#গল্প_কাব্য_কথা
#পর্ব_৯
#লেখনীতে_ওয়াসেনাথ_আসফি
দরজাটা হাল্কা ভাবে চাপানো ছিলো একটু ভালো করে খেয়াল করলে ঘরের ভিতর কি হচ্ছে সেটা বুঝা যাবে। আমি দরজার পাশে যেতেই শুনতে পেলাম,,,,,,,,,,,,,
কাব্য কেনো তুমি আমাকে ভালবাসতে পারলে না, কিসের অভাব ছিলো আমার মধ্যে?(বুকের ওপর থেকে ওড়নাটা সরিয়ে দিয়ে)
সুহানি তোকে আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি তোর মতো বেহায়া মেয়ে আমি আমার জীবনে দুইটা দেখছি কিনা সন্দেহ আছে। আর বললি না তোর মধ্যে কিসের অভাব আছে, তোর মধ্যে লজ্জা, আত্মসম্মান আর হায়ার অভাব আছে । যদি তোর মাঝে সামান্য লজ্জা থাকতো তাহলে তুই আমার কাছে আসার চেষ্টা করতি না ।
শেষের কথাটা শুনে আমার গা জ্বলে উঠলো আমি আর এক মুহুর্ত দেরি না করে ঘরের ভিতর ঢুকলাম আর বলতে লাগলাম,,,, তোমার এতো সাহস কি করে হয় শুনি, তুমি কোন সাহসে আমার ঘরে আসছো হুঁ শুধু ঘরে না আমার স্বামীর কাছেও আসতে চাইছো। তুমি এতো নির্লজ্জ্ব কেনো?
এই মেয়ে মুখ সামলে কথা বলো।( ধমকের সুরে)
আমি এই মেয়ে না, আমি মিসেস আবরার কাব্য কথা আর তোমার বড় ভাইয়ের একমাত্র প্রিয়সী বুঝতে পারছো তাই আমাকে ভাবী বলে ডাকবে। আর একটা কথা মন দিয়ে শোন তুমি এতক্ষণ যে নোংরামী গুলো আমার স্বামীর সাথে করতে চাইছো এই কাজ গুলো ভুল করেও আর করতে এসো না আর কখনও যদি তোমাকে আমার কাব্যর আশেপাশে দেখি তাহলে আর তোমাকে ছেড়ে দিয়ে কথা বলবো না তখন তুমি বুঝতে পারবে এই নীলাঞ্জনা আবরার কথা কি জিনিস এখন আমার রুম থেকে বের হয়ে যাও।
আমার এমন ব্যবহার দেখে কাব্য আমার দিকে ভয়ের চোখে তাকিয়ে আছে আর সুহানি আমার দিকে রক্তচক্ষু করে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে চলে গেলো আর আমি দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে কাব্যর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম আর জিজ্ঞেস করলাম, আর কয়বার ও আপনার কাছে আসার চেষ্টা করছে হুম আর আপনি ওর সম্পর্কে সবকিছু জেনেও কেনো ওকে ঘরে ঢুকতে দিচ্ছেন জবাব দিন আমকে ( চিৎকার করে)
জান বিশ্বাস করো আমি ওকে ঘরে ঢুকতে বলিনি ও নিজে নিজে আসছে আর আমাকে জোড়ায় ধরছে আর আমার কাছে আসার চেষ্টা করছে।
কি ওই রাক্ষসী আপনাকে জোড়ায় ধরছে আর এইকথা আপনি আমাকে এখন বলতেছেন। চলেন আমার সাথে,
কোথায়?
আর কিছু না বলে কাব্যর হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলাম বাথরুমে আর তাকে শাওয়ারের নিচে দাড় করিয়ে দিয়ে পানি ছেড়ে দিলাম আর তার শার্ট খুলতে লাগলাম,
কি করছো জান?
চুপ করেন আপনার গায়ে অন্য মেয়ে ছোঁয়া লেগে আছে আমি আমার বরের গায়ে অন্য কোনো মেয়ে গায়ের গন্ধ সহ্য করবো না। এই বলে তার শার্ট খুলে দিলাম আর তার বুকে, পিঠে নিজের হাত দিয়ে ঘষতে লাগলাম হটাৎ করেই কাব্য আমাকে টান দিয়ে তার বুকের সাথে আমাকে চেপে ধরলো আর বললো এতো ভালোবাসো আমাকে আগেতো জানতাম না কিন্তু তোমার এই ভালবাসা দেখে যে আমার তোমাকে আদর করতে ইচ্ছে করছে।
ইচ্ছে করছে করেন আমি কি না করছি কথা টা শেষ করতেই কাব্য আমার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো আমিও রেসপন্স দিলাম কিছুক্ষন পর কাব্য আমার ঘাড়ে গলায় চুমু খাচ্ছে আর আলতো করে কামড় দিচ্ছে একটু পরে সে আমাকে কোলে তুলে নিলো আর রুমে চলে এলো সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে পূর্ণতা পেলো আমদের এই পবিত্র সম্পর্ক স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক।
দুপুর বেলা আমি আর ইতি খুব সুন্দর করে সেজে গুজে বসে আছি একটু পরে আমারা সবাই কমিউনিটি সেন্টারে যাবো সেখানে আমার ভাইয়ার প্ল্যান অনুযায়ী আমাদের বৌভাতের আয়োজন করেছে । আমরা দুজন স্টেজে বসে আছি আমাদের সামনে অপরাধীর মতো দাড়িয়ে আছে ভাইয়া আর কাব্য।
বনু শোন এই কাব্য আমাকে এমনটা করতে বলেছিল।
হাহা উনি বললেন আর তুমি রাজি হয়ে গেলে এখন যদি উনি বলে ইতিকে অন্য কারো সাথে বিয়ে দিয়ে দিতে তুমি তো এটাতেও রাজী হয়ে যাবে।
আমি কী পাগল নাকি যে ওর কথা শুনে আমি আমার বউ আরেক জনের হাতে তুইলা দিমু।
তাইলে আমারে কেমনে দিলা?
