চুপিসারে পর্ব-২০ এবং শেষ পর্ব

0
578

#চুপিসারে (২০)
কলমে #রেহানা_পুতুল
নিশুতি রাত। নির্জন প্রকৃতি। বাইরে ঘন বরষা। মন কেমন করা পরিবেশ। বৃষ্টির উম্মাতাল নৃত্য ছন্দে নদীর হৃদয়টা হুহু করে উঠলো। শ্রাবণকে নিয়ে দাদীর বলা কথাগুলো তার মনে পড়লো। মায়ের একলা সংগ্রামী জীবনের কথা মনে পড়লো। মা মেয়ের অতীতের কথা মনে পড়লো। এতসব মনে পড়তেই নদীর বুক চিরে একটা প্রলম্ভিত দীর্ঘস্বাস বেরিয়ে এলো।

নদী জড়োসড়ো হয়ে শ্রাবণের গায়ে থাকা কম্বল দিয়ে নিজের সারাশরীর আবৃত করে শুয়ে পড়লো। শ্রাবণ টের পেলো নদীর স্পর্শ। নদীকে নিজের এক পা ও এক হাত দিয়ে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিলো লতার ন্যায়। মুখে কোন কথা বলছে না। কিন্তু তার হাত ও ঠোঁট দিয়ে নানা কারুকার্যময় আদুরে ছোঁয়া দিতে লাগলো নদীর নিটোল অঙ্গখানিতে।

নদীর ঘাড়,বুক,গলায় তার ঘন ঘন ভারি তপ্ত স্বাস পড়ছে। নদীর চুলগুলো সরিয়ে নিলো ঘাড় থেকে। দুঠোঁট ঘষতে লাগলো এদিক সেদিক করে ইচ্ছেমতো। নদী ইতস্ততবোধ করছে। কিন্তু সেও মুখে কিছুই বলতে পারছে না। তার অনুভূতি কম্পিত! শিহরিত! আবেশে তার দু’চোখ বুঁজে আসলো। এই নতুন অনূভুতির পরশে যে এত স্বর্গসুখ তা আগে কখনো টের পায়নি। এই অপার্থিব ভালোলাগা,এই গোপন সুখে সে মরে যেতে চায়। ডিম লাইটের মায়াবি আলোয় শ্রাবণ সুখ খেলায় মেতে উঠলো। নদীর ঠোঁট দুটোকে দখল করে নিলো তার দুই ঠোঁট। তার একহাতের অবাধ আধিপত্য চলছে নদীর দুই বুকের উপরে। বেশকিছু সময় পর নদীর ঠোঁটকে মুক্ত করে দিলো শ্রাবণ। মুখ চলে গেল নদীর উষ্ণ বুকে। নদীর পুরো শরীর দোল খেয়ে উঠলো। সে শ্রাবণের চুলগুলোকে খামচে ধরলো দুই হাত দিয়ে। শ্রাবণ নদীর শরীরের প্রতিটি ভাঁজে ভাঁজে বেপরোয়াভাবে চুমু খেতে লাগলো। নেশাগ্রস্তের ন্যায় তার চোখদুটো লালবর্ণ ধারণ করেছে। কামুক চাহনি নিক্ষেপ করলো নদীর দুচোখে। নদী লজ্জায় নিজের দুহাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলল। শ্রাবণ নদীর দুই হাত মুখ থেকে সরিয়ে নিলো। নিজের দুহাত দিয়ে নদীর দুহাত দুদিকে মেলে ধরলো পাখির ডানার মতো। নদীর দুই হাতের সরু আঙ্গুলগুলোর ভিতরে নিজের দুহাতের আঙ্গুলগুলো দিয়ে পেরেকের মতো আটকে ফেলল। হারিয়ে গেল দুজনে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মধুসুখে। দীর্ঘসময় পর শ্রাবণ নদীর বুকে মাথা এলিয়ে দিলো। রাতের নিরবতাকে সাক্ষী রেখে নদী ও শ্রাবণের মিলন হলো।

