#এই_ভালো_এই_খারাপ
#পর্ব_১৮
#প্রিমা_ফারনাজ_চৌধুরী
আয়জাকে পাত্রপক্ষের পছন্দ হয়েছে। পাত্রকেও আম্বিয়া বেগম আর আজলানের পছন্দ হয়েছে। আফতাব শেখ কোনো মতামত জানাননি। তিথিরও মনে হলো ছেলেটা মন্দ না। বিয়েটা হয়ে যাওয়ায় ভালো। স্যারের সামনে দাঁড়িয়ে দুটো কথা বলার সাহস বোধহয় যারিফের এই জীবনেও হবে না। আজলান একবসায় কথা পাকাপাকি করে নিল। দিনতারিখ, দেনাপাওনা সবকিছুর হিসেব। আয়জা দেখলো কেনা-বেচার বাজারে তার দাম নেহাতই কম না। তিথিকে সব ব্যাপারে খাপছাড়া দেখে তার রাগ হলো। তাকে আশা দেখিয়ে এখন চুপ করে আছে। সবকিছু হালকা ভাবে নিয়েছে। আসলে ব্যাথা যার সে ছাড়া বাকিদের কাছে তা একটা বিরহের গল্পমাত্র। তাই ভাবি তাকে বুঝার চেষ্টা করছেনা।
তিথি ডোডোকে ভাত খাওয়ানোর চেষ্টা করছিলো। রাত ন’টায় ডোডোর ভাত খাওয়ানোর সময়। আজলান সময় ঠিক করে দিয়েছে। ঠিক সময়ে ভাত না খাওয়ালে এসে চেঁচামেচি জুড়ে দেবে। তিথির আজকাল এসব ভালো লাগছে না।
আয়জা সেখানে এসে বলল বলল, ” তুমি কিছু বলবে না ভাইয়াকে? ভাইয়ার সব কথায় সায় দিয়ে যাচ্ছ দেখলাম। তোমাকেও কব্জা করে নিয়েছে নিজের দলে? ”
তিথি বলল, ” অনেক চেষ্টা করেছি কাল। ও অনেক খুশি তোমার বিয়ে নিয়ে। আমি অশান্তি চাই না। তাই কিছু বলিনি।
বিয়েটা করে ফেলো প্লিজ। পরে যখন তুমি সুখী হবে না তখন তোমার পরিবারের সবাই অশান্তিতে ভুগবে। যারিফ ভাইয়ার কোনো চাকরি নেই এখন। তোমার ভাই ওর হাতে তোমাকে তুলে দেবে কেন? ”
আয়জা বলল, ” তুমি চেষ্টা করেছ আদৌ?”
তিথি বলল, ” বিশ্বাস না হলে তুমি গিয়ে বলো। আমাকে কেন ঝুঁকিতে ফেলছো? ”
” আমি ভাইয়াকে এসব কথা কি করে বলব? ”
” নিজের ভাইকে যমের মতো ভয় পাও আবার আমাকে ঠেলে দিচ্ছো সেই যমের কাছে? এমনিতে দিনরাত আমার ভুল ধরতে ধরতে কাহিল সেখানে এসবে জড়ালে আমাকে এককাপড়ে বাড়ি ছাড়তে হবে। ”
আয়জা বলল,
” আমি বললে আমাকেও বাড়ি থেকে বের করে দেবে নয়ত উনাকে ডেকে এনে অপমান করবে। তুমি তো ভাইয়াকে চেনো। সে মধ্যবিত্ত হতে পারে কিন্তু আত্মসম্মান আছে। ”
তিথি বলল, ” আমি কোনোপ্রকার সাহায্য করতে পারব না ননদিনী। তাই আমার আশা ছাড়ো। ”
আয়জা দু’হাতে মুখ ঢেকে বসে পড়লো। ডোডো হামাগুড়ি দিয়ে তার পিঠের উপরে উঠে মাথা ফেলে ডাকলো, “এপিপ্পি। ”
তিথি তাকে টেনে কোলে তুলে নিয়ে বলল,
” ফুপীর মাথা খারাপ। এখন কথা বলবে না। নে খাওয়া শেষ কর ডোডো। অনেক কাজ পড়ে আছে। ”
আয়জা বেরিয়ে গেল রাগ করে।
ডোডোও আর খেতে চাইলো না। তিথি পানি খাইয়ে দিয়ে গাল মুছে দিল। দোল দিয়ে বলল,
” এবার চুপচাপ ঘুমিয়ে পড় সোনা। মায়ের অনেক কাজ। ”
