তবুও ভালোবাসি পর্ব-২১

0
452

#তবুও ভালোবাসি
#পর্ব_২১
#রেজওয়ানা_রমা

-ভালোবাসা চাই
-মানে
-সেই ছোট্ট থেকে একটু একটু করে যার জন্য ভালোবাসার পাহাড় জমিয়েছি তার ভালোবাসা চাই
-কি বলছেন? আমি বুঝতে পারছি না।
-বুঝবেও না পাগলি
-কে আপনি? নিজের পরিচয় দিন
-খুজে নাও কে আমি কি আমার নাম?
-পারবো না। এতো সময় নেই আমার। বললে বলুন না হলে ফোন রাখুন
-ফোন রাখলে রুমে চলে আসবো কিন্তু তার পর সারা রাত তোমাকে জালাবো সেটা কি ভালো হবে?
-কিহ? আপনি এমন কেন বলুন তো
-বলো আমাকে ভালোবাসবে?
-দেখা করুন
-ভয় করে
-কিসের?
-তোমাকে হারানোর
-মানে?
-সত্যি টা জানার পর যদি তুমি আমাকে ভুল বুঝো যদি আমাকে ঘৃণা করো।
-কি সত্যি? যা জানলে আপনাকে ঘৃণা করতে পারি
-কিছু না। আমি তোমার খুব চেনা কাছে কেউ।

টুট টুট টুট

ফোন কেটে দেয় রিক আর রিফা ভাবছে কে হতে পারে? আমি কিভাবে তাকে চিনি? এগুলো তাহলে ওই লোক টা পাঠিয়েছে? ধ্যাত একটা ও রাখবো না।

টেডি গুলো ছুড়ে ফেলতে গেলে একটা স্মেল পায় রিফা। যেটা তার খুব চেনা। কিন্তু মনে করতে পারছে না কার পারফিউমের স্মেল। সারারাত চিন্তা করতে করতে ভোরে গিয়ে ঘুমায় রিফা।

সকালে ঘুম ভেঙে যেতেই নিজের ওপর ভারি কিছু অনুভব হয় মেহুলের। আস্তে আস্তে চোখ খুলে দেখে রিয়ান তাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে। কি নিষ্পাপ মুখ, কি মায়াবী। মেহুল মুচকি হেসে রিয়ান কে নিজের ওপর থেকে সরিয়ে দিতে গেলে রিয়ান ঘুম জড়ানো কন্ঠে বলে উঠে,
-চুপ চাপ শুয়ে থাকো আর আমাকে একটু ঘুমাতে দাও
-আরে আমি উঠবো তো। ছাড়ুন
-না। আমি ঘুমাবো
-তা ঘুমান না। আমাকে ছাড়ুন
-ডিস্টার্ব করো না তো। ( মেহুল কে আরও শক্ত করে ধরে)
-উফফ। ছাড়ুন আমায়। ছাড়ুন বলছি ছাড়ুন
-মুখ টা একটু বন্ধ রাখবে?
-না ছাড়ুন আমায়

রিয়ান আর কোনো কথা না বলে আবার ঘুমিয়ে যায়। মেহুল নিজেকে ছাড়ানো বৃথা প্রচেষ্টা করছে আর একা একা বকবক করছে।
উনি ঘুমাবে তো ঘুমাক না আমাকে আটকে রাখার মানে কি। সকাল হয়ে গেছে তারাতারি উঠতে হবে। আরে ছাড়ুন না আমায়। প্লিজ । আর কত ঘুমাবেন এবার ছাড়ুন। এই যে শুনছেন এইইইই ছাড়ুন আমা…..

মেহুলের কথা শেষ হওয়ার আগেই রিয়ান তার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। রিয়ানের এমন কান্ডে মেহুলের চোখ গুলো বেরিয়ে আসার উপক্রম। হঠাৎ করে এমন কিছু হবে মেহুল বুঝতে পারি নি। বেশ কয়েক মিনিট পর মেহুল কে ছেড়ে দিয়ে বলে,

– মুখ কিভাবে বন্ধ করতে হয় ভালো করেই জানা আছে

কথা টা বলেই মেহুলের ওপর থেকে উঠে সোজা ওয়াসরুমে চলে যায়। এদিকে মেহুল নিজের ঠোঁটে হাত দিয়ে ন্যাকা কান্না করছে আর রিয়ানের চোদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করছে
খবিশ, খাটাস, ফাজিল,উগান্ডার দৈত্য, আমার ঠোঁটের শ্রাদ্ধ করে গেলো সকাল সকাল। তোর কপালে বউ আদর জুটবে না, আজকে ব্রেকফাস্ট কে দেয় আমিও দেখবো। এ‍্যা এ‍্যা এ‍্যাআ

