#তবুও ভালোবাসি
#পর্ব_২৪
#রেজওয়ানা_রমা
(রহস্যভেদ পর্ব -৩)
আদির গালে চুমু দিয়ে কোলে তুলে নেন। আর রেহানা বেগম ও রাইয়ান সাহেব পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন। একজন লোক এসে বলেন
– মি. চৌধুরী আপনার কাছে আমি সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো। আপনি আজ আমাকে জীবনের বড় উপহার দিলেন। (হাত ধরে)
রাইয়ান সাহেব: আমার ছেলে কে আপনার হাতে তুলে দিলাম। আমি আমার কথা রেখেছি মিনাজ সাহেব। এবার আপনি আপনার কথা রাখবেন।
মিনাজ সাহেব: আপনি চিন্তা করবেন না। আমাদের কোনো সন্তান নেই। আদিই আজ থেকে আমাদের সন্তান। আমার সব সম্পত্তির মালিক আদি ই হবে। আমি সব কিছু ওর নামে করে দিয়েছি।
রাইয়ান সাহেব: (মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে )
এর পর মহিলাটা (রেবেকা বেগম ) আদি কে কোলে নিয়ে রেহানা বেগমের কাছে আসেন।
রেবেকা বেগম: বুবু আদি কে নিয়ে আমার শূন্য কোল পূর্ণ হয়েছে। আদি ভালো থাকবে। আজ থেকে আমি ওর মা। আদি আমার ছেলে। আপনি ওর জন্য যা করবেন আমিও তাই করবো। আপনি দোয়া করবেন বুবু যেন আমি আদি কে সঠিক মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে পারি
রেহানা বেগম : (নিশ্চুপে কাদছেন)
রাইয়ান সাহেব: রেহানা নিজেকে সামলে নাও। রিয়ান আছে তোমার কাছে। আর মিনাজ সাহেব আর তার স্ত্রীর কাছে আমাদের আদি ভালো থাকবে।
রেহানা বেগম : তুমি করে বুঝবে একজন মায়ের কষ্ট? (মুখে আচল চেপে )
এর পর মিনাজ সাহেব একটা পেপার এনে রাইয়ান সাহেব কে দিয়ে বলেন,
মিনাজ সাহেব : এখানে একটা সাইন করুন মি. চৌধুরী
রাইয়ান সাহেব: কিসের পেপার এটা?
মিনাজ সাহেব : আদি কে আপনি আমাদের দিয়েছেন তার ই আইননত কাগজপত্র। আর আপনি কখনও আদি কে ফেরত চাইতে পারবেন না
রেহানা বেগম এবার হু হু করে কেদে দেন। রাইয়ান সাহেব চুপ থেকে সাইন করে দেন।
মিনাজ সাহেব আর রেবেকা বেগম আদি কে নিয়ে চলে যাওয়ার সময় আদি কে প্রান ভরে আদর করে দেন রেহানা বেগম।
আদি কে নিয়ে চলে যান মিনাজ সাহেব আর রেবেকা বেগম।
বতর্মান,
সেদিনের কথা মনে হতেই ডুকরে কেদে উঠেন রেহানা বেগম। রিয়ান সব টা শুনে পাথরের ন্যায় দাড়িয়ে রয়। অতঃপর বলে,
-শুধু মাত্র ব্যবসার জন্য আদি কে দিয়েছিলে?
রেহানা বেহম : না শুধু মাত্র ব্যবসার জন্য নয় আদি কে তো…….
রাইয়ান সাহেব: আহ! থামবে তুমি?
মায়ের চোখের পানি মুছে দিয়ে রিয়ান আবারও বলে,
-তুমি চিন্তা করো না আম্মু। আদি কে আবার ফিরিয়ে আনবো। আমরা সবাই এক সাথে থাকবো।
– তুই পারবি বাবা আমার আদি কে ফিরিয়ে আনতে?
-পারবো আম্মু। কিন্তু আদি আজ এমন কেন হয়েছে? মারামারি, ইভটিজিং, গুন্ডামি এইসব কেন?
-বেশি আদরের ফল বাবা ( রাইয়ান সাহেব )
-মানে?
-মানে মিনাজ সাহেব আর রেবেকা ভাবী কখনো ওর কথার ওপর কথা বলে নি। যখন যা চেয়েছে তাই দিয়েছে। কখনো ওর ইচ্ছার বিরুদ্ধে যায় নি। প্রচন্ড ভালোবাসে কি না। আর এই ভালোবাসা টা আজ ওকে এমন বানিয়ে দিয়েছে। ও সেই পরিবেশ টাই পাই নি ভালো মানুষ হয়ে উঠার।
-এখন রেবেকা আন্টি আর মিনাজ আংকেল কোথায়?
