#কন্ট্রোললেস
#অনুপ্রভা_মেহেরিন
[পর্ব ৩৬ শেষ পর্ব ]
ভীষণ জ্বরে ভুগছে উজ্জ্বল।জ্বরের দাপটে শরীর কাঁপছে,নাক দিয়ে অঝোরে পানি ঝরছে জিহ্বা কেমন জঘন্য তিতকুটে হয়ে আছে।রুমু অবিশ্রান্ত জলপট্টি দিয়ে যাচ্ছে জ্বর কমার নাম নেই।ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা থাকলেও উজ্জ্বল ত্যাড়ামি করে যায়নি।ছেলের চিন্তায় নার্গিসের মুখটা শুকিয়ে গেছে কি খাবে না খাবে ভেবে অস্থির তিনি।
” জ্বর বাঁধিয়ে এবার শান্তি লেগেছে?বারবার বলেছি বৃষ্টিতে ভিজবেন না কেন ভিজলেন?”
” আমার মনে সুখ বেশি তাই বৃষ্টির সাথে ভাগাভাগি করতে গেছি।”
” খবরদার তর্ক করবেন না।”
” রেগে যাচ্ছিস কেন?”
রুমু প্রত্যুত্তর করে না হঠাৎ উজ্জ্বলের ফোন বেজে উঠলো রেস্টুরেন্টের দায়িত্বে থাকা ছেলেটা ফোন দিয়েছে ছেলেটার সাথে কথা শেষ করে ফোনটা ছুড়ে ফেলে বালিশের পাশে।
” একবার রেস্টুরেন্টে যাবি সব চেক করে আসবি হাত পা গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না।তোর মাথায় রাখতে হবে আমার অবর্তমানে সব তোর।”
” আপনার অবর্তমানে মানে?এই কথা হঠাৎ আসছে কেন?”
” কারণ তুই আমাকে চুমু দিচ্ছিস না তোর চুমুর অভাবে আমি জ্বর বাঁধিয়ে বসে আছি দেখছিস না?”
” চুপ করুন।একটু ঘুমান।”
” চুপ করব না।তোকে দেখলে চুপ করে থাকা যায়?তোকে দেখলে আমার আবেগ অনুভূতি ছলকে উঠে মনে হয় প্রতি সেকেন্ডে সেকেন্ডে বাসর…”
উজ্জ্বল কথা শেষ করার আগে রুমু জলপট্টিটা উজ্জ্বলের মুখে চেপে ধরে।জ্বরের ঘোরে কিসব আবল তাবল বকছে এই লোকটা লাজ লজ্জা কি সব ড্রেনে ফেলে এসেছে?রুমু জলপট্টি সরিয়ে উজ্জ্বলের পানে চোখ রাঙায়।উজ্জ্বল ঠোঁট উলটে বলে,
“এভাবে থামাতে নেই প্রিয় চুমু দিয়ে চুপ করাতে হয়।”
“দিন দিন অসভ্যতা বেড়ে যাচ্ছে।”
” সভ্য আমি কোনো কালেই ছিলাম না।”
রুমু প্রত্যুত্তর করে না উজ্জ্বল সেই সুযোগে চুপচাপ তাকিয়ে রয় রুমুর পানে মেয়েটা দিন দিন আরো সুন্দর হয়ে উঠছে।আজকাল উজ্জ্বলের ভয় হচ্ছে এই সুন্দরীকে বাড়ির বাইরে একা যেতে দেওয়া ঠিক নয়।উজ্জ্বল ঘুমানোর চেষ্টা চালায় ঘুমের ঘোরে আচমকা চেচিয়ে বলে,
” রুমু দেখ দেখ মাছ আকাশে উড়ছে।রুমু এসব কি হচ্ছে!”
বিয়ের পর প্রথমবার উজ্জ্বলের যখন গা কাঁপিয়ে জ্বর আসে সেবারেও উজ্জ্বল এমন পাগলামি করেছিল তখন রুমু বেশ ভয় পেয়েছে এর মাঝেও যতবার গা কাঁপিয়ে জ্বর এসেছে ততবারি উজ্জ্বল এসব পাগলামি করেছে তাই রুমু এই বেলায় আর ভয় পেল না।চুপচাপ উজ্জ্বলের আবোলতাবোল বকবক ভিডিও করতে লাগল।
” উজ্জ্বল।”
” হু..”
” আকাশে কী মাছ উড়ছে?”
” চিল…”
” চিল কোনো মাছ হলো?”
