তুমি শুধু আমারই হও পর্ব-১১+১২

0
364

#তুমি_শুধু_আমারই_হও
লেখনীতে- অরনিশা সাথী

|১১|

সকাল সাড়ে নয়টা বাজে। অর্নি এখনো ঘুমোচ্ছে। ট্যুর থেকে ফেরার পর ভার্সিটি কাল আর আজ অফ দিয়েছে। তাই অর্নি শান্তির ঘুম দিচ্ছে। এমন সময় তীব্র রিংটোনের শব্দে ঘুম ভেঙে যায় অর্নির। ফোন হাতে নিয়ে দেখে নূরের ফোন। আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে অর্নি। ততক্ষণে ফোন কেটে গেছে। অর্নি আবারো ঘুমানোর প্রস্তুতি নিতেই ফোন বেজে উঠলো। অর্নি রিসিভ করে ফোন কানে নিতেই ওপাশ থেকে নূর বললো,
–“দোস্ত, জানিস কি হইছে?”

অর্নি বিরক্তিতে চোখমুখ কুঁচকে বললো,
–“না বললে জানবো কি করে?”

–“ওহ তাই তো, আচ্ছা শোন তাহলে___”

–“আরে ইয়ার, মেইন টপিকে আয় প্লিজ।”

–“শান্ত’রা আসছে আজ বাসায়।”

নূরের কথা শুনে অর্নির ঘুম ছুটে গেলো। জিজ্ঞেস করলো,
–“কি বললি?”

–“হ্যাঁ, একটু আগে আম্মু আব্বুকে এই বিষয়ে কথা বলতে শুনেছি আমি। আর শান্তও ফোন করে বলেছে।”

–“তারমানে আংকেল আন্টি রাজি?”

নূর ক্ষানিকটা লজ্জা নিয়ে বললো,
–“তাই তো মনে হচ্ছে।”

–“কত্তদিনের ইচ্ছে তোর বিয়েতে নাচমু গাইমু, এতদিনে তাইলে আমার আর রুশানের স্বপ্নটা পূরণ হবে।”

নূর লাজুক হাসলো। বললো,
–“তুই বাসায় আয় না দোস্ত।”

–“পারবো না, আমার এখনো অনেক ঘুমানো বাকী। বিকেলের জন্য অল দ্যা বেস্ট। টাটা।”

কথাটা বলে নূরকে কোনোকিছু বলার সুযোগ না দিয়েই অর্নি লাইন কেটে দিলো। নূর একের পর এক ফোন করেই যাচ্ছে কিন্তু অর্নি রিসিভ করছে না। শেষে বাধ্য হয়ে অর্নিকে ফোন দেওয়া অফ করে রুশানকে ফোন করে৷ অতঃপর রুশানকে নিয়ে অর্নিদের বাসায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নূর।

কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমোচ্ছে অর্নি৷ নূর আলগোছে কাঁথা সরিয়ে গ্লাসে করে পানি নিয়ে অর্নির মুখে ছিটিয়ে দিলো৷ পিটপিট করে চোখ মেলে তাকালো অর্নি৷ চোখ খুলতেই নূর আর রুশানকে দেখে লাফিয়ে উঠলো শোয়া থেকে৷ নূর অর্নিকে বিছানা থেকে টেনে নামিয়ে বললো,
–“ফ্রেশ হয়ে আয় যা।”

–“পারমু না, ঘুমামু আমি।”

রুশান অর্নির মাথায় গাট্টা মেরে বললো,
–“ঢং রাইক্ষা শাওয়ারে যা। আমরা আজ নূরের বাসায় থাকবো।”

অর্নি বিকট চিৎকার দিয়ে বললো,
–“ইমপসিবল। ওখানে উৎসব ভাই আছে, আমি থাকবো না।”

নূর চোখ রাঙিয়ে বললো,
–“আমার ভাই বাঘ/ভাল্লুক নয় যে তোকে খেয়ে ফেলবে।”

–“প্লিজ।”

–“তোর প্লিজ তুই তোর কাছেই রাখ।”

কথাটা বলল নূর। অর্নি কাঁদোকাঁদো চেহারায় তাকালো দুজনের দিকে। বুঝলো ওকে না নিয়ে এরা আজ যাচ্ছে না। অর্নি বললো,
–“যেতে পারি, তবে শর্ত আছে আমার।”

নূর আর রুশান দুজনেই ভ্রু কুঁচকে তাকালো৷ রুশান জিজ্ঞেস করলো,
–“আবার শর্ত কিসের?”

