ক্ষ্যাত ছেলে পর্ব-১১

0
217

গল্প ঃ ক্ষ্যাত_ ছেলে
পর্ব ঃ_ ১১
লেখক ঃ অভ্র নীল

সে সোজা আমাকে ফাকা একটা রুমে নিয়ে আসলো। আমি তার চোখে স্পষ্ট পানি দেখতে পাচ্ছি। তখন সানজিদা বলতে লাগলো–

সানজিদা– এই তোর সমস্যা কি রে? ওই মেয়ের সাথে এতো হেসে হেসে কথা বলার কী আছে হুম!

অভ্র–,,,,,,,,,,,,,,

আমি কিছু বলতে যাবো এর আগেই সানজিদা রাগের বসে আমায় থাপ্পড় মারে। এতে আমি তেমন একটা অবাক হই নি। কারণ আমি যানি, মেয়েরা তার ভালোবাসার ভাগ কখনোই কাওকে দিতে চায় না। তখন সানজিদা বললো–

সানজিদা– এই শোন তুই যদি এখন আমায় ভালোবাসার কথা না বলিস তাহলে আমি কিন্তু কিছু একটা করে বসবো। এইবার আমি কিন্তু সত্যিই কিছু একটা করে বসবো। তোর কাছে মাত্র ৩০ সেকেন্ড সময় বল!

অভ্র– সানজিদা তুমি বুঝতে চাইছো না কেন?

সানজিদা– আমি যানি তুইও আমায় ভালোবাসিস। তাহলে কেন তুই আমায় এতো কষ্ট দেস? আমার কষ্টে কী তোর কষ্ট হয় না? এখন তাড়াতাড়ি বল তুই আমায় ভালোবাসিস কি না,,??

অভ্র– আচ্ছা শোনো! আমি তোমায় অনেক আগের থেকেই ভালেবাসি৷ যেইদিন আমি তোমায় প্রথম দেখেছিলাম, সেইদিন থেকেই তোমায় নিয়ে ভাবতে কেমন যানি একটা ভালো লাগা কাজ করে। খারাপ সময়েও তোমায় নিয়ে ভাবলে মুখের কোনো হাসি ফুটে ওঠে। তোমায় নিয়ে ভাবতে ভাবতে আমার রাতে কখন যে চোখে ঘুম চলে আসে, আমি সেটা নিজেও বুঝতে পারি না। আর তোমার এই প্রতিটা পাগলামিই আমার কাছে অনেকটা ভালো লাগে। আর আমার কাছে তোমার সবচেয়ে বেশি এই জিনিসটাই ভালো লেগেছে যে, তুমি গরিব বড়লোক ভেদাভেদ করো না। এইটা আমাকে তোমার প্রতি আরও দূর্বল করে দিয়েছে। আর এইসব ভালোলাগা থেকে কখন যে ভালোবাসাস পরিনত হয়ছে বুঝতেই পারি নি। আমি তোমায় সত্যিই ভালোবাসি।
সানজিদা I LoVe U..! 🥰

এতক্ষণ সানজিদা আমার কথা মন দিয়ে শুনছিল। আমার কথা শেষে সানজিদা আমায় জড়িয়ে ধরে বললো–

সানজিদা– I LoVe U too..!🥰

আমিও তাকে জড়িয়ে ধরলাম। তখন সানজিদা বলল–

সানজিদা– আচ্ছা তুমিতো আমায় আগের থেকেই ভালোবাসতে তাহলে তুমি আমায় সেটা প্রকাশ করো নি কেন?

অভ্র– কারণ আমি তোমায় হারানোর ভয় পেতাম। আমি জানি না আমাদের ভালোবাসা পূর্নতা পাবে কী না? তবে আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করবো যেন আমাদের ভালোবাসাটা পূর্নতা পায়। আর হে তুমি আমাকে কখনো ছেড়ে যেও না প্লিজ!

সানজিদা– কখনোই না!

সানজিদার কন্ঠ শুনে মনে হলো সে কান্না করছে। তাই আমি তার মাথাটা তুললাম। দেখি সে সত্যিই কান্না করছে। আমি একটু হতভম্ব হয়ে বললাম–

অভ্র– এই তুমি কান্না করছো কেন?

সানজিদা– আরে পাগল এটা কষ্টের কান্না না, এটা হচ্ছে খুশির কান্না। তুমি সেটাও বোঝো না!

অভ্র– তারপরেও তুমি কান্না করবে না। যানো তুমি কান্না করলে তোমায় কেমন দেখায়?

সানজিদা– কেমন দেখায়?

অভ্র– মনে হয় কই থেকে একটা ডাইনি আসছে। আর আজ থেকে এই ডাইনিকেই আমার সামলাতে হবে। আল্লাহাই জানে আমার কী হবে?

সানজিদা– কী বললা? আমি ডাইনি। আর আমি তোমার কাছে বোঝার মতো? যাও তোমার সাথে আর কথাই বলব না। যাও তোমার সাথে ব্রেকআপ।

সানজিদা প্রচন্ড পরিমানে অভিমান নিয়ে কথাটা বলল। আর মুখটাও আমার থেকে ফিরিয়ে নিলো। আমি তাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে বললাম–

অভ্র– আহারে আমার ডাইনিটা কষ্ট পাইছে। আর প্রেম শুরু না হতেই তুমি ব্রেকআপ করে দিচ্ছো। আচ্ছা ব্রেকআপ যখন করেই দিচ্ছো আচ্ছা সমস্যা নাই। আমি এখন ওই মেয়েটার কাছে যাই। দেখি পটাতে পারি কি না?