” না না চিতল।”
কথার মাঝেই ঘুমিয়ে পড়ল উজ্জ্বল।রাত দশটা ছুঁই ছুঁই নার্গিস রুমুকে ডাকলেন রাতের খাওয়ার খেতে।খাওয়া দাওয়া শেষ করে টুকটাক কাজ সেরে রুমে ফিরতে ফিরতে রাত প্রায় বারোটা বেজে গেল।উজ্জ্বল তখন জেগেই ছিল ঝাপসা চোখে কয়েক পল তাকাল রুমুর পানে।বাইরে থেকে আসা বাতাসে গায়ে কাটা তুলছে উজ্জ্বলের ছেলেটা কাঁথা জড়িয়ে কেমন গুটিয়ে আছে।
” উজ্জ্বল আপনার কি বেশি খারাপ লাগছে?”
” না।”
” কিছু খাবেন?”
” হুহ।”
” কি খাবেন?বলুন বানিয়ে দিচ্ছি।”
” কাছে আয়।”
রুমু কাছে গেল ভেবেছিল উজ্জ্বল কিছু বলবে কিন্তু তার ভাবনা মিথ্যা হলো তপ্ত দেহে রুমুকে আগলে ধরল রুমু নিজেকে ছাড়াতে চাইল উজ্জ্বলের শরীরের তাপে তার কেমন উষ্কখুষ্ক লাগছে অথচ উজ্জ্বল তো তা চায় না উজ্জ্বল চায় রুমুর শরীরটা তার আয়ত্তে থাক।অন্তঃকরণে শান্তির স্রোত বয়ে যায়।উজ্জ্বল তার শুষ্ক ঠোঁট মিশিয়ে দিল রুমুর ঠোঁটে রুমু নিজেকে ছাড়াতে চাইল অদ্ভুত অনুভূতিতে নিংড়ে যাচ্ছে ।জ্বরের তোঁপে উজ্জ্বল বেসামাল রুমুর ওড়নাটা টেনে হাতের মুঠোয় পুরে সরিয়ে ফেলল।রুমু বুঝতে পারে উজ্জ্বল নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে কি থেকে কি করছে ছেলেটার মাথায় নেই।
” উজ্জ্বল প্লিজ আপনি অসুস্থ…”
“শিসস কথা বলে না।”
” কন্ট্রোল হারাবেন না।প্লিজ উজ্জ্ব…”
কথা শেষ করার আগেই রুমুর ঠোঁটে কামড় বসাল উজ্জ্বল।মুহূর্তে ব্যথায় কুঁকড়ে উঠল সে সময়ের তালে তালে দুজনেই কন্ট্রোল হারাল।উজ্জ্বলের দেহের উষ্ণতা মিশে গেল রুমুর দেহে।সারারাত উজ্জ্বলের কোন পরিবর্তন হলো না,
না রুমুকে ঘুমাতে দিল না তার জ্বর কমলো।ভোরের আলো যখন ফুটতে শুরু করেছে তখনি রুমু ঘুমের কোলে ঢোলে পড়ল।উজ্জ্বলের চোখে তখনো ঘুম নেই রুমুর অনাবৃত দেহে কাঁথা টেনে আগলে ধরল বুকের মাঝে।তখনি চোখে পড়ল রুমুর পিঠে ঘাড়ে কামড়ের দাগ গুলো লাল হয়ে আছে।উজ্জ্বল কিঞ্চিৎ হেসে কামড়ের স্থানে চুমু খায়।রুমুকে জ্বালাতে ফিসফিসিয়ে বলে,
” বেয়াদব মেয়ে আমাকে রাতে একটুও ঘুমাতে দেয় না।”
.
দুপুর সময়টাতে উজ্জ্বলের জ্বর ছেড়ে এলো।দুজনে তখন কথায় ব্যস্ত তখনি উপস্থিত হয় আনিকা।
” আসতে পারি?”
” আরে ভা..আপা এসো।”
‘ভাবি’ শব্দটা বলতে গিয়েও থেমে গেল রুমু।রাবেয়ার মৃত্যুর দেড় বছর পেরিয়ে গেছে এই দেড় বছর সময়টা খুব অল্প হলেও পালটে গেছে অনেক কিছু।যেমনটা পালটে গেছে আনিকা জীবন তেমনি নিজেকে পালটে নিয়েছেন সৈয়দ ইসমাইল।আনিকার হাতের খাবারে বাটিটা রাখল টেবিলে এবং উজ্জ্বলের পানে তাকিয়ে বলে,
” জ্বর আছে নাকি গেছে?”