–“রাতে লুকিয়ে লুকিয়ে বের হবো আমরা। এদিক সেদিক ঘুরবো, স্ট্রিট ফুড খাবো।”

অর্নির কথায় নূর কোনো কিছু না ভেবেই বললো,
–“ওকেহ ডান।”

অর্নি খুশি মনে রেডি হতে চলে গেলো। ওর খুব ইচ্ছে রাতের বেলা বন্ধুরা মিলে ঘুরে বেড়ানোর। সাথে আনলিমিটেড স্ট্রিট ফুড তো থাকবেই। কিন্তু অর্নব বা মিসেস অদিতি কেউ-ই অর্নিকে রাতের বেলা একা ছাড়বে না। তাই নূরকে এই শর্ত জুড়ে দিলো। নূরদের বাসায় থাকলে ওর ভাই বা মা কেউ জানবে না আর কিছু বলবেও না।

ঘন্টা খানেক বাদে অর্নি একেবারে রেডি হয়ে বের হলো রুম থেকে৷ নূর আর রুশান আগে থেকেই অর্নির যাওয়ার জন্য অনুমতি নিয়ে রেখেছে অর্নির মা আর ভাইয়ের থেকে৷ অর্নি টেবিলে বসে নাস্তা করার জন্য। নূর আর রুশানের খাওয়া শেষ। অর্নি কোনোরকম খেয়ে উঠে পড়লো। তারপর মিসেস অদিতিকে বাই বলে বেরিয়ে পড়লো তিনজনে নূরদের বাসার উদ্দেশ্যে।

গোলাপী রঙের শাড়ি পড়ে রুমের মধ্যে পায়চারি করছে নূর। ওর ভীষণ নার্ভাস লাগছে। রুশান ব্যালকোনিতে গিয়ে তরীর সাথে কথা বলছে ফোনে আর অর্নি ফোনে ফানি ভিডিও দেখছে আর মাঝে মধ্যে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে বিছানায়। নূরের রাগ হলো প্রচুর। রুশান আর অর্নি ওকে সাহস দিবে কি তা না উলটো যে যার মতো ব্যস্ত। নূর অর্নির হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নিয়ে পাওয়ার অফ করে বিছানায় রেখে দিলো। অর্নি ভ্রু কুঁচকে বললো,
–“ফোন নিলি কেন?”

–“তো কি করবো? এদিকে আমি টেনশনে মরছি আর অন্যদিকে তুই ফানি ভিডিও দেখে হাসছিস রুশাইন্না তরীর সাথে প্রেম করছে। তাহলে তোদের এখানে এনে লাভ হলো কি আমার?”

অর্নি মুখ বাঁকিয়ে বললো,
–“আমি আসতে চাইনি, তোরা জোর করে এনেছিস আমাকে।”

–“আমার এনগেজমেন্ট ইয়ার, আর তোরা কি করছিস? ধ্যাত ভাল্লাগে না!”

নূর অভিমানে গাল ফোলালো। অর্নি গিয়ে রুশানকে টেনে আনলো। তারপর দুইজনে মিলে বসলো নূরের পাশে। নূরের এনগেজমেন্ট কথাটা শুনে রুশান অর্নি দুজনেরই মন ভীষণ ভাবে খারাপ হয়েছে৷ রুশান বললো,
–“এখন থেকে আমাদের প্রায়োরিটি কমে যাবে তোর কাছে তাই না?”

নূর শান্ত চোখে তাকালো রুশানের দিকে৷ অর্নি বললো,
–“বিয়ের পর তুই চেঞ্জ হয়ে যাবি নূর? আমাদের আগের নূর আর থাকবি না, আমাদের আগের মতো আর সময় দিবি না, তাই না?”

–“আই উইল মিস ইউ সো মাচ দোস্ত।”

কথাটা বলেই রুশান জড়িয়ে ধরলো নূরকে। নূর কান্না আটকে বললো,
–“তোরা একদিকে, আর বাকী সব একদিকে। তোরা ছিলিস, তোরা থাকবি। ইট’স মাই প্রমিস। আমিও আগের মতোই থাকবো।”

অর্নি ঠোঁট কামড়ে ধরে কান্না আটকানোর চেষ্টা করছে। ওরা তিনজন কক্ষনো আলাদা হতে চায় না। এরকম ভাবে আজীবন থাকতে চায়। পারবে তো এভাবে থাকতে? অর্নি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো,
–“আমাদের ভুলে যাবি না তো?”

