একমুঠো রোদ্দুর পর্ব-০৮

0
15

#একমুঠো_রোদ্দুর
#পর্বঃ৮
#আদওয়া_ইবশার

দৃষ্টিকে কফির কথা বলে রক্তিম বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে সেই কখন, অথচ এখনো দৃষ্টির কোনো সাড়াশব্দ নেই। এতোটুকু দেরীও সহ্য হচ্ছেনা রক্তিমের। ভীষণ হাঁসফাঁস লাগছে। মনে হচ্ছে গলার কাছে কিছু একটা আটকে আছে।বাহিরটা শান্ত থাকলেও ভিতরটা বড্ড ছটফটে লাগছে। গত সাত বছরে দৃষ্টি নামক এই মেয়েটা তার মাঝে গুটিকয়েক বাজে অভ্যাস ছড়িয়ে দিয়েছে। প্রতিদিন ক্লান্ত শরীরে বাসায় ফিরে দৃষ্টির হাসি হাসি মুখ আর কথার ফুলঝুড়ি শুনতে শুনতে বিষয়টা রক্তিমের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। গত দুদিন যাবৎ এটুকু না পেয়েই কেমন খালি খালি লাগছে!মনে হচ্ছে সব কিছু থেকেও কী যেন একটা নেই। আর সেই না থাকাটাই রক্তিমের মন গহীনে সৃষ্টি করেছে অসহনীয় তোলপাড়।দৃষ্টিকে আসতে না দেখে ক্ষীণ একটা নিঃশ্বাস ফেলে রক্তিম আকাশপানে তাকায়। রূপালী থালার মতো স্নিগ্ধ চাঁদটাকে কেন্দ্র করে হাজারো তারার মেলা বসেছে দূর আকাশে। পূর্ণ জোছনার আলোয় প্রকৃতি সেজেছে মায়াময় রূপে। সেই রূপে মুগ্ধ হয়ে পবনের লিলুয়া বাতাস মনে হচ্ছে ফিসফিসিয়ে সুখ সুখ গুঞ্জন ছড়াচ্ছে চারিধারে। এক মুহূর্তের জন্য রক্তিম ভাবে, প্রকৃতি বুঝি তার হৃদয়ের উচাটন দেখেই তাকে কটাক্ষ করে এই সুখের পসরা সাজিয়েছে। না হয় যান্ত্রিক শহরতলীর রাত এতো স্বর্গীয় রূপ কেন ছড়াবে? জরাজীর্ণ প্রকৃতি কোন খুশিতে এতো ঐশ্বর্গীক রূপে নিজেকে সাজাবে?সে থাকবে কালের গর্ভে দিন ফুরিয়ে প্রকৃতির উজ্জ্বলতা হারানোর শোকে ম্নিয়মান। অথচ ভাব দেখো, থৈ থৈ জোছনার আলোয় কেমন মুক্তঝরা হাসি হাসছে! বিরক্তিতে গলার কাছটা একদম তিতো হয়ে আছে রক্তিমের।দুচোখ বন্ধ করে বুক ভরে প্রকৃতির নির্মল বাতাস টেনে অশান্ত মনটাকে শান্ত করার প্রয়াস চালাতেই রক্তিম টের পায়, প্রকৃতির বাতাসের সাথে ভীষণ পরিচিত এক শরীরের ঘ্রাণ তার অশান্ত হৃদয়ে অল্প অল্প শান্তির বর্ষণ নামাচ্ছে। কাল বিলম্ব না করে চট করেই চোখ দুটো খুলে তাকায়। তৎক্ষণাৎ চোখের তারাই সুস্পষ্ট হয় পরিচিত এক নারী হাত কফির মগ ধরে আছে। অভিমানী দাঁড়িয়ে আছে নিভৃতে তার পিছন বরাবর। প্রফুল্ল চিত্তে অল্প ঠোঁট বাকিয়ে হাসে রক্তিম। হাত বাড়িয়ে নিরবে কফির মগটা নিয়ে রেখে দেয় পাশে থাকা ছোট্ট টেবিলটাতে।পরপর হেচকা টানে দৃষ্টিকে সম্মুখে এনে মিশিয়ে নেয় নিজের বলিষ্ঠ বুকের সাথে। আচমকা এমন আক্রমণে ভড়কে গিয়ে অল্প ভয়ের সাথে চোখ দুটো খিঁচে বন্ধ করে নেয় দৃষ্টি। ক্ষণকাল সময় নিয়ে নিজেকে সামলে চোখ মেলে তাকিয়ে ছটফট শুরু করে ছোটার জন্য। কিন্তু মেদহীন পুরুষালী সুঠাম দেহের শক্তির কাছে তার ঐ ক্ষীণকায় দেহের শক্তিটুকু খুবই নগন্য হয়ে ঠেকে। দৃষ্টি হতাশ হয়ে হাল ছেড়ে চুপচাপ পরে থাকে ঐ নিষ্ঠুরতম পুরুষটার বুকে। দুজন দুজনার এতোটা কাছাকাছি,যতটা কাছাকাছি থাকলে একে অপরের নিঃশ্বাসের শব্দ শুনতে পায়। এরপরও দৃষ্টি নিরব, নির্বাক। বিষয়টা আবারও রক্তিমের মাঝে বিরক্তির উদ্বেগ সৃষ্টি করে।মসৃণ কপালে দুই-একটা বলিরেখার ভাজ ফেলে রক্তিম মৃদু স্বরে জানতে চায়,