ভোরে নদী গোসল সেরে নিলো। রুমে এসে ভেজা চুলের পানি নিতে লাগলো। শ্রাবণের ঘুম ভাঙ্গলো। মিটমিটিয়ে হাসছে নদীর দিকে চেয়ে। নদীকে ডাকলো শ্রাবণ,
নদীইই…

হ্যাঁ ভাইয়া বলেন।

হোঃহোঃহোঃ মজা পেলাম। দিবসে ভাইয়া। নিশিতে ওগো প্রিয়তম। রাতে এত ঝড় তুফানের পরেও ভাইয়া বলে। গাধী একটা।

আমি গাধী হলে আপনি গাধা নয়তো গাধীর স্বামী।

নাকি নাকি স্বরে বলল নদী।

ওরেব্বাস! যাক বধু তাহলে বরকে বরণ করে নিলো।

এভাবে নদী ও শ্রাবণের মধুময় দাম্পত্য জীবন কাটছে।কখনো নানান হাসি তামাশায়। কখনো অল্পস্বল্প খুনসুটিতে। কখনো তা মহাপ্রলয় ধারণ করে ভুল বুঝাবুঝি হলে। তখন তাদের বিবাদ মেটানোর জন্য ডাল স্বরূপ হয়ে দাঁড়ায় সারথি, বা মোরশেদা। নদী ধীরে ধীরে সংসারি হয়ে উঠছে দেখে রফিক ও মোরশেদার অন্তর তৃপ্তিতে ভরে যায়। ঘরের মেয়েকে ঘরে এনে তারা ঠকে যায়নি।

হাফসা বিবি কিছুতেই সেরে উঠছে না। বরং নুয়ে পড়া লতার মতো ক্রমশ নেতিয়ে যাচ্ছে তার শরীরখানা। নাওয়া খাওয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ডাক্তার, হাসপাতাল নিয়ে সবাইর ছোটাছুটির তিলমাত্র গাফলতি নেই। রোজ তার দুই মেয়ে আসছে যাচ্ছে। হাফসা বিবির দৃষ্টি ঘোলাটে হয়ে গেলো ডাবের পানির মতো। গলার স্বর ক্ষীণ হয়ে গেলো। অস্পষ্টভাবে বিড়বিড় করে রুগ্ন ঠোঁট দুটিকে নেড়ে নেড়ে কি যে বলে কেউই বুঝেনা। তার মুখের ভাষা সবার কাছে দুর্বোধ্য ঠেকলো তামস যুগের মতো। তার শারীরিক অবস্থার বেগতিক অবনতি শুরু হলো। তখন রুবিনাও এলো সাবেক শাশুড়ীকে দেখতে। রুবিনা মেয়ের শ্বশুরবাড়ি ছিলো দু চারদিন। বেয়াইন হিসেবে তার খাতির যত্নের ত্রুটি করেনি রফিক দেওয়ান ও তার পরিবার।

একরাতে হাফসা বিবির শারিরীক অবস্থা ভয়াবহ আকার ধারণ করলো। ঢাকা থেকে তার মেজো ছেলে শফিক দেওয়ান চলে এলো। নিকটাত্মীয়জনেরা সব চলে এলো। তারা সবাই রাত জেগে হাফসা বিবিকে পাহারা দিচ্ছে। তবুও হাফসা বিবির জীবন প্রদ্বীপ নিভে গেলো তেল শেষ হয়ে আসা লন্ঠনের মতো।

রজনী শেষ হয়ে ঊষালগ্নেই হাফসা বিবির ইহলীলা সাঙ্গ হলো। গগন বিদারী কান্নায় দেওয়ান বাড়ির আকাশ বাতাস ভারী হয়ে গিয়েছিলো। রজত, শ্রাবণ ভেজা চোখে এদিক সেদিক ছোটাছুটি করতে লাগলো লা* শ দাফনের আয়োজন করতে। মাটিতে পড়ে আছাড়ি পিছাড়ি করে কাঁদতে লাগলো হাফসা বিবির প্রাণের দুই কন্যা ও নাতি নাতনিরা। সবচেয়ে আকূল হয়ে কাঁদছে নদী। প্রাণহীন নিথর দাদীর দেহটাকে সে ঝাপটে ধরে শুয়ে আছে। রোদন করছে গলা ফাটিয়ে।