নূর এবার ডুঁকরে কেঁদে উঠলো। অর্নিও আর কান্না আটকে রাখতে পারলো না৷ নূরকে জড়িয়ে ধরে নিজেও ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো। এমন সময় দরজার সামনে থেকে রাশভারি কন্ঠস্বরে দুজন দুজনকে ছেড়ে বসলো। চোখের পানি মুছে নিলো দুজনেই৷ উৎসব বললো,
–“এখানে এত কান্নাকাটির কি আছে? নূর তো আজই চলে যাচ্ছে না।”

নূর বললো,
–“ওসব তুমি বুঝবে না ভাইয়া৷ তোমরা ছেলেরা তো বিয়ে করে বউ বাড়িতে নিয়ে আসো। কিন্তু আমাদের নিজের বাড়ি ছেড়ে যেতে হয়৷ অন্যজনের মতো করে বাঁচতে হয়৷ অন্যের শখ আহ্লাদের কথা মাথায় রেখে প্রতিটা কদম ফেলতে হয়। কিন্তু তোমরা তো সারাজীবন নিজেদের মতো করে চলতে পারো৷ তোমাদের স্বাধীনতায় কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না।”

উৎসব এগিয়ে এসে বোনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বোনকে জড়িয়ে ধরলো৷ পাশেই অর্নি দাঁড়ানো ছিলো৷ উৎসব অর্নির দিকে কিছুটা ঝুঁকে বললো,
–“আচ্ছা আমি নিজের মতো চলতে পারবো তো? নাকি আপনার কথা মানতে হবে আমায়?”

অর্নি ভ্রু কুঁচকে তাকালো উৎসবের দিকে। ওদিকে নূর ভাইয়ের বুকে মাথা রেখেই ফিক করে হেসে দিলো উৎসবের এমন কথা শুনে। নূর উৎসবকে ছেড়ে দিয়ে অর্নির হাত ধরে বললো,
–“অর্নি আমার ভাবী হয়ে যা না প্লিজ?”

–“কক্ষনো না।”

কথাটা বলেই অর্নি ব্যালকোনিতে চলে গেলো৷ উৎসব নূরকে বললো,
–“তোর ভাবী যদি কেউ হয় সেটা অর্নিই হবে সিওর থাক। নয়তো আর কেউ না।”

কথাটা বলে উৎসব রুশানকে বলে,
–“কিছুক্ষণ পর নূরকে নিচে নিয়ে এসো।”

কথাটা বলে একপলক ব্যালকোনিতে তাকিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায় উৎসব। উৎসব যেতেই অর্নি রুমে আসে।

পাশাপাশি বসানো হয়েছে নূর আর শান্তকে৷ নূরের মতো এত ছটফটে মেয়েটাও আজ একদম শান্ত হয়ে বসে আছে৷ ভিতরে ভিতরে ভয়ে জমে যাচ্ছে। একরাশ লজ্জা এসে ঘিরে ধরেছে নূরকে। সব কথাবার্তা শেষে দুজনের এনগেজমেন্ট হয়ে যায়৷ অর্নি আর রুশান নূর-শান্তকে নূরের রুমে নিয়ে আসে আলাদা ভাবে কথা বলার জন্য।

নূরের একটা হাত শান্ত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বললো,
–“জানো নূর, আমার কাছে এখনো সবটা স্বপ্নের মতো লাগছে।”

–“কেন?”

–“ভাবিনি এত ইজিলি দুই ফ্যামিলি রাজি হয়ে যাবে।”

শান্তর কথায় নূর হাসলো৷ নূরের আব্বু আম্মু কিছুতেই রাজি হতো না, যদি না উৎসব রাজি না থাকতো৷ নূর জানতো উৎসবের ডিসিশনের উপর সবটা ডিপেন্ড করবে। তাই তো সেদিন ট্যুরে শান্ত যখন জানালো ওর পরিবার রাজি তখনই নূর উৎসবকে সবটা আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছে। উৎসব আগেই শান্তর ব্যাপারে সব খোঁজখবর নিয়ে রেখেছিলো, খারাপ কোনো রেকর্ড পায়নি। আর সব থেকে বড় কথা নূর শান্তকে ভালোবাসে তাই উৎসবও আর দ্বিমত করেনি। শান্তর ডাকে নূরের হুশ ফিরলো৷ বললো,
–“হ্যাঁ বলুন।”

শান্ত নূরকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বললো,
–“তখন তো আন্সারটা দাওনি। বলেছিলে দুই ফ্যামিলি মানলে তুমি রাজি আছো। এখন তো সব ঠিকঠাক আছে৷ এখন অন্তত আন্সারটা দাও?”

নূর লজ্জায় মাথা নুয়ালো। ধীর গলায় বললো,
–“কিসের আন্সার?”

শান্ত নূরের কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বললো,
–“ওই যে ভালোবাসি বললাম তার আন্সার?”