“সমস্যা কী? কিসের মৌনব্রত পালন করছো দুদিন যাবৎ?”

জবাব দেয়না দৃষ্টি। ঠাই পরে থাকে রক্তিমের বুকের কাছটাই।রক্তিম এক হাতে দৃষ্টির কোমর চেপে ধরে অপর হাতটা মাথার পিছনে চুলের ভাজে ডুবিয়ে দিয়ে আরও নিবিড়ভাবে মিশিয়ে নেয় নিজের সাথে। কপালে কপাল ঠেকিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে,

“বুড়ি হচ্ছো, ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে দুই-একটা চুলে পাক ধরেছে। অথচ তোমার কীর্তিকলাপ দেখে মনে হয় দিন দিন বয়স বাড়ার বদলে কমছে। এখনো আমাকে জ্বালানোর ফন্দি আটা শেষ হয়না।”

এবারও নিরব দৃষ্টি। ‘বুড়ি হচ্ছো’ কথাটা শুনে অভিমানের অল্প ছোঁয়া অন্তঃস্থল থেকে এসে ভীড় জমায় গাল দুটোতেও। পরিস্থিতি ভিন্ন হলে হয়তো সে এতোক্ষনে মুখ ঝামটে বলে দিতো,

“আজ-কাল ত্রিশ- পয়ত্রিশ বছরেও মেয়েদের বিয়ে হতে দেখা যায়।আর আমি কী না এই বয়সে বুড়ি হয়ে গেলাম!আসল কথা হলো বুড়ি হয়নি, হয়েছি তো পুরোনো। রাস্তাঘাটে প্রতিদিন নিত্যনতুন মুখ দেখে মনে যে রং লেগেছে, এখন কী আর প্রতিদিন ঘরে এসে এক মুখ দেখতে ভালো লাগবে?”