ও দাদীগো তোমার সঙ্গের স্মৃতিগুলো আমি কেমন করে ভুলবো। আমাকে কে দিবে তোমার মত করে এত উপদেশ? কে আমাকে ভালো থাকার গল্প শুনাবে? দাদী এত তাড়াতাড়ি কেন চলে গেলে? তুমি আমার সফলতা দেখতে চেয়েছিলো। আমার গলায় তোমার পছন্দের গীত শুনতে চেয়েছিলে। সারথি,আরু, নীরুও নদীর গলা পেঁচিয়ে কেঁদেই যাচ্ছে। শত চেষ্টা করেও তাদেরকে হাফসা বিবির কাছ থেকে সরানো যাচ্ছে না।

হাফসা বিবির দাফন সম্পন্ন হয়ে গেলো। শোকে পরিপূর্ণ পুরো ঘর বাড়ি। সবার মুখ বিপন্ন। বেদনার্ত। ধূসর মেঘের চাদরে ঢাকা সবার মুখখানি। সন্ধ্যায় শ্রাবণ নদীকে শান্তনা দিতে গিয়ে নিজেই ঢুকরে কেঁদে উঠলো প্রিয় দাদীর জন্য। নদীর অশ্রুজলে শ্রাবণের পুরো বুক ভিজে গেলো। বলল,

তোকে কি বলব। আমি নিজেকেই সামলাতে পারছি না। নামাজ পড়ে আমাদের দাদীর জন্য দোয়া করিস।আল্লাহ যেন দাদীর সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়। এবং জান্নাতবাসী করে।

হাফসা বিবির তিনদিনের কুলখানি হয়ে গেলো। কোরান খতম, মিলাদ পড়ানো,দুরুদ,জিকির,দান খয়রাতের কোন কমতি বা ঘাটতি ছিল না।
নদী দুঃখ ভরা মন নিয়ে কয়েকদিন পর থেকে কলেজ করছে। গানের ক্লাসেও যাচ্ছে। বসে থাকলে জীবন থমকে যাবে। দাদীর শূন্যতা তাকে বড় অসহায় করে দিয়েছে। অবসর সময়ে সে এখানে ওখানে বসে মুরগীর মতো ঝিমোতে থাকে। পড়ায় মন বসে না। রোজ রেওয়াজ করে না। নদীর এই হাল দেখে তার শ্বশুর, শ্বাশুড়ি তাকে বুঝাতে লাগলো। যেন নিজেকে শক্ত করে নেয়।

তার কয়েকদিন পর রজত বিয়ে করে ফেলল সেই শিখা নামের মেয়েটিকে। শিখা রজতের কলেজ ফ্রেন্ড। গল্প করতে করতে তাদের দুজনের বোঝাপড়ায় মিল হয়েছিলো। তখনই তারা সিদ্ধান্ত নেয় বিয়ে করবে বলে। ধুমধাম করে বিয়ের আয়োজন করলো। শ্রাবণ ও নদীসহ অন্য সবাই তার বিয়েতে গেলো। আনন্দঘন ঝলমলে পরিবেশে বিয়ের সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলো।

রজত নদীর সম্পর্ক আগের মতই স্বাভাবিক হয়ে গেলো। দুজনের জন্য দুজনের কোন অনুভব, অনুভূতি নেই এখন। রজত শিখাকে ভালোবাসে। শ্রাবণ নদীকে ভালোবাসে।

দেখতে দেখতে শ্রাবণ ও নদীর বিয়ের এক বছর হয়ে গেলো। বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে ছোট্ট করে ঘরোয়া আয়োজন করলো শ্রাবণ। নদীর মা রুবিনা এলো। আরুও এলো। রুবিনা, সুরমা, মোরশেদা মিলে বাহারি পদের রান্না করলো। নদী শাড়ি পরলো। সাজলো শ্রাবণের রুচি অনুযায়ী। খোঁপায় গুঁজলো তার অতি প্রিয় বেলী ফুলের মালা। সন্ধ্যার পর কেক কাটলো দুজনে। তারপর মা বাবাকে সালাম করলো। তারা আশীর্বাদের পরশ বুলিয়ে দিলেন দুজনের মাথায়।