” মাঝ পথে।”
স্মিথ হেসে বলল উজ্জ্বল।আনিকার পানে একপলক তাকাল রুমু।মেয়েটাকে যত দেখে ততই অবাক হয় সে, এই মেয়েকে দেখে কেউ বলবে না সে বিবাহিত এই মেয়েটাই একটা সময় কোমড়ে আঁচল গুজে সংসার সামলেছে।তার চলায় ফেরা এসেছে বেশ পরিবর্তন আগের মতো সাধাসিধা চলা ফেরা এখন আর তার নেই এখন সে বেশ স্টাইলিশ একটা মেয়ে।
রাশেদের সাথে আনিকার ডিভোর্স সম্পূর্ণ হয়েছে অনেক আগেই।
আনিকা নতুন করে পড়াশোনা শুরু করেছে তার এই পরিবর্তন সবাই বেশ সাপোর্ট করেছে।একবার ভালোবেসে সব ছেড়ে ঠকে গেল মেয়েটা, ফুলের মতো সুন্দর মেয়েটার বাকি জীবন নষ্ট হোক কেউ চায় না।আনিকা বাঁচুক নিজের মতো করে বেঁচে থাকুক।পেছনে ফেলে আসা দেড় বছরে আনিকা একবারো রাশেদের সাথে জেলে দেখা করেনি শুধু সে নয় সৈয়দ ইসমাইল নিজেও দেখা করেননি।উজ্জ্বল মাঝে মাঝে দেখা করে আসে কিন্তু রুমু?রুমুও গাঢ় অভিমান বুকে চেপে ভুলে গেছে তার কোন ভাই আছে।
রাশেদকে নিয়ে চলা মামলা এখনো চলমান তার জামিনে কেউ এগিয়ে এলো না পরিস্থিতি সময় সবকিছুই তা বিরুদ্ধে।
রুমু হাসি মুখে বলে,
” আজ ক্লাসে যাওনি আপা?”
” না।আজ শরীরটা ভালো লাগছে না।আব্বা বলল হালিম খাবে ভাবলাম যাইনি যখন বানিয়ে ফেলি।তোমাদের জন্যও এনেছি খেয়ে বলো কেমন হয়েছে।”
” তোমার হাতের হালিম বেস্ট এই কথা তো আমি জানি।”
” এই শুনো উজ্জ্বলের জ্বর কমলে বাড়ি যাবে আমার সাথে দুইদিন থাকবে একা একা বাড়িতে ভালো লাগে না।আব্বা কাজ শেষ করে এসেই ঘুমিয়ে যান মিথ্যা বলবো না আব্বা আমাকে যথেষ্ট সময় দেন।”
উজ্জ্বল তাকাল আনিকার পানে বেশ সাহস নিয়ে বলেই ফেলল,
” আপা একটা কথা বলি?কিছু মনে নিবেন না তো।”
” বলো কি বলবে?”
” এভাবে আর কতদিন?বিয়ে করে স্যাটেল হয়ে যান।আগে যা হয়েছে সেসব বাদ দিলাম এখন আমরা সবাই দেখে শুনে আপনাকে বিয়ে দিব ইনশাআল্লাহ আপনি যোগ্য কাউকে পাবেন।”
” আমাকে বিয়ে দেওয়ার আগে আব্বার বিয়ের কথা ভাবো।মানুষটা আর কত বছর একা থাকবে?পুরুষ মানুষ বাইরের দখল সামলে বাড়ি ফিরলে বউয়ের প্রয়োজন হয় একটা আপন মানুষের প্রয়োজন হয়।”
আনিকার কথায় সহমত করে রুমু বলে,
” আব্বাকে সাহস করে অনেকবার বলেছি কিন্তু আব্বা ধমক দিয়ে আমাকে থামিয়ে দিলেন।আপা তুমি বিয়ে করো দেখবে আব্বা একা না থেকে নিজেও বিয়েতে মত দিবেন।”
” শুনো আমার জীবনে এই ব্যাপারটা স্কিপ করতে চাই বিয়ে শাদী ভালোবাসা এসব এখন হাস্যকর বিষয়।আমি ভালোবেসে ঠকে গেছি, রুমু বুঝতে পারছো?তবে আমার আফসোস নেই আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে ভালোবেসেছি তার হজম হয়নি।”
” আপা আরেকটা বার নিজেকে সুযোগ দিন।”
” শুনো এক কথা বারবার বলবে না আমার অসহ্য লাগে বিরক্ত লাগে দম বন্ধ হয়ে আসে ভালোবাসা শব্দটা মনে বিতৃষ্ণা জাগিয়ে দিয়েছে।”
” আমাকে দেখো উজ্জ্বল আমাকে ভালোবেসে ঠিক কি কি করেছে।”
” সবার ভাগ্য তোমার মতো নয় রুমু।
আনিকা আর বসলো না চলে গেল।এই শহরে থাকতে তার ইদানীং বড্ড কষ্ট হচ্ছে শহর বললে অবশ্য ভুল হবে এই পাড়ায় বা এলাকায় যে দেখছে সেই তার করুন কাহিনীর কথা তুলে আফসোস করছে বিয়ের কথা বলছে।আচ্ছা মানুষ কি বুঝে না তার ক্ষত বিক্ষত মনের কথা এসব কথায় তার ক্ষত জায়গায় জ্বালাপোড়া বাড়ায়।
.