তুই তো বইন আর এমনিতেও তোরে বিদায় করতে হইতো তাই ভাবলাম এই গাধাটার সাথে তোর বিয়ে দিয়ে দেই।
শালা তুই যে তোর বোনের বিয়ের খরচ বাঁচাতে ওরে আমার কাছে বিয়ে দিলি সেটা বলবে কে?
তাদের এমন যুক্তিহীন কথা শুনে আমি আর ইতি হা করে তাকিয়ে আছি।
বৌভাতের অনুষ্ঠান শেষে আমরা সবাই আসলাম আমদের বাসায় যদিও কথা ছিল আমি আর কাব্য যাবো আমদের বাসায় আর ভাইয়া আর ইতি যাবে ইতিদের বাসায় কিন্তু আমি আর ইতি সবাইকে জানিয়ে দেই আমারা চারজন একসাথে দুই বাসায় যাবো আমদের কথায় প্রথমে বড়রা রাজি হলো না কিন্তু ভাগ্য করে দুই বান্ধবী দুইটা বর পাইছি তারাই পারে সবাইকেই রাজী করায়।
ভালই যাচ্ছে দিন গুলি দেখতে দেখতে বিয়ের 2বছর হয়ে গেলো। ভাইয়া আর ইতির কোল আলো করে এলো এক ছোটো রাজকুমার। আজকে ওর আকীকা তাই আমরা সবাই আমাদের বাড়িতে এসেছি। বেবির নান রাখা হয় আমান আহসান নীল। অনুষ্ঠান শেষে আমরা বাড়ি ফিরে আসলাম রাতের খাবার খেয়ে সব কিছু গুছিয়ে রুমে আসলাম, কাব্য সোফায় বসে ল্যাপটপে কাজ করছিল আমি কাব্যর হাত থেকে ল্যাপটপটা সরিয়ে তার কোলে বসে পরি।
আজকে সূর্য কোনদিকে উঠলো আমার বউ নিজ থেকে আমার কাছে আসছে?
সূর্য তার সঠিক জায়গায় আছে।
ওহহ আচ্ছা তাহলে মেডাম বলেন এই অধম বেচারা আপনার জন্যে কি করতে পারে।
আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেন কখনও আমাকে ছেড়ে দিয়েন না।
জান কী হয়েছে এমন কথা কেনো বলছো।
কিছুনা এমনি।
আচ্ছা চলো।
কোথায়?
ঘুরতে।
কথাটা বলেই আমাকে নিয়ে হাটতে শুরু করলো। রাস্তা দিয়ে হাঁটছি কিছুক্ষন হাঁটার পর কাব্য আমার সামনে এসে হাঁটু গেরে বসে পরলো আর আমার হাত দুটো তার হাতের মুঠোয় নিয়ে নিল আর বলতে লাগলো,,,,,,,
আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি, তুমি যদি সেই পিচ্ছি মিনি সাউন্ড বক্স থাকো তাও ভালোবাসি, তুমি যদি আমার সদ্য বিয়ে করা নতুন বউ হও তাও তোমায় ভালবাসি, তুমি যদি আমার দুই বছর পুরনো বউ হও তাও তোমায় ভালবাসি, তুমি যদি আমার একাধিক সন্তানের মা হও তাও তোমায় ভালবাসি তুমি যদি আমার সন্তানের মা নাও হও তাও তোমায় ভালবাসি, তুমি যদি লাবন্যময় থাকো তাও তোমায় ভালবাসি, যদি বয়সের সাথে তোমার চেহরা থেকে লাবন্যের ভাব চলে যায় তাও তোমায় ভালবাসি আমি তোমাকে আমার শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত ভালোবাসবো আমি তোমাকে যেকোনো অবস্থায় ভালোবাসি, তোমাকে ছাড়া আমি অন্য কিছু ভাবতে পারিনা তুমি আমার এই ছোটো মনের সম্রাজ্যের এক মাত্র সম্রাজ্ঞী। তোমাকে নিজের মতো করে ভালোবাসার অনুমতি চাইছি, অনুমতি দিবে আমায়?
কাব্যর কথা গুলো শুনে আমার গাল বেয়ে পানি পরছে আর এই মুহূর্তে নিজেকে পৃথিবীর সব থেকে সুখী নারী মনে হচ্ছে। আল্লাহর কাছে হাজারো শুকরিয়া আমি এমন একটা স্বামী পেয়েছি যে কিনা আমার জীবনটাকে অতিমূল্যবান করে দিয়েছে । আমি তাকে হাত ধরে দাঁড় করিয়ে দিলাম আর তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম, আপনি আমার সেই সখের পুরুষ যাকে আমি কখনই অন্য কারও সাথে ভাগ করে নিতে পারবো না। আমি আপনাকে অনুমতি দিলাম আপনার ভালবাসা দিয়ে আমায় রাঙিয়ে তুলুন। উনি আমর কপালে ভালোবাসার পরশ একে দিল আর কোলে তুলে নিয়ে বাড়ি চলে এলো।
৩ বছর পর,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,!
#চলবে,,,,,,,,,,,,,!