-আমাকে বদ দোয়া দেওয়া বন্ধ হলে ফ্রেস হয়ে আসতে পারো

রিয়ানের এমন কথায় থমকে যায় মেহুল। সাথে সাথে মুখে হাত দিয়ে চুপ হয়ে যায়। আর কোনো কথা না বলে মাথা নাড়িয়ে রিয়ানের কথায় সম্মতি জানিয়ে ওয়াসরুমে চলে যায়।

আর রিয়ান ল্যাপটপ নিয়ে বসে পড়ে। আকাশের সাথে চ্যাটিং করছে। ঈশান মিরা আর আদি কে নিয়ে কথা বলছে।

মেহুল ফ্রেস হয়ে সোজা নিচে চলে যায়। এক মুহুর্ত ও রুমে দাড়ায় না। রোজের আর মেহুল ব্রেকফাস্ট রেডি করছে। রেহানা বেগম রাইয়ান সাহেবের সাথেই আছেন। রিক রাইয়ান সাহেব কে চেকআপ করে রিয়ানের রুমে চলে যায়। রিক কে দেখে রিয়ান বলে,
-কি রে আয় ভিতরে আয়
-দোস্ত রিফা কে বলে দেবো?
-কি?
-ফোনের সেই অচেনা মানুষ টা আমি
– রিফা কিছু বলেছে?
-দেখা করতে চায়
-কর দেখা
-ও যদি আমাকে ভুল বোঝে। যদি না বলে দেয় তখন? আমি ওর মুখ থেকে না শুনতে পারবো না
-এই এই স্টপ। আমি রিফার বড় ভাই। একটু সাবধানে কথা বল
-হাহাহা তুই তো আমার শালা।
-ওই বিয়ে কবে করলি?
-করি নি করবো তো
-তোর সাথে আমার বোনের বিয়ে দেবো না
-কেন😲
-তোর সাথে আমার বোনের বিয়ে হলে বাসর ঘরে কি করলি সেটা শুনবো কিভাবে?

রিয়ানের কথায় রিক হো হো করে হেসে উঠে। সাথে রিয়ান ও। রিক আবারও বলে,

-একটা বুদ্ধি দে রিফার মনে জায়গা করার জন্য।
-হুম ভাবতে হবে

এর মধ্যে মেহুল রুমে প্রবেশ করে রিয়ান কে ডাকতে

মেহুল: ব্রেকফাস্ট রেডি চলুন
রিয়ান: যাও আসছি আমরা
মেহুল : তারাতারি আসুন।

মেহুল চলে যায়। রিক আর রিয়ান ও নিচে যায়। ব্রেকফাস্ট করে সবাই সবার রুমে চলে যায়। রিক আর রিয়ান চলে যায় ফার্ম হাউজে। মেহুল রাইয়ান সাহেব কে ঔষধ খাইয়ে রুমে আসে। এই কয়েক দিন কলেজে যেতে পারে নি। আগামীকাল থেকে কলেজে যেতে হবে। তাই কিছু কাগজপত্র গুছিয়ে রাখছে।

এদিকে রিক আর রিয়ান ফার্ম হাউজে চলে আসে।

রিয়ান: এই দুটো কে কি করবো (ঈশান আর মিরা কে উদ্দেশ্য করে)
আকাশ: স্যার বলেন তো এখানেই খতম করে দেই?
রিয়ান: না আকাশ। আমরা আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারি না। ওরা এখানেই থাক আগে আদির ব্যবস্থা করি চলো।
রিক: আদি কে দে কয়েক ঘা। ওই শালার জন্য আমার রিফুপাখি আমাকে দোষারোপ করেছে।
রিয়ান: তোর শালা না আমি🙄 আদির বোন কে বিয়ে করেছিস বলিস নি তো
রিক: আরে আরে তুই তো আমার রিয়েল শালা। আর আদির বোন কে কেন বিয়ে করতে যাবো হুহ😤

রিয়ান আর রিকের কথায় আকাশ হাসছে। আদি কে ধরে এনেছে। আদি এখন রিয়ানের কাছে। আদির দুই হাত বেধে ঝুলিয়ে রেখেছে। নিচে ফুটন্ত গরম পানি আর পানির একটু ওপরে আদি কে ঝুলিয়ে রেখেছে।

#চলবে