দুঃখ কষ্ট হাসি কান্না সব মিলিয়ে মানুষের জীবন এই সব মিলিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হয়।এর মাঝেই কেটে গেল কয়েকটা বছর আচ্ছা এই কয়েকটা বছরে উজ্জ্বল রুমু আনিকা কিংবা বাকিদের জীবনে কি কি পরিবর্তন এসেছে আপনাদের জানতে ইচ্ছে হয় না?
কেমন আছে তারা?কেমন চলছে তাদের জীবন?
হাতে ডাইপার নিয়ে বসে আছে উজ্জ্বল ডাইপার কিভাবে পড়াতে হয় তার জানা নেই।রুমু অনেকবার বলেছে শিখে নাও কাজে আসবে কিন্তু উজ্জ্বল সে তো এসব ব্যাপারে যথেষ্ট খুঁতখুঁতে।ডাইপার হাতে নিয়ে অনেকবার পড়াতে চেষ্টা করেও উজ্জ্বল বুঝতে পারলো না কোন পাশ সামনে অথবা পেছনে।হঠাৎ উজ্জ্বলের ছেলে রুজান কেঁদে উঠলো নার্গিস নাতির কান্না শুনে ছুটে এলেন।
” আমার নানুভাই কাঁদছে কেন?একি তুই এখনো ডাইপার নিয়ে বসে আছিস!”
উজ্জ্বলের পিঠে দুম করে একটা কিল বসিয়ে দিল নার্গিস।ইদানিং রুজানের জন্য উজ্জ্বলকে সবার তোপের মুখে পড়তে হয়।বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে উজ্জ্বলের তেমন কোন অভিজ্ঞতা নেই তাই হুটহাট কোন ভুল করে ফেললে সবাই তাকে নিয়ে পড়ে।নার্গিস রুজানের ডাইপার পড়িয়ে কোলে তুলে চলে গেলেন।রুমু মাত্রই গোসল সেরে রুমে ফিরল উজ্জ্বলকে গোমড়া মুখে বসে থাকতে দেখে বলে,
” কি হয়েছে?”
” আম্মা মেরেছে।”
রুমু খিলখিলিয়ে হেসে উঠল এসব নতুন নয় বর্তমানে ঘরের একমাত্র রাজত্বকারী রুজান তাকে কেউ অনাদর করলেই হলো বাকিটা ইতিহাস।
” ডাইপার পরিয়ে ছিলেন?”
” হু।”
” মিথ্যা কথা রুমু এই মিথ্যুকে কথা বিশ্বাস করিস না।ডাইপার আমি এসে পরিয়ে গেছি।”
নার্গিসের হঠাৎ আগমনে রুমু উজ্জ্বল দুজনেই ভড়কে গেল।নার্গিস রুজানকে রুমুর কোলে দিয়ে উজ্জ্বলের কান টেনে ধরলেন,
” খবরদার মিথ্যা কথা বললে তোর খবর আছে।”
” আরে মা লাগছে ছাড়ো তো।”
নার্গিস কান ছেড়ে চলে গেলেন যাওয়ার আগেও বকতে ভুললেন না।
রুজানের এক বছর বয়স ছোট ছোট দাঁত উঠেছে সেই দাঁত বের করে কেমন হাসছে তা দেখে উজ্জ্বল দ্রুত কোলে তুলে নেয়।ফোলা ফোলা গালটায় দেদারসে চুমু খায়।রুজান দেখতে তার দাদার মতো হয়েছে গোলগাল সুন্দর ছেলেটাকে দেখে যে কেউ আদর করতে বাধ্য।
রুজান যখন খিলখিলিয়ে হাসছিল তখনি উজ্জ্বল রুজানের গালে গাল মিশিয়ে দিতে উজ্জ্বলের খোঁচা খোঁচা দাড়ি রুজানের গালে খোঁচা দিতে ছেলে মুহূর্তে কেঁদে উঠে।রুমু মুহূর্তে রেগে বলে,
” আপনাকে আমি বারণ করেছিলাম আমার কথা শুনেন না কেন?ও ব্যথা পায়।”
” আরে পায় না আমি কি জোরেদি?”