তবে এই মুহূর্তে রক্তিমের মুখের উপর জবাব দেওয়ার থেকেও নিজেকে মৌন রাখাটাই অধিক জরুরী মনে করে। কিন্তু বারবার খেয় হারাচ্ছে দৃষ্টি।রক্তিমের এতোটা কাছাকাছি এসে নিজেকে সামলে রাখা ভীষণ কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে।চিরচেনা পুরুষটার শরীর থেকে ভেসে আসা বুনো মাতাল ঘ্রাণে আঁটসাঁট হয়ে থাকা খোলসটা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে ফসকে পরতে চাইছে। ইচ্ছে করছে অল্প লোমশে আবৃত ঐ শক্ত বুক পাজরে নাক ঘষে মাতাল গন্ধটাকে ভীষণভাবে শুষে নিতে। ভালোবাসার উন্মাদনায় মেতে ওঠে হারিয়ে যেতে কোনো এক নতুন ভুবনে। বেহায়া মনটা কেমন দুমুখো সাপের মতো আচরণ করছে! এক মন বলছে, মান-অভিমান সব ভুলে ঝাপিয়ে পর ঐ পাষাণটার বুকে। ঐখানেই তোর সকল সুখ লুকিয়ে আছে। আরেক মন বলছে, একদম এই কাজ করবিনা। এতো বেহায়া কেন তুই? ঐ পাষণ্ডের বুকে তোর জন্যে কোনো ভালোবাসা নেই। অহেতুক কেন মরুভূমির বুকে ঝাপিয়ে পরে নিজেকে তৃষ্ণার্ত পথিক বানাবি? আগে বিরান মরুর বুকে জলের সন্ধান কর। প্রণয়ের অমৃত বাণী পাষণ্ডটা মুখ ফুটে উচ্চারণ না করলে অভিমানের সঙ্গ ছাড়িস না। এবার অন্তত একটু স্বার্থপর হো। আর কত নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসা বিলাবি?বেহায়া, নির্লজ্জ মনটাকে শাসিয়ে চোখ-মুখ খিঁচে দৃষ্টি পরে থাকে নিরবেই। তার এই অবাধ্যতাই লাগামছাড়া হতে চায় রক্তিমের মেজাজ। বারবার লাগামহীন পাগলা ঘোড়ার মতোই ছুটতে চাওয়া মেজাজটার শক্ত করে দড়ি টেনে ধরে রক্তিম। শান্ত, সুদৃঢ় কন্ঠে বোঝানোর চেষ্টা করে অভিমানী স্ত্রীকে,

“এভাবে বোকার মতো আচরণ করছো কেন? কথা না বলে চুপ থাকলে কী কোনো সমস্যার সমাধান হবে?সামান্য একটা ব্যাপার নিয়ে এমন ছেলেমানুষি আচরণের তো কোনো মানে দেখতে পাচ্ছিনা আমি।সেদিন ছেলের সামনে এমনভাবে রিয়েক্ট না করলে আমি ধমকাতাম?”

সামান্য ব্যাপার! তার ভাষ্যে সেই সামান্য ব্যাপারই যে দৃষ্টির মনে কতটা কষ্টের দাগ কেটেছে এটা কী রক্তিম একটুও উপলব্ধি করতে পারছেনা? বিয়ের পর প্রথম প্রথম দৃষ্টির গায়েও হাত তুলেছে রক্তিম। সাথে কথার আঘাত তো আছেই। এরপরও তো দৃষ্টি কখনো এভাবে কষ্ট পেয়ে নিজেকে গুটিয়ে নেয়নি। রক্তিমের কী এই বিষয়টা মাথায় ঢুকছেনা?একবারও মনে হচ্ছেনা, যে মেয়েটা তার এতো এতো অপমান মুখ বুঝে সহ্য করেও প্রতিবার বেহায়ার মতো তার পিছুই নিয়েছে, সেই মেয়েটা হঠাৎ যে কারণে এমন চুপ হয়ে গেছে সেই কারণটা সামান্য কোনো কারণ হতে পারেনা! আচমকা দৃষ্টির চোখ দুটো নোনাজলে সিক্ত হয়ে ওঠে। কান্নার ঢোক গিলে মৌনতা ভেঙ্গে শক্ত কন্ঠে বলে ওঠে,

“বিশ্বাস করুন,আপনি যদি আপনার স্ত্রী দৃষ্টিকে ঐ কথার থেকেও হাজার গুণ ধারালো কথার আঘাতে জর্জরিত করতেন, তবুও বেহায়ার মতো আপনার এক ডাকে সে সাড়া দিতে বাধ্য থাকতো। কিন্তু সেদিন আপনি শুধু আপনার স্ত্রীর উপর নই, একজন মায়ের উপর আঙুল তুলেছেন। সরাসরি অভিযোগ করেছেন, সে তার সন্তানের মানসিক বিকাশে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। এমন একটা অভিযোগ তোলার আগে একটাবারও এটা ভাবলেন না, যে মেয়েটা দিনের পর দিন নানান জটিলতার সম্মুখিন হয়ে মরনসম যন্ত্রণা সহ্য করে মা হয়েছে, সেই মেয়েটার পক্ষে তার সন্তানের মানসিক বিকাশে বিঘ্ন ঘটানো আদও সম্ভব কী না!”