অনেকটা সময় নিরব থাকলো নূর৷ বুক ঢিপঢিপ করছে ওর। শরীর কাঁপছে৷ নিজেকে সামলে নিয়ে বললো,
–“ভালোবাসি।”

নূরের মুখ থেকে ভালোবাসি শুনে শান্তর মুখে হাসি ফুঁটলো৷ নূরকে একপাশ থেকে জড়িয়ে নিয়ে মাথায় চুমু খেলো। এমন সময় গলা ঝেড়ে ভিতরে ঢুকলো অর্নি আর রুশান। অর্নি বললো,
–“বিয়ের আগেই এসব জড়াজড়ি একদম ভালো না শান্ত ভাই, কন্ট্রোল ইউরসেল্ফ।”

অর্নির কথায় সরে দাঁড়ালো দুজনে। শান্ত হেসে বললো,
–“এভাবে উঁকিঝুঁকি দেওয়া ঠিক না শালীকা।”

শান্ত’র কথায় অর্নি ইনোসেন্ট হাসি দিলো। রুশান বললো,
–“এটা তো কিছুই না ভাই, আসল মজা তো দেখবেন বাসররাতে। তখন শুধু দেখবেন আমরা কি কি করি।”

নূর রুশানের মাথায় গাট্টা মেরে বললো,
–“যাহ ফাজিল! তোরে এসব কথা বলতে কে বলছে এখানে? দূর হো।”

এমন সময় রুশানের ফোন বেজে উঠে। স্ক্রিনে তরীর নাম্বার দেখে মুচকি হেসে বললো,
–“আমার জানটা ফোন দিছে কথা বলে আসি, বাই।”

রুশান বেরিয়ে গেলো। অর্নি তখনো সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। নূরের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বললো,
–“দোস্ত তোরে এরকম লজ্জারাঙা মুখে একদমই মানায় না। গুন্ডি গুন্ডি লুকেই বেস্ট লাগে৷ ট্রাস্ট মি।”

নূর চোখ রাঙিয়ে তাকালো অর্নির দিকে। অর্নি মুখে আঙুল দিয়ে বললো,
–“আমিও আসছি৷ বিয়ের আগে কিন্তু জড়াজড়ি একদম ভালো না। আবারো মনে করিয়ে দিলাম।”

নূর এবার বললো,
–“আমাদের তো তাও এনগেজমেন্ট হইছে অর্নি। আমরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরতেই পারি৷ কিন্তু আমার ভাইয়ের সাথে তোর না এনগেজমেন্ট হইছে আর না তোরা রিলেশনে আছিস, তাহলে আমার ভাইয়ের বুকে মাথা রাখিস কি করে? টেল মি।”

শান্ত’র সামনে এভাবে বলায় অর্নি ক্ষানিকটা লজ্জা পেলো। নূরের দিকে রাগান্বিত চোখে তাকিয়ে বললো,
–“আমার বয়েই গেছে তোর ভাইয়ের বুকে মাথা রাখতে।”

এই বলে দৌড়ে বেরিয়ে গেলো অর্নি। ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে নূর শব্দ করেই হেসে দিলো।

উৎসবের রুম ক্রস করার সময় উৎসব টেনে অর্নিকে ভিতরে নিয়ে যায়৷ অর্নিকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে উৎসব ওর সামনে দাঁড়ায়৷ অর্নি নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে বললো,
–“যেতে দিন আমায়৷ আমাকে যখন তখন এভাবে স্পর্শ করতে পারেন না আপনি।”

উৎসব দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
–“ইন ফিউচার আমার স্পর্শই সহ্য করতে হবে তোমাকে।”

–“ছাড়ুন আমায়।”

–“ছেড়ে দিবো, আগে বলো সেদিন ছেলেটা কে ছিলো?”

উৎসবের কথায় অর্নি কপাল কুঁচকে তাকালো ওর দিকে৷ বুঝার চেষ্টা করলো কোন ছেলের কথা বলছে ও। পরমূহুর্তেই মনে পড়লো নিহালের কথা৷ সেদিন ট্যুর থেকে ফিরে নিহালের সাথেই বাড়ি গেছিলো অর্নি। আর সেদিন উৎসব অর্নিকে নিহালের সাথে যেতে দেখে বেশ চটেও গেছিলো। অর্নি বুঝলো উৎসব নিহালের কথা জিজ্ঞেস করছে। তবুও না বোঝার ভাণ করে বললো,
–“কোন ছেলেটা?”

–“পরশু ট্যুর থেকে ফিরে যার বাইকে চেপে বাড়িতে গেলে।”

–“সে যেই থাকুক, আপনাকে বলতে বাধ্য নই আমি। ছাড়ুন আমায়।”

–“ছেলেটা কে ছিলো?”

–“বলবো না।”

উৎসবের রাগ তড়তড় করে বাড়ছে। দেয়ালে সজোরে একটা পাঞ্চ মারে উৎসব, অর্নি ভয়ে কেঁপে উঠে। উৎসব আবারো বললো,
–“বলেছিলাম না, কোনো ছেলেকে যাতে তোমার আশেপাশে না দেখি আমি? কেউ যাতে তোমাকে স্পর্শ করতে না পারে সেটা বলেছিলাম না আমি? এরপরও ওই ছেলেকে কিভাবে জড়িয়ে ধরো? কিভাবে ওর বাইকে চেপে বাড়ি ফেরো তুমি? আন্সার মি।”

–“কে আপনি? আপনার কোনো কথা মানতে বাধ্য না আমি।”

–“অভিয়েসলি বাধ্য তুমি। ভালোবাসি তোমাকে আমি। বলেছি না একবার, #তুমি_শুধু_আমারই_হও?”