” দিন রুজানকে দিন।”
” চুল শুকিয়ে আয় রুজানকে খাওয়াতে হবে।”
উজ্জ্বল রুজানকে নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটাল।রুজানকে বুকের সাথে মিশিয়ে নিতে ছোট ছোট দাঁতের সাহায্যে কাঁমড়ে দিল মুহূর্তে চেচিয়ে উঠল উজ্জ্বল।রুমু দ্রুত রুজানকে সরিয়ে উজ্জ্বলের বুকে হাত রাখল।
” মা যেমন কামড়ায় ছেলেও কামড়ায়।”
” ছেলের বাবা কি কামড়ায় না?”
” দেখ দাগ বসে গেছে।”
” আসুন চুমু দিয়ে দি সেরে যাবে।”
রুমু হাসতে হাসতে কথাটি বললেও উজ্জ্বল কথাটা বিফলে যেতে দিল না তৎক্ষনাৎ জড়িয়ে ধরে রুমুর ঠোঁটে ঠোঁট মেশাল।রুমু নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে চায় কিন্তু উজ্জ্বল কিছুতেই ছাড়বে না।
” উজ্জ্বল কি হচ্ছে কি আপনি কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলবেন।”
” হারাতে দে।আমি তোর কন্ট্রোললেস বর।”
” রুজানকে দিয়ে আসি তার দাদির কাছে?”
” এই তো আমার কন্ট্রোললেস বউ।”
” যাহ দুষ্টু।”
রুমু ঠোঁট বাঁকিয়ে চলে যায় রুজানকে রাখতে।
পরিশেষ… আনিকা নিজেকে ব্যস্ত করে ফেলল পড়াশোনায়,সৈয়দ ইসমাইল বাকি জীবনটা আনিকার ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে পড়ে রইলেন।তিনি বিয়ের চিন্তা আপাতত করছেন না এই সময়টাতে তার একমাত্র চিন্তা আনিকার সুখ আনিকার চাওয়া পাওয়া মেয়েটার একটা নির্ভেজাল জীবন হোক।
সৈয়দ শামসুল,নার্গিস,উজ্জ্বল, রুমু তারা এখন রুজানকে নিয়েই ব্যস্ত।উজ্জ্বলের রেস্টুরেন্টের ব্যবসা বেশ ভালোই হচ্ছে সবার সাথে দেনা পাওনার হিসাব অনেক আগেই চুকিয়ে ফেলেছে।উর্মি আর তামিমের সংসারে নতুন সদস্য এসেছে তাদের একটা ফুটফুটে ছেলে হয়েছে।
একসময়ে দাপটে চলা রাশেদ এখন ঝিমিয়ে পড়েছে তার ফাঁসির আদেশ এখনো না এলেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে তা সে নিশ্চিত। এই পর্যন্ত কেউ তার জামিনের চেষ্টা করেনি সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে আজকাল নিজেকে নর্দমার কীট মনে হয়।
সবশেষে ময়নার কথা না বললেই নয় একটা মেয়ের সংসার ভাঙার কারিগর সেই ময়নার বিয়ে হয়েছে কোন এক ধনির ঘরে যদিও তার স্বামী একটু বয়স্ক তাতে অবশ্য যায় আসে না ময়নার।কি ভেবেছেন ময়না নিশ্চয়ই দুঃখে আছে?মোটেও না ময়না বেশ সুখী সময়ের সাথে সাথে রাশেদের কথা ভুলতেও বসেছে।
আমরা সবাই ভালোবাসতে চাই ভালোবাসতে জানি কিন্তু উজ্জ্বলের মতো আগলে রাখার চেষ্টা কয়জনে করি?
____ সমাপ্ত___