কান্নার গতি বাড়ে দৃষ্টির। ইচ্ছে ছিল আরও কিছু বলার, কিন্তু সম্ভব হলনা। পারলনা পাষাণটাকে কড়া সুরে আরও দুই-চারটে কথা শুনিয়ে দিতে। সেই না পারার কারণটা হয়তো রক্তিমের প্রতি তার তীব্র ভালোবাসা। তার থেকেও বড়ো কথা রক্তিম বাচ্চা না, তার বোধশক্তিও যথেষ্ট প্রখর। তার যদি কষ্ট বোঝার মতো একটা মন থাকে, তবে দৃষ্টির এটুকু কথাতেই নিশ্চিত বুঝবে সেদিনের কথা গুলো দৃষ্টিকে কতটা পুড়িয়েছে।বিমূঢ় চিত্তে দৃষ্টির কান্নারত মুখটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আচমকা রক্তিমের চোখ দুটোতে চঞ্চলতা ভীড় করে। বুকের ভিতর অস্থিরতায় ছেয়ে যায় আবারও। মন বলে, সেদিন আসলেই এভাবে বলা উচিৎ হয়নি। এরপরও মুখ ফুটে কিছু বলতে গিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়। গলার কাছটায় কেমন যেন এক জড়তা এসে ভীড় করে। অসহায়ের মতো ঠাই দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকে দৃষ্টির কান্নারত মুখের দিকে। ক্ষণকাল অতিবাহিত হতেই পূণরায় দৃষ্টি ছটফটিয়ে ওঠে রক্তিমের থেকে ছাড়া পাবার জন্য। তড়িৎ রক্তিম সচকিত হয়ে হাতের বাঁধন জোরদার করে। খাকারি দিয়ে গলার কাছে জমে থাকা শ্লেষ্মাটুকু পরিষ্কার করে জিভের ডগায় শুকনো খরখরে ঠোঁট দুটো ভিজিয়ে নেয়। দ্বিধা কাটিয়ে স্তিমিত স্বরে বলে,

“স্যরি, পার্টির একটা ব্যাপার নিয়ে ঐদিন এমনিতেই টেনশনে ছিলাম।তার মাঝে তোমার এমন আচরণে হঠাৎ রাগ ওঠে যায়। রাগের মাথায় না বুঝেই বলে দিয়েছি। এতো কিছু ভেবে বলিনি আমি।”

জাদঁরেল,গম্ভীরমুখো পাষাণ শিকদার তার স্ত্রীকে স্যরি বলেছে!এটা কী আদও বিশ্বাসযোগ্য? দৃষ্টির কান সত্যিটাই শুনেছে না কী ভুলবাল কিছু শুনলো? কান্না ভুলে রক্তিমের মুখের দিকে অবাক, বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে দৃষ্টি। সে এতোটাও আশা করেনি এই বদমেজাজি লোকটার কাছ থেকে। ভেবেছিল খুব বেশি হলে হয়তো ছোট্ট করে একটা স্যরি বলে দিবে। কিন্তু তার ভাবনা সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ করে স্যরি বলার পাশাপাশি এতো গুলো কথা খরচ করে দৃষ্টিকে মানানোর চেষ্টা করেছে। পুরো ব্যাপারটা দৃষ্টির কাছে অষ্টম আশ্চর্যের থেকেও কম না।মুহুর্ত ব্যবধানে দৃষ্টির লোভী মনটা প্রাণপ্রিয় স্বামীর মুখ থেকে আরও কিছু শোনার আশায় দ্বিগুণ লোভী হয়ে ওঠে। বিমূঢ় ভাবটা কাটিয়ে ওঠে চোখে-মুখে কৃত্রিম গম্ভীর্যতা আনার চেষ্টা করে। পূণরায় বাঁধনছাড়া হবার পায়তারা করে ভার মুখে বলে,