-আদি কে দেশের সব ব্যবসা বুঝিয়ে দিয়ে উনারা বিদেশের ব্যবসা সামলাচ্ছেন। যদিও বলেছিল আদি কে বিদেশের ব্যবসা দেখতে কিন্তু আদি কে আমরা ই যেতে দেই নি।তাই উনারা গিয়েছেন আর আদি এখানকার ব্যবসা দেখছে।
-আমার আদি কে ফিরিয়ে এনে দে বাবা তোর কাছে আর কিছু চাই না ( রেহানা বেগম )
-দেবো আম্মু। আমাকে একটু সময় দাও আমি সব ঠিক করে দেবো। কিন্তু আজকে আমাকে চলে যেতে হবে। আবার ছুটি তে আসবো যখন তখন তোমার আদি কে তোমার বুকে ফিরিয়ে দেবো আম্মু কথা দিলাম
বলেই রিয়ান হন হন করে বেরিয়ে যায়। রেহানা বেগম রিয়ানের কথায় কিছু টা আশ্বাস পেয়েছেন।
এদিকে বাড়ির সব কাজ করছে মিরা। দুপুরের খাবার বানাতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। মিরার এমন অবস্থা দেখে আদনান আর আকাশ হাসতে হাসতে শেষ। কিচেনে মিরা কাজ করছে আর তুলি মিরার কাছে গিয়র বলে,
– আনতি তুমাল কততো হততে?
মিরা তুলির কথায় বিরক্তি প্রকাশ করে। কোনো উত্তর দেয় না। তুলি আবারও বলে,
-আমি তুমাকে হেপ কববো?
-না লাগবে না। তুমি যাও এখান থেকে
– এমা আনতি তুমি তো ধেমে গেতো। দালাও আমি মুচে দেই
তুলির এমন কথায় ভ্রুকুচকে তাকায় মিরা। তারâ পর তুলি কে কোলে নিয়ে বলে।
– আমার কিচ্ছু লাগবে না মা। আমি তো আমাত পাপের প্রাশ্চিত্ত করছি
-প্রা প্রা প্রাচিত কি?
-প্রাচিত নয় প্রাশ্চিত্ত
-ধুলু কি বলো বুতি না। আমি তাই আমার পুতুলের খাইয়ে আতি। আমাকে নামিয়ে দাও
মিরা তুলি কে নামিয়ে দেয়। তুলি এক দৌড়ে চলে যায়। মিরার রান্না প্রায় শেষ। সবাই কে খেতে দিয়ে ঈশানের জন্য খাবার নিয়ে যায়।
।
।
।
রিয়ান নিজের রুমে এসে পায়চারি করছে। কিছু ভেবে পাচ্ছে না। আদি কে কিভাবে ফিরাবে। সে তো এখন একজন অপরাধী। এবং সে একজন কে খুন ও করেছে। কিভাবে আদি কে বাচাবে। এসব ভাবতে ভাবতে ফোন করে আকাশের কাছে,
-হ্যালো আকাশ
-জ্বী স্যার
-ওদিকের কি অবস্থা?
-সব কিছু ঠিকই চলছে স্যার
-আদি?
-স্যার আদি তো আগের মতই আছে।
– শোনো আদি কে ওপরের ঘরে নিয়ে যাও। যে ঘর টা তে কোনো জানালা নেই। রুমে সব কিছুর ব্যবস্থা করে দাও। যত টা আমাকে সম্মান করো তত টা আদি কেও করবে। হ্যাঁ হাতের পায়ের বাধন খুলে দাও। টাইম টু টাইম খাবার দিয়ে আসবে। আদির যেন কোনো অসুবিধা না হয়। আর দেখবে যেন পালিয়ে না যায়। সাবধানে থেকো তোমাকে আঘাত ও করতে পারে।
-আপনি যেমন টা বলবেন স্যার
-ঠিক আছে। রাখছি।
রিয়ান ফোন রেখে ওয়াসরুমে যায়। সাওয়ার নিয়ে নিচে চলে আসে। দুপুরের খাবার সবাই এক সাথে খায়। রাইয়ান সাহেব কে ঔষধ খাইয়ে মেহুলের নিজের রুমে এসে দেখে রিয়ান রেডি হচ্ছে। রিয়ান কে রেডি হতে দেখে মেহুল বলে,
#চলবে