ডোডো দুপাশে মাথা নাড়লো। তিথি বলল,
” ঘুমাবিনা? ”
ডোডো তার দিকে চেয়ে রইলো। তিথি টাপুসটুপুস আদর করে বলল,
” তাহলে চল বাসনকোসন ধুয়ে দিবি মাকে। ”
ডোডো দু’পাশে মাথা নাড়লো। তিথি বলল,
” তাও করবি না? তাহলে বসে বসে পড়াশোনা কর। ”
বলেই ড্রয়ার থেকে তার জন্য আনা বইটা বের করে দিল তিথি। বইটা আজলান এনেছে ডোডোর জন্য। তিথি ডোডোকে বিছানায় বসিয়ে বইয়ের পাতা উল্টে দিয়ে ডোডোর আঙুল টেনে নিয়ে ছবিতে আঙুল টিপে টিপে বলল,
” এই দেখ গরু, এটা ছাগল, এটা বানর, এটা সাপ। মাকে যদি জ্বালাস তাহলে এরা এসে গপ করে তোকে খেয়ে ফেলবে। ”
ডোডো ছবির সাথে নাক লাগিয়ে ছবিগুলো দেখছে। তিথি হেসে বলল,
” ওরে আমার পড়াকু ছেলেরে। কি মনোযোগ দিয়ে দেখছে। ”
ডোডো মাথা তুলে মায়ের সাথে হাসলো। তিথি তার গালে শক্ত চুমু বসিয়ে বলল,
” পড় পড়। আমি কাজ সেড়ে আসছি। বেশি করে পড়। তোর স্কুল কলেজে পড়া লাগবে না। সোজা ইউনিভার্সিটিতে যাবি ঠ্যাঙ্গুর ঠ্যাঙ্গুর করে। ”
ছেলেকে জ্ঞান দিয়ে তিথি বেরিয়ে গেল। সে যাওয়ার পর ডোডো বইটা ছিঁড়ে কুটিকুটি করলো। তিথি কাজ সেড়ে এসে দেখলো ডোডো বইটা ছিঁড়ে চিবিয়ে চিবিয়ে কাগজগুলি খাচ্ছে। তিথি কপাল চাপড়ে বলল,
” তোর বাপ তো আমাকে আজ আস্ত রাখবে না ডোডো। এটা কি করলি? পড়তে বলেছি আর তুই চিবিয়ে খেয়ে ফেলেছিস? ”
ডোডো কিছুক্ষণ গালো আঙুল রেখে মায়ের দিকে ভীত চোখে চেয়ে রইলো। ক্ষণকাল পর লাফিয়ে উঠে বলল,
” আববাব্বাহ। ”
তিথি চমকে উঠে পেছন ফিরতেই আজলানকে দেখে জমে গেল।
তারপর দৌড়ে গিয়ে ডোডোর গাল থেকে কাগজগুলি বের করলো। ডোডো তার আঙুল কামড়ে ধরতেই তিথি ঠাস করে চড় দিল। ডোডো হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো সেই ফাঁকে তিথি সব কাগজ বের করে মেঝেতে ফেলে দিয়ে বলল
” তোকে পড়তে দিয়েছি আর তুই এসব করছিস পঁচা ছেলে? ”
ডোডো কাঁদতে লাগলো। আজলান হাতের ঘড়ি খুলতে খুলতে মা ছেলেকে দেখতে লাগলো চুপচাপ। তার চোখ ডোডোর দিকে আর মেঝের দিকে। তিথি ডোডোকে কোলে তুলে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে রেখে বেরিয়ে গেল। আজলান হেঁটে গিয়ে বইটা হাতে নিতেই দেখলো দুটো পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলেছে ডোডো। বইয়ের গায়ে এখনো ডোডোর লালা লেগে আছে। বইটা রেখে কোমরে হাত দিয়ে মেঝের দিকে তাকালো সে। মেঝেতে ভাত, আর কাগজের ছেঁড়া ভেজা টুকরো পড়ে আছে।
তিথি ডোডোকে আফতাব সাহেবের কাছে রেখে এল। তারপর মেঝেটা পরিষ্কার করে আজলানের দিকে একপলক চেয়ে চুপচাপ বেরিয়ে গেল।