–“হবো না আমি আপনার।”

কথাটা বলে অর্নি দুহাত দিয়ে উৎসবের বুকের ধাক্কা দিয়ে উৎসবকে নিজের থেকে সরিয়ে দিলো। তারপর বেরিয়ে গেলো রুম থেকে। যেতে যেতে শুনতে পেলো উৎসবের রুমে ভাঙচুরের শব্দ।

চলবে~

#তুমি_শুধু_আমারই_হও
লেখনীতে- অরনিশা সাথী

|১২|

সাড়ে দশটা নাগাদ বাজে। সারাদিনের ক্লান্তি শেষে নূরের বাবা মা নিজদের রুমে গিয়ে শুয়ে পড়েছেন। বাকী রইলো উৎসব, সে-ও নিজের ঘরেই আছে। সন্ধ্যায় অর্নি ওভাবে চলে আসার পর রাগে রুমের ভিতর একপ্রকার তান্ডব চালিয়েছে উৎসব। এরপর আর রুম থেকে বের হয়নি। নূর আর ওর আম্মু বেশ কয়েকবার ডাকার পরও আর দরজা খুলেনি। এখনো নিজেকে ঘর-বন্দী করে রেখেছে। মনে হয় না আজ আর বের হবে ঘর থেকে। তাই বলা চলে পুরো বাসা এখন ফাঁকা। অর্নি ওরা নিশ্চিন্তে বের হতে পারবে। জিন্স পেন্ট, ডিজাইনার শর্ট টপস আর গলায় স্কার্ফ পেঁচিয়ে রেডি হয়ে নিলো নূর আর অর্নি। অতঃপর তিনজনে একসাথে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে। যদিওবা এখন কেউ নেই তবুও খুব সাবধানে পা টিপে টিপে তিনজনে বাসা থেকে বেরিয়ে একটা স্বস্তির শ্বাস নেয়। নূরদের বাসা থেকে একটু দূরত্বে গিয়ে তিনজনে দাঁড়িয়ে পড়ে রিকশার জন্য।

উৎসব ওর রুমের ব্যালকোনিতে দাঁড়িয়ে ছিলো৷ বাসা থেকে এভাবে ওদের তিনজনকে লুকিয়ে বের হতে দেখে কপাল কুঁচকায় উৎসব। এতরাতে তিনজনে এভাবে লুকিয়ে কোথায় যাচ্ছে? প্রশ্নটা মনের মধ্যে ঘুরপাক খেতে লাগলো৷ উৎসব দ্রুত রুমে গিয়ে কাবার্ড থেকে শার্ট বের গায়ে জড়িয়ে নিলো। বিছানার পাশ থেকে ফোন এবং ড্রয়ার থেকে ওয়ালেট নিয়ে উৎসব নিজেও বেরিয়ে পড়লো বাসা থেকে।

একটা রিকশা থামিয়ে রুশান আর নূর উঠে বসেছে। অর্নি উঠবে এমন সময় উৎসবের কন্ঠস্বর শুনতে পায়৷ এদিকেই আসছে উৎসব আর ওদেরকে দাঁড়াতে বলছে। অর্নি দ্রুত রিকশায় উঠে বললো,
–“মামা আপনি দ্রুত চালান।”

নূর ভয়ার্ত কন্ঠে বললো,
–“দোস্ত ভাইয়া প্রচন্ড রেগে যাবে৷ আজ না যাই? অন্যদিন সিওর যাবো।”

নূরের কথায় অর্নি চোখ রাঙিয়ে তাকালো। বললো,
–“তুই আমায় প্রমিস করেছিলি__”

–“আমার সেটা মনে আছে। বাট ভাইয়া দেখে ফেললো তো৷”

অর্নি নূরের কথায় পাত্তা না দিয়ে রিকশাওয়ালাকে বলল,
–“আপনি যান তো।”

এমন সময় উৎসব সেখানে এসে রিকশা থামালো৷ তেজী কন্ঠে বললো,
–“দাঁড়াতে বলেছিলাম না?”

অর্নি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে অন্যদিকে ফিরে তাকালো। উৎসব নূরের উদ্দেশ্যে বললো,
–“কোথায় যাচ্ছিস এই রাতের বেলা?”

নূর আমতা আমতা করছে৷ অর্নি উৎসবের দিকে তাকিয়ে বললো,
–“ঘুরতে যাচ্ছি। আজ মাঝরাত অব্দি এদিক সেদিক ঘুরবো আমরা আর কিছু?”

