”
আজলান বলল, ” এতদিন যাওনি কেন? এখন আমি চলে এসেছি আর যেতে পারবে না। ”
আয়জা ডোডোকে নিয়ে এল। সে মাকে খুঁজছে। আজলানকে দেখে কোলে ঝাঁপ দিয়ে বলল,
” আমম্মাহ!”
আজলান বলল, ” ওই তো ওখানে। ”
ডোডো চোখ কচলাচ্ছে তারমানে ঘুমাবে। আজলান পিঠে কাঁধে মাথা ফেলে হাত বুলিয়ে দিল। ডোডো কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে গেল। ডোডো ঘুমিয়ে যেতেই আজলান তাকে দোলনায় রেখে বলল,
” দেখি থার্মোমিটার দাও। জ্বর কতটুকু দেখতে হবে। ”
তিথি থার্মোমিটার জিহ্বার নীচে দিল। আজলান জ্বর চেক করে দেখলো একশো। আয়জা বলেছে ওর গায়ে একশো দুই জ্বর ছিল। একটু কমেছে দেখে আজলান নিশ্চিত হলো। বিছানার বেডশিট আর বালিশের কভার চেঞ্জ করার জন্য একটা চেয়ারে বসিয়ে দিয়েছিলো তিথিকে। তারপর বিছানো শেষে তিথিকে কোলে করে ওয়াশরুমে ঢুকিয়ে ব্রাশ করালো। তিথি তার গায়ে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে ব্রাশ করেছিলো।
তারপর ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে দিল। এলোমেলো চুলগুলোতে চিরুনি চালিয়ে বলল,
” অপরিচ্ছন্ন থাকলে রোগ-জীবাণু আরও বেশি আক্রমণ করে মেহবুব। এখন বলো কেমন লাগছে।”
তিথি তাকে বুকে মাথা ফেলে বড় করে শ্বাস ফেলে বলল,
” খুব ভালো। তুমি এসেছ তাই আমি সুস্থ হয়ে গিয়েছি। কিন্তু দুর্বল লাগছে। তুমি না থাকলে আমি বোধহয় মরেই যাবো। ”
আজলান তাকে কোলে নিয়ে বিছানায় নিয়ে এল। শুয়ে দিয়ে বলল,
” জ্বর উঠানামা চেক করতে হবে। যদি জ্বর কমে তো ভালো। না কমলে সোজা নিয়ে যাবে চেম্বারে।”
তিথি বললো, ” ডোডোকে আমার পাশে দাও। ”
আজলান ডোডোকে তার পাশে এনে দিল। ঘুমন্ত মুখটাতে আদর করে বলল,
” ওর মুখে আঁচড় কিসের? ”
” রাগ করে নিজের নখ দিয়ে নিজেই আঁচড় দিয়েছে। বাপের মতো হাড়বজ্জাত হয়েছে কি এমনি বলি? এইটুকুনি ব্যাটা, অথচ কত রাগ তার। তোর বাপের বউ থেকে গেছে কষ্ট করে, কিন্তু তোর বউ একদিনও থাকবে না দেখিস। আমি ভালো শ্বাশুড়ি হবো। তুই তোর বাপের মতো হলে তোর বউকে দিনে দিনে দিয়ে আসবো ওর বাপের বাড়ি।”
আজলান বলল, ” চুপ। অযথা বকছো তুমি। ওর ঘুম ভেঙে যাবে। ”
তিথি দেখলো ও ঠোঁট ফুলিয়ে ঘুমোচ্ছে। ফোলা ঠোঁটে চুমু খেয়ে বলল,
” আমার সোনা রে, ঘুমালে তোরে কত্ত আদর লাগে। ”
আজলান বলল,
” ননসেন্স। ওকে ঠোঁটে চুমু দিতে বারণ করেছি মেহবুব। এসব ভালো না। ”
” তুমি যে দাও। ”
” কখন দিয়েছি? ”
” আমাকে দাওনি? ”
আজলান দাঁত কিড়মিড় করতেই তিথি বলল,
” নিজে দিলে দোষ নেই আমি দিলেই দোষ। আমি আমার সোনাটাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমায়। ”
ছেলেকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে গেল তিথি। আজলান ডিমলাইট জ্বালিয়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
মাঝরাতে তিথি ডোডোকে তার পাশে এনে আজলানের বুকে গুঁজে গিয়ে বলল,
” কতদিন পর এসেছ। আমাকে একটু জড়িয়েও ধরোনি। এই? ”
আজলান গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। তিথি তার বুকে মুখ ঠেকিয়ে ঘুমিয়ে গেল । আজলান অনেকক্ষণ পর বলে উঠলো,
” জ্বর কেমন তোমার?”
তিথি বলল, ” অনেক বেশি। ”
আজলান তার কপাল চেক করলো। তিথি বলল,
” জ্বর তো এখানে থাকে ” বলেই আজলানের হাতটা উদরের উপর রাখলো। আজলান উদর ধরে টেনে এনে জড়িয়ে ধরে বলল,
” হুম কমে এসেছে। ”
তিথি বলল, ” অনেক জ্বর আছে এখনো। ”
আজলান বলল, ” আচ্ছা সকালে ঔষধ দেব। ঘুমাও চুপচাপ। ”
তিথি বলল, ” এখন দাও। সকালে ডোডো জেগে উঠবে।”
আজলান ভালো করে চোখ মেলে দেখলো ডোডোকে ওপাশে রেখেছে তিথি। সে অবাককন্ঠে বলল,
” তুমি ওকে ওদিকে রেখেছ কেন? ”
তিথি বলল, ” আমার তোমার সাথে লেপ্টে ঘুমাতে ভালো লাগে। ”
আজলান তার দিকে চোখ ফেলে বলল, ” কে যেন চলে যাবে বলেছিলো। ”
” হ্যা তাইতো। সময়টা চলে আসতেছে। কিন্তু আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। তুমি না থাকলে আমার কিচ্ছু ভালো লাগেনা। ”
আজলান বলল, ” তাহলে যেওনা। ”
” না যেতে হবে। বাপের বাড়ির জন্য মন পুড়ছে, সাথে তোমাকেও বুঝাতে হবে আমি না থাকলে কেমন লাগে। ডোডোকেও বুঝাতে হবে। ”
আজলান বলল, ” ঘুমাও চুপচাপ। ”
তিথি বলল, ” খুব শীত করছে। তোমার গা কি গরম! তোমারও কি জ্বর?”
” না। আমার গা সবসময় এমন থাকে। ”
” মাথার মতো গাও সবসময় গরম থাকে। বুঝলাম।”
তিথি তার বুকে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করতেই আজলান তাকে বুকের নীচে চেপে ধরে গলায় মুখ গুঁজে বলল,
” আর কোনো নড়াচড়া করলে সোজা বের করে দেব। ”
তিথি বলল, ” আদর করার সময়ও ধমকায়। কেসটা কি বুঝলাম না আজও। ”
ভোর নাগাদ ঘুম ভাঙতেই আজলান দেখলো ডোডো তাদের মাঝখানে চলে এসেছে। মাথাটা তিথির পেটের সাথে লেগে আছে , একটা পা আজলানের মুখের উপর, আরেকটা গলায়। আজলান আফসোসের সুরে বলল,
” সব আয়ত্ত করে নিয়েছে মায়ের কাছ থেকে। ”
চলমান.
রিচেক হয়নি