_________
ষোল-সতের দিনের মতো বাকি আছে বিয়ের। এখন থেকেই বিয়ের যাবতীয় কেনাকাটার লিস্ট তৈরি হয়ে গিয়েছে। নিজ হাতে লিস্টটা লিখতে গিয়ে তিথির হাত কাঁপছিলো। যার জন্য এত আয়োজন সে এসব ফিরেও দেখছেনা।
আম্বিয়া বেগম আর আতিফাকে খুশি দেখালো। আতিফার স্বামীর সাথে বহুদিনের দ্বন্দ চলছে আজলানের সাথে। এই প্রথম জামাইকে বাড়ি আনবেন আম্বিয়া বেগম তাও অনেক কষ্টে।
আতিফা একবার বাচ্চা দুটোকে নিয়ে বাড়ি চলে এসেছিলো একা একা। তাও ঝড়ের রাতে। শ্বাশুড়ির সাথে তার কিছুতেই বনিবনা হয় না। সেই থেকে আজলান ক্ষেপেছিল বোনের জামাইয়ের উপর। কত্তবড় সাহস মা বাবা বউ বাচ্চাকে বের করে দিয়েছে অথচ তার হুঁশ নেই। দুজনের মধ্যে বহুদিন রেষারেষি চললো। আতিফার বর জামিলের আর শেখ বাড়িতে আসা হয়নি সেজন্য। আতিফা এবার অনেক জোর করলো, আম্বিয়া বেগমও অনুরোধ করলো তাই আসার জন্য মত দিয়েছে সে।
আজলান যাদের যাদের দাওয়াত করবে তাদের একটা লিস্ট করেছে। তিথি দেখলো বেশিরভাগই আইনের লোক। র্যাবের সদস্য, পুলিশ সদস্য, গোয়েন্দা অধিদপ্তরের লোকজন।
বিশাল পরিসরে লোকজনের খাওয়ার দাওয়ার আয়োজন করা হবে। আজলান জানালো আড়াই হাজার মানুষের দাওয়াত থাকবে সেদিন। গরু দুটো জবাই করা হবে। সে বড় পরিসরে আয়োজন করতে চাচ্ছে কারণ তার বিয়ের সময় তেমন কোনো আয়োজন হয়নি।
তিথি তা শুনে আয়জার ঘরে এল বলার জন্য। ঘরে আলো নিভানো ছিল। আয়জা উপুড় হয়ে শুয়ে আছে। সে তিথির সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে চারদিন হলো। তিথির ঘরে যায় না। তিথিকেও ডাকেনা। ডোডোকেও কোলে নেয়নি। এমনকি ঘর থেকে পর্যন্ত বের হয়নি সে। খাওয়াদাওয়া কমিয়ে দিয়েছে। এমনকি চুল পর্যন্ত ভালো করে আঁচড়ায়নি এ ক’দিন। আম্বিয়া বেগম সারাক্ষণ বকে যাচ্ছে। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছেনা।
তিথি বলল,
” এই ননদিনী শোনো, তোমার বিয়ে হবে এই এলাকার গ্র্যান্ড ওয়েডিং। খবরদার উল্টাপাল্টা কোনো কাজ করার পরিকল্পনা করো না। তোমার ভাইয়ের নাক কাটা গেলে কারো আস্ত রাখবে না। আচ্ছা সারাক্ষণ ঘরে শুয়ে থাকো, বোর লাগে না? তাকাও আমার দিকে।”
তিথি পিঠে হাত রাখতেই আয়জা মুখ তুলে তাকালো। চোখদুটো ফোলা। মুখটা শুকিয়ে সরু হয়ে গিয়েছে। তিথির মায়া হলো। বলল,
” নিজেকে আয়নায় দেখেছ তুমি? ”
আয়জা বলল, ” দেখতে চাই না। কি বলতে এসেছ বলে চলে যাও। ”
তিথি বলল, ” তুমি আমার উপর রাগ দেখিয়ে যাচ্ছ এখনো। তোমার কি মনে হয় আমি বললে তোমার ভাইয়া মেনে নেবে? যারিফ ভাইয়াকে তখুনি ডেকে আনবে না? অপমান তখন করবে না? ”
আয়জা বলল, ” আমি কিচ্ছু চাই না। আমি তাকে দেয়া কথা রাখতে পারিনি, তাই তাকে ডেকে অপমানও করতে চাই না। কি বলতে এসেছ বলো।”