আরু, সারথী নদীকে অনুরোধ করলো একটা গান শুনানোর জন্য। মোরশেদা নদীকে আদেশপূর্ণ কন্ঠে বলল,

মা একটা গান শুনিয়ে দে হারমোনিয়াম বাজিয়ে। নইলে এই দুষ্টগুলোর হাত থেকে তোর নিস্তার নেই। নদী শ্রাবণের দিকে চাইলো। শ্রাবণ চোখের পাতা বুঁজে ইশারা দিলো গান গাওয়ার জন্য।

নদী অনুপম রায়ের প্রিয় একটা গান শুরু করলো।

“আমার চোখে চোখ রাখ তুই
আমার কথা গুলো
তোর হয়ে যেতে পারে।
দুর্ঘটনা ঘটতে দে
আঙ্গুল গুনে ফেলা
মনে পরে যেতে পারে।
বাড়ি ফিরে, বাড়ি ফিরে
কি যে ভালো লাগে।
নিচু হাসি, পাশাপাশি
কি ভালো লাগে।
তোর কথাতেই ঘুরছি।
নীরবতায় বাড়ছে রাত
কিসের অভিমানে।
আমায় ছেড়ে যেতে পারে
কানের কাছে রাখছি হাত।
পেটের কথাগুলো ঠোঁটে
আনা যেতে পারে।

তুই, তুই কি করে দিলি
তুই এ কি করে দিলি রে
বল না, বল না, বল না।”

শ্রাবণ বিবশ হয়ে নদীর দিকে চেয়ে আছে। মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় দুচোখ বন্ধ করে মাথা ডানে বামে দুলাচ্ছে। গান শেষে সবাই হাত তলি দিলো। শ্রাবণ বলল,
এই গানটা আমি গাইতে পারলে ঠিক হতো। গানের লিরিকগুলো যে আমারই অব্যক্ত হৃদয়ের কথামালা।

শ্রাবণ নদীর রুম সাজানো হলো কাঁচাফুল দিয়ে বাসর ঘরের আকৃতিতে।
নদী ঠোঁট বাঁকিয়ে বলল,

কোন দরকার ছিলো এটার?

আলবৎ দরকার ছিলো। বাসর ঘর কি হয়েছে নাকি আমাদের?

কিইই বলে নদী চাইলো শ্রাবণের দিকে।

আরেহ ফুলসজ্জায় গলাগলি করতে পেরেছি? বলো টুসীর মা?

বলেই নদীকে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড় করালো শ্রাবণ। পিছন থেকে শাড়ির নিচে দিয়ে খোলা পেটের উপর দুই হাত গলিয়ে দিলো। খোঁপা থেকে চুলগুলোকে ছড়িয়ে দিলো নদীর সারাপিঠে। চুলের সোঁদা ঘ্রান নিতে নিতে শ্রাবণ আয়নায় দুজনকে দেখতে লাগলো।
নদীকে জিজ্ঞেস করলো,

কবে থেকে ভালোবাসিস বলতো?

জানিনা।

উমম রক্ষা নেই। আজ সারারাত তোমার নিষ্পলা জমিতে আমি উপর্যুপরি খনন করবো। সৃষ্টি করবো জলের ধারা। এই বলে নদীকে কোলে করে পুষ্প সজ্জিত বিছানায় চিৎ করে শুইয়ে দিলো শ্রাবণ। নদীর খোলা পেটে মাথা রেখে শুইলো। নদী শ্রাবণের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে জিজ্ঞেস করলো,

আমাকে কবে থেকে ভালোবাসেন? ভীষণ জানতে ইচ্ছে করছে। প্লিজ বলেন না টুসীর বাপ।

শ্রাবণ তপ্ত স্বাস ছাড়লো। গানের সুরে গুনগুনিয়ে বলল,

“তোকে ভালোবেসেছি চুপিসারে
তাই ডেকেছি বারে বারে।
তোর রাগ,অভিমান লাগতো কি যে ভালো
তুই আমার নিশি রাতের জোনাক জ্বলা আলো।
পেতে চাই ক্ষণে ক্ষণে তোর মধুর আলিঙ্গন
তুইও আমায় চাইতে পারিস যখন তখন।
উথাল পাথাল ঢেউ তুই,আমার ভরা নদী
আমার বুকে রইবি তুই, শ্রাবণ ঢলে ভাসবি।”