উৎসব অর্নির হাত ধরে টেনে রিকশা থেকে নামালো। নূর আর রুশানও নেমে পড়লো৷ উৎসব রিকশাওয়ালাকে যেতে বললে উনি চলে গেলেন। অর্নি সেদিকে তাকিয়ে বললো,
–“আপনি রিকশাওয়ালাকে যেতে বললেন কেন? এখন সহজে রিকশা পাবো আমরা?”

উৎসব শান্ত চোখে তাকিয়ে বললো,
–“এই রাতের বেলা কোথাও যাচ্ছো না তোমরা। এখন বাসায় গিয়ে চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়বে৷ কাল দিনে ঘুরতে যেও।”

–“নাহ, আমরা রাতেই ঘুরবো।”

নূর অর্নির কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বললো,
–“চল না ইয়ার, বাসায় চলে যাই। দেখ ভাইয়া কিভাবে রেগে আছে। অন্যদিন যাবো পাক্কা।”

–“ঠিক আছে, তাহলে আমি বাসায় ফিরবো এক্ষুনি।”

অর্নির কথায় উৎসব পূর্ন দৃষ্টি মেলে তাকালো ওর দিকে। নূর অসহায় চোখে একবার অর্নির দিকে তাকাচ্ছে একবার উৎসবের দিকে তাকাচ্ছে। রুশান অর্নিকে বললো,
–“দোস্ত এই রাতের বেলা বাসায় ফিরে গেলে আন্টি আর অর্নব ভাই কি ভাববে বল? নেক্সট টাইম আমাদের বাসায় থেকে রাতে ঘুরতে বের হবো পাক্কা। আমার বড় ভাইও নাই বোনও নাই যে বাঁধা দিবে।”

অর্নি কিছু বললো না৷ চুপ করে রইলো। নূর উৎসবের হাত ধরে বললো,
–“ভাইয়া প্লিজ, আজকে একটু ঘুরে আসি?”

উৎসব অর্নির দিকে তাকিয়ে বললো,
–“ওয়েট কর, গাড়ি নিয়ে আসছি আমি।”

নূর খুশিতে ভাইকে জড়িয়ে ধরলো। অর্নি মিনমিন করে বললো,
–“গাড়িতে ঘুরে মজা নেই, রিকশায় ঘুরবো আমি।”

উৎসব ভ্রু কুঁচকে তাকালো অর্নির দিকে। রুশান অর্নির হাত চেপে ধরে বললো,
–“যেতে পারছিস এটাই অনেক অর্নি, এরপর কখন আবার মত পাল্টে যাবে আমাদের যেতে দিবে না এর সিয়রিটি নেই।”

নূর অর্নিকে বললো,
–“দোস্ত ভাইয়া রাজি হইছে এই অনেক। প্লিজ রিকশায় যাওয়ার কথা বলে আবার যাওয়া বন্ধ করে দিস না।”

অর্নি কিছু না বলে সম্মতি জানালো। উৎসব কিছু একটা ভেবে বললো,
–“ওকেহ, রিকশায় করেই যাবো।”

অর্নির খুশিতে চোখদুটো চিকচিক করে উঠলো। নূর খুশিতে ভাইকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে ফিসফিস করে বললো,
–“আমার ভাইটা দেখছি অর্নির মন খারাপ একদমই সহ্য করতে পারে না।”

উৎসব নূরের কথায় মুচকি হেসে বললো,
–“তোর ফ্রেন্ড তো সেটা বুঝে না রে নূর। কিভাবে বোঝাবো ওকে আমার চাই? শুধু আমার করেই চাই।”

–“তুমি হাল ছেড়ো না, একদিন ঠিক বুঝবে দেইখো।”

–“হ্যাঁ সেই দিনটা যেন আবার বড্ড বেশি দেরী না হয়ে যায়।”

অন্যমনস্ক ভাবে অর্নির দিকে তাকিয়ে কথাটা বলল উৎসব। নূর ভাইয়ের কথা শুনে চমকে তাকালো ভাইয়ের দিকে। সত্যিই কি অর্নি বড্ড বেশি দেরী করে ফেলবে উৎসবের ভালোবাসাটা বুঝতে? নিজের মনেই প্রশ্নটা আওড়ালো নূর। উৎসব দুটো রিকশা থামালো৷ অর্নি একটাতে উঠে বসে রুশানকে ডাকলো বসার জন্য। রুশান যাওয়ার আগেই নূর রুশানকে টেনে অন্য রিকশায় উঠে পড়লো। উৎসব গিয়ে বসলো অর্নির পাশে। অর্নি রিকশা থেকে নেমে যেতে চাইলে উৎসব ওর একটা হাত চেপে ধরে বলে,
–“চুপচাপ বসো।”