“ইট’স ওকে। ছাড়ুন এবার।”

রক্তিম নিরবে কতক্ষণ দৃষ্টিকে পরখ তার মতিগতি বোঝার চেষ্টা করে।কপালে ভাজ ফেলে নিম্নোষ্ঠ কামড়ে ভাবে কিছু একটা।চতুর মস্তিষ্ক চট করেই ধরে ফেলে দৃষ্টির মনোভাব। তৎক্ষণাৎ ঝুঁকে একেবারে দৃষ্টির মুখের কাছাকাছি এসে নিরেট স্বরে বলে,

“লোভে পাপ পাপে মৃত্যু, কথাটা ভুলে গেছো?”

কথার মানে বুঝতে না পেরে নড়াচড়া ভুলে দৃষ্টি নির্বোধের মতো তাকিয়ে থাকে রক্তিমের দিকে। কিসের মাঝে কি টেনে আনছে এই লোক? লোভ আর পাপের কথা উঠছে কেন এখানে?বোধগম্য হলনা দৃষ্টির। তাকে এভাবে বোকা বোকা মুখ করে তাকিয়ে থাকতে দেখে রক্তিম নিজেই পূণরায় কপাল গুটিয়ে বলে,

“এতো বছরেও তোমাকে লোভী মনে হয়নি। কিন্তু আজ কী করলে এটা? আমার মুখে স্যরি শুনে এখন আবার ভালোবাসি শোনার জন্য লোভ করে আছো?”

দৃষ্টি ভীষণভাবে চমকায়। তার মনের ভাবনা এই লোক বুঝলো কিভাবে? স্তম্ভিত হয়ে পলকহীন তাকিয়ে থাকে রক্তিমের ভরাট মুখের দিকে। পরপর ঝুপ করে এক ঢালি লজ্জা এসে ভীড় জমায় তার মুখ জুড়ে। চোরের মতো মুখ লোকায় রক্তিমের বক্ষস্থলেই। হাঁসফাঁস করে লজ্জায় মিইয়ে আসা কন্ঠে বলে,

“বাজে কথা। এমন কিছুই না।”

রক্তিম হাসে।নিবিড়ভাবে মিশিয়ে নেয় দৃষ্টিকে নিজের সাথে।পরম আবেশে প্রেয়সীর ঘন,কালো,রেশম চুলে মুখ গুজে। দৈবাৎ ঘাড়ের কাছে রক্তিমের উত্তপ্ত ঠোঁটের ছোঁয়া পেয়ে বরফের ন্যায় জমে যায় দৃষ্টি।ধীরে ধীরে গাঢ় থেকেও প্রগাঢ় হয় রক্তিমের উষ্ণ ছোঁয়া।গলার কাছ থেকে মুখ তুলে আচমকা নিকোটিনের ধোয়ায় পুড়ে ধূসর বর্ণ ধারণ করা ওষ্ঠযুগল ডুবিয়ে দেয় দৃষ্টির তিরতির করে কাঁপতে থাকা ওষ্ঠপুটে। মুখ ফুটে ভালোবাসি উচ্চারণ না করেও রক্তিমের প্রতিটা আদুরে ছোঁয়া যেন দৃষ্টিকে চিৎকার করে জানিয়ে দেয় ভালোবাসার কথা।ভালোবাসা স্বর্গীয় এক অনুভূতির নাম। শুধু মুখের স্বীকৃতিতেই এই স্বর্গীয় অনুভূতিটা অনুভব করা যায়না। ভালোবাসা কখনো কখনো মিশে থাকে অনুভবে, স্পর্শে। আবার ভালোবাসি শব্দটা কখনো মুখে উচ্চারিত না হয়েও তীব্র বেগে ছুটে আসে হৃদয় গহীন থেকে।

চলবে….