তিথি তাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
” আচ্ছা নিজেকে সামলাও তুমি। সবার আগে নিজের কথা ভাবা জরুরি। আমি তোমার ভাইয়াকে বলব । ”
আয়জা নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করে বলল,
” না বলতে হবে না। আমার কারো সাহায্য চাই না। আমি ভাইয়ার পছন্দের ছেলেকেই বিয়ে করবো। আমাকে দয়া দেখিওনা প্লিজ। ”
কেঁদে উঠলো সে। তিথি বলল,
” পিরিতির বড়ো জ্বালা। ”
আয়জার গাল মুছে দিল সে। বলল,
” যারিফ ভাইয়ার সাথে কথা হয়েছে? ”
আয়জা দুপাশে মাথা নেড়ে বলল,
” ব্লক। ”
তিথি অবাক হয়ে বলল,
” সোজা ব্লক? তুমি কি কথা দিয়েছ ওকে? ”
” চাকরি পাওয়া অব্দি অপেক্ষা করব। ”
তিথি কপালে হাত দিয়ে বলল,
” বাড়িতে এমন ভাই আছে তোমার, তা জেনেও কাউকে কথা দেয়ার আগে তুমি দু’বার ভাবলে না?”
আয়জা কাঁদতে লাগলো হাঁটুতে কপাল ঠেকিয়ে। তিথি বলল,
” তুমি এমন করলে আমি তোমাকে কোনো সাহায্য করব না ননদিনী। তুমি স্বাভাবিক হও। আমি দেখছি কি করা যায়। ”
_____________
আফতাব শেখ এতদিন চুপ ছিল দেখে আজলান ভেবেছে উনি হয়ত বিয়েতে মত দিয়েছেন কিন্তু হঠাৎ করে তিনি জানালেন,
” আমার এই বিয়েতে মত নেই। ”
আজলান শুনেও না শোনার মতো চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছিলো। আম্বিয়া বেগম বললেন,
” কি বলছো গো? মাথা খারাপ হয়ে গেছে? এমন ভালো ছেলে আর পাবো আমরা? কেন বলছো এসব?”
আফতাব শেখ বললেন,
” বলছি তার যথেষ্ট কারণ আছে। আমি এমনি এমনি কোনো কথা বলিনা। ”
আজলান খাওয়া থামিয়ে বাবার দিকে চোখ তুলে সোজাসাপটা প্রশ্ন করলো,
” মত কেন নেই তার দুটো কারণ দেখান। ”
আফতাব শেখ বললেন,
” প্রথম কারণ আয়জা এই বিয়েতে রাজী নয়। দ্বিতীয় কারণ আমি ওকে ওর পছন্দের ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চাই। আমার কাছে আমার মেয়ের সুখ আগে। ও আমার ছোট মেয়ে। অনেক আদরের। তুমি বাবা মেয়ের মমতাময় সম্পর্কের মানে বুঝবে না আজলান শেখ। ”
আজলান রাগত বলল,
” এসব আপনার চালাকি। আমাকে গোল খাওয়ানোর জন্য আপনি হয় গল্প বানাচ্ছেন, নয়ত আপনার মেয়ের সমস্ত ছেলেমানুষী মেনে নিচ্ছেন। কারণ, যে করেই হোক আমাকে হারাতেই হবে। আর তাতে আপনি আপনার মেয়েকে ব্যবহার করতেও পিছপা হবেন না। ”
আফতাব সাহেব খেতে খেতে বললেন,
” আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল। আছি, থাকবো। ”
আজলান খাওয়ার পাত ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। বলল,
” আমিও আমার সিদ্ধান্তে অটল। আছি, থাকবো।”