–“আমি আপনার সাথে যাবো না উৎসব ভাই।”

অর্নি ভাই বলে ডাকাতে উৎসব চোখ রাঙিয়ে তাকালো। অর্নি মাথা নিচু করে বললো,
–“আপনি নূরের সাথে যান, এখানে রুশানকে পাঠান।”

–“আমি কোত্থাও যাচ্ছি না, আমার সাথে এক রিকশায় বসেই তোমার যেতে হবে।”

–“তাহলে আমিও কোথাও যাচ্ছি না।”

বলে অর্নি আবার নামতে গেলে উৎসব অর্নির কোমড় ধরে টান দিয়ে একদম নিজের সাথে লাগিয়ে নেয় অর্নিকে। ফলস্বরূপ অর্নি উৎসবের স্পর্শ পেয়ে কেঁপে উঠে৷ দাঁতে দাঁত চেপে উৎসব বলে,
–“ওই ছেলেকে জড়িয়ে ধরার সময় তো একবারো এদিক সেদিক তাকাওনি। কি সুন্দর ওই ছেলের বাইকে চেপে বসে বাড়ি চলে গেলে। তাহলে আজ আমার সাথে এক রিকশায় যেতে সমস্যা কোথায় তোমার?”

–“নিহাল ভাই আর আপনি এক না উৎসব ভাই৷ ও আমার কাজিন।”

–“আর আমি তোমাকে ভালোবাসি।”

চমকে তাকালো অর্নি। উৎসব সামনের দিকে তাকিয়ে আছে। অর্নি মাথা নিচু করে বললো,
–“ছাড়ুন আমায়, সরে বসবো আমি।”

–“ছাড়ছি, নেক্সট টাইম যেন তোমাকে নিহালের বাইকে না দেখি আমি।”

–“ও আমার কাজিন, ওর সাথে আমাকে অবশ্যই দেখবেন। আপনার কথা শুনে চলতে বাধ্য নই আমি।”

কথাটা বলার সাথে সাথেই উৎসব অর্নির কোমড় জোরে খামচে ধরলো। নখ দিয়ে আঁচড় কাটলো অর্নির কমোড়ের ক্ষানিটা উপরে। জ্বলে যাচ্ছে জায়গটা। ব্যাথা পেয়ে মৃদু চিৎকার করে উঠলো অর্নি। চোখ বেয়ে দুই ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো। উৎসবের সেদিকে কোনো পাত্তা নেই। সেভাবেই অর্নিকে ধরে রেখে বললো,
–“এরপর নিহালের সাথে দেখলে পরিনাম আরো বেশি খারাপ হবে।”

কথাটা বলে হাত আলগা করলো উৎসব। আলতো ভাবে অর্নির কোমড়ে হাত রেখে অর্নিকে নিজের সাথে চেপে ধরে বসে রইলো উৎসব। অর্নি আর টু শব্দটাও করেনি৷ চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে আছে।

একটা টং দোকানে এসে বসেছে চারজনে। অর্নি বেঞ্চের এককোনে জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে। কেননা ওর পাশ ঘেঁষেই উৎসব বসেছে। নূর আর রুশান ওদের অপজিট বেঞ্চে বসেছে৷ নূর মৃদু হাসছে ওর ভাইয়ের পাগলামি দেখে। অর্নিকে অনেকটা ভালোবেসে ফেলেছে কিনা। উৎসব সবার জন্য মালাই চা অর্ডার দিয়েছে। কিছুক্ষণ বাদে একটা ছেলে এসে সবাইকে চা দিয়ে গেলো। সবাই বেশ আয়েশ করেই চা খাচ্ছে। অর্নি আবারো চা মুখে নিতে গেলে উৎসব অর্নির কাপটা নিজে নিয়ে নেয়। এবং অর্নির হাতে ওর চায়ের কাপ ধরিয়ে দেয়। অর্নি ভ্রু কুঁচকে বললো,
–“আপনি আমার চা নিলেন কেন?”

–“আমারটা তো তোমাকেই দিয়েছি।”

–“আমার আপনার চা লাগবে না। আপনি আমারটা আমাকে ফেরত দিন।”

উৎসব অর্নির দিকে ঝুঁকে বললো,
–“আমার সবকিছুই তো তোমার।”

অর্নি নিরব থাকলো। এই কথার প্রত্যুত্তরে কি বলা যায় ভেবে পেলো না ও। উৎসব মুচকি হেসে অর্নির খাওয়া চা টা খেতে শুরু করলো। অর্নি চোখ বড়বড় করে দেখছে উৎসবকে। উৎসব অর্নিকে ওর চা ফেরত দিয়ে ইশারা করলো খাওয়ার জন্য৷ অর্নি জানালো খাবে না। উৎসব চোখ রাঙিয়ে তাকায়। অর্নি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো। উৎসব অর্নির হাত শক্ত করে চেপে ধরলো। ফিসফিস করে বললো,
–“আসার সময় কি করেছিলাম ভুলে গেছো? আমার কথার নড়চড় হলে কিন্তু তুমিই কষ্ট পাবে। চুপচাপ আমার কথা শুনো।”