নদী আকুল নয়নে শ্রাবণের গান শুনলো। দারুণ হয়েছে। প্রীত হলাম মাননীয় চেয়ারম্যান সাহেব।

শ্রাবণ এবার উঠে বসলো। নদীর চুলে বিলি কাটতে কাটতে সিরিয়াস মুডে বলল,

এই রাতের নিস্তব্ধতাকে সাক্ষী রেখে তোর নামে শপথ করে বলছি,
আমি তোকে কাজিন হিসেবেই দেখতাম। যেদিন স্কুলে তোর গলায় প্রথম গান শুনেছি। তখনই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। তখন থেকেই তোকে একটু একটু করে চুপিসারে ভালো লাগতে শুরু করলো। পরে তা ভালোবাসায় রূপ নিলো। এবং ঠিক করলাম তোকেই বিয়ে করবো। কারণ গান আমার ভীষণ ভালো লাগে নদী। কারণে অকারণে মন খারাপ হলেই তুই আমায় গান শুনাবি। আর আমার মন ভালো হয়ে যাবে। তবে আমি তোকেও বুঝতে দিইনি। কারণ আমি চাইনি কোনভাবেই আমার ইচ্ছেটা ভেস্তে যাক। তাই তোর সাথেও বরাবরই গম্ভীর কন্ঠে রেগে কথা বলেছি। মা বাবাকে যদি বলতাম, তারা কিন্তু কিছুতেই রাজী হতোনা।

তাই গানের বাহানায় কৌশলে তোকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসা,দুটো বিয়ে ভাঙা, দাদীকে দিয়ে তোকে বুঝানো, সবই ছিলো আমার ব্যক্তিগত চক্রান্ত। যেন বাবা,মা বাধ্য হয় তোকেই বউ বানাতে।

নদী শ্রাবণের চুল মুঠি ধরে টেনে বলল,

প্রেমের মাঝেও রাজনৈতিক নীল নকশা একেঁছেন নাহ?

ইয়েস শ্রাবণের ভরা নদী। এবার তোর টা বল?

নদী বলল,

আমার আপনাকে ভালোলাগতে শুরু করে গান শিখানোর বিষয়টা হতেই। আর ভালোবাসি বিয়ে হয়ে যাওয়ায় পর হতেই। কিন্তু লজ্জায় মন চাইলেও মিশতে পারতাম না। সেদিন বৃষ্টি না হলেতো আসা হতই না।

শ্রাবণ শিহরিত চোখে নদীর চোখে তাকালো। চিবুক উঁচিয়ে ধরে বলল,

ধন্যবাদ বৃষ্টিকে। সেদিন ইচ্ছে করেই ভিজে জ্বর বাঁধিয়েছি তোকে একান্তে পাওয়ার জন্য। বলতে পারিস এটাও আমার প্ল্যান। তবে নদী তুই নিজেকে যেই অবস্থায় দেখতে চাস,তারজন্য আমার দিক হতে কোন মানা নেই। তুই শ্রাবণের বুকে অবাধে উড়তে পারবি মুক্ত বিহঙ্গের মতো।

অনেক ধন্যবাদ বড় ভাইয়া। ভীষণ ভালোবাসিই।

ওরেহ টুসীর মা, আবার ভাইয়া নাহ?

চোখ গরম করে রোমাঞ্চিত হেসে বলল শ্রাবণ।

রাত গভীর হলো। তারা দুজন দুজনকে নিবিড় আলিঙ্গনে মিশিয়ে নিলো। আশা জাগানিয়া গল্পের জাল বুনতে বুনতে তলিয়ে গেলো সুখ নিদ্রায়। ভালোবাসার পবিত্র মুহূর্ত বিলীন হলো অনন্তকালে।
শ্রাবণ,নদীর চুপিসারে ভালোবাসার ও কাছে আসার গল্প এখানেই ফুরোলো।

👉#সমাপ্তি ২০