বলেই সে গটগট পায়ে হেঁটে চলে গেল। তিথিকে কয়েকবার ডেকেছে। ভয়ে সে যাচ্ছে না। শেষমেশ যখন গেল তখন সে আজলানকে ফোনে কারো সাথে কথা বলতে শুনলো,
” শোনো যারিফ, তুমি যেহেতু কোচিংএ অনেকে ছেলেপেলে পড়াও। তাদের মাধ্যমে হলেও খোঁজ নাও আয়জার সাথে কোন ছেলের ওঠাবসা বেশি। তোমার হাতে এক সপ্তাহ সময় আছে। ঘাড় ধরে নিয়ে এসো আমার সামনে। বুঝেছ কি বলতে চাইছি? তোমার উপর আমার বিশ্বাস আছে। তুমি পারবে। ইউ আর দ্য গ্রেট। তোমার অভজার্ভেশন পাওয়ারের কথা আমি জানি। তদন্ত বিভাগে তোমার জায়গা আমি নিজেই করে দেব। তুমি আমাকে এটুকু হেল্প করো। ”
তিথি কপালে হাত দিয়ে বলল, ” সর্বনাশ। ”
আজলান কথা বলা শেষে তার উপস্থিতি টের পেয়ে দরজা খুলে টেনে ভেতরে ঢুকিয়ে নিল। ডোডো ঘুমাচ্ছে হাত পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে। বাবার গায়ের উপর উঠে অনেকক্ষণ বক্সিং খেলার চেষ্টা করেছে। তারপর ক্লান্ত হয়ে এখন ঘুম।
তিথিকে ঘরে ঢুকিয়ে এনে আজলান তার হাত ছেড়ে দিল। বলল,
” কাল থেকে আফতাব শেখকে নজরে নজরে রাখবে। কখন কি করছে, সব। যারিফকে বলেছি খোঁজ নিতে। এমন কেউ থাকলে ও খুঁজে বের করবে। তুমি চেষ্টা করো আয়জার কাছ থেকে কিছু জানতে। ”
তিথি বলল, ” আচ্ছা। যদি ওরকম কেউ থেকে থাকে যাকে আয়জা পছন্দ করে তখন তুমি কি করবে? ”
আজলান ঘরময় পায়চারি করতে করতে বলল,
” গারদের পেছনে ঘুমানোর ব্যবস্থা করব। শুয়ে পড়ো। ”
তিথি তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল,
” ছেলেটা যদি তিথিকে ভালোবাসে?”
” পুলিশের ডান্ডার বাড়ি খেয়ে ভালোবাসা বেরিয়ে যাবে। ”
তিথি বলল, ” শ্বশুর মশাই তোমার সাথে পারবেনা। চিন্তা করো না। ”
আজলান তার হাত দুটো থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে সন্দিগ্ধ কন্ঠে বলল,
” আজ তোমার ঘৃণা কোথায় গেল?”
তিথি বলল,
” সবসময় ঘৃণা করিনা। ”
আজলান বলল,
” ঘৃণাটাকে বাঁচিয়ে রাখো। তোমার মতো মেয়েরা এটাকেই সম্বল করে বাঁচে। যাও ঘুমিয়ে পড়ো। আর হ্যা, কাল ডোডোর গায়ের উপর পা তুলে দিয়েছ ননসেন্স। বি কেয়ারফুল। আরেকবার যদি দেখি সোজা মেঝেতে নামিয়ে দেব। ”
রাতে ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলো। আজলান তাকে পাটি বিছিয়ে মেঝেতে নামিয়ে দিল। বলল,
” তোমার জায়গা এখানে। ”
তিথি তাকে জাপটে জড়িয়ে ধরে তার উপর শুয়ে থেকে বলল,
” বউ যেখানে তোমার জায়গাও সেখানে। ”
আজলান বলল, ” ডোডো ওখানে একা। ”
তিথি বলল, ” ও বড় হোক ওর জন্যও একটা বউ নিয়ে আসবো। শিক্ষিত, পরিষ্কার, ফর্সা, লম্বা। ”
বকবক করতে তিথি ঘুমিয়ে গেল ওর বুকের উপর।
চলমান….