অর্নির চোখ জলে ভরে উঠেছে। লোকটা ওর সাথে এরকম কেন করে? দুনিয়াতে এত মেয়ে থাকতে ওর পেছনেই কেন পড়লো ভাবার চেষ্টা করছে অর্নি। উৎসব তখনো গম্ভীর চোখে দেখছে অর্নিকে। তখন কোমড় খামচে ধরার কথা মনে পড়ে গেলো। এখনও ভীষণ জ্বলছে সেখানটায় বোধহয় চামড়া উঠে গেছে। অর্নি আর ওরকম কিছুর মুখোমুখি হতে চায় না বিধায় চা টা খেয়ে নিলো। উৎসব মুচকি হাসলো।

দোকান থেকে অর্নি আর নূর কোন-আইসক্রিম নিয়েছে। রুশান আর উৎসবের হাতে ক্যানের বোতল। অর্নি কিছু নিতেই চাইছিলো না, নূর জোর করেই আইসক্রিম দিয়েছে। আইসক্রিম খেতে খেতে নূর আর অর্নি একসাথে হাঁটছে। উৎসব আর রুশান ক্ষানিকটা পেছনে। আচমকা উৎসব এসে অর্নির হাত টেনে নেয়৷ অর্নি যেখানে বাইট বসিয়েছে উৎসবও ঠিক সেখান থেকেই এক বাইট আইসক্রিম নেয়৷ নূর মুচকি হাসলো ভাইয়ের কান্ডে। অর্নি ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে উৎসবের দিকে। অর্নিকে ওভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে উৎসব বললো,
–“ওভাবে তাকিয়ে থাকার কিছু নেই, তুমি তো আর দিবে না তাই জোর করেই নিতে হলো। মনে হচ্ছে নিজের জিনিস নিজেকেই আদায় করে নিতে হবে এখন থেকে।”

অর্নি দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলো৷ উৎসব বললো,
–“আচ্ছা নূর, আমি ওকে ভালোবাসি এটা জানার পর থেকে তোর ফ্রেন্ডের ডিমান্ড বেরে যাচ্ছে তাই না?”

নূর বললো,
–“মোটেও না। ও ডিমান্ড দেখানোর মতো মেয়েই না।”

–“তাহলে ও রাজি হচ্ছে না কেন? আচ্ছা তোর ফ্রেন্ডকে বল, রিলেশন করতে হবে না। বাসায় বিয়ের প্রপোজাল দিবো এতে রাজি হবে তো?”

–“নট ব্যাড।”

নূর আর উৎসবের কথা শুনে অর্নি দাঁড়িয়ে পড়লো। উৎসবের সামনে এসে বললো,
–“দেখুন__”

–“হ্যাঁ দেখছি, দেখাও।”

উৎসবের এমন কথায় নূর রুশান হেসে উঠলো। অর্নি চোখ রাঙিয়ে তাকালো দুজনের দিকে। তারপর উৎসবের দিকে তাকিয়ে বললো,
–“ধ্যাত! আপনাকে কিছু বলাই বেকার।”

কথাটা বলে সামনের দিকে এগোতে লাগলো অর্নি। উৎসবও গেলো ওর পেছনে। অর্নির হাত স্পর্শ করতেই অর্নি দ্রুত হাত সরিয়ে চোখ রাঙিয়ে তাকালো উৎসবের দিকে৷ উৎসব হেসে বললো,
–“তোমার রাগী চোখের চাহনি দেখলেও আমি নতুন করে প্রেমে পড়ে যাই অর্নি। প্লিজ #তুমি_শুধু_আমারই_হও না? অনেএএএএক ভালোবাসা দিবো তোমায় প্রমিস।”

–“লাগবে না আপনার ভালোবাসা। যারা আপনার জন্য পাগল তাদের মধ্যে কাউকে আপনার ভালোবাসা দিন।”

–“সত্যি তো? আমি যদি তোমার সামনেই অন্যকাউকে ভালোবাসি, অন্য কারো হাত ধরে ঘুরে বেরাই কষ্ট হবে না তোমার?”

অর্নি হাঁটা থামিয়ে শান্ত চোখে তাকালো উৎসবের দিকে। তারপর লম্বা একটা শ্বাস ফেলে কিছু না বলে আবারো সামনে এগোতে লাগলো৷ অর্নির ওরকম শান্ত চাহনি দেখে উৎসব মুচকি হাসলো।

চলবে~