আমি সানজিদা কে ছেড়ে এক পা বাড়াতেই সানজিদা আমায় দিল এক টান। আর বলল–

সানজিদা– প্রেম করার খুব শখ তাই না। তোমার শখ ছুটাইছাতি দারাও!

এটা বলে সানজিদা আমায় মারতে শুরু করলো। আর আমি শুধু হাসতাছি। সানজিদার এসব কান্ড দেখে। তখন আমি সানজিদা কে জড়িয়ে ধরে কপালে একটা ভালোবাসার পরশ একে দিলাম। তারপর তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। তখন সানজিদা ও শান্ত হয়ে গেল। আর আমার বুকের সাথে মিশে গেল।
************
সন্ধা,, আজকে লিজার গায়ে হলুদ। সবাই খুব আনন্দে আনন্দে কাজ রকছে। আমিও তাদের কাজে টুকটাক হেল্প করছি।

লিজাকে সানজিদা আর কয়েকজন মিলে সাজিয়ে দিচ্ছে।

একটু পর,, সানজিদা লিজাকে নিয়ে আসছে। আমি তখন একটা চেয়ারে বসে ছিলাম। আমি সানজিদার দিকে একধানে তাকিয়ে আছি। তার পরনে হলুদ একটা শাড়ি৷ তেমন একটা মেকআপ করে নি। তবে আমার মেক-আপ ছাড়াই সানজিদা কে ভালো লাগে। আমি সানজিদার দিকে একধানে তাকিয়ে আছি। কারও ডাকে আমার ঘোর ভাঙলো। আমি তাকিয়ে দেখি রিমা। আমি বললাম–

অভ্র– আরে রিমা তুমি?

রিমা– হুম! তা ভাইয়া ওইটা কে হু? যেভাবে তাকিয়ে ছিলে মনে হয় ওইটা তোমার বিয়ে করা বউ।

আমি রিমার কথায় একটু লজ্জা পেলাম। আর বললাম—

অভ্র– আরে না কী বলো?

রিমা– হুম বুঝি বুঝি! এখন বলো কে ওইটা?

অভ্র– ওর নাম সানজিদা। তখন তোমায় বলছিলাম না, আমি একজনকে ভালোবাসি। এই সে!

রিমা– তা One side love.. না কী সেও তোমাকে ভালোবাসে?

অভ্র– সেও আমায় ভালোবাসে।

রিমা– বাহ খুব ভালো। আচ্ছা বাদ দাও এখন বলো, আমায় কেমন দেখাচ্ছে?

আমি তখন রিমার দিকে তাকিয়ে বললাম–

অভ্র– হুম খুব সুন্দর দেখাচ্ছে। যেকোনো কেও তোমার উপর ক্রাশ খেয়ে যাবে।

আমার এইরকম কথা শুনে রিমা লজ্জা পেয়ে গেল তখন। আমি তখন সানজিদার দিকে তাকালাম৷ দেখি সে আমার দিকে রাগি লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে। এতটাই রাগি লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে যে, আমি তার দিকে একবার তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিলাম। তারপর ফোনে একটা মাসেজ আসলো। দেখি সানজিদা মাসেজ দিয়েছে,,,,

এই তুমি ওই মেয়ের কাছ থেকে সরবা না কী আমি গিয়ে আবারও থাপ্পড় মারবো। ভালোই ভালোই বলছি ওই মেয়ের কাছ থেকে সরে যাও। আর এই অনুষ্ঠানটা শেষ হোক তারপর তোমার খবর নিতাছি। মেয়েদের সাথে এতো হেসে হেসে কথা বলার কী আছে হু!

মাসেজটা এইটুকুই, মাসেজ পরে আমি সোজা রিমাকে না বলেই উঠে দিলাম এক দৌড়।

আমি একটা রুমে শুয়ে আছি। কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না।

অনুষ্ঠান শেষ হতে প্রায় রাত ১০ টা বেজে গেল। আমি একটা রুমে শুয়ে আছি। আর সানজিদা আমায় খুঁজতে লাগছে। আর ফোনের উপর ফোন দিতে লাগছে। আমিতো বিঘোর ঘুমে আচ্ছন্ন, আমি ফোন রিসিভ করছি না। সানজিদা আমায় খুজতে খুজতে সেই রুমে এসে পড়লো। সে দেখলো আমি শুয়ে আছি। সে কী যেন ভেবে সোজা গিয়ে আমার বুকে শুয়ে পড়লো। আমি তাকে কোলবালিশ ভেবে জড়িয়ে ধরলাম। সানজিদা ও আমায় জড়িয়ে ধরলো।

আমরা শুয়ে আছি। হঠাৎ,,,,,,,,,,,,,,

চলবে……?

ভুলত্রুটি মার্